সার্কাস

Jun 4, 2009

সার্কাস আমি খুব পছন্দ করি ছোটবেলায় যখন পথের ধারে সার্কাস দেখানো হত তখন স্কুল ফাকি দিয়েও দেখেছি রাস্তার ধারে একটু মাঠমত যায়গা পেলে (তখন পাওয়া যেত) সেখানে সার্কাস, যাদু, সাপের খেলা, বায়োস্কোপ এসবের আসর বসত সবাই ভীড় করে গোল হয়ে দাড়াত, তারই মধ্যে চলত এসব খেলা কেউ খুশি হয়ে দুচার পয়সা দিলে দিত, না দিলেও আপত্তি ছিল না এমনকি বায়োস্কোপঅলাও পয়সাঅলা দর্শক না পেয়ে সামনে যাকে পেত তাকেই ডেকে দেখাত। সুর করে বলে তার পরেতে কি রইয়াছে-

আজকাল এসব সার্কাস উঠে গেছে। একটা কারন আগেই বলেছি, এখন সার্কাস দেখানোর যায়গা নেই। সব যায়গায় হয় বাড়ি নয় দোকান নয় ফুটপাতের দোকান। আর আয়োজন করা সার্কাসের প্রশ্নই ওঠে না। অত যায়গা নিয়ে অত লোকজনের ট্রনিং দিয়ে অত ঝুকি নিয়ে প্রস্তুতি নেবে কোন পাগল। বাপরে। গোল কুয়ার মত করে কেটে তার গা বেয়ে সাইকেল চালানো। একবার চালিয়ে নিচে যাওয়া আবার উঠে আসা। এত সময় আছে সময় নষ্ট করার।

কিম্বা সেই রিংয়ের মধ্যে লাফ দেয়ার কসরত দেখানো লোক। ছোটবেলায় একবারই দেখেছি কিন্তু ভুলতে পারিনি এখনও। লোহার একটা রিং মাথায় ঢুকিয়ে পায়ের দিক দিয়ে বের করে দেখাল সেটা কতটা চাপা। কোনমতে ঠেলেঠুলে শরীর পার করা যায়। তারপর সেটা দুজনকে দুদিক থেকে হাতে ধরে দাড়াতে বলল। নিজে কয়েক পা দৌগে এসে দিল এক লাফ। ছবি ডলফিনের লাফ যেমন দেখা যায় তেমনি। এক লাফে সুরুত করে রিংয়ের মধ্যে দিয়ে আরেকপাশে চলে গেল।

এখন এসব সার্কাস চলে না। কার এত দায় পরেছে দিনের পর দিন এসব প্রাকটিস করবে। তারপর কোথাও দেখাতে গেলে চাদাবাজি। পুলিশ, পাড়ার বড়ভাই, এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বার, স্থানিয় নেতা কতকিছু। দরকার নেই এসবের।

যারা সার্কাস দেখাতেন, যাদু দেখাতেন, সাপের খেলা দেখাতেন তারা নিজেরাই এখন দর্শক। অন্যদের সার্কাস দেখেন। এই সার্কাস বাস্তবধর্মী। সকলেরই ভুমিকা রয়েছে এতে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন না ছুটি নিয়েছেন তা নিয়ে খুব লেখালেখি চলছে টিভিতে এসে নানাজন নানামত জানিয়ে যাচ্ছেন বিষয়টা কি হতে পারে ? আসলে হয়েছে কি ?

প্রশ্ন অনেক। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার যতদুর জানা সেটা বলেছেন। তিনি পদত্যাগের বিষয়ে জানেন না। ছুটি চেয়েছেন এটা জানেন। তারসাথে কোনরকম মতবিরোধ কখনো হয়নি। কখনো হবেনা। অন্যরাও বলছেন পদত্যাগের এসব কথা গুজব গুজবে কান দেবেন না। আভ্যন্তরীন কোন মতবিরোধ কারো মধ্যেই নেই, আর মন্ত্রীত্ব থেকে পদত্যাগের ঘটনা দেশের ইতিহাসে নেই তবে এই মুহুর্তে এই বিষয়ে মন্তব্য করা যাবে না যিনি এককথায় সব কৌতুহল নিবারন করতে পারতেন তিনি অসুস্থ বোধ করছেন বিশ্রামে রয়েছেন। অন্য প্রশ্নে উত্তর দিতে পারেন কিন্তু এই অবস্থায় এমন বিষয়ে মন্তব্য করা যাবে না। আপনারা শেষ দৃশ্যের জন্য অপেক্ষা করুন আর আপনাদের ব্যাখ্যা দিতে হবেই বা কেন ? দেখে যান দর্শকের কথায় সার্কাস চলে না।

সংসদীয় কমিটির ডাকে সাড়া দেননি দুদক কর্তারা স্পিকারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, স্পিকার নিশ্চয়ই কিছু একটা ব্যবস্থা নেবেন তিনি সর্বময় কর্তা। এজন্যই তাকে সেপদে আনা হয়েছে। প্রয়োজনে গ্রেফতার করে হলেও তাদের হাজির করতে হবে

দুদকের ওই কর্তারা একসময় ক্ষমতা হাতে পেয়ে এই সংসদীয় কমিটির কোন কোন সদস্যকে গ্রেফতার করেছিলেন দুর্নীতির মিথ্যে অভিযোগে মামলা করেছিলেন, আদালত তাতে সায় দিয়ে রায়ও দিয়েছে সে মামলা এখনও শেষ হয়নি আদালতের শান্তির রায় এখনও বলবত নিন্দুকেরা বলে আদালতের রায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামী তবে সেকথা এখানে হচ্ছে না আদালতের হিসেব আদালতে এটা সংসদ জনগন ম্যান্ডেট দিয়ে তবেই নেতাকে সংসদে পাঠায় জনগনের এই ম্যান্ডেটকে অবহেলা করা যায় না কোনমতেই এর অবমাননা হতে দেয়া হবে না তাদেরকে সংসদীয় কমিটির কাছে জবাবদীহি করতে হবে। দেখা যাবে আদালতের রায় বড় না সংসদীয় কমিটির রায় বড়

প্রকৃতির নিয়মে একসময় গাড়ি নৌকায় ওঠে একসময় নৌকা গাড়িতে ওঠে যেখানে যার রাজত্ব আমরা দর্শক আমাদের সামনে যে সার্কাস চলে আমরা সেটাই দেখি

0 comments:

 

Browse