অলৌকিক কিছু চাই Waiting for miracle

Aug 30, 2009

প্রাচীনকালে এথেন্সের পথে একজন অদ্ভুত ব্যক্তিকে ঘুরতে দেখা যেত। সাথে একটা কুকুর। কুকুরের গলায় ঝুলানো জ্বলন্ত হারিকেন। লোকে জিজ্ঞেস করত, দিনের বেলা হারিকেন কেন ? তার উত্তর, আমি মানুষ খুজছি। কোন মানুষ আমার চোখে পড়ে না।

হারিকেন দিয়ে খোজা প্রবাদের শুরু হয়ত এখানেই। কিন্তু যিনি খুজছেন তার পরিচয় কি ? কোন সমাজে তিনি মানুষ খুজে পান না ? সক্রেটিস, প্লেটো, এরিষ্টটলের সমাজে মানুষ নেই এই দাবী কে করতে পারেন ?

তার নাম ডায়োজিনিস। এবং তারপক্ষেই সম্ভব এমন কথা বলা। তিনি কারো ধার ধারেন না। অমুক জিনিষ আমার প্রয়োজন একথা ভাবেন না। বরং একেবারে বিপরীতভাবে চিন্তা করেন। অমুক জিনিষ-, ওটা আমার না হলেও চলবে।

বিশ্বজয়ী আলেকজান্ডার, এরিষ্টলের ছাত্র তার কথা শুনে দেখতে গিয়েছিলেন তাকে। গরম কাপড়কেও অপ্রয়োজনীয় মনে করে শীতের সকালে রোদ পোয়াচ্ছিলেন তিনি। আলেকজান্ডার সামনে গিয়ে নিজের পরিচয় দিলেন, আমি আলেকজান্ডার। এই দেশের রাজা। বলুন আমি আপনার জন্য কি করতে পারি।

তিনি বিরক্ত হয়ে বললেন, আপনি আমার রোদ আড়াল করে দাড়িয়েছেন। ওখান থেকে সরে দাড়াতে পারেন।

এটাই তার দাবী। রোদ দেয়ার ক্ষমতা রাজার নেই, সেটা থেকে বঞ্চিত করার অধিকারও তার নেই। রাজার কাছে তিনি এটাই প্রত্যাসা করেন।

খুব বেশি চিন্তা না করেও অনুমান করা যায় বর্তমানে কি হতে পারত। চাহিদার তালিকার দিকে দৃষ্টি না দিয়ে এই ঔদ্ধত্বের ফল কি হতে পারত কল্পনা করা যায়। তার ক্ষেত্রে কিছুই হয়নি। রাজা তার বক্তব্য বুঝেছিলেন। তারপরও-

হ্যা, তারপরও তিনি সমাজে মানুষ দেখতে পেতেন না। মানুষ দেখার জন্য দিনের বেলা হারিকেন হাতে ঘুরতেন।

আজ থেকে দুশো বছরের বেশি আগে যখন ইংরেজরা এদেশ শাসন করত তখন তারা ব্যবসা, অর্থ উপার্জন, অত্যাচার ইত্যাদির পাশাপাশি কিছু ভাল কাজ করে গেছে। একটি জাতিকে দেখিয়েছে কিভাবে সমাজ চালাতে করতে হয়। পড়ালেখা করতে হয়, নিয়ম মানতে হয়। এজন্য ভাবতে হয়। পরিকল্পনা করতে হয়।

তাদের সেই পরিকল্পনার এক নমুনা ছিল প্রতিটি জেলায় মানুষের চরিত্র সম্পর্কে খোজ নেয়া। তারপর সেগুলিকে একসাথে করে সমাজ সম্পর্কে ধারনা পাওয়া।

একসাথে করার পর সমাজের যে চিত্র পাওয়া গেল তা ভয়াবহ। মানুষ অসৎ, ফাকিবাজ, প্রতিহিংসা পরায়ন, অকৃতজ্ঞ, লোভি, ঠকবাজ, হঠকারী, জাল-জালিয়াতিতে অভ্যস্থ, মিথ্যাবাদী, স্বার্থপর, ঘূষ নেয়া, আদালতে মিথ্যে সাক্ষি দেয়া, নিজের লাভের জন্য পরের ক্ষতি করা, পরের ক্ষতিতে আনন্দলাভ করা, পরের সম্পত্তি দখল করা, কাজে ফাকি দেয়া, মুখে কথার তুবড়ি ছুটানো এগুলি বিশেষনের বিশাল তালিকার অংশবিশেষ। পুরো তালিকা জানা হয়ত প্রয়োজন নেই। কারো নিতান্ত আগ্রহ থাকলে চার্লস গ্রান্টের সেই প্রামান্য দলিল দেখে নিতে পারেন।

বক্তব্য হচ্ছে দুশো বছর আগে সমাজের যে পরিচিতি পাওয়া গিয়েছিল তার থেকে বর্তমানের পরিবর্তন কতটা ? রিপোর্টের লক্ষনীয় বিষয় সেখানে কোন ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়নি। উল্লেখ করা হয়েছে চারিত্রিক বৈশিষ্টের কথা যা স্থায়ী। যা সহজে বদলানো যায় না। বদলাতে হলে যুগ যুগ ধরে সাধনা করতে হয়।

গ্রান্টের সেই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, এই সমাজে রামমোহন রায়ের মত ব্যক্তির উপস্থিতি অলৌকিক ঘটনা। ডায়োজিনিস যদি এযুগে বাস করতেন তিনি নিশ্চয়ই হারিকেন হাতে পথে পথে ঘুরতেন না। কারন তিনি বুঝে যেতেন হারিকেনের মলিন আলোয় মানুষ খুজে পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। সেজন্য অলৌকিক কিছু চাই।

ঝাড়া দিলেই টাকা Money Machine

Aug 24, 2009

ঝাড়া দিলেই টাকা কথাটার ব্যবহার ব্যাপক। সবচেয়ে বেশি প্রযোজ্য সম্ভবত মাটির ব্যাংকের ক্ষেত্রে। সেখানে ছোট্ট একটা ফুটো থাকে যা দিয়ে ঢুকাতে পারবেন, বের করবেন না। অর্থপ্রাপ্তির যখন আর কোন পথ থাকে না তখন নিয়ম ভেঙে সেই ছোট্ট ফুটো দিয়েই বের করতে হয়। কাজেই ঝাড়াঝাড়ি।

পকেট কিংবা মানিব্যাগ ঝাড়লে সেখান থেকে টাকা বেরয়, যদি থাকে। কারো কারো জন্য মানিব্যাগটা অনেক বড়। তাকে মানিব্যাগ না বলে মানি বস্তা বলাই যুক্তিসঙ্গত। ব্যাংকে টাকা রাখার ঝামেলা অনেক, লোকে জেনে যায়। আবার মাটির ব্যাংকঅলারা অতবড় ব্যাংক বানায় না। কাজেই নিজের প্রয়োজনে নিজেকেই সুবিধেমত ব্যাগ বানিয়ে নিতে হয়। বালিশ দিয়ে হোক আর জুতার বাক্স, কাগজের প্যাকেট বা অন্যকিছু দিয়েই হোক। তারপর যখন টাকা প্রয়োজন তখন ঝাড়াঝাড়ি।

ঝাড়া দেয়ার বিষয়টা অন্যক্ষেত্রেও লাগসই। যেমন ধরুন মিনিবাস। ভেতরে লোক ঢুকে খাচায় ঢোকানো মুরগির মত এটেসেটে রয়েছে। গেটে ঝুলছে। রাস্তায় তখনো শতখানেক। তখন একটু ঝাড়াঝাড়ি করুন। দেখা যাবে আরো ডজন খানেক ঢোকার মত যায়গা হয়ে গেছে। মুড়ির টিন কথাটাও মানানসই। টিনে যতই মুড়ি ঢুকান না কেন একটু ঝাকাঝাকি করলেই আরো কিছুটা যায়গা পাওয়া যায়।

সব ঝাড়াঝাড়ি আবার এক ধাপে সম্পন্ন হয় না। যেমন ধরুন ফুটপাত ঝাড়াঝাড়ি। আমি ঝাড়ুদারের কথা বলছি না, তাদের কাজ তারা একবারই করে (যদি করে থাকে)। একবার ঝাড়ু চালিয়ে এগোতে থাকবে। তার ফল কি হল তাতে কিছু যায় আসে না। বলছি যারা ফুটপাতের দখলদারি পরিস্কার করার জন্য ঝাড়ু চালান তাদের কথা। তারাও কখনো কখনো এই পদ্ধতেই কাজ করেন। একবার উঠিয়ে দিয়ে উঠাতে উঠাতে এগিয়ে যান। তাদের তার তারা করেছেন। আবার যদি দখল হয় তাহলে আবার করবেন। শতবার করতেও আপত্তি নেই। কারন-

কারন ঝাড়া দিলেই টাকা। ফুটপাতের দোকানীকে উঠাবেন ? সে হাতে টাকা ধরিয়ে দেয়। গাড়ি রাখায় কেস করবেন। সেও টাকা ধরিয়ে দেয়। ভিক্ষুককে উঠাবেন, সেও টাকা বাড়িয়ে দেয়। যত ঝাড়া তত টাকা।

এটা স্বাভাবিক একস্তর ঝাড়াঝাড়ি। বহুস্কর বিশিষ্ট ঝাড়াঝাড়ি অনেক পরিকল্পিত। যেমনটা দেখিয়ে গেছেন ইউ আহমেদগন। আপনার বাড়ি রাস্তার দখল করেছে, ভেঙে দেয়া হবে। আপনার বাড়িতে গ্যারেজ নেই, নিচতলা ভেঙে দেয়া হবে । আপনার গাড়ি আছে কি-না তাতে কিছু যায় আসে না, কিংবা থাকলে গাড়ি রাস্তায় রাখুন তাতেও আপত্তি নেই। বাড়ির নিচতলায় যায়গা খালি রেখে সেখানে গ্যারেজ লেখা থাকতে হবে।

শুরু হল এই স্তরে। তারপর ধাপে ধাপে ভাগ হল কাজ। ভাঙাভাঙি, ঝাড়াঝাড়ি।

সবসময় জরুরী আইন দেখানো যায় না। তখন স্বাভাবিক আইনেই কাজ করতে হয়। যেমন ধরুন, সব অনিয়মের হিসেব নেয়া। স্বাধীনতার পর রাজুক যত দুর্নীতি করেছে তার সব হিসেব দুমাসে জমা দিতে হবে সংসদিয় কমিটির কাছে। এটা সবচেয়ে উচু স্তরের ঝাড়াঝাড়ি। প্রায় ৪০ বছরের দুর্নীতির হিসেব কার কাছে জমা আছে সে প্রশ্ন করবেন না। লোকে বলে এদেশে সরকারী চাকরীর মেয়াদ নাকি এই সময়ের চেয়ে কম। হবেও বা। যারা ৩০ বছর আগে চাকরী ছেড়েছে তাদেরও হিসেব দিতে হবে। যারা মারা গেছে তারাও বাদ যাবে না।

পরিস্কারের জন্য ঝাড়াঝাড়ি করতেই হয়। তার ফলে যদি সেখান থেকে কিছু বেরয় সেটা অতিরিক্ত লাভ।

লিংকনের ভুল তত্ত্ব Theory of Democracy

Aug 19, 2009

লিংকন বলেছিলেন সরকার হবে জনগনের মতের ভিত্তিতে, জনগনের মধ্য থেকে, এবং জনগনের জন্য। গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে একথা শোনেনি এমন মানুষ খুজে পাওয়া সম্ভব কিনা জানা নেই। একেবারে মুর্খোও ইংরেজিতে উগড়ে দিতে পারে এই বক্তব্য। টক-শো আর কিছু না পারুক একাজ করতে পেরেছে। দেশে আপামর (মানে কি জানি না) জনগনকে বিশ্লেষক, বিশেষজ্ঞ, নীতিনির্ধারক বানিয়ে ছেড়েছে। সবাই জানেন কি করা প্রয়োজন, কিভাবে দেশের উন্নতি, কিভাবে জনগনের ভাগ্য পরিবর্তন, কিভাবে উর্থনৈতিক অগ্রগতি এসব হওয়া সম্ভব। অনেক আগে বাংলাদেশ দরীদ্র থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হয়েছে। এমার্জিং টাইগার হিসেবে হুংকার ছাড়ছে। কিছুদিন পরই পরিনত হবে হবে মধ্যম আয়ের দেশে। তারপর ধনী দেশে।

আর সবকিছুর ভিত্তি হল ওই লিংকন। অন্তত নির্বাচনের সময় তো বটেই। তখনই তো বলতে হয় কাকে জেতাতে হবে, কাকে জেলে ঢোকাতে হবে।

বুশ-বেলয়ার যখন ইরাক দখল করেন তখন বহু কথা উঠেছিল। মানুষ শুনেছে প্যানডোরার বাক্স নামে একটা বাক্সের কথা। সেটা নাকি খোলা হবে। বুশ-ব্লেয়ার সাহেব খুব সুন্দরভাবেই ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। সাদ্দাম না থাকলে বিশ্ব নিরাপদ থাকবে। পরবর্তীকালে বেলয়ার সাহেব যখন ইরাকে কোন মারনাস্ত্র পেলেন না, সব তথ্যই বিপক্ষে গেল তখনও সত্যি কথাই বললেন, তাদের উদ্দেশ্য মহত ছিল। ফলটা পছন্দমত হয়নি এই আরকি-

লিংকন সাহেবেরর উদ্দেশ্য মহত ছিল। সেইসাথে আরেকটি বিষয় ছিল যা বুশ-ব্লেয়ারের ছিল না। তার ফলটাও ভাল ছিল। সার্থকভাবে দেশের গৃহযুদ্ধ থামিয়েছিলেন তিনি। কাজেই তার কথাই ঠিক। দেশে দেশে যুগ যুগ ধরে সেটা প্রচার করতে হবে। স্কুলের পাঠ্যবইতে পড়াতে হবে। জনগন জানবে তাদের সরকার কেমন হওয়া উচিত, কারজন্য হওয়া উচিত, কার হওয়া উচিত।

দেশে দেশে যুগে যুগে সত্য-

খটকা সেখানেই। বাঘের মত গতিমান এই দেশে কি লিংকনের কথা খাটে ?

জনগন ঠিক করবে সরকারে কে যাবে। কোন সে জনগন ? দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা লাভের পর তারা তো অন্তত চারবার সরকার ঠিক করেছে। রীতিমত উৎসব করে ভোট দিয়ে ঠিক করেছে। সেই একই চেনা মুখ বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে। জনগনের সরকার কি প্রতিষ্ঠা হয়েছে ? যদি না হয় তাহলে সমস্যা কোথায় ? লিংকনের তত্ত্বে ?

সম্ভবত তাই। লিংকন তার সময়ে যেকথা বলে জনগনকে সচেতন করেছিলেন তা সেই সময়ে, সেই সমাজে ঠিক ছিল। তাদের দেশে নাকি জনগন একবার নিজেরাই সরকারকে বলেছিল তেলের দাম বাড়াতে। তাতে জনগনের সমস্যা হলেও দেশের জন্য প্রয়োজন। তারা নিশ্চয়ই বলে না এসব রাস্তাঘাট তৈরীর নামে অপচয় না করে টাকাগুলো গরীবদের দিন। ওরা খেয়ে বাচুক। নিজে বাচলে বাপের নাম। তারা নিশ্চয়ই নেতার নামে দুর্নাম শোনার পর তাকে কাধে তুলে সরকারে পাঠায় না। বরং উল্টোটাই করে। নিজে চুরি করলে দোষ নেই, নেতা চোর হবে কেন ? চুরি তো দুরের কথা, মিথ্যে বলবে কেন ? যে নেতা মিথ্যে বলেছে আমরা সেই নেতার পেছনে দাড়াব কেন ?

লিংকন তার দেশের জন্য ওই উক্তি করেছিলেন বলেই ধারনা। অন্য দেশে একই নীতি খাটবে এটা ধরে নেয়ার যুক্তিসংগত কারন নেই।

একা এবং একসাথে Die together live alone

Aug 18, 2009

হলিউডের মারদাঙ্গা ছবিতে বিপদজনক ভুমিকায় নায়কের মুখে একটা কথা প্রায়ই শোনা যায়, লিভ টুগেদার, ডাই এলোন যদি বাচি সবাই বাচব, যদি মরতে হয় একা মরব অন্যদের বাচানোর জন্য যা করা সম্ভব করব নয়ত নিজের জীবন দিয়ে অন্যদের বাচাব।

সাধারনত এই সংলাপের পর নায়ক মারা যায় না, সবাই মিলেই বাচে বাংলাদেশেও বচনের অভাব নেই দশে মিলি করি কাজ-

কিন্তু কথার কতরকম অর্থই না হয় ধর্মে বলেছে তোমরা দ্রুত ইফতার কর কাজেই যতরকম খাবার পাওয়া যায় সব হাতের কাছে এনে রাখবেন যাকিছু কাজ সব বাদ দিয়ে সেগুলি সামনে নিয়ে বসবেন আর সময় হওয়ার সাথেসাথেই খাওয়া শুরু করবেন যতক্ষন পেট সায় দেয় এটাই তো ধর্মের কথা অন্য ব্যাখ্যা খুজে লাভ কি কে যেন বলেছে দ্রুত ইফতার কর কথার অর্থ তোমরা দ্রুত ইফতার শেষ করে নামাজ পড়তে যাও এই নামাজের সময় সবচেয়ে কম সুর্য ডোবা থেকে শুরু করে আকাশ থেকে লাল রং মুছে যাওয়ার আগ পর্যন্ত

ওসব বাজে ব্যাখ্যা আগেরটাতেই মজা কথার গড়মিল তো হচ্ছে না যা বলা হয়েছে অক্ষরে অক্ষরে পালন নামাজ পড়লাম না, রোজাও করলাম না, এখন ইফতার না করে বিধর্মী হব নাকি ?

বিষয়টা হচ্ছে একা না একসাথে। ইউরোপ আমেরিকায় অপরাধ কম নেই। অনেক ক্ষেত্রেই বেশি। তারাও দল ধরে গুন্ডামি করে, ডাকাতি করে। তবে দল ধরে দুনীতি করার নজির বোধহয় নেই। একাজটি করার সময় অন্যদের চোখের আড়ালেই করে। জানে ধরার পড়লে কি হবে। বরং অন্য কাইকে জানানো অর্থ ধরা পড়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলা। কোন কোন আহাম্মুক নাকি নিজের জীবনের চেয়ে আদর্শ বড় করে দেখে।

কাজেই, যা করার করতে হবে সকলের অগোচরে। অন্যদের না জানিয়ে। সকলের ওপর টেক্কা দিয়ে। বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের ঘটনা যখন ধরা পরে তখন দেখা যায় তার পিছনে কাজ করেছে একটাই মাথা। তখন সবাই উঠেপড়ে লাগে কিভাবে সেটা বন্ধ করা যায়। কারো যদি অন্যকে সন্দেহ হয় সে দুর্নীতি করেছে বা করতে পারে, কিংবা কাজে ফাকি দিচ্ছে, কিংবা যে পদ দখল করে রেখেছে সেই কাজে সে শতভাগ উপযোগি না তাহলে সে অন্যদের জানাতে পারে।

এই জানানোর মধ্যে ঝুকি আছে সেটা সকলেরই জানা। একজন অফিসার সরকারের কথামত দশ ট্রাক মামলা খালাস করে কারন তিনি সরকারের চাকর। সরকারের কথা না শুনলে বিপদ হয়। তখন এক সরকারের কথামত কাজ করেছেন এখন আরেক সরকারের কথামত কথা করছেন এমন কথা তুলবেন না। যদি তেমন পরিস্থিতি হয় তখন দেখা যাবে। সময়ের কথা অসময়ে ফাস করতে হয় না।

ইউরোপ আমেরিকার লোকজন কোন ঝুকিতে যেতে চায় না। কাজেই,

যদি কারো সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে তাহলে প্রথম কর্তব্য উপরের কাউকে জানানো।

যদি তাতে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে তাহলে নির্দিষ্ট একটা নাম্বারে ফোন করুন। এই ফোন নাম্বারের সাথে সেই ব্যক্তির বা অফিসের কোন সম্পর্ক নেই। সেখানেই জানান আপনার মনের দুঃখ।

যদি তাতেও আপত্তি থাকে তাহলে আরেক নাম্বারে ফোন করুন। সেখানে কেউ আপনার পরিচয় জিজ্ঞেস করবে না। কেউ জানতেও পাবে না কে জানিয়েছে। আপনার কথা যায়গামত পৌছুবে। যে সমস্যা তুলে ধরেছেন তার সমাধান হবে।

যারা সমাজ নিয়ে গবেষনা করেন তারা নাকি বলছেন কোন কোন দেশ যে দুনীতির তালিকায় একেবারে শেষে থাকে তার কারন এটাই। সুইডেনে নাকি দুশো বছর ধরে নিয়ম চালু রয়েছে যে কেউ গিয়ে প্রশ্ন করতে পারেন অমুক মন্ত্রী বছরে কত টাকা আয় করেছেন। সেটা জানা নাকি তার অধিকার।

বাপরে! এসব মানলে কি দেশ চলে। রাজনীতি করা যায়। নেতার বিরুদ্ধে মামলা মানে তো হয়রানীমুলক, উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা। ওসব দেখলে কি চলে নাকি ?

তারচেয়ে ভাল মিলেমিশে থাকা। উন্নয়ন খাতে বহু হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ আছে, টেন্ডার ভাগাভাগি করে সেগুলো বুঝে নিন। আমার ভাগটা যেন ঠিক থাকে। আপনার বিপদে আমি, আমার বিপদে আপনি।

বাচলে একা মরলে একসাথে।

পরিবর্তন Winds of change

Aug 17, 2009

পদার্থবিদ্যায় বলে, বল প্রয়োগে যদি বস্তুর সরন হয় তবে তাহাকে কাজ বলে অর্থাৎ শুধুমাত্র বল প্রয়োগ করাতে নয়, বস্তুকে সরানোতে কাজের পরিচয় আপনি সারাদিন দেয়াল ঠেলবেন, একচুলও নড়াতে পারবেন না আর বাহাদুরী করে বলবেন কত পরিশ্রমের কাজ করলেন সেপথ নিউটনরা বন্ধ করে গেছেন আপনি নিউটনকে ছাড়িয়ে নতুন তত্ত্ব তৈরী করলে অন্য কথা নয়ত তাদের নিয়ম মেনে নিতে হয় সবাই তাই করছে

তবে, ব্যতিক্রম বলে কথা আছে। সবাই সেটা পছন্দ করে। পত্রিকায় ছবি বেরিয়েছে কে নাকি উল্টোদিকে গাড়ি চালিয়ে বিখ্যাত হয়েছে। পথেঘাটে তাকালে হরহামেশাই চোখে পড়বে ব্যাতিক্রম। পোষাকে, চুলের ষ্টাইলে, হাটার ষ্টাইলে, আচরনে, কথাবার্তায় সবকিছুতেই। এটা প্রাথমিক ধাপ। সবাই চায় অন্যরা তার দিকে ফিরে ফিরে দেখুক। বলাবলি করুক অমুকে কি ষ্টাইলডাই না করছে। মাশাল্লা।

কেউ যদি তাকিয়েই না দেখল তাহলে এই সুন্দর দেহখানা, সুন্দর পোষাক, বাহারী অলংকার এসবের কোন অর্থ থাকে ? একজন বললেন যদি হাতে হাটা সম্ভব হত তাহলে দেখা যেত অনেকে সে চেষ্টায় বিখ্যাত হওয়ার পথে রওনা দিয়েছে। তাকে জানাতে হল ওকাজ আগেই একজন করে গেছেন। গিনেস বুকে ছবি সহ তারকথা ছাপা হয়েছে। আরেকজন বললেন অচিরেই নাকি দেখা যাবে এই ব্যতিক্রমের পথ ধরে তরুন-তরুনী জামাকাপড় ছাড়াই পথে হেটে বেড়াচ্ছে। কোন কোন কাজের জন্য ঘর প্রয়োজন হয় সেটাও মানছে না। তাকেও বলতে হল একাজও বহুদেশে হয়ে গেছে। ইংল্যান্ড জেতার পর নাকি কয়েকশ মানুষ আনন্দে জামাকাপড় খুলে মিছিল বের করেছিল লন্ডনের রাজপথে। এখানেও হতেই পারে। পরিবর্তনের ধারা সেদিকই নির্দেশ করে। আর এই পরিবর্তন নিউটনের সুত্রের বিরোধিতাও করে না। সমস্যা একটাই, একেবারে নতুন বলে স্বিকৃতি পাওয়া যাবে না। অমুককে অনুসরন করছে বলে কথা উঠবে।

একেবারে নতুন কিছু করার পথও রয়েছে।

বেশ কিছুদিন ধরে নতুন শব্দটা শোনা যাচ্ছে। গুনগত পরিবর্তন। সবাই এটা চান। শব্দটার আমদানী কোথা থেকে জানা নেই। মার্কসবাদীরা এধরনের একটা শব্দ ব্যবহার করেন, নিশ্চয়ই সেখান থেকে না। কারন তারা শ্পষ্ট করে বলে দিয়েছে গুনগত পরিবর্তন পরিমানগত পরিবর্তনের পরবর্তী ধাপ। এক ধাপ বাদ দিয়ে পরের ধাপে যাওয়া যায় না। তাদের বক্তব্য যদি শোনা যায় তাহলে সেটা হয়ত হবে এমন,

সরকারে গুনগত পরিবর্তন চান ? আগে পরিমানগত পরিবর্তনে নজর দিন। ৩০০ সাংসদের মধ্যে ভাল, যোগ্য কজন ? শতকরা দশ ? আগে সেটা বাড়ান। ১০ থেকে ২০, ২০ থেকে ৪০ এভাবে বাড়াতে থাকুন। যখন সংখ্যা অর্ধেকের ওপর যাবে জানবেন তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হল। একটা ধাপ এগিয়ে গেল। তখন গুনগত পরিবর্তন আশা করতে পারেন কারন তারা যা বলবেন অন্যরা সেটা শুনতে বাধ্য থাকবে। সে পথে না গিয়ে গুনগত পরিবর্তনের কথা বলবেন না।

তবে আশার কথা হচ্ছে, আজকাল মার্কসবাদী বলে কিছু নেই। মস্কোপন্থি, পিকিং পন্থি বলে কিছু নেই। সবাই জানে ওই দুদেশের অবস্থা। তারা আর কারো হাতে টাকা তুলে দেয় না।

কাজেই সেপথ ভুলে যান।

তারপরও গুনগত পরিবর্তন ঘটাতে হবে। সারা বিশ্বকে দেখানো হবে আমরা পরিবর্তন করতে পারি। একেবারে আমাদের নিজস্ব সুত্র মেনে। নতুন পথে।

কে - After Hasina and Khaleda

Aug 16, 2009

এক ওস্তাদ শিল্পী উচ্চাঙ্গ সঙ্গিত পরিবেশন করছিলেন তিনি লক্ষ্যও করলেন না শ্রোতাদের সবাই একে একে কেটে পড়েছে যখন গান শেষ হল দেখা গেল একজন বসে রয়েছে সামনে মুগ্ধ শ্রোতা বটে তিনি খুশি হয়ে বললেন, তোমার ভক্তি দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি

সে বলল, তাড়াতাড়ি গান শেষ করেন ওঠেন আমি চাদরটা নিয়ে বাড়ি যাব

বাংলা ভাষায় এমন কালজয়ী গল্পের অভাব নেই একে গল্প বলা যায় কি ?

আপনি অনায়াসে স্থান-কাল-পাত্র বদলে দিয়ে অন্যখানে ব্যবহার করতে পারেন বিশাল জনসভা হচ্ছে লোকে লোকারন্য বক্তার কথায় কথায় হাততালি শ্রোতারা একজনও সভা ছেড়ে নড়ে না এমনকি সবাই বক্তব্য শেষ করে চলে গেল, সভা শেষ হল তখনও না কারন কি-

যে তাদের এনেছে তার দেখা নেই তাদের পাওনা এখনো বুঝিয়ে দেয়া হয়নি ওস্তাদ কি গান করলেন তাতে কিছু যায় আসে না, এখনো চাদরটা হাতে আসেনি

এই উদাহরন থেকে যদি ভেবে থাকেন সবাই হাত পেতে বসে থাকে তাহলে ভুল বুঝবেন লাভের হিসেব হরেকরকম হয় আরেকটা গল্প শুনুন তাহলে

বিশাল একটা প্রাসাদ তৈরী হচ্ছে শ্রমিকরা কাজ করছে মাথায় করে ইট-পাথর বয়ে আনছে একজন জিজ্ঞেস করা হল, কি করছ ?

সে বিরক্ত হয়ে বলল, দ্যাহেন না মাথায় কইরা ইট নিয়া যাই

একই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হল আরেকজনকে তার উত্তর, পরিবারের ভরনপোষনের ব্যবস্থা করি

প্রশ্ন করা হল আরো একজনকে তার উত্তর, বিল্ডিং বানাই

প্রশ্ন এক, উত্তর আলাদা উদ্দেশ্য এক, ভঙ্গি আলাদা

বিশেষ কোন দিবস এগিয়ে আসছে হৈ হৈ কান্ড রৈ রৈ ব্যাপার রাস্তা জুড়ে বিশাল বিশাল তোরন ডানে-বামে-উপর-নিচে সবদিকে শতশত ব্যানার, দেয়ালে দেয়ালে নকশা সাথে কীর্তিমানদের নাম সৌজন্যে অমুক, প্রচারে তমুক, সহযোগিতা সমুক ব্যক্তির নাম, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম, জোটের নাম, সংগঠনের নাম, সমিতির নাম, কমিটির নাম যাকিছু মাথায় আসে সাথে নিজের নাম নিজের নাম হারিয়ে যেতে দেয়া যায় না নামেই পরিচয় একটু একটু করে নাম পৌছে দিতে হয় সকলের কাছে

এরা সেই মুহুর্তে প্রতিদান আশা করেন না তবে কোন এক সময় করেন কেউ কয়েক মাস পর, কেউ কয়েক বছর পর নেত্রীর নাম মুখে আনার আগে বিশেষন ব্যবহার করতে করতে মুখে ফেনা উঠিয়ে ফেলেন তাদের এই ভক্তির কারন অজ্ঞাত নেই এদের মাথায় তুলে রেখে নিজেদের লাভের হিসেব মেটানো যায় তাদের কাধে বন্দুক রেখে অনায়াসে শিকার করা যায় যতক্ষন সেটা করা যায় ততক্ষন তোষামুদি করতে, লেজ নাড়তে ক্ষতি নেই নিজের টাকা খরচ করতেও আপত্তি নেই সময়ে কড়ায় গন্ডায় আদায় করে নেয়া যাবে। ব্যতিক্রম তখনই হয় যখন সেই আশায় ব্যাঘাত ঘটে, কিংবা ঘটার সম্ভাবনা দেখা দেয় নির্বাচনের নমিনেশন না পেলে তার প্রকাশ্য নমুনা দেখা যায় বিন্দুমাত্র কালক্ষেপন না করে সাথেসাথে সমর্থকদের মাঠে নামিয়ে দেন অমুককে নমিনেশন দিতে হবে

তখন সেই ভক্তি কাজ করে না তারচেয়েও নির্লজ্জ পরিচয় দেখা গেছে জরুরী আইনের সময় দুই নেত্রীর ভবিষ্যত অনিশ্চিত জানার সাথেসাথে তাদের সেই চেহারা প্রকাশ পেয়েছে তাদেরকে কাধ থেকে নামাতে পারলে তারা যেন স্বর্গ হাতে পান প্রতিদিন নতুন নতুন তত্ত্ব নিয়ে হাজির হলেন তারা এই দুজন দেশের শত্রু, গনতন্ত্রের শত্রু এদের জন্য দেশে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়নি পার্টির ভেতর গনতন্ত্র নেই। সব ক্ষমতা নিজেদের হাতে রেখেছেন আমরা বলে দিচ্ছি কোন পন্থায় তাদের সরাতে হবে শাসন ব্যবস্থা কি হবে ফর্মূলা বাতলে দিচ্ছি

সময় বলে দেয় সেই হিসেবে ভূল ছিল

যদি এমন হত যে দুই প্রধান দলের দুই নেত্রি বিষয়টি বোঝেন না তাহলে তাদের অর্বাচিন বলাই যুক্তিযুক্ত ছিল তারা তা নন তারা বুদ্ধিমান এবং বাস্তববাদী তারা জানেন মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্তই যে যাই করুন, তাদের সরিয়ে সেই যায়গায় অন্য কাউকে আনার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা নেই তাদের নামই সবকিছু তাদের পরিচয়ই দলের পরিচয় উত্তরসুরী নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই অন্তত এখন পর্যন্ত।

ভয়টা এখানেই সময় থেমে থাকে না একসময় কিউবার মানুষ মনেপ্রানে বিশ্বাস করত তাদের নেতা চিরদিনই তাদের নেতা থাকবেন হাজার বছর নেতৃত্ব দেবেন সেটা হয়নি জীবিত থাকতেই সরে যেতে হয়েছে ক্যাষ্ট্রোকে আরেক ক্যাষ্ট্রো কতদিন নেতৃত্ব দিতে পারবেন সে প্রশ্ন এখনই করা হচ্ছে কারন এটা নিশ্চিত তিনি বড় ভাইয়ের মত এত দীর্ঘ সময় হাতে পাবেন না একেবারে প্রাকৃতিক নিয়মে

তাদের শক্তিশালি পার্টি রয়েছে একেবারে নিচ থেকে ধাপে ধাপে ওপরে উঠতে হয় কোন ব্যতিক্রম হয় না যে যত ওপরে ওঠে তার ক্ষমতা তত বেশি তারপরও সাধারনের মনে প্রশ্ন, বিশ্বের মানুষের কাছে প্রশ্ন রাউলের পর কে ?

তা নিয়ে নিশ্চয়ই আপনার মাথাব্যথা নেই তবে আপনার ভাগ্য যখন জড়িত তখন এ প্রশ্ন করা যেতেই পারে, দুই নেত্রীর পর কে ?

বাড়িঅলা সমাচার - Lord of the Houses

Aug 13, 2009

লোকে বলে পুলিশের বাড়ির কুকুরও পুলিশমনেহয় কথাটি অন্তত ঢাকার বাড়িঅলার বাড়ির লোকজন সম্পর্কেও প্রযোজ্যবাড়ির কাজের লোক, দারোয়ান, ড্রাইভার ইত্যাদিভাড়াটেদের থাকার যায়গা নেই দেখে তারা দয়া করে আশ্রয় দিয়েছেনআর কেউ যদি পরিবারের সদস্য হন তাহলেতো কথাই নেইএকবার দেখলাম রাস্তার ধারে দুজন যুবক একজন তরুনীর দিকে অশ্লীল মন্তব্য করলসেটা ভাষায় প্রকাশ করা আমার সাধ্যাতীতপরবর্তী কথাটি বাড়িঅলা সম্পর্কিত বলে জানাচ্ছিএকজন বলল, ‘আমাগো পছন্দ হয় নাআমরা বাড়িঅলার পোলাযুবরাজ চার্লসও এভাবে নিজের পরিচিতি প্রকাশ করবেন বলে আমার মনে হয় না

ঢাকা শহরের বাড়িঅলা মানে তারা বাড়ি ভাড়া দেনযাদের নিজের বাড়ি নেই তাদের আশ্রয় দেননা দিলে কি হত বলা অর্থহীনঢাকা শহরের কোটির ওপর মানুষ হয় ফুটপাতে ঘুমাত, নয় গ্রামে গিয়ে হাল ঠেলততারা যেন সেটা না করেন সেজন্যই এরা সচেষ্ঠবাড়িতে বিদেশী ফিটিংশ লাগান, মেঝেয় সিরামিক টাইলস বসান, তারপর সেটা ভাড়া দিয়ে নিজে অর্ধেক ভাড়ার বাসায় থাকেন

ভাড়া দেন কত টাকায় ? কে নেয় ?

একেবারেই বোকার মত প্রশ্নভাড়া দেন ভাড়াটিয়ার যত দেয়ার সামর্থ্য আছে তত টাকায়আর ভাড়া নেন যার বাড়ির মালিক হওয়ার যোগ্যতা আছেখোলাসা করে বললে, যার বেতন মাসে দশ হাজার টাকা তিনি পনের হাজার টাকা ভাড়ায় থাকেনবাকি টাকা কোথায় পান জিজ্ঞেস করবেন নাআর বাড়িঅলা সেই টাকা কি করেন, আয়কর দেন কিনা সে প্রশ্ন বাতুলতাএটুকু বলতে পারি, যারা ট্যাক্স আদায় করেন, নীতিনির্ধারন করেন তারা ভাড়াটিয়া নন, বাড়িঅলা

শুনেছি সরকারের একটি মন্ত্রনালয় রয়েছে ঘরবাড়ি বিষয়েঢাকা শহরের জন্য রাজুক নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছেতাদের কাজ কি আমি জানি নাআমার মনে হয় কোন বাড়ি ঠিকভাবে তৈরী হয়েছে কিনা, তৈরী বাড়ি বসবাসের উপযুক্ত কিনা, যাকিছু সুযোগ সুবিধা থাকার কথা তা রয়েছে কিনা, ভাড়া যুক্তিসংগত কিনা এগুলি দেখা তাদের দায়িত্বনাকি আমারই ভূলসম্ভবত ভাড়ার বিষয়টি তাদের এক্তিয়ারে নেইঅন্য অনেক দেশে সেটা করা হয় বলে শুনেছি, কিন্তু থাক অন্য দেশের কথাএখানে সরকারের বোধহয় এতসব দেখার মত তত লোক নেইঅন্যান্য সব যায়গায় যেমনটা দেখা যায়দেশে যেমন যত পুলিশ থাকা প্রয়োজন তত পুলিশ নেই, রাজুকের কাজের জন্য যত লোক প্রয়োজন তত লোক নেই, সিটি কর্পোরেশনে যত লোক থাকা প্রয়োজন নেই, ইত্যাদি ইত্যাদিএকাজের লোক বোধহয় একেবারেই নেইমাঝে মাঝে ভাবি সত্যিই এদেশে মানুষ কোথায় ? এতবড় একটা দেশে চৌদ্দ কি পনের কোটি, এটা একটা সংখ্যা হল ? এত অল্প মানুষ দেশ চালায় কিভাবে? আমেরিকার মত হতে হলে লোকসংখ্যা ডাবল করতে হবে আগেসময় থাকতে বাইরে থেকে কিছু আমদানী করলে হত

বলছিলাম বাড়িঅলার কথাতারা বাড়িঅলাইআপনি ভাড়া দিয়ে ভাড়াটিয়া হতে পারেন, বাড়ির কর্তৃত্ব তাদেরই হাতেতাদের কথামতই আপনাকে চলতে হবেআপনি কটায় বাড়িতে ঢুকবেন, বাড়িতে কতজন অতিথি আনতে পারবেন, কতটুকু পানি-বিদ্যুত ব্যবহার করতে পারবেন সেগুলি বাড়িঅলা নিয়ন্ত্রন করবেনআপনি মনে করতে পারেন পানি-বিদ্যুতের বিল আপনি দেন, সত্যিকারের যা বিল তারচেয়ে উপরি কিছু বেশিই দেন, সেকথা মুখে না বলে মনে মনে বলাই ভালন্তত আরেক যায়গায় আরেকটা বাড়ি ঠিক না করেএটাও ভুলে গেলে চলবে না, সব বাড়িঅলাই বাড়িঅলা

একদিন একজনের খেদ শুনতে হল এবিষয়েতিনি থাকেন ছয়তলার পাঁচতলায়পুরো বিল্ডিংএ মোট বিশটি পরিবার থাকে (নিচতলার অর্ধেক বাদ দিয়েসেখানে বাড়িঅলার এবং তার আত্মিয়স্বজনের গাড়ি থাকেকিছুটা গ্যারেজ হিসেবে ভাড়াও দেয়া হয়)তিনি বলছিলেন তার দুঃখের কথাতার ঠিক সামনের বাড়িতে যে ভাড়াটিয়া থাকেন তার কথাসেখানে যে ভদ্রমহিলা থাকেন তার কথা (অবশ্য তার কথা শুনে তাকে ভদ্র বলা যায় কিনা সেকথাও একবার মনে হয়েছে)

তার বাড়িতে দরজার সামনে ময়লা রাখা ছিলময়লা নেয়া লোকের এসে নিয়ে যাবার কথাএজন্য মাসে মাসে টাকা দিতে হয়

ভদ্রহিলার আপত্তি সেখানেইদরজার সামনে ময়লা কেন ? তিনি কি জানেন না সামনের বাড়িতে কে থাকেন ? এক্ষুনি সরান ওগুলোভদ্র বাড়িতে থাকেননি কখনো ?

তিনি তাকে বুঝাতে চেষ্টা করলেনবললেন এই ময়লা নিয়ে যাওয়ার জন্য মাসে মাসে টাকা গুনতে হয়, বাড়িঅলা সিড়ি পরিস্কার করার জন্য মাসে পাঁচশ টাকা নেয়, দারোয়ানের জন্য নেয় পাঁচশ টাকাএক পরিবার থেকে একহাজার হলে বিশ পরিবার থেকে মাসে বিশ হাজারতারপরও ময়লা জমে থাকলে আমি কি করতে পারি ? এ টাকায় কি ময়লা পরিস্কারের লোক পাওয়া যায় না ? কত হলে পাওয়া যায় ?

উত্তরে সেই মহিলা লাথি মেরে ময়লাকে তার দরজা দিয়ে ঘরে ঢুকিয়ে দিলেনতক্ষুনি আবির্ভাব হল বাড়িঅলার

আপনে কত এ্যাডভান্স দিছেন ? তিন মাসের ? তারপর একবছরের এ্যাডভান্স দেয়ার লগে লাগতে যান ? সামনের মাস থ্যিকা দুইহাজার বাড়ায়া দিবেননা পারলে রাস্তা মাপেনবহুত লোক ঘুরতাছে

এটাই বাস্ততাতিনি দয়া করে আপনাকে আশ্রয় দিয়েছেনযদি সেটা মেনে নিতে না পারেন তাহলে রাস্তা মাপুনতিনি রাস্তা মাপছিলেন বলেই আমার সাথে দেখা এবং এসব আলাপ

তিনি বললেন, এটা পরপর তিনবারএর আগেরবার এক ভাড়াটিয়া এসে বাড়িঅলাকে বলেছে উঠিয়ে দেনএকলাখ এডভ্যান্স আর মাসে পাঁচ হাজার বেশি দেবেতার আগেরজন বলেছে-

মনে পড়ল একটা গল্প পড়েছিলামসম্ভবত পাকিস্তানের কোন লেখকের লেখা উর্দু গল্পসংক্ষেপে বক্তব্য বলছি, লেখক যে বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন তার মালিকের এত বিষয়ে আপত্তি যে তিনি মাসে একদিন এসে ভাড়া দিয়ে যান আর রাস্তায় দাঁড়িয়ে বাড়িটা দেখে ফেরত চলে যানভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন না

সত্যিই কালজয়ী গল্পআমার মনে হল এই ভদ্রলোকও সেই পরিস্থিতিতেই পরেছেন

তিনি বললেন, ‘ঠিক করেছি ফুটপাতেই ঘুমাবদেখুন কত হাজার হাজার মানুষ ঘুমায়ওরাও তো মানুষওরা কত ভাড়া দেয় জানেন? বিনা ভাড়ায় থাকতে পারে বলে মনে হয় নারাস্তায় বসে যে ভিক্ষে করে সেও নাকি ভাড়া দেয় সেখানে বসার জন্যসমস্যা একটাইপাবলিক টয়লেট বলে কিছু নেইওগুলো নোংরা জিনিষ বলে কেউ চোখের সামনে দেখতে চায় নামনে হয় রাস্তাঘাটেই কাজ সারতে হবে

যাওয়ার মুহুর্তে তিনি বললেন, ‘আপনাকে একটা সৎ পরামর্শ দিয়ে যাইবাড়ির ভাড়ার খবর যদি বাড়িঅলার বউ কিংবা চাকর-দারোয়ান রাখতে শুরু করে তাহলে সাথেসাথে বাড়ি ছাড়বেনএকদিনও দেরি করবেন না

কোন অভিজ্ঞতায় তিনি একথা বললেন তা আর ব্যাখ্যা করলেন নাআমার মনে সন্দেহ দেখা দিল, নিশ্চয়ই তিনি ভূল করেছেনদারোয়ানের কথা আমি বিবেচনায় আনছি নাআগেও শুনেছি তাদের হাতে দুচার টাকা না দিলে আড়ালে গালাগালি করেসেটা স্বাভাবিকদারোয়ান হতে হলে এ যোগ্যতা থাকতে হয়কিন্তু বাড়িঅলার বউ- আমি চিরদিনই শুনে এসেছি মেয়েদের মন নরমতাদের এত ভয় পেতে হবে কেন ? আমি সদুত্তর পেলাম নামাত্র একজনই জানালেন তাকে একমাসে দুবার বাড়িভাড়া দিতে হয়েছিলএকবার বাড়িঅলার বউয়ের কাছে, আরেকবার বাড়িঅলার কাছে

অন্য কারো কাছে যাচাই করা যেত, কিন্তু আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি সবাই তার মত ননঅন্যেরা হয়ত অন্যকথাই বলবেনকেউ কেউ নাকি ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতে থাকতে চামড়া পুরু করে ফেলেনকোনকিছুতেই মাথা-নাক-কান-চোখ কোনটাই গলান নাএকজন যেন বলেছিলেন, ‘মন খারাপ করে লাভ কি, আরেক যায়গায় গেলে আরেক বাড়িঅলা দেখতে হবেতারচেয়ে একেই নতুন করে দেখি

আরেকজন বললেন আরো মারাত্মক কথারীতিমত অশ্লীলবললেন, ‘দেহ ব্যবসায়ী আর বাড়িভাড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে পার্থক্য এটুকুই, দেহব্যবসায়ীদের কিছুটা দায়িত্ববোধ থাকে, বাড়িঅলার সেটা থাকে না

এর সথ্যমিথ্যা যাচাই করা আমার সাধ্যের বাইরেতবে বাড়িঅলা-ভাড়াটিয়ার সমস্যা রয়েছে, ভালমতই

রাজপথে থাকতে চাওয়া ভদ্রলোক কোন সমাধানের পথে গেছেন জানি নাআর কখনো তারসাথে আমার দেখা হয়নিতবে তারমত আরো দুচারজনের সাথে দেখা হয়েছেহয়ত এদের মত হাজার হাজার, নাকি লক্ষ লক্ষ মানুষ সমস্যায় পরেছেন বলেই হাজার হাজার, নাকি লক্ষ লক্ষ মানুষ এদিকে দৃষ্টি দিয়েছেব্যাঙের ছাতা চোখে না দেখলেও শব্দটি সকলেরই পরিচিতএকসময় নাকি ব্যাঙের ছাতার মত চীনের হোটেল খুলতে শুরু করেছিল চারিদিকেতারপর একে অনুসরন করেছে আরো অনেককিছুবিউটি পারলর, আইটি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, কিন্ডারগার্টেন, পুরুষদের বিউটি পারলর ইত্যাদি ইত্যাদিইউনিভার্সিটি দেখার অভিজ্ঞতা আমার নিজেরই হয়েছেবর্তমানে চলছে গৃহসমস্যা সমাধান প্রকল্পপথে চলতে খানাখন্দ এড়িয়ে যদি ডানেবামে তাকানোর অভ্যেস থাকে তাহলে দেখতে পাবেন, অমুক কনষ্ট্রাকশন লিমিটেড, তমুক ডেভেলপার লিমিটেড, সমুক হাউজিং লিমিটেডনামে লিমিটেড হলেও এদের সংখ্যার কোন লিমিট খুঁজে পাবেন না, কিছুক্ষনের মধ্যেই মাথার মধ্যে নামগুলো জট পাকিয়ে যাবেতারপর চোখ বন্ধ করলেও চোখের সামনে নামগুলি নাচতে শুরু করবেদেখবেন এর দেয়ালে ওর দেয়ালে নামগুলি চেপে বসেছেভাড়ার টাকায় বাড়ির মালিক, পাচশ টাকায় বাড়ির মালিক, বুকিং দিলেই পুরস্কার ইত্যাদিআর যদি পকেটে যথেষ্ঠ টাকা থাকে, নিজের অন্য সব খরচ করার পর আরো আট-দশ টাকার গচ্চা দিতে কোন খবরের কাগজ কেনেন তাহলে দেখবেন তার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রঙবেরঙের বাড়ির বাহারআপনাকে নিউইয়র্ক, টোকিও, সাংহাই, মুম্বাই কোথাও যেতে হবে না, সামান্য কিছু টাকা খরচ করলে এখানেই সে সুবিধে পাবেনসেই পরিবেশ, চারিদিকে গাছপালা ঘেরা অট্টালিকা, মাথার ওপর হেলিকপ্টার ঘুরে ঘুরে আপনাকে পাহাড়া দেবে, লেকে স্পিডবোট নিয়ে ঘুরবেন, অথবা বিশাল রাস্তায় সুমাখারের মত মোটররেস দেবেনগেটে গেটে দারোয়ান আপনাকে দেখেই সালাম ঠুকবে, সিকিউরিটি ক্যামেরা দিয়ে আপনার ওপর নজর রাখবেসব ব্যবস্থাই তারা করে দেবেবিজ্ঞাপনের বাহার দেখে আমার ছোট্ট একটি বিজ্ঞাপনের কথা মনে হয়েছিল

আমি যেখানে থাকি তার পাশেইএকদিন দেখলাম ছোট্ট কাগজে হাতে লেখা বিজ্ঞাপনলেখা আছে, সুন্দর মনোরম পরিবেশে, নিরিবিলিতে ছোট ফ্যামিলি, একরুম ভাড়া হবে

ন্তত ঢাকা শহরে এই একই কথার বিজ্ঞাপন দেখার জন্য কাউকেই বেশি কষ্ট করতে হবে নাচারিদিকে চোখ বুলালেই দেখা যাবেআমার কাছে বিশেষত্ব এটুকুই যে সেই মনোরম পরিবেশ এবং নিরিবিলি যায়গা আমি নিজের চোখে দেখেছি। (অবশ্য এর পাশেই অন্য বিজ্ঞাপনও দেখেছিসেখানে লেখা- সৎ, সুশ্রী, স্বাস্থ্যবান, ধার্মিক, বিনয়ী, ভদ্র, অধুমপায়ী, সদালাপি রুমমেট আবশ্যকমিলের অভাব কি? আকানল বাকানল-এ সুন্দর মিল হয়।)

বিজ্ঞাপনের বর্ননা একেবারে বানানো সেকথা বললেও অন্যায় হয়চারিদিকে এত যে অসংখ্য ঘরবাড়ি তার মালিক আছেন তো বটেইসবাই ভাড়াটিয়া নন, অনেকেই বাড়ি কিনেছেন থাকার জন্যএমন কি আমার মত নগন্য ব্যক্তিরও অন্তত দুজন বাড়ির মালিকের সাথে আলাপ হয়েছেএকজনের গুলশানে মদের দোকান (কিনতে যাবেন না, কেনার জন্য লাইসেন্স থাকতে হয় বলে সাবধান করে দিয়েছেন তিনিদামের উল্লেখও করেছেন।), আরেকজন- তাকেও এককথায় ব্যবসায়ীই বলা যায়

আমার পরিচিত মাত্র দুজনঅন্যদের নাগাল পাওয়া আমার সাধ্যের বাইরেএমনকি তাদের আত্মীয় স্বজনদেরওসবগুলি বাড়ির বাইরে লেখা থাকে, অতিথির গাড়ি বাইরে রাখুনঅর্থাৎ আপনি যদি আপনার ভাই-বোন কিংবা বাবা-মা যাই হোক না কেন, তারসাথে গাড়ি নিয়ে দেখা করতে যান তাহলে গাড়ি বাড়ির ভেতর ঢুকাতে পারবেন নাভিতরের যায়গা মালিকের জন্য সংরক্ষিতরাস্তায় গাড়ি রেখে সেটা যেন না হারায় সেজন্য একজন পাহারাদার রেখে যাবেনসে সেখানে বসে রাস্তায় জ্যাম তৈরী করবে, রিক্সাচালক থেকে শুরু করে পথচারী, অন্য গাড়ির চালক-মালিকের গালাগালি শুনবে এবং নিজে গালাগালি করবেআশাকরি কোন ট্রাফিক পুলিশের চোখে পড়বে নাসে হিসেব আলাদা

ঢাকায় ব্যাচেলর ভাড়াটিয়া নামে একটি অদ্ভুত পদ্ধতি চালু রয়েছেআপনি যদি টু-লেট লেখা দেখে কথা বলতে এগিয়ে যান তাহলে প্রথমেই আপনাকে সেবিষয়ে ইন্টারভিউ দিতে হবেচাকরীর ইন্টারভিউয়ের মতই সাজপোষাকে প্রস্তুতি নিয়ে, জুতা পালিশ করে, টেরি কেটে এবং আরো যা-যা সম্ভব সব প্রস্তুতি নিয়েই যাবেনহয়ত অদুর ভবিষ্যতে ভাড়িভাড়া নেয়ার সময় জীবনবৃত্তান্ত লেখা দরখাস্ত জমা দিতে হবেমন্ত্রী-আমলাদের সুপারিশও প্রয়োজন হতে পারেনয়ত মিটারঅলা ট্যাক্সি ভাড়া করার মত বলতে হতে পারে, বাড়ায়া দিমুনেবিষয়টি এখনো অত উন্নত পর্যায়ে পৌছেনি মাত্র রওনা দিয়েছে।

সব বাড়িঅলা আবার এই শ্রেনিতে পড়েন নাইদানিং অনেক বাড়িঅলা বুঝে গেছেন কোন গরুতে লাভ বেশিব্যাচেলর হওয়ার অর্থ তারা সারাদিন বাড়ি থাকবে না, সারাদিন গ্যাস-পানি খরচ করবে না (আবারও বলতে হচ্ছে, বিল ভাড়াটিয়াই দেয়, প্রয়োজনের চেয়ে বেশিই দেয়।), সারারাত পোলাপানের ট্যাঁ-টুঁ শুনতে হবে নাআর সবচেয়ে বড় কথা, ভাড়া নেয়া যায় মাথা গুনেব্যাচেলর বাড়িতে ড্রইং-ডাইনিং বলে কিছু থাকে নাসেখানে চৌকি পাতা যায় সেটাই সিটবড় চৌকি হলে একসাথে দুই সিটঅনেক ক্ষেত্রেই ফ্যামিলি হিসেবে ভাড়া দিলে যে টাকা পাওয়া যায় তার কয়েক গুন বেশি পাওয়া যায় এভাবেইচ্ছে করলেই বলা যায়, সামনের মাসে আরেকটা সিট ফালামু। এখানে যারা থাকে, বেশির ভাগই আসে সার্টিফিকেটের তাগিদে, তাদের অন্য কোন পথ নেই। সার্টিফিকেট ব্যবসায়ীরা এখনও হোষ্টেল ব্যবসা শুরু করেননি। আর বাকি যারা তাদের মাসশেষে টাকা গুণে বাড়ি পাঠাতে হয়। অন্য পথ খোজার সময়-সামর্থ্য তাদের নেই। সেজন্যই বিশেষভাবে ব্যাচেলর ভাড়া দেয়ার জন্য বিজ্ঞাপনে লেখা হয়, ‘পারিবারিক পরিবেশে ব্যাচেলর রুম ভাড়া

কাজেই, আমার পরামর্শ, কোন পথে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই, কত দামে হিসেব করার প্রয়োজন নেই, আমেরিকায় কি হয়েছে মাথায় ঢুকানোর প্রয়োজন নেই, প্রথমে বাড়ির মালিক হোন। মাতব্বরী করার এত অসীম ক্ষমতা অন্য কোনভাবে পাওয়া যায় না। দেখে শিখুন। এক সময়ের মন্ত্রীকেও অন্য সময়ে বাড়িছাড়া হতে হয়।

 

Browse