নিজে যদি জ্ঞান আহরনে অপারগ হন তাহলে শিক্ষকের ব্যবস্থাও রয়েছে। তারা যুক্তি-তক্কো-গপ্পো দিয়ে তা ব্যাখ্যা করেন। কেউ কেউ রীতিমত খ্যাতিমান হয়েছেন এসব করে। এই নোয়াম চমস্কির কথাই ধরুন না কেন। কিংবা এলেক্স জোনসের কথা। নানারকম ব্যাখা দিয়ে তারা সব জ্ঞানে পারদর্শী করে তুলছেন সারা বিশ্বকে। এমন জগতগুরু কজন হতে পারে!
একজন যোগ্য শিক্ষক তার নিজের উদ্ভাবনী পদ্ধতি, বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি, বিশেষ বাচনভঙ্গি, বিশেষ অঙ্গঅঙ্গি ইত্যাদি দিয়ে কঠিন বিষয়কে তরল করে তোলেন। আপনি অর্থনীতি-রাজনীতি-সমরনীতি-সমাজনীতি বুঝছেন না ? আপনাকে নারকেল ভেঙে ভেতরের তরল পদার্থ দেখিয়ে দেয়া হবে।
আর কথা না বাড়িয়ে উদাহরন দেখা যাক।
মার্কিন সরকারের ভক্ত আমেরিকার বাইরে খুব বেশি নেই। এজন্য ইসরায়েল-প্যালেষ্টাইন কিংবা ইরাক-আফগানিস্তান কিংবা আরো আগের ভিয়েতনামের উদাহরন টানার প্রয়োজন নেই, বরং আপনার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলির দিকে দৃষ্টি দেয়াই যথেষ্ট। বাংলাদেশে অর্ধেকের বেশি মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে বাস করতে পারে, তারপরও কেএফসিতে লাইন ধরতে হবে। ওটা আমেরিকান খাবার। আমেরিকান পোষাক পড়ে সেখানে ভীড় জমাতে হবে। রাস্তার দুধারে সারি সারি গাড়ি থামিয়ে যানজট বানাতে হবে।
এই শিক্ষকেরা এর মুল কারন ব্যাখ্যা করছেন। আসলে আমেরিকা ওবামা চালায় না। বুশ-ক্নিনটনও চালায়নি। তাদের বিন্দুমাত্র ক্ষমতা নেই। মুল ক্ষমতা ওই ব্যবসায়ীদের হাতে। কেফসি-ম্যাকডোনাল্ড-কোকাকোলা-মনসান্টোদের। তারাই কলকাঠি নাড়েন আর তারসাথে মিল রেখে ওবামা-বুশ-কিলনটন হাত-পা-ঠোট নাড়েন।
এটাও অত্যন্ত বড় শিক্ষা। তারা পারলে আমরা পারব না কেন ? আমরা কম কিসে ?
শিখতে হবে, শিক্ষাকে কাজে লাগাতে হবে। আসল ক্ষমতা কার জানিয়ে দিতে হবে। আজকাল মন্ত্রীও অভিযোগ করেন তাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে।
এটাই কি স্বাভাবিক না! শিক্ষা তো একেই বলে। মন্ত্রী তাদের স্বার্থ দেখবেন, তারা মন্ত্রীর স্বার্থ দেখবে। সরকার জনগনের স্বার্থ দেখবে জনগন সরকারের স্বার্থ দেখবে। মন্ত্রী নেতারা নিজের ঘুম হারাম করে দেশের জন্য, জনগনের জন্য কাজ করবেন। জনগনের দুঃখ দুর্দশা দুর করার চেষ্টা করছেন। তাদের দুঃখ দুর্দশাই যদি না থাকে তাহলে তারা কার জন্য করবেন ? তাদের কাজের সুযোগ অন্তত রাখা উচিত। এই নিয়মের গড়মিল হলে বদহজম তো হতেই পারে।
বেসরকারী ইউনিভার্সিটির সব ক্ষমতা মালিকের হাতে দিয়ে আইন হচ্ছে। এটাই কি স্বাভাবিক না। এজন্যই তো তারা মালিক। ব্যবসার ধরন দেখে তারা ঠিক করবেন কখন কত টাকা মুনাফা করা যায়। সরকার তাদের না দেখলে কি তারা সরকারকে দেখবে ?
হাসপাতাল-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-বিদ্যুত এগুলো ব্যবসায়ীদের হাতে ছেড়ে দেয়া উচিত। তারা জানে কিভাবে ওগুলো ঠিকমত চালাতে হয়। আর টেলিফোন-খবরের কাগজ-টিভি এগুলো সরকারের হাতে থাকা উচিত। আর জনগনের জন্য রয়েছে উপদেশ। কেউ খালিহাতে ফিরবে না। তবেই না সমম্বয়। আপনি অন্যকে দেখবেন তবেই না অন্যে আপনাকে দেখবে।