পানিতে মারবেন না Fountain of Words

Apr 30, 2009

মুখের কথাগুলো যদি পানি হত তাহলে দেশ বন্যায় তলিয়ে যেত বহুবছর আগে কথাগুলো বলেছিলেন চসার

তার সময়ে বৃটেনে জনসংখ্যা কত ছিল, তাদের সেই কথার তোড়ে বাংলাদেশের চেয়ে কয়েকগুন বড় একটি দেশ কিভাবে তলিয়ে যেত সে নিয়ে তর্ক করতে পারেন তবে বাংলাদেশে আমরা জলস্রোত আর জনস্রোত দুইই দেখে অভ্যস্থ আর কথার স্রোত যদি কোনভাবে কথাগুলো পানিতে পরিনত হত- বাপরে!

কথা বলতে সবাই পছন্দ করেন শিক্ষিত-অশিক্ষত, জ্ঞানী-মুর্খ, যাত্রী-ড্রাইভার, ছাত্র-শিক্ষক, চোর-পুলিশ সবাই রাজনীতিবিদদের কথা উল্লেখ করলাম না কারো ব্যবসায় খোচা দেয়া অন্যায় বলে

সালে বিশ্বের নামিদামী লোকেরা একসাথে বসে ঠিক করলেন মিলেনিয়াম গোল গোল দিতে পারলে ২০১৫ সালের মধ্যে দেশে দারিদ্র অর্ধেক কমে যাবে দেশের বিশ্ববরেণ্য অর্থনীতিবিদ এবং সমাজসেবী সাথেসাথে বললেন, ২০৩০ সালে দারিদ্র থাকবে না বিবিসি বেকুবের মত প্রশ্ন করেছিল, একথা বলছেন কিভাবে ?

তিনি বললেন, কেন ? ১৫ বছরে অর্ধেক হলে ৩০ বছরে পুরো হয় অংক শেখেন নি ?

একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করলেন ইউ আহমেদ তিনি তখন নবীত্ব লাভ করেছেন ব্যাংকারদের ডেকে ধমকান, শিক্ষকদের ডেকে উপদেশ দেন, সাংবাদিকদেন নিয়ম শেখান পশ্চিমা এক অর্থনীতিবিদ বললেন ২০২৫ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে পারে দুদিন পর তিনি অর্থনীতির ভবিষ্যতবানী করলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে

তবে তাকে আর কতটুকুই বা দোষ দেয়া যায় তিনি সবে সাহিত্যিক হিসেবে শান্তিনিকেতন ঘুরে এসেছেন ভারত সরকার খুশি হয়ে ঘোড়া উপহার দিয়েছে চালের দাম ৩০০ ডলার থেকে হাজার ডলারে গেছে তা যাক, কথা বলতে সমস্যা কোথায় কেউ থামাচ্ছে না আগাম ঘোষনা দেয়া আছে তাদের সরকারকে বৈধতা দেয়া হবে

সারা বিশ্ব আগাম মন্দার আশংকায় যখন কাপছে, সকাল-বিকেল নেতার বৈঠক করছেন, এই এল বলে একসময় এসেও গেল তারা হাজার কোটি, লক্ষ কোটি টাকা ঢাললেন আমাদের অর্থনীতি-সমাজনীতি-রাজনীতিবিদরা বললেন ওসবের ছোয়া এদেশে লাগবে না আমরা ওদের থেকে আলাদা দেখেন না ওরা কতরকম কুকর্ম করে, আমরা করি না আমরা সবাই ধর্ম পরায়ন, সবাই কর্মঠ, সবাই দেশপ্রেমি, সবাই সচেতন

তবে এসে গেল অর্থনীতিবিদরা বললেন এটা ওদের দোষ ওদের ভুলের কারনে আমাদের এই অবস্থা ওদেরকে ক্ষতিপুরন দিকে হবে না দিলে হয়ত মিছিল, অবস্থান ধর্মঘট, হরতাল সরকার হিসেবে বসে গেল ওরা টাকা দিয়েছে, এখানেও দিতে হবে দেশ টিকিয়ে রাখতে হবে সরকারীদল-বিরোধীদলে এখানে ভেদাভেদ থাকলে চলবে না সবাই শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, ব্যাংকার দেশের লক্ষ লক্ষ শ্রমিক বেকার হবে, ভাতে মরবে তাদেরকে মরতে দেয়া হবে না লক্ষ লক্ষ মানুষের ভরনপোষনের দায়িত্ব যারা নিয়েছেন তাদের রক্ষা করতেই হবে এখনি যাদের দেয়া হয়নি তারা হতাস হবেন না আপনারাও পাবেন টাকার ব্যবস্থা হচ্ছে আপনারা ব্যাংকের সুদ কমান তবে সুদ বলবেন না সেটা খারাপ কথা ব্যাংক বলল তাহলে আমরা যে টাকা দেই সেটাও কমাতে হয় নইলে মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখবে কেন ? ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিয়ে অকারনে খরচ করবে, নয়ত অলাভজনক খাতে বিনিয়োগ করবে শেয়ার কিনবে এটা করতে দেয়া ঠিক না আমরা তো লাভ করছিই, আমাদের দিকে দৃষ্টি কেন ? দেখুন না, হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে ঋনখেলাপি হওয়ার পরও আমাদের লাভ কমেনি ঋনখেলাপি নিয়ে আমাদের কোন অভিযোগ নেই যারা নিজেরা ওকাজ করতে পারেনি তারাই হাউকাউ করে এদিকে দৃষ্টি দেবেন না ইউরোপ-আমেরিকা ব্যাংকে টাকা দিচ্ছে, পারলে আপনারাও দিন ভাত দেবার মুরোদ নেই কিল মারা গোষাই

শতশত শ্রমিক লাশ হয়ে ফিরছেন হাজার হাজার ফিরছেন সর্বস্ব হারিয়ে এতে হতাস হবেন না আমাদের বাইরে লোক পাঠানোর গতি ঠিক আছে হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন যাচ্ছে এয়ারপোর্টে গিয়ে দেখুন সেখানে কত ভীড় হাটাচলা করা দায় সব দেশের সরকারের সাথে কথা হয়েছে, কোথাও কোন বাংলাদেশী শ্রমিকের চাকরী যাবে না

তবে কথাকে যদি সত্যিকারের কথা বলতে হয় তা আমরা শুনেছি গত কয়েক মাসে নদীর ওপর সেতু হবে, নিচে টানেল হবে, ১০ টাকায় চাল খাওয়ানো হবে, বিনামুল্যে সার দেয়া হবে, পারমানবিক চুল্লি দিয়ে বিদ্যুত সমস্যার সমাধান করা হবে, মহাশুন্যে স্যাটেলাইট পাঠানো হবে, শিক্ষা অবৈতনিক করা হবে, বাধ্যতামুলক করা হবে, সামাজিক হাসপাতাল গড়া হবে, বঙ্গোপসাগর থেকে পানি এনে ঢাকাবাসিকে খাওয়ানো হবে ...

কথা কিভাবে পানি হতে পারে আমার ধারনা নেই তবে আমার অনুরোধ, যদি সে সম্ভাবনা থাকেই তবে অন্তত খরার সময় সেটা প্রয়োগ করুন এটুকু সংযম অন্তত দেখান অনেকেই ভাতে মরছেন তাদেরকে পানিতে মারবেন না

পথ দেখালেন তারাই Those Heroes

Apr 29, 2009

ঈদের আগে পরিচিত একজন একব্যাগ জামাকাপড় কিনে হাজির নানারকম রঙে নক্সা করা, নানান ডিজাইন একেই বোধহয় বলে বিমুর্ত চিত্রকলা আলপিন, কাক, রঙের ছোপ, কবিতার পাতা, রবীন্দ্রনাথ, লালন, লাল-সবুজ সবকিছুই জিজ্ঞেস করলাম কোথায় কেনা উত্তর পেলাম, আজিজ সুপার মার্কেট

মনে করার চেষ্টা করলাম সেখানে যাওয়া হয়না কতদিন সেখানে কাপড়ের দোকান দেখেছি বলে মনে পড়ে না। একসময় নিয়মিত যাতায়াত ছিল বলেই কথাটা মনে এল সেটা অন্তত একটা যায়গা যেখানে বইয়ের দোকানে গেলে আগ বাড়িয়ে জিজ্ঞেস করে না, কি বই লাগব ? নাম কন ?

না, সেখানে বইয়ের নাম মুখস্ত না করেই যাওয়া যায় নেড়েচেড়ে দেখা যায় পাঠ্যবই আর জনপ্রিয় উপন্যাসের বাইরেও নানাবিষয়ের বই পাওয়া যায় সাহিত্য নিয়ে আলোচনা, চলচ্চিত্র নিয়ে সমালোচনা, রাজনীতি নিয়ে বিশ্লেষন সবই আর নানারকম পত্রিকা অন্য কোথাও সেগুলো চোখে পড়ে না

তার জামাকাপড় কেনার বহর দেখে মনে হয়েছিল ব্যবসা ভালই চলছে কাগজে দেখেছিলাম দেশের কিছু প্রথিতযশা শিল্পী-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী এই ব্যবসায় নেমেছেন অন্যকিছুতে যখন পেট চলছে না তখন এটা করতে দোষ কোথায় ? অন্যরা তো করেই, তারা করলে চোখ টাটাবেন কেন ? ভাবলাম যাহোক, একটা গতি হচ্ছে হবে তারা এতদিনে বুঝেছেন কোনপথে এগোতে হয়।

খবরটা পেলাম অনেক পরে আজিজ সুপার মার্কেট থেকে বইয়ের দোকান উঠিয়ে দেয়া হচ্ছে সেখানে হবে পোষাকের দোকান নিশ্চয়ই সাথে খাবারের দোকান এরচেয়ে চালু ব্যবসা এখন আর নেই আরে, আপনার পরিচয়ই তো পোষাকে আর শরীরে। কোন পোষাকে আপনার শরীর কেমন দেখাবে সেটাই যদি ঠিক না করলেন তাহলে সমাজে থাকা কেন বনে থাকলেই পারেন আপনি কি বারাক ওবামা যে পোষাক চেহারায় চাকচিক্য না থাকলেও চলবে ? যেখানে যাবেন পাত পাবেন ?

ওসব থাকতে হয় বার্গার-পিজ্জা খেয়ে শরীর চকচকে করবেন, তারপর কিছুটা ঢাকবেন বাকিটা দেখাবেন কোথায় কতটুকু রাখতে হবে, কতটুকু ঢাকতে হবে সে নিয়ে ভাবার কিছু নেই সেটা জানিয়ে দেবে আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনী অথবা যারা দোকান দিয়ে বসেছেন। তাতেও কাজ না হলে প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রণিক মিডিয়া তো আছেই। কোন ঋতুতে কোন পোষাকে সাজবেন জানানোর মহান দায়িত্ব নিয়েছেন তারা। কাগজ খুলে কিংবা টিভি খুলে দেখে নেবেন। আপনার পকেট ভারী থাকাই যথেষ্ট সেটা হাল্কা করার মানুষের অভাব নেই আগেই বলেছি পথ কারা দেখিয়েছেন এসবের কাটতি বেশি, লাভ বেশি এসবের কাষ্টমার বইয়ের কাষ্টমারের মত মাদ্দামারা না ৫০ টাকা ১০০ টাকা নিয়ে হাউকাউ করে না যত বেশি হাকবেন তত চাহিদা বাড়বে দেখে আরেকজন বলবে, রেয়ার মাল তো। কই পাইলি ?

খবরের সাথে সাথে আরো কিছু বিষয় চোখে পড়ল কেউ কেউ মনে কষ্ট পেয়েছেন তাদের আড্ডা উঠে যাচ্ছে খবর পেয়ে ওখানে চা খেয়ে সিগারেট ফুকতে ফুকতে যে রাজা-উজির মারার ব্যবস্থা ছিল তা বুঝি হাতছাড়া হয়ে যায় আবারো এমন যায়গা কবে মিলবে কে জানে ? কে মিলাবে ? ওপারবাংলার মুখ্যমন্ত্রী নাহয় কবিতা পড়েন, কবিতা লেখেন এপারের মুখ্যমন্ত্রী তো সেটা করেন না তার কথা যারা লেখে তারা বাড়িতে কপি পৌছে দেয় সেলফে সাজিয়ে রাখার জন্য। তারা লিখেই খুশি।

সত্যিই দুঃখ পাবার মত ঘটনা আমি ওদিকে যাওয়া ছেড়েছি বহু আগে এবারে অন্যদের ঘাড়ে ধাক্কা দিয়ে বের করা হচ্ছে এদের পাশে দাড়ানোর কি কেউ নেই ? কোন জনদরদী যিনি হাতে ধরে টেনে দাড় করাবেন ধরে রাখবেন যেন পড়ে না যায়

এই বাতগ্রস্থদের যে নিজের পায়ে দাড়ানোর শক্তি নেই

নিয়ম বলে কিছু আছে Where Is The Law

Apr 28, 2009

সরকারের হাতে পুলিশ, প্রশাসন আরো অনেক কিছু আইন তৈরী-আইন ভাঙ্গা পর্যন্ত সরকারের কথায় চলে সবকিছু জনগনের সমস্ত অর্থ জম হয় সরকারের হাতে বছরের বাজেট এখন হিসেব হয় লক্ষ কোটিতে সরকার যা চান তাই করতে পারেন আসলেই পারেন ?

না পারেন না সরকারের কথা শোনানোর সামান্যতম ক্ষমতাও নেই সরকার পা যারেন এবং করেন তা হচ্ছে খোচানো খুচিয়ে পরখ করেন কার প্রতিক্রিয়া কি যদি সহ্যশক্তির পরীক্ষায় কেউ পাশ করে তাহলে সেটা চলতে থাকে সীমানা কোথায় দেখার, আর সে যদি শুরুতেই বেকে বসে তাহলে সরকার পিঠটান দেন সবচেয়ে বড় প্রমান, রাজপথ

বহু টাকা খরচ করে লাল-সবুজ-হলুদ বাতি বসানো হয়েছে অবশ্যই সরকারী টাকায়, এদেশে ট্যাক্সের টাকা কেউ বলে না কেউ রাস্তার সেই আলোকসজ্জা দেখা প্রয়োজন মনে করে না মোড়ে দাড়িয়ে থাকে আধাডজন পুলিশ তাদের কাজ হাত দেখিয়ে ঠিক করে দেয়া কে কখন যাবে, কখন থামবে তবে তারা থাকা না থাকায় খুব যে যায় আসে এমন মনে হয়না যন্ত্র চেনে না কোন গাড়ি থামাতে হবে, কোন গাড়িকে কিছু বলা যাবে না এরা জানেন, এবং মানেন পুলিশের গাড়ি হলে তাকে সবসময়ই উল্টোদিকে চলতে হবে, কোটি টাকার গাড়ি হলে তাকে হাত দেখানো চলবে না, মাঝারি মানের গাড়ি হলে হাত দেখাতে পারেন তবে থামা না থামা তার ইচ্ছে, মিনিবাস-ট্রাক হাত দেখালেই বোঝে তাদের কর্তব্য কি বাকি থাকে রিক্সা চালক একসময় যথেষ্ট দুর্নাম ছড়িয়েছিল পুলিশ তাদের সাথে কারনে-অকারনে দুর্ব্যবহার করে এই গরীব মানুষগুলো রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে সভ্যতার চাকা সচল রেখেছে, তাদের ওপর অত্যাচার এখন সেটা হয় না প্রচন্ড জ্যামের মধ্যে একজন রিক্সাচালক উল্টোদিকে যাচ্ছে দুজন গন্যমান্য ব্যক্তি চড়িয়ে, এভাবে গেলে শর্টকাট হয়, তার অনেকটা পথ ঘুরে আসতে হয় না, আর গন্যমান্য যাত্রীদেরও কষ্ট করে হাটতে হয় না তা সেপথ বন্ধ। লাঠি হাতে একজন পুলিশ সেখানে দাড়িয়ে রিক্সাচালক ধমক দিয়ে বলল, থামান ক্যান ? দ্যাহেন না ওইদিক দিয়া কত ঘুরতে হইব ?

পুলিশের উত্তর, হ, আপনারে যাইতে দিয়া নিজের --- মারা খাই

এটাই বর্তমান চালচিত্র পুলিশ এরচেয়ে বেশি করতে পারে না নিতান্তই যদি ভিআইপির গাড়ি এসে পরে তখন লাঠি দিয়ে রিক্সার ওপর ঠকাস, ঠকাস বাড়ি তবে তাতেও কাজ হয় না রিক্সাচালক ঘুরে দাড়ায়, আমার ভাই আর্মিতে চাকরি করে মোবাইল করলে অক্ষনে আইসা পরব

ফলাফল বর্ণনা করার কোন প্রয়োজন নেই ঢাকা শহরের যে কোন মোড়ে মিনিটখানেক দাড়ালেই যে কেউ স্বচক্ষে দেখতে পাবেন কোন নিয়মে চলছে সবকিছু ট্রাফিক পুলিশকে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে এগিয়ে যাওয়া ড্রাইভারের তৃপ্তি, নাক ঢুকিয়ে পথ তৈরী করা রিক্সাচালকের সাফল্যের হাসি, ঠিক মোড়ের ওপর বাস থামিয়ে যাত্রী নামানোর ড্রাইভারের কৃতিত্ব আর সফলভাবে সেখানেই নামতে পারা যাত্রীর সাফল্য এসবেরই মাঝে রাস্তা পেরনোর চেষ্টারত মানুষ শিশু থেকে বৃদ্ধ, পুরুষ-বালক, মহিলা সবাই যদি দৌড়ানোর সামর্থ্য থাকে ভালই, না থাকলে ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে অপেক্ষা শুনেছি পশ্চিমা দেশে প্রয়োজনে গাড়ি থামিয়ে হাটা মানুষকে এগিয়ে যেতে দেয় কি অসভ্য দেশ! যাদের গাড়ি নেই, রিক্সা-স্কুটারে ওঠার পয়সা নেই তারা রাস্তায় বেরয় কেন ? এদের খাচায় আটকে রাখা উচিত ঢাকায় ঢুকতে পাসপোর্ট চেক করা উচিত এদের ভিসা দেয় কে ?

কখনো যে বাধা দেয়া হয় না একথা বললে মিথ্যাচার হয় কোন কোন ঘাড়ত্যাড়া পুলিশ বাধা দেয় সেদিন উল্টোপথে যাওয়া এক রিক্সা থামাল এক পুলিশ সেখান থেকে রোগা-পটকা যুবক যাত্রী মুখ লাল করে নেমে দাড়াল যত্ন করে বেনি করা চুল, দুহাত ভর্তি চুড়ি, নক্সা করা দাড়ি, রঙিন চুল এসব দেখেও তাকে থামানোর সাহস হলো কিভাবে গলা ফাটিয়ে হাত নেড়ে চিৎকার করে উঠল, কয়টাকা বেতনের চাকরী করেন ? আপনে চেনেন আমি কে ?

মুহুর্তে হাতে বেরিয়ে এল মোবাইল ফোন

বেচারা পুলিশ কোন উত্তর দিল না তবে রিক্সাকে সামনে যেতেও দিল না সমানে গলা ফুলাতে থাকল যুবক এবার তারসাথে যোগ দিল তার সঙ্গিনী এতক্ষন রিক্সায় বসেছিলেন চুপ করে, এবার গলার জোর কতটা দেখালেন এর স্বাস্থ্য-চেহারা ঠিক বিপরীত ইনি নিশ্চয়ই কেএফসি-পিজাহাটের খাবার ছাড়া খান না যা খান তা সার্থকভাবেই শরীরে জমা করেন

পুলিশের মন গলল না তাতেও মুখবন্ধ রেখে রিক্সার পথ আগলে দাড়িয়ে ততক্ষনে ভিড় জমে গেছে সেখানে গোল হয়ে ঘিরে দাড়িয়েছে দর্শক যেভাবে দাড়িয়ে ছোটবেলায় বান্দরনাচ দেখতাম সেভাবেই দেখি না এরপর কি হয়

বলছিলাম সরকারের ক্ষমতার কথা যার ক্ষমতা রয়েছে সে নিয়ন্ত্রন করে, যার ক্ষমতা নেই সে নিয়ন্ত্রন করতে পারে না যেখানে নিয়ন্ত্রন থাকে না সেখানে আইন থাকে না যার শক্তি বেশি সে দুর্বলকে লাথি মারে, বড় শক্তির কাছে শিষ্যত্ব গ্রহন করে এর ফল শুধু রাজপথেই সীমাবদ্ধ থাকে না, ছড়িয়ে পরে সবখানে সবার মনে কাজ করে, আইন বলে কিছু নেই আমার শক্তিই আমার আইন ভাঙো, গুড়িয়ে দাও আগুন লাগাও গুলি কর ছাত্র, রাজনৈতিক কর্মী, দোকানদার, ড্রাইভার, বিডিআর সবার মধ্যে এই একই বোধ, আমার যা প্রয়োজন সেটা পাওয়ার জন্য শক্তি প্রয়োগ করতে হবে এটাই একমাত্র পথ আমাকে পাটি থেকে মনোনয়ন দেবে না এত বড় সাহস আমার কি জনবল কম আছে ? ক্ষমতা কম আছে ? দিতে হবে

সরকারের যদি সত্যিই ক্ষমতা থাকে, যদি আছে বলে স্বিকার করেন তাহলে নিয়ম বলে কিছু আছে এটা প্রচার করুন প্রয়োগ করুন অন্তত রাজপথে ট্রাফিক আইন সকলের জন্য সমান এটা করে দেখান পথের ওপর সবচেয়ে বড় অধিকার পথিকের নয়ত পিলখানার মত ঘটনা অন্যখানেও ঘটবে

চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই মানতে রাজি Anything and everything is possible

বিডিআর সদর দপ্তরের ঘটনার তিনমাস পার হয়েছে এই তিন মাসে আমরা জেনেছি এতে কি হয়েছে কতজন মারা গেছে, কতজন ধরা পরেছে, কতজন পালিয়েছে, কত অস্ত্র খোয়া গেছে, কতজন আটক অবস্থায় স্বাভাবিক মৃত্যুবরন করেছে যা জানি না তা হচ্ছে এই কাজ কে করেছে কেন করেছে তিনমাসে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট বেরয়নি, সেটা কবে বেরবে, তাতে কি থাকবে তা নিয়ে নানারকম কথা উঠেছে তিন তদন্ত কমিটির তদন্তকে সমন্মিত করার দায়িত্ব নিয়েই মন্ত্রী বলতে শুরু করেছিলেন এর পেছনে কার কার হাত আছে, কে চক্রান্ত করেছে, তদন্তের কতদুর অগ্রগতি হয়েছে এইসব এখন তিনিও মুখ বন্ধ করেছেন

এবং মুখ বন্ধ করেছে সংবাদ মাধ্যমগুলোও তাদের সামনে যে আরো বড় সমস্যা সেগুলো লিখলে পত্রিকার কাটতি আরো বেশি টিভির সামনে দর্শক বেশি হয় এরসাথে তাদের ব্যবসা জড়িত, লাভ জড়িত

এই তিন মাসে বহুকিছু ঘটে গেছে বিরোধী দলের প্রধান বলেছিলেন কমকর্তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি আলোচনা না করে সাধারন ক্ষমা ঘোষনা কৌশলগত ভুল ছিল সাথে সাথে প্রতিবাদের ঝড় উঠল মহাজোটের নেতারা বসে গেলেন বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে নিন্দাপ্রসস্তাব পাশ করা হল (মহাজোটের সন্মানিত নেতৃবৃন্দ কতবার এমন জরুরী প্রয়োজনে একসাথে বসেছিলেন আমার জানা নেই) পিলখানা ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে এপার্টমেন্ট তৈরী করে দেয়ার ঘোষনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী এপার্টমেন্টগুলি তৈরী করা হবে খালেদা জিয়াকে সরিয়ে, সেখানে যায়গা করে খালেদা জিয়া সামরিক বাহিনীর এলাকায় থাকতে পারেন না, তিনি একাই দুটি বাড়ি পেতে পারেন না, এই ঠিকানায় ব্যবসা করতে পারেন না এসব অবৈধ (যতদুর মনে পরে প্রধানমন্ত্রী নিহত সেনাপরিবারের সদস্যদের দুটি করে এপার্টমেন্ট (বাড়ি নয়) দিতে চেয়েছেন যার একটি তারা ভাড়া দিতে পারবেন, অবশ্যই সামরিক বাহিনীর এলাকায় থাকা যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের, যারা দলিলে লিখে দেবেন কখনো বিরোধীদলের রাজনীতি করবেন না, আরেকটিতে তারা থাকবেন এবং নিহত সেনা পরিবারের সদস্য হিসেবে তারা সামরিক এলাকায় থাকার যোগ্য, খালেদা জিয়া নন) মন্ত্রীপরিষদ বসে সিন্ধান্ত নিয়ে ফেলল, তাকে চিঠি দেয়া হল এখন সেটা গরম খবর বিরোধী দল আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়ে রেখেছেন কঠোর হস্তে আন্দোলন দমন করা হবে

গরম আরো আছে। গরমে কাহিল হয়ে পরেছে মানুষ। চৈত্র-বৈশাখে বৃষ্টি নেই। বিদ্যুত একঘন্টা থাকে আরেকঘন্টা থাকে না ফলে পানি ওয়াশার কর্মকর্তারা অসহায় তারা চাইলেও পানি দিতে পারছেন না তবে ওয়াসা প্রধান আশ্বাস দিয়েছে, দ্রুতই বৃষ্টি হবে, তখন পানিসংকট থাকবে না ততদিনে মিছিল বিক্ষোভ করবেন না। সেটাও কঠোরভাবে দমন করা হবে। আগেই পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে পাওয়ার ষ্টেশনগুলিতে।

গরম আরো আছে। ক্যাম্পাস গরম। ছাত্রলীগ নামধারীরা সারা দেশে ক্যাম্পাস গরম করে রেখেছেন। তাদের কল্যানে একে একে বন্ধ (ছুটি) হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই ছাত্রলীগ নামধারীদের দৌরাত্ম এমনই যে ছাত্রলীগের সন্মেলনেও মারামারি করেছে প্রধানমন্ত্রী তাদের প্রধান পদ থেকে সরে গেছেন তারপরও তাদের গরম কমেনি।

সাধারন মানুষ (যদিও আমার ধারনা এদেশে সাধারন বলে কিছু নেই, সবাই অসাধারন) আরো অন্যান্য বিষয় নিয়েও ভুগেছে, ভুগছে সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চালের দাম কমিয়েছেন তবে তাতেও স্বস্তি নেই কৃষকরা বেকে বসেছে তাদের খরচের চেয়ে চালের দাম কম ভোটের আগে সারাদেশে ক্যামেরা-মাইক্রোফোন ঘুরেছে। একই প্রশ্ন। ভোট কাকে দেবেন। একই উত্তর। যে সৎ, যে যোগ্য তাকে। আগে থেকে নাম বলা যাবে না। সেই সততা এবং যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করছে তাদেরই লোক। বলছে এর পরিচয় টেন্ডারবাজি, চাদাবাজি আর যায়গা দখলে নেই। ভাগ্যিস প্রধানমন্ত্রী আগেই জানিয়ে রাখিয়েছেন এটা দখলদারি নয়, দখলদারীমুক্ত করা।

সরকারের ভাবমুর্তি নষ্ট করতে সচেষ্ঠ সবাই। এমনকি মশারা পর্যন্ত। তারাও সুযোগ বুঝে ঝাপিয়ে পরেছে সরকারের বিরুদ্ধে। কয়েলে কাজ হয় না। মশা মারার জন্য চীন থেকে ইলেকট্রিক ব্যাট আমদামী করতে হয়েছে। রিচার্জেবল, কারেন্ট না থাকলেও কাজ চালানো যায়। ভাগ্যিস চীন ছিল।

এতসব সংকটের মধ্যেও কিছু কিছু ভাল খবর সুবাতাস বইয়ে দেয় একদল বুদ্ধিজীবী দল ধরে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে গেলেন রক্তপাতহীন পিলখানা সমস্যা সমাধানের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে এলেন প্রধানমন্ত্রীকে নাহলে দেশে গৃহযুদ্ধ লেগে যেত কৃষক-শ্রমিক-চাকুরে-ব্যবসায়ী-বেকার-ছাত্র একে অন্যকে মারতে শুরু করত দেশ চলে যেত ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে পিলখানার ঘটনার সময়ই মেশিনগানের বেল্ট দেখানো হয়েছিল যা বিডিআর-সেনাবাহিনী ব্যবহার করে না তবে বিষয়টি চাপা পরে গেছে এফবিআই-স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড ঘুরে গেছে একটু একটু কানে আসছে পিলখানায় বাইরের অস্ত্র যাওয়ার কোন প্রমান পাওয়া যায়নি ষড়যন্ত্রকারী কারা তাদের নামও ক্রমেই ফিকে হয়ে আসছে। তবে ভেতরে যারা ছিল তাদের হাতে বিপুল পরিমান অস্ত্র ছিল যুদ্ধ লাগলে আশেপাশের হাজার হাজার (নাকি লক্ষ লক্ষ) মানুষ মারা যেত রক্তপাতহীন এই সমাধানের জন্য চৌধুরী সাহেবেরা প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতেই পারেন সরকারী টাকায় চা-পানি খেয়ে একটু আলাপচারিতা সারতেই পারেন তার বয়স যখন সাতাত্তর পেরিয়েছে তখন ভীমরাত্রির কথা তিনি অবশ্যই জানেন

রক্তপাতহীন! অর্ধশত উচ্চপদস্থ অফিসারের মৃত্যু রক্তপাতহীন তবে রক্তপাত কোনটা ? কিছু বিপথগামী অস্ত্রধারীর মৃত্যু ? সভ্যতার ইতিহাস বলে যে কোন ভালোর জন্য রক্ত প্রয়োজন রক্তপাতে আমরা ভাষা পেয়েছি, বহু রক্তপাতে এদেশ স্বাধীন হয়েছে, কোরবানী-বলির নামে রক্ততৃষ্ণা মেটানোর ব্যবস্থা চালু রয়েছে তাহলে রক্তপাতকে এত ভয় কেন ? ঘটনা শুরুর মুহুর্তে ঘোষনা দেয়া হতে পারত, যদি কেউ অকারনে জীবন হারায় অপরাধীদের একজনকেও জীবন নিয়ে বেরতে দেয়া হবে না একটা বার্তা পৌছে যেত এইসব অস্ত্রধারীদের কাছে তারা জানত ক্ষমতার একা তাদের হাতে নেই, মারলে মরতে হবে দেড়দিন ধরে ঠান্ডা মাথায় খুন করা যায় না

সেটা হয়নি সামরিক বাহিনীর কিছু সদস্য প্রধানমন্ত্রীকে পেয়ে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন তার রেকর্ড প্রচার করা হয়েছিল ইন্টারনেটে সাথেসাথে বন্ধ করে দেয়া হল ইউটিউব এতে দেশের মান যায় প্রধানমন্ত্রীর মান যায় আমাদের মান কচুপাতার পানি বৃটেন-আমেরিকার একজন জেনারেল যখন বুশের ইরাক আক্রমনের সমালোচনা করেন, সরাসরি বিরোধীতা করেন তাতে তাদের মান যায় না তাদের মান শক্তপোক্তভাবে এটে গেছে প্রধানমন্ত্র এত তড়িঘড়ি ইউটিউব বন্ধের পথে না গিয়ে কি বলতে পারতেন না এমন ঘটনা ঘটেছে তারা তাদের প্রীয়জনকে হারিয়েছে, সেকারনে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এটা করা তাদের অধিকার বিষয়টাতো মিটে যেত সেখানেই

নাকি প্রধানমন্ত্রীর কোন বিষয়ে ক্ষোভ জানাতে নেই জনগনের ম্যান্ডেট নিয়ে যারা ক্ষমতায় যান তাদের প্রশ্ন করা যায় না তাদের কাছে জবাবদিহিতা থাকতে হয় সবার দুর্নীতি দমন কমিশনেরও তারাও আইনের বাইরে নন জবাবদিহিতার বাইরে নন আপনাদের দায়িত্ব দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করা, সেকাজ করুন কক্ষনো, ভুলেও নেতা মন্ত্রিদের বিষয়ে প্রশ্ন করবেন না সেজন্য বিরোধীদল রয়েছে, সেখানে মনের ঝাল ঝারুন

আমি চোর-ডাকাত-ছিনতাইকারী সবাইকে মেনে নিতে রাজি প্রত্যেকেরই কাজের পিছনে সামান্য হলেও গ্রহনযোগ্য যুক্তি থাকে একজন নির্লজ্জ ব্যক্তির কোন যুক্তি নেই মৃত্যুর আগমুহুর্তে কামরূল হাসান এক কালজয়ী শব্দ রচনা করে গিয়েছিলেন বিশ্ব বেহায়া এরচেয়ে জোড়ালো শব্দ তৈরীর জন্য হয়ত তাকেই উঠে আসতে হবে

জাগো মা-বোনেরা জাগো Typical Leader

Apr 27, 2009

ভরদুপুরে মাইকের শব্দ শুনে চমকে উঠলাম এই গ্রীষ্মের কাঠফাটা দুপুরে মাইক নিয়ে মা-বোনদের জাগাতে এল কে দুপুরে ঘুমাতে হয় না এতে শরীর ভারী হয় অপুষ্টির চেয়ে স্থুলরোগ বড় সমস্যা এখনো ইউরোপিয়ানদের, আমেরিকানদের মত, এমনকি বলিউডের মত স্বাস্থ্য সচেতনতা গড়ে ওঠেনি শহরে এখনো যথেষ্ট পরিমান ফিটনেস সেন্টার তৈরী হয়নি এখন একমাত্র পথ নিজেকে নিজে বাচানো দুপুরে না ঘুমানো

কান পেতে শোনার চেষ্টা করলাম কে এই জনদরদী নিশ্চয়ই নাম জানাবে

সমাবেশে দলে দলে যোগ দিন

অবাক হলাম শুনে কিসের সমাবেশ সেটা কানে পৌছেনি মা-বোনদের সমাবেশ হয়তো নিশ্চয়ই আন্তর্জাতিক কোন দিবস আযোজন করেছে কোন মোবাইল কোম্পানী

আবাসিক এলাকা ফিরিয়ে দাও

মুহুর্তে বিষয়টা পরিস্কার হয়ে গেল আবাসিক এলাকায় যেন আবাসিক এলাকার পরিবেশ বজায় থাকে তারই সমাবেশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রাখা চলবে না জানজট চলবে না তিন ইউ আহমেদের রাজত্বকালে একথা শুনেছিলাম ঘোষনা দেয়া হয়েছিল, আবাসিক এলাকায় কোন বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থাকতে দেব না দুমাসের মধ্যে তাদেরকে সরে যেতে হবে ট্রেড লাইসেন্স দেয়া হবে না এখনো দেয়া হয়না, অতিরিক্ত টাকা না দিলে

তবে, যারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করেন তাদের অতিরিক্ত টাকার অভাব নেই কেন্টাকি চালু হয়েছে রাস্তা দুপাশ তার পার্কিং এর যায়গা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাত যত বাড়ে গাড়ির ভিড় তত বাড়ে শুনেছি একটা ফ্লোরে নাইট ক্লাব রয়েছে রাতের বেলা কাচের মধ্যে দিয়ে রঙিন আলোর নাচানাচি দেখা যায় যাদের ঢোকার সামর্থ্য নেই তারা রাস্তায় দাড়িয়ে দেখার চেষ্টা করে যদি কাচের ফাকে কিছু নজরে পড়ে কানাঘুসা করে ওখানে ঢুকতে কত খরচ হয় টাকা দিতে হয় না ডলার যাদের ঢুকতে বেরতে দেখি তাদের টাকা-ডলার কোনটারই সমস্যা নেই এটা নিশ্চিত এরা স্কুলের বেতনও ডলারে দেয় পাশ করে বিল গেটস-মেলিন্দা গেটস ছাড়া অন্যকিছু হতেই পারে না

ইউ আহমেদ ত্রয় এই অবস্থার পরিবর্তন চেয়েছিলেন রাস্তাগুলি ওয়ান ওয়ে করা হল একদিক দিয়ে যাবে অন্যদিক দিয়ে আসবে হলুদ জামা গায়ে কম্যুনিটি পুলিশ দাড়িয়ে গেল লাঠি হাতে কিন্তু কে শোনে কার কথা গাড়ির যাত্রী, রিক্সাযাত্রী, গাড়িচালক, রিক্সাচালক সকলের মুখে এককথা, এই একটু সামনে যাব তারপর ঠেলেঠুলে চলে যায় তাকে উপেক্ষা করে এক গাড়িযাত্রীকে যেতে দেব না বলায় নেমে তার মাথা ফাটিয়ে চলে গেল সত্যিকারের পুলিশ এল তবে তাদের অভিজ্ঞতা বেশি গাড়ি দেখেই চেনেন কি করতে হবে তখন রেসলিংএর রেফারীর মত অন্যদিকে মুখ করে রাখেন কিছুদিনের মধ্যেই সবাই ভুলে গেল জারি করা নিয়ম, ইউ আহমেদরা ইউটার্ন নিলেন, সব বরাবর হয়ে গেল যেদিকে খুশি যান, যেখানে খুশি গাড়ি রাখুন একটাই নিয়ম, বড়র সাথে লাগবেন না রিক্সা থেমে থাকলে তাকে সরিয়ে গাড়ি রাখুন আর আরো দামি গাড়ি এলে সরে যায়গা করে দিন

জাগো, মায়েরা জাগো জাগো, বোনেরা জাগো বলতে বলতে মাইকের শব্দ দুরে সরে গেল আমিও একসময় ভুলে গেলাম মাইকিংএর কথা

পরদিন বিকেলে, রোদের তাপ তখনো কমেনি, রাস্তায় বেরিয়ে প্রথমেই চোখে পরল লাঠিহাতে পুলিশ গাড়ি ঘুরিয়ে দিচ্ছে তারপরই চোখে পরল ১৫-২০ জনের দল হাতে ব্যানার নিয়ে দাড়িয়ে রয়েছেন রাস্তা বন্ধ তাদের সামনে হাতে মাইক্রোফোন নিয়ে এর উদ্দ্যোক্তা

তাকে একবার দেখলাম ভাল করে শরীরে গড়ন, পোষাক-আষাক, অঙ্গভঙ্গি দেখে মনে হল একসময় কেউকেটা ছিলেন হয়ত এখনো আছেন তবে গলা শুনে প্রথমেই যা মনে হল, এমন পরিবেশে বক্তৃতা দিয়ে অভ্যস্থ নন এখনো জ্বালাময়ী বলার পর্যায়ে পৌছেননি তবে কন্ঠে দৃঢতা রয়েছে

আমরা ধানমন্ডিকে বানিজ্যিক এলাকা বানাতে দেব না আপনারা জাগুন অনেক সহ্য করেছেন আর নয়

আমি তার আহ্বানে কারা এসেছেন দেখার চেষ্টা করলাম। বিশেষ করে মা-বোনদের দেখার চেষ্টা করলাম তার একেবারে পাশে রয়েছেন দুতিনজন ওদিকে বিল্ডিংএর ছায়া রয়েছে বাকিরা তাদের মুখোমুখি সোজা মুখে এসে পরেছে রোদ চোখমুখ কুচকে, মাথা নিচু করে কোনমতে সহ্য করছেন বোঝা যাচ্ছে কেউই এই প্রচন্ড গরমে এসির বাইরে এসে খুশি নন। আরেকটু পরে শুরু করলে হত না! সন্ধ্যের পর। বেশ ঢুরফুরে হাওয়ায় সন্ধ্যেটা কাটানো যেত।

এর উদ্দ্যোক্তাই আমার মনোযোগ আকর্শন করল বেশি। ধবধবে পোষাক। পথে নেমেছেন এলাকাবাসির উপকার করতে। এই এলাকাকে তিনি বস্তি বানাতে দেবেন না, আভিজাত্য বজায় রাখবেন।

কিন্তু তিনি এই দায়িত্ব নিলেন কেন ?

বকারামের মাথায় কুচিন্তা বেশি খেলে। মনে হল যা কামানোর তা তো কামিয়েছেন, এখন দেশের জন্য জনগনের জন্য, সমাজের জন্য কিছু করা উচিত তাছাড়া বসে খেলে রাজার ধণও ফুরিয়ে যায় সেঝুকি নেয়ার চেয়ে বরং একটু হেটেফিরে খাওয়া ভাল মুলধন যা রয়েছে তাতে ঝুকি নেয়াই যায়

আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলনে যাব। কোন বাধাই আমাদের দমাতে পারবে না। আমরা আমাদের অধিকার আদায় করবোই করব।

এই ব্যক্তি যখন নিয়মের কথা বলছেন তখন প্রশ্ন এল মনে, তিনি কিভাবে সেটা করবেন ? নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন কি জিনিষ ? সবসময়ই শুনেছি শান্তিপুর্ন মিছিলে পুলিশের হামলা, সবসময় দেখেছি শান্তিপুর্ন মিছিল থেকে গাড়ি ভাঙা, দোকান ভাঙা, আগুন লাগানো, পুলিশের দিকে ঢিল ছোড়া। এইসব এসিরুমে বাসকরাদের লোকদের নিয়ে তিনি কি সেটা করতে পারবেন ? এজন্য তো নেতাই রয়েছে। যখন থেকে মানুষ সমাজে বসবাস করতে শুরু করেছে তখন থেকেই নেতৃত্বের বিষয়টিও শুরু হয়েছে কিছু ব্যক্তি তাদের জ্ঞান, মেধা, অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা দিয়ে ঠিক করবেন কিভাবে চললে সমাজ ভালভাবে চলবে অন্যরা তার কথা মেনে চলবে বিপদে পড়লে তারকাছে দৌড়ে যাবে আর তিনি সমাধান বলে দেবেন এমন নীতির প্রচলন করবেন যারফলে দেশ এগিয়ে যাবে মানুষ সন্মান নিয়ে মাথা উচু করে চলবে ভেনেজুয়েলায় নাকি বহু স্কুল রয়েছে সঙ্গিত শেখানোর অনেক যায়গায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা হাজারের ওপর বয়স শুরু ২ থেকে এরা এসেছে সমাজের একেবারে নিচুতলা থেকে অনেকে খেতে পায় না এমন পরিবার থেকে মনে হতে পারে দেশকে ক্লাসিকাল মিউজিকে পরিচিত করার জন্যই এই উদ্দ্যোগ তা-তো বটেই বয়স বিশ বছর পেরনোর আগেই কেউ কেউ বিশ্বখ্যাতি পেয়েছে বেটোভেন বিশেষজ্ঞ হিসেবে বিশ্বের যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার যোগ্যতা অর্জন করেছে তারপরও সে শিক্ষকতা করে কারাকাসে সেটা নাকি তারকাছে পুনর্জন্ম আর তাদের মতে এই ব্যবস্থা বিপুল পরিমান মিউজিশিয়ান তৈরী করা না, বরং তাদেরকে মানুষ করে তোলা পাচ বছরের একজন শিশু যখন বেটোভেনের সুর তুলে হাততালি পায় তখন সে ভাবতে শুরু করে সে সাধারন মানুষ নেই সে মিউজিশিয়ান মানুষ তার বাজনা শুনতে আসে তার আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় দলগতভাবে থাকতে শেখে, একসাথে কাজ করতে শেখে তার বাবা-মা ভাবতে শুরু করে তার সন্তান আর বস্তির না খেয়ে থাকা বালক নেই অভাব হয়ত এখনো যায়নি কিন্তু সে লাভ করেছে মর্যাদা বুশ-স্যাভেজ যত দা-কুমড়ো সম্পর্কই থাকুক না কেন, বুশসাহেব এটা শিখে নিতে ভুল করেননি এর মডেল চালু হয়েছে নিউইয়র্কেও

তিনি সেপথে যাচ্ছেন না কেন ? কোন দেশে, কোন সমাজে কিভাবে কি হয়েছে দেখা প্রয়োজন মনে করছেন না কেন ? না-কি তিনি নতুন কিছু আবিস্কার করে দেখাবেন ? নেতা তো ঠিকই রয়েছেন শতশত, হাজার হাজার কে কাকে ফেলে নেতৃত্ব দেবেন তা নিয়ে প্রতিযোগিতা চলছে রীতিমত লড়াই করে নেতৃত্বের সামনে যেতে হয় না-কি সেই নেতৃত্ব তার পছন্দ হচ্ছে না

হবেই বা কেন ? ছেলের বয়সি একজন ভোট পেয়ে সব মাতব্বরি করবে এটা মেনে নেয়া যায় ? তারকাছে মাথা নিচু করে গেলে ইজ্জত থাকে ? আর তাদের কানে কথা তুলেই বা লাভ কি ? তাদের এসব দেখার সময় আছে ? তাদের কত কাজ দেশ, জনগন, গণতন্ত্র, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, আরো কত কি- আর, কতজনের তো কান কাটা এককান কাটা গেলে নাকি সেটা চুল দিয়ে আড়াল করে দুকান কাটা গেলে কানে বাতাস ঢোকে না এদিক ওদিক দিয়ে পাশ কাটিয়ে যায় যোগাযোগ মন্ত্রী ঠিক করেছেন তিনি কোটি টাকার গাড়িতে বেড়ানোর খায়েস মেটাবেনই মেটাবেন কে কি বলল তাতে কি যায় আসে তিনি কি উলফোভিতজ না ব্লাংকেট জোট সরকারের মন্ত্রীও নন সে ব্যাটা জানে না গাড়ি কিভাবে নিতে হয় শেষে আমও গেল ছালাও গেল তিনি খুটি গেড়ে বসতে শিখেছেন মনে মনে বলেন, ব্যাটারা কথা বলার যায়গা পায় না ইলেকশনের সময় তারা কি বাপের টাকা খরচ করেছে ? তারা কি জানে কি করলে মন্ত্রী হওয়া যায় ? হয়ে দেখাক তো!

এমন নেতার কাছে গেলে লাভ কি হবে ?

তারচেয়ে নিজে নেতা হওয়া ভাল চেষ্টা করলেই হওয়া যায় দরকার একটু প্রচার, একটু প্রসার, একটু খরচ যতটুকু করলে টিকিট পাওয়া যায় মেনন ভাই দেখিয়েছেন নদী পার হওয়ার জন্য সাতার কাটা প্রয়োজন নেই, নৌকায় উঠলেই হয়

তিনি বলছেন, ধানমন্ডির একুশটা আউটলেট রয়েছে প্রয়োজনে আমরা সবগুলো বন্ধ করে অবস্থান ধর্মঘট করব কোন অফিসের যানবাহন চলতে দেব না ধানমন্ডিতে যানজট লাগতে দেব না

মনে মনে বললাম, যানজট তো লাগিয়েই রেখেছেন ডজন দুয়েক পুলিশ হিমশিম খাচ্ছে সেই জট ছাড়াতে আর গাড়ি যদি চলতে থাকে তাহলে জটই বা লাগে কিভাবে ? নিউইয়র্ক-লন্ডনে কি এরচেয়ে কম গাড়ি চলে ? যে গাড়ি ঘন্টার পর ঘন্টা পথের অর্ধেক জুড়ে থেমে থাকে জট তো সেইই লাগায় আপনার কয়েকগজ দুরেই দেখুন না রাস্তার দুপাশ গ্যারেজ হয়ে রয়েছে আপনার বাড়ির গেট বন্ধ এটা বন্ধ করুন না কেন ? এজন্য আইনও তো রয়েছে পুলিশ নিজে যখন করবে না তখন নিজেই একটা মামলা দিন অবৈধ পাকিংএর দেশে এখনই আইন-আদালত রয়েছে। অন্তত তাদেরকে কৈফিয়ত দেয়ার জন্য তলব করা হয়নি।

পরক্ষনেই মনে হল, মামলা করা তার আওতার বাইরে কেন্টাকির মালিক আর গাড়ির মালিকের ক্ষমতা তারচেয়ে অনেক বেশি এরা সবাই বাংলার বাঘ যেচে বাঘের সাথে লড়তে যায় কে ? তারচেয়ে এখানে বক্তৃতা দেয়া ভাল বেশ পরিচিতি পাওয়া যাচ্ছে খবরের কাগজে কি ছবি উঠবে ? আরে একটা টিভি চ্যানেলের গাড়ি এইসময় যায় না কেন ? ব্যাটারা কত টাকা নেয় খবর দেখাতে ?

চলতে থাকল বক্তৃতা। আমি হাটতে হাটতে এগিয়ে গেলাম আর যতদুর কানে আসে শুনতে থাকলাম।

হঠা করে আগের দিনের মাইকিংএর কথা মনে হল জাগো, মা-বোনেরা জানো

নেতারা সাধারনত ভাইসব, প্রিয় এলাকাবাসি এসব দিয়ে শুরু করেন ইনি বিশেষভাবে মা-বোনের দিকে দৃষ্টি দিলেন কেন ? যতদুর জানি তারা এখনো মিছিলে সংখ্যালঘিষ্ট

নাকি দেশের প্রধানমন্ত্রী মহিলা, বিরোধীদলের নেতা মহিলা, স্বরাষ্ট্র-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহিলা বলে এদিকেই সম্ভাবনা দেখছেন ধারনাটা মন্দ না মা-বোনদের জাগার এখনই সময়
 

Browse