কানকাটা থেকে প্লাষ্টিক সার্জারী

Apr 27, 2011
অনেকেরই হয়ত জানা নেই প্লাষ্টিক সার্জারি নামের অস্ত্রপচারের ব্যবস্থা চালু হয়েছিল ভারতবর্ষে
একসময় অপরাধীকে শাস্তি দেয়ার জন্য তাকে জনসমক্ষে হেয় করতে নাক কেটে দেয়া হত তাকে দেখলেই লোকে জানত সে অপরাধ করেছে এরই প্রতিকার করতে ওই প্লাষ্টিক সার্জারী অবশ্য তখনকার প্রযুক্তি নতুন নাক লাগিয়ে দেয়ার মত উন্নত ছিল না, কপালের দিকের চামড়া কেটে তাকে উল্টো করে ঢেকে দেয়া হত কাটা নাকটি অন্তত কিছুটা হলেও জনসমক্ষে মান রক্ষা পেত
নাক কাটার মত কান কাটাও ছিল আরেক শাস্তি ধরে নেয়া যায় তুলনামুলক কম অপরাধের জন্য কান কাটা হত ছোট অপরাধের জন্য এককান, বড় অপরাধে দুকান বড় অপরাধী যেহেতু বেশি নির্লজ্জ সেহেতু বাংলায় প্রবাদ চালু হয়ে রয়েছে, এককান কাটা পথের ধার দিয়ে চলে, দুকান কাটা পথের মাঝখান দিয়ে চলে সাধারনভাবে কানকাটা শব্দের অর্থ লজ্জাহীন ব্যক্তি কাজেই আরেক প্রবাদ, নিজের মান নিজে রাখি, কাটা কান চুল দিয়ে ঢাকি
আজকাল অপরাধের জন্য কান কেটে লজ্জা দেয়ার প্রচলন নেই সেটা বর্বরতা সামাজিকভাবে লজ্জা দিয়ে অপরাধ কমানোর নীতিতেও মানুষ বিশ্বাস করে না বরং সত্যিসত্যি কান কাটা না গেলেও অনেকেরই আচরন দুকান কাটা ব্যক্তির মত তারা পথের মাঝখান দিয়ে চলেন অন্যদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে

এনালগ বাংলাদেশ চাই

Apr 23, 2011
নির্বাচনের আগে বারাক ওবামার জনপ্রিয়তা ছিল অসাধারন। নির্বাচনের আগেই অনেকে ধরে নিয়েছিলেন তিনি আমেরিকার প্রথম কালো প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন। এর কারন নিয়েও অনেক কথা বলা হয়েছে। যেদেশে নেতাদের প্রতিটি পদক্ষেপ মাইক্রোস্কোপে দেখা হয় সেখানে সেটা স্বাভাবিক। তিনি যদি ফেসবুকের অফিসে বেড়াতে যান তাহলেও লোকে আলোচনা করে সেখানে কেন গেলেন। তারসাথে মিল খুজে পান নির্বাচনের আগের সময়ের।
তাদের কথা উড়িয়ে দেয়া যায় না। নির্বাচনের আগে ফেসবুক-মাইস্পেস-টুইটারে ওবামার ছড়াছড়ি। তার ধারেকাছে কেউ নেই। তরুন প্রজন্মের ভোটাররা তখনই ইঙ্গিত পেয়েছে তাদের ভবিষ্যত ওই ডিজিটালে। এবং বারাক ওবামা পারেন সেই স্বপ্ন পুরন করতে।
তারপর বহু পানি গড়িয়েছে। বারাক ওবামার সেই জনপ্রিয়তা নেই। যেসব কথা বলেছিলেন তার ধারেকাছেও যাননি। তবে সামনের বছর আবার নির্বাচন। কাজেই প্রস্তুতি নিতে হয় এখনই। আবারও সেই ফেসবুক, সেই জুকারবার্গ। সেই কথাগুলিরই পুনরাবৃত্তি, ধনীদের ওপর ট্যাক্স বাড়ানো হবে, সামাজিক নিরাপত্তা বাড়ানো হবে।
ধুর, এসব জানার জন্য পৃথিবীর অর্ধেক ঘুরে আসা প্রয়োজন আছে না-কি! এই বাংলাদেশই বা উদাহরনে কম কিসে ? দেশের নামই তো দেয়া হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ।

সহজ পথে না ঠ্যালায় পড়ে

Apr 22, 2011
ইংরেজিতে একটা কথা প্রায়ই বলা হয়, ইজি ওয়ে অর হার্ড ওয়ে ভালভাবে শিখতে পারেন, ঠ্যালায় পড়েও শিখতে পারেন নিজের ইচ্ছেয় করতে পারেন, ঘাড়ের ওপর ডান্ডাবাড়ি খাওয়ার পর বাধ্য হয়ে করতে পারেন কথাটা প্রায়ই বলা হয় কারন মানুষ প্রায়ই এই অভিজ্ঞতার সম্মুখিন হয়
ছোটখাট বিষয় রেখে বরং বড় কিছুই দেখা যাক কিছু মানুষ বহুবছর ধরে বলে আসছে এই বিশ্ব ধ্বংশের মুখে যে পরিমান সম্পদ প্রতিমুহুর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে সেই হারে সরবরাহ করার ক্ষমতা এই বিশ্বের নেই প্রকৃতির তেল-গ্যাস ব্যবহার কমান, বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড ছড়ানো কমান আমেরিকানদের মত মাংশ খাওয়ার অভ্যেস করবেন না এই পরিমান মাংশ সরবরাহের ব্যবস্থা এই বিশ্বের নেই
কে শোনে কার কথা যে দেশের নাম বলার সাথে প্রতিশব্দ হিসেবে উল্লেখ করা হয় ওয়ান অব দি পোরেষ্ট কান্ট্রি ইন দি ওয়ার্ল্ড, সেখানেও মানুষ হুমড়ি খেয়ে কোটি টাকার গাড়ি কেনে লাইন দেয় হেলভেশিয়া-কেফসি-পিজা হাটের সামনে পথের দুধারে জমে ওঠে সারিসারি গাড়ি  অর্থমন্ত্রী কি সাথে বলেছেন দেশের অর্থনীতির এমন সুদিন ইতিহাসে কখনো ছিল না শায়েস্তা খানের সময় পথে কটা কোটি টাকার গাড়ি দেখা যেত ? কয়টা হাইরাইজ বিল্ডিং ছিল ? কয়জন গরমে এসি ব্যবহার করত ?  প্রধানমন্ত্রী কি সাধে বলেন মানুষ এখন চারবেলা খায়

নববর্ষে ঢাকার হালখাতা

Apr 18, 2011
একসময় চীনাদের নিয়ে কেউ মাথা ঘামাত না চার হাজার বছরের পুরনো সভ্যতা তাতে হয়েছে কি ? ওরা খেতে পায় না সাপ-ব্যাঙ, তেলাপোকা-টিকটিকি সব খায় তার ওপর কম্যুনিষ্ট এখন অবশ্য সেই দুর্নাম ঘুচে গেছে চাইনিজ মানে অভিজাত খাবার তারওপর আবার অর্থনীতিতে জাপানকে ছাড়িয়ে আমেরিকা ছুইছুই করছে ওদের খবর না রাখলে কি চলে ওরা কিভাবে নববর্ষ পালন করে সেটা এখন বিশ্বখবর আর তারাও সেটা পালন করে ঘটা করেই রীমিতমত সপ্তাহজুড়ে তাদের নাকি সবচেয়ে বড় উতসব
নতুন বছরের হিসেব অন্যদেশেও হয় বাংলাদেশেও দেশের বহু স্থানে মেলা হয় এই সময় কাঠের, মাটির, পাটের তৈরী নানারকম জিনিষপত্র বিক্রি হয় গান-বাজনা হয় নাগরদোলা-চড়কি কতকিছু ব্যবসায়ীদের জন্য মহাখবর সারা বছরের বকেয়া ফেরত পাওয়া যায় হালখাতার নামে আবার নতুন হিসেব শুরু হবে নতুন খাতায়
ঢাকাবাসীরাই বা বাদ থাকবে কেন ? আমরা কম কিসে ??

বাকিটা আপনার হাতে

Apr 17, 2011
সংবিধিবদ্ধ শতর্কীকরন : ধুমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর আপনি ধুমপান করুন বা নাই করুন, সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে নিশ্চয়ই লেখা দেখেছেন ধুমপান করার সময় দি হাতে কাজ না থাকে তাহলে প্যাকেটটা হাতে ধরে তাকিয়ে থেকেছেন সেদিকেই আর ভাবতে চেষ্টা করেছেন, কথাটার আসলে মানে কি ?
কিংবা কখনো কখনো হয়ত আরো শক্তিশালী লেখাও দেখেছেন ধুমপান মৃত্যু ঘটায় তারমানে কি ? ধুমপান করলে একসময় মারা যাবেন, যদি বাচতে চান ধুমপান ত্যাগ করুন অধুমপায়ীর মৃত্যু নেই
সংবিধিবদ্ধ মানে হচ্ছে সংবিধানে লেখা আছে আপনি যখন সংবিধানের আরকিছু জানার সুযোগ পাচ্ছেনই না তখন অন্তত ধুমপানের পুরস্কার হিসেবে তার একটি বাক্য জেনে রাখুন ওই সিগারেটের প্যাকেট থেকে এরবেশি জানলে তো বিপদ নানারকম প্রশ্ন করতে শুরু করবেন সংবিধানে অমুক কথা লেখা আছে তাহলে ওটা হল কিভাবে ? এইসব সংবিধান আর ধর্মগ্রন্থ দুটো সমমানের বস্তু সন্মান করবেন, খুলে দেখবেন না ভেতলে দেখলেই বিপদ
সংবিধান বলে কিছু একটা থাকতে হয় বলেই আছে কোন কোন দেশ আবার ওটা ছাড়াই নাকি চলে কি অসভ্য দেশ রে বাবা রীদিমত সাংসদ আছে অথচ লেখা সংবিধান নেই রাজনীতি করে কি নিয়ে ?
ও, ভুল হয়ে গেছে সংবিধান না থাকতে পারে, আইন তো আছে ওটা নিয়েই দিব্বি সময় কাটানো যায় অমুক বিষয়ে আইন করতে হবে, তমুক আইন পাল্টাতে হবে, সমুক আইন সেকেলে বলে সমালোচনা করতে হবে আইন করা হবে, হচ্ছে বলে এক রাজনৈতিক জীবন অনায়াসে কাটানো যায় এমনকি পরবর্তী প্রজন্মকেও হাতেধরে শিখিয়ে দেয়া যায় আইন নিয়ে কথা বল, আইন তৈরী কর মানুষকে ব্যস্ত রাখ ওরা যেন আইনের বাইরে যেতে না পারে

ঝুলি যখন শুন্য

Apr 14, 2011
রবীন্দ্রনাথের তখন যথেস্ঠ বয়স হয়েছে। একদিন দেখা করতে গেছেন লেখক বনফুল। দেখলেন তিনি উবু হয়ে বসে লিখছেন। একটাই ঝুকে বসেছেন যে তিনি প্রশ্ন না করে পারলেন না, আপনি এতটা ঝুকে বসেছেন কেন ?
কবির উত্তর, পাত্রের পনি যখন কমে যায় তখন তাকে বেশি ঝুকাতে হয়।
রবীন্দ্রনাথের লেখার পাত্র কমে গিয়েছিল একথা তার পরম শত্রুও বলবেন না। এবিষয়ে তিনি বিশ্বে অপ্রতিদ্বন্দি। তারপরও, একটি চরম সত্য তিনি বলে গেছেন। পাত্রের বস্তু একসময় কমে যায়, একসময় শুন্য হয়।
নেতাদের ক্ষেত্রে একথা চিরসত্য। তাদের যাকিছু বলার তা তারা সহজেই বলে ফেলেন। একসময় আর দেয়ার কিছু থাকে না। এমন না যে তারা বলা বন্ধ করেন, বরং কথার পরিমান আরো বৃদ্ধি পায়। তাতে কোন বক্তব্য থাকে না। কিংবা এমন বক্তব্য তুলে ধরেন যেখানে বেশি শোকে পাথরের মত অবস্থা হয়।
ধরুন ওই শেয়ার বাজার কেলেংকারীর কথাই। কতকিছুই না ঘটে গেল। রাজপথ রণক্ষেত্র। লক্ষ লক্ষ মানুষ সর্বশ্রান্ত। ঢাকঢোল পিটিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার ব্যবস্থাও হল। তদন্ত করা হল, রিপোর্ট তৈরী হল। এদিক-ওদিক থেকে রিপোর্টের টুকরো-টাকরা খবরও বাইরে এল। কিন্তু মুল রিপোর্টের খবর নেই। একবার বলা হচ্ছে প্রকাশ করতে সময় লাগবে, তারপর মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখে আরেকবার বলা হচ্ছে এই তো এক সপ্তাহের মধ্যেই হবে। ওই হল বলে।

কথার মজা

Apr 11, 2011
র‌্যাট নামে বিশেষ বাহিনী যখন তৈরী করা হয়েছিল তখন কেউ কেউ বলতে চেষ্টা করেছিন, র‌্যাটের জন্য ক্যাটের ব্যবস্থা রয়েছে তো! সৃষ্টিকর্তা যখন ইদুর তৈরীর সাথেসাথে বিড়ালও তৈরী করেছেন।
সেকথা বেশিদিন টেকেনি। র‌্যাটের নাম পাল্টে র‌্যাব বানানো হয়েছে। কিন্তু বিতর্ক থামেনি। ক্রশফায়ার নামের একটি বিশেষ ব্যবস্থা চালু হয়েছে তখন থেকে। বরাবরই একই ব্যাখ্যা। র‌্যাবের দিকে গুলি চালালে তারাও পাল্টা গুলি ছুড়েছে, সেটাই ওই ক্রশফায়ার। এই ব্যাখ্যা যখন চারিদিকে সমালোচনার মুখে পরল তখন একসময় সেটাও পাল্টানো হল। নাম হল এনকাউন্টার। মন্ত্রী একদিন বলেই দিলেন, আমরা এখন আর ক্রশফায়ার বলি না, এনকাউন্টার বলি। কাজেই ক্রশফায়ার বলে কিছু নেই।
ক্রশফায়ার বা এনকাউন্টার যাই হোক না কেন, এর সমালোচনা কখনো থামেনি। এর সৃষ্টি হয়েছিল চারদলীয় জোট সরকারের সময়। বিরোধীদল এতটাই সমালোচনা করেছিল যে তাদের প্রশ্ন করা হয়েছিল তারা ক্ষমতায় গেলে র‌্যাব বন্ধ করে দেবেন কি-না। তারা অবশ্যই বন্ধ করার কথা বলেননি।
তারপর সত্যিসত্যিই ক্ষমতা হাতবদল হয়েছে। র‌্যাবের প্রতিশব্দ হিসেবে ওই ক্রশফায়ার কিংবা এনকাউন্টার শব্দটি এখনও লেগে আছে। এখন সমালোচক বিরোধীদল। যারা এই র‌্যাব সৃষ্টি করেছিল।
আর শুধু বিরোধী দলই বা কেন ? ওই মানবাধিকার বলে যে শব্দ আছে, অনেকেই সেটা নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করেন তারাও বলেন। তাদের কথায় অবশ্য কান দেয়ার কিছু নেই। এরসাথে আবার সুর মিলিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারাও তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ....
ফলে বিতর্কটা জমেছে ভালই। বিরোধী দলের বক্তব্য, আমরা সবসময়ই বলে আসছি একথা। আর তাদের বিরোধীদের বক্তব্য, কোনমুখে ওকথা বল। তোমরাই তো র‌্যাব সৃষ্টি করেছে। তোমরাই তো শুরু করেছ ক্রশফায়ার।

যে শ্লোগানে কাজ হয়

Apr 8, 2011
আর কোন দাবী নাই, ফুটপাতে থাকতে চাই। পুলিশের অত্যাচার, মানি না, মানব না। জয় বাংলা।
সকলের হয়ত এমন শ্লোগান শোনার সুযোগ হয় না। তাহলেও বুঝতে অসুবিধে হওয়ার কথা না। এই শ্লোগান এসেছে ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের মিছিল থেকে। সংখ্যায় কম না, হাজার হাজার।
যদি দেখার অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে একটু বর্ননা দিলে বুঝতে সুবিধে হতে পারে। ধরুন ফার্মগেট এলাকা। ফার্মভিঋ সুপার মার্কেট থেকে শুরু, এরপর ইন্দিরা রোড ধরে যতদুরই যান, ফার্মগেট বাজার। শাক-সবজী, মাছ-মাংশ, হাস-মুরগি, জামাকাপড়-জুতো, খেলনা, ঘড়ি-চশমা যা প্রয়োজন সবই পাবেন এখানে। সত্যি বলতে কি এরা একটু সৌভাগ্যবানই। পাশের মার্কেটগুলিতে যখন ঘন্টায় ঘন্টায় লোডসেডিং হয় তখনও তাদের আলো জ্বলে। সাপ্লাই আসে জেনারেটর থেকে। তার সেবার মান বিদ্যুত বিভাগের থেকে ভাল। দাম একটু বেশি নেয় ঠিকই, কিন্তু কখনোই লোডসেডিং হয়না। ক্রেতারাও কেনাকাটা করেন বেশ আরামে। মার্কের ভেতরের ভ্যাপসা গরম নেই, রীতিমত ফুরফুরে হাওয়ায় হেসেখেলে বাজার-সওদা করেন।
চাদের একপিঠে যতটা আলো অন্যপিঠে নাকি ততটাই কালো। এর খারাপ দিকও আছে। যেমন ধরুন ব্যবসায়দের কথা। পাশের মার্কেটের মত তাদের মাসমাস দোকান ভাড়া দিতে হয়না ঠিকই, কিন্তু দৈনিক ভাড়া, পুলিশের চাদা এসব হিসেব করলে ওই দোকানদের খরচ ছাড়িয়ে কয়েকগুন বেশি। ক্রেতাদেরও অভিযোগ রয়েছে। দিব্বি নেড়েচেড়ে দেখে ভাল জিনিষ কিনলেন, বাড়ি দিয়ে দেখলেন প্যাকেট থেকে বেরল ছেড়া-ফাটা। ফেরত গিয়ে অভিযোগ করবেন সে সুযোগ নেই। দেখলেই সেই বিক্রেতা সেই জিনিষ নিয়েই আছে কিন্তু আপনাকে সে এই জীবনে দেখেনি। আর আপনার হাতের জিনিষ সে জীবনেও বিক্রি করেনি। বেশি তর্ক করলে হাতাহাতি। জীবনের ঝুকি কে নেয় ...

শেখা যায় দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই

Apr 7, 2011
ভোরবেলা দুই ব্যক্তি গেছে পুকুরঘাটে গোছল করতে। একজন সারারাত প্রার্থনা করেছে, অপরজন করেছে চুরি। কাজেই চোরের দৃষ্টিভঙ্গি, ব্যাটা সরারাত চুরি কইরা অহন আইছে গোছল করতে। গোছল করলে পাপ যাইব!
আর উপাসনাকারীর চিন্তায় কাজ করছে, আহা, বেচারার এখনও বেশি বয়স হয়নি। এখনই ধর্মচিন্তা করে সারারাত কাটিয়েছে।
এটা পুরনো গল্প। কমবেশি সবারই জানা। কমবেশি সবাই মেনেও চলে।
ওয়ে যে ধরুন না, বাংলায় ফেসবুক গড়ি প্রকল্প (বাংলায় হয়ত মুখবই হওয়ার কথা ছিল)। আপনারা দলে দলে যোগ দিন। সারা বিশ্বের ছড়িয়ে দিন আমাদের ভাষা। এই ভাষার জন্য মানুষ জীবন দিয়েছে। বিশ্ব পেয়েছে মাতৃভাষা দিবস।
তারপর! ছবি আপলোড করুন। তরে ওই ছবিতে খুব সুন্দর লাগতাছে। আরো কয়ডা আপলোড কর।
এটা একধরনের দৃষ্টিভঙ্গি। আরেক ধরনের দৃষ্টিভঙ্গিও রয়েছে। মিসরে তাহরীর স্কয়ারে লাখ লাখ মানুষ সমবেত হয়েছিল। তাদের দাবী, গনতন্ত্র চাই। মোবারক সরকারকে বিদায় নিতে হবে। মোবারকের লোকেরা সেখানে হামলা করেছে, পুলিশ হামলা করেছে কিন্তু তাদের টলানো যায়নি। দিনের পর দিন তারা যায়গা ধরে রেখেছে। বিবিসিও ক্যামেরা নিয়ে অবস্থান ধর্মঘট করেছিল বলেই দিনরাত সরাসরি দেখা গেছে তাদের। তাদের পরিচয়, ফেসবুক প্রজন্ম।  ফেসবুকের মাধ্যমে তারা নিজেদের সাথে যোগাযোগ করে ঠিক করেছে কিভাবে দেশকে ভালোর দিকে নিতে হবে। ফেসবুক কিংবা মুখবই ব্যবহারের আরেক দৃষ্টিভঙ্গির উদাহরন তো বটেই।
কিংবা ধরুন পত্রিকায় খবর বেরুল, অমুক তারকার নগ্ন ভিডিও ইন্টারনেটে প্রকাশ পেয়েছে। সাথেসাথে লাইন পরে গেল সিডির দোকানে, ওই ভিডিওডা আছে ? দ্যানতো। কত ট্যাকা লাগবো ?

বাংলার বাঘ ১৫ কোটি

Apr 4, 2011
শের-এ-বাংলা বলা হত একজন মানুষকে। সোজা বাংলায় বাংলার বাঘ। তার দেহখানি ছিল মস্ত। নিশ্চয়ই বাঘের মত ভয়ংকর দর্শন। ৪০টি বড় আকারের ফজলি আম খেতেন। পড়া শেষ হলে বই ছিড়ে ফেলতেন। তার ওপর মন্ত্রী ছিলেন। কাজেই বাঘ তিনি হবেন না-তো কে হবে ?
তিনি যখন মন্ত্রী তখন এক ব্যক্তি তারকাছে গিয়েছিল চাকরীর আশায়। বাংলার বাঘ তিনি, হুংকার প্রয়োজন নেই, সামান্য সুপারিশ করলেই চাকরী হয়ে যায়। কিন্তু তিনি বলছেন অন্য কথা। একটিমাত্র চাকরীর ওপরই নাকি তার কর্তৃত্ব। সেটা তার নিজের মন্ত্রীত্ব। সেই ব্যক্তি যদি আশা করেন তাহলে তিনি সেই পদ ছেড়ে দিতে পারেন।
তারপরও তিনি বাংলার বাঘ! ধুরো-
রীতিমত বাঘের কলংক। বাঘের কাজ হচ্ছে কর্তৃত্ব করা। কার ঘাড়ে কয়টা মাথা যে চাকরী দেবে না। খেয়ে ফেলব না। চাকরী দেব না-তো মানুষ ভোট দিয়েছে কেন ? ডাকলে লাঠি হাতে পথে নামবে কেন ? প্রতিপক্ষের মাথায় বাড়ি দেবে কেন ? ওটাই তো নেতার প্রথম কাজ। অনুসারীদের চাকরী দেয়া, টেন্ডার দেয়া, সুপারিশ করা। এলাকার উন্নতি, সে-তো কথার কথা। মানুষের উন্নতি হলে তবেই না এলাকার উন্নতি। তবেই না বাঘ।
বাঘ বললে বর্তমানের মন্ত্রী, সাংসদ, নেতা এদেরকেই বলতে হয়। মন্ত্রীর পিএস এর পিএসও হাজারটা চাকরী দিতে পারে। সবসময়ই দেয়। তারাও ছোটখাট বাঘ।
 

Browse