কেনাকাটায় মজা

Jun 13, 2009

সারা বিশ্বের মানুষ জানে কিভাবে ওয়াল-মার্টের মত দোকানগুলো গরীবের ভাত মারছে গরীবের মানে গরীব ব্যবসায়ীদের তারা কম দামে জিনিষ বিক্রি করছে ফলে গরীব ব্যবসায়ীরা পাত্তা পাচ্ছে না তারা ভাল ভাল জিনিষ বেছে বিক্রি করছে বলে খারাপ জিনিষ বিক্রি করা যাচ্ছে না একই দোকানে সব জিনিষ বিক্রি করছে, ফলে ক্রেতারা যে দুচার দোকানে ঢু মারবে সেটা ঘটছে না ফলে গরীব ব্যবসায়ীদের মরার দশা আর এইসব দুচারজন ব্যবসায়ীদের পোয়াবারো ফুলে ফেপে উঠছে তাদের ধনসম্পদ

অন্যদিকে বার্গার-কেফসির মত দোকানদাররাও হোটেল ব্যবসার বারোটা বাজাচ্ছে যার ৫০ ডলার খরচ করার কথা সে ৫ ডলারে পেট পুরে নিচ্ছে খাবার দোকানের দিকে ফিরেও তাকায় না (এটা অবশ্য ইউরোপ আর আমেরিকার হিসেব এখানে কেফসিতে সস্তা খাবার মনে করে ঢুকতে চেষ্টা না করাই ভাল পকেট ফুলে বটগাছ হলে এবং শরীর ফুলে আলু হলে তবেই ওদিকে পা বাড়াবেন আর অবশ্যই মানানসই পোষাক পরে যাবেন)

বলছিলাম বড় বড় দোকানের কথা কোনমতে একটা দোকান দিয়ে বসে দুটাকা লাভ করার পথ বন্ধ করে দিয়েছে যেন লাভ করার অধিকার একা তাদের আরে পাবলিক যদি একটু দামাদামি না করল তাহলে আর কেনাকাটার মজা থাকল কোথায় মজাই তো ওই মুলামুলিতে বিশ্বাস না হয় পর্যটনের গাইড পড়ে দেখুন, পরিস্কার ইংরেজিতে লেখা বাংলাদেশে ভ্রমন করলে দামাদামী উপভোগ করতে পারবেন প্রয়োজন শুধু বিষয়টার আরেকটু প্রচার যারা দামাদামীর সুযোগ পাচ্ছে না তাদের কানে কথাটা পৌছে দেয়া তারপরই দেখবেন হুড়মুড় করে লোকজন আসতে শুরু করেছে

সেতুলনায় আমরা ভাল আছি বাছাই করে জিনিষ কিনে কম দামে বিক্রি করার মত বোকা একজনও নেই সব্জি কেনার সময় সেটা কতটা ভাল কতটু পচা বেছে নেবেন, কাপড় কেনার সময় কোথায় ফূটো কোথায় ফাটা দেখে নেবেন। ইলেকট্রিক-ইলেকট্রনিক্স জিনিষপত্র কিভাবে যাচাই করবেন সেটা বাতলে দেয়ার ক্ষমতা আমার নেই। নিজেই বহুবার ঠকেছি। চীনারা নাকি কমদামের জিনিষ তৈরী করতে দিতে বললে প্রশ্ন করে, এ জিনিষ কার কাছে বিক্রি করবে ? তোমার দেশের মানুষের কাছে ? এগুলো এমনিতেই নকল। তারওপর দাম কমালে শুধু খোসাটা থাকে। বাঙালী ব্যবসায়ী নাকি তাতেই রাজি হয়ে বলে, ওটাই দাও ভাই। লোগোটা ঠিকমত প্রিন্ট করে দিও। মেড ইন জাপান লেখা যাবে ?

মন চাইলে এবং সামর্থ্যে কুলালে ঢাকা শহরেও বড় দোকান খুজে বের করতে পারেন বড় দোকান এখানেও আছে তবে কথা হল, সেখানে ঢুকতে সামর্থ্য লাগে এসি দোকানে কাচের দরজা দরজায় টাই লাগানো দারোয়ান ভেতরে ঢুকতে সাহস লাগে পকেটের জোর লাগে দামাদামীর সুযোগ আছে সেখানেও জিনিষপত্র বাছাই করা, সেদিক থেকেও মিল জিনিষপত্রের দামও একেবারে নাগালের মধ্যে তবে, ঘোড়া কিনলে সাথে চাবুক কিনতে হয় সেটা কেনার প্রস্তুতিও থাকতে হয়।

আপনে এই গরমের মধ্যে এসি মার্কেটে ঘুরবেন তার দাম দিবেন না! এই যে কয়হাত দোকানডা নিছি, মাসে ৫০ হাজার ভাড়া সেইডা কি নিজের পকেট থিক্যা দিমু ? বসুন্ধরা-ইষ্টানে-রাইফেলে দোকানের মালিক একটা গাড়ি না থাকলে মানায় ? একটা দামি মোবাইল হাতে না থাকলে মানায় ? এইগুলানের দাম দিব কেডা ? কর্মচারী রাখছি তারে দিতে হয়, খাওন-যাতায়াত আরো কত্তরকম খরচাপাতি এইগুলান হিসাব কইরা দ্যাখেন দাম কমই চাইছি ফুটপাতে যা দাম রাখে তাই আপনে সেইডা বোঝেন নাই। এই বাড়তি খরচগুলানরে জিনিষের দাম মনে করছেন

টাকার সাথে, পরিবেশ পরিস্থিতির সাথে মানসন্মানের নিকট সম্পর্ক। একজন নতুন বান্ধবিকে নিয়ে দোকানে গিয়ে দাম নিয়ে হাউকাউ করবেন সেটা কি মানায় ? নাকি তাকে নিয়ে ফুটপাতের দোকানে যাওয়া যায় ? দেখেন না শতশত গাড়ি থেমে আছে মার্কেটগুলোর সামনে। চলন্ত গাড়ি সামলানো বাদ দিয়ে এগুলো কোথায় কিভাবে সাজাবে সেটা ঠিক করতে হিমসিম খাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশের দল। পথে দুচারটা একসিডেন্ট হয় হোক, দুচারজন মরে মরুক, দুচারঘন্টা দেরী হয় হোক, তাতে কি যায় আসে। কত কারনেই তো সেটা ঘটতে পারে। জীবন মরন আল্লার হাতে। তার হুকুম ছাড়া গাছের পাতা নড়ে না।

আপনার পছন্দ হতে পারে দুরকমের। ফুটপাত থেকে জিনিষ কেনা। সেখানে জিনিষ বাছাই করাটাই মুল। আজকাল দামাদামি করতে হয় না। তারাই অনবরত জিকির করে দাম জানিয়ে দেয়। কেনাকাটার মজা সেখানে নেই।

যদি কেনাকাটায় মজা পেতে চান তাহলে সহজে টাকা কামানোর পথ খুজে নিন। তারপর গাড়ি নিয়ে সুপার মার্কেট। জিনিষ পছন্দ করুন।

একের হিসেব অন্যখানে করবেন না। নয়ত-

কি কন ? তাও দাম বেশি হইছে ? দামাদামি করতে পারবেন না ? তাইলে এইহানে আইছেন ক্যা ? ফুটপাতে যান

0 comments:

 

Browse