লোড সেডিং এর ভাবনা - আর না

Jul 31, 2010
লোড সেডিং নিয়ে ভাবছেন ?  সমাধানের চিঠি হাতে পাননি ??
কি আশ্চর্য্য চিঠি পাঠানো হচ্ছে আপনি কি লোডসেডিংমুক্ত নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত চান আর আপনি এখনো পাননি
বিষয়টি একটু ধোয়াটে মনে হতে পারে কিংবা ঘোলাটেও বলতে পারেন পানি ঘোলা থাকলে খুবই সুবিধে ঘোলাপানিতে মাছ দেখতে পায় না, তখন ধরিব মস খাইব সুখে। টপাটপ ধরে পকেটে ঢুকাও, টাকা বানাও, ব্যাংকে জমা রাখ
আসলে কথা হচ্ছে, গুলশান-বনানীতে যারা বাস করেন তাদের চিঠি পাঠানো হচ্ছে তারা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত চান কিনা যদি চান তাহলে চাহিবামাত্র সরকার দিতে বাধ্য থাকিবে যারা পেয়েছেন তাদের মহাখুশি এতদিনে সত্যিকারের অভিজাতের মর্যাদা পাওয়া গেল বারিধারার ডিপ্লোম্যাটদের যদি এভাবে দেয়া হয় তাহলে আমরা পাবনা কেন ? আমাদেরও সামর্থ্য আছে আরো আগেই করা উচিত ছিল
অভিজাত এলাকা বলে পরিচিত অন্য এলাকার মানুষ হতাস ধানমন্ডির মানুষ কি অভিজাত না আমাদের হাতে কি টাকা নেই আমাদের সামর্থ্য নেই এখানে কি স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটি-হাসপাতাল-অফিস-চাইনিজ-আমেরিকান-থাই কম আছে! আমরা কম কিসে সেটা তো বলবেন! এভাবে আমাদের অপমান-
যুক্তি তক্কো দুপক্ষেই চলে কেউ কারো থেকে পিছিয়ে নেই এসব অভিজাতদের বিদ্যুত নিশ্চিত করলে অন্যান্য এলাকায় লোডসেডিং কমে আসবে (কোন যাদুতে কে জানে ?) সেকারনেই এই পদক্ষেপ সাধারন মানুষের দুঃখকষ্ট আমরা সইতে পারি না
বিপরীতপক্ষের কথা, ওরাই তাহলে মানুষ, আমরা কুকুরছানা বাংলাদেশে বিদ্যুতবিভাগ কখনো লাভের মুখ দেখেনি সবসময় পাবলিকের টাকা ঢুকাতে হয় দেশের অর্ধেকের বেশি মানুষ বাস করছে দারিদ্রসীমার নিচে, তাদের রক্ত-চর্বি দিয়ে মোম জ্বালানো হবে অভিজাতের ঘরে কেন, তাদের যদি এত সামর্থ্যই থাকে তাহলে জেনারেটর চালাও না বাপু কেউ তো বাধা দিতে যাচ্ছে না
বাপরে, জেনারেটর তেলের দামের কি কোন ভরসা আছে কখন বাড়ে, কখন কমে তারচেয়ে তৈরী বিদ্যুতের দাম ইউনিট প্রতি ১৫ টাকা, এইই ভাল এ আর এমন বেশি কি তোমরাও টাকার ব্যবস্থা কর তোমাদের জন্যও ব্যবস্থা হবে তোমাদের জন্য কত কি করা হচ্ছে। সোলার প্যানেল, চাইনিজ সাস্রয়ী বাতি, আরো কত... ।
তোমরা নিশ্চয়ই আকবর বাদশার আমলে বাস কর না। চা খেতে বাকিংহাম প্যালেসে যাও না।
কাজেই, সমাধান একেবারে হাতের নাগালে। ডজন ডজন ভাড়া বিদ্যুতকেন্দ্র বসানো হচ্ছে। মন্ত্রী বলেছেন দেশের প্রয়োজন মিটিয়ে উদ্বৃত্ত বিদ্যুত তৈরী করা হবে। সেগুলো আপনাদের জন্যই।
টাকার ব্যবস্থা করুন। অভিজাত হোন। নির্বিঘ্নে বিদ্যুত ব্যবহার করুন। কিভাবে অভিজাত হবেন সেটাই ভাবুন। বিদ্যুত নিয়ে ভাবার কিছু নেই।

অবাক হবেন না

Jul 27, 2010
আপনি কি অবাক হন ? কোন ঘটনা দেখে ?? কারো কথা শুনে ??? টিভিতে কিংবা বাস্তবে ???
হঠাৎ করে অবাক হওয়ার অসুবিধে অনেক। উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। আমি হার্টের রোগীর কথা বলছি না। সাধারন মানুষেরও। শরীরে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়, সাথে তাল রেখে ফুসফুস-হার্টের কাজও বেড়ে যায়। ভুলে যাবেন না হার্ট নামের বস্তুটি নির্দিষ্ট সময় কাজের জন্যই তৈরী। ইচ্ছে করলেই তার মেয়াদ বাড়ানো যায়না। অন্তত হাতে যথেষ্ট পরিমান অর্থ না থাকলে অনর্থক সেটা না করাই উত্তম।
একেবারে সহজ, সাধারন পরামর্শ। দেখেও দেখবেন না। শুনেও শুনবেন না। যতদুর সম্ভব শরীর এবং মনকে কর্মহীন রাখুন। সম্ভব হলে মস্তিস্ককেও। যত ব্যবহার করবেন তত ক্ষয়ে যাবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বহুবার শুনেছেন, এখন যদি প্রধানমন্ত্রীর মুখেও শোনেন কোন ধরনের বিশৃংখলা সহ্য করা হবে না (ছাত্রলীগ ছাড়া), একেবারে পাশ কাটিয়ে যান। কানের পাশ দিয়ে বাতাস গলে দিন। মন্ত্রী বলেছেন ছাত্রলীগ নিজেরা মারামারি করে শক্তি ক্ষয় করছে। অন্যের সাথে করলে সেটা কাজে লাগত। সেটাই ঠিক।
বেতনের ওপর মুসক যোগ করায় ছাত্ররা রাস্তায় বিক্ষোভ করছে, গাড়ি ভাঙছে, যানজট তৈরী করছে। সম্ভব হলে ওই রাস্তা ছেড়ে অন্য রাস্তায় চলুন। ওদের জন্য পুলিশই যথেষ্ট। ব্যাটাদের সাহস কত, রাস্তা বন্ধ করে। পাচলাখ-সাতলাখ দিতে পারিশ সাথে আর কয়েক হাজার দিলে সমস্যা কোথায় ? টাকাগুলো তো সরকারের ঘরেই যায়। তারমানে জনগনের হাতে। জনগনের উপকার, দেশের উপকার। বিদ্যুত, গ্যাস, পানি, ডিজিটাল আরো কতকিছু হবে ওসব দিয়ে। টাকাছাড়া ওসব হয়? এসব মুর্খ কিছুই বোঝে না। লেখাপড়া শিখে করবেটা কি! ওইতো টিভিতে একজন বলল, ওরা তাদের ছাত্র না। ছাত্র নামধারী। পথে নেমে সরকারের ভাবমুর্তি নষ্ট করছে। সমাজ কলুষিত করছে।
এসব থেকে দুরে থাকুন।
কি বলছেন ? কে যেন বলেছে আমাদের ছাত্র হিসেবে চেনে না, আমরাও শিক্ষক হিসেবে চিনি না। দেখি ক্যাম্পাসে কিভাবে ঢোকে।
ওসব বাজে কথা। তারা ক্যাম্পাসের মালিক। কে ঢুকবে, কে বেরুবে সেটা তাদের ইচ্ছে। এত টাকা পুজি খাটিয়েছে কি বিনা কারনে ?
বলছেন ওরা রাজনৈতিক দলের ভাড়াটে সমর্থক না, নিজেদের স্বার্থে পথে নেমেছে,  জোর করে ফেরানো যায় না।
ধুরো। পুলিশের লাঠির কাছে ওসব নস্যি। ছবি দেখেননি পথে শুয়ে পড়েছে। ওসব আবোল তাবোল ছাড়ুন, মুল কথায় ফিরুন। ওই যে, অবাক হবেন না। যা ঘটছে ঘটতে দিন।
মন্ত্রী আরো বলেছেন ওইসব সাংবাদিক টাংবাদিক আওয়ামী লিগকে জেতায়নি। ছাত্রলীগ জিতিয়েছে, আবারও জেতাবে। অন্যরা আবার কে ? ছাত্রলীগ ঠিক থাকলে ...
ধুত্তোর। আবার পুরনো প্যাচাল। বলেছি কোনকিছু মাথায় ঢুকাবেন না। অবাক হবেন না। যদি দেখেন মন্ত্রী জামাকাপড় ছাড়া দিগম্বর হয়ে বক্তৃতা দিচ্ছেন তাহলেও না।

তৃতীয় পক্ষ

Jul 22, 2010
তৃতীয় পক্ষ খুব ভাল জিনিষ। দুপক্ষে মারামারি হচ্ছে, থামাতে প্রয়োজন তৃতীয় পক্ষ। এমন মহত কাজ যিনি করতে পারেন তাকে ভাল না বলে উপায় কি ?
সহজ হিসেবে মনে হতে পারে আদালতের বিচারক এক্ষেত্রে প্রধান তৃতীয় পক্ষ। সেটা আসলে ক্ষীন দৃষ্টিভঙ্গি। অনেকসময় (!) তাতেও কাজ হয় না। আরো বড় তৃতীয় পক্ষ প্রয়োজন হয়। কেউ কেউ বলেন গনতান্ত্রিক দেশে তৃতীয় রাজনৈতিক পক্ষ প্রয়োজন হয়। কেউ কেউ আরো বলেন বাংলাদেশের তৃতীয় রাজনৈতিক পক্ষ হচ্ছে সেনাবাহিনি। উদাহরনের অভাব নেই। এমনকি কখনো কখনো আন্তর্জাতিক তৃতীয় পক্ষও প্রয়োজন হয়।
এগুলি অনেক বড় বিষয়। বকারামের আওতার বাইরে। বরং ছোটখাট তৃতীয় পক্ষ দেখা যাক।
ব্যাংকে গেছেন। কারন, সরকারী বিল জমা হয়ে আছে, না দিলে লাইন কাটা যাবে। বিদ্যুত অথবা গ্যাস যাই হোক। আশা করেছেন ১০ মিনিটে কাজ হবে কিন্তু পাক্কা ৩ ঘন্টা দাড়িয়ে থেকে পা ব্যথা হওয়ার পরও দেখলেন লাইন এতটুকু নড়ে না। তৃতীয় পক্ষের প্রয়োজন এখানেই।
ব্যাংকের কাউকে ডাকুন, হাতে কাগজ এবং টাকা গছিয়ে দিন। ব্যাস, সাথেসাথে কাজ। আপনার সময় রক্ষা, পরিশ্রম লাঘব, সরকারের ঘরে বিল পৌছে যাওয়া আর ব্যাংকের লোকজনের সাপ্তাহিক বাজারের খরচ সবই একসাথে। একঢিলে বহুপক্ষি।
সরকারের কাজ টেন্ডার ছাড়া হয় না। এতে দুনীতি কমানো সম্ভব হয়। অনেক বড় বেসরকারী কোম্পানীও দুনীতি কমাতে এই পথ বেছে নিয়েছে। কাজেই, ভুমিকা তৃতীয় পক্ষের।
টেন্ডার জমা দিন, নেতামন্ত্রী ধরুন, টাকা ঢালুন। কাজ আপনার হাতে। এবার খোজ করুন কাকে দিয়ে সেই কাজ করানো যাবে। যার কাজ প্রয়োজন তার কাজ হল, যে কাজ করে সেও কাজ পেল। মাঝখানে তৃতীয় পক্ষ হয়ে দুজনারই উপকার করে আপনার কর্মসংস্থান হল। তৃতীয়পক্ষের উপকারিতা কি বলে শেষ করা যায়!
কিংবা ধরুন জটিল রোগের চিকিতসা প্রয়োজন। গন্তব্য ডাক্তারখানা। এখানেও তৃতীয় পক্ষের কাছে যাওয়াই লাভজনক। তিনি পরামর্শক হতে পারে কিংবা  রীতিমত ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার খুলে আপনার গন্তব্য সহজ করতে পারেন। তিনি আপনাকে জানিয়ে দেবেন কিভাবে-কোথায় সবচেয়ে ভাল চিকিতসা পাবেন। বিদেশ যেতে হলে এরচেয়ে ভাল ব্যবস্থা হয়না।
বিদেশ যাওয়ার কথাই যখন উঠল তখন তৃতীয় পক্ষের এরচেয়ে ভাল উদাহরন আর কি হতে পারে। বিদেশী কোম্পানীর সাথে আপনি যোগাযোগ করতে পারেন না, এত অলিগলি আপনার জানা নেই। কাজেই তৃতীয় পক্ষ খুজুন। খোজা খুবই সহজ। বিজ্ঞাপন পড়তে পারাই যথেষ্ট। তারপর তৃতীয়পক্ষ আপনাকে গন্তব্যে। পৌছে দেয়ার সব ব্যবস্থাই করে দেবে।
কাউকে স্কুলে-কলেজে-ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি করাতে চান। সেখানেও ওই তৃতীয় পক্ষই। রীতিমত গ্যারান্টি দিয়ে ভর্তি করে দেবে নামকরা স্কুলে।
জমি কিনতে চান ? বাড়ি কিনতে চান ? কোথাও যেতে চান (পায়ে হাটা বাদ দিয়ে), কম্পিউটার কিংবা মোবাইল কিনতে চান, ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে চান, মোবাইল ফোন রেজিষ্ট্রি করতে চান ... বাপরে, কত লোকে কর্মসংস্থান। দেশতো চালাচ্ছে তারাই। সত্যিকারের চালিকা ওই তৃতীয়পক্ষই।
সত্যি বলতে কি, জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে সব যায়গাতেই তৃতীয় পক্ষ প্রয়োজন। দয়া করে এর একটা সহজবোধ্য, সর্বজনগ্রাহ্য, অর্থবোধক ভাল নাম দিন।

যুগ যুগ জিয়ে

Jul 12, 2010
রহমানের স্ত্রীর সব বক্তব্য খানকে নিয়ে। সে চাকরী করে, সময়মত অফিসে যায় সময়মত ফেরে, সন্মান নিয়ে চলে। তারসাথে কি ব্যবসার তুলনা চলে ? ব্যবসায় রাত না পোহাতেই দৌড়াতে হয়, ফিরতে ফিরতে গভীর রাত। এটা কি মানুষর জীবন!
আর খানের স্ত্রীর বক্তব্য রহমানকে নিয়ে। সকালে নাকেমুখে কিছু গুজে দৌড়াতে হয় না। নিজের কারবার নিজে দেখ। ইচ্ছে হলে যাও ইচ্ছে হলে ঘুমাও। কেউ কিছু বলার নেই। চাকরী মানুষ করে! চাকরী মানে অন্যের চাকর। দরখাস্তে লিখতে হয় ইওর অবিডিয়েন্ট সারভেন্ট। ধুরো!
রহমানের স্ত্রীর বক্তব্য, চাকরী করলে কি টাকার জন্য ভাবতে হয়। মাস গেলেই টাকা। হরতাল-ধর্মঘট-যুদ্ধ-বন্যা-ঘুর্নিঝড়-ভুমিকম্প কোনকিছুতেই আটকাবে না। তারওপর উপরি আয়। ওইতো একদিনে ব্যাগ ভর্তি টাকা নিয়ে হাজির। ব্যাংকে রাখার যায়গা নেই। খরচ করারও যায়গা নেই। সব কেনা হয়ে গেছে। এখানে ওখানে টাকা গুজে রাখে।
খানের স্ত্রীর বক্তবেও কমতি নেই। এইভাবে গোনা টাকায় চলা যায়। ব্যবসার আয় মানে ব্যবসার আয়। প্রতিদিনই বাড়তির দিকে। তারওপর রোজ-ঈদ-হরতাল এসব উপলক্ষ তো আছেই। দাম বাড়াও আর বেশি টাকা ঘরে আনো।
রহমানের স্ত্রীও রোজা-ঈদের কথা বলে। তবে অন্যভাবে। এভাবে দৌড়াতে দৌড়াতে একদিন জীবন যাবে। রোজা-ঈদে পর্যন্ত ছুটি নেই। পারলে ঈদের দিনে পর্যন্ত কাজ করতে হয়। আর ওদের কত ছুটি। ঈদ-পুজা-হরতাল-অমুক দিবস-তমুক দিবস ...
তাদের এই অভিযোগ অবশ্য কখনো আদালতে যায় না। এমনকি প্রকাশ্যেও যায় না। সেখানে বক্তব্য উল্টো। খানের স্ত্রীর বক্তব্য রহমানের স্ত্রীর মুখে আর রহমানের স্ত্রীর বক্তব্য খানের স্ত্রীর মুখে। এটাই মিলেমিশে সমাজে বাস করার নিয়ম। সমাজ তৈরীই হয়েছে এজন্য।
প্রশ্ন করতে পারেন এই নিয়ম রাষ্ট্রে কিংবা আদালতে ব্যবহার হয় না কেন। হলে কত ভালই না হত! সমাজের মত সেখানেও মিলমিশ।
ভাল হত নাকি মন্দ হত সেটা বিচার করা সত্যিই কঠিন। বিচার করার দায় বিচারকের। আর সরকারের নজর কাড়তে না পারলে বিচারক হওয়া যায় না। কাজেই সোজাসাপ্টা কথায় কারন যা দাড়ায় সেটাই জেনে রাখুন।
অমুক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে রাস্তায় বিসৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য। ভাঙচুরের অভিযোগ। একেবারে নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকার-পুলিশ কখনো বিনা কারনে জনগনকে হয়রানি করে না। তারা জনগনের সেবক। সবসময় জনগনের সেবা করতে একপায়ে খাড়া।
আদালত বিষয়টা সেতুলনায় একটু গোলমেলে। তারাও ভাগ বসাতে চায়। পছন্দমত না হলে একেজন একেরকম কথা বলে। আবার এক আদালত থেকে আরেক আদালত। অন্য আদালতই বা বাদ থাকবে কেন ?
কাজেই ফলটা দাড়ায় এমন, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে হাতেনাতে অপরাধের জন্য। না-না, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত করার জন্য। না-না, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে খুনের অভিযোগ। জানেন না, ওইযে খুন হয়েছিল বছর দশেক আগে, সেই খুনের সাথে ও প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। রিমান্ডে সব স্বিকার করেছে।
পশ্চিমারা প্রবাদে বলে গোলপোষ্ট সরিয়ে ফেলা। আপনি গোলপোষ্ট তাক করে শট করলেন, বল গেল ঠিকমতই, কিন্ত্র ততক্ষনে গোলপোষ্ট সেখান থেকে সরে গেছে ডানে কিংবা বামে। যখন যেটা মানানসই। গোল করার সাধ্য আপনার নেই। যত দুরে গোলপোষ্ট সরানো যায় সুবিধে তত বেশি। অভিযোগ যত ঘোলাটে সুবিধে তত বেশি। আপিল-হাজিরা-রিমান্ড-শুনানী কতকিছু। কত লোকের কর্মসংস্থান।
খান এবং রহমানের স্ত্রী যত অভিযোগই করুন না কেন, তারা ভাল করেই জানেন সমাজ এই নিয়মে চলে। মুখের কথা আর বাস্তব এই দুইয়ের সমতা রক্ষা করেই সমাজে চলতে হয়। যুগ যুগ ধরে এটাই চলে এসেছে। এটাই চলতে থাকবে।

সময় গেলে

Jul 11, 2010
প্রচলিত প্রবাদ, বাঙালী দাত থাকতে দাতের মর্যাদা বোঝে না তখনই টের পায় যখন পুরোটাই গেছে কিংবা যাওয়ার পথে হায়-হায়, আগে যত্ন নিলে কতই না ভাল ছিল অহন খাওয়া দাওয়া বন্ধ বাপুরে-
টেকোদের ক্ষেত্রে হয়ত একথা খাটে না অযত্নে টাক পড়েছে একথা কেউ বলে না বরং অতিযত্নেই টাক পড়ে কিংবা যাদের টাক পড়ে তারাই বেশি যত্ন নেন একদিকের চুল লম্বা করে ঘুরিয়ে এনে আরেকদিকে রাখার ব্যবস্থা করেন টাক সমস্যার তাক লাগানো সমাধানের বিজ্ঞাপন দেখে ঢু মারেন গাটের পয়সা খরচ করে হেয়ার সার্জারী করান কিন্তু ফল যা হবার তাই, একসময় টাক দেখাই যায় তাদের দুঃখ একটাই, এতরকম ফ্যাশন এলোগেলো, টাকমাথার ফ্যাশন দেখা দিল না
আর সুখের কথা, অন্তত দন্তহীন হওয়ার মত প্রতিমুহুর্তে আফসোস করতে হয় না ভালমন্দ খাওয়া যায় ভালভাবেই সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা আবার বলেছে যাদের অল্প বয়সে টাক পড়ে তাদের ক্যান্সারের সম্ভাবনা কম সাবাস!
কথা হচ্ছিল মর্যাদা নিয়ে সময়মত উপলব্ধি নিয়ে সেটা কজনারই বা হয়! যতদিন শরীরে শক্তি থাকে ততদিন বাংলার বাঘ তুই ব্যাটা কে-রে মুখের ওপর কথা কস
একসময় সেই শক্তিতে ভাটা পড়ে তখনও গলার জোর টিকে থাকে এতবড় সাহস! চিনস আমি ক্যাডা আমার নাম শুনলে-
ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, একসময় একথায়ও কাজ হয় না ধমকে কাজ হয় না ততদিনে হাজার হাজার বাংলার বাঘ হাজির হয়েছে তাদের বাহুশক্তি-বাকশক্তি দুইই বর্তমান পেরে ওঠা যায় না বাধ্য হয়ে উপলব্ধি করতেই হয়, এখন লেজ গোটানোর সময় হয়ে গেছে বড়জোর সুযোগ পেলে উপদেশ দেয়া যায়। অভিজ্ঞতা থেকে শেখো দুনিয়ার নিয়ম জানো সকলেরই একদিন বয়স হয় বয়স্কদের সন্মান করতে শেখো
তার উত্তরও তৈরী, দুর হ ব্যাটা তত্ত্বকথা শোনাইতে আইছে ঝড় ফুরাইলে কি আম পড়ে ? ঝড়ের সময় আম কুড়াইতে হয় এইডা হইল সেই সময়
সময় আসে-সময় যায় কারো কারো জন্য আবার আসে আবার যায় পালাবদল-দিনবদল চলতেই থাকে একসময় যিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, যার কথা দেশের সব পুলিশ-র‌্যাব ওঠেবসে আরেকসময় সেই পুলিশের হাতেই তার সবকিছু টেনে উঠালে উঠতে হয়, বসালে বসতে হয় হাড়ে-মজ্জায় টের পায় রিমান্ড কি জিনিষ।
এসব বড় বড় মানুষের কথা সাধারন মানুষের উপলব্ধি অন্যরকম এই ধরুন বিদ্যুত আগে কি জানা ছিল এটা কত দামী যখন বিদ্যুত ব্যবস্থা চালু হয়েছিল তখন নাকি ঘরে ঘরে ধর্না দিতে হত লাইন দেবার জন্য তারপরও মানুষের আপত্তি, কি বিপদজনক জিনিষ রে বাবা। কখন নাজানি ক হয়ে যায়!
এখন আপনার ধর্না দেবার পালা সরকার অবশ্য সে কষ্টও করতে নিষেধ করেছে নতুন সংযোগ দেয়া বন্ধ আপনারা কষ্ট করবেন না আরাম করে বাড়ি বসে থাকুন আমগাছের হাওয়া খান
কারখানা করবেন করুন সরকার সবধরনের বিনিয়োগে উসাহ দেবে সবসময় দিয়েছে কিন্তু  বিদ্যুত আর গ্যাস ওই দুটো পাবেন না বিনিয়োগ করুন, দেশের উপকার করুন বিদেশ থেকে বিনিয়োগ করুন, বিদেশীরা আসুন। এমন পরিবেশ আর কোথাও পাবেন না।
এতদিনে আপনার উপলব্ধি হল গ্যাস আর বিদ্যুত চাইলেই মেলে না আগের টার্মে কথা ছিল ৩০ বছরের মজুদ রেখে বাকি গ্যাস রপ্তানী হবে ভারতে ৩০ বছরের ১০ বছরও যায়নি এখনই গ্যাস বন্ধ সারকারখানার গ্যাস দেয়া হবে বিদ্যুতকেন্দ্রে অন্তত লোডসেডিং তো থামুক। নইলে যে মানুষ পথে নামে। বিশ্বকাপ দেখার সুযোগ না পেলে গাড়ি ভাঙে।
আর সার, সে তখন দেখা যাবে।
ভবিষ্যতের জন্য বিদ্যুতের ব্যবস্থাও হচ্ছে। ভারত-বাংলাদেশ যৌথভাবে বিদ্যুতকেন্দ্র হবে। বিদ্যুত ভাগাভাগি হবে। দুজনেরই লাভ। সেজন্য জ্বালানী যা দরকার সেটা দেবে বাংলাদেশ। মিলেমিশে করি কাজ, হারিজিতি নাহি লাজ।
শুরু করেছিলাম দাতের মর্যাদা দিয়ে। সময়ের মর্যাদাও বলতে পারেন। আজ যা করবেন আগামীতে তারই ফল পাবেন।
আমগাছ লাগিয়ে আপনি নিশ্চয়ই তাতে কাঠাল আশা করেন না!

রক্ষা করতে হবে জীবন

Jul 10, 2010
লেখে যত তার দ্বিগুন ঘুমায়, খায় তার দশগুন।
এটা বাড়িয়ে বলা তাতে কোন সন্দেহ নেই। ৮০ বছরের জীবনে একজন ব্যক্তি মোটামুটি ৩০ থেকে ৪০ বছর ঘুমিয়ে কাটায়। কাজেই কথাটা ঘুরিয়ে বললে, যদি ঘুমের বিষয়টি ৩০ বছরও ধরা হয়, তিনি ১৫ বছর লিখেছেন। সেই লেখার পরিমান রবীন্দ্রনাথকেও ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা।
সেটা যেহেতু হয়নি সেহেতু এটা বাড়িয়ে বলাই।
আর এরসাথে যদি খাবার বিষয়টি মেলানো হয়। আমি জানি না কিভাবে সেটা সম্ভব। লেখা এবং ঘুম দুটিকেই সময় দিয়ে বিচার করা সম্ভব (যদিও খুব গ্রহনযোগ্য বলে মনে হয় না), কিন্তু খাওয়াকে ? আমরা কি বলি ওই ভদ্রলোক দিনে চার ঘন্টা খান!
কবি নন্দলালকে হেয় করার জন্য যা মুখে এসেছে (কলমে) তাই লিখে গেছেন। রীতিমত হেনস্তা করেছেন তাকে। আসলে তাকে বীর বলে উল্লেখ করাই সংগত ছিল।
যেমন ধরুন তার মুল দর্শন। রাখিবেই সে জীবন। সবাইকে জীবন রক্ষার জন্য যাকিছু করা প্রয়োজন করতে হয়। ধর্মেও বলেছে জীবন রক্ষা করা ফরজ। ফরজ কাজে তিনি দোষ দেখছেন কেন ?
আর দেশের স্বার্থে যদি হয় তাহলে এরচেয়ে মহত আর কি হতে পারে। যাকিছু করছেন সবই দেশের স্বার্থে। লেখা, খাওয়া, ঘুম, আড্ডা, গলাবাজি সবই।
যারা নন্দলাল নন তারা অতশত দেশের কথা ভাবেন না। তবে জীবন রক্ষা করেন প্রত্যেকেই। মানে ফরজ আদায় করেন। এমনকি জীবনের জন্য হুমকি হতে পারে এমন কাজ থেকেও দুরে থাকেন। আপনি প্রশ্ন করছেন, ওই কাজটা কতদুর হয়েছে। উত্তর, প্রচন্ড গরম দেখে বাইরে যাইনি। ঘরে বসে আছি। একে ফরজ না বলুন অন্তত সুন্নত কিংবা নফল তো বলবেন!
আসলে লেখক-কবি থেকে শুরু করে অনেকেই অনেক অকথা-কুকথা প্রচার করেন। নন্দলাল একবারমাত্র কাগজে এক সাহেবকে গালি দিয়েছিল। সাহেব এসে গলা টিপে ধরায় সাথেসাথে বুঝেছে ওইকাজ করার চেয়ে জীবন রক্ষা বেশি জরুরী। অন্যরা তারথেকেও বুদ্ধিমান। বিপদে পড়ে, অভিজ্ঞতা থেকে অভিজ্ঞতা লাভ প্রয়োজন হয়না। প্রাকৃতিক নিয়মে বুঝে যান কি কর্তব্য, কি নাকর্তব্য।
যেমন প্রাকৃতিক কারনেই বুঝে যান কাউকে বিশ্বাস করতে নেই, বিশ্বাস করলে ঠকতে হবে, কারন তিনি নিজেই সেটা করেন। কারোকাছে উপকার আশা করতে নেই কারন তিনি নিজে সেকাজ কখনো করেননা। কাউকে কাজের দায়িত্ব দিলে সেটা হবে না কারন তার নিজের ক্ষেত্রে বিষয়টা তারচেয়েও বাস্তব। কাউকে ধার দিলে সেটা ফেরত পাওয়ার আশা নেই কারন নিজেই সকলের আগে ভুলে যান ধার শোধ করার কথা। কাজের কথা থাকলে সেটা এড়িয়ে যেতে হয় কারন তিনি নিজে সেটাই করেন।
মুল কারন একটাই। যার তরেই হোক, রক্ষা করতে হবে জীবন।

কোন নিয়মে চলে

Jul 8, 2010
কেউ যদি ধানমন্ডি এলাকায় ঠিকানা খুজতে যান তিনি একদিনেই বুঝে যান আসলে দেশ কোন নিয়মে চলে
ধরুন আপনি খোজ করছেন ১৪ নম্বর
বেশ রিক্সা উঠলেন একে-ওকে জিজ্ঞেস করে ঘন্টাদুয়েক ঘুরলেন আপনার রিক্সাভাড়া যখন পকেট ছাড়িয়ে গেছে তখন হাটা শুরু করলেন আরো কয়েকঘন্টা কাটিয়ে অবশেষে একসময় বুঝলেন
যা বুঝলেন তা হচ্ছে, একসময় ১৪ নান্বার বলে একটা সড়ক ছিল সেটার নাম্বার পাল্টে হয়ে গেছে ৭/এ বিষয়টা এখানেই শেষ না, আপনি যদি সাত মসজিদ রোডের এপারে দাড়ান তাহলে সেটা ৭/এ, রাস্তা পার হলেও সেই পুরনো নাম্বার ১৪ যেমন ১৫ কখনো ৮/এ হয়নি ৩২ কখনো ১১ হয়নি।
কাজেই যা ১৪ ছিল তার অর্ধেক ৭/এ কিংবা পুরনো ১৪, বাকি অর্ধেক এখনো পুরনো ১৪।
শেষ এখানেই না সত্যিকারের ১৪ যদি খুজতে চান তাহলে সেটা আরেক যায়গায় দুরত্ব লেক ঘুরে-টুরে মাইলদুয়েক তো বটেই তার আবার পুরনো নাম্বার আছে, ২৯ না কিযেন। আবার নতুন ১৪ আর পুরনো ১৪ এই দুইয়ের মাঝামাঝি রয়েছে আরেকজন, ১৪/এ কাজেই ১৪ বলতে আপনি কি বুঝিয়েছেন, যাকে বুঝিয়েছেন সে কি বুঝেছে সেটা সকলের আগে জানুন। এটাই প্রচলিত গোলকধাধা
অনেকে বলেন নতুন করে আরেকবার নাম্বারিং করলে কেমন হয় একেবারে নিখুতভাবে। একেবারে উন্নতদেশের মত। এমন নাম্বার হবে যেন যেকেউ চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারে কে কোথায় বাস করে। রি-রি নাম্বারিং যেভাবে করা হচ্ছে মোবাইল ফোনের রি-রি-রেজিষ্ট্রেশন
সেটা জানার সৌভাগ্য সব বাংলাদেশীরই হয়েছে। যারা কয়েকবছর ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন তাদের নতুনভাবে নাম-ধাম-পরিচয়পত্র দিয়ে নতুনভাবে ব্যবহারকারী হিসেবে নাম লেখাতে হবে। যারা ফুটপাত থেকে কিনেছেন তাদের অত মাথা না ঘামালেও চলবে। এটাই হল রি-রেজিষ্ট্রেশন।
ফল হল সেই ধানমন্ডির নতুন-পুরাতন নাম্বারের মত। প্রয়োজন দেখা দিল নতুন নাম্বারিং এর। কাজেই, আরেকবার রি-রি-রেজিষ্ট্রেশন। এবার আর কোন ছাড় নেই। বয়স ১৮ না হলে হাতে মোবাইল নেই, এনআইডি না থাকলে মোবাইল নেই (বয়স ১৮ না হয়েও কারো কারো এনআইডি থাকতে পারে তাহলে!)। অফলাইন-অনলাইন ভেরিফিকেশন। আপনি মোবাইল ফোন ব্যবহার করে দুর্নীতি করবেন, টেন্ডারবাজি করবেন, ঘুস নেবেন, ছিনতাই করবেন, বিদেশে টাকা পাচার করবেন এসব সহ্য করা হবে না। সব অপরাধের মুল ওই ওইখানেই। মোবাইল ফোন। একবার বন্ধ করি, তারপর দেখি অপরাধ কিভাবে হয়।
জানেন না ইউরোপ-আমেরিকা কি করছে। হলিউডি ছবিতে দেখা যায়। যে ফোন করছে সে কোথায় কোন মোড়ে দাড়িয়ে আছে, কোনদিকে যাচ্ছে সব কম্পিউটার স্ক্রিনে দেখা যায়। আমরাও দেখব। তারপর ক্যাক করে ধরে ফেলব।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন ওসব সন্ত্রস-তন্ত্রাস বন্ধ রাখার নির্দেশ তো দিয়েছেনই। তারপরও না শুনলে তিনি কি করবেন ? কিছু একটা করতে তো হবে। ডিজিটাল দেশে এবার ডিজিটাল পদ্ধতিতে সব সমস্যার সমাধান করা হবে।
আমার দুশ্চিন্তা আসলে অন্যখানে। সেই যে, খায়-দায় চান মিয়া, মোটা হয় গফুর। খবরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছাত্রলীগের সন্ত্রাস-হাঙ্গামা, জেলভর্তি জামাত-শিবির কর্মী। কে জানে, আপনারও সেটা হতে পারে সেকারনে আগেই জানিয়ে রাখি।
হয়ত অনেক কষ্ট করে টাকা জমিয়ে শখ পুরন করে ক্যামেরা-ভিডিও-ইন্টারনেট সহ একটা ফোন কিনলেন। কোনমতে এনআইডি-র ব্যবস্থা করে সেটা নিজের নামে রি-রি-রেজিষ্ট্রেশনও করলেন। তারপর পথে বের হতেই একজন গলায় একহাত লম্বা ছুরি ধরে সেটা নিয়ে গেল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেহেতু সেটা বন্ধ করছেন না।
পুলিশের কাছে নালিশ করার মত এত বোকা আপনি নন। কোনমতে বন্ধুদের কাছে হা-হুতাস করে মনের দুঃখ মনে রেখে বাড়ি ফিরলেন। তারপরই,
রাতের বেলা পুলিশ এসে আপনাকেই ক্যাক করে ধরে নিয়ে গেল। মোবাইল ফোনে চাদাবাড়ি করস। মলমবাজি করস। টেন্ডারবাজি করস। সন্ত্রাস করস। চল থানায়।
কোর্টে বিচারক মশায় বললেন, এতো হাতেনাতে প্রমান। তার মোবাইল ফোনে সব তথ্য পাওয়া গেছে। কল রেকর্ড, রেজিষ্ট্রেশন, ঠিকানা, ছবি, এনআইডি, কোন গড়মিল নেই। ফরেনসিক এভিডেন্স। কোন জাড়িজুড়ি নেই। চার দিনের রিমান্ড।
এর পরের বর্ননা খুব বেশি প্রয়োজন নেই। জরুরী আইনের সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নিজের নেতাদের উপদেশ দিয়েছিলেন, আপনাদের রিমান্ডে নিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হবে, ইলেকট্রিক শক দেয়া হবে। ওসব এড়িয়ে চলবেন। যা শুনতে চায় তাই বলে আসবেন। তার দলেন নেতা না হয়েও আপনি সেই উপদেশ মানতে পারেন। প্রশ্ন করার আগেই বলতে শুরু করবেন, হ, আমি ছিনতাই করি, চুরি করি, ডাকাতি করি, টেন্ডারবাজি করি, ৭১ সালে রাজাকার আছিলাম, ওইখানে অস্ত্র লুকাইয়া রাখছি। আর যাই করেন ইলেকট্রিক শক দিয়েন না।
ঘটনা ঘটার আগেই জেনে রাখুন দেশ কোন নিয়মে চলে।

বিবর্তনে আবর্তন

Jul 6, 2010
সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গালাগালি করা হয়েছে কাকে, ডারউইন না মার্কস, সেবিষয়ে একমত হওয়া কঠিন হয়ত বৃটিশ ভদ্রলোকই এগিয়ে থাকবেন তিনি বলে বসলেন বিশ্ব এক সপ্তাহে তৈরী হয়নি প্রথম মানুষ হিসেবে এডাম-ইভ কিংবা আদম-হাওয়া তৈরী হয়নি কাজেই তার শত্রু বেশি হওয়াই স্বাভাবিক এমনকি এতদিন পরও সেই গালাগালি থামেনি
তবু রক্ষা গালিগালিকারকরা তার অরিজিন অব স্পেসিস নিয়েই ব্যস্ত থেকেছেন অনেকের মতে এরচেয়েও জোরালো বক্তব্য নিয়ে লেখা তার আরেক গ্রন্থ ডিসেন্ট অব ম্যান পড়ে দেখার সময় পাননি সেখানে তিনি নাকি ব্যাখ্যা করেছেন মানুষ কিভাবে মানুষ হল নিতান্ত নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি হলে অন্যভাবে বলতে পারেন মানুষ কিভাবে অমানুষ হল
এক কার্টুনিষ্ট এক ছবি একেছিলেন একদিকে আধুনিক মানুষ তাদের রয়েছে মিসাইল থেকে শুরু করে পারমানবিক অস্ত্রের পাহাড়, অন্যদিকে আদিম মানুষ হাতে লাঠি, পাশে পাথর অন্যদের দিকে হাত তুলে বলছে, দেখ ওরা বলে আমরা অসভ্য
যুগ যুগ ধরে আমরা সভ্য হয়েছি সভ্যতা নামের কিছু একটা হয়েছি তো বটেই বিশ্বকাপে ব্রাজিল হারল কেন, চল রাস্তায় কয়টা গাড়ি ভাঙি একে সভ্যতা না বলে উপায় কি
মানুষের মানুষ হওয়া নিয়ে প্রচলিত গল্পেরও অভাব নেই। এই গল্পটার কথাই ধরুন না কেন।
ভদ্রলোক গাড়ি থামালেন পেট্রোল পাম্পে। সাথেসাথে তিনজন এগিয়ে এসে সালাম দিল, কাজে হাত লাগাল। তিনি তেলের কথা বলে অফিসে ঢুকলেন। ফিরে এসে দেখলেন তার গাড়ি চকচক করছে। খুশি হয়ে তিনজনকে বখশিশ দিয়ে বিদায় নিলেন।
একটুপরই আবারও গাড়ি থামাতে হল আগের যায়গায়। আবারও সেই তিনজন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের কে কি করেছ ?
একে অন্যকে থামিয়ে তারা বলতে শুরু করল কে কাচ পরিস্কার করেছে, কে চাকায় পানি দিয়েছে কে পুরো গাড়ি চকচকে করেছে।
তিনি তাদের থামিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, গাড়িতে তেল ঢুকিয়েছে কে ?
তিনজন একে অন্যের দিকে তাকাতে থাকল।
এই গল্প বহু পুরনো কাজেই ধরে নেয়া যায় অন্যদেশ থেকে আমদানী করা। অন্তত একযুগ আগেও যখন এধরনের গাড়ির দৌরাত্ব ছিল না।
আমদানী হয়েছে নিশ্চয়ই পশ্চিমা দেশ থেকে। তারমানে এই ব্যবস্থা প্রচলিত পশ্চিমা দেশেও। তারমানে সারা বিশ্বে।
সেটাই তো স্বাভাবিক। সব যায়গাতেই তো মানুষ।
তাহলে বরং একেবারে দেশি গল্পটাই শুনুন।
ছেলে কিছুতেই ওষুধ খাবে না। মা কোনভাবে না পেরে অভিনব বুদ্ধি বের করলেন। এটা বৃথা যেতে পারে না। একটা রসগোল্লার মধ্যে ট্যাবলেট ঢুকিয়ে খেতে দিলেন। রসগোল্লার সাথেসাথে ট্যাবলেটটাও পেটে যাবে।
কিছুক্ষন পর জিজ্ঞেস করলেন, মিষ্টিটা খেয়েছ বাবা ?
ছেলে বলল, হ্যা-মা। বিচিটা ফেলে খেয়েছি।
সেই ডারউইনোর কথাতেই ফিরতে হচ্ছে। ভদ্রলোক অনেককিছুর ব্যাখ্যা করেছেন কিন্তু কখনো বলেননি মানুষের মধ্যে একটা সেন্সর কাজ করে। যা তাকে বলে দেয় কোনটা করতে হবে, কোনটা করা যাবে না। মানবকুলের জন্য একেবারে প্রজন্মগত সেই ফিল্টার ব্যবস্থা। বিবর্তনে যা পরিবর্তন হয় না।
আর গল্পের বক্তব্য যদি লক্ষ্য করেন তাহলে নিশ্চয়ই বুঝেছেন ফিল্টারে কি বাদ যায়।

ব্যাকরন মানি না

Jul 4, 2010
হাস ছিল সজারু,  ব্যাকরন মানি না .. লিখে গেছেন সুকুমার রায়
তিনি ভাষা নিয়ে কাজ করেছেন কাজেই ব্যাকরন মানা নিয়ে তার মাথাব্যথা না থাকলেও চলে সাহিত্যে আর ব্যাকরনের প্রয়োজন কি! সাইফুরস তো বিজ্ঞাপন দিচ্ছে ইংরেজিতে গ্রামার বলে কিছু নেই।
প্রয়োজন আসলে অন্যখানে
লোকে বলে ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র, বিশ্ব, গ্রহ নক্ষত্র নিয়ে মহাবিশ্ব সবই নাকি ব্যাকরনের নিয়মে চলে একটু বাড়িয়ে বলা থাকতেই পারে, কিন্তু একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না অন্তত সকলেরই যখন বয়স বাড়ে কোনমতেই কমতির দিকে নেয়া যায় না
এই ব্যাকরন দেখতে কেমন ? তৈরী করল কে ?
লোকে আরো বলে ব্যাকরনের নিয়মেই নাকি প্রতিদিনই একদিন করে বয়স কমে বয়স মানে আয়ু আর কি একদিন করে মৃত্যুর দিন ঘনিয়ে আসে শেষদিনে জিবরাইল এসে হাজির হলে বড়জোর বলতে পারে, কই কোন চিঠিপত্তর তো দেননি এভাবে বিনানোটিসে ভাড়াটেকে পর্যন্ত উঠানো যায়না আর আপনি এসেছেন পৃথিবী থেকে উঠিয়ে দিতে জানেন আমার আরো কত কাজ বাকি এখনো বাড়ি করা হয়নি, ছেলেমেয়ে স্কুলে যাচ্ছে, ব্যবসা মাত্র লাভের দিকে ...
জিবরাইল ওসব কথায় কান না দিয়ে নিজের কর্তব্যের কথাই মনে করিয়ে দেন নোটিস তো দিয়েছি ওই যে চুল সাদা হয়েছে, কালি দিয়ে কুচকুচে বানিয়ে রেখেছেন ওইযে দাত পড়ে গেছে, ডেন্টিষ্টকে টাকা দিয়ে ফলস লাগিয়েছেন আপনি যদি নোটিস লুকিয়ে রাখেন তাহলে আমি কি করতে পারি ওসব ধানাই পানাই চলবে না ডাক এসেছে যেতে হবে।
কাজেই আপনাকে অন্যযুক্তি খুজতে হয় তারসাথে হাতাহাতি করে যখন লাভ নেই, তাকে ঘুস দেয়া যায় না, ক্রশফায়ারে ফেলা যায় না তখন সেটাই একমাত্র পথ নিজে তার সঙ্গি হয়ে ভবিষ্যত বংশধরদের মধ্যে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা
কতদিন ?
যতদিন ততদিন
আপনার সন্তান নিশ্চয়ই আপনাকে টিকিয়ে রাখবে তাদের সার্টিফিকেটে আপনার নাম লিখতে হয় আচ্ছা, এমন নিয়ম করলে হয়না, বংশানুক্রমে সার্টিফিকেটে নাম লেখা বাধ্যতামুলক হবে অমুকের পুত্র অমুকের পুত্র অমুকের পুত্র অমুক .... তাহলে অনেকদিন নিজের নাম টিকিয়ে রাখা যায়
এটাও হয় না যারা দেশ চালায়, আইন বানায় তাদের মাথায় যদি একটু ঘিলু থাকত
তাদের কি ব্যাংকে টাকার পাহাড় বানিয়ে রেখেছে মাসে দুবার করে হাসপাতালে সাক্ষাত দিতে হয় এখনো দুহাতে টাকা কামানো থামেনি সন্তান, তস্য সন্তান, তস্য তস্য সন্তান যদি পঙ্গুও হয়, যদি তাদের ওঠবস করাতেও টাকা দিয়ে মানুষ রাখতে হয় তাহলেও তারা আরামে থাকবে কখনোই অর্থসংকট হবে না আর কার কৃতিত্বে সেটা হয়েছে সেকথা জপ করবে দিনে অন্তত পাচবার
আচ্ছা, ব্যাকরন নতুন করে লিখলে কেমন হয় ওই যে বিদ্যাসাগর তো কতকিছু লিখে গেছেন নতুন একজন বিদ্যাসাগর যদি নতুন করে ব্যাকরন লেখে তাহলে ডারউইন ব্যাটা তো এটাসেটা বলে পটল তুলেছে, যদি সে একটা ব্যাকরন তৈরী করত কিভাবে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা যায় নতুন ধরনের বিবর্তন
নাহ সে নিজের জীবন পর্যন্ত বাচাতে পারেনি তাকে দিয়ে ওসব হবে না আজকাল কেউ আবার কথাও শোনে না নিজের লাভ ছাড়া একপা ফেলে না মুখ থেকে টু শব্দ পর্যন্ত বের করে না দিন-সপ্তাহ-মাস-বছর-যুগ ধরে গল্প করে যাবে কিন্তু কাজের কথা একটাও বলবে না সামনে হ্যা-স্যার, জ্বি-স্যার বলেই যাচ্ছে মনে কি আছে খুব ভাল করেই জানি ব্যাটা সুযোগ পেলেই ল্যাঙ মারবে বিশ্বকাপ দেখে বিশ্বমানের ল্যাঙমারা লপ্ত করেছে টিভি রিপ্লে ছাড়া ধরা যায় না
আজকাল রেফারিও ব্যাকরন মানে না খুব ভাল করেই জানে তার ওপর মাথা নেই বাশিতে ফু দিলেই কাজ
ব্যাকরনের মুল সুত্র আসলে সেখানেই। মাথার ওপর কেউ আছে কি-না। যে ওপরে বাস করে ব্যাকরনের কারন নির্ধারনের দায়িত্ব তারই। পরের ধাপে যিনি অবস্থান করেন তার দায়িত্ব তার নিচের সবাইকে ব্যাকরন মানানো। ব্যাকরনের আকার আসলে পিরামিডের মত এর।
সত্যিকারের ব্যাকরন মিশরীয়রাই তৈরী করে গেছে।

আবিস্কার

Jul 3, 2010
নিউটন মাধ্যাকর্ষন সুত্র আবিস্কার করেছিলেন।
আপনি নিশ্চয়ই এত বোকা নন যে সেটা জানেন না। কিংবা সেই ইতিহাসের ছাত্রের মত আরেকটু বাড়িয়ে বলবেন, শের শাহ ঘোড়ার ডাক প্রচলন করেন, তাহার আগে ঘোড়া ডাকিত না।
মাধ্যাকর্ষন শক্তি নিউটনের আবিস্কারের আগেও ছিল। এখন যতটা আছে ঠিক ততটাই। নিউটন শুধুমাত্র তাকে কথার জালে আটকেছেন। এটাই তার কৃতিত্ব। বিজ্ঞানীর নাম করলে তার আবিস্কারকে বাদ দেবার উপায় নেই।
কাজেই প্রমানিত হইল, আবিস্কারের জন্য নতুন কিছু উদ্ভাবন প্রয়োজন নাই। বর্তমান বিষয়কে কথার সাহায্যে উপন্থাপন করিয়া আবিস্কারের কৃতিত্বলাভ করা যায়।
যদি এটাই হয় তাহলে আপনার আবিস্কার করতে বাধা কোথায় ? অনায়াসে ডজন ডজন আবিস্কার করে ফেলতে পারেন। অনেকেই করছে।
পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করবে এটাই বহু বছর ধরে প্রচলিত। সেই ডেকে আনতে বললে বেধে আনার যুগ থেকে শুরু। এজন্যই পুলিশ আবিস্কার করা হয়েছে। এই আবিস্কারকে আরো সহজ করার জন্য নানারকম ধারাও আবিস্কার করা হয়েছে।
৫৪ নম্বর ধারার কথা জানেনা কে ? সন্দেহজনক গতিবিধি। তাকে আচরন, পোষাক, চেহারা, স্বাস্থ্য দেখে তাকে সন্দেহজনক মনে হয়েছে। কাজেই তাকে গ্রেপ্তার করা হল। সে নিশ্চয়ই সমাজের জন্য ক্ষতিকর কিছু করতে যাচ্ছিল। অন্তত মনে মনে ফন্দি আটছিল। সন্দেহ হয়েছে বলেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আপনি এটাও জানেন কোন কোন সমাজে চোরে-পুলিশে দোস্তি হয় খুব সহজে। আর পুলিশে-সরকারে দোস্তির কোন তুলনাই হয় না। পুলিশ কখনো কোন ধরনের বাড়াবাড়ি করে না। জনগনের স্বার্থ রক্ষার্থে, জানমাল রক্ষার্থে দায়িত্বপালন করে। ঠিক যতটুকু শক্তি প্রয়োগ করা প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই করে। ব্যাখ্যা দেয়ার দায়িত্ব সরকারের, কাজ করার দায়িত্ব পুলিশের।
একই অস্ত্র বারবার ব্যবহার করলে নাকি ধার কমে যায়। দেখেননি যারা দাড়ি কাটে তারা কিছুক্ষন পরপর সেটা ঘসে ধার বাড়িয়ে নেয়। এটাই কারন। কাজেই ওই ৫০+৪ নম্বর অনবরত ব্যবহার করলে ধার কমবে এটাই তো স্বাভাবিক। কিযেন একটা নিয়ম আছে কত সময়ের মধ্যে কোর্টে নিতে হয়। না নিয়ে, জানাজানি হলে নানাজনে নানারকম কথা বলে। কেমন হয় যদি নতুন কিছু আবিস্কার করা হয়।
যেমন ধরুন পুলিশের কর্তব্যে বাধা দেয়া। এটা সরাসরি অপরাধ, সন্দেহ করার বিষয় নেই।
পুলিশ আপনাকে গ্রেপ্তার করতে গেছে আর আপনি তাতে বাধা দিয়েছেন। প্রশ্ন করেছেন কেন গ্রেপ্তার করছে, অভিযোগ কি, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কোথায়। পুলিশ আইনের প্রতিনিধি, তার কর্তব্যে আপনি এভাবে বাধা দিতে পারেন না। কাজেই আপনাকে গ্রেপ্তার করা হল।
এরপরও, সেই বিচারালয়ের বিষয়টি একসময় আসেই। অন্তত ক্রশফায়ার, এনকাউন্টার, গুপ্তহত্যার বিষয়টি যদি না থাকে। আর বিচারক মশায় কয়েকবার চোখ মিটমিট করে বলেন, বেশতো। কথাটার যুক্তি আছে। পুলিশের কর্তব্যপালনে বাধা দেয়া অবশ্যই অপরাধ। আটক করা যেতেই পারে। রিমান্ডে নেয়া যেতেই পারে। নম্বর-টম্বরও নেই যে কেউ বইখুলে দেখে নেবে সেখানে কি লেখা আছে। আবিস্কারটা মন্দ না। আবেদন মঞ্জুর।
কাজেই, বংগসন্তানগন, মনোযোগ দিয়া শুনুন। পুলিশ যদি গ্রেপ্তার করতে আছে কোনরকম প্রশ্ন করে তাদের কর্তব্যপালনে বাধাসৃষ্টি করবেন না। অপরাধ করে অপরাধী হিসেবে গ্রেপ্তার হবেন না। বরং গ্রেপ্তারে সহযোগিতা করুন। নিরপরাধী হিসেবে গ্রেপ্তার হোন।

কারন থাকা চাই

Jul 1, 2010
ছোটবেলা খুব প্রিয় বই ছিল দিলুর গল্প। ক্লাশে শিক্ষক রচনা লিখতে বললেন, এক লক্ষ টাকা পাইলে কি করিব। সকলে মহা উসাহে লিখতে শুরু করল কিভাবে মনের সাধ পুরন করবে। শিক্ষক লক্ষ্য করলেন দিলু কি যেন লিখেই খাতা রেখে দিল। খাতা দেখার সময় জানলেন তার বক্তব্য, অল্প টাকা হইলে ভাবি-চিন্তিয়া খরচ করিতাম। লক্ষ টাকা পাইলে মনের আনন্দে বসিয়া বসিয়া খাইব।
লেখক রাহাত খান সত্যিকারের বাঙালীর পরিচয় তুলে ধরেছিলেন দিলুর মাধ্যমে। বাঙালীর প্রধান চিন্তা তো ওটাই, অনেক টাকা চাই। আর অনেক টাকা যদি থাকে তাহলে আর কাজের চিন্তা করে কে। বসে বসেই খাওয়া যায়। ঘুর্নিঝড় দুর্গতদের একজন রীতিমত ক্ষোভের স্বরে বললেন, যা টাকা দেয়া হয়েছে সেটা ঠিকমত দিলে বসে খাওয়া যেত।
কাজেই, কাজ তিনিই করবেন যার খাদ্য সংকট রয়েছে। গল্পের চিংড়ি মামার খবর শুনলে অবশ্য একটু খটকা লাগতে পারে। তার বক্তব্য ছিল বাংলাদেশে যারা খেতে পায় তারা কাজ করে না আর যারা কাজ করে তারা খেতে পায় না।
কথার অর্ধেক আগের বক্তব্যের মতই, বিপত্তি বাকি অর্ধেকে। কাজ করবেন আর খেতে পাবেন না।
বিয়ষকে আরো সহজ করে দেখা যাক। আপনি চাকরী খুজবেন, ব্যবসা খুজবেন, ধান্দাপানি করবেন, কারন থাকা চাই।
কারন হচ্ছে আপনার খাদ্য প্রয়োজন।
যদি খিদে না থাকে তাহলে!
খিদে না থাকলে নিশ্চয়ই ডালভাত কেউ খায় না। বড়জোর বাদাম-ফুচকা-চানাচুর-আইসক্রিম-কাবাব এসব খায়। কাজেই খিদে না থাকলেও খেতে হয়। সেকারনে কিছু করতেও হয়।
আবারও বলতে হচ্ছে, খিদে না থাকলে যেমন কেউ ডালভাত খায় না তেমনি খিদে না থাকলে চাকরীর খোজে জুতা ক্ষয় করে না। বরং সেই বাদাম-ফুচকার মত সরল পদ্ধতিতে যাওয়া যায়। পরিশ্রম করা প্রয়োজন নেই, মাথা ঘামানো প্রয়োজন নেই, দায়িত্ব নেয়া প্রয়োজন নেই। ফাকে-ফুকে যেটুকু কামানো যায়। লটারীর টিকিটে ভরসা নেই শেয়ার বাজারে কিছুটা হলেও আছে। ব্যাংকে আছে। আর ধান্দাবাজিতে আছে। টাকা লাগালেই টাকা আসে।
নিতান্তই যার খিদে সহজে যায় না সে কাজ খোজে। কিছু একটা করতে হবে একথা মাথা থেকে যায় না। কারো কারো সেটা অভ্যেসে দাড়িয়ে যায়। টাকার কথা ভুলে কাজের কথাই ভাবে।
একটা ভুল কথা ভুলই থেকে যায়। ওই বসে খাওয়ার ব্যাপারটা। একমাত্র ফুটপাতের দোকানেই মানুষ বসার যায়গা না পেয়ে দাড়িয়ে খায়। অন্যরা দাড়িয়ে খায় না, বসেই খায়।
ইসলাম ধর্মে দাড়িয়ে খাওয়া নিষেধ। কাজেই সবসময় বসে খাবেন। এক মাদুর বিক্রেতা ক্রেতাদের বলছিল, লইয়া যান। মাত্র পচিশ টাকা। সারা জীবন বইয়া বইয়া খাইতে পারবেন।
এক মাদুর কিনে যদি সারাজীবন বসে খাওয়া যায় তাহলে কিনবেন না কেন ?
 

Browse