সাফল্যের সিড়ি

Jan 30, 2010
সাফল্যলাভ কেনা চায়। সাফল্যলাভের পথ দেখিয়ে ডেল কার্নেগি নিজে রীতিমত সফল হয়েছেন। বহু টাকা মালিক হয়েছেন। তারমানে সাফল্যলাভের পথ দেখানোও রীতিমত জমকালো ব্যবসা। পথ জানতে গাটের টাকা খরচ করতে হয়। এখানে অবশ্য সে সম্ভাবনা নেই। একেবারে বিনামুল্যে সফল হওয়ার পদ্ধতি ফর্মূলা দিয়ে দেয়া হচ্ছে। বাকীটা আপনার। খরচাপাতি যা করার পথেই করবেন।
তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।
প্রথম ধাপ। কিছু অর্থের মালিক হতে হবে। কিভাবে সেপ্রশ্ন করবেন না। যেভাবে পারেন সেভাবে। আপনাকে কেউ যখন নির্লজ্জের মত বলে ট্যাকা কামাইতে পথে নামছি, লজ্জা করলে চলব, তখন জেনে নেবেন লজ্জা থাকতে নেই। ট্যাকা কামানো যেখানে কথা সেখানে সবই করা যায়। যুদ্ধে আর প্রেমে নাকি নীতি থাকতে নেই। আমাদের নেতারা বলেন রাজনীতিতে শেষকথা বলে কিছু নেই। আপনি এই লিষ্টে টাকা জুড়ে দিতে পারেন।
প্রবাদ আছে একটা পয়সা যদি কারো হাত থেকে গড়িয়ে পরে, গড়িয়ে গড়িয়ে কোনকিছুর আড়ালে লুকায়, সেটার মালিক নেই। এছাড়া প্রতিটি টাকা-পয়সা, ডলার-পেন্স যাই বলুন না কেন, কেউ না কেউ মালিক রয়েছে। আপনাকে কারো কাছ থেকেই নিতে হবে। এটা বাস্তবতা। ভালভাবে না দিলে থাবা দিন।
দ্বিতীয় ধাপ। টাকা খরচ করুন। টাকা জমিয়ে রাখার বস্তু না। আপনার ব্যাংকে, বিছানার তলায় কত রেখেছেন তাতে কিছু যায় আসে না। মরার পর কেউ সেগুলো আপনার কবরে নামিয়ে দেবে না মিশরীয়দের মত। কাজেই খরচ করুন। যায়গা বুঝে।
পাড়ার একজনকে একদিন ডেকে হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে দিন। বলুন, ল- তোরা ভাগাভাগি কইরা লইস। আনন্দফুর্তি করিশ। ব্যাস, হয়ে গেল। পুরোপুরি একটা দল এসে গেল আপনার আওতায়। একবার ডেকেই দেখুন, দল এসে হাজির। অমুক ভাই ডাকছে না গিয়া পারি। তারমত মহত, জনদরদী আরে নাকি জগতে। খরচ হয়ে যাচ্ছে একথা একবারও ভাববেন না। এটা বিনিয়োগ। শতগুন, হাজারগুন হয়ে ফেরত আসবে।
তৃতীয় ধাপ। রাজনীতি শুরু করুন। অমুক নেতাকে অভিন্দন জানিয়ে রাস্তায় ব্যানার টাঙিয়ে দিন। তার ছবির সাথে নিজের ছবি। তার নামের সাথে নিজের নাম। সেই নেতাও জেনে যাবেন কে তার ভক্ত। কে পকেট খুলতে দ্বিধা করে না। কাকে ডাকলে পাশে পাওয়া যাবে।
ধাপ এই তিনটিই। কত সার্থকভাবে কত বুদ্ধিমত্তার সাথে পা ফেলবেন তার ওপর নির্ভর করে সাফল্য। অর্থ, নিরাপত্তা, লোকবল, জনসমর্থন, সন্মান, খ্যাতি যাকিছু মনে করতে পারেন সবই। সরকার বাড়ির যায়গা দিচ্ছে, আপনাকে ডিঙিয়ে যায় সাধ্য কার ? নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছেন আপনার নির্বাচনের ব্যয় লক্ষ টাকা। আর আপনার অভ্যর্থনার জন্য লোকে ব্যয় করছে কোটি টাকা। সেখানে আপনি দেবতা। হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ ভক্ত আপনার জন্য জীবন দেবার জন্য তৈরী। ঠিক পরের ধাপে যারা আছেন তারা সবাই। আমি যাত্রী না হইয়া বিমানে উঠি নাই, মন্ত্রীর অসন্মান দেইখা থাকতে না পাইরা দৌড়াইয়া গেছি- প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য।
কাজেই, যাত্রা শুরু করুন আজই। নির্ভয়ে।
সমস্যা একটাই। এখানেও প্রতিযোগিতা। কখনো কখনো হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। যায়গা তো খুব বেশি নেই। ১৬ কোটি মানুষের দেশে মাত্র ৩০০ জন এমপি।
কি আর করবেন। পৃথিবীটাই লড়াইয়ের যায়গা যে!

হিসেবের বাইরে

Jan 25, 2010
তাহলে! আমরা আর উন্নয়নশীল দেশের নাগরিক থাকছি না। পরিনত হচ্ছি মধ্যম আয়ের দেশের নাগরিকে। বাংলাদেশ ব্যাংক হিসেব কশে বলেছে বড়জোর চার বছর। এরমধ্যেই-
চার বছর শব্দটি হঠা করেই খুব তাপর্যপুর্ন হয়ে দাড়িয়েছে। দেশে শিক্ষিতের হার শতভাগ হয়ে যাচ্ছে এই সময়ে। মাত্র ১০ ভাগ স্কুলে যায় না। টিফিনের সময় খাবারের ব্যবস্থা করলেই ওরা এসে যাবে। সেজন্য ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন হয়ে যাচ্ছে। কৃষকের বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তারা শুধু ট্রান্সফরমার কিনলেই হবে। তার প্রয়োজন হলে সেটাও নয় কিনে দেবে। তারপর বিদ্যুত-পানির অভাব নেই। তরতর করে মাঠের ফসল বাড়তে থাকবে। নিজেরা সব খেয়ে প্রয়োজনে রপ্তানি। আর আমাদের ধরে কে ?
চার মহাত্ম আরো আছে। চার বছরে দেশের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৫০ শতাংশ। বাকি চার বছরে আরো ৫০ শতাংশ। তাহলেই শত শতাংশ। চারে-চারে ...
স্কুলে অংকটা ঠিকমত শেখা হয়নি। তখন উন্নত স্কুল ছিল না কিনা। তখন ছিল দরিদ্র দেশ। কোনমতে সরকারী স্কুলে হাজিরা দিতে হত। এখন নাহয় এখানে ওখানে আমেরিকান-ইউরোপিয়ান সব ধরনের স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটি হয়েছে। লাখ টাকা ফি দিতে মানুষ লাইন দিচ্ছে। স্কুলের সামনে শতশত গাড়ির বহর। এই না হলে উন্নতি। মানুষের সামর্থ্য বেড়েছে বলেই না খরচ করছে। আয় না থাকলে একবেলা খাবার জন্য হাজার টাকা খরচ করছে কিভাবে ? একসময় কোকাকোলা খেতে হত কাচের এত্তটুকু বোতলে। খেয়ে আবার বোতল ফেরত দিতে হত। রীতিমত ছোটলোকি কারবার। ওইটুকু খেয়ে কি প্রান ঠান্ডা হয়। এখন খাবেন লিটার কে লিটার। বোতল ফেরত দিতে হবে না। আগের মত চিকন একটা পাইপ লাগিয়ে টানতে হবে না, সোজা গলায় ঢেলে দেবেন। কোকাকোলায় যদি এনার্জি না পান তাহলে এনার্জি ড্রিংক। এসব না হলে কি পাল্লা দেয়া যায় ইউরোপ-আমেরিকার সাথে ? ওরাও টাইগার খায় কৌটায়। সমানে সমান।
একসময় অসুখ হলেও মানুষ যেত কবিরাজের কাছে। নয়ত ওই ডাক্তারের মিকচার নিতে। একটা বোতলে কি-কি দিয়ে ওষুধ বানিয়ে মাপ বোঝার জন্য একটা কাগজ লাগিয়ে দিত। একবারে এক দাগ। আর ধারেকাছে হাসপাতাল থাকলে সেখানে গেলেও চলত। উন্নত দেশে ওসব চলে না। হাসপাতাল আবার কি জিনিষ ? ওইসব জংলি চিকিসা নিয়ে মানুষ বাচে ? ওসব নিয়ে বিদেশের সাথে টেক্কা দেযা যায় ? নাকি মুখ দেখানো যায় ? ওটা হবে হসপিটাল নয়ত ক্লিনিক। দেশেই যদি বিদেশের ব্যবস্থা না থাকে তাহলে দেশটা বিদেশ হবে কিভাবে ?
মাত্র চার বছর। তারপরই দেশই বিদেশ।
সমস্যা বোধহয় একটুখানিই। একেবারে সামান্য। বহু লক্ষ মানুষ সত্যিকারের বিদেশে গিয়ে দেশে টাকা পাঠায়। সরকারও প্রতিনিয়তই বলে বছরে লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান করা হবে। নতুন নতুন দেশ খুজে সেখানে লোক পাঠানো হবে। কেউ কেউ বলে ওদের পাঠানো টাকায়ই নাকি দেশ চলে।
ওরা যদি কোনমতে জেনে যায় দেশটাই বিদেশ হয়ে যাচ্ছে, টাকার জন্য অন্য দেশে যাওয়ার প্রয়োজন নেই, শিক্ষা-চিকিসা কোনকিছুর জন্যই বিদেশ দরকার নেই, এমনকি খাওয়া-দাওয়া, পোষাক-চুল সবই এখানেই বিদেশী তখন কি হবে ?
তারা যদি বাইরে না যায় ? যদি টাকা না পাঠায় ?
এই হিসেব বোধহয় করা হয়নি।

নিজে বাচলে বাপের নাম

Jan 22, 2010
বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাতায় নাম না থাকতে পারে, বিশ্বব্যাপি খবরের হেডলাইন হতে বাধা নেই। এমন ছবির বিষয় হওয়ার সৌভাগ্য বিশ্বের আর কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়না। চারিদিকে ডজন ডজন পুলিশ, তারই মাঝখানে একজন আরেকজনের মাথায় আঘাত করছে অস্ত্র দিয়ে।
এটাই একমাত্র ছবি না। ওয়েষ্টার্ন ছবির ষ্টাইলে গুলি ছুড়ছে একজন। আরেক ছবিতে দলবেধে হাতে অস্ত্র নিয়ে ছুটে চলেছে বীর সেনানীরা। দেশের আগামী দিনের নেতৃত্ব।
ছবির সাথে খবরও রয়েছে। পুলিশ কাউকে ধরেনি (ধরতে পারেনি বললেও চলে), তবে পরে মামলা করা হয়েছে। যদি ছবিতে পুলিশদলের মুখভঙ্গি লক্ষ্য করে থাকেন তাহলে আপনি নিশ্চয়ই নিশ্চিত, ধরার কিংবা খুনাখুনিতে বাধা দেয়ার কোন ইচ্ছে তাদের ছিল না। বরং চোখের সামনে হলিউডি-বলিউডি দৃশ্য দেখা যাচ্ছে যখন তখন বিনে পয়সায় দেখে নেয়া যাক, এটাই প্রকাশ পেয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবারও হুংকার দিয়ে বলবেন কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে, এটা তো জানাই।
ছবির ব্যক্তিদের পরিচয় নিয়েও কথা ছাপা হয়েছে। কেউ সাদামাটা ভাবে বলে গেছেন ছাত্রহলের দুই গ্রুপের সন্ত্রাস। কেউ আবার ছবির ব্যক্তিদের নাম, ঠিকানা, পরিচয় উল্লেখ করে চিনিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা/কর্মী হিসেবে।
আসলে ছাত্রদল কিংবা ছাত্রলীগ, তারা যে শক্তি ধারন করেন তা কখনো কখনো দেখানো প্রয়োজন হবে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। প্রতিদিন যখন ছাত্রলীগ খবরে প্রাধান্য পাচ্ছে তখন ছাত্রদলই বা পিছিয়ে থাকবে কেন ? তারা কম কিসে ?
আমার আপত্তি অন্যখানে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এমনই একটা যায়গায় যার পাশের রাস্তা দিয়ে সাধারন মানুষকে চলাফেরা করতে হয়। প্রতিদিন-প্রতিমুহুর্তে লক্ষ লক্ষ মানুষ চলছে ওদিক দিয়েই। তারা নিশ্চয়ই অস্ত্র নিয়ে বেড়ায় না। পুলিশের মত হেলমেট-পোসাক পড়ে না। ধারেকাছে থাকলে পুলিশ তাদের ধরতেও কার্পন্য করবে না। তারা কোন দলের একথা বলার জন্য কেউ সামনে গলা বাড়াবে না। তাদের পক্ষে কোন জাতিয় নেতা এগিয়ে আসবে না। যার অর্থ তারা একেবারে অরক্ষিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাদের জন্য ওয়ারজোন। কখন কোনদিক থেকে আঘাত আসবে জানার উপায় নেই। (অন্য বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখ না করলেও চলে কারন সেখানে অন্তত এত মানুষ এভাবে চলাফেরা করে না।)
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এই দলে ফেলা যায় না। মানুষকে যেতেই হয়। নিজের জীবন বাচাতে হয়। নিজে বাচলে বাপের নাম। অন্তত বাপের নাম রাখার জন্যও নিজের জীবন বাচাতে হয়।
কাজেই, আমার সহজ-সরল বক্তব্য, যুদ্ধক্ষেত্রকে পৃথক রাখার উদ্দ্যোগ নিন। চারিদিকের সাধারন মানুষের চলাচলের পথ থেকে নিরাপদ দুরত্ব অথবা নিরাপদ বেষ্ঠনী দিয়ে এমনভাবে রাখুন যেন বাইরের পথচারী যুদ্ধ এড়িয়ে চলতে পারে।
ভেতরে তারা স্বাধীনভাবে শক্তি পরীক্ষা করুন, আগামী দিনের দেশ পরিচালনার প্রস্তুতি নিন। এই প্রস্তুতিকালে কে আহত হল, কে নিহত হল তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না।

শয়তানের পাঠশালা

Jan 15, 2010
শয়তানের পক্ষে একা বিশ্বজুড়ে শয়তানি চালানো সম্ভব না। কাজেই তাকে স্কুল খুলতে হয়। শয়তান অবশ্য কোচিং সেন্টারের মত এখানে সেখানে শাখা-প্রশাখা খুলে অন্যদের দিয়ে ক্লাশ নেয় না। নিজেই শেখায়। পরীক্ষা নেয়।
একদিন নবীন শিক্ষার্থীদের চুড়ান্ত পরীক্ষা। সারাদিনে কে কতটা শয়তানী করেছে তার হিসেব নেবার পালা। 
একে একে সবাই বলে গেল কে কতজনের মাথা ফাটিয়েছে, কে মারা গেছে এইসব। সেখানে তার কৃতিত্ব কতটা তুলে ধরল।
এককোনে বসে ছিল ছোটখাট গড়নের এক মিচকে শয়তান। এবার তার পালা। সে বলল, আমি এক যায়গায় দেয়ালে একটু গুড় লাগিয়ে রেখেছি।
শয়তান অবাক। আচ্ছা এই তাহলে তোমার শয়তানী। ব্যাখা কর।
সে বলল, ওই গুড় খেতে সার বেধে পিপড়ের দল আসবে। তাদের ধরতে এসে হাজির হবে টিকটিকি। তাকে ধরতে হাজির হবে বেড়াল। তাকে তাড়া করবে কুকুর। এনিয়ে বিড়ালমালিক, কুকুরমালিকের সাথে শুরু হবে গন্ডগোল। একবাড়ি থেকে আরেক বাড়ি, তারপর এলাকা জুড়ে। মারামারি, খুনাখুনি। তারপর পুলিশ, থানা, উকিল, জজ, সরকার-বিরোধীদল সবাই জড়াবে এরসাথে। এটাই শুরু করেছি গুড় দিয়ে।
শয়তান বলল, সাবাস!
যুগ যুগ ধরে শয়তানের ছবি একেছেন বহু শিল্পী। তাদের ছবি দেখে যদি শয়তান চিনতে চান তাহলে ভুল করবেন। শয়তানের মাথায় গরুর মত শিং থাকে না। গায়ে বড়বড় লোম থাকে না। মুলোর মত দাত থাকে না। আসলে যে কোন প্রানীর কথাই ভাবুন না কেন, কোন প্রানীকেই শয়তানের পর্যায়ে ফেলা যায় না। তাদের বড়জোর অসভ্য, বুনো, হিংস্র এসব বৈশিষ্ট থাকতে পারে। শয়তানের প্রধান বৈশিষ্ট নেই। কারন শয়তানের প্রধান বৈশিষ্ট-
অন্যকে আকর্ষন করা।
ভাল পোষাক, ভাল চেহারা, ভাল ব্যবহার, যথেষ্ট আর্থিক সামর্থ্য, যথেষ্ট সমর্থন, মোলায়েম কথা, মোলায়েম বানী। একেবারে গুড়ের মত। যার আকর্ষনে পিপড়ের মত সারবেধে অন্যেরা এসে হাজির হবে। তারপর কি কারনে সেটা বোঝার আগেই শুরু হবে গন্ডগোল। এর কারন কি তা কখনো জানার চেষ্টা করবে না। কখনও জানবেও না। বরং কে কতটা শক্তি পরীক্ষা দিতে পারে তার পরীক্ষা চলবে। বিচারের পদ্ধতি একটাই, পক্ষে কতজন, বিপক্ষে কতজন। কে কে।
বিচারের ফলও একেক জনের কাছে একেকরকম। কেউ সরাসরী জয়ী, কেউ অবস্থার কারনে জয়ী, কেউ অবস্থার কারনে পরাজিত। আরো কাছে একবারই পরীক্ষার শেষ, কারো কাছে সবে শুরু। কেবল মোক্ষম সময়ের অপেক্ষা।
মোটকথা শয়তানীর জন্য বুদ্ধি প্রয়োজন। গুরু প্রয়োজন। প্রশিক্ষন প্রয়োজন। তবেই জগতজুড়ে শয়তানির কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা সম্ভব। একতাই বল। শয়তানের প্রথম গুন ভালমানুষের একতা নষ্ট করে শয়তানীর একতা প্রতিষ্ঠা করা। সে চুরি-ডাকাতিই বলুন আর সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী বলুন আর মাস্তানী-চাদাবাজি বলুন। একতা থাকতে হয়। একাজে ফল ফলে সাথেসাথে কাজেই একতাও হয় সহজেই।
শয়তানীর প্রতিবাদ করব একথা বলে কখনো একতা হয়না।

হাউজ অব লর্ডস

Jan 11, 2010
একসময় তিনি ল্যান্ডলর্ড ছিলেন। ল্যান্ড যখন হাতছাড়া হল তখন লর্ডটাকে নামের সাথেই রেখে দিয়েছিলেন লর্ড ভানু বন্দোপাধ্যায়। তিনি যদি ল্যান্ড ছাড়াই লর্ডগীরি ধরে রাখতে পারেন তাহলে যাদের ল্যান্ড আছে তারাই বা পিছিয়ে থাকবেন কেন ?
পিছিয়ে নেই। বরং একেবারে সামনেই রয়েছেন বর্তমানের ল্যান্ডলর্ড। একসময় সরকার বাড়ি তৈরীর জন্য সহজ সর্তে লোন দিত। ছয তলার লোন নিয়ে তৈরী হত নিজের থাকার মত একতলা বাড়ি। অথচ কাগজে কলমে দেখাতে হত তিনি ছয়তলাই বানিয়েছেন। ফল, একতলার ওপর কুতুব মিনারের মত ছয়তলা সমান স্থাপত্য। বাকি পাচতলার টাকা চলে যেত অন্য ব্যবসায়।
এঘটনা ঘটত দশক দুই-তিন আগে। এখন দাবার ছক উল্টে গেছে। এখন লোন নেবেন ব্যবসার নামে, শিল্পের নামে। যদি আইটি খাতে পরিচিতি দেখাতে পারেন তাহলে তো কথাই নেই। কুতুব মিনারের মত কিছু একটা দেখিয়ে দেবেন। আর টাকা ঢালবেন মাটি ভরাট করতে, বাড়ি তৈরী করতে। পত্রিকায় গর্বিত বিজ্ঞাপন, দশ বছরে দাম দশগুন।
দশ বছরে দাম দশগুন বাড়াতে যোগ্যতা লাগে। সবার এই যোগ্যতা থাকে না। সরকার কোন দলের, কোন ধরনের তাতে কিছু যায় আসে না, সবাই বৈঠকে তাদের ডাকে। মন্ত্রী তাকেই বলেন ওমুক কাজ যারা করে তাদের বের করে দিন। নিজেই নিজেকে কিভাবে বের করে দেয়া যায় সেপ্রশ্ন করবেন না।
কাজেই, দশবছরে দশগুন হবে এই নিয়মে যায়গা কিনুন। ফুরানোর আগেই কিনুন। বাড়ি তৈরী করুন। নয়ত তৈরী বাড়ি কিনুন। বুকিং দিলেই গাড়ি ফ্রি, টিভি ফ্রি, বিছানা ফ্রি। ঢাকা শহরের কেন্দ্র থেকে মাত্র দশ মিনিটের পথ।
আবারও পুরনো কথা। গুলিস্তান থেকে ফার্মগেট যেতে সময় লাগে দুঘন্টা। দশমিনিটের পথ আসলে কি সেপ্রশ্ন করবেন না।
কথা হচ্ছে, বাড়ির মালিক হতে হবে। ল্যান্ডলর্ড হতে হবে। তারপর আজীবন লর্ডগীরি চালিয়ে যাবেন। মাসেমাসে ভাড়া বাড়াবেন। গ্যাসবিল, বিদ্যুত বিল, পানি বিল, সুয়ারেজ বিল কত দিতে হবে সেটা নিজেই ঠিক করবেন। কতটুকু পানি ব্যবহার করবে সেটা সুইচ টিপে বলে দেবেন। কোনরকম অমত থাকলে একের বদলে আরেকজন। যার সামর্থ্য আছে। শুধু আপনি নন আপনার ভবিষ্যত প্রজন্মও নিশ্চিন্ত। কোনকিছু করা প্রয়োজন নেই। নিশ্চিত আয়ের নিশ্চিত সুযোগ। প্রয়োজন একটাই, লর্ডগীরি লাভ।
আর অন্য পক্ষ!
বিশ্বাস করুন আর নাই করুন এতকিছু সমস্যার মধ্যেও ভাড়াটিয়াদের একজোট হয়ে রাজপথে মিছিল করতে হয়। বক্তব্য, বাড়িভাড়ার নিয়ম চালু করা। বিদ্যুত বিল-পানি বিলের নিয়ম চালু করা। অগ্রীম ভাড়ার বিষয়ে নিয়ম চালু করা। লর্ডের সাথে চুক্তির নিয়ম চালু করা। এগুলি দেখার জন্য কাউকে দায়িত্ব দেয়া।
সমস্যা হচ্ছে, এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় কোথায়। নিয়মকানুন তৈরী কাজ করতে জনগনের ম্যান্ডেট নিয়ে যে ৩০০ জন সংসদে যান তাদের এত সময় কোথায়। তারা বড় মানুষ বড় সমস্যা সমাধানে ব্যস্ত। এসব তুচ্ছ বিষয় নিয়ে নষ্ট করার সময় তাদের নেই। ইংলন্ডে বলে হাউজ অব লর্ডস, শব্দটি বাংলা হলে এখানেও চালু করা যেত। আর এত কাজের মানুষই বা কোথায় ? সরকারকে কত সীমিত সম্পদ নিয়ে কাজ করতে হয়! পাই পয়সা হিসেব করে খরচ করতে হয়।
আর দায়িত্ব দেবেন কাকে ? সেতো কাউকে তার নিজেকেই বের করে দেয়ার ঘটনার পুনরাবৃত্তি। তারাতো কেউ ভাড়াটিয়া নন। সকলেই লর্ড।
কাজেই, হয় নিজে লর্ডে পরিনত হন। লর্ডগীরি দেখান। নয়ত লর্ডগীরি মেনে নেয়ার প্রস্তুতি নিন। দল বেধে পথে মিছিল করা হয়ত একদিন করতে পারেন, দ্বিতীয় দিন এদের দেখা পাবেন না। এই মিছিলের খবরও লর্ড তো দুরের কথা
এদেশে খারাপ কাজে জোট বাধার মানুষের অভাব নেই। অন্যায়ের প্রতিবাদে শতরকম আপত্তি। সমাধান যদি খুজতেই হয় কোন পথে কতটুকু সমাধান সম্ভব যাচাই করে নিন।

বুদ্ধিজীবী চেনার সহজ উপায়

Jan 9, 2010
মেয়েদের পদবী নিয়ে চিন্তিত ছিলেন সুকান্ত মিত্র যদি মিত্রা হয় তাহলে সেন হতে হয় সেনা তখন নাকি মেয়েদের চেনা কঠিন হবে ভানুর ভাষায়, জিনিষটারে ব্যাকরনে ফালাইলে বিষয়টা তাই দাড়ায়
সুকান্ত অল্পকথা বলেই কাজ সেরেছেন বর্তমানের সংকট তারচেয়ে অনেক বেশি অনেককিছুই চেনা কঠিন যেমন ধরুন বুদ্ধিজীবী যে শ্রমের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে সে শ্রমজীবী, যে কৃষিতে জীবিকা নির্বাহ করে সে কৃষিজীবী, যে চাকুরীর মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে সে চাকুরিজীবী সেই একই নিয়মে যে বুদ্ধিবৃত্তির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে সে বুদ্ধিজীবী এতে সন্দেহ প্রকাশ করার কোন কারন নেই সমস্যা হচ্ছে সেই বুদ্ধি পরিমাপের মাপকাঠি নিয়ে কে বড় বুদ্ধিজীবী কে ছোট বুদ্ধিজীবী সেটা নির্ধারন করা। গজ-ফিতে-বাটখারা দিয়ে মাপার ব্যবস্থা যখন নেই
নিতান্ত তুচ্ছ উদাহরনই দেখা যাক একজন ভিক্ষুক দিয়ে শুরু করুন তাকে কি জীবিকা নির্বাহের জন্য বুদ্ধি ব্যবহার করতে হয় ?
নিশ্চয়ই হয় সে সকলের সামনে হাত পাতে না কাউকে দেখে যাচাই করে হাত পাতলে সাফল্যে সম্ভাবনা কতটুকু ঠিক কি বলতে হবে, কোন শব্দ প্রয়োগ করতে হবে, কতটুকু আবেগ প্রকাশ করতে হবে এমনি কোন পোষাক পড়তে হবে, কোন ভঙ্গিতে হাটতে হবে এসব নিয়েও রীতিমত মাথা ঘামাতে হয় বুদ্ধি খরচ করতে হয় এরই জোরে তার জীবিকা তাকে বুদ্ধিজীবী বলতে আপত্তি কেন ?
কিংবা ধরুন রিক্সাচালক কেউ যখন জিজ্ঞেস করে অমুক যায়গায় যাবে কি-না, সাথেসাথে তার খুলির মধ্যে থাকা তার মস্তিস্ক কম্পিউটারের চেয়ে দ্রুত কাজ করতে শুরু করে একে দেখে কি মনে হচ্ছে। দামাদামি করবে না যা চাওয়া যায় তাই কি দেবে? পোষাক-স্বাস্থ্য-চেহারা-আচরন কি বলে যাওয়া কতটা জরুরী। জরুরী খরচ কি দেবে ? নাকি পরীক্ষা নিতে হবে ? আচ্ছা দেখা যাক চল্লিশ টাকা চাইলে কি কয়-
কিংবা ধরুন রাজপথের ছিনতাইকারী। তাকেও বুদ্ধি খরচ করতে হয়। লোক বাছাই করতে হয়। অত্যন্ত কঠিন কাজ। কারো দামী পোষাক-আষাক পকেট সদরঘাট, কারো মলিন পোষাক পকেটে লাখ টাকা। কারো রেসলারের মত স্বাস্থ্য কিন্তু থামালে প্যান্ট-সার্ট পর্যন্ত খুলে দেয়, কারো শরীরের হাড় দেখা যায় কিন্তু থামালে দৌড় দিয়ে প্রান বাচাতে হয়। এতসব বিবেচনা করেই তো ক্লায়েন্ট ধরতে হয়।
কিংবা মলম পার্টি। রীতিমত গবেষনা করে মলমের ব্যবস্থা করতে হয়। তারপর রীতিমত মনস্তাত্তিক পরীক্ষা দিয়ে মক্কেল ভাও করা। তবেইনা ইনকাম। মক্কেল প্রতি চারশ টাকা কি এমনি দেয়। যার বুদ্ধি বেশি সে আরো বেশি পায়।
মুল কথাটা আসলে সেখানেই। যার বুদ্ধি যত বেশি তার কামাই তত বেশি। যে যেত বুদ্ধি খাটাতে পারে সে তত উচুতে থাকে। তত প্রভাব, তত প্রতিপত্তি।
বুদ্ধিজীবী বাছাইয়ের কাজ আসলে সহজই। যার টাকা যত বেশি, প্রভাব যত বেশি, পরিচিতি যত বেশি, ক্ষমতা যত বেশি সে জীবিকার পেছনে তত বেশি বুদ্ধি ব্যয় করে। কাজেই সে তত বড় বুদ্ধিজীবী।

সেই দেয়াল কতদুর

Jan 6, 2010
প্রধানমন্ত্রী ঢাকা শহরের চারিদিকে চার উপশহর গড়ার ঘোষনা দিতেই পারেন, যারা মানুষের ঘরবাড়ি যায়গা জমি তৈরীর মহান দায়িত্ব দায়িত্ব কাধে নিয়েছেন তারা অতি সুলভে, অতি সহজে মানুষের উপকার করতে মেলা করতেই পারেন। দেড় মিলিয়ন মানুষ এই শিল্পে জড়িত সেকথাও শুনতে আপত্তি নেই। ভাড়াটিয়াদের সংগঠনের খবর শুনতেও আপত্তি নেই। তারপরও, ঢাকাবাসীর বাস্তবতা হচ্ছে বাড়িমালিকের বক্তব্য শুনতে হয়, সামনের মাসে দুই হাজার বাড়ায়া দিবেন। না পারলে বাড়ি ছাড়েন। অনেকে ঘুরতাছে।
হ্যা অনেকেই ঘুরছে। কেউ খরচ কমাতে কমাতে একবেলার খাবার খরচ বাদ দিয়েও যখন দেখে বাড়িভাড়ার টাকা জোটে না, তারওপর সামনের মাসে আরো দুই হাজার বাড়তি তখন ঘুরতেই হয়। আর কারো যখন টাকা রাখার যায়গা নেই, ব্যাংক ভরে গেছে তখন সেগুলি রাখার জন্যও নতুন বাড়ি খুজতে হয়। কাজেই ঘোরাঘুরি চলছেই।
দ্বিতীয় শ্রেনীর সংখ্যা-, নেহাত কমই। অন্তত শতকরা হিসেবে উল্লেখ করা যায় না। প্রথমভাগের সংখ্যা অনেক বেশি। কথা তাদেরই শুনতে হয়। আর শুধু বাড়িঅলাই বা কেন, রিক্সা অলাও ছেড়ে কথা বলে না। এই ট্যাকায় রিক্সা চড়তে চান! হাইট্যা যান। ট্যাক্সি হলে তো কথাই নেই। তারা দুধাপ উচুতে। একশ ট্যাকা বাড়ায়া দিবেন। মিটারে যাইবেন ? চলেন। দেহায়া দেই মিটার কারে কয়।
নিতান্ত অনভিজ্ঞ হলে চ্যালেঞ্জ করতেই পারেন। তারপর পকেটের টাকা দেয়ার সময় নিজেকেই গালাগালি করতে পারেন, একশ টাকা বেশি দেয়াই ভাল ছিল। এটা কি মিটার রে বাবা। দুশো টাকার দুরত্ব যেতে ভাড়া উঠল সাতশ টাকা। এই না হলে মেধাবী জাতি।
ইচ্ছে করলে বাড়িছাড়া হয়ে পথেও ঘুরতে পারেন, রিক্সা-ট্যাক্সি বাদ দিয়ে পায়ে ভরসা করেও চলতে পারেন (পার্থক্য এটুকুই, গাড়ির আগে গন্তব্যে পৌছানো যায়, টাকাটাও বাচে), কিন্তু পেটে কিছু দিতে হয়। ওটা ছাড়া যে চলা যায় না। তখন শুনতে হয় দোকানদারের কথা,
দাম বাড়তি। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ছে। নিলে নেন নাইলে যায়গা ছাড়েন।
চালের দাম বেশি বলে আটা কিনবেন সেকথা ভুলে যান। চালের ওপর চাপ কমাতে আলু খাবেন সেকথা ভুলে যান। বরং গরু-খাসির মাংশের ওপর চাপ কমাতে আলুর মাংশ খাওয়া যায় কিনা সেটাই বিবেচনার। ওগুলো যাদের শরীরে জমানো প্রয়োজন তাদের জন্য ছেড়ে দিন।
চারিদিকে যত দেখেন, যত মাথা নিচু হয়, তত জিদ চেপে বসে। নিজে যা পারিনি তা সন্তানকে দিয়ে করাব। ওকে যেন এমন অবস্থায় পড়তে না হয়। যেভাবেই হোক ওকে লেখাপড়া শেখাব। সমাজে মাথা উচু করে চলবে। দেশে-বিদেশে মানুষ প্রশংসা করবে। সব খরচ বাদ দিয়ে হলেও পড়ালেখার খরচ চালিয়ে যাব।
যেতে হয় বই বিক্রেতার কাছে। কিন্তু তারাই বা কম যায় কেন ? তারা কি এই সমাজে বাস করে না!
বই বিক্রেতা বলে, নতুন বছর, বই নিতে পারেন। সরকার বই পাল্টাইলে ফেরত পাইবেন না। সরকার কইছে বই ফ্রি দিব ? সরকারের কাছে যান। আমার কাছে আইছেন ক্যান ?
নোটবই বেচতে দিব না ? খাড়ান, হরতাল ডাকতাছি।
শিক্ষকের কাছে যাবেন ? তার বক্তব্যও তেমনি, এই ট্যাকায় কোচিং হয় না। এই স্কুলে ভর্তি করবেন ? মাসে কত কামান ?
ট্যাকা দেন। সব পাইবেন। কই পাইবেন ? চুরি করেন। ধান্দাবাজি করেন। যা পারেন করেন। না পারলে সমাজে মুখ দেহায়েন না।
কাজেই, চাপ চারিদিক থেকে না। যতরকম দিক আছে সবদিক আপনাকে বলে দিচ্ছে আপনাকে কোন পথে যেতে হবে। আপনিও ধরে নিচ্ছেন আমার আর কিছু করার নেই। এটাই বাচার পথ।
চুরি করতে হবে। যেখানে, যেভাবে সম্ভব। একসময় ঘুষখোর বলে একটা খারাপ শব্দ ছিল। এখন সেটাই যোগ্যতা।
কিন্তু চুরি করে সাফল্য পাওযা কি আপনার সাধ্যের মধ্যে ? চোরের ওপর যেখানে বাটপার বলে থাকে।
লোকে বলে দেয়ালে পিঠ ঠেকলে নাকি মানুষ আর পেছায় না। যেভাবে হোক ঘুরে দাড়ায়। সামনে এগোয়। বাধা দুর করে।
সেই দেয়াল কতদুর।

আমাদের সাথে লাগবেন না

Jan 4, 2010
কিছু মানুষ অপ্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে মাথা ঘামান। কারন ব্যাখ্যা করে বলতেই পারেন তাদের কোন কাজ নেই। থাকলে নিশ্চয়ই এনিয়ে সময় এবং অর্থব্যয় করা হত না। তাদের আবার অর্থেরও অভাব নেই। কিছু একটা দেখিয়ে সেই অর্থ পকেটে পুরতে হয়। সাথে নিজেদের কৃতিত্ব জাহির করাও হয়।
সারা পৃথিবীর ভাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা তৈরী করা হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয় যায়গা পায়নি। এটা কোন খবর হল ? আগে যখন কোনমতে একটা নাম নিভুনিভু করে টিকে ছিল তখনই সেটা জানা। আবার পুরনো কথা টেনে আনার দরকার কি ?
আর বিশ্ববিদ্যালয় কি অন্যসবকিছু থেকে আলাদা ? রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, সামাজিক আচরন এসব থেকে ? অন্য সবকিছু তালিকায় যেভাবে থাকে বিশ্ববিদ্যালয় সেভাবেই থাকবে, এটা আবার বলার মত কি হল! আসলে অন্যের দুর্নাম করার সুযোগ পেলে কেউ ছাড়তে চায় না।  বাংলাদেশ হলে তো কথাই নেই। যেন রাবন হাতে পেয়েছেন। নাকাল করো আরো, যে যেভাবে পারো-
আগে হিসেব করুন তো বেশি মানে কম, নাকি কম মানে বেশি ? জানেন পরীক্ষা যে যত বেশি নম্বর পায় সে তত ভাল ছাত্র। যে যত বেশি কামায় সে তত যোগ্য। তাহলে এখানে উল্টোহিসেবে যান কেন ? লম্বা একটা লিষ্ট বানান তারপর দেখুন কার নম্বর কত বেশি। সবচেয়ে বেশি হতে বাকি আছে ?
তাহলে উৎসাহ নিয়ে লাগা যায়। আমাদের ওপরে কেউ থাকতেই পারে না। সেটা হতে দেয়া হবে না।
আর যদি সত্যিকারের ফল জানতে চান তাহলে গবেষনার টাকাগুলো আমাদের হাতে দিন। দেখিয়ে দিচ্ছি দক্ষতা কাকে বলে। আপনারা স্কুলে পড়েন ১২ বছর, তারপর কলেজ। আমরা ১০ বছরে স্কুল শেষ করি। তারপর দুই বছরে কলেজ শেষ। তারপর ইউনিভার্সিটি। পারবেন আমাদের সাথে ? আপনারা বলেন অধ্যাপক হওয়ার জন্য নাকি শিক্ষক হিসেবে যুগ পার করতে হয়। কয়েকবার প্রমোশন পেতে হয়। আমরা ওই নিয়মে চলি না। জানেন অধ্যাপক গোলাম আযম কিসের অধ্যাপক ? কিংবা সেই অধ্যাপক পাতিমন্ত্রী ? তারা রীতিমত কলেজে অধ্যাপনা করে অধ্যাপক হয়েছেন। কোন কলেজ তাতে কি ? কোন পদে ছিলেন, কি করেছেন তাতে কি ? আমাদের এখানে জন্মসুত্রেও অধাপক হয়। আপনাদের ওবামা এতকিছু করেও নামের সাথে প্রফেসর লাগাতে পারেনি।
কাজেই ওসব বাজে কথা ছড়াবেন না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম আপনাদের লিষ্টে লাখবেন না, রাখবেন না। তাতে আমাদের বয়েই গেল। আমাদের সাথে ঠক্কর লাগার আগে আমাদের মত করে দেখান। ছাত্রনেতা সাংসদ হয়েছে দেখান। মন্ত্রী হয়েছে দেখান। আমাদের প্রয়োজন সাংসদ আর মন্ত্রী। দেশ তো তারাই চালায়।
যে শিক্ষা ব্যবস্থায় ছাত্রনেতা মন্ত্রী তারসাথে কখনো লাগবেন না। এক্কেরে-

শিখতে চান ???

Jan 3, 2010
শিক্ষায় আমাদের আগ্রহের অন্ত নেই। শেখায় এবং শেখানোয়। ঢাকা শহরের যেদিকে চোখ যায় পথের দুপাশে শুধুই স্কুল-কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয়। পোষ্টার-ব্যানার আর দেয়াল লিখন। অমুক স্যারের তমুক পদ্ধতি, অমুক স্যার তমুক যায়গায় পড়ান, অমুক স্যার নিজেই পড়ান, অমুক স্যার তমুক শিক্ষকদের আতংক। এদের অফিস আছে, বসার যায়গা আছে, শাখা-প্রশাখা আছে। কাজেই বড়বড় বিজ্ঞাপনও আছে। যদি চোখের জ্যোতি থাকে তাহলে দেয়ালের আরো কাছে যান। পড়াইতে চাই, পড়াব, গনিত শিখাই, শেখাব, অংক শেখাই, বাড়ি গিয়ে শেখাই, ইংরেজি শেখাই ইত্যাদি ইত্যাদি। হাতে লেখা ছোট ছোট বিজ্ঞাপন। এদের ব্যানার টাঙানোর অর্থ নেই, অফিস ভাড়া করার সামর্থ্য নেই। আছে শেখানোর আকুতি। বাড়ি বাড়ি ঘুরে শেখাবেন।
নিতান্তই বেরসিক হলে প্রশ্ন করতে পারেন যেদেশে প্রতি দুই সপ্তাহে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ১ লক্ষ সেখানে যুগ পার হলেও সরকার নতুন ইউনিভার্সিটির কথা মুখে আনে না কেন। শুধু সরকার কেন, বিরোধী দল, দেশের হর্তকর্তা বুদ্ধিজীবীরা।
হে-হে-হে-
তাইলে এইসব লক্ষ লক্ষ মানুষ বেকার হইব না। তারা করব কি ? আর ওইসব ইউনিভার্সিটির ঝামেলাও তো কম না। সারাবছর গন্ডগোল। সবাই কি আর কথা শোনে। অমুক দল করে, তমুক দল করে। তার ওপর যদি কেউ সত্যিসত্যি বইপত্র পড়তে শুরু করে, তারসাথে মিলাইতে চায়, প্রশ্ন করতে শুরু করে তাইলে বিপদ। ওই বিপদ ডাকা প্রয়োজন নাই। এই শিক্ষাই ভাল শিক্ষা। যেমনে চালাইবেন তেমনে চলব। প্রশ্ন করব না। কান্ধে একটা ব্যাগ ঝুলাইয়া সকাল থিক্যা রাত পর্যন্ত আড্ডা দিব। জীবন উপভোগ করব। হলিউডের টিভি-শো দেখায় না। ওই-যে, টিনেজাররা ক্যামনে জীবন উপভোগ করে। সেইডা করব। পাচ বছর পর, দশ বছর পর কি করব, ভাত কই পাইব জিগাইব না। তার দরকার কি ? জীবন একটাই, উপভোগ করা চাই। বর্তমানে বাপে আছে, ভবিষ্যতে নেতা আছে।
এরে কয় সার্বজনিন শিক্ষা। লোকে কয়, শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। ক্যান, খালি মেরুদন্ড ক্যান! বাকী যায়গা কি দোষ করছে ? আমাগো এই শিক্ষা মাথার চুল থিক্যা পায়ের নখ পর্যন্ত বিদ্যা ছড়ায়। ওইসব কলেজ ইউনিভার্সিটির দরকার হয় না। ছোট-বড়-মাঝারী, ধনী-গরীব- সকলেই শেখে। কত তাড়াতাড়ি শেখে তার নমুনা শুনবেন। ওই-যে, একসময় রাজাকার নিয়া বহুত আন্দোলন হইল। রাজাকারগো বিচার করবোই করব, সেই সময়ের ঘটনা। বাসে ভাড়া নিয়া ক্যাচাল। রাগ কইরা প্যাসেঞ্জার কইয়া বসল, ব্যাটা রাজাকার। আর যায় কোথায়। এক্কেরে হাতাহাতি।
তারপর ধরেন জরুরী সরকারের সময়। চারিদিকে রব উঠল দুর্নীতিবাজ, দুর্নীতিবাজ। ওইডারে মুক্ত করতে হইব। এক রিক্সাঅলার সাথে প্যাসেঞ্জারের লাগল। প্যাসেঞ্জার কইয়া বসল, ব্যাটা দুর্নীতিবাজ। রিক্সাঅলা কম যায় কিসে ? সে গলা চড়াল, দ্যাহেন খারাপ গালি দিবেন না।
আছে অন্য কোন শিক্ষা ব্যবস্থা! এত সহজে এইসব শিখাইতে পারে!!
এইদেশের মানুষ মেধাবী হইয়াই জন্মায়। ধার্মীক হইয়াই জন্মায়। তারপর কোরান-হাদিস শিখাইয়া দেয় ওইসব মোল্লারা। কত সুন্দর সুর কইরা, গল্প কইরা কথা কয়। অহন সিডি-ডিভিডির যুগে সিডি-ডিভিডিও পাওয়া যায়। বিশ্বাস না হয় যাচাই কইরা দ্যাখেন, দেশে একজনও পাইবেন না যে কোরান-হাদিস জানে না। নীতিকথা জানে না।
আর কি শিখতে চান কন-তো। আমেরিকান ষ্টাইলে সুর কইরা কথা কইবেন ? আমেরিকান পোষাক পড়বেন ? নাকি বলিউডের ? টিভি দ্যাখেন।
সমাজে কেমনে চলতে হয় শিখবেন ? চুরি-বাটপারি-জোচ্চুরি কেমনে হয় শিখবেন ? আরো দশটা টিভি চালু হইতাছে।
চাপাবাজি-গলাবাজি-বিবৃতিবাজি শিখতে চান ??

দেখবেন, শুনবেন, বলবেন না

Jan 1, 2010
সৃষ্টিকর্তা চোখ দিয়েছেন দুটি, কান দিয়েছেন দুটি আর মুখ দিয়েছেন মোটে একটি ইঙ্গিতে নাকি বুঝাতে চেয়েছেন তোমরা বেশি করে শোন, বেশি করে দেখ কথা কম বলো সেকাজ আমরা ভালই রপ্ত করেছি চোখের সামনে ছিনতাই হলে তাকিয়ে দেখি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিদিনই যখন হুংকার দেন কঠোর সাজা দেয়া হবে, তখন শুনি কথা বলি না এমনকি ছাত্রনেতা যখন শিক্ষক পেটায় তখনও দেখি, শিক্ষককে চিনতে পারেনি তাই পিটিয়েছে, এত কথা কিসের, সেই ব্যাখ্যা শুনি তখনও মুখ বন্ধ শুধু সাধারন মানুষই না, যে বুদ্ধিজীবী-বিশেষজ্ঞরা বিবৃতি দিতে দিতে বিবৃতিবাজ আখ্যা পেয়েছেন তারাও মুখ খোলেন না এর একটা কারন হতেই পারে, তারা স্বচক্ষে দেখেন নি সরকার যেমন বলেন সরকারের হাতে তথ্য নেই ওখানে কি ঘটেছে তাতে কি! দেশে কি খারাপ মানুষের অভাব আছে ? সরকারের ভাবমুর্তি-দেশের ভাবমুর্তি নষ্ট করার কতরকম চেষ্টা চলছে এটা সেই পরিকল্পনার নীল নক্সা হলেও হয়ে থাকতে পারে দরকার কি বাবা যায়গামত মুখ বন্ধ রাখার, যায়গামত খোলার কত সুবিধে এইতো, পু্র্বাচলের লটারী হয়ে গেল কারা পেয়েছে জানেন ? হে-হে-হে, আগামীতে আরো কত লটারী হবে-  
কে পিটিয়েছে বললেন ? লীগের নেতা ? ভুল করছেন না-তো আচ্ছা, আমরা খোজখবর নিচ্ছি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছি সময়মত বিবৃতি পাবেন
অন্তত পত্রিকার খবর অনুযায়ী গত এক বছরে লীগের পিটুনির হাত থেকে ছাত্র-শিক্ষক-ব্যবসায়ী-পুলিশ-আইনজীবী কেউই রেহাই পায়নি পিটাতে শক্তি লাগে সাহস লাগে সবাই পারে না যে পিটাতে পারে সে দেশ চালাতে পারে শক্তি না থাকলে কি দেশ চালানো যায়! না-কি উন্নতি করা যায় প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত তফতে রয়েছে ওসব থেকে আমি আগেই সরে গেছি বাবা- ওসবে নেই আমাকে দোষ দিও না
কাজেই, আমাদের সম্বল কান আর চোখ তবে আমরা সচেতন এমন সচেতন জাতি বিশ্বে আরেকটি নেই পাচ বছর দেশ চালানো দেখে আমরা বুঝে যাই এই সরকার দেশের কিছু করেনি শুধু নিজের পেট ভরেছে তখন, চলরে ভাই, ধানের শীষ না নৌকায় যাই তারপর একসময় দেখা যায় রং আলাদা হলেও কর্ম একই তখন বুদ্ধি খুলে যায় আমরা গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবোই করব আসো ভাইসব, রব তোল সেনাবাহিনী আমাদের গনতন্ত্র এনে দেবে ওইসব দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে আমাদের চলবে না খুজে খুজে স যোগ্য লোক দেখে ভোট দেব ওদের সবাইকে জেলে ঢুকাতে হবে দুর্নীতি করে যাকিছু কামিয়েছে সব আদায় করতে হবে বিদেশে যেগুলো পাচার করেছে সব ফেরত আনতে হবে পরিসংখ্যান দেখেননি দুর্নীতি বাদ দিলে বাংলাদেশ ধনী দেশে পরিনত হবে বছরে লক্ষ কোটি টাকা, বাপরে একবছরের বাজেটের পুরোটাই দুর্নীতি অর্থনীতিবিদ কি ভুল বলতে পারেন! দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীই আমাদের ভরসা
এখানেও বোধোদয় হতে সময় লাগে না এমনকি পাচ বছরও প্রয়োজন হয় না বুটের লাথি আর পিঠে বাড়ি খেয়ে কোনমতে কোমড় বাকা করে মুখ থেকে বেরয়, বাপরে, এরচেয়ে গনতন্ত্র ভাল ওরা নাহলে কি দেশ চলে ওদের বিনা কারনে হয়রানি করা হয়েছে মিথ্যে মামলা দেয়া হয়েছে চলরে ভাই, মাথায় করে সংসদে রেখে আসি ওদের ছাড়া কি দেশের উন্নতি হয়
তারাও জানেন কিভাবে মিথ্যে মামলা তুলে নিতে হয় শতশত, হাজার হাজার
আবারও চক্রের শুরুতে-
দিন যায়, মাস যায়, বছর যায় আমরা শুনে যাই দেখে যাই মুখ বন্ধই থাকে
 

Browse