হাস্যকর হতে চাই না - We're not your clown

Jul 30, 2009

মৃত্যুর পর দুব্যক্তিকে একসাথে থাকতে দেয়া হল (বেহেসত অথবা দোযখ যেখানেই হোক) কিছুক্ষনের মধ্যেই তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিল রীতিমত গন্ডগোল সেই গন্ডগোল থামানোর জন্য একজন প্রহরী পাঠাতে হল তিনি এসে বললেন, আপনারা একই দেশের, একই ভাষার, একই পেশার গুনিজন দুজনেই নামকরা বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত আপনারা নিজেদের মধ্যে গন্ডগোল করছেন কেন ?

উত্তর পাওয়া গেল, আমাদের একজন আওয়ামী বুদ্ধিজীবী আরেকজন জাতিয়তাবাদী

বিষয়টা যদি আওয়ামী এবং জাতিয়তাবাদীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত তাহলে হয়ত এর বাইরের সকলে স্বস্তি পেত কিন্তু সেটা হয় না খেলা দেখতে বসলে এইদল নয়ত ওইদলকে সমর্থন করতে হয় সমাজের খেলা যখন চলে তখন দর্শককেও সেই খেলা সমর্থন করতে হয় ফলে আরেকজনের বিরোধীতা চলে আসে একজন দুঃখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নমুনার কথা লিখেছিলেন পত্রিকায় একদল মিছিল করছে শ্লোগান, মীরজাফরের দালালেরা হুশিয়ার সাবধান যাদের সম্পর্কে এই বক্তব্য তারা কাছেই ছিল মুহুর্তের মধ্যে আরেকটা পাল্টা মিছিল শুরু হল, সিরাজদৌলার দালালেরা হুশিয়ার সাবধান আপনি যদি লীগের সমালোচনা করেন তার অর্থ আপনি জাতিয়তাবাদী দালাল নয়ত রাজাকার স্বাধীনতার শত্রু আর যদি জাতিয়তাবাদীর সমালোচনা করেন তাহলে লীগপন্থি ভারতের দালাল আপনি আমাদের দলে নয়ত সন্ত্রাসী, বলে গেছেন বুশ

দালালদের হুশিয়ার-সাবধান করতেই হয় সন্ত্রাসীদের কালোহাত ভেঙে দিতেই হয় সরকারের গদিতে একসাথে আগুন লাগাতেই হয় আর সেকারনে একজোট হতে হয় আরেক জোটের বিরোধীতা করতে হয় আপনি বাঙালী, তাহলে আমরা বাংলাদেশী স্বাধীনতা ঘোষনা করেছে কে ? আমার নেতা কখনো যদি এইদল ছেড়ে ওইদলেও যান কথা পাল্টাবে না ভদ্রলোকের এককথা

মৃত্যুর পর ওয়েটিংরূমে অপেক্ষা করছে কিছু মানুষ অন্যরা আসছে-যাচ্ছে একজন কৌতুহলি হয়ে জিজ্ঞেস করল, এরা অপেক্ষা করছে কেন ? উত্তর হল, এরা বাঙালী না বাংলাদেশী তা এখনো ঠিক হয়নি

স্বাধীনতার পর কোন ভদ্রলোক কোন মুহুর্তে বলেছিলেন যুদ্ধে ৩০ লক্ষ মানুষ মারা গেছে একথা পাল্টানো যাবে না এতে স্বাধীনতার খর্ব হয়, ত্যাগ কম করে দেখা হয় যারা যুদ্ধের নিহতদের হিসেব কষেন তারা বললেন ১৯৭১ সালের যুদ্ধে বাংলাদেশে মারা গেছে ৫ থেকে ৬ লক্ষ মানুষ স্বাধীনতার পর একবার জরিপের কাজ শুরু করা হয়েছিল, তাতেও ফলটা এগোচ্ছিল সেদিকেই সাথেসাথে জরিপ বন্ধ করে দেয়া হল এত কম মারা গেলে মর্যাদা থাকে কোথায় ? যা চালূ আছে সেটাই থাক না কেউ মাটির নিচ থেকে উঠে এসে তো প্রতিবাদ করছে না

সারা বিশ্ব বলে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর সবচেয়ে বেশি প্রানহানি হয়েছে উগান্ডা-রুয়ান্ডায় ১০ লক্ষ মানুষ মারা গেছে সেখানে আমরা তাদের থেকে পিছিয়ে থাকতে পারি না দেশের মর্য্যাদা বলে কথা

বিবিসি বাংলাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় পৃথিবীর অনেক দেশে যখন শ্রোতা কমে যাওয়ায় সার্ভিস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সেখানে বাংলাদেশে সময় বাড়ানো হয়েছে বাংলাদেশের সমস্ত খবর তিনবারে প্রচার করা যায় না, চারবারে প্রচার করতে হয় আর সারাদিনের জন্য ইংরেজি বিভাগ তো রয়েছেই তারাই প্রতিবেদন প্রকাশ করে, ঢাকায় বিএমডব্লিউ এর শোরুম নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থার টেলিফোন লাইন অকেজো থাকার পরও কয়েক লক্ষ টাকার বকেয়া বিল দাবী করা নিয়ে, বৃহত্তম এনজিও অন্য দেশের মানুষের সেবা করতে যাবে তাই নিয়ে

বিবিসি এবং অন্যান্য সংবাদমাধ্যম যখন এসব তথ্য প্রকাশ করে তখন স্পষ্ট বিদ্রুপ ধরা পরে তাদের কন্ঠস্বরে নিজেরাই মাইক্রোফোনের সামনে হাসাহাসি করেন, যেদেশে তিনজনে একজন খেতে পায় না সেদেশে লক্ষ ডলারের গাড়ি কেনে কে যে শহরে রিক্সা স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারে না সেখানে রেসিং গাড়ি কিভাবে চলে সরাসরিই প্রশ্ন করেন মন্ত্রীকে, লাইন বন্ধ থাকায় যে বিল করা হয়েছে সেটা কি দিতে হবে ? মন্ত্রী বলেন বিল যখন হয়েছে তখন দিতে হবে বৈকি চুরি সব দেশেই হয় অন্য দেশে মিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ফ্রড হয় এদেশে মানুষ গরীব, অত টাকাপয়সা নেই, অত সুযোগ নেই সেজন্যই এই সামান্য চুরি তারা সমাজ সেবককে প্রশ্ন করেন আপনারা আফগানিস্তানে সেবা করতে যাবেন, অর্থ যোগান দেবে কে ? আপনাদের নিজেদের থাকা-খাওয়া-আনন্দ-ফুর্তি-যাতায়াতের খরচ তো যায় এদিক থেকে ডলার-পাউন্ড ইউরোতে তার উত্তরও তৈরী আমরা জনবল দেব, অর্থবল আপনাদের

বিদ্রুপ আরো ষ্পষ্ট করে প্রকাশ পায় যখন সরকার-নেতা-বুদ্ধিজীবী নানারকম বুলি আওড়ান সারা বিশ্ব যে নিয়মে চলেছে, ইতিহাস যে নিয়মে চলেছে, এখনো চলছে তার বাইরে নতুন পদ্ধতি আবিস্কারের কথা শোনান দেশে এমন গনতন্ত্র চালু করবেন যা কখনও কোথাও কেউ দেখেনি রাজনীতিতে গুনগত পরিবর্তন তারা আনবেনই আনবেন আগে যে নিয়মে দেশ চলেছে (কে চালিয়েছে প্রশ্ন করবেন না) সেই নিয়মে চলবে না একেবারে নতুন, টাটকা নিয়ম এনে হাজির করব সারা বিশ্ব দেখে শিখবে আমরা কি করতে পারি দেশে সংসদীয় গনতন্ত্র তবে তার নেতা যতদিন জীবিত থাকবেন ততদিন তার বিকল্পের কথা ভাববেন না এতে নেতার মান থাকে না একসময় তিনি উত্তরাধিকারী রেখে যাবেন অন্য যারা থাকবে তাদের একমাত্র কাজ তোসামুদি করা পেটে খেলে পিঠে সয়, কাজেই তাদের আপত্তি কিসের ?

আবারো সেই দোজখের গল্প বিবিসি জরিপ করল বিশ্বের সেরা কৌতুক কোনটি জরিপের ফল প্রকাশ করা হল বিবিসি বাংলা বিভাগে প্রকাশের পর প্রতিবেদক নিজেই নিজের পছন্দের সেরা কৌতুক পরিবেশন করলেন এমন এক দেশের মানুষের দোজখের গল্প করলেন যে দোজখে পাহারাদার প্রয়োজন হয় না কেউ বের হতে চেষ্টা করলে অন্যরা তার পা ধরে টেনে রাখে গল্প শেষে বললেন, আপনি ইচ্ছেমত দেশের নাম বসিয়ে নিতে পারেন

আমরা আর হাস্যকর হতে চাই না

গ্লোবালাইজেশন - Globalization everywhere

Jul 29, 2009

লাগব, সিডি-ডিভিডি ?

ব্যস্ত ফুটপাত দিয়ে হাটার সময় কেউ একজন এসে জিজ্ঞেস করলে হয়ত অবাক হবেন না। মনে মনে বলবেন, এটা তো হতেই পারে। ডিজিটাল বাংলাদেশে মানুষের ঘরে ঘরে ডিজিটাল বানী পৌছে দেয়ার এটাই তো উপায়। বরং এদের আরো সুযোগ সুবিধে করে দেয়া উচিত। এভাবে পথে পথে ঘুরে মানুষকে ডিজিটাল করার দায়িত্ব যারা নিয়েছেন তাদের উৎসাহিত করা উচিত।

আর যদি অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে আপনি জানেন এটা ডিজিটাল বাংলাদেশ নীতির বিরোধীতার ফল। একসময় এদের এভাবে ডাকাডাকি করতে হত না। ফুটপাতে পসরা সাজিয়ে বসত। সেটা বন্ধ করে এদের ভ্রাম্যমান বিক্রেতা বানানো হয়েছে। মানুষের কাছে ডিজিটাল বানী পৌছে দেয়ায় বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। আপনি ফুটপাতে দাড়িয়ে দেখে কিনবেন সেব্যবস্থা বাতিল করে তাদের সাথে তাদের সংগ্রহশালায় যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাধারন কথাবার্তার বদলে সাংকেতিক ভাষার প্রবর্তন করা হয়েছে। সেই সাংকেতিক ভাষা না বোঝা পর্যন্ত পছন্দমত জিনিষ কেনা যায় না।

ডিজিটাল বাংলাদেশের বিরোধী অনেকেই। তারা নানারকমভাবে পদে পদে বাধা সৃষ্টি করেন। যেমন সফটওয়্যার রপ্তানীতে। একসময় হাজার হাজার সিডি তৈরী হত দেশেই। সেগুলি রপ্তানী হত পাশের দেশে, খোদ আমেরিকায়। একেবারে বিল গেটসের মাইক্রোসফট পর্যন্ত সেটা সহ্য করলেন না। বললেন, আর যাই হোক আমার সফটওয়্যার এভাবে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় আমদানী হতে পারে না। সিলভার ডিস্ক নামের ওই বস্তুটি বন্ধ করতে হবে।

তার কথা সহজে ফেলা যায় না। সে নানাভাবে বহু টাকা দেয়। কথা রাখতে সেটা বন্ধ হল। তবে সেটা শুধুমাত্র সিলভার ডিস্কের জন্যই, এবং শুধুমাত্র সফটওয়্যারের জন্যই। আপনি যদি গান-নাটক-সিনেমা এভাবে তৈরী করে রপ্তানী করেন তাতে বাধা নেই। এমনকি সাধারন সিডিতে যদি উইন্ডোজ-অফিস রপ্তানী করেন তাতেও বাধা নেই। সেগুলি কুটির শিল্প। এদের বাধা দেয়া অনুচিত।

এই কুটির শিল্পে যারা ভোক্তা তারা কখনও কখনও অভিযোগ করেন। বাড়িতে নেয়ার পর সিডি চলে না। কখনো কখনো সেটাতে নতুনভাবে রাইট করা যায়। সম্ভবত ভুল করে কপি না করেই সিডি প্যাকেট করে দিয়েছে। নয়ত আপনার খালি সিডি প্রয়োজন সেটা জেনে সরবরাহ করেছে। আবার কোন কোন সিডি রাইট করার কাজেও আসে না। সেগুলি ঠিকমত কপি হয়নি, কাজেই একেবারে বরবাদ। আবার কেউ কেউ আরো সহজ পথে ব্যবসা করেন বলেও অভিযোগ। দোকানে দোকানে ঘুরে নষ্ট সিডি কিনে নেন। গুলিস্তানে, আরো কোথায় কোথায় সিডির ছাপানো কাভার কিনতে পাওয়া যায়। ব্যস, প্যাকেট করে বিক্রি। দুটাকা বিনিয়োগে আটত্রিশ টাকা লাভ। অন্যভাবে দেখলে অবশ্য এইসব ভ্রাম্যমান বিক্রেতাদের এই পদ্ধতিতে সুবিধে। আফটার সেলস সার্ভিস দেয়ার মত জটিলতার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

লাভ আরো অনেকের। দৈনিক সিডির চাহিদা নাকি এক থেকে দেড় লক্ষ। যারা আমদানী করছে তারা এর ফলে ব্যবসা করে খেতে পারছে। কেউ কেউ বলে চীনারা নাকি জাত ব্যবসায়ী। সারা পৃথিবীতে তারা নিজেদের ষ্টাইলে ব্যবসা করে চায়না টাউন নামে। একমাত্র বাংলাদেশে সেটা হয়ে উঠেনি কারন বাঙালীরা ব্যবসা তাদের চেয়ে ভাল বোঝে। কোন জিনিষে কিভাবে, কি পরিমান লাভ বের করতে হয় তা তারা চীনে গিয়ে শিখিয়ে দিয়ে আসে। যাকিছু খরচ তা করবেন প্যাকেটে, সিডির গায়ে। সিডিতে খরচ করার দরকার কি ? কাষ্টমার কি সিডির গন্ধ শুকে দেখবে ? না খেয়ে দেখবে ? অমুক নামে, তমুক রঙে জিনিষ বানিয়ে দেন। চীনারা বানিয়ে দেয়। তারপর তাতে সফটওয়্যার, এমপিথ্রি, মুভি, গেম আরো কত কি। নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানী।

বলছিলাম লাভের কথা। এগুলি যারা কপি করেন, যেসব হাজার হাজার মানুষ তাদের কর্মসংস্থান হয় এতে। কপি করার যন্ত্র বিক্রির ব্যবসা করেন আরো হাজার হাজার মানুষ। তারপর এগুলির জন্য রঙির কাগজ ছাপানো, সেটাও আরেক ধরনের মানুষের কর্মসংস্থান। তারপর ব্যাগে ভরে দোকানে দোকানে সাপ্লাই দেয়া, আরো মানুষের কর্মসংস্থান। তারপর হাজার হাজার দোকান, হাজার হাজার মালিক-কর্মচারী তাদের কর্মসংস্থান। লোকে বলে এসবের নব্বুই ভাগই নাকি রপ্তানী হয়। বলিউডের এমপিথ্রি, মুভি এসব যায় ভারতে, মিডল ইষ্টে। হলিউডের মুভি, টিভি সিরিয়াল এসব যায় আমেরিকায়। বাংলা নাটক-সিনেমা এসব যায় যেখানে বাঙালী আছে সেখানেই। তারমানে সেখানেও অনেক মানুষের কর্মসংস্থান।

আর টাকা পয়সাই কি সব। শিক্ষা বলে কথা আছে। বিনোদন বলেও কথা থাকে। যারা এগুলি কেনে সেইসব কোটি কোটি মানুষের কথা কি একবারও মনে করা হয়েছে। এই সফটওয়্যার হাতে পেয়েই তৈরী হচ্ছে প্রোগ্রামার, ডিজাইনার, এনিমেটর, ভিডিও এডিটর আরো কত কি। গান-মুভি-নাটক এগুলো দেখার সুযোগ পাচ্ছে। এই ব্যবস্থা না থাকলে কি সেটা হত! দেশের জিনিষ যাচ্ছে বিদেশে, বিদেশের জিনিষ আসছে দেশে। এক দেশের সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়ছে আরেক দেশে। কোন দেশের মানুষ কিভাবে চলে, কিভাবে বলে সব শেখা যাচ্ছে।

গ্লোবালাইজেশনের এরচেয়ে উপকারী পথ আর কি আছে।

ভয় করলেই ভয় - Nothing to fear

Jul 28, 2009

শীত-লজ্জা-ঘুম-ভয় এগুলি নাকি বাড়ালেই বাড়ে কমালেই কমে আগেরগুলি নিশ্চিত করা আমার পক্ষে সম্ভব না তবে শেষেরটার বিষয়ে প্রমান অনেক দেশে যখন নিরপেক্ষ সরকার ক্ষমতায় তখন অভিযোগ শোনা গিয়েছিল, ওরা আমাদের ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে কিছু করুন উত্তরে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি বললেন, ভয় না পেলেই হয়

সত্যিকারের সমাধান সেখানেই ভয় না পাওয়া ভুত-প্রেত সে চেষ্টাই করে তারা খুব ভাল করেই জানে ভয় দেখানো ছাড়া আরকিছু করার সামর্থ্য তাদের অশরীরী শরীরে নেই ভয় দেখিয়ে যতটুকু করা যায় একবার যদি সেই ভয় ভেঙে যায় তাহলে তার সামনে যাওয়ার কোন অর্থ হয় না

গ্রাম থেকে যে ব্যক্তি শহরে পা দিল তার মনে ভয় থাকে শংকা থাকে কে জানে কোথায় কি হয় চারিদিকে দেখেশুনে চলাই ভাল

তারপর একসময় ভয় কেটে যায় রিক্সা উল্টোদিকে যাচ্ছে, ভয়ের কি আছে পুলিশ কি করতে পারে ? মারতে পারে ? কত পুলিশ আছে দেশে ? এইখানে একজন আর ওইখানে একজন আর রিক্সাআলা দ্যাখছেন হাজার হাজার ব্যাটারে একটা কইরা ঘুসি মারলে কই যাইব গিয়া তারে ভয় পাওনের কি ?

যারা রাস্তার পাশে গাড়ি রাখেন তারাও একসময় এমনটাই ভাবেন ওই বুঝি পুলিশ এল কেসটা মনে হয় করেই দিল লাইসেন্স নিয়েই বোধহয় টানাটানি কদিন যেতেই দেখা যায়, আরে কিসের কেস ওইতো পুলিশের গাড়ি থামা, আর্মির গাড়ি থামা তাগো অধিকার আছে আর আমার নাই ? আমি এই দেশের নাগরিক না ? আমি ভোট দেই না ? দেহি কোন ব্যাটায় কি কয় ?

আরেক ধরনের কাজে শংকোচ একটু বেশিই থাকে একেবারে না খেয়ে থাকার মত অবস্থায় একজনকে জানালেন নিজের সমস্যার কথা সে পথ বাতলে দিল ভয় পাবি না হাতে বড় দেইখা ছুরি লইবি গরু কাটা ছুরি ব্যাস আরকিছু লাগব না আয় দেহায়া দেই।

তারপরও ভয় কাটে না বাপরে, ওই লোকটার যা স্বাস্থ্য একটা ঘুসি দিলে এই চুরিতে কাম হইব না আর আশেপাশে কত মানুষ কোনদিকে দৌড় দেয়ার যায়গা নাই

তারপর ভয় কেটে যায় বেশ মজা তো ওই হাতির মত লোকটা ছুরি দেইখা একটা কথাও কইল না রাস্তার মানুষগুলান দেইখা অন্যদিকে চোখ ঘুড়ায় পুলিশের সাথে কন্ট্রাক্ট ভয় পামু কারে ?

ভয় আরেকভাবে কাটে পড়নে সরকারী ইউনিফর্ম, হাতে গুলিভরা অস্ত্র রাস্তায় একজনরে থামাইয়া কথা কইলে থরথর কইরা কাপে ভয় পাওয়ার কি আছে ? ওই ব্যাটা তো অন্যায় কইরা কামাইছে কোটি ট্যাকা কামাইয়া মন ভরে নাই আমাগো কথা কেউ মনে করছে ? সারাদিন হাইটা হাইটা দিউটি করি ওই, পকেটে কি আছে দিয়া যা নজর রাখ তো কোন ব্যাটায় ব্যাংক থিক্যা বেশি ট্যাকা উঠায় কোন রাস্তা দিয়া যায় ?

বড় ভয় ছোট ভয় সব ভয়ই কাটে দাড়ি-গোফ যখন উঠতে শুরু করেছে তখন একধরনের ভয় কাজ করেই। ওই মাইয়াডারে কিছু কমু ? যদি বাপের কাছে নালিশ দেয়। যদি রাস্তার লোকজন ধোলাই দেয়।

তারপর একসময় দেখা যায় ওসব কিছুই হয় না। তার বাপ, নিজের বাপ কেউই এসব নিয়ে মাথা ঘামায় না। এই বয়সে এসব সকলেই করে। রাস্তার লোকেরা মজা দেখে। আরে বিনা পয়সায় নাটক, দাড়া দেইখ্যা লই। যাকে নিয়ে বিষয়ের শুরু তারও একসময় ভয় কেটে যায়। একসময় পরিনত হয় কৌতুহলে। আগ্রহে। ওই ভিডিওকে কি আছে দেখছ ?

ছোটবেলায় এলাকায় এক পাগলের কথা মনে আছে। একটা দোকানের কাছে গিয়ে দাড়াত। তারপর সবাইকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলত, ভয় করলেই ভয়, ভয় করলেই ভয়। থাপ্পা দিয়া খাইয়া ফেললে কিসের ভয়। তারপর এক থাবায় দোকানের খাবার চলে যেত তার হাতে।

সত্যিই তো। একবার থাবা দিলে আর ভয়ের কি থাকে ?

অরন্যে বসবাস - Living in Jungle

Jul 24, 2009

একসময় মানুষ মনের দুখে বনে যেত। যখন নিজের পরিবার, বন্ধুবান্ধব, সমাজ সবকিছু অসহ্য মনে হত, মনে হত তাদের সাথে থাকা যায় না তখন রওনা দিত বনের দিকে। সেখানে বাঘ-ভালুক-সাপ-মশা-গ্রীষ্ম-বর্ষা-শীত-গরম-ক্ষুধা-নিদ্রা সব সমস্যা মেনে নিত। তারপরও তার মন বলত, সমাজের থেকে ভাল আছি। সেখানে একমনে থাকা যায়। মুনি-ঋষি পর্যায়ের মানুষ যেমন তেমনি সাধারন ঘরের মানুষও হঠাৎ করে বনবাসী হয়ে যেত। আর রামায়ন মহাভারত থেকে শুরু করে গল্প-উপকথা হলে তো কথাই নেই। কথায় কথায় বনবাস নয়ত বনে নির্বাসন।

সে যুগ গত হয়েছে বহুকাল। এখন বন নেই। যেটুকু আছে তা ডাকাত আর সন্ত্রাসীদের দখলে। ইচ্ছে থাকলেও যাবার উপায় নেই।

তবে ইচ্ছে হওয়াটা অস্বাভাবিক না। যুক্তির বিচারেই হোক আর আবেগের বিচারেই হোক, বন খুব ভাল যায়গা। প্রথমত যেখানে ঝগড়াঝাটি-গালাগালি-মারামারি নেই। বনে কেউ এসে গায়ে পড়ে কথা বাড়ায় না, পথ চলিতে যদি চকিতে গুতো দেয় না, নানারকম সাজপোষাক নিয়ে ভেক ধরে কেউ দেখাতে আসে না সে কত বড়, কত সুন্দর, কত ধনী, কত মহৎ, কত জ্ঞানী, কতবড় ত্যাগী, কতবড় বাক্যবাগিস। সেখানে এসব পাত্তা পায়না। যে যার সে তার।

দ্বিতীয়ত, এবং এটাই মুখ্য, সেখানে খাবারে ভেজাল থাকে না। অনাহারে থাকার সম্ভাবনা আছে তো বটেই, কারন বনের বাইরে থেকে প্রতিমুহুর্তে তাদের সম্পদ চুরি করা হচ্ছে, তারপরও অমুকের সাথে তমুক মেশানোর বিষয়টি নেই। ইতিহাসে যারা মাসের পর মাস, বছরের পর বছর বনবাসে কাটিয়েছেন কোনরকম রোগবালাই ছাড়াই তার একটা বড় কারন হয়ত এটাই। তারা না খেয়ে থাকলে থেকেছেন কিন্তু ভেজাল খাননি। আর কখনো যদি রোগবালাই হয়েই যায় তখন ভেজাল ডাক্তারের কাছে যাননি এবং ভেজাল ওষুধ খাননি।

ভেজাল শব্দটা নিয়ে বিতর্ক করতে পারেন। কেউ যদি পরীক্ষার হলে টুকলি করা কাগজ নিয়ে যায় তাকে বলে নকল। যদি পুরো বইটিই নিয়ে যায় তাকেও কি নকল বলবেন ? না আসল বলবেন ?

ভেজাল বিষয়টি তেমনই। মুল জিনিষের সাথে অন্যকিছু মেশালে তাকে বলে ভেজাল, আর পুরো জিনিষটিই যদি একের বদলে অন্য দিয়ে তৈরী হয় তাকে কি ভেজাল বলা মানায়।

ওষুধ কোম্পানীর লোকেরা জ্ঞানী। তারা আটা দিয়ে ট্যাবলেট বানাতে পারেন, ট্যানারীর কেমিকেল দিয়ে সিরাপ বানাতে পারেন, পছন্দমত রং গুলে যেকোন ওষুধই বানাতে পারেন। সেখানে সামান্য পরিমানে হলেও মুল পদার্থ থাকে। অন্তত চোখের দেখায়, গন্ধ শুকে যেন টের পাওয়া সেটা আসলে কি। তারপরও, শুনতে যত খারাপই লাগুক, সেটা ভেজাল ছেড়ে আসলের পর্যায়ে যায়নি। এই চোখে দেখা, গন্ধ শোকার পর্যায় তারা ধরে রেখেছেন। এখনো পুরোপুরি আসল ওষুধ তৈরী করেননি। অচিরেই করবেন। রাসায়নিক মিশ্রনবিদ্যায় এদেশ এতটাই এগিয়ে যে অনায়াসে বিশ্বে নেতৃত্ব দিতে পারে। চালের সাথে পাথরের যুগ, সেতো প্রস্তর যুগ। এখন প্লাস্টিকের তৈরী চাল পাওয়া যায়। একমাত্র হজমপ্রক্রিয়া টের পায় সেটা কোন জাতের চাল।

একসময় যখন সেটা প্রকাশ পায় তখন ওষুধ প্রক্রিয়া। একজন অভিজ্ঞতার গল্প করলেন, একেবারে যখন মরোমরো অবস্থা তখন যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে বিষ খেলেন। সাথেসাথে মন্ত্রবৎ সুস্থ। বিষে বিষক্ষয় বোধহয় একেই বলে।

ওষুধ খেয়ে হাসপাতালে ডজন ডজন শিশু মারা যায় (বাপরে, হাসপাতালে ওষুধ খেয়ে মৃত্যু) দেশে প্রতিদিন যে হাজার হাজার মারা যাচ্ছে তার কারন কে দেখেছে ?

বিস্কুট খেয়ে মারা যায়, ভিটামিন খেয়ে মারা যায়, অসুস্থ হয়। বিশেষজ্ঞরা নড়েচড়ে বসেন। একে উপেক্ষা করা যায় না। খবর পাচার হয়ে যাচ্ছে। কি বলছেন, ভিটামিন খেয়ে, বিস্কুট খেয়ে মারা যাচ্ছে ? কখনোই তারা ভিটামিন খেয়ে মারা যায়নি ? আমরা নিশ্চয়তা দিচ্ছি ভিটামিনে কোন সমস্যা নেই, বিস্কুটে সমস্যা নেই।

কেন অসুস্থ হচ্ছে ? কেন মারা যাচ্ছে ?

দাড়ান, চিন্তা করতে দিন। সময় দিন। তাড়াহুড়া করবেন না।

হ্যা, পেয়েছি। ওদের পেটে হাই প্রোটিন সহ্য হয় না। সেজন্য অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ওদের প্রয়োজন খিচুরী। সেটাই সবচেয়ে ভাল ওসুধ।

প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে কয়েক ডজন মারা গেছে ? ঘাবড়াবেন না। কারখানা সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। কেউ ঢুকতে বেরতে পারবে না। প্রয়োজনে সেখানে ওষুধের বদলে খিচুরির কারখানা বসানো হবে। প্যাকেটে করে নির্ভেজাল খিছুরি দেয়া হবে। আপনারা ওদিকে ভিড় করবেন না। আর প্রশ্ন করবেন না।

মৃত্যুর দায়িত্ব কার জিজ্ঞেস করছেন ? জন্ম-মৃত্যু আল্লার হাতে। তার ইচ্ছা ছাড়া কিছু হয় না। নাফরমানী কথা বলবেন না, এখানে আমাদের কিছু করার নেই। আর যাই হই, বিধর্মী হতে পারব না।

শুরু করেছিলাম বনবাস দিয়ে। সত্যিই, সেই দিনের তুলনা হয় না। কোনভাবে যদি সেই দিন ফিরে পাওয়া যেত!

অভিজ্ঞতা এবং আতংক

Jul 23, 2009

একসময় মানুষ ভিসিআর নামের এক যন্ত্র আবিস্কার করেছিল আরো নির্দিষ্ট করে বললে বলতে হয় ভিএইচএস, ভিডিও হোম সার্ভিস সেটাকে বাড়ির টিভির সাথে লাগাবেন আর ভিডিও ক্যাসেটে যা আছে দেখবেন যতবার খুশি ততবার যিনি বা যারা আবিস্কার করেছিলেন তারা নিশ্চয়ই তৃপ্তিবোধ করেছিলেন এতে একবার দেখে প্রয়োজন না মিটলে শতবার দেখা যাবে অমুক প্রফেসর লেকচার দিচ্ছেন, তার সামনে বসে ভীড় বাড়ানোর প্রয়োজন নেই বাড়িতে বসেই সেটা দেখে নেবেন শিক্ষার দৃষ্টিভঙ্গিই পাল্টে যাবে ঘরে ঘরে শিক্ষা পৌছে যাবে

তবে এই ভ্রান্তি ভাঙতে সময় লাগেনি দেখা গেল মানুষ প্রফেসরের লেকচার দেখতে পছন্দ করে না আর করবেই বা কেন হলিউড-বলিউডের মুভি থাকতে ওগুলো সিনেমা হলে দেখা যায় না দেশ চালায় ওদের মাথায় কি আছে কে জানে, বছরে একটা দুটা উৎসব করে আর সেখানে রদ্দিমার্কা ছবি দেখায় তারচেয়ে এই ভাল দোকান থেকে ভাড়া আনো আর দেখ চাহিদা ভাল থাকলে ব্যবসাও করা যায় ওইসব লেকচার শোনে কে? ওরা কি এদের মত খরচ করে ?

আসছে খরচের বিষয়টিও কথার কথা হলিউডের একটা ছবি তৈরী করতে সময় লাগে ছয় মাস, কখনো কখনো বছর পর্ণো ভিডিও তৈরী করতে লাগে কয়েক ঘন্টা তারপরও কত যত্ন করে তৈরী করে কার কি পছন্দ হিসেব করে মাথা ঘামিয়ে তৈরী এসব থাকতে লেকচার শুনতে যাবে কে ? ওইসব উটকো লোকজন উটকো কথাবার্তা বলে এতদিন চোখকান বন্ধ করে রেখেছে। টিভিতে দেখানো যাবে না, সিনেমা হলে দেখানো যাবে না। অপসংস্কৃতি টুক করে কোনফাকে ঢুকে পড়বে।

অপসংস্কৃতি আবার কি-রে বাবা। এতদিনেও শেখেন নাই উপকারডা কোনখানে। সকলেই কমবেশি হিন্দী কইতে পারে এইডা কি কম শিক্ষা। এত কম পরিশ্রমে বিদেশী ভাষা শিক্ষা দেখাইতে পারবেন ? দ্যাহেন না পশ্চিমের দেশগুলার কত চেষ্টা কইরাও শেখাইতে পারে নাই। এত স্কুল-কলেজ কইরাও বাংলা শিখাইতে পারে নাই। দেইখা শেখেন কেমনে ভাষা শিখাইতে হয়। মাইক্রোফোনের সামনে আইসা চিল্লাপাল্লা করতাছেন আর কানে হেডফোন গুইজা হিন্দি গান শুনতাছেন সেইডা আবার কি।

এর ওপর যাদের রুটি-রুজি নির্ভর করে তাদের বিষয় একটু আলাদা। সেইসব নির্মাতারা বুঝলেন তাদের কর্তব্য। পথ একটাই, কশে অনুকরন করা। ওরা কইছে ঠাকুর, আপনে কন কুকুর। মিল থাকলেই হইছে। ওরা কত পর্ব বানাইছে ? হাজার ? আমি বানামু হাজার এক।

আর সেই যন্ত্রের যারা নির্মাতা তারা কিছুদিন বেজায় খুশি থাকার পর মাথায় হাত দিলেন।

এই মাধ্যমের অপব্যবহার অত্যন্ত বেশি এমন কিছু করা প্রয়োজন যেখানে মানুষ বিনোদন আর শিক্ষা দুইয়েরই স্বাদ পাবে এডুটেইনমেন্ট এডুকেশন আর এন্টারটেইনমেন্ট সেটা হতে পারে কম্পিউটার মাল্টিমিডিয়া

কথাটা চাউর হল এখানেও। ব্যস উঠেপড়ে লাগল সবাই শতশত, হাজার হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শাখা-প্রশাখা-ডালপালা গজাতে শুরু করল। যার যতটুকু সুযোগ আছে পালে হাওয়া লাগানোর লাগালেন। মানুষ জমিজেরাত বিক্রি করে এসে লাইনে দাড়াল। কয়েকটা মাস, তারপরই একজন তরুন মিলিওনিয়ার। বিলিওনিয়ারও হতে পারেন। উদাহরন দ্যাখেন না। বিল গেটস তারপর ষ্টিভ জবস। আরো কত কি।

একসময় ভাটা পরল তাতেও। কয়েক মাস যাওয়ার পর দেখা গেল মিলিওনিয়ার হওয়া বিষয়টা এত সহজ না। লোকে জিজ্ঞেস করে পড়াশোনা কতদুর। কি করতে পার ? নমুনা দেখি ? পিএইচডি আছে ?

বহু টাকা ইনভেষ্ট করে কি খালিহাতে ফেরা যায়। একমাত্র সম্বল হয়ে দাড়াল সিডি কপি করে বিক্রি করা। কেউ কেউ সরতে শুরু করল এই পথ থেকে। কিছু বলতে গেলে ধমকে ওঠে, সফটওয়্যার ডেভেলপার। ভাগ এখান থেকে।

গবেষকরা কারন খুজতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। ভারতে হচ্ছে এখানে কেন হচ্ছে না।

ও বুঝেছি। ওদের হাই স্পিড ইন্টারনেট আছে, আমাদের নেই।

ব্যস, শুরু হল আরেকটা ঝড়। ষড়যন্ত্র করে দেশকে পিছিয়ে রেখেছে। এই অবস্থা চলতে পারে না। আমরা দ্রুতগতির ইন্টারনেট চাই। যে ভাবেই হোক এটা করতেই হবে। ইন্টারনেটের মধ্যে দিয়ে ডলারের স্রোত আসবে।

আর টাকাই কি সব। টাকা যদি নাই আসে তাতেই বা ক্ষতি কি। সারা বিশ্বের তথ্য আপনার সামনে এসে হাজির হবে এটাই মুল কথা। কম্পিউটারের সামনে বসবেন আর বোতাম টিপে জেনে নেবেন কোথায় কি ঘটছে। কেমন করে ঘুরছে জগত যুগান্তরের ঘুর্নিপাকে। লন্ডন-নিউইয়র্ক যাওয়ার দরকার নেই। সব ঘরে বসেই পাওয়া যাবে। কেমব্রিজ-অক্সফোর্ড-হার্বার্ড সবকিছু।

সেই পুরনো কথা ভিসিআরের যুগে যেমন বলা হয়েছিল শিক্ষা ঘরের মধ্যে বাইরে যাবার প্রয়োজন নেই

হাইস্পিড ইন্টারনেট এখনো হয়নি, হব হব করছে। যে লো-স্পিড আছে তার অভিজ্ঞতা হচ্ছে, যারা পর্নোগ্রাফির ব্যবসা করে তারা ভাল করেই জানে, বলা উচিত সবচেয়ে ভাল জানে কিভাবে ব্যবসা করতে হয় মানুষের মনস্তত্ত্ব কি বলে একেবারে সরাসরি সেখানে গিয়ে পৌছাতে হয় বর্তমানের লো স্পিডেই মানুষের ঘরেঘরে, হাতেহাতে পৌছে গেছে এই বার্তা। এখন আর ভিসিআরের মত সেকেলে যন্ত্র প্রয়োজন নেই। ডিভিডি, এমপিফোর, মোবাইল। এবার আর অন্যদের থেকে পিছিয়ে থাকা না, শুধু চোখ মেলে দেখা না, নিজেদের অংশগ্রহন। ডলার পাওয়ার সবচেয়ে সহজ পথ।

ঘরে বসে দুনিয়ার তথ্য, পাওয়া যাবে নিশ্চয়ই

নাম বদলের সময়

Jul 21, 2009

অনেকে বলে ধানমন্ডিতে ঠিকানা খোজা খুব সহজ। যদি রাস্তার নাম্বার এবং বাড়ির নাম্বার জানা থাকে।

ভুক্তভোগি জানেন বিষয়টি আসলে কি। আপনাকে একজন বলল ১৪ নম্বর রোডে ২৮ নম্বর বাড়ি। আপনি ভাবলেন আগে ১৪ নম্বর বের করি তারপর ২৮ নম্বর বের করা যাবে। রিকসায় উঠলেন। সে রওনা হল ১৪ নম্বরে। যেখানে নিয়ে গেল সেখানে ২৮ নম্বর বলে কোন বাড়ি নেই।

ব্যাপার কি!

জিজ্ঞেস করতে শুরু করলেন একে-ওকে-তাকে। শেষেমেশ যা জানতে পেলেন তা হচ্ছে এটা একসময় চৌদ্দ ছিল, এখন একে বলে ৭-এ। তবে যদি রাস্তা পার হন তাহলে ওপাশে ১৪ পাবেন। ওটার নাম বদল হয়নি। যেমন হয়নি ১৫ নম্বর বাসষ্ট্যান্ডের, কিংবা ৩২ নম্বরের।

কত নম্বর রোড বললেন ? ১৪ ? ১৪ না ১৪-এ ? ঠিক কইরা কন। ১৪ হইলে প্রথমে যাইবেন সোবহানবাগ। সেইখানে লাল রঙের একটা মসজিদ আছে না, রাস্তার উপর, ওইডার পাশের রাস্তা হইল ১৪। রিক্সায় ১৫ টাকা ২০ টাকা নিব। আর যদি ১৪-এ হয় তাইলে এইখান থিক্যা গুনতে গুনতে যান। সাতের-এ, আটের-এ, নয়ের-এ এমনে। ওইযে বাংলাদেশ মেডিকেল আছে না, ওইখানে।

আরেক ধরনের ঘটনা প্রতিদিনই ঘটে। সাত (গম্বুজ) মসজিদ রোডের ধারে এসে শুরু হয় রিক্সাচালক-যাত্রীর তর্কাতর্কি। রিক্সাচালক বলে যামু না ওইপারে। আপনে সাতের-এ কইছেন, আইছি। যাত্রী যুক্ত দিয়ে বুঝাতে চেষ্টা করে, ওপারেও সাতের-এ। এটা সাতের-এ হলে ওটাও সাতের এ, ওটা চৌদ্দ হলে এটাও চৌদ্দ।

তবে কথা হচ্ছে, অমানুষিক পরিশ্রম করতে করতে কেউ যদি যুক্তিবোধ বিবর্জিত অমানুষ হয় তাকে কতটা দোষ দিতে পারেন। আপনার উচিত রাস্তা পার হলে চৌদ্দতে গেলে তাকে অতিরিক্ত টাকা দেয়া, নয়ত এপারে সাতের-এ নেমে হাটা দেয়া।

রাস্তার নামকরন কবে শুরু হয়েছিল প্রত্নতত্ত্ববিদ ভাল বলতে পারবেন। তারা বলেন মহেঞ্জেদারোতে নাকি পানি সরে যাওয়ার জন্য ড্রেনের ব্যবস্থা ছিল প্রতিটি বাড়ির পাশ দিয়ে। রাস্তার নাম দেয়ার ব্যবস্থা নিশ্চয়ই ছিল। নইলে মানুষ চিনবে কিভাবে। আপনার যদি নাম না থাকে তাহলে পরিচয় দেবেন কিভাবে ?

সেকারনেই নাম প্রয়োজন। ধানমন্ডি এবং অন্যান্য যায়গারও নাম প্রয়োজন। নাম্বার যথেষ্ট না। আইনে বলে নাম্বার নাকি নিজের নামে রেজিষ্ট্রি করা যায় না, নাম করা যায়। যেমন মাইক্রোসফট, কোকাকোলা এগুলো রেজিষ্ট্রি করা নাম। ওগুলো তাদের সম্পত্তি। যদি মালিকানা চান তাহলে নাম থাকতে হবে, নাম্বারে চলবে না। ধানমন্ডি হলেও। সেকারনেই প্রয়োজন হল নতুন নামফলক। সাদা মার্বেল পাথরে খোদাই করা নাম। সহজে হারানোর ভয় নেই। মুক্তিযোদ্ধা, খেলোয়ার, ভাষাসৈনিক এদের নাম সোভা পেতে শুরু করল রাস্তার মোড়ে মোড়ে। যিনি এই নামকরনের মহান দায়িত্ব নিয়েছেন তার নামটি প্রতিক্ষেত্রেই বিদ্যমান। নইলে তাকেই বা চিনবেন কিভাবে। অবশ্য তার নাম ছোট করে, নিচের দিকে।

হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ ক্ষমতায় ছিলেন ৯ বছর। এই সময়ে বহুকিছুই করেছেন। অনেকে এখনো সেই স্মৃতিচারন করে বলেন যাকিছু করার তিনিই করে গেছেন। দেশ শাসন করেছেন, কবিতা লিখেছেন, আরো কতকিছু। এই কতকিছু করার মধ্যে একটি বিশেষ কাজ ছিল, নিজের নাম লিখে যাওয়া। যেখানে-সেখানে নিজের নাম লিখে গেছেন তিনি। এরশাদ ষ্টেডিয়াম, এরশাদ স্কোয়ার, এরশাদ উদ্যান, যাকিছুতে নাম লেখা সম্ভব লিখে গেছেন। পত্রিকায় ছবি বেরিয়েছিল একটি গনসৌচাগারের ছবি। কেউ একজন সেটার নাম রেখেছে তার নামে।

তবে দুঃখের কথা তিনি নাম টিকিয়ে রাখতে পারেননি। গদি ছাড়ার সাথেসাথেই দেখতে দেখতে উধাও হয়ে গেছে। তিনি চেষ্টা করে যাচ্ছেন আবারো নাম দেয়ার ক্ষমতা হাতে পাওয়ার।

তার দেয়া নাম বদল হয়েছে অনেক আগেই। প্রায় দুই দশক। সেই নামবদল প্রক্রিয়া থেমে নেই। সেটা ঘটমান বর্তমান। রাস্তাঘাট (ঘাট শব্দটা বাদ দেয়া উচিত, কারন নদী-পুকুর এসব যদি না থাকে তাহলে ঘাট থাকবে কোথায়। অকারনে একে বয়ে বেড়ানোর কোন মানে হয় না। গাড়িঘোড়া শব্দটির ব্যবহার নিয়েও নতুন করে চিন্তা করা উচিত।এসব ঘাট-ঘোড়া এসবের বদলে স্মরনীয় কোন ব্যক্তির নাম ব্যবহার করা যেতে পারে।), স্কুল-কলেজ-হোষ্টেল, খেলার মাঠ সবকিছুরই নয়া নামকরন করা উচিত। যারা স্মৃতির অতীত তাদের নাম প্রচারের প্রয়োজন কি ? ভুলে যাওয়া ব্যক্তির নামে নভোথিয়েটার, এর কোন মানে হয় ? কিংবা ষ্টেডিয়াম ? এমন নাম হতে হয় যা প্রতিদিন জপ করা প্রয়োজন। সব ধর্মেই বলে জপ করতে। যত জপ করবেন তত পুন্য। এইসব উটকো নামটাম বাদ দিয়ে জপ করা যায় এমন নাম জুড়ে দিন।

আরেকটা কথা, ওইসব মৈত্রী-ত্রৈত্রী কোন নাম হয় না। নাম হবে ব্যক্তির নামে। বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র এটা কোন নাম হয় না। ওটাও ব্যক্তির নামে হবে।

আমার আশংকা একটাই। মৈত্রী সন্মেলনে ২০ টাকা রিক্সাভাড়ায় যাওয়া যায়, তার নাম বঙ্গবন্ধু করার পর ৩০ টাকা দিতে হবে না-তো। মেলা-টেলা তো সব ওদিকেই হয়।

পিন্ডি এবং আপেক্ষিকতা সুত্র

Jul 20, 2009

রাওয়ালপিন্ডি নামে একটা যায়গা আছে শুনেছি পাকিস্তানে একজন বোলারের নাম রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস কারন তার বাড়ি সেখানে তিনি নাকি একশ মাইল বেগে বল ছুড়তে পারেন অবশ্য সেটা তার দেশের মানুষের কথা অন্যরা বলে অন্য কথা গতি মাপার যন্ত্র ঠিক ছিল না আর ঠিক থাকলেই বা কি, গতিতে কিছু যায় আসে না অমুকের ছেলে পড়াশোনা করলে কি হবে পাশ করবে না পাশ করেছে! পাশ করলে কি হবে চাকরী পাবে না চাকরী পেয়েছে! চাকরী পেলে কি হবে বেতন পাবে না

সেসব কথা যাকগে এ নিয়ে কেউ পিন্ডি চটকাতে আসছে না আমার বক্তব্য হচ্ছে পিন্ডি নিয়ে এটা এমন এক শব্দ যা অভিধানে নেই অথচ সবাই জানে কেউ দেখেনি আবার সবাই চটকাতে চায় এর-ওর-তার যখন যার পাওয়া যায় যখন যাকে নাগালে পাওয়া যায় আবার এটা এমন জিনিষ যা বিনা বাক্যব্যয়ে অকাতরে অন্যকে দান করতেও রাজি একেবারে জ্বলজলে প্রমান হল উধো আর বুধো উধোর সার্বক্ষনিক লক্ষ্যই থাকে কিভাবে তার পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চালান করবে আর বুধোর যে বুধো রেখেছে সে নিশ্চয়ই বুদ্ধু মনে করেই রেখেছে খুব ভালকরেই জানে সে এই বোঝা ঘাড় থেকে নামাতে পারবে না

উধো আর বুধো, এদের অভাব নেই সমাজে ওয়ান ইলেভেন কিভাবে হয়েছে জানেন ? ওটা আমাদের কৃতিত্ব আমরা আন্দোলন করে ওটা এনেছি দেশের মংগলের জন্য এরচেয়ে ভাল কিছু হয় না এটা হচ্ছে উধোর কাজ তারপর দিনবদলের পালা একসময় দেখা গেল উধোর ঘাড়ের পিন্ডিটা বেশ ভারী ওটা বুধোর ঘাড়ে চালান করা প্রয়োজন ব্যস শুরু হল প্রক্রিয়া ওয়ান ইলেভেনের সাথে যারা জড়িত তাদের সকলের বিচার হবে ওই পিন্ডি আমার না বুধোর ওটা বুধোর ঘাড়েই ভাল মানায় রাজনীতিতে পিন্ডির ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। ক্ষমতায় না থাকলে নেতাদের কাছে পুরো ভারতই পিন্ডি। সেটা বুধোর ঘাড়ে চাপানো উচিত। কড়িডোর-ট্রান্সশিপমেন্ট-আমদানীরপ্তানী-জলসীমা-বাঁধ এগুলো উধোর কাছে বোঝা হয়ে দাড়ায় ক্ষমতায় না থাকলে। আবার বুধো এই জিনিষগুলি বেশ পছন্দ করে। উধো-বুধো ব্যাপারটিও পরিবর্তন হয় কালের প্রভাবে। কিংবা আইনষ্টাইনের মত করে বলা যায় আপেক্ষিক। এই আপেক্ষিক তত্ত্ব জানার জন্য বিজ্ঞানের ছাত্র হওয়া প্রয়োজন হয় না। জন্মমাত্র শিক্ষা শুরু হয় এবং মৃত্যু পর্যন্ত চলতে থাকে। কোরানে যেমন আছে জ্ঞান অন্মেষন করার কথা সেটাই অক্ষরে অক্ষরে মানার প্রক্রিয়া চলে। আপেক্ষিক তত্ত্ব ব্যবহারের ক্ষেত্রে সকলেই অসাধারন, আবার সকলেই সাধারন। একটা উদাহরন দিলেই বিষয়টা ক্রিষ্টাল ক্লিয়ার হতে পারে।

কয়েকজন বন্ধু গেছে ক ভদ্রলোকে বাড়ি। ড্রইংরুমে বসে গল্প করার সময় বন্ধুদের একজন, খ ভদ্রলোক, ক ভদ্রলোকের গ নামীয় একটি শখের জিনিষ হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করছেন। ক ভদ্রলোক ভদ্রতার খাতিরে বাধা দিচ্ছেন না। খ ভদ্রলোক একসময় গ বস্তুটির পিন্ডি চটকালেন। তারপর বস্তুটি হাতছাড়া করলেন। সাবধানে নামিয়ে রাখলেন।

বিদায়ের মুহুর্তে ক ভদ্রলোক খ ভদ্রলোক বললেন আপনাকে একটা জিনিষ দেব ঠিক করেছি। ওইযে ওটা। আপনার জন্যই রাখা আছে। খ ভদ্রলোক আতকে উঠলেন, আগে কইবেন না। আহহারে, জিনিষটা খামোখা নষ্ট হইল।

কাজেই প্রমানিত হইল পিন্ডি, উধো এবং বুধো প্রত্যেকেই আপেক্ষিক সুত্র মানিয়া চলে।

কোচিং সেন্টার চাই

Jul 18, 2009

লোকটাকে দেখে আমার যা মনে হয়েছিল তাকে এককথায় বলা যায় হাবাগোবা। বছরখানের বয়সের ফুটফুটে এক ছেলে নিয়ে ঘুরছে। চোখেমুখে তৃপ্তি। তবে হাবাগোবার লক্ষনটিও পরিস্কার। আমি যখন দোকান থেকে চায়ের কাপ হাতে নিচ্ছি তখন আমাকে ধাক্কা দিয়ে পাশে এসে দাড়াল। দোকানের বাক্সটার এতটাই কাছে গিয়ে দাড়াল যে আমার মনে হল সম্ভব হলে তার ওপর পা দিয়ে আরেকটু ভেতরে যাবে। যদিও তার সেখানে যাওয়ার কোন কারন দেখিনি।

যখন দুরে সরে এসে দাড়িয়ে চা খাচ্ছি তখন আরেকবার এসে ধাক্কা মারল। আমি বিরক্তি দেখাতে চেষ্টা করলাম। কিন্তু সে আমার অস্তিত্বই টের পায়নি। আরো বারতিনেক সে একই কাজ করল। এদিক থেকে ওদিক, ওদিক থেকে সেদিক। একে ধাক্কা দেয়, তাকে গুতো দেয়। অথচ তার মুখ নির্বিকার। হাবাগোবা ছাড়া অন্যকিছু হতেই পারে না।

এদিকে শিশুটির চোখ গেছে দোকানে ঝুলে থাকা হলুদ রঙের কলার দিকে। আমি ভাল করেই জানি এই ফল দেখতে যতই আকর্ষনীয় হোক, খেতে মজা নেই। কেমিকেল দিয়ে পাকানো। শিশুটির তা জানার কথা না। হয়ত তার হাবাগোবা বাবারও।

সে আরেকজনকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে একটা কলা ছিড়ে তার হাতে দিল। শিশুটি সাথেসাথে হাত বাড়াল নেয়ার জন্য। কিন্তু কলা তার হাতে গেল না। কারন সে বামহাত বাড়িয়েছে।

লোকটি বলল, 'ডানহাত-ডানহাত।'

কোনহাতেই শিশুটির আপত্তি নেই। কলা পাওয়াই তারকাছে মুখ্য। সে ডানহাত বাড়িয়ে কলাটি আয়ত্ত্বে নিল। আর তার পিতার মুখে ছড়িয়ে পড়ল স্বর্গের তৃপ্তি। এতক্ষনে তার চোখে পড়ল আমি পুরো বিষয়টা দেখছি। সোজা আমার দিকে তাকিয়ে বলল, 'ছোটকাল থিক্যা ভদ্রতা শিখাইতে হয়। তবে না মানুষের মত মানুষ।'

নিশ্চয়ই তার মনে ছিল আমার দিক থেকে কিছু শুনবে। কিন্তু উত্তরে যা শুনল তাতে হাসিটা মিলিয়ে গেল চুপসানো বেলুনের মত। ঠিক আমার পাশ থেকে শোনা গেল, 'আপনের মত।'

পরিচিত গলা। ঘুরে দেখি রসিক আলী।

তার এমন বেরসিক কথা শুনে লোকটা দুঃখ পেয়েছে সন্দেহ নেই। আর কোনদিকে না তাকিয়ে সে সোজা মাথানিচু করে হাটা দিল।

রসিক আলীর জন্য আরেককাপ চা হচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস না করে পারলাম না, 'কথাটা তো ঠিক। ছোটকালেই সবকিছু শেখাতে হয়। দেয়ানেয়া ডানহাতে করতে হয়। অনেকে বামহাতে জিনিষ দেয়ানেয়া করলে অভদ্রতা মনে করে।'

রসিক আলী বলল, 'এককালে মাইনসে কইত ঘুষ বামহাতে নেয়। তারমানে বামহাতের কাম হইল খারাপ কাম। অহন দুইহাতেই নেয়, তারমানে যেকোন হাত ব্যবহারই খারাপ কাম। ডান হাতও আমার, বাম হাতও আমার। কোন হাতে নিমু তাতে কার কি। অনেক দেশে হ্যান্ডশেক করে বামহাতে কারন হার্ট বামদিকে।'

তাকে বাধা দিতে হল, 'আচ্ছা ডানহাত-বামহাতের বিষয় নাহয় যাকগে, ছোটবেলা শিখাতে হয় এটা তো ঠিক।'

রসিক আলী বলল, 'কথাডা ঠিক। তয় কেডা শিখাইব সেইডা কথা। এই লোক যদি পোলারে মানুষের মত মানুষ বানাইতে চায় তাইলে তারমত আরেকজন হইব, আরকিছু না। উদাহরন দ্যাখবেন। ওইযে পোলাগুলান গাড়ি নিয়া ডিমডিম গান বাজাইত্যাছে তাগো পেশা কি কইতে পারেন ?'

আমি একনজর দেখলাম। এই বয়সে এদেশে একটামাত্র পেশাই থাকে, ছাত্র। তবে রসিক আলী আমার উত্তরের অপেক্ষা করল না। নিজে থেকেই বলল, 'অগো বাপে-মায়েও মনে করে তাগো পোলা একসময় নিউটন-আইনষ্টাইন হইব। নিদেন পক্ষে বিল গেটস। সেই সুযোগ কইরা দিতাছে। গাড়ি দিছে, জল-পানি-সিগারেটের ট্যাকা দিছে। তারপর কইছে যাও বাবা টাংকি মার গিয়া। মানুষের মত মানুষ হও। আমি কোটি কামাইছি, তুমি হাজার কোটি কামাইবা। আপনে পোলাগুলানের ওপর বিরক্ত হইতে পারেন আমি হইনা। ক্ষমতা থাকলে অগো বাপে-মায়েরে রাস্তায় কান ধইরা ওঠাবসা করাইতাম।'

আমি বাধা দিলাম তাকে, 'আপনি রেগে যাচ্ছেন।'

রসিক আলী বলল, 'না- রাগি নাই। এইডাই সত্য। আপনে নিজে চুরি-চামারি করবেন আর আশা করবেন ট্যাকা দিয়ে যারে রাখছেন, যে ইসকুলে পাঠাইছেন তারা আপনের পোলারে আইনষ্টাইন বানাইব এইডা পাগলের চিন্তা। এইডা কহনো হয় নাই, হওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই। আপনার পোলা যহন জানে আপনে ক্যামনে ট্যাকা কামান, সে সেইডাই শিখব। সেইদিন দেখলাম একজন পোলারে লইয়া বই কিনতে গ্যাছে। দোকানদাররে জিজ্ঞাস করে, শিক্ষামুলক বই কি কি আছে দ্যান। এই গাধারে কি আপনে বুঝাইতে পারবেন পোলাপান বই পড়তে শেখে যদি বাপ-মায়েরে পড়তে দ্যাখে তাইলে। যে পোলারে ধমক দিয়া পড়ার টেবিলে পাঠাইব আর নিজে বসব টিভির সামনে তার পোলা বই পড়ে না।'

'হুঁ। আপনি তো বড় ভাবনায় ফেলে দিলেন। কি করা যায় বলুন তো।'

ভাবতে চাইলে ভাবতে পারেন, 'তয় বাস্তবে কি হইব কইতে পারি না। একবার চিন্তা করছি একটা কোচিং সেন্টার খোলার। পোলাপানগো লাইগা না, পোলাপানগো বাপ-মায়ের লাইগা। পোলাপানের সামনে ক্যামনে চলতে হয় সেইডা শেখার কোচিং। তয় সাহস পাই না। চারিদিকে কোচিং সেন্টারের যে রমরমা ব্যবসা, ইসকুল-কলেজ-ভার্সিটি, সরকার পর্যন্ত তারা কন্ট্রোল করে। কারো সাধ্য নাই মুখ খুইলা কয়, কে কতটা জানে তার পরীক্ষা তো দিছে, সেই রেজাল্ট দেইখা ভর্তি নিমু। সেইডা করলে কোচিং ব্যবসা চলে না। সেই একই ভয়। বাপ-মায়ে নিজেরাই যদি পোলার লেখাপড়ার খোজ নিতে শুরু করে তাইলে কোচিং করব ক্যাডা। ভয় হয় এইডা করতে গেলে একেবারে লাশ ফালাইয়া দিব।'

চারিদিকে হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ বিজ্ঞাপন দেখে আমার ধারনা ছিল কোচিং সেন্টার করা বোধহয় সহজ। এখন মনে হচ্ছে রসিক আলীর কথাই ঠিক। আয়-রোজগারের পথে বাধা তৈরী করলে খুন করা তাদের অধিকার। চাদাবাজরা হরহামেসাই একাজ করে। তাদেরও নিজস্ব হিসাব-কিতাব আছে। এধরনের কোচিং সেন্টারের নিরাপত্তা কেউ দেয়নি।

লিলিপুট তত্ত্ব

Jul 14, 2009

একসময় সারা বিশ্ব কেপে উঠেছিল ক্লোনিং এর কথা শুনে। একজন মানুষের একেবারে ডুপ্লিকেট বানিয়ে দেবে বিজ্ঞানীরা এমনই সে প্রযুক্তি। এর নাম জিন। কোনমতেই জ্বিন থেকে কম যায় না। এরই মধ্যে থাকে কোন প্রাণীর বৈশিষ্ট। তার রং কি হবে, হাইট কি হবে, স্বভাব কি হবে সবকিছু। কোনমতে যদি সেটা বের করে অন্যকে দেয়া যায় তাহলে সেও হবে তারই মত। এমনকি কোটি বছর আগে বিলুপ্ত হয়েছে যে ডাইনোসর তার জিন যদি ব্যবহার করা যায় তাহলে তৈরী করা যাবে হেটে চলে বেড়ানো ডাইনোসর। ব্যাপারটা এতটাই পরিচিত পেল যে স্পিলবার্গ সাহেব এই তত্ত্বের ওপর তিন-তিনটে হলিউডি সিনেমা বানিয়ে ফেললেন। সবগুলো সুপারহিট।

তবে বিজ্ঞানীরা এখন কিছুটা হলেও ধাতস্থ হয়েছেন। এখন একটু রয়েসয়ে কথা বলেন। একটা কারন অবশ্যই অনেক মানুষের পিছে টেনে ধরার প্রবণতা। তারা নতুন কিছু মেনে নিতে চায় না। মানুষ জিন পাল্টে যাকিছু করবে সেটা তারা মেনে নিতে চায় না। ডারউইনের কথাও মেনে নেয়নি। পৃথিবী সুর্যের চারিদিকে ঘোরে একথা বলায় গ্যালিলিওকে রিমান্ডে যেতে হয়েছে। ব্রুনোকে আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। তারপরও পৃথিবী ঘুরেছে। মানুষের পুর্বপুরুষ বানর ছিল এমন তত্ত্ব দেয়ায় ডারউইনকে এখন আর তত গালাগালি করে না কেউ।

কথা হচ্ছে জিন তত্ত্ব নিয়ে। এই জিন নাকি বলে দেয় কোথায় কি পরিবর্তন করতে হবে। কোন প্রোটিন বাড়াতে হবে, কোথায় কমাতে হবে। আর এরই ফলে একেকজন একেক রকম। এক প্রানী থেকে আরেক প্রাণী ভিন্ন। এক মানুষ থেকে আরেক মানুষ ভিন্ন। একজনের স্বভাব থেকে আরেকজনের স্বভাব ভিন্ন।

স্পষ্ট করেই বলা হয়েছে জন্মের পর যদি একটা ইদুরের লেজ কেটে দেয়া হয়, তার থেকে যে ইদুরের জন্ম নেবে তার লেজও যদি জন্ম থেকে কেটে দেয়া হয়, এভাবে যদি চলতেই থাকে তাহলে একসময় লেজছাড়া ইদুর জন্ম নেবে কি-না। তারা বলছেন, না। সেটা হবে না। লেজ কাটার বিষয়টা বাহ্যিক। আর লেজছাড়া ইদুরের বিষয়টা আভ্যন্তরীন। ইদুর যদি মনেমনে কামনা করে তার লেজ প্রয়োজন নেই একমাত্র তার সেই ইচ্ছাই একসময় প্রতিফলিত হতে পারে তার জিনে। সেই ডাইনোসরঅলারাও এতদিনে বুঝেছেন এভাবে ডাইনোসর তৈরী হয় না। পরিবর্তন করতে হয় একেবারে শুরুতে। ভ্রুন পর্যায়ে। যদি এমন ভ্রুন তৈরী করা যায় যার মধ্যে ডাইনোসরের জিন থাকবে তাহলে অবশ্যই সম্ভব জলজ্যান্ত ডাইনোসর তৈরী।

তবে পরিবর্তন হয়। মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেচে থাকলে বদলায়। কারনে অকারনে বদলায়। এই বিখ্যাত উক্তি সেটাই বলে। পরিবর্তন ভালোর দিকে যায়, নয়ত মন্দর দিকে যায়। পরিবর্তনের পর মানুষ ভাল কাজ করে, নয়ত মন্দ কাজ করে। এই পরিবর্তন বাহ্যিক এবং আভ্যন্তরীন।

আবারও সেই বাহ্যিক পরিবর্তন আর আভ্যন্তরীন পরিবর্তন। কেউ যদি খারাপ কাজ দেখে শেখে সেটা বাহ্যিক পরিবর্তন। পরিস্থিতির কারনে সে খারাপ। যে মুহুর্তে সে ভাল দেখবে, ভাল হওয়ার সুযোগ পাবে, সে ভাল হবে। প্রয়োজন শুধু ভালর মধ্যে রাখা। লেজ কেটে যেমন ইদুরকে লেজছাড়া করা যায়না তেমনি শুধুমাত্র পরিবেশের কারনে কেউ শতভাগ খারাপে পরিনত হয় না। তারমধ্যে ভাল-মন্দ দুইই থাকে। যখন যেটা বিকশিত হওয়ার সুযোগ পায় তখন সেটা বিকশিত হয়।

তবে। বিষয়টি যদি ভ্রুনপর্যায়ে ঘটে ?

একজন শিশু জন্মের আগেই যদি এর অস্তিত্ব টের পায়। তার পিতামাতার জন্য বিষয়টি বাহ্যিক বিষয় হতে পারে, তারজন্য সেটা আভ্যন্তরীন। যদি এই জিন নিয়েই সে বেড়ে ওঠে। কখনো অন্য পরিবর্তনের সুযোগ না পায়। তখন কি ঘটবে। বানর যেমন প্রয়োজনের তাগিদে গাছে ওঠা, হামাগুড়ি দিয়ে চলা ছেড়ে একসময় সোজা হয়ে দাড়াতে শুরু করেছিল, সেও কি সেপথেই পরিবর্তিত হবে। তার পুর্বপুরুষের মত অর্থের পেছনে, ক্ষমতার পেছনে, খল রাজনীতির পেছনে, ভন্ডার্মি-মুর্খতার পেছনে ছুটবে ? তার জিনে যে সেটাই ঢুকানো হচ্ছে। তখন কি হবে সেই প্রজন্মের সমাজের চেহারা। কিংবা তার উত্তরপুরুষ, তার উত্তরপুরুষ। এই পথচলা কতদুর যাবে ? একসময় কি কারো কারো মাথায় শিং গজাবে ? যা দিয়ে সমাজে কর্তৃত্ব করা যায়। কিংবা কারো শরীর তৈরী হবে গন্ডারের মত পুরু চামড়া যা দিয়ে যেন সবকিছু সহ্য করে চলা যায়।

না-কি কোনভাবে সেখানে পরিবর্তন আনা সম্ভব ? একজন পিতা কিংবা মাতা যখন মনে করবেন তিনি যেভাবে কাল কাটিয়েছেন সেটা গত, তার সন্তানের জন্য প্রয়োজন অন্য এক সমাজ। অন্যকে গুতো মারার জন্য তার শিং প্রয়োজন নেই, লাথি জোরালো করার জন্য পায়ে খুর প্রয়োজন নেই, থাবা মারার জন্য হাতে বাঘের নখ প্রয়োজন নেই, অন্যকে দমানোর জন্য বাঘের গর্জন প্রয়োজন নেই।

বিজ্ঞানীরা বলেন এই পরিবর্তন ঘটে খুব ধীরে। এত ধীরে যা দেখা যায় না। শত বছর, হাজার বছর তার কাছে তুচ্ছ। তবে সেটা ঘটে। সৃষ্টির শুরু থেকেই ঘটছে। বিবর্তনের পথ ধরেই দুভাগে ভাগ হয়ে যাচ্ছে সমাজ। একভাগ লম্বাই চওড়াই দুদিকেই ছাড়িয়ে যাচ্ছে সবকিছু, আরেক ভাগ সংকুচিত হচ্ছে। মাঝের বিভাজন রেখা স্পষ্ট হচ্ছে। সুইফট যে লিলিপুটের এবং দৈত্যের দেশের কথা শুনিয়ে গেছেন সেটাই হয়ত গন্তব্য।

আজ কাল পরশু

Jul 11, 2009

আজকাল খবরের কাগজে খবর থাকে না শুধুই বিজ্ঞাপন এটা কিনলে ওটা ফ্রি, বুকিং দিলেই টিভি ফ্রি, ভাড়ার টাকায় ফ্লাটের মালিক, বিনা টাকায় বিদেশ গমন এইসব আর খবরের পাতায় কোথায় কে খুন হল, কোথায় ভাঙচুর হল, কোন বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হল, গ্যাসের মজুদ আর কতদিন চলবে এইসব সেই পুরনো কেচ্ছা আর কাহিনী

গ্যাসের মজুদে চলবে আরো আড়াই বছর এটা কোন খবর হল ? যদি হত আড়াই দিন তাহলেও কথা ছিল কিছু তেল-কুকার কিনে ষ্টক করা যেত আড়াই বছর ষ্টক করে লাভে পোষায় না আর খবর ঠিক না বেঠিক সে নিশ্চয়তা দিচ্ছে কে ? একবার তো শুনলাম দেশ তেল-গ্যাসের ওপর ভাসছে মন্ত্রি-মিনিষ্টারদের হাসিমুখ দেখা গেল টিভিতে এতবড় তেলের খনি পৃথিবীর কোথাও নেই সৌদি তেলমন্ত্রী না কে যেন মুচকি হেসে বলেছিল আমাদের তেলের খনির আয়তন তো তোমাদের দেশের আয়তনের চেয়েও বড়

ধুর ওদের কথা শুনতে হয় নাকি খনির কথা শূনে চোখ টাটাচ্ছে এটা আমাদের উন্নতির সময় আমাদের যতটুকু প্রয়োজন সেটুকু রেখে বাকিটা বিক্রি করে দেব ভারত কেনার জন্য তৈরী বিক্রির টাকায় দেশের উন্নতি আমরা আর পিছিয়ে নেই আল্লা যারে দ্যায় তারে-

সাথেসাথে কিছু উটকো লোক এসে জুটল গ্যাস বিক্রি চলবে না, তেল বিক্রি চলবে না বাপরে, বিক্রি করতেই দিল না টাটা এসে হাজার কোটি টাকার কারখানা করতে চাইল সেটাও করতে দিল না কত হাজার লোকের চাকরি হত বেকার সমস্যা মিটে যেত অতগুলান নিশ্চিত ভোট আবারও ওই উটকো লোকগুলো হাজির এদের খেয়েদেয়ে আর কোন কাজ নেই পথে পথে ঘোরা আর সরকারের কাজে বাগড়া দেয়া জেলে পুরে রাখলে ঠিক হয় নয়ত ক্রশফায়ার

গ্যাসের মজুদ আড়াই বছর, মানে কি ? তারপর কি হবে ? গ্যাস থাকবে না ? চুলা বন্ধ ? বার্গার-পিজ্জা কি গ্যাসের চুলায় বানায় ? খোজ নিতে হয় আগে থেকেই ইতালি থেকে পিজ্জা আসতে কদিন লাগে ফেডেক্স ওরা তো ঘরে এনে দিয়ে যায়

কারেন্ট না থাকলে কারেন্টঅলারা তো ওই কথাই বলে গ্যাস নেই বলে জেনারেশন কম দিনে ছয়ঘন্টা-আটঘন্টা তেল পোড়াতে হয় তখন কি চব্বিশ ঘন্টাই পোড়াতে হবে ? সে তো ঝামেলা

আচ্ছা, গ্যাস না থাকলে কি পানিও থাকবে না ? ওয়াসাও তো এসব কথা বলে তাদের কোন দোষ নেই তারা বিদ্যুত পায়না বলে পানি দিতে পারে না

তাহলে বিষয়টা কি দাড়াল গ্যাস নেই বলে বিদ্যুত নেই বিদ্যুত নেই বলে পানি নেই বোতলের পানিতে কি সব কাজ চলবে ?

বুড়িগঙ্গার পানি নাকি শোধন করা যায় না তারও অর্ধেক ঘরবাড়ি হয়ে গেছে আর কদিন পর পুরোটাই হবে কোর্ট নাকি বলেছে দখলদারী মুক্ত করতে হবে কিন্তু করবে কে ? বণের খেয়ে কি বাড়ির মোষ তাড়ানো যায় ? নাকি মানায় ? এক মাঘে তো শীত যায় না ওরা হাতছাড়া হলে হাত নাড়লে সামনে এসে দাড়াবে কে ? সব বেদখল হয়ে যাবে যে আবার নতুন করে দখলদারী মুক্ত করা, সে বেশ ঝামেলা।

শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিদিন নদীতে মিশছে ৬০ হাজার কিউবিক মিটার বিষাক্ত বর্জ্য নগবীর প্রতিদিনের ৩ হাজার ২শ মেট্রিক টন বর্জ্যের ৫৬ শতাংশ যাচ্ছে নদীতে পত্রিকার রিপোর্ট

পরিবেশ দুষন করলে কারখানা বন্ধ করে দেয়া হবে প্রধানমন্ত্রী

অনেক ছোট ছোট কারখানা গড়ে উঠেছে নদীর ধারে এদের সরে যাবার উপায় নেই জমির অনেক দাম আর যা করার থাকে তা হল ওগুলো বন্ধ করে দেয়া বন্ধ করলে বহু মানুষ বেকার হবে এফবিসিসিআই সভাপতি

এসব নাকি খবর! মানুষ টাকা দিয়ে কাগজ কেনে কি এসব পড়ার জন্য ? কাগজআলাদের কোন কাজ নেই যা পায় তাই ছাপে কারখানা সরানো, ট্যানারী ঢাকার বাইরে নেয়া, যানজট কমানো এতো কয়েক যুগের কথা গ্রাফ করে দেখুন তো এসব কথা বলে কাজ কি হয়েছে এখন তো মানুষেই জট লাগে রীতিমত লাঠিপেটা করে সেই জট ছাড়াতে হয় যদি দিবাস্বপ্ন দেখতে পছন্দ করেন তাহলে দিবাস্বপ্ন দেখতে পারেন বর্তমানের স্বপ্ন, আগামীর স্বপ্ন যা পছন্দ তাই দেখতে পারেন

আর যদি বেরসিক হন তাহলে অন্য কথা তাহলে পরশুর স্বপ্ন হতে পারে এমন;

সকালে ঘুম থেকে উঠে চোখ ডলতে ডলতে বারান্দায় এসে দাড়ালেন

আরে, শহরটা তো খুব সুন্দর লাগছে রাস্তায় লোকজন নেই গাড়ি নেই হরতাল নাকি ? নাকি কারফিউ ? যাক, এতদিনে শহরটা পরিচ্ছন্ন হয়েছে কি যে সব উটকো লোক ভীড় করে থাকে সারাবছর কারফিউ থাকলে বেশ হয় সিংগাপুর সিংগাপুর মনে হয়

ওই বাড়িটা এমন নক্সা করল কবে ? কোন দেশের টাইলস ওটা ওই রহিম, ওই বাড়ির দেয়ালটা অমন করল কখন রে

রহিম সব খবর রাখে সে বলল, ঘুটা দিছে

ঘুটা মানে ?

ঘুটা মানে গোবর দেয়ালে শুকাইতে দিছে ওইডা দিয়া রান্না করব গ্যাস নাই, ত্যাল নাই, লাকড়ি নাই ঘুটা সম্বল

এইডা বুঝি নতুন টেকনিক এইকাম দেখাইতে পারলে ডলার দিব আমিও নাহয় লাগামুনে আগে জাইনা লই কত দিব পানি আন তো, খাই বোতলডা ঠিক ছিল না

পানি নাই

আরে ফ্রিজের বোতলের পানি ঠান্ডা দেইখা একগ্লাশ পানি আন

পানি নাই একটু আছে আমার লাগব

কি কইলি তোর এতবড় সাহস! আন কইতাছি

একটু পর বাড়ি যামু একটাই বোতল আছে বোতলডা নিয়া যামু রাস্তায় লাগব

রহিম- চাকরি নট-

আ মরো জ্বালা চাকরি করতাছে কেডা নিজে বাচলে বাপের নাম পানি দেওয়ার খেমতা আছে ? থাকলে তারপর কথা কন -

 

Browse