প্রত্যেকে মোরা পরের তরে

Jun 24, 2010
শেখার কোন শেষ নেই। প্রতিদিন, প্রতি মুহুর্তে আমরা জ্ঞানলাভ করি। জ্ঞানলাভের জন্য পুস্তক এই নীতি বাতিল হয়েছে বহুকাল আগে। সারা বিশ্বই পুস্তক। প্রতিমুহুর্তে দর্শন এবং শ্রবন হচ্ছে সেই পুস্তক পাঠ। আর তার ফলে জ্ঞান আহরন। দর্শন এবং শ্রবনের জন্য বিশ্ব প্রদক্ষিনের প্রয়োজন নেই। স্যাটেলাইট বিশ্ব প্রদক্ষিন করছে আর সেই জ্ঞান বিতরন করছে।
নিজে যদি জ্ঞান আহরনে অপারগ হন তাহলে শিক্ষকের ব্যবস্থাও রয়েছে। তারা যুক্তি-তক্কো-গপ্পো দিয়ে তা ব্যাখ্যা করেন। কেউ কেউ রীতিমত খ্যাতিমান হয়েছেন এসব করে। এই নোয়াম চমস্কির কথাই ধরুন না কেন। কিংবা এলেক্স জোনসের কথা। নানারকম ব্যাখা দিয়ে তারা সব জ্ঞানে পারদর্শী করে তুলছেন সারা বিশ্বকে। এমন জগতগুরু কজন হতে পারে!
একজন যোগ্য শিক্ষক তার নিজের উদ্ভাবনী পদ্ধতি, বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি, বিশেষ বাচনভঙ্গি, বিশেষ অঙ্গঅঙ্গি ইত্যাদি দিয়ে কঠিন বিষয়কে তরল করে তোলেন। আপনি অর্থনীতি-রাজনীতি-সমরনীতি-সমাজনীতি বুঝছেন না ? আপনাকে নারকেল ভেঙে ভেতরের তরল পদার্থ দেখিয়ে দেয়া হবে।
আর কথা না বাড়িয়ে উদাহরন দেখা যাক।
মার্কিন সরকারের ভক্ত আমেরিকার বাইরে খুব বেশি নেই। এজন্য ইসরায়েল-প্যালেষ্টাইন কিংবা ইরাক-আফগানিস্তান কিংবা আরো আগের ভিয়েতনামের উদাহরন টানার প্রয়োজন নেই, বরং আপনার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলির দিকে দৃষ্টি দেয়াই যথেষ্ট। বাংলাদেশে অর্ধেকের বেশি মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে বাস করতে পারে, তারপরও কেএফসিতে লাইন ধরতে হবে। ওটা আমেরিকান খাবার। আমেরিকান পোষাক পড়ে সেখানে ভীড় জমাতে হবে। রাস্তার দুধারে সারি সারি গাড়ি থামিয়ে যানজট বানাতে হবে।
এই শিক্ষকেরা এর মুল কারন ব্যাখ্যা করছেন। আসলে আমেরিকা ওবামা চালায় না। বুশ-ক্নিনটনও চালায়নি। তাদের বিন্দুমাত্র ক্ষমতা নেই। মুল ক্ষমতা ওই ব্যবসায়ীদের হাতে। কেফসি-ম্যাকডোনাল্ড-কোকাকোলা-মনসান্টোদের। তারাই কলকাঠি নাড়েন আর তারসাথে মিল রেখে ওবামা-বুশ-কিলনটন হাত-পা-ঠোট নাড়েন।
এটাও অত্যন্ত বড় শিক্ষা। তারা পারলে আমরা পারব না কেন ? আমরা কম কিসে ?
শিখতে হবে, শিক্ষাকে কাজে লাগাতে হবে। আসল ক্ষমতা কার জানিয়ে দিতে হবে। আজকাল মন্ত্রীও অভিযোগ করেন তাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে।
এটাই কি স্বাভাবিক না! শিক্ষা তো একেই বলে। মন্ত্রী তাদের স্বার্থ দেখবেন, তারা মন্ত্রীর স্বার্থ দেখবে। সরকার জনগনের স্বার্থ দেখবে জনগন সরকারের স্বার্থ দেখবে। মন্ত্রী নেতারা নিজের ঘুম হারাম করে দেশের জন্য, জনগনের জন্য কাজ করবেন। জনগনের দুঃখ দুর্দশা দুর করার চেষ্টা করছেন। তাদের দুঃখ দুর্দশাই যদি না থাকে তাহলে তারা কার জন্য করবেন ? তাদের কাজের সুযোগ অন্তত রাখা উচিত। এই নিয়মের গড়মিল হলে বদহজম তো হতেই পারে।
বেসরকারী ইউনিভার্সিটির সব ক্ষমতা মালিকের হাতে দিয়ে আইন হচ্ছে। এটাই কি স্বাভাবিক না। এজন্যই তো তারা মালিক। ব্যবসার ধরন দেখে তারা ঠিক করবেন কখন কত টাকা মুনাফা করা যায়। সরকার তাদের না দেখলে কি তারা সরকারকে দেখবে ?
হাসপাতাল-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-বিদ্যুত এগুলো ব্যবসায়ীদের হাতে ছেড়ে দেয়া উচিত। তারা জানে কিভাবে ওগুলো ঠিকমত চালাতে হয়। আর টেলিফোন-খবরের কাগজ-টিভি এগুলো সরকারের হাতে থাকা উচিত। আর জনগনের জন্য রয়েছে উপদেশ। কেউ খালিহাতে ফিরবে না। তবেই না সমম্বয়। আপনি অন্যকে দেখবেন তবেই না অন্যে আপনাকে দেখবে।

অপদার্থবিদ্যা

Jun 23, 2010
ছোটবেলায় স্কুলে অনেক ধরনের প্রমান শেখানো হয়েছে। যেমন ধরুন বাতাস একটি পদার্থ তার প্রমান। একটি ফুলানো বেলুন এবং একটি চুপসানো বেলুন লই। দুইটিকে পাল্লার দুইদিকে রাখি। দেখা যাইবে ফুলানো বেলুনটির পাল্লা নিচের দিকে ঝুলিয়া রহিয়াছে। কাজেই বাতাসের ওজন আছে। পদার্থের ওজন থাকে। কাজেই বাতাস পদার্থ।
পদার্থের ওজন থাকে। কাজেই পাল্লা ব্যবহার করে তাকে মাপা সম্ভব। বিপরীত যুক্তিতে বলতেই পারেন অপদার্থের ওজন থাকে না, কাজেই তাহার পরিমাপ করা সম্ভব হইবে না।
পদার্থ-অপদার্থের হিসেব বেশ জটিল। অন্তত গ্যালিলিও-নিউটন-আইনষ্টাইন এর ব্যাখ্যা দিয়ে সুত্র তৈরী করে জাননি। আপনাকেই নিজ অভিজ্ঞতায় প্রতিমুহুর্তে যুক্তি দিয়ে যাচাই করতে হয় কোনটা পদার্থ, কোনটা অপদার্থ। জটিলতার শুরু সেখানেই।
শুরু করুন না রিক্সাচালক দিয়ে। এসি রুমে বইয়া বইয়া ঠ্যাং নাচান আর মাস গেলে লাখ টাকা নিয়া বাড়ি যান। কামের বুঝবেন কি। বুঝতেন যদি এই গরমে রিক্সা চালাইতেন। গোছল করতে পানি লাগে না। ঘামেই কাম সারে।
যদি যুক্তি দিয়ে পদার্থ-অপদার্থ হিসেব করতে চান তাহলে যিনি এসিরুমে বসে থেকে লাখটাকা কামান তিনি তুলনামুলক অপদার্থ। একেবারে অপদার্থ না বলে বরং তরল পদার্থ কিংবা বায়বীয় পদার্থ বলতে পারেন। আর রিক্সাচালক নিঃসন্দেহে কঠিন পদার্থ। সেই এসিরুমে বসা ভদ্রলোক বড়জোর মিনমিন করে বলতে পারেন, আচ্ছা আমি নয় একদিন রিক্সা চালাই, দেখি রিক্সা চলে কিনা। তুমি একদিন এসিরুমে বসে আমার কাজ কর। দেখি ফলটা কি দাড়ায়। অনেকটা সেই দোকানে দোকানে ঘুরে জিনিষ বিক্রি করার সেলসম্যানের মত। ঘুরতে যদি এত কষ্টই হয় তাহলে তুমি তৈরী কর, আমি বিক্রি করি। কিংবা কম্পিউটার প্রোগ্রামার আর মার্কেটিং এজেন্টের মত। তুমি প্রোগ্রামিং কর আমি কাজ খুজে আনি।
আগেই বলেছি বিষয়টি জটিল। এককথায় যদি মিটে যেত তাহলে সমস্যা বলে কিছু থাকত না। রিক্সাচালক সাথেসাথেই বলে বসত, ওইসব জটিল হিসাব আমার মাথায় খেলব না। ওইডা আপনে পারেন, আমি এইডা পারি।
জটিলতার কারনেই সেটা হয়না। রিক্সাচালকের বক্তব্য শুনুন বরং, সেই সুযোগ কি দিছেন ? সব তো নিজেদের দখলে রাখছেন। আল্লাও গরীবরে পছন্দ করে না। নাইলে একজনরে এসিরুম আর একজনরে ফুটপাতে থাকতে দেয়। দুইজনরে কি আলাদা কইরা বানাইছে।
পদার্থবিদ্যার নিয়ম আসলে অপদার্থবিদ্যায় খাটে না। এখানে যে যত কম কাজ করে সে তত সুখে থাকে। তত বেশি কামায়। যে যত পরিশ্রম করে তার অবস্থা তত করুণ। কোনমতে পেটেভাতে চলে।

জুরাসিক যুগ

Jun 22, 2010
জুরাসিক যুগে বিশাল আকারের এক ডাইনোসর ছিল। শরীরের তুলনায় মাথাটা একেবারেই ছোট। এতবড় শরীর এত ছোট মাথা চালাবে কিভাবে! সেজন্যই সৃষ্টিকর্তা তার লেজেও কিছুটা মস্তিস্ক দিয়েছিলেন। তাকে মস্তিস্ক বলা যায় কিনা সেনিয়ে তর্ক করতে পারেন, কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন তার লেজের মধ্যে এমন কিছু ছিল যা চিন্তা করতে পারত। ঠিক মাথার মগজের মতই।
ফল কিন্তু হয়েছিল একেবারে বিদঘুটে রকমের। মাথা বলত ওদিকে যাই, লেজ বলত না সেদিকে। ফলে তার দেহটি কোনদিকেই নড়ত না। এভাবেই, সিদ্ধান্ত নিতে না পেরে এক যায়গায় থেকে নাকি অনাহারে কাবু হয়ে মারা যেত।
মানুষ এদিক থেকে নিরাপদ। সেই প্রাচীনকালে লেজ খসানোর সাথেসাথে এই সম্ভাবনা একেবারে ঝেড়ে ফেলেছে। লেজই যদি না থাকে তাহলে বিপরীতদিকে টানবে কে ?
থামুন, থামুন।
একটু দেখুন তো চোখ মেলে। ওই যে পথে হেটে চলেছে ওই লোকটাকেই নাহয় দেখুন কিছুক্ষন। রীতিমত ভীড় থেলে চলতে হচ্ছে। (আজকাল পথে হাটার জন্যও শক্তিপরীক্ষা দিতে হয়। আগামীতে নিশ্চয়ই দুর্বলেরা পথে বেরবেন না। ডারউইনের তত্ত্ব, শক্তিশালীরাই টিকে থাকে)।
এই ভীড়ের মধ্যেই, হাটতে হাটতে সে থামল। চারিদিকের ধাক্কাগুতো সহ্য করে চারিদিকে তাকাচ্ছে। সামনে-পেছনে-ডাইনে-বায়ে। উল্টোদিকে ঘুরল। কয়েক পা হাটল। আবার ঘুরল। আবার কয়েক পা আগের পথেই। আবার থামল। আবার ঘুরল।
তার লেজ নেই সেটা দেখাই যাচ্ছে তাইবলে একই মস্তিস্ক কাজ করছে এমনটা বোধ হল না। এক মস্তিস্ক যদি কাজ করে তাহলে কোনদিকে যাবে ঠিক করতে পারছে না কেন ?
কিংবা পরিচিত কারো কথাই ধরুন না কেন। যেমন একজন বেকার (এই বিষয়ে গবেষনা করতে কোন সমস্যা নেই কারন বেকার অফুরন্ত)।
বছর দশেক আগে শুনেছেন সে চাকরী খুজছে। আরো শুনেছেন ব্যবসার চেষ্টা করছে। আরো শুনেছেন ড্রাইভিং শিখবে। আরো শুনেছেন কম্পিউটারের কাজ শিখবে। আরো শুনেছেন টাকা হাতে পেলে শেয়ার ব্যবসা করবে।
দেখা হওয়া জিজ্ঞেস করলেন, খবর কি ?
কয়টার খবর দরকার ?
এমন সুখে বাক্যালাপ শুনলে কার না মন ভাল হয়। নিশ্চয়ই ভাল জাকরী পেয়েছে। ফুর্তিতে আছে। সেটাই জানার চেষ্টা করলেন, চাকরী কেমন চলছে ?
-         চাকরী আর পাইলাম কই। দ্যাশে কি চাকরী বইলা কিছু আছে। আজকাল মামা-চাচায় হয় না, নেতা-মন্ত্রী লাগে।
-         তাহলে ব্যবসা করছেন বুঝি ? কিসের ব্যবসা ?
-         কিসের ব্যবসা করমু কন তো। আজ এই ব্যবসার ভাল দিন তো কাল ওই ব্যবসার। সব বাটপারের দখলে।
-         শেয়ার ব্যবসা করছেন নাকি ? সকলেই তো করছে। কমদামে কিনে বেশি দামে বিক্রি।
-         কি যে কন না। আমি কিনতে গেলে দেখি দাম বেশি, বেচতে গেলে কম।
-         কম্পিউটার শেখার খবর কি ?
-         ভাবতাছি ফটোশপ শিখমু। আর ওয়েব ডিজাইন। চাকরী-বাকরির দরকার নাই। ঘরে বইসা কাম করা যায়। আয় করা যায়।
-         দশ বছর আগে তো শুনেছিলাম ফটোশপ শিখবেন। ফটোশপ শিখতে কি দশ বছর লাগে ?
-         কি যে কন। একবার দেহায়া দিলেই পারি।
-         তাহলে শেখা হল না কেন ?
-         ওই একবারই তো কেউ মন দিয়া দেহায় না। আর ফটোশপ শিখমু নাকি অটোক্যাড শিখমু নাকি ম্যাক্স-মায়া শিখমু ঠিক করি নাই। দেহি না কয়দিন-
জুরাসিক যুগ শেষ হতে পারে, বৈশিষ্ট রেখেই গেছে।

মুর্খ হবেন না

Jun 17, 2010
অসম্ভব হচ্ছে মুর্খের শব্দ, বলেছিলেন নেপোলিয়ন।
তারজন্য কথাটা মানানসই। বিশ্বজয়কেও তিনি সম্ভব মনে করেছিলেন। সে চেষ্টা করেছিলেন তারমত আরো অনেকেই। আলেকজান্ডার থেকে চেঙ্গিস খান হয়ে হিটলার পর্যন্ত। কারো কারো শেষ উপলব্ধি ছিল বিশ্ব জয় করার জন্য জীবনটা ছোট। আরো কিছুদিন বেচে থাকলে নিশ্চয়ই সম্ভব হত।
কাজেই, কেউ কেউ যেমন বিজ্ঞাপনে বলেন তাদের সামর্থের সীমানা আকাশ পর্যন্ত তেমনি অনেককিছুরই সীমানা জীবন পর্যন্ত। আর জীবন বিষয়টিও অনিশ্চিত। কে জানত বেচারা আলেকজান্ডার মারা যাবেন ৩১ বছর বয়সে। যে বয়সে বাংলাদেশে একজন চাকরীর দেখা পায় না। এমনকি সেটা করার বয়স হয়েছে বলেও মনে করেনা।
সে যাকগে, বলছিলাম অসম্ভবের সাথে মুর্খের সম্পর্কের কথা। একজন মুর্খ ব্যক্তি অসম্ভব কাজের চেষ্টা করে। যখন নিশ্চিত জানে সেটা হবে না তারপরও।
যেমন ধরুন, ঢাকা শহরের যানজট নিরশন। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ মুর্খের মত আউড়ে যাচ্ছে কি করিলে কি হইবে। সরকার, ট্রাফিক পুলিশ, যানবাহন থেকে শুরু করে পথচারী পর্যন্ত সকলেই দোষী। সকলের সংশোধন করতে হবে। প্রয়োজনে ড্রাইভারদের লাইসেন্স নতুনভাবে দেয়া হোক থেকে শুরু করে মোড়ে মোড়ে ক্যামেরা বসানো পর্যন্ত সবই রয়েছে পরিকল্পনা। রীতি অনুযায়ী রাস্তায় দাগ কেটে দেখিয়ে দেবেন কোন গাড়ি কোথায় চলবে, মোড়ে মোলে লাল-সবুজ-হলুদ আলোকসজ্জা করবেন, সেটা পাহাড়া দেয়ার জন্য কয়েকজন ট্রাফিক পুলিশ দাড় করিয়ে রাখবেন। তারপরও হচ্ছে যাজনট। সেটা নিরসনের ব্যর্থ চেষ্টা। অসম্ভবকে সম্ভব করার চেষ্টা।
মুর্খ শব্দটাও এক্ষেত্রে একেবারেই বেমানান। এদের বলতে হয় ব্যাক্কল। নিজের গাড়িটা রাস্তার পাশে থামিয়ে রেখে খোজ করে, যানজট কেন হল ? ওটা তো হওয়ার কথা না। ওই যে, ওই গাড়িটা কার দ্যাহেন তো। সরায়া দ্যান। ভাগাড়ে নিয়া যান।
বিষয়টির শেষ আসলে অসম্ভবে, তারমানে মুর্খতায়।
মুর্খতার অন্য আরো অনেক উদাহরন দেয়া যায়। যানজটের মত সেটা নিয়েও কথাবার্তা কম হয় না, বরং আরো বেশি হয়। দুর্নীতি। সবারই বক্তব্য, আমি বাদে সবাই দুর্নীতিবাজ। সবাই চুরি করছে। টেন্ডাবাজি করছে। চাদাবাজি করছে। ঘুস নিচ্ছে। কোটিপতি হচ্ছে। ওদের ফাসিতে ঝুলানো উচিত। নিতান্ত গনতান্ত্রিক নীতিতে চলি বলে মারতে পারি না।
অবশ্য টেন্ডারবাজি বন্ধ করার নতুন পদ্ধতি বের করা হয়েছে। ওইযে পত্রিকায় দেখেননি, অর্থবছরের যাকিছু কাজ তা ভাগ করে নিয়েছে সাংসদ আর নেতারা। টেন্ডার মানেই টেন্ডারবাজি, মারামারি। পত্রিকায় ছবি-খবর। ওসব ঝামেলায় গিয়ে কাজ কি!
বিশ্বজয় করা নিশ্চয়ই সম্ভব। আরো আকাশ পাড়ি দেয়া যেমন সম্ভব ঠিক সেভাবেই। জগতে একটিমাত্র কাজই অসম্ভব, তা হচ্ছে নির্লজ্জকে লজ্জা দেয়া।
সে চেষ্টা করবেন না। নিজেকে মুর্খ বানাবেন না।

বাজেটে বিশেষজ্ঞপ্রাপ্তি

Jun 11, 2010
জুনের আগেই আপনি অনেক বিষয়ে আগাম প্রস্তুতি নিতে পারেন। লিষ্ট তৈরী করতে পারেন কোন জিনিষ আগাম কিনতে হবে, কোনটা কেনা বাদ দিতে হবে এইসব। টাকামন্ত্রী কখনো নতুন ট্যাক্স আদায় করেন না। আগেথেকেই যা আছে তার পরিধি বাড়ান। নিতান্ত মুর্খ হলে প্রশ্ন করতে পারেন নতুন ট্যাক্স বসানোর যায়গা আছে কোথায় ? পথে হাটতে গেলেও ট্যাক্স দিতে হয়। পায়ে যে জুতা-স্যান্ডেল দিয়েছে তার ওপর কর-মুসক দুইই দিতে হয়েছে। জেনেশুনে মুর্খতা না করাই ভাল। সে ইচ্ছে হলে জামাকাপড়-জুতা ছেড়ে বাইরে বেরন।
সেকথা যাকগে। এমনিতেই কাঠালপাকা গরম, তারওপর এসব অকারন বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাতে নেই। বরং ওইসব বস্তুগত বৃদ্ধির বাইরে যদি কোন বৃদ্ধি থাকে সেটা একবার দেখে নেয়া যাক।
এইযুগে নিশ্চয়ই আপনার টিভি ছাড়া চলে না। (আর এই প্রসংগে একবার জেনে নিন, বাজেটে এলসিডি-এলইডি প্যানেলের দাম কমেছে)। দিনে কাজ থাকলে রাতে আর কোন কাজ না থাকলে দিনে-রাতে সবসময় সেটা চালু থাকে। আপনার কথা ভেবেই ডজনদুয়েক টিভি চ্যানেলও চালু করা হয়েছে। আরো হবে ইনশাল্লাহ।
ভাবছেন কিসের মধ্যে কি।
কথা হচ্ছে টিভি চালু করলে চ্যানেল বৃদ্ধির সাথে আরেকটি বৃদ্ধি আপনার নজরে আসবেই। তা হচ্ছে বিশেষজ্ঞ। প্রতিমুহুর্তে ডজনখানেক চ্যানেলে বিশেষজ্ঞ মত দিচ্ছেন কয়েক ডজন বিশেষজ্ঞ। একবার হিসেব করে দেখুন। একডজন চ্যানেলে যদি প্রতিটিতে গড়ে ৪ জন করেও থাকেন তাহলে ৪ ডজন, মানে আটচল্লিশ। প্রতি দুঘন্টায় একবার করে হলে দিনেরাতে আরো ১২ গুন। কত হল ? ৫৭৬। যদি বাজেটের আগে পরের ৪ দিন ধরেন তাহলে মোট ৮ দিন, তারমানে ... সাড়ে ৪ হাজার ছাড়িয়ে।
বাপরে, এত বিশেষজ্ঞের এত মত শুনবেন কখন। একজন বলছেন এই বাজেটে ধনী-দরীদ্রের ব্যবধান কমবে, আরেকজন বলছেন গরীবের সংখ্যা তো বাড়তেই আছে। একজন বলছেন কল্যানমুখি বাজেট, জনসাধারনের বাজেট। আরেকজন বলছেন কোটিপতি কালোটাকার মালিককে বলা হচ্ছে ট্যাক্স দিতে হবে না আর মাসে ১৪ হাজার টাকা আয় করে (ব্যয় করে অনেক বেশি) তাকে ট্যাক্সের  দিতে হবে। একজন বলছেন এই প্রথম টাকামন্ত্রী আগের ব্যর্থতা স্বিকার করেছেন। ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটেনি। আরেকজন বলছেন অর্থমন্ত্রী যে বললেন ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি সেটা এলো কোথা থেকে। তিনিই তো বললেন বিদ্যুত সমস্যার কথা, বিনিয়োগ কমার কথা, আমদানী-রপ্তানী দুই কমার কথা। প্রবৃদ্ধি কি ধানখেতে গজালো! একজন বলছেন মানবসম্পদ উন্নয়নে বিশাল ব্যয় ধরা হয়েছে, আরেকজন বলছেন ওই টাকাটা দেবে কে। স্কুল-কলেজ-ছাপাখানা থেকে শুরু করে সব যায়গায় তো ট্যাক্স বাড়ল। একজন বলছেন বিদেশ থেকে শ্রমিকদের পাঠানো টাকাও তো কমে গেছে, ওইযে হাজার হাজার শুমিক ফেরত আসছে। আরেকজন তাকে থামিয়ে বলছেন, মোটেই কমেনি। টাকার পরিমান বেড়েছে। শ্রমিক ফেরত আসতে পারে, তারপরও টাকার পরিমান বেড়েছে ...
সেই গল্পের কথা মনে পড়ছে কি ? রোগি গেছে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার তাকে টিপেটুপে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, মাঝেমাঝে জ্বর আসে ?
রোগি বলল, হু।
মাথা ঘোরে ?
হু
বমি হয় ?
না।
নিশ্চয়ই হয়। ঘুমের মধ্যে হয়, টের পাওনা। ডাক্তারের চেয়ে বেশি বোঝ ?
আপনি কখনোই ডাক্তারের চেয়ে বেশি বুঝতে পারেন না। এই বিশেষজ্ঞগন যা বলেন তারচেয়ে বেশি আপনি জানতেই পারেন না। তাদের বক্তব্য শুনে যাওয়া ছাড়া আপনার যা করার থাকে তা হচ্ছে বিশ্বকাপের অপেক্ষা। ২৪ ঘন্টার কম সময়।
একটা কথা মানতেই হয়। বাজেটে অন্য সবকিছুর দাম যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনি বাজেট এলে বিশেষজ্ঞও বৃদ্ধি পায়। রীতিমত তাল মিলিয়ে।
এটা কি কম পাওয়া ?

কারো কাছে কিছু চাই না

Jun 10, 2010
এক ব্যক্তি রাতের বেলা পরদিনের কর্মপরিকল্পনা জানাল স্ত্রীকে, যদি কাল আকাশ পরিস্কার থাকে তাহলে মালপত্র নিয়ে হাটে যাব। আর যদি বৃষ্টি হয় তাহলে জমিতে কাজ করব।
তার স্ত্রী বলল, ইনশাল্লাহ বললে না!
সে বলল, বৃষ্টি হলে কি হবে নাহলে কি হবে সবই তো বলেছি। ইনশাল্লাহ বলতে হবে কেন ?
পরদিন সকালে আকাশ পরিস্কার দেখে সে বস্তা মাথায় নিয়ে রওনা দিল। মাইলখানেক যাবার পর শুরু হল প্রবল বৃষ্টি ...
এটা গল্পের যায়গা হলে নিশ্চয়ই অনেক ইনিয়ে বিনিয়ে ব্যাখ্যা করা যেত কতভাবে সে নাজেহাল হল ওই ইনশাল্লাহ না বলার কারনে। গল্পের চেয়ে গল্পের শিক্ষাই আসল। কাজেই সরাসরি শেষ কথায় আসা যাক।
অবশেষে গভীর রাতে সে বাড়ি ফিরল। তার স্ত্রী দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে গেছে ততক্ষনে। তাকে দরজা ধাক্কাতে হল। ভেতর থেকে স্ত্রী জিজ্ঞেস করল, কে ?
তার উত্তর, ইনশাল্লাহ তোমার স্বামী।
ইনশাল্লাহর শক্তি এতটাই। দেশ দারিদ্রমুক্ত হবে ইনশাল্লাহ। বেকারত্ব দুর হবে ইনশাল্লাহ। দুর্নতিমুক্ত সমাজ গড়ব ইনশাল্লাহ।
সৃষ্টিকর্তা অনেক ক্ষমতাই নিজের হাতে রেখে দিয়েছেন। সত্যি বলতে কি, সব ক্ষমতাই। তার আদেশ ছাড়া গাছের পাতা নড়ে না। মানুষের হাত-পা-মাথা সবই তার ক্ষমতার কাছে বাধা। ওইসব কোটি টাকার ভাগবাটোয়ার কথা বলছেন। আল্লার ইচ্ছে না থাকলে কখনও ওসব হতে পারে না। আল্লা বিশ্বাস করেন না ? কাফের নাকি ?? শোনেননি জোটসরকারের মন্ত্রী বলেছিল জীবন-মৃত্যু আল্লাহ হাতে। মন্ত্রীর কি অধিকার আছে জীবন বাচানোর। আল্লার ইচ্ছার বিরোধীতা করার। এখন কার ব্যর্থতা, কার দোষ এসব খোজেন কেন ? আমরা বললেই দোষ!
আল্লার ওপর ভরসা রাখুন। আমরা সমস্ত ভালকাজ করবই ইনশাল্লাহ। যদি আল্লাহ ইচ্ছা করেন। যদি নাহয় তাহলে বুঝে নেবেন আমার কোন দোষ নেই। আমরা সবাই ভাল কাজের চেষ্টা করছি। সরকার, প্রশাসন, পুলিশ, আদালত সবাই মিলে। আমাদের ইচ্ছেয় কোন কমতি নেই। একসময় তো বলেছি গোলাম আজমকে ফাসিতে ঝোলানো হবে, তারপর তার মৃতদেহ পাঠানো হবে পাকিস্তানে। ওই মৃতদেহের যায়গা স্বাধীন বাংলাদেশে হবে না। জরুরী সরকারের ৩-উদ্দিন বলেছিল সব অবৈধ স্থাপনা ভাঙা হবে। তারপর ভাঙার খরচ তাদের কাছ থেকে আদায় করা হবে। কারো কোন গাফিলতি ছিল না। কিন্তু আল্লার সায় যদি না থাকে তাহলে-   
আজকাল লোডসেডিংও ইনশাল্লাহ। এজন্য সরকারকে দায়ী করবেন না। বিদ্যুত বিভাগের কীর্তিমানদের দায়ী করবেন না। দাবী একটাই, ইনশাল্লাহ বৃষ্টি হোক। বৃষ্টি হলে গরম কমবে। গরম কমলেই এসি বন্ধ হবে। এসি বন্ধ হলে লোডসেডিং কমবে।
কাজেই ইনশাল্লাহ। কারো কাছে কিছু চাই না।

অমর্যাদা করবেন না

Jun 8, 2010
-         তরে পিটাইলে কি করবি ?
-         আমিও উল্টা পিটান দিমু। না পারলে দৌড় দিমু।
-         হাত-পা বাইন্দা পিটাইলে ?
কি করলে মুখ বাধা হবে সেটাও জানার আগ্রহ থাকলে কথা চালিয়ে যেতে পারেন কিন্তু ফলাফল যখন জানাই তখন আর সেখানে সময় নষ্ট করার অর্থ কি। হাত-পা-মুখ দড়ি দিয়ে বাধলে বরং সেটা ছেড়ার চেষ্টা করা যেতে পারে। তারচেয়েও শক্ত কিছু দিয়ে বাধলে ?
এর উত্তর নেই। আপনাকে সহ্যশক্তির পরীক্ষা দিতেই হবে। অবশ্য হাত-পা-মুখ বেধে পিটিয়ে সত্যিকারের মজা পাওয়া যায় না। অন্তত মুখটা খোলা রাখা উচিত। কিছু সময়ের জন্য হলেও। নইলে আপনাকে পেটানো আর বস্তা পেটোনোর তফাত কোথায়!
আপনার হাত-পা-মুখ কিছুই বাধা হয়নি। ওসব বাজে কথা। দিব্বি হেটে চলে বেড়াচ্ছেন, মুখে খই ফুটছে। হাত-পা বাধার কথা ওঠে কেন ?
তবে আপনার স্বাধিনতা ওই পর্যন্তই। গাড়ি-রিক্সার ধাক্কা এড়িয়ে হেটেচলে বেড়াবেন, মুখে রাজা উজির মারবেন। এর বেশি করবেন না। লেখার কোন প্রশ্নই ওঠে না। ওটা পারমানেন্ট জিনিষ। পারমানেন্ট অপরাধ। রিমান্ডে পাওয়া পথ। ইন্টারনেটেও কিছু করবেন না। আপনাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ দেয়া হয়েছে। ভিডিও ডাউনলোড করুন, গেম ডাউনলোড করুন। ওইসব নিয়ে সন্তুষ্ট থাকুন। বেশি বাড়াবাড়ি করলে অপেক্ষা করছে ওই দড়ি।
ইন্টারনেট কথা বলার ব্যবস্থা করে দিয়েছে ?
বটে! দেখি ব্যবস্থাটা। সাবমেরিন কেবল বন্ধ করলে স্যাটেলাইট। ওসব চলবে না। সভ্য দেশে সভ্য লোকের মত চলতে হবে। ওসব স্যাটেলাইট-টাইট জমা দিয়ে যান। ওসব ব্যবহার করা চলবে না। শোনেন নি লোকে কতরকম কুকর্ম করে। ভিওআইপি না কি করে। টেলিফোনগুলান তো বন্ধ করলাম ওইজন্যই। তার ওপর ভারত কইছে ওই ফ্রিকোয়েন্সি পাইলে তাদের উপকার। পুর্বভারতে কতরকম সন্ত্রাসী কাজ হয়। সেইসব তদারকি করা যায়। ফ্রিকোয়েন্সি বসাইয়া রাইখা লাভ কি। টাটা-রে দিলে কিছু ইনকাম হয়।
কাজেই ওইসব ইন্টারনেট-ফিন্টারনেট বুইঝা শুইনা ব্যবহার করেন। মোবাইল ব্যবহার করবেন ? শোনেন নাই নিয়ম কানুন। লাইন চালু রাখতে চাইলে ১০০ টাকা লোড করেন। পনের দিন চালু থাকব। ওই আগের দিনের তিন সপ্তাহে তিনস ট্যাকা অহনও চালু করি নাই। বেশি বাড়াবাড়ি করলে-
বিশেষজ্ঞরা বলেছে কলসেন্টার পল্লী বানানোর কথা। নিশ্চয়ই করা হবে। জানেন না তৈরী পোষাকে আমাদের সাফল্য কত। কত লক্ষ বেকার কাম পাইছে। তাদের অভিজ্ঞতার দাম দিতে হইব না। নিজে ঘরে বইসা একশ ডলার কামাইবেন আর সরকারের ট্যাক্স ফাকি দিবেন তা-তো হয় না। ট্যাক্স দিতে না চান ট্যাক্স দেয়ার মত ট্যাকা ইনকাম করবেন না। শোনেন নাই গার্মেন্ট কর্মীদের বেতনের কথা। যারা রিক্সা চালায় তাগো থিক্যা কম, যারা দিনমজুর তাগো থিক্যা কম, যারা ভিক্ষা করে তাগো ঠিক্যাও কম। দেইখ্যা শিক্ষা লাভ করেন।
হরতাল করবেন ?
ওইসব সহ্য করা হবে না। খাড়ান, কোর্টের কাগজ আনতাছি। গনতান্ত্রিক দেশে অগনতান্ত্রিক কাজ করবেন সেইডা হয় না।
আপনার হাত-পা-মুখ কিছু বাধা হয়নি। যত পারেন স্বাধীনতা ভোগ করুন। স্বাধীনতার অমর্যাদা করবেন না।

যেখানে নাই সেইখানে খুজি

Jun 7, 2010
- আপনি এখন কি করছেন ? 
- চাকরী খুজতাছি ?
একেবারে সহজ সরল বাক্যালাপ লক্ষ ছাড়িয়ে কোটিবার শুনতে পারেন এই উত্তর বাড়ছে দিনে দিনে, ঘন্টায় ঘন্টায়, মিনিটে মিনিটে শুনতে শুনতে বিষয়টা এতটাই গা-সওয়া হয়ে গেছে (কানসওয়াও বলতে পারেন) যে আসলে কথাটা কি বুঝায় খোজ করেন না নিতান্তই যদি ভদ্রতা দেখানোর প্রয়োজন হয় তাহলে বলেন, আচ্ছা, ঠিক আছে
কি ঠিক আছে আর কি ঠিক নেই সেটা একবার বিবেচনায় এনে যদি প্রশ্ন করেন, কোথায় খুজছেন, তাহলেই বিপদ
খবরের কাগজে চাকরী পাওয়া যায় না যা পাওয়া যায় সেটা আমার সাথে মানায় না কাজেই কাগজে চাকরী খোজা বাদ দিয়েছি লোকে বলে জ্যাক ছাড়া চাকরী জোটে না মনো, ষ্টেরিও, হাই-ফাই সব ধরনের জ্যাক লাগিয়ে দেখেছি কাজ হয়নি মুখের ওপর কয় বড়জোর দারোয়ানের কাম করতে পারি এইডা কোন কথা হইল কন ? অভিজ্ঞতা নাই, শিখায়া তো লইব ভার্সিটি পাশ দিছি কি এমনেই!
তারপর ধরেন, অফিসে-অফিসে, ফ্যাক্টরী-কারখানায়-ব্যবসাপাতিতে, কেউ এমনে লোক নেয় না বিজ্ঞাপনও দেয় না কেমনে যে লোক নেয় তারাই জানে সেই কথাডাও কয় না
তাই এখন ঘোরাঘূরি বাদ দিয়া কাম খুজতাছি খোজার যায়গাই বা আর বাকি আছে কিছু রাস্তার মোড়ে খাড়ান যায় না এদিক দিয়া এ গুতা দেয় ওদিক দিয়া ও গুতা দেয়া বেকার মানুষ মুখ বুইজা সব সহ্য করি কোনমতে ঘন্টার পর ঘন্টা পায়ের ওপর খাড়াইয়া সময় কাটাই আমার মতন কয়েকজন আছে, ওরাও কাম খুজতাছে, তাগো সঙ্গ দেই
আপনার যদি নিতান্তই গায়েপড়া স্বভাব থাকে তাহলে আরেকটু বাড়তে পারেন প্যাচাল বাড়াতে পারেন,
-   তা রাস্তার মোড়ে কি চাকরী পাওয়া যায় ? নাকি বেকাররা চাকরী দেয় ??
-         এইজন্য চাকরী করা মাইনষের সাথে কথা কইতে হয় না। সকালে অফিসে যান আর রাইতে ফেরেন, মাস গেলে হাতে টাকা পান। বুঝবেন কি। বুঝতেন যদি থাকতেন আমার অবস্থায়।
আপনাকে একেবারে বোল্ডআউট করার উপক্রম। কিন্তু আপনার মাথায় তখন অন্য চিন্তা ঘুরছে। আপনার অফিসে আপনার জন্যই একজন সহযোগি দরকার। আপনাকে বলে দেয়া হয়েছে এমন কাউকে খুজে বের করুন করুন যে বিশ্বাসী। আগ্রহ নিয়ে কাজ করবে। আর নিজের অভিজ্ঞতা থেকে এটুকু শিখেছেন, অমুক কাজ করতে পারি না, তমুক কাজ ভাল লাগে না, কয়টাকা বেতন দেয় এরচেয়ে বেকার থাকা ভাল এসব যার মুখ থেকে বেরয় তাকে কাজে লাগানো যায় না। তারা বেকার থেকে মুখ চালাতেই বেশি পছন্দ করে। কাজেই সুর নরম করে আপনি আরেকবার চেষ্টা চালালেন,
-         কাজ করতে হলে তো কাজ জানতে হয়। এভাবে মোড়ে দাড়িয়ে কি কাজ শেখা যায় ? অফিসে কি কাজ করতে হয়, সহকর্মীদের সাথে কিভাবে চলতে হয়, কিভাবে ক্লায়েন্টের সাথে কথা বলতে হয় এসব তো শিখবেন। নইলে একজন শুধুশুধু বেতন দেবে কেন ?
-         আরে ধুর। করলাম না অমন চাকরী। আমি কি না খাইয়া আছি যে আরেকজনের পায়ে ধরতে হইব! ওইসবের মধ্যে আমি নাই।
-         চাকরী খুজছেন বললেন যে!
-         হ। খুজতাছি। চাকরী পাইলে তো করমুই। যা করতে কয় করমু। দিনরাত যদি খাটায় তাতেও আপত্তি নাই। খালি বেতনডা ঠিকমত দিলেই হয়।
-         কিন্তু কাজ না শিখলে আপনাকে খাটাবে কোথায় ?
-         যান তো আপনে। আইছেন একটু চা-সিগারেট খাওয়াইবেন না তার ওপর প্যাচাল শুরু করছেন। ইন্টারেষ্টিং একটা আলাপ করতেছিলাম সব গুলাইয়া দিলেন। আপনের এইসব কথা শুনলে সব পালাইব। তহন একাএকা করমু কি ?
কাজেই সে তারমত চাকরী খুজতে থাকল আর আপনিও চাকরী দেয়ার জন্য মানুষ খুজতে থাকলেন। ঘটমান বর্তমান।

রোগে আক্রান্ত শহর

Jun 6, 2010
চিকিসা বিজ্ঞান বলে, জ্বর বলে কোন রোগ নেই। এটা অন্য রোগের প্রকাশ। কোন কোন রোগে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়, তাকেই আমরা বলি জ্বর।
জ্বর নিজে রোগ না হোক, তাকে ইচ্ছেমত বাড়তে দেয়া যায় না। প্রয়োজনে পানি ঢেলে হলেও তাপমাত্রা কমাতে হয়। নইলে রোগী মারা যায়। আবার তাপমাত্রা কমানোতেই সমাধান নেই। মুল রোগের চিকিসা না করলে এটা চলতেই থাকে।
মানুষ অবশ্য রোগেই মারা যাবে এমন কথা নেই। অন্তত বর্তমান সময়ে তো বটেই। ছিনতাইকারীর হাতে মারা যায়, বাসচাপা পরে মারা যায়, বিল্ডিং চাপা পরে মারা যায়, নিজের বাড়িতে ঘুমিয়ে আগুনে পুড়েও মারা যায়। আগে জীবন বাচানো প্রয়োজন। একে যদি জ্বরের সাথে তুলনা করেন তাহলে বলতে হয়, আগে তাপমাত্রা কমানো প্রয়োজন।
কিন্তু মুল রোগ কোথায় ? তার ডাক্তারি করছে কে ??
কেউ না। সরকার-প্রশাসন-বিশেষজ্ঞ সবার মুখে এক কথা, ঢাকা বসবাসের অনুপোযোগি হয়ে পড়ছে। পথের দুপাশে লক্ষ লক্ষ দোকান আর মাঝখানে লক্ষ লক্ষ রিক্সা-গাড়ি আর কিলবিল করা মানুষ। দিন-রাত বলে কথা নেই, সবসময় একই চিত্র। সবাই বলছে বাড়ছে, বাড়ছে, বাড়ছে। বিপদজনক হচ্ছে, হচ্ছে, হচ্ছে। সবকিছুই বাড়ছে, বাড়ছে, বাড়ছে। কোনসময় বলা হবে এইমুহুর্তে ঢাকা বসবাসের অনুপোযোগি হয়ে পড়ল তা কেউ জানে না। মানুষ কোটি টাকার ফ্লাট কেনার জন্য টাকা হাতে দৌড়াচ্ছে। সেই ফ্লাট হেলে পড়ছে।
জীবন বাচানোর জন্য সাবধান হতেই হয়। কেউ যদি অন্যের জীবনের জন্য হুমকি তৈরী করে তাকে দোষী বানাতেই হয়। নিমতলায় (কোনকালে নিশ্চয়ই নিমগাছ ছিল। নিমের হাওয়া নাকি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।) আগুনে পুড়ে মারা গেলে শোক করতেই হয়। ওই ব্যাটা বাড়িঅলা নিজের বাড়িতে কেমিকেল রেখেছিল। ওকি জানে না আবাসিক এলাকায় ওসব রাখতে নেই। ওসব দাহ্য পদার্থ যেখানে রাখতে হয় তার ধারেকাছে জনবসতি রাখতে নেই।
বাড়িঅলার নিজের জীবন বেচেছে কি-না পত্রিকায় লেখেনি। থাকলে হয়ত প্রশ্ন করত, আমার ওসব খারাপ কাজ করার কোনই ইচ্ছে নেই। আমি কেমিকেলের দুমাইলের মধ্যে কাউকে থাকতে বলিনা। কিন্তু কেমিকেলটা রাখব কোথায় দেখিয়ে দিনতো। কোথায় সেই যায়গা ?
নেই। ঢাকা শহরে নেই, ঢাকার বাইরে নেই।
সমাধানের কথা কেউ বলেন না কারন তাহলে বলতে হয় সব কলকারখানা দেশের বাইরে নিয়ে যান। সব কলকারখানার পাশেই ঘনবসতি। সব আবাসিক এলাকায়ই স্কুল-কলেজ-হাসপাতাল-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সব রাস্তায়ই জট।
মানুষ যখন মারা গেছেই তখন প্রশ্ন করতেই পারেন ওটা করা হয়েছিল কেন। বেচে থাকা অবস্থায় করবেন না। বিকল্প কি সেটা বলবেন না। বাসচাপা পড়ে কেউ মারা গেলে হাউকাউ করবেন আর রাজপথের অর্ধেক গাড়ি পার্কিংএর যায়গা বানালে দেখবেন না (নিজেরটাও তো সেখানেই।), বিল্ডিং হেলে পড়লে বলবেন সব দোষ রাজুকের আর রাজুক বলবে দেড় কোটি মানুষের শহর দেখার জন্য আমাদের দেড় ডজন মানুষ নেই। ব্যস, মামলা ঢিসমিস।
হাসপাতাল ডাক্তার দুজন, রোগি দুশো। আরেকজন জ্বরের রোগি। খাড়ান আইতাছি। আটকাইয়া রাখেন, অন্য ক্লিনিকে না যায়। আইতাছি। অত তাড়া কিসের। আরে দুচারজন মরলে কি যায় আসে। জীবন-মরন আল্লার হাতে। রোগীর কি অভাব আছে ? অন্য ক্লিনিকে না গেলেই হইছে।
এমন ডাক্তার কি পাওয়া যাবে যিনি রোগের চিকিসা করবেন। ঢাকা শহর বসবাসের অনুপোযোগি হচ্ছে না, অনেক আগেই হয়েছে। ধারনক্ষমতা ছাড়িয়ে গেছে অন্তত ২০ বছর আগে। মুল রোগ সেটাই। ছিনতাই-ডাকাতি-জানজট-লোডসেডিং-পানিসংকট-গ্যাসসংকট-বেকারত্ব এগুলো জ্বর। রোগের উপসর্গ।

যত চিনি তত মিষ্টি

Jun 4, 2010
ছোটবেলায় পাঠ্যবইতে পড়েছি বাংলাদেশে অতগুলি চিনি কারখানা আছে, অতগুলি পাটকল আছে, অতগুলি-
সেটা গর্ব করার মতই বিষয় তখন অন্তত চিনির জন্য হাহাকার শোনা যায়নি ইমপোর্ট বিষয়টাও তত জনপ্রিয় ছিল না কারো চিনিতে সমস্যা হলে বড়জোর গুড়ের দিকে দৃষ্টি দিতে হত দুইই মিষ্টি
কারখানাগুলি নিশ্চয়ই এখনো আছে অবশ্যই আছে সরকার গর্ব করে বলে দেশের স্বার্থে ভর্তুকি দিয়ে সেগুলি চালানো হয় আখচাষী আখ চিনিকলে বিক্রি না করে আখ দিয়ে গুড় বানালে জেল-জরিমানা হয়, যন্ত্রপাতি বাজেয়াপ্ত করা হয় সরকার দেশের মানুষের ভালোর জন্য অনেক করছেন
পাঠ্য বইতেও নিশ্চয়ই কথাগুলো লেখা হয় ওইযে, কতগুলি চিনি কারখানা-
তবে বাস্তবে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে গেছে ধারাবাহিকভাবে চিনি আমদানী শুরু হল। সেটা যখন বাড়ল তখন দোকানে জিজ্ঞেস করতে হত চিনি দেশি না বিদেশী দেশি চিনি বেশি মিষ্টি, দাম বেশি একটু ময়লাটে, দেখেই চেনা যায় আর বিদেশী চিনি ধবধবে সাদা বেশি প্রয়োজন হয় সেই প্রয়োজন মেটাতে বেশি করে আমদানী করতে হয় বর্তমানে দেশে যতখানি চিনি ব্যবহার হয় তার ৯৩ ভাগই আসে বিদেশ থেকে ক্রেতাকে আর কষ্ট করে জিজ্ঞেস করতে হয় না দেশি না বিদেশী
ওসব অপ্রয়োজনীয় বিষয় বরং থাক পুরো পৃথিবী এখন মাকড়সার জালে বাধা বরং অন্য বিষয় দেখা যাক
হাজার হাজার কোটি ডলার দিয়ে ডুবে যাওয়া ব্যাংকগুলোকে রক্ষা হল আমেরিকায় তারা অবম্য সরকারি টাকা কলে না, বলে জনগনের ট্যাক্সর টাকা খবর শোনা গেল যেসব কর্মকর্তাদের জন্য ব্যাংকের ওই অবস্থা তারাই আবার ওই টাকা থেকে লক্ষ লক্ষ ডলার পুরস্কার নিয়েছেন লোকজন মুখ খুলল বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতই বারাক ওবামা রীতিমত ধমকে উঠলেন, এসব সহ্য করা হবে না কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে
মাত্র এক সপ্তাহ, তারপরই অন্যসুর শোনা গেল ওবামার মুখে ব্যাংকের লোকজন খুব ভাল ওরা দেশের জন্য বহুকিছু করছে দেশকে ওরাই এগিয়ে নিচ্ছে
ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন নেই তারা ওবামার কানে পৌছে দিতে পেরেছেন বেশি তেড়িবেড়ি করলে আবার রিপাবলিকান। নিন্দুকেরা বলেন আমেরিকা (কিংবা পুরো বিশ্ব যাই বলুন না কেন) চালায় ওইসব কর্পোরেশন নামের প্রতিষ্ঠানগুলিই ম্যাকডোনাল্ড, টাইসন, কোকাকোলা, মনসান্টো, মাইক্রোসফট, এপল ওরাই ওবামা, বুশ, ক্লিনটন, রিগান, কার্টার এরা উছিলা মাত্র সবাইকে হিসেব করে কথা বলতে হয় হিসেব করে পা ফেলতে হয় একটু এদিক-ওদিক হলে উল্টোসুর ধরতে হয়
তা, তাদের কর্পোরেশনগুলি দেশকে অনেক দিয়েছে তারা খাদ্য রপ্তানী বন্ধ করলে নাকি পৃথিবীর ৩০ ভাগ মানুষ খাদ্যসংকটে পড়বে তারা উপাদক কাউবয়দের কাউ সারা বিশ্বের মানুষের প্রিয় খাদ্য। অন্তত ফুড ইমপোর্টার তারা নন
পাদক না ইমপোর্টার তাতে কি ? বড় প্রতিষ্ঠান বলে কথা সরকার তারা চালাবে না-তো ওই হেজিপেজি চালাবে ? একসময় চাল কেনার সময় দামাদামি করত, ফুটপাত থেকে সার্ট কিনত, শেয়ারে ঘুমাত। বড় নেতা হয়েছেন! দেখিয়ে দেব কথা না শুনলে কি হয়
তারচেয়ে ভালয় ভালয় মুখ বুজে থাকুন যা বলি সেভাবে কাজ করে যান আমারও লাভ আপনারও ওইসব প্রোডাকশন-ট্রোডাকশন এর কথা ভুলে যান গুড় বানাতে দেবেন না চিনির বদলে গুড় মোটেই ভাল জিনিষ না না জেনে নানারকম বিষাক্ত কেমিক্যাল দেয়। কতকিছু হতে পারে ওসব খেলে। চিনিকারখানাগুলো চালু রাখুন যেন আখ কেনা যায় কেউ কথা না শুনলে তাকে জেলে ঢুকান। কেউ কেউ আবার নানারকম আজেবাজে কথা ছড়াচ্ছে। দেশের ৪০ ভাগ মানুষের নাকি ডায়াবেটিস। আরো বাড়বে। ওসব বাজে কথায় কান দেবেন না। এত লোকের ডায়াবেটিস হলে চিনি নিয়ে কেউ কথাই বলত না। আপনারা বেশি করে চিনি খান।  
চিনির সমস্যা মোটেই হবে না যতখানি দরকার আমরাই এনে দেব একেবারে ব্রাজিল থেকে দেখবেন চিনির কি গুন যত চিনি তত মিষ্টি

নিজের মান নিজে রাখি

Jun 3, 2010
পত্রিকায় যদি খবর দেখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অমুক মামলার রায় অমুক তারিখে দেয়া হবে, আপনি চোখ বন্ধ করে নিশ্চিত হতে পারেন রায়ে কি বলা হবে। আর খবরটা যদি হয় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অমুক মামলার রায় অমুক তারিখে দেয়া হবে-
আপনি নিশ্চিত নন কি হতে পারে। পক্ষে-বিপক্ষে-মাঝামাঝি যেকোন কিছুই হতে পারে। সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা নতুন তারিখ ঘোষনা করার। এতে সবদিক রক্ষা হয়।
এনিয়ে কথা বলবেন না। কোন অবস্থাতেই না। আদালত অবমাননার আসামী হবেন না।
আদালত অবমাননা বস্তুটি আসকে কি, দেখতে কেমন আমার জানা নেই। আমার পরিচিত কারো জানা থাকলে তারকাছে জেনে নেয়া যেত। দুর্ভাগ্য, তাদেরও জানা নেই। তবে বিষয়টি বিদ্যমান। বিচারক ঘুস নিয়ে জামিন দিয়েছেন, বলবেন না। ঘুস ছাড়া কি জামিন হয় ? অন্তত সাধারন মানুষের ? একজনের কথা জানি, গাড়িচাপা দিয়ে একজনকে মেরে ফেলায় তার নামে মামলা হয়েছে বছর পাচেক আগে। তাকে নিয়মিতভাবে টাকা দিতে হয়।
কাজেই এটা অন্তত ভাল দিক। যদি টাকা খরচ করতে পারেন নিজের বিপক্ষে রায় যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবেন। তারপরও, কথাটা বলবেন না। জানাজানি হলে বিপদ। আইন-আদালত এমন বস্তু যার সমালোচনা করা যায় না। নিতান্ত মুর্খ হলে তবেই বলতে পারেন তাহলে তিনশ জন রথী প্রয়োজন হল কেন। তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে বলা হয় আইন প্রনেতা। আইন নিয়ে যদি প্রশ্ন করার ব্যবস্থা না থাকে, সেখানে যাদি দোষত্রুটি না থাকে তাহলে তা পরিবর্তনের জন্য এত আয়োজন কেন ?
কিংবা খুনের মামলার আসামীকে বিচারক হিসেবে শপথ পড়ানো নিয়ে যখন রীতিমত টানা হেচড়া চলে, ভুয়া সার্টিফিকেট দেখিয়ে বিচারক হওয়ার খবর পত্রিকায় ছাপা হয় তখন সেটা নিয়েই বা প্রশ্ন তোলা যাবে না কেন ? অন্য যায়গায় যখন তোলা হচ্ছে। ইদানিং অবশ্যই ঘুষ নেয়া অপরাধ বলে গন্য করা হয় না। পুলিশ প্রকাশ্যেই তা নেয়। সরকারী অফিসে ঘুস ছাড়া কাজের কথা কেউ স্বপ্নেও ভাবে না। তারপরও অন্তত সেটা নিয়ে কথা বলতে পারেন। আক্ষেপ করতে পারেন। আদালতের বিষয় থাকলে সেটা করা যাবে না কেন ? সংবিধান কি বলে দিয়েছে আদালতের সাতখুন মাপ। তারা খুন করলেও বিচারের রায় তারাই দেবেন!
হ্যা তাই। এজন্যই সরকার পরিবর্তনের সাথেসাথে বিচারক বদলের পালা। আর সবাই যদি বিচারকের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করে, গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে তাহলে কার জামিন হবে, কে রিমান্ডে যাবে, কে জেলে যাবে এ সিদ্ধান্ত নেবে কে ?
কাজেই তাদের সমালোচনা করা থেকে বিরত থাকুন। নিতান্ত চক্ষুলজ্জার খাতিরে বাংলা প্রবাদ স্মরন করতে পারেন, নিজের মান নিজে রাখি, কাটা কান চুল দিয়ে ঢাকি।
কান যদি কাটা থাকেই তাহলে অন্তত চুল দিয়ে সেটা ঢেকে রাখা উচিত। অন্যের চোখের সামনে থাকলে কেউ না কেউ কানকাটা বলে ফেলবেই।

যুগান্তকারী গল্প

Jun 2, 2010
বহু বছর আগে ঈশপ এক গল্প বলেছিলেন। এক নেকড়ে দেখল একটা মেষশাবক পানি খাচ্ছে। এমন সহজ শিকার হাতছাড়া করে কে। মজা করে খাওয়া যাবে। আচ্ছা একটা কারন দেখাই। আইন বলে তো কথা আছে।
সামনে গিয়ে হাক দিল, এই তুই আমার পানি ঘোলা করছিস কেন ?
মেষশাবক বলল, আমি আপনার পানি ঘোলা করছি কিভাবে ? পানি তো আপনার দিক থেকে আমার দিকে গড়াচ্ছে।
নেকড়ে বলল, খুব যে কথা শিখেছিস। তা গতকাল আমাকে গালি দিয়েছিস কেন ?
মেষশাবক বলল, গতকাল তো আমাদের দেখা হয়নি।
নেকড়ে বলল, তাহলে তোর মা দিয়েছে।
মেষশাবক বলল, আমার মা তো মারা গেছে অনেকদিন।
নেকড়ে ধমকে উঠে বলল, বেয়াদপ। বড়র সাথে মুখে মুখে তর্ক। দিচ্ছি তোর ঘাড়টা মটকে।
বুশ-ব্লেয়ার সাহেব যখন ইরাকে সৈন্য পাঠান তখন গল্পটা নানাযায়গায় প্রচার পেয়েছিল। ব্যাটা সাদ্দাম টুইন টাওয়ারে হামলা করেছে। না বানালে পারমানবিক বোমা বানাচ্ছে। না বানালে রাসায়নিক বোমা বানাচ্ছে। সেটাও না করলে আমেরিকায়-ইউরোপে হামলার পরিকল্পনা করছে। সেটাও না করলে ওর মাথায় খারাপ মতলব আছে।
এমন যুগান্তকারী গল্প একমাত্র ঈশপের পক্ষেই বলা সম্ভব। অবশ্য যদি তার গল্পের মত যুক্তি দাড় করানোর প্রয়োজনীয়তা থাকে। আজকাল সেটাও প্রয়োজন হয় না। ইসরায়েল হামলা করে ৯ জন মানবাধীকার কর্মীকে মেরেছে, আন্তর্জাতিক জলসীমায়, তাতে কি ? তাদের জন্য হুমকি দেখা দিলে তারা সেটা করতেই পারে।
সেতুলনায় টিভি চ্যানেল বন্ধ করা, ফেসবুক বন্ধ করা, খবরের কাগজ বন্ধ করা এসব তো মামুলি বিষয়। ওই ব্যাটা সম্পাদক ছোটমুখে বড় কথা বলে কেন ? মুখে মুখে তর্ক। কদিন রিমান্ডে থেকে দ্যাখ ওটা কি জিনিষ। 
কি কন ? ওয়ারেন্ট ??  আমার দ্যাশ আমি চালামু, ওয়ারেন্ট লাগব ক্যান ???
জানেন না, আমরা মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। সরকারের গঠনমুলক সমালোচনা করুন। কি কি ভাল কাজ করেছে সেকথা বলুন। প্রয়োজনে সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা পাবেন। প্লট পাবেন, লোন পাবেন। স্বাধীনতার অপব্যবহার করবেন না। দেশের জন্য কাজ করুন। দেশ তরতর করে সামনে এগিয়ে চলেছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের যেকোন সময়ের চেয়ে ভাল। বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন সার্থকভাবে দেশ চালানোর নজির নেই। দেড় বছরে হরতাল ডাকার মত কোন পরিস্থিতি হয়নি। তারপরও যদি হরতাল ডাকা হয়,
আমরা আইনের সাহায্য নেব। আদালত আমাদের পক্ষে কথা বলবে। হরতাল বেআইনি।
তারপরও যদি হরতাল হয়, আমরা কথা দিচ্ছি হরতালে বাধা দেব না। আমরা হরতাল ডাকলে তারা যা করেছে আমরাও তাই করব।
মুল বিষয়টা আসলে এখানেই। আমরা এবং তারা। কার শক্তি বেশি, কার কম। কখন বেশি, কখন কম। একসময় যারা নেকড়ে আরেকসময় তারাই মেষশাবক। মেষশাবক থেকে নেকড়ে।
পরিস্থিতি যখন নিয়ন্ত্রনে, মানে পুলিশ যখন সরকারের কথামত চলে তখন আপনি কোন দলে যাবেন নিজেই ঠিক করে নিন।
 

Browse