অধিকার

Jun 25, 2009

একজন সাংসদ বহু মানুষের ভোট নিয়ে, গনগনের ম্যান্ডেট নিয়ে তবে সাংসদ হন এজন্য কাঠখড় পোড়াতে হয় অনেক কর্মী-সমর্থক তৈরী করতে হয় সেখানে খরচাপাতি আছে এলাকায় খরচাপাতি করতে হয় জনগনের মন জয় করতে হয় এখানে ওখানে এরজন্য-তারজন্য সুপারিশ করতে হয় অমুক নেতা তমুক নেতার সাথে প্রতিদ্বন্দীতা করতে হয় তারপর পার্টির নমিনেশন রীতিমত তেলমালিশ করতে হয় আজকাল খাটি তেল পাওয়া দুষ্কর, দুর্লভ। তারপরও করতে হয় নির্বাচন কমিশন কি নিয়ম করে দিয়েছে পার্টি থেকে একজন দাড়াতে পারবে কেন বাবা, বেশি দাড়ালে তোমাদের ক্ষতি কি হচ্ছে তোমাদেরই তো লাভ তোমরাই তো টাকা পাচ্ছো আবার নির্বাচনের ব্যয়, সেখানেও বাধা প্রেসের লোকজন কদিন টাকা কামাবে, লোকজন কদিন আমোদ ফুর্তি করবে তাতেও বাধা

কাজ এখানেই শেষ হয় না নির্বাচনের দিন তক্কেতক্কে থাকতে হয় কখন কোন ব্যাটা কি করে বসে ইনভেষ্টের পুরো টাকাটাই জলে যাবে তাহলে লোকজন তৈরী রাখতে হয় আবার ইলেকশনের সাথেসাথে যে ঝামেলা মিটে যাবে তাও না অনেক সময় কারচুপি করে অন্যকে জিতিয়ে দেয় তখন লড়াই করতে হয় এতসব বাধা পেরিয়ে তবেই না এমপি

তিনি পুলিশ পেটাতে পারেন, উকিল পেটাতে পারেন, সাংবাদিক পেটাতে পারেন দেশ পেটানোর ক্ষমতা যার হাতে তুলে দেয়া হয়েছে সেখানে এগুলো তো তুচ্ছ এটুকু অধিকার তার থাকা উচিত

আর এই অধিকার শুধু সাংসদের হাতে থাকবে কেন ? যারা তাদের নির্বাচনে সহায়তা করল, নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে জিতিয়ে দিল তাদের কি কোন পাওনা থাকতে নেই টেন্ডারের কাজ পাওয়ার মত সামান্য অধিকারও কি তাদের নেই সে কাজে বাধা দিলে পেটানোর অধিকার কি নেই তারা নিঃস্বার্থ হতে পারেন কিন্তু তাদের পরিবারের স্বার্থ, আত্মীয়-স্বজন-বন্ধুবান্ধবের স্বার্থ তাদেরকেই দেখতে হয় তারাইতো পেছনে থেকে সবরকম সাহায্য সহযোগিতা করেছেন, উৎসাহ জুগিয়েছেন এই সামান্য অধিকার তারা অর্জন করবেন না কেন ? কথায় বলে অধিকার কেউ দান করে না, নিজেকেই অর্জন করতে হয় অধিকার পাওয়া মানুষ না থাকলে নাহলে দেশ চালাবে কে ?

একবার চোখ খুলে দেখুন বৃটেনের কি হাল সরকারের তহবিল থেকে কয়েক পেন্স দিয়ে কুকুরের খাবারের বিল দিয়েছে তাতেই চাকরী নট একবারও ভেবে দেখেছে এভাবে চাকরী নট হলে দেশে থাকবে কি ? দেশ চালাবে কে ? ওরাই তো একবার হিসেব করে দেখাল শতকরা ৯৪ জন নাকি ৯৬ জন জীবনে কখনো না কখনো চুরি করেছে নিজেরাই স্বীকার করেছে তাহলে চুরি করেনি এমন মানুষ পাবেন কোথায় ?

ওসব কথার কথা কেউ যখন জনগনের সমর্থন পায় তখন সবাই উঠেপড়ে লাগে তার পেছনে যে কয়েক পেন্স হিসেবে গড়মিল করেছে তাকেই টেনে সামনে আনে যারা বড়বড় কথা বলছে তারা যেন ধোয়া তুলসীপাতা। সব দেশেই তাই হয় আর মানুষ খারাপটাই শেখে

মানুষকে তার অধিকার দিতে শিখুন নেতা হলে তার কিছুটা অগ্রাধিকার থাকতে হয় নেতা সামনে থাকে আপনারা পেছনে থাকেন সেজন্যই তিনি নেতা এই অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশকে নেতৃত্ব শুন্য করার ষড়যন্ত্রে যারা লিপ্ত তাদের কথায় কান দেবেন না। কতজন কতভাবে উপকৃত হচ্ছে জানেননা তো।

পরিচিত একজন এসে বলল, বস সুন্দর কইরা একটা অফিসের নাম প্রিন্ট কইরা দ্যান। দরজায় লাগামু।

জিজ্ঞেস করলাম, দরজায় নাম লাগানো প্রয়োজন হল কেন ?

সে বলল, একটা ফান্ড পাইছি। অফিস দ্যাখতে আইব না, তবু যদি আইসা পড়ে। একদিনের জন্য লাগামু।

ঘাবড়ে গিয়ে বললাম, আমার দরজায় লাগিয়ে আমাকে বিপদে ফেলবেন!

সে বলল, আরে ঘাবড়াইয়েন না। আমার দল ক্ষমতায়। কিছু করার থাকলে কণ।

কাজেই নেতাকে নেতৃত্ব করার অধিকার দিন দেশ এবং দশের উপকারের স্বার্থে তাকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিন অনুসারীদের উপকার করতে না দিলে, দুচারজনকে শাসন করতে না দিলে তিনি নেতৃত্ব করবেন কিভাবে ?

0 comments:

 

Browse