কর্তা ইচ্ছা কর্ম

Jun 2, 2009

আমরা আবারো বাজেটের অপেক্ষায়। কিছু কিছু জিনিষের ষ্টক শুরু হয়ে গেছে। দোকানদাররা জানে কোনসময় কোন জিনিষ ষ্টক করতে হয়। এক সিগারেটে একটাকা বেশি। চায়ের কাপে একটাকা বেশি। কারন, বাজেটে ট্যাক্স বাড়ব। দাম বাড়ালো কে ? কোম্পানী ? সরকার ? সরকারতো এখনো জানায়নি কিসের ট্যাক্স বাড়বে ?

- আমাগো কইয়া লাভ কি। আমরা বেশি দামে কিনি, বেশি দামে বেচি। দ্যাহেন না ধারদেনা কইরা কয়েক প্যাকেট কিন্যা রাখছি। তেমুন দেখলে বিক্রি বন্ধ।

বিক্রি বন্ধ হয় না। বাজারে জিনিষ নেই তার অর্থ এই না যে আপনি কিনতে পাবেন না। বাজারে নেই অর্থ আরো টাকা ঝাড়ুন। যত চান তত পাবেন।

বাজেটে গরীব মানুষের স্বার্থ সংরক্ষন করা হবে, কোনরকম নতুন ট্যাক্স ধরা হবে না, জনগনের ওপর কোন প্রভাব পড়বে না। তবে ট্যাক্সের আওতা বাড়বে। লক্ষ কোটি টাকার বাজেট হবে, আশি হাজার কোটি টাকা আদায় করা হবে, প্রত্যক্ষ ট্যাক্স বাড়বে, থুরি- ট্যাক্সের আওতা বাড়বে। গাড়ি থাকলেই ট্যাক্স। আয়কর অবকাস থাকবে না। ইউনিয়ন পর্যায়ে ব্যবসার জন্য ট্যাক্স নেয়া হবে। আবারও মনে করিয়ে দেই, গরীবের কোনরকম সমস্যা হতে দেয়া হবে না। বলেছেন টাকা মন্ত্রী।

অতীত কখনো পিছু ছাড়ে না। ছায়ার মত লেগে থাকে। বারবার জোটসরকারের কথা এসে হাজির হয়, জরুরী সরকারের কথা হাজির হয়। তারা জরুরী ভাবে দেশ মেরামতের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। জিনিষের দাম বাড়ায় কে ? কার ঘাড়ে কয়টা মাথা ? গুদামে ষ্টক করা, এতবড় সাহস ? দেশ এতদিন চলেছে কিভাবে ? আমরা দেখিয়ে দিচ্ছি দেশ কিভাবে চালাতে হয়।

তবে পোদ্দারী বেশিদিন চলল না। জিনিষের দাম বন্যার পানির মত বাড়তে থাকল। ব্যবসায়ীদের ডাকা হল। এবার আর তলব নয়, আলোচনা। কথা দিচ্ছি কোন ব্যবসায়ীকে জেলে ঢোকানো হবে না। আপনারা নির্ভয়ে ব্যবসা করুন। ব্যবসাতেই দেশের উন্নতি। দেশের উন্নতিতে অবদান রাখুন।

বাপরে! ব্যবসায়ীদের এত ঝাঝ।

এখনো, ব্যবসায়ীরা মুখ খোলেননি। তাদের সামনে মুলো ঝুলে রয়েছে, আমেরিকার মত তাদেরও অর্থ সাহায্য দেয়া হবে। আগে সেটা হাতে আসুক।

কালো টাকা সাদা করবেন ? শেয়ার বাজারে টাকা দিন। বাড়ি করুন, জমি কিনুন, ইন্ডাষ্ট্রি করুন। টাকার উস খোজ করা হবে না। জানেন না আমেরিকা কি করে (করত) ? আপনার পড়নের জামা-কাপড় থেকে শুরু করে সবকিছুর ট্যাক্স দিতে হবে কিন্তু বিলিয়ন ডলার আয় করলে ট্যাক্স দিতে হবে না। বিলিয়ন ডলার আয় করার যোগ্যতা যার আছে তার ট্যাক্স না দেয়ার যোগ্যতাও আছে। আমরা কি তাদের থেকে এতই পিছিয়ে যে সেটা করতে পারব না। এভাবেই একটু একটু করে শিখতে হয়। আপনাকে ট্যাক্স দিতে হবে।

কি বললেন ? ভাড়িভাড়া বেশি ? ছেলেমেয়ের স্কুলের বেতন বেশি ? যাতায়াত খরচ বেশি ? জিনিষের দাম বেশি ? এই আয়ে নিজেরই চলে না ?

এই পুরানো কথা আর কতকাল শুনতে হবে ? আপনারা একসময় জমিদারের খাজনা দিতেও একথা বলতেন। এখন আধুনিক দেশেও একথা বলছেন। এসব বন্ধ করুন। ট্যাক্স না দিলে জেল। পারলে কোটি টাকা উপায় করুন, প্রশ্ন করা হবে না। নয়ত ট্যাক্স দিন।

আগের সরকার ব্যবস্থা করেছিলেন যারা অপরাধ স্বিকার করে ক্ষমা চাইবে তাদের ক্ষমা করা হবে। অর্থদন্ড ছাড়া অন্য দন্ড দেয়া হবে না। সরকার পাল্টানোর পর সে সিদ্ধান্তও পাল্টে গেছে। তারা দুর্নীতি করেছেন, শাস্তি পেতে হবে। যারা অপরাধ স্বিকার করেননি তারা নিশ্চয়ই বলছেন, ভাগ্যিস ওই ভুল করিনি। জীবনেও করবনা।

আর যারা ভুল করেই ফেলেছেন। তাদের কথা শোনে কে ?

কথা ওঠায় একজন গল্প শোনালেন। দুব্যক্তি এক যায়গায় বসে আলাপ করছিল। তাদের আলাপটা এমন;

- তর বাপের নাম কি ?

- আব্বাস।

- তর --- দিমু গাব গাছ।

- তর বাপের নাম ?

- আমজাদ।

- তর --- দিমু কাঠাল গাছ।

- মিলল না তো।

না মিলুক, দিলাম তো।

0 comments:

 

Browse