জট-মহাজটের গনতন্ত্র

Nov 30, 2010
আমরা গনতন্ত্র চাই গনতন্ত্র ছাড়া অন্য কিছুতে সন্তুষ্ট নই যেভাবেই হোক, যা করতে হয় হোক, গনতন্ত্র কায়েম করব
এটা নিত্যদিনের ঘোষনা রিক্সাচালক, শ্রমিক থেকে শুরু করে রাজনীতিবীদ হয়ে বিশেষজ্ঞ পর্যন্ত সবার মুখে এককথা জরুরী আইন ঘোষনা করেও বলা হয়েছিল একই কথা, আমরা গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতেই এসেছি গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে একদিনও অতিরিক্ত ক্ষমতায় থাকব না জোরে একটা হাততালি
গনতন্ত্র নিশ্চয়ই পশ্চিম থেকে আমদানী করা আরো নির্দিষ্ট করে বললে, যদি সেটা ডেমোক্রাটিকের বাংলা হয় তাহলে তো বটেই  প্রাচীন গ্রীসে নাকি এর উতপত্তি সেখানে ভোটের ব্যবস্থা ছিল ভোটে নির্বাচিত হত কে সরকারের প্রতিনিধি হবেন আর আধুনিক গনতন্ত্রের কথা বলেছিলেন ইতালীর কে একজন মেকিয়াভেলী না কি যেন নাম সেটাও পশ্চিম দিকেই আমরা সেতুলনায় পুবদিকে বাস করি, কাজেই তাদের গনতন্ত্র আর আমাদের গনতন্ত্রে ফারাক থাকতেই পারে
যেমন ধরুন ক্ষমতাশীন সরকার লীগের বক্তব্য অত্যন্ত স্পষ্ট বাংলাদেশে বিএনপির মত অগনতান্ত্রিক দল দরকার নেই আমরা একাই যথেষ্ট প্রয়োজনে সাথে যেসব আন্ডাবাচ্চা আছে তাদের বিরোধী দলের সিটে বসালেই হয়ে গেল আমেরিকাতেও কম্যুনিষ্ট পার্টি আছে
কাজেই বিএনপিকে বিদায় করতে হবে রাজনৈতিকভাবে না, দলীয়ভাবে, ব্যক্তিগতভাবে ক্যান্টমেন্টের বাড়িছাড়া করা হয়েছে, প্রয়োজনে গুলশানের বাড়িছাড়া করা হবে, ঘোষনা দিয়েছেন একজন মন্ত্রী খালেদা জিয়ার দুই সন্তানকে দেশছাড়া করা হয়েছে দুর্নীতির দায়ে
একটু থামুন তো দুর্নীতির দায়ে দেশছাড়া দুর্নীতির দায় নেই এমন একজন নেতার নাম করতে পারেন ! মাত্র একজন ? পারেন না ? তাহলে তাদের দেশছাড়া হতে হয়নি কেন ? একজনতো অনৈতিক কারনে সংসদের সদস্যপদ খোয়ানোর পরও মহানেতা হাজার হাজার মামলা উঠিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিতে পারেন নিজেরটা সহ
আসলে, আমরা গনতন্ত্র চাই সেকারনেই ওদের দেশ ছাড়তে হয়েছে গনতান্ত্রিক দেশে ওসব জঞ্জাল প্রয়োজন নেই ওদের হাতে দেশ নিরাপদ না চাকরী-বাকরি, টেন্ডার ওসব দেয়া হবে আওয়ামী লীগের ভেতর থেকে যদি পড়াশোনা করে, নিজেকে যোগ্য ভেবে চাকরী আশা করেন তাহলে আগেই জেনে রাখুন, লীগার হওয়া সবচেয়ে বড় যোগ্যতা  আগে সেপথ ধরুন হয় লীগ নয়ত দ্বিতীয়-তৃতীয় শ্রেনীর নাগরিক দয়া করে এদেশে থাকতে দিয়েছি এইই অনেক
হরতালের ক্ষতির ব্যাখ্যা দেয়ার মানুষের অভাব নেই জনগনের দুর্ভোগ, অর্থনীতি ধ্বংস, উতপাদনে বাধা সেইসাথে দাঙ্গা-হাঙ্গামা-মারপিট-ভাংচুর তো আছেই এসব কি চলতে দেয়া যায় গনতন্ত্রের দেশে কোনভাবেই না তারা যদি রাজনীতি করতেই চায় অন্যপথে করুক
সেই পথটা কি সেপ্রশ্ন করবেন না খোজার দায়িত্ব তাদের তাদের বিষয় নিয়ে আমি মাথা ঘামাব কেন ? আমার সময় কোথায় ? প্রধানমন্ত্রীর সাথে জাপান ভ্রমনটা হাতছাড়া হয়ে গেল এসব বলতে বলতে-
আসল কথা হচ্ছে, আগামী ৩ বছরের মধ্যে এদেশ থেকে অগনতান্ত্রিক বিএনপিকে বিদায় নিতে হবে তারপর দেখবেন কিভাবে দেশ গনতন্ত্রের পথে তরতর করে এগিয়ে যায় বাধা দেয়ার কেউ নেই
আর বিএনপির কথা যদি শুনতে পান, সবকিছু হারানোর পর একমাত্র রাজপথই খোলা আছে সব পদ্ধতি শেষ হয়ে একমাত্র হরতালই টিকে আছে সাধারন মানুষ (যদি থেকে থাকেন আসলে সবাই অসাধারন) একমাত্র এটাই বোঝে যদি বিরোধী দল টিকিয়ে রাখতে হয় তাহলে এটা চলতেই থাকবে
দেশ আজ জটে আক্রান্ত রাজপথ আক্রান্ত গাড়ি-রিক্সা আর মানুষের জটে রাজনীতি আক্রান্ত চারদলীয় জট আর মহাজটে যারা আওয়ামী-জাতিয়তাবাদী কোনটাই হতে পারেননি তারা মাঝখানে ফলভোগ তো করতেই হবে

ব্যবসা মানেই অগ্রগতি

Nov 25, 2010
বিশেষ একটা ব্রান্ডের সাবান মাখলে সারাদিন মনের আনন্দে থাকা যায় সেটা নিশ্চয়ই জানেন। কিংবা এক বোতল এনার্জি ড্রিংক খেলে নাচতে জানুন বা নাই জানুন, মনের আনন্দে নাচতে থাকবেন সেটাও জানেন। কিংবা বিশেষ সেন্ট গায়ে মাখলে রাস্তায় যত সুন্দরী মেয়ে আছে সবাই পড়িমড়ি করে আপনার দিকে ছুটে আসবে সেটাও জানেন।
আমি বিজ্ঞাপনের কথা বলছি। কিংবা বলতে পারেন ব্যবসার কথা, কিংবা ব্যবসায়ী কথা। তারা যা বলেন সদাসত্য বলেন। এমনকি দেশ কিভাবে চালাতে হবে সে বিষয়েও।
হরতাল দেশের অর্থনীতি ধ্বংশ করে, মানুষকে পংগু করে। কাজেই হরতাল করবেন না। প্রয়োজনে হরতালের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীরা মাঠে নামবে (অস্ত্র হাতে কিনা সেটা উহ্য)। মন্ত্রীও খুব উতসাহ পেয়েছেন সেকথা শুনে। ব্যবসায়ীরা যখন দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিচ্ছে তখন ....
ব্যবসায়ীরা সবই পারেন। দেশ কিভাবে চলবে পরামর্শ দিতে পারেন, দেশ চালাতে পারেন। আর নেতা আর ব্যবসায়ীর পার্থক্যই বা কোথায়। যিনি ব্যবসায়ী তিনিই যে নেতা। তিনিই মন্ত্রী। কাজেই তারা এমন কথা বলতেই পারেন। তবে একটা কাজ তারা পারেন না। গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীগুলির জন্য আইন করা হয়েছে বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ নদিতে ফেলার আগে শোধন করতে হবে। সেটা তারা মানাতে পারেন না। তাতে খরচ বাড়ে। পেটেভাতে কাজ করে যে শ্রমিক তার বেতন বাকী রাখা বন্ধ করতে পারেন না। তাতেও খরচ বাড়ে। প্রবাদ আছে কাক কাকের মাংশ খায় না। তারা ব্যবসায়ী হয়ে আরেক ব্যবসায়ীর ক্ষতি করবেন তাতো হয় না। তাদের কত প্রতিযোগিতা করে ব্যবসা করতে হয়। তাদের লাভের বিষয়টা তো দেখবেন। নইলে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক বেকার হবে যে। ক্রেতারা বেশি টাকা দিতে চায় না।
অবশ্য আমেরিকা ইউরোপের ক্রেতারা অন্য কথাই বলেন। তারা ইচ্ছে করলেই বেশি টাকা দিতে পারেন কিন্তু সেটা যাবে কোথায় ? যে টাকা শ্রমিকের খাবারের ব্যবস্থা হয় সেই টাকা বাকী থাকে কিন্তু মালিকের কোটি টাকার গাড়ি কেনা বন্ধ থাকে না যে!
দেশের কথা সবাইকে ভাবতে হয়। একেবারে গন্ডগ্রামের যে কৃষক সেও ভাবে। সংখ্যায় তারাই সবথেকে বেশি। নির্বাচনে তারা বিএনপিকে ভোট দেয়নি কারন তাদের রাষ্ট্রপরিচালনার দুর্গন্ধ। হরতালে দেশের ক্ষতি হয় সেকথাই বা বলছে কে ? আওয়ামী লীগের গা থেকে হরতালের দুর্গন্ধ কি বিদায় হয়েছে ? বিরোধী দলে থাকলেও হরতাল দেব না এমন কথা দিয়েও দিন-তারিখ ঘোষনা করা হয়েছিল সরকার পতনের। গিনেস বুকে হরতালের রেকর্ড যদি থেকেই থাকে সে তো তাদেরই। সরকারে যাওয়ার সাথেসাথে রঙ পাল্টালো কিভাবে ? আবার কি কথা দেবেন বিরোধী দলে থাকলেও ....
কথা হচ্ছিল ব্যবসায়ীদের নিয়ে। তারা দেশের জন্য সদা ভাবেন। কখন কে সরকার তাতে কি আসে যায়, হাত বাড়াতে হয় সরকারের দিকে। বিরোধী দলের কাছে হাত পেতে লাভ নেই।
মানুষ যখন ডুবতে থাকে তখন সামনে যা দেখে তাকেই আকড়ে ধরতে চায়। বিএনপিকে মানুষ সমর্থন করছে না কারন তারা খারাপ থেকে ভাল কি দেবেন সেটা পরিস্কার করেননি। যে কারনে খারাপ আরো খারাপ হচ্ছে। এখন ব্যবসায়ীরা যদি রাজনীতিতে অবদান রাখতে থাকে তাহলে সেটা খারাপ থেকে ভয়ংকর হবে, ইতিহাস সেটাই বলে।
ব্যবসা এবং দেশ চালনা দুটো পৃথক বিষয়। ব্যবসার উন্নতি লাভে, দেশের উন্নতি কল্যানে। আর ব্যবসায় কল্যান বিষয়টি অনুপস্থিত।

অবশেষে

Nov 14, 2010
অবশেষে বেগম খালেদা জিয়াকে ৬০০ কোটি টাকার সম্পদ ছেড়ে যেতে হল। কিংবা বলতে পারেন ৬০০ কোটি টাকার সম্পদের অবৈধ দখলমুক্ত করল সরকার। তিনি কখনোই স্বেচ্ছায় যেতেন না। এখন দাম ৬০০ কোটি টাকা, ভবিষ্যতে আরো বাড়বে। তখন বিক্রি করে বহু টাকার মালিক হবেন এই আশায় সেখানেই থেকে যেতেন। কাজেই, সরকার দেশের সম্পদ উদ্ধার করে একটি পবিত্র, মহান দায়িত্ব পালন করল।
মুল পথের আশেপাশে যেমন অসংখ্য অলিগলি থাকে আপনি চাইলে তেমনি অলিগলি দেখতে পারেন। মানে নানারকম যুক্তি আরকি। যেমন তিনি কোর্টের রায় মেনে স্বেচ্ছায় চলে গেছেন, তার সাড়ে তিন দশকের সংসারের সবকিছু ফেলে। তাকে ধন্যবাদ জানাতেই জানালা কেটে, দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকা হয়েছিল। কোর্টে যে আবেদন করেছেন, কোর্ট যে সময় নিয়েছে মাসের শেষ পর্যন্ত ওসব আসলে কিছু না। কোর্ট কি জানাবে সেটা আগেই জেনে খুশি হয়ে চলে গেছেন।
অন্যদিকেও দৃষ্টি দিতে পারেন। আকারে ইঙ্গিতে এরই মধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে কাজটি সরকার করেনি। করেছে সেনাবাহিনী। জনগনের সরকার এমন কাজ করতেই পারে না।
কিংবা যে কথাগুলি এতদিন ধরে প্রচার করা হয়েছে সেগুলি আবারও জাবর কাটতে পারেন। ক্যান্টমেন্টের মধ্যে বেসামরিক বসবাস নিষেধ (কোন আইনে কে জানে ? বনানী, মিরপুরসহ আশেপাশের অনেক এলাকা ক্যান্টমেন্টের নিজস্ব। ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের নিজস্ব আইনে নাকি বলা আছে কমপক্ষে ১০ হাজার বেসামরিক লোক থাকতে হবে ক্যান্টমেন্ট এলাকায়), কিংবা ক্যান্টনমেন্টে বসে রাজনীতি করা যায় না (বানিজ্যমন্ত্রী যেখানে বাস করেন তাকে ক্যান্টমেন্টে বাস করা বলা যায় না। তিনি বর্তমান মন্ত্রী) ইত্যাদি ইত্যাদি।
কথা যাই হোক না কেন, বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতির মুল যে কাজ সেই হরতাল ডাকা হয়েছে। ঈদের দুদিন আগে। যখন রমরমা ব্যবসা, মানুষের বাড়ি ফেরার মিছিল ঠিক সেই সময়ে। তাদের মানবিকতা বলে কিছু নেই। ৬০০ কোটি টাকার বাড়ি রক্ষার জন্য সারা দেশের মানুষকে জিম্মি করেছে। ৩৫ লক্ষ গার্মেন্টস কর্মী ভাইবোনসহ ২ কোটি দরীদ্র মানুষের ভাগ্য অনিশ্চিত করছে। ঈদের আগে ব্যাংক বন্ধ রেখে চামড়া শিল্প ধ্বংশ করছে। হরতাল অগনতান্ত্রিক সমাজের বৈশিষ্ট। একদিনে হরতালে ক্ষতির পরিমান ..
এসব তথ্য সকলেরই জানা। অতীতে শতশতবার শুনেছেন। গত সরকারের সময় তালিখ ঘোষনা করে দেয়া হয়েছিল, অমুক তারিখের মধ্যে সরকারের পতন ঘটানো হবে। আপনারা ততদিন পর্যন্ত হরতাল করুন।
তখন সবাই জেনেছেন হরতালের ব্যাখ্যা কি। নতুন করে আর বলার কি আছে। সরকার-বিরোধীদল-ব্যবসায়ী নেতা-বুদ্ধিজীবী সকলেই আরেকবার ঝালিয়ে নেবেন তাদের বক্তব্যগুলো। আরো ধারালো করবেন। বরং সাধারন মানুষের দিকটাই দেখা যাক (অবশ্য যদি সাধারন মানুষ বলে কিছু থাকে)।
অনেকের মতে এটা হরতালের প্রস্তুতি। ঈদের আগে হরতাল ডাকার কোন পরিকল্পনা ছিল না। ঈদের পর আন্দোলনের কথা বলা হয়েছিল। কেউ কেউ আগ বাড়িয়ে এটাও বলছেন সেজন্যই একে মোক্ষম সময় মনে করা হয়েছে। যাই হোক না কেন, হরতাল ডাকা হয়েছে। এটা প্রস্তুতি মুলক। এরপর বিরতি দিয়ে দিয়ে, তারপর বিরতিহীনভাবে ডাকা হবে।
আর হরতাল অর্থ দল আ লীগের মুখোমুখি অবস্থান। একপক্ষের চাদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলদারী, খুন সবকিছু করার অধিকার দেয়া হয়েছে এই সময়ে পথে নামবেন এই সর্তে। আরেকপক্ষ বছর চারেক ধরে সব হারিয়ে সেগুলি ফিরে পেতে মরিয়া। মাঝখানে জনগন। সরকারী চাকরী করলে অফিসে যাওয়া না যাওয়া আপনার ইচ্ছে, হরতালের দিন বাদ দিয়ে। চাকরী বাচাতে চাইলে আগের দিন অফিসে গিয়ে রাতে সেখানে ঘুমাবেন এবং পরদিন অফিস করবেন। বিটিভিতে দেখানো হবে অফিসের উপস্থিতি স্বাভাবিক।  সরকারী সাংসদের গার্মেন্টস হলে সেখানেও একই কথা। সেলাইকল চালানো দেখানো হবে বিটিভিতে। রাজপথে কিছু বাস চলবে যেখানে যাত্রীদের সবার কাছে পিস্তল। এই বাসগুলি কোথাও থামবে না। সারা শহর ঘুরে বেড়াবে। সেটাও দেখানো হবে বিটিভিতে। ফুটপাতের কোন ব্যবসায়ী অসন্তুষ্ট, কোন মিনিবাস চালক হরতালের শিকার, কোন রিক্সাচালক খেতে পাচ্ছে না সেই সাক্ষাতকারও দেখানো হবে (লক্ষ্য করলে মুখের কোনে হাসিটাও দেখে নিতে পারেন। হরতাল মানেই রিক্সাভাড়া দুই থেকে তিনগুন), কোন পথচারী কতঘন্টা ধরে কত মাইল হেটেছেন সে বর্ননাও শুনবেন।
আজকাল আবার বিটিভি একা নেই। প্রতিদ্বন্দি অনেক। চ্যানেলগুলিতে এসবের সাথে হরতালের পক্ষ-বিপক্ষের ছবি দেখবেন।  সেখানে দুপক্ষের উপস্থিতি সমান। কথায়, স্লোগানে, শক্তিতে। একেবারে রেসলিংএর উত্তেজনা। একেবারে টাটকা, সরাসরি সম্প্রচার।
যারা টিভিতে ঝিমধরা, বস্তাপচা নাটক দেখে দেখে বিরক্ত তারা অবশেষে উত্তেজনার খোরাক পেলেন। ধন্যবাদ জানাতেই পারেন দুপক্ষকে।
আর যদি নিতান্তই নিরামিশভোজি হন তাহলে জনগনের কথা ভেবে ইতিহাস থেকে উদাহরন দেখাতে পারেন বেগম খালেদা জিয়াকে। সম্রাট আকবর যখন ক্ষমতায় তখন খবর পাওয়া গেল ইংরেজরা এক কুকুরে গলায় কোরান শরীফ ঝুলিয়ে শহরে ঘুরিয়েছে। তিনি এতটাই ক্ষিপ্ত হলেন যে ঘোষনা দিলেন গাধার গলায় বাইবেল ঝুলিয়ে দেশ ঘোরাবেন।
তার মা (ইতিহাসে তার খুব পরিচিতি নেই) বললেন, ওরা অন্যায় করেছে।  সেই একই অন্যায় করে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা যায় না।
তিনি বাংলাদেশে ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘসময় দেশ চালিয়েছেন। সন্মান তার প্রাপ্য। যা করা হয়েছে তাতে অনেকেই দুঃখ পেয়েছেন। বিএনপি কিংবা তার শাসনামলের ভক্ত না হয়েও। 
তারপরও, অন্তত দেশ এবং জনগনের কথা ভেবে তিনি যেন এমন কিছু না করেন যেখানে প্রতিহিংসা প্রকাশ পায়।

ক্যালকুলাসে ক্যালকুলেশন

Nov 8, 2010
দেশে নাকি বেকারের সংখ্যা বেড়েছে আরো বাড়ছে অচিরেই ৬ কোটিতে দাড়াবে। শিক্ষিত বেকারের সংখ্যাবৃদ্ধির হার সবথেকে বেশি যারা এবিষয় নিয়ে কাজ করেন তারা সবাই বলছেন;
এই লোকগুলোর আসলে কোন কাজ নেই এটাওটা বলে নিজের পকেটে টাকা ঢুকানো ছাড়া এসব কথা বললে বিশেষজ্ঞ হওয়া যায় বাড়িগাড়ির মালিক হওয়া যায়। সবাই না বুঝে হাততালি দেয়, কেউ ব্যাখ্যা চায় না।
শিক্ষিত বেকার, কথাটার মানে কি ? যার সার্টিফিকেট আছে চাকরী নেই তাই তো !
চাকরীর কথা আসছে কেন ? প্রধানমন্ত্রী তো বলেই রেখেছেন চাকরী দেয়া হবে আওয়ামী লীগের ভেতর থেকে। শিক্ষিতদের সবাই কি আওয়ামী লীগ ?
প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন হয়ত প্রত্যেক পরিবার থেকে একজনকে চাকরী দেয়া হবে (নিশ্চিত করা কঠিন। উনি কি বলেছেন আর কি বলেননি সেটা প্রমান করা যায়না), কিন্তু কি চাকরী দেবেন সেকথা তো বলেননি। একটা সার্টিফিকেট হাতে ধরে ভেবেছেন ডিজিটাল বাংলাদেশে সফটঅয়্যার ডেভেলপার হবেন ? ঘরে বসে ইন্টারনেটে সহজে অর্থ উপার্জন করবেন ? কিংবা হবেন শিল্পী, সাহিত্যিক ?
এদেশে ওসব ঘাড়তেড়ামি চলবে না। এটা পরিশ্রমি মানুষের দেশ। রাজপথে রিকসা চালান। ফুটপাতে দোকান দিন। পরিশ্রম করুন। জমিতে চাষাবাদের কথা ভাববেন না আবার। জমির আসল মালিক বলে কোন কথা নেই। কখনো আপনার পুর্বপুরুষ হয়ত ছিল, সেটা অতীত। বর্তমান মালিক কখনো হাউজিং কোম্পানী, কখনো সরকারী দলের নেতা, কখনো সরকার নিজেই। ছাড়ার জন্য তৈরী থাকবেন। এই দুনিয়া মুসাফিরখানা। কদিন হেসেখেলে চলুন তারপর পাততাড়ি গুটাতে হবে।
নিজের বাড়ি নেই দেখে পত্রিকার বিজ্ঞাপন আর টিভির বিজ্ঞাপন দেখে ভাবছেন একটা ফ্লাট কিনেই ফেলব। বুকিং দিলেই পুরস্কার। মাসেমাসে টাকা দিলেই চলবে।
ওসব করতে কৃতিত্ব লাগে। আগে দুচারটা সরকারী টেন্ডার পান তারপর ওকথা ভাবুন।
নয়ত ভাবছেন এত হাজার হাজার বাড়ি যখন হচ্ছে তখন একসময় বাড়িভাড়া নিশ্চয়ই কমবে। বাড়িগুলো তো আর খালি থাকবে না। তখন মনের আনন্দে কম ভাড়ায় থাকা যাবে।
সে আশার গুড়ে বালি। বাংলাদেশে বছরে মানবসম্পদ জন্মে ৩১ লক্ষ। গড়ে চারজনের জন্য এক বাড়ি হিসেব করলেও বাড়ি প্রয়োজন হয় সাড়ে ৭ লাখের বেশি। বছরে ওই পরিমান বাড়ি তৈরী হয় না। চাহিদা আর সরবরাহে বিশাল ঘাটতি থেকে যায়। ঘাটতি থাকলেই ব্যবসায় লাভ। শোনেন নি বাংলাদেশে নির্মানশিল্প বিশাল শিল্প। বহুলক্ষ মানুষ জড়িত এই শিল্পে।
সোজা কথায় আসুন। নিজের বাড়ি অথবা পরের বাড়ি ভাড়া যাই নিতে চান না কেন, আগে যোগ্যতা প্রমান করুন। দেশকে কতটা ভালবাসেন তার প্রমান দেখান। মায়ের মত না বাবার মত সেটা পষ্ট করে বলুন।
আর যদি না পারেন তাহলে বস্তি কিংবা ফুটপাত। নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী। ওই ভদ্রলোকেরা ক্যালকুলাসে ক্যালকুলেশন করে বেকারত্ব বৃদ্ধির যে হিসেব দিয়েছেন এই দুযায়গায় বৃদ্ধির হার তারথেকে অনেক বেশি।
 

Browse