ফ্রাংকেনষ্টাইনের দানব Frankenstein

Oct 30, 2009

যারা বাসে চলাফেরা করেন তারা একটি বিষয়ের সাথে পরিচিত, ডাইরেক্ট, গেট-লক, সত্যিই গেটলক, আল্লার কসম গেটলক ইত্যাদি। যারা বিষয়টির সাথে পরিচিত নন তাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে বিষয়টি কি।

বিষয়টি হচ্ছে, লোকাল সার্ভিস বাসগুলির ষ্টপেজ বলে কিছু নেই। হাত দেখালেই থামে, তারপর যাত্রী টেনে উঠায়। সিট নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় না। মুরগির খাচার মত গাদাগাদি করে দাড়ায়, তারপর সে যায়গা না থাকলে এখানে ওখানে রড ধরে ঝুলে থাকে। মাঝেমাঝেই আরো যায়গা তৈরীর হাক শোনা যায়, পিছনে যান, পিছনে যান। পিছনে পুরা খালি।

তারপর যখন চলতে চলতে থামে, থামতে থামতে চলে তখন বিরক্ত হয়ে কেউ কেউ নেমে অন্য বাসের দিকে রওনা হন। এই যাত্রীরা যেন হাতছাড়া না হন সেজন্যই এই বক্তব্য। আপনারা উঠুন তারপর গেটলক করা হবে। কেউ উঠবে না, কেউ নামবে না। এতে অবশ্য আরেকটি ফল ফলে। যেখানেই উঠুন আর যেখানেই নামুন ভাড়া দিতে হয় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত।

উদাহরনটা টানতে হল সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর বক্তব্যের কারনে। এতদিন টেন্ডারবাজি-চাদাবাজি থামানোর প্রশ্নে পলিটিক্যালী বক্তব্য দেয়া হয়েছে। আজ কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আল্লার কসম গেটলক।

১০ মাস এধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য যথেষ্ট সময়। একেবারে শুরুতে শোনা যেত অমুক দলের সাথে তমুক দলের সংঘর্ষ। এখন আর সেটা নেই। এখন যাকিছু খবর-ছবি ছাপা হয় তা একই দলের এক গ্রুপের সাথে আরেক গ্রুপের সংঘর্ষের। কোনমতে সমঝতা হয়ে গেলে সেখবরও পাওয়া যাবে না। লোকে বলে আগের সরকারের সময় সেই ব্যবস্থাই ছিল। টেন্ডার পাবেন, তবে যার যা প্রাপ্য সেটা বুঝিয়ে দিয়ে। আর এই প্রাপ্তি সবসময়ই নির্দিষ্ট ব্যক্তির জন্য। অন্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করবেন না। কাজ না পেয়ে একবার এক মন্ত্রীকে হুমকি দেয়ায় মন্ত্রী একজনকে ধরিয়ে দিলেন পুলিশে। তারপর জানা গেল সেই ব্যক্তি তারই দলের নেতা। মন্ত্রী সংবাদমাধ্যমে বিনীতভাবে বললেন, আমি চিনতে পারিনি।

তখন যারা দলের শক্তি বলে পরিচিত ছিল তাদের অবস্থান এখন পরিস্কার। দিনবদল হয়েছে। অবস্থান উল্টে গেছে। পুরো দলই হাবুডুবু খাচ্ছে। আবার কখনো উঠে দাড়াবে কিনা তা নিয়েই শঙকা প্রকাশ করা হচ্ছে।

কথা হচ্ছে, ইতিহাসের শিক্ষা মানুষ ইতিহাস থেকে কিছু শেখে না। ফ্রাংকেনষ্টাইন দানব তৈরীর সময় বুঝে ওঠেননি তার হাতে জীবন দিতে হবে। যারা এইসব দানব লালন করেছেন, করছেন, করবেন, হাতে ধরে সেভাবেই তৈরী করছেন তারাও জানেন না তাদের পতন এদের হাতেই।

বাজারদর Who is in control

Oct 28, 2009

কেমন আছেন ?

বাজার দর

এমন উত্তর শুনে যদি ধরে নেন উত্তরদাতা মোটামুটি আছেন, কোনমতে চলে যাচ্ছে তাহলে ভুল হবার সম্ভাবনাই বেশি আলুর কেজি যখন ৩২ টাকা তখন বাজার দর বলতে মোটামুটি অবস্থা বুঝায় না খুব ভালো অবস্থা বুঝায় রীতিমত ধনী আপনি চালের দর দিয়ে বাজার হিসেব করতে পারেন তবে কথা হচ্ছে ১ কেজি চালে সাধারন একটা পরিবারের দুদিন চলে যাবার কথা যদিও শুধু ভাত খাওয়া যায় না মানুষ যতই দেশপ্রেমিক হোক সারাবছর পান্তা খেয়ে পয়লা বৈশাখের ঐতিহ্য পালন করতে ইচ্ছুক একজনও পাওয়া যাবে না কাজেই, সাথে আরকিছু না থাকলেও আলু প্রয়োজন হয় আর শুধুমাত্র ১ কেজি আলুতে দুদিন চালানো কঠিন (পুস্টি বিজ্ঞান বলে আলু দিয়ে ভাত, ভাত দিয়ে ভাত, আর আলু দিয়ে আলু সবই সমান সবই মুলত কার্বো হাইড্রেট যে আফ্রিকা নিয়ে সারা বিশ্ব মাতামাতি তাদের খাবারের পুষ্টিগুন নাকি বাংলাদেশের চেয়ে বেশি)

অন্য দর দিয়েও বাজারদর হিসেব করতে পারেন রিক্সায় উঠলে ২০ টাকা যদি মোটামুটি দুরত্ব হয় তাহলে ৪০-৫০ অফিস যাতায়াত যদি রিক্সায় করতে হয় তাহলে সাধারন দুরত্বে ১০০ টাকা আর কপালগুলে যদি মিরপুর টু গুলিস্তান কিংবা উত্তরা টু মতিঝিল দুরত্বে বাস করেন এবং বাসের জন্য কুস্তাকুস্তি করার সামর্থ্য না থাকে তাহলে অটোরিক্সা, সিএনজি কিংবা ট্যাক্সি যাই হোক না কেন, অন্তত ৫০০ টাকা বেরিয়ে যাবে দৈনিক এরপরও যখন কেউ বলে বাজারদর তাহলে তাকে ধনী এবং সুখি না বলে উপায় কি তিনি মানিয়ে নিতে পেরেছেন বাজারের সাথে ডেল কার্নেগি না পড়তে পারেন, সুখি হবার কায়দা জেনে ফেলেছেন

আপনার জীবন-মরন যেমন আপনার হাতে নেই তেমনি বাজারদরও আপনার হাতে নেই। এমনকি দেশ যারা চালান সেই সরকারের হাতেও নেই। এমনকি যেসব ব্যক্তিরা ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করেন তাদের হাতেও নেই। যারা পাইকারী বেচেন, যারা খুচরো বেচেন তাদের হাতেও নেই। প্রত্যেকেই নিজের নিজের কাজ ঠিকমত করে যাচ্ছেন। সবই তার ইচ্ছা, একথা প্রমানের এরচেয়ে বড় প্রমান আর কি থাকতে পারে। আল্লার দুনিয়া আল্লা চালান। জিনিষের দাম বাড়ান, ভেজাল মেশান। অকারনে অন্যদের দোষারোপ করা কেন ?

আর ভেজালের কথা যদি বলেন, সেটাও তার ইচ্ছা বৈকি। আমেরিকায় নাকি এখন কৃষক বলে কিছু নেই। খামার বলে কিছু কিছু নেই। যাকিছু আছে তা হচ্ছে কারখানা এবং শ্রমিক। তাদের কাছে বীজ নেবেন, মাঠে ফলাবেন, তারপর তাদের কাছে বিক্রি করবেন। টাইসন-ম্যাকডোনাল্ড ভাইগন কিংবা মনসান্টোর সাথে কেউ লাগতে যাচ্ছে না। বুশ-ক্লিনটন তাদের আট+আট বছরে লাগেননি। ওবামা কতটা লাগতে যাবেন তা নিয়েও সন্দেহ যথেষ্ট। তাদের গুনেই আমেরিকা বিশ্বে এক নম্বর। এদেশে অতবড় ব্যবসায়ী না থাকতে পারে তাইবলে চুনোপুটি থাকবে না এমন কথা তো নেই। তাদের সাথেই বা সরকার লাগতে যাবে কেন ? তাদের ক্ষমতা কি বুশ-ক্লিনটনের চেয়ে বেশি ? তারা দেশের উন্নয়নে জমি দখল করতেই পারেন, প্রতিবাদ করলে সেই মিছিলে ট্রাক উঠিয়ে দিতেই পারেন। দেশের অর্থনীতি বলে কথা।

একথা বুঝলে বাজারদর নিয়ন্ত্রন করছে কে সে প্রশ্নের উত্তর খোজা তত জটিল থাকে না। বাজারদর নিয়ন্ত্রন করছে দেশের অর্থনীতি। অর্থনীতি উন্নত হচ্ছে। মানুষের আয় বাড়ছে। ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে। রিক্সা চালালে দিনে ৫০০-৭০০ টাকা, মজুতদারী করলে হাজার টাকা, টেন্ডারবাজী করলে লক্ষ টাকা-কোটি টাকা, ছিনতাই-চাদাবাজি করলে আয় সীমাহিন। চাদাবাজও এখন কোটির নিচে চাদা চায় না। আয়ের সাথে বাদারদরও বাড়ছে। কমতির চেয়ে বাড়তি ভাল।

ফুটপাতে এককাপ চায়ের দাম যখন কমপক্ষে চার টাকা, যায়গা বুঝে পাচ টাকা-ছয় টাকা, একশলা সিগারেটের দাম পাচ টাকা, তখন প্রশ্ন করতে পারেন দেশে একটাকা/দুটাকার চল রয়েছে কেন ?

রয়েছে অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন একটা কাজে এগুলো ভিক্ষে দেবার সময় প্রয়োজন হয় দেশে ভিক্ষুকের যখন অভাব নেই এবং তাদের রেট যখন ঠিক করা হয়নি তখন অনায়াসে একটাকা-দুটাকা হাতে ধরিয়ে দিতে পারেন মানবতার কাজও হল, নিজের পরকালের পথও পরিস্কার হল বেহেসতের যায়গা একেবারে পাক্কা

বয় চিনি খায় ঘাস

Oct 26, 2009

ঢাকঢোল পেটানো বিষয়টি আমরা খুব পছন্দ করি। লোকে বলে এটা নাকি বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন বাদ্যযন্ত্র। হাতে লাঠি জাতিয় কিছু নিয়ে কোথাও পেটালেই চলত। এমনকি লাঠি না পেলে শুধু হাত দিয়েই পেটানো যেত। পেটানোর কিছু না পেলে নিজের বুকে পেটালেও চলে। অভ্যেসটা এখনো কারো কারো থেকে গেছে। আর যাদের পাল্টেছে তারা সবকিছুই পাল্টে ফেলেছে। ঢোলের আকার, বাজানোর পদ্ধতি সবকিছুই। বাজানোর ক্ষেত্র পাল্টেছে। একসময় যুদ্ধে কানাড়ার প্রচলন ছিল। তার শব্দেই বিপক্ষকে ভড়কে দেয়া যেত। এখন মানুষ অত সহজে ভড়কায় না। আর ভড়কারোর প্রয়োজনও হয় না। ভয় দেখানোর চেয়ে নাকি মাথায় হাত বুলিয়ে বেশি কাজ আদায় করা যায়। অনেকেই সেটাই ব্যবহার করেন।

সেকারনেই, ঢাকের পদ্ধতি আর আগের মত নেই। সাধারন কথাকেই এখন বলা হয় ঢাকঢোল। বিনা যন্ত্রে বাদ্যযন্ত্রের মত। যেমন ধরুন, ওয়াই ম্যাক্স-

হ্যা, এটা ঢাকঢোল পেটানোর ভাল উদাহরন হতেই পারে। ঢাকঢোল পিটিয়ে লাইসেন্স দেয়া হল। সরকারের কয়শ কোটি টাকা আয় হল প্রচার করা হল। এরফলে কত বিলিয়ন-ট্রিলিয়ন ডলার আয় হবে জানানো হল। দেশ ডিজিটাল হওয়ার পথে কতদুর গেল জানানো হল। কতদিনে ওয়াইম্যাক্স চালু হবে সেটা ঠিক করে দেয়া হল।

তারপর ঢাকের শব্দ কমে গেল কিছু একটা কারনে। দেখা গেল সেখানে আর কাহারবা বাজে না। মাধেমধ্যে থেমে থেমে একতালা বাজে। অমুক কারনে সময় বাড়ানো হল। তারপর আবার সমুক কারনে। অমুক তারিখ থেকে চালু করা হবে, আপনারা লাইন দিয়ে দাড়ান। অমুক তারিখ থেকে বিনে পয়সায় ব্যবহার করতে পারবেন, নিজের নাম লেখান। একটা ওয়েবসাইটে কথাবার্তা শোনা গেল। তারপর সেটা উধাও হয়ে গেল কোনরকম শব্দ না করেই। একেবারে স্থায়ী নিরবতা তৈরী করে।

তবে ঢুলি একজন নন। অন্যরা কোনমতে শব্দ চালিয়ে গেলেন। একসময় রীতিমত চমকে দেয়া হল, চালু হয়েছে। আপনারা নিয়ে যান। এখন আর ডাউনলোডের জন্য বসে থাকতে হবে না। টাকা আপলোড করুন আর ইচ্ছেমত ডাউনলোড করুন।

কত টাকা ?

বেশি না। সেকেন্ডে মাত্র ১৫ পয়সা। আজকাল কি পয়সার হিসেব আছে ? দিতে পারবেন পনের পয়সা ? একটা আটকোনা দশ পয়সা আর চারকোনা পাচ পয়সা ?

পারবেন না। অর্ধেক প্রজন্ম এগুলো চোখেই দেখেনি। আমরাই চালু রেখেছি পয়সার হিসেব। তবে কথা হচ্ছে, আপনি যদি সেকেন্ড হিসেব করে ব্যবহার করেন তবেই। আর যদি মিনিট কিংবা ঘন্টা কিংবা দিন কিংবা মাস হিসেবে যান তাহলে অন্য কথা। এখনই অত হিসেবের দরকার কি ?

তারপরও হিসেব করতে চান ? নিজেই করুন না। মিনিটে ৯ টাকা, ঘন্টায় ৫৪০ টাকা, দিনে ১২,৯৬০ টাকা, মাসে ৩,৮৮,৮০০ টাকা, বছরে . . .

হিসেব করতে থাকুন। তবে হ্যা, একেবারে শুরু থেকে এই টাকা দিতে হবে না। একমাসের জন্য যে টাকা দেবেন তাতে আড়াই ঘন্টা ফ্রি ব্যবহার করবেন।

ইন্টারনেট ব্যবহার করবেন আর টাকা দেবেন না তা-কি হয় ? একসময় ফোন করতেও তো মিনিটে ৭ টাকা করে দিয়েছেন। আইতে ৭ যাইতে ৭, অহন দিবেন না ক্যান ? জানেন কত ট্যাকায় লাইসেন্স লইছি ?

ঠিকই পারবেন। কথায় আছে না, গাধা বয় চিনি খায় ঘাস। অভ্যেস তো আছে-

আত্মবিশ্বাস Confidence of a nation

Oct 23, 2009

বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। দিগন্তে মধ্যমআয়ের দেশে পরিনত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা গেলেও এখনও স্পষ্ট হয়নি। অনেকে বলেন উন্নয়নশীল দেশ শব্দটা কানা ছেলের নাম পদ্মলোচনের মত। দরীদ্র দেশ শুনতে খারাপ লাগে বলেই বলা।

উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে অনেক বিষয়ে সীমাবদ্ধতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। ইচ্ছে থাকলেও পার্সোনাল জেট কেনা যায় না (যদিও সামর্থ্য আছে অনেকের এবং সেটা দেখাতে কার্পন্য করা হয় না। নেতার পুত্র বিয়ে করতে যান হেলিকপ্টারে চড়ে)।

যে বিষয়ে যত সীমাবদ্ধতাই থাকে, একটা বিষয় সীমাহীন। তা হচ্ছে, আত্মবিশ্বাস। ভারত এতদিনেও ওয়াই-ম্যাক্স চালু করতে পারেনি, বাংলাদেশ পেরেছে, এটা সংবাদপত্রের সংবাদ। কাজেই, সংবাদদাতার মতে, আমরা ভারত থেকে ইন্টারনেট ব্যবহারে এবং প্রযুক্তির দিক থেকে এগিয়ে।

বিষয়কে আরো ছোট করে নিদিষ্ট যায়গায় সীমাবদ্ধ করি। একেবারে ব্যক্তিগত পর্যায়ে। ছবি উঠানো একেবারে ছোটবেলার শখ। দুদশকের বেশি আগে ছবি ঠাই পেয়েছিল ইউনেস্কোর প্রদর্শনীতে, কাজেই এবিষয়ে কিছুটা দক্ষতা আছে বলেই মনে করি (এটাও হয়ত জাতিগত আত্মবিশ্বাস)। এই আত্মবিশ্বাস হার মানে অনেকের কাছেই। যখন কেউ ফটোগ্রাফির প্রতিযোগিতার খবর শুনে প্রশ্ন করেন, পুরস্কার কত টাকা ?

কি ক্যামেরা ব্যবহার করেন ?

ক্যামেরা কিনব।

ক্যামেরা কিনে ছবি উঠিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার প্রথম পুরস্কার জেতার মত আত্মবিশ্বাস অন্য কোথাও পাওয়া কঠিন হবে বলেই আমার ধারনা। কিছু মানুষ যখন জীবনে এই একটামাত্র কাজই করে। শুধুমাত্র এই কারনেই বনে-বাদাড়ে-পাহাড়ে-পর্বতে কোথাও যেতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না।

প্রতিযোগিতার বিষয়টি সবসময় ঘটে না। বরং ইন্টারনেটে ছবি বিক্রি করে টাকা কামানো যায় এটা বেশি ভাল শোনায়। সেখানেও কথোপকথনটা এমন, বিক্রি করলে কত পাওয়া যাবে ?

কিসের ছবি ? কোন ক্যামেরায় তোলা ?

ক্যামেরা কিনব।

আজকাল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি খুবএকটা চোখে পড়ে না। যদি সেটা ঘটে, নিয়োগদাতারা হিমসিম খান প্রার্থী সামাল দিতে। ওয়ার্ড প্রসেসিং এর কাজে কম্পিউটার অপারেটর খোজ করলে সেখানে সি, প্যাসকেল, মেসিন ল্যাঙ্গয়েজ জানা দরখাস্ত জমা পরে। আর গ্রাফিক ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং এসবের প্রার্থীদের সংখ্যা তো অগুনতি। মায়া দিয়ে এনিমেশন করতে হবে ? কত টাকা দেবেন ? জানেন আমেরিকায় একজন কত পায় ?

জানি কিনা জিজ্ঞেস করছেন ?

শিখে নেব। কত দিবেন সেইডা আগে কন।

যানজট থেকে মুক্তি-২

Oct 22, 2009

ঢাকাবাসীর যানজট থেকে মুক্তির আরো কিছু প্রস্তাবনা এখানে উল্লেখ করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে এই প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব অন্যান্য বাস্তবায়নের পদ্ধতির মতই। সেকারনে আপাতত কিছু অসংগতি থাকলেও সমস্যা নেই। বাস্তবায়নের সময় সেগুলি সংশোধন, পরিবর্তন, পরিবর্ধন করা সম্ভব।

প্রস্তাবনা ২ : আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার

যানবাহন নিষিদ্ধ ঘোষনা করে ঢাকা শহরের সমস্ত রাস্তাকে চলন্ত সিড়িতে রূপান্তর করা যেতে পারে। পথচারি এসে দাড়াবেন আর নিজ গন্তব্যে পৌছে নেমে যাবেন। ষ্ট্যাটাস ভেদে শীতাতপ-নিয়ন্ত্রন সহ অন্যান্য ধরনের কক্ষ স্থাপন করা যেতে পারে। কিংবা দাড়ানো, বসা, আধশোয়া, শোয়া ইত্যাদি ক্যাটাগরি রাখা যেতে পারে এবং সেই অনুযায়ী ট্যাক্স (ভাড়ার বদলে) নেয়া যেতে পারে।

চলন্ত সিড়ি স্থাপনের ব্যয়ের প্রসঙ্গ নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। যানবাহনের দাম, তেলের খরচ, যানজট থেকে মুক্তি, মানুষের কষ্ট লাঘব ইত্যাদি বিবেচনায় সে ব্যয় সামান্যই। এজন্য শেয়ার ছাড়া যেতে পারে কিংবা আলোচনার মাধ্যমে এই বিনিয়োগের আরো ভাল উৎস সন্ধান করা যেতে পারে।

প্রস্তাবনা ৩ : দিন-রাত পদ্ধতি

এই পদ্ধতি ইতিমধ্যে আংশিকভাবে চালু হয়েছে। দিন একঘন্টা কমিয়ে দেয়া হয়েছে। অফিস-স্কুল এসবের সময় পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সাফল্য সামান্যই। সত্যিকারের সাফল্যের জন্য দিনরাতকে দুটি সিফটে ভাগ করা যেতে পারে। এক সিফটের কাজ চলবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত, আরেক সিফট রাত দশটা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত। ফলে মানুষের গতিবিধি কমে অর্ধেকে নেমে আসবে। এছাড়া অফিস-স্কুল থেকে শুরু করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান-দোকানপাট সবকিছু এই নিয়মে চলায় সবকিছুরই কর্মদক্ষতা বেড়ে দ্বিগুন হবে। যারা দিনে বেকার থেকে রাতে ঘুমান তাদের প্রত্যেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির ধারনক্ষমতা দ্বিগুন হওয়ায় মুহুর্তে ভর্তিসমস্যার সমাধান হবে। এমনকি ফুটপাতের দোকানের যায়গা দুই সিফটে ব্যবহার হওয়ায় দ্বিগুন মানুষ ব্যবসার সুযোগ পাবে।

প্রস্তাবনা ৪ : ডিজিটাল পদ্ধতি

এই পদ্ধতিও বাস্তবায়নের কাজ চলছে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে টেলিমেডিসিন সেবা দেয়ার ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। এর মাধ্যমে কোন রোগীকে হাসপাতালে যেতে হবে না, ডাক্তার খুজতে হবে না। এই পদ্ধতির ব্যপকতা বাড়িয়ে সর্বক্ষেত্রে চালু করা যেতে পারে। অফিস-আদালত-শিক্ষা-ব্যবসা কোন কাজেই মানুষকে যাতায়াত করতে হবে না। ফলে রাস্তা হবে যানজটমুক্ত। ইন্টারনেট ব্যবহার করে টেলিশিক্ষা, টেলিঅফিস, টেলিউৎপাদন, টেলিব্যবসা ইত্যাদি কাজ চলবে।

গনতান্ত্রিক দেশে দেশ এবং জনগনের উন্নয়নে সকলের ভুমিকা রাখা প্রয়োজন। নিজের ক্ষতি করে হলেও দেশের স্বার্থে কিছু সময় ব্যয় করে দেশের কথা ভাবা প্রয়োজন। এই প্রস্তাবনাগুলির বাইরে কারো অন্য কোন সুপারিশ বা প্রস্তাবনা থাকলে তা প্রকাশ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

যানজট থেকে মুক্তি

Oct 21, 2009

যানজট থেকে মুক্তি সকলেই চায়। যার কাজের তাড়া সে চায় আবার যার সময় কাটেনা সেও চায়। পত্রিকায় প্রতিদিন ছবি ছাপা হয়। টিভিতে প্রতিদিন সরকারের বক্তব্য শোনা যায়। ভদ্রলোকের এককথার মত এক কথাই সবসময় বলে যান তারা। পাতাল রেলের কথা শোনা গেছে এরশাদের সময়, তারপর সকলেই সেই কথাই বলে গেছেন এবং যাচ্ছেন। এমনকি রেলের বদলে ষ্টিমার, লঞ্চ কিংবা উড়োজাহাজের কথা কেউ বলেনি। দেখেশুনে ধারনা করা যেতেই পারে, এটা মুক্তচিন্তাশক্তির অভাব। নতুনত্বের অভাব। সেকারনেই যানজট থেকে মুক্তির কিছু নতুন ভাবনা প্রকাশ করতে হচ্ছে। প্রস্তাবনাগুলি বিবেচনা করা যেতে পারে।

প্রস্তাবনা ১ : পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি

এই পদ্ধতিতে সব ধরনের যানবাহন বন্ধ করে দেয়া হবে। গাড়ি, বাস, মিনিবাস, ট্রাক, রিক্সা, সাইকেল এসব কোনকিছুই শহরের মধ্যে চলবে না।

এই পদ্ধতি থেকে উপকারের তালিকা অনেক দীর্ঘ। প্রথমত যানজট নিরশন। রাস্তায় চলন্ত, থেমে থাকা, ষ্টার্ট বন্ধ হওয়া কোন ধরনের গাড়ি না থাকায় বিশাল রাস্তার পুরোটাই ফাকা পাওয়া যাবে। পথচারীরা সেই পথে মনের আনন্দে হেটে যাবেন। পথিকের চলার ধরন অনুযায়ি রাজপথকে কয়েকটি লেনে ভাগ করা যেতে পারে। যেমন;

ফাষ্ট লেন : দ্রুতগামি পথচারীর জন্য। যারা চলার সময় অন্যকে ধাক্কা দিয়ে অভ্যেস করে ফেলেছেন তারা এই লেন ব্যবহার করবেন। তার সামনের ব্যক্তি এত দ্রুত যাবেন যে তিনি ধাক্কা দেয়ার সুযোগ পাবেন না। ফলে দ্রুতই অভ্যাসে পরিবর্তন ঘটবে। তারপরও যদি ধাক্কা দেয়ার বিষয়টি থাকে তাহলে তাকে ফ্রি-ষ্টাইল লেনে পাঠিয়ে দেয়া হবে।

ফ্রি-ষ্টাইল লেন : যারা নিজের খুশিমত চলতে চান, হাটতে হাটতে থামেন, হাটতে হাটতে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন, হঠাৎ করে উল্টোদিকে টার্ন নেন তাদের জন্য। ঢাকায় নবাগতরাও এই লেন ব্যবহার করবেন।

লাভ-লেন : মুলত প্রেমিক প্রেমিকার জন্য। এই লেন ব্যবহারের জন্য দলে কমপক্ষে দুজন সদস্য থাকতে হবে।

হাট-বাজার লেন : পার্কিং না থাকায় যে বিশাল ফাকা যায়গা পাওয়া যাবে সেখানে পথের দুধারে হাট-বাজার বসবে। যারা কেনাকাটা করতে করতে পথ চলেন তারা এই লেন ব্যবহার করবেন।

ভিআইপি লেন : সত্যিকারের ভিআইপি দের জন্য। যারা গাড়িতে চলার অভ্যাসের কারনে চলৎশক্তি হারিয়েছেন তাদের জন্য। রিক্সাচালক, গাড়ির ড্রাইভার, গ্যারেজের কর্মচারী যারা এই পদ্ধতিতে কাজ হারাবেন তারা এই লেন ব্যবহার করে ভিআইপিদের কাধে করে গন্তব্যে পৌছে দেবেন। এতে বিপুল পরিমান মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ষ্ট্যাটাস ভেদে কাউকে কাউকে (যেমন এমপি, মন্ত্রী, শিল্পপতি) পালকি জাতিয় যান ব্যবহারের লাইসেন্স দেয়া যেতে পারে।

এই পদ্ধতিতে শুধু যে যানজট থেকে মুক্তি হতে তাই না, দুষনমুক্ত হওয়ায় পরিবেশ দ্রুত উন্নত হবে, জ্বালানি তেলের ব্যবহার কমায় দ্রব্যমুল্য কমবে, তেল-গ্যাসের সমস্যা মিটবে, লোডসেডিং কমবে, কার্বন ক্রেডিটের ফলে যে অর্থ পাওয়া যাবে তাতে দেশের অর্থনীতি বড় হবে, কায়িক পরিশ্রমের কারনে রোগবালাই থেকে দুরে থাকা যাবে, স্থুল রোগীরা বিনা চিকিৎসায় সুস্বাস্থের অধিকারী হবেন ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি।

উধোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে

Oct 20, 2009

সমস্যা সমাধানের সবচেয়ে সহজ পথ তাকে অন্যের ওপর চালান করে দেয়া বোঝা বইতে পারছেন না, অন্যের কাধে চাপিয়ে দিন ফল একেবারে হাতেনাতে যার কাধে চাপানো হয়েছে সে যদি বইতে না পারে তার দোষ নেই কারন বোঝা তার না আর বোঝা যার তাকেও দোষ দেবেন না কারন দায়িত্ব যার কাধে তার সমাজে কোন পদ্ধতি সবচেয়ে প্রাচীন তা নিয়ে গবেষনা হয়নি কখনো যদি কখনো হয় তাহলে নির্ঘা এই পদ্ধতি শীর্ষে অবস্থান করবে

আর শুধু প্রাচীনতার দিক থেকেই বা কেন, জনপ্রিয়তা, ব্যাপকতা সবদিক থেকেই তার ধারেকাছে কেউ যেতে পারে না একবার চারিদিকে দৃষ্টি দিয়ে দেখুন

ঢাকা শহরে চারিদিকে দৃষ্টি দিলে কি দেখবেন উল্লেখ করা প্রয়োজন হয় না রাস্তায় লক্ষ লক্ষ মানুষ, এরসাথে ওর গুতাগুতি-ধাক্কাধাক্কি, হাজার হাজার রিক্সা-গাড়ি-বাস-মিনিবাস তাদের মধ্যেই একের সাথে অন্যের গুতোগুতি (থেমে থাকাগুলো বাদ দিয়ে) আর হাজার হাজার দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেখে মনে করতে পারেন এগুলি সমস্যা যদি সেটাই মনে করে থাকেন তাহলে আপনার বোঝায় ভুল হয়েছে এর সবগুলিই বইছে বুধো এর আসল মালিক উধো আপনি উধোর কারনে বুধোকে দোষারোপ করছেন

মানুষের বিষয়টি একবার ভেবে দেখুন দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কত ? সেকেন্ডে ৩ জন বছরে ২৫ লাখ ৪ বছরে ১ কোটি এদের কোথাও না কোথাও থাকতে হবে, কিছু না কিছু খেতে হবে রাস্তায় ভীড় করেছে একথা বলছেন কেন ? পারলে যাওয়ার যায়গা দেখিয়ে দিন আর রাস্তায় দোকান, হাজার হাজার রিক্সা এসব বলছেন এই মানুষগুলো করবে কি এসব না করে ? চাষের জমি আছে ? কাজ আছে ? কলকারখানা আছে ? শুধু সমস্যাগুলোই দেখছেন এগুলো যে সমস্যার সমাধান সেটা দেখছেন না!

আর গাড়ির কথা বলছেন দেশ উন্নত হলে, সামর্থ্য বাড়লে, অর্থনীতি বড় হলে মানুষ গাড়ি কেনে গাড়ির সংখ্যা বাড়ে আমেরিকায় একজন কৃষকের গাড়ি থাকে না থাকলে সেটাই আশ্চয্যের ব্যাপার দেশ সবসময় তাদের থেকে পিছিয়ে থাকবে এটাই কি চান ? কর্মসংস্থানের বিষয় নাহয় উল্লেখই করলাম না

আসলে এখানে কোন সমস্যা নেই সমস্যা যখন নেই তখন সমাধান করবেন কিসের ?

আর যদি এগুলো দেখতে পছন্দ না করেন, অন্যকিছু আশা করেন, তাহলে উধোর পিন্ডি আগে উধোর ঘাড়ে নেয়ার ব্যবস্থা নিন এইসব লক্ষ লক্ষ মানুষ যেখান থেকে এসেছে তাদের সেখানে থাকার ব্যবস্থা করুন তাদের খাবার প্রয়োজন, সেজন্য কাজ প্রয়োজন সেকাজ সেখানেই করুন সারা পৃথিবীতেই মানুষ গ্রাম থেকে শহরে ছুটছে, শহর থেকে বিদেশে ছুটছে। চীন সরকার টাকা খরচ করে গ্রামে রাস্তাঘাট-ঘরবাড়ি তৈরী করে দিয়ে গ্রামকেই শহর বানিয়েও এই প্রবাহ থামাতে পারছে না। তার বদলে যদি উৎসাহ দেয়া হয়, আভ্যন্তরীন রেমিটেন্স হিসেব কশা হয় তাহলে দেশে অর্ধেক মানুষ ঢাকা শহরে এসে ভীড় করবে।

তাদের একবার শহরে এসে ভীড় বাড়ানো হবে তারপর উসব করে তাদের কয়েকজনকে কোটি টাকা ব্যয়ে আবার ফেরত পাঠাবেন সেটা হয় না এই টাকা পাওয়ার সর্তও সকলের জানা।

আর সাধারন মানুষ কোনভাবে যদি তারা জেনে যায় শহরে গেলে ফেরার জন্য টাকা পাওয়া যায় তাহলে যে ভীড় হবে তা সামলানোর সামর্থ্য কারো নেই

বাচতে হলে লড়তে হবে – Back to old age

Oct 19, 2009

বাচতে হলে লড়তে হবে একসময় মুষ্ঠিবদ্ধ হাত তুলে শ্রোগান দিত বামপন্থিরা যখন মস্কো-পিকিং থেকে টাকা পাওয়া যেত মাঝে মাঝে বেড়িয়ে আসা যেত এখন মস্কো-পিকিং নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত, কেউ মুখ তুলে চায় না কাজেই সেই মুষ্ঠিবদ্ধ হাত নেমে গেছে এখন হাতের তালু ওপরদিকে থাকে, যদি কেউ সেখানে কিছু দেয়

তবে বামপন্থী এখনও আছে বাম হাতের কাজ করার জন্যই হোক আরে ডানহাতের কাজের জন্যই হোক, সব যায়গায় অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন তারা সরকারের সাথে, সরকারের বিরুদ্ধে সব যায়গায় ডানপন্থি, মধ্যপন্থি, উগ্রপন্থি সবপন্থিই বিদ্যমান গনতন্ত্রী, ধনতন্ত্রী, ধর্মতন্ত্রী, মন্ত্রতন্ত্রী, সেনাতন্ত্রী, রাজতন্ত্রী কোন তন্ত্রেরই অভাব নেই দেশের প্রধান দলের প্রমান নির্বাচন, দ্বিতীয় প্রধান দল কে তা নিয়েই বিতর্ক এর‌শাদসাব রীতিমত দাবীই তুলেছিলেন নির্বাচনের ফল হিসেবে তার দলকে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল ঘোষনা করা হোক সকলেরই এককথা, তারা দেশের জন্য রাজনীতি করেন নিজের দিনের খাওয়া-রাতের ঘুম হারাম করেন এদেশের মানুষের দুঃখকষ্ট তারা দুর করবেনই করবেন ক্ষমতায় যাবার জন্য যা করতে হয় করবেন কোথাও বিন্দুমাত্র ছাড় দেবেন না মৃত্যুর আগমুহুর্ত পর্যন্ত জনগনের মংগলের জন্য কাজ করে যাবেন তবে,

একটু কথা থেকে যায় যদি আপনি নিতান্তই বেরসিক হন, রসিকতা বোঝার যোগ্যতা না থাকে তাহলে তাহলে একখান কথা বলতেই পারেন তা হচ্ছে,

কেরানীগঞ্জের যায়গাজমি জোর করে দখল করেছে বসুন্ধরা জমির মালিকরা মিছিল করেছে, আন্দোলন করছে শেষমেশ ঘোষনা দিয়েছে এক সপ্তাহের মধ্যে জমি ফেরত না পেলে তারা নিজেরাই দখল করবে কথাটা সেখানেই

সাধারন জনগন নিয়ে কাজ করেন যেসব রাজনৈতিক দল তাদের কেউ টু শব্দ করেনি আর শুধু রাজনৈতিক দলই বা কেন, যেসব পেশাদার মানবাধীকার সংগঠন, উন্নয়নের কর্মী এসব বলেই গাড়ি-বাড়ির মালিক হন তারাও মুখ খোলেননি এমনকি টিভি ক্যামেরার সামনে যেসব বুদ্ধিজীবী-সচেতন সমাজের বক্তাদের কথা থামানোর জন্য মাইক্রোফোনের গলা টিপে ধরতে হয় তারাও মুখে তালা এটে রেখেছেন দেখছেন পরিস্থিতি কোন দিকে যায় এদিক যাওয়া উচিত, নাকি ওদিকে

কেরানীগঞ্জের এইসব জমিমালিকরা কি করতে পারে সেটা জানা ইতিহাসে বারবার এসব ঘটেছে গালি দিলি, গায়ে হাত তুলে দেখ গায়ে হাত তুললি, আরেকবার মেরে দেখ তাদের সামর্থ্য এপর্যন্তই

ঢাকার আশেপাশের সমস্ত এলাকা, খালবিল, ফসলের জমি, নদী-নালা সব চলে গেছে হাউজিং কোম্পানীর হাতে এতদিন সেগুলি ছিল অপ্রকাশ্য এখন আর তার প্রয়োজন নেই অত লজ্জা কিসের ? তারা কি খারাপ কাজ করছে ? ময়লা আবর্জনা, ডোবা এসবের যায়গায় অট্টালিকা বানাচ্ছে মডেল টাউন বানাচ্ছে কোথায় খুশি হয়ে হাততালি দেবে তা-না, আবার-

কথায় বলে আতিচোর-পাতিচোর, দিনে দিনে গাড়ি চোর একটু একটু করে সাহস সঞ্চয় করে একসময় এমন পর্যায়ে যায় যে তাকে আর চুরি বলা যায় না বলার সামর্থ্য থাকে না ফ্রাংকেনষ্টাইন দানব তৈরীর সময় বোঝেননি তার হাতে নিজের জীবন দিতে হবে এই দানব ফ্রাংকেনষ্টাইনের দানবের চেয়েও ভয়ংকর কে আশ্যয়দাতা-কে প্রশ্রয়দাতা তা এরা মনে রাখে না

আর দ্বিতীয় যে পথ তা আদিম সমাজের ইতিহাস বলে, কেরানীগঞ্জের মত আরো যারা ভুক্তভোগি যদি কোনভাবে তারা একত্রিত হয়, লাঠিয়ালের মত হাতে লাঠি তুলে নেয়, বাচতে হলে লড়তে হবে এটা যদি বক্তব্য হয় তখন তার সামনে কোনকিছুই টেকে না

রসু খা নস্যি - Those heroes

Oct 18, 2009

রসু খা খবরের কাগজ পড়ে কিনা সেকথা পত্রিকায় লেখেনি। সে কি কি করেছে, কিভাবে করেছে, তার অনুভুতি কি, সে কি চায়, কিভাবে দিন কাটায় এসবই ছাপে প্রতিদিন। সাথে ছবি। সে যদি লেখা নাও পড়ে অন্তত নিজের ছবি প্রতিদিন ছাপা হচ্ছে জানলে তার মনটা ভাল হত। বেচারা নিজে কষ্ট করে খবরের কাগজঅলাদের পসারের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। পত্রিকার কাটতি বেড়েছে। কে জানে হয়ত নতুন উপন্যাস দেখা যাবে, বাংলার জ্যাক দা রিপার। উপন্যাসের তেমন চাহিদা না থাকলে অন্তত ধারাবাহিক নাটক।

তার চাহিদা কতটা জানলে নিশ্চয়ই সে স্বস্তি পেত। সাথে অন্যান্য খবর দেখেও মনটা হাল্কা হত। সে নিজে খুন করেছে ১১টা, বর্তমান সরকারের ৯ মাসে খুনের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তারই মত কেউ না কেউ তো সেগুলো করেছে, অন্তত ক্রশফায়ার কিংবা এনকাউন্টার যখন বলা হয়নি। সে অন্তত তাদের চেয়ে সৌভাগ্যবান। তার ছবি প্রতিদিন ছাপা হয়, অন্যদের খবর কেউ নেয় না।

সরকারী খাতায় খুন দুহাজার। ডাকাতি-ধর্ষন গোনার বাইরে। এগুলো তো মামুলি ব্যাপার। কষ্ট করে গোনে কে ? দিন বদলের কারিগরদের সেটা অধিকার। তারা স্বাধীনতা এনেছে। স্বাধীনভাবে কাজ করার অধিকার আদায় করেছে। টেন্ডার দখল, হল দখল, জমি দখল এগুলো সাংবিধানিক অধিকার। আইনমন্ত্রী বলেছেন, না, লিখে জানিয়েছেন, তারা বসুন্ধরার মালিককে রক্ষার জন্য আইনবিরোধী কিছু করছেন না। আইনে স্পষ্ট করে নিষেধ করা হয়নি, কাজেই তা করলে আইনবিরোধী হয় না। আপনে কথা কওনের ক্যাডা ?

বুড়িগঙ্গার ওপর আরেকটা সেতু তৈরী। যে কোন সময় চালু হবে। কাজেই ওপারের জমির দাম বাড়বে। ওগুলো এখন থেকে বসুন্ধরার সম্পত্তি। আগে মালিক কে ছিল, কে কিনেছে এসব খোজে দরকার কি। বসুন্ধরার বুকে যাকিছু আছে সবার মালিক বসুন্ধরা। রাস্তায় মিছিল করবেন ? দেখি কি করতে পারেন ? মুখ যতদিন আছে ততদিন মুখ বন্ধ করার পদ্ধতিও আছে। দুচার দশটা খুন করলে কিছু যায় আসে না। নেতাগো নামে কয় ডজন খুনের মামলা আছে একবার খোজ নিয়া দেখেন। নেতা আর রসু খা এক জিনিষ ভাবছেন!

আপনিতো দুনীতির মামলা জেল খেটেছেন- বিবিসি থেকে প্রশ্ন করা হয়েছিল এরশাদ সাহেবকে। মনে আছে তার উত্তর ?

‌এসব মামলা সব নেতার নামে দেয়া যায়।

এসত্য তারচেয়ে ভাল আর কে জানে ? মামলা শুধু দেয়া যায় না, আছেও। ডজন ডজন, শতশত। মামলা যত বেশি নেতার কৃতিত্ব তত বেশি। পুলিশ ভ্যানে ওঠার সময় হাসিমুখে জনতার উদ্দেশ্যে হাত উচু করেন। পরদিন সেই ছবি ছাপা হয় কাগজে। সারা দেশে ছবিসহ পোষ্টার সাটা হয়। মিছিল হয়, অমুক নেতার মুক্তি চাই।

এভাবেই তো নেতার পরিচিতি বাড়ে। শেরে বাংলা নাকি একবার মঞ্চে উঠে এক উঠতি নেতাকে গালি দিয়েছিলেন। সে বেচারা মন খারাপ করায় পরে বুঝিয়ে বললেন, ‌আরে গালির কথা দুদিনেই মানুষ ভুলে যাবে। কিন্তু এই যে পরিচিতি সেটা ভুলবে না।

সারা দেশের মানুষকে যখন হাতে ধরে শেখানো হয় ট্রাফিক আইন মানতে হয় না, রাস্তায় উল্টোদিকে চলতে হয়, ক্ষমতা থাকলে আইন চোখ বন্ধ করে থাকে, শক্তি থাকলে যা ইচ্ছে দখল করে যায়, টাকা থাকলে প্রশাসন-আদালত কেনা যায় তখন একজন রসু খা নিতান্তই হতভাগা। অন্যদের তুলনায় নস্যি।

সে বেচারা শেখেনি এসব করার আগে খুটির জোর বাড়াতে হয়।

বিচিত্র Miracle happens here

Oct 16, 2009

আলেকজান্ডার যখন ভারতবর্ষে আসেন তখন নাকি তিনি তার সেনাপতিকে বলেছিলেন, কি বিচিত্র এই দেশ

কথাটা তিনি কি মনে করে বলেছিলেন জানা নেই কে শুনেছিল আর কে কোথায় লিখে রেখেছিল তাও জানা নেই বাস্তবতা হচ্ছে, আড়াই হাজার বছরেও আমরা কথাটা ভুলিনি একথা সেকথায় বারবার ঝালাই করে নেই আরো নির্দিষ্ট করে বললে, চর্চা করি এমন বিচিত্র আবহাওয়া, বিচিত্র রঙ, বিচিত্র ্র্তু আর কোথায় আছে ? আর আছে বিচিত্র মানুষ বিচিত্র পোষাক, বিচিত্র আচরন, বিচিত্র ভাষা আর বিচিত্র সব কারবার

ঢাকা শহরের যানজট দুর করা প্রয়োজন। সেজন্য ৪২ হাজার ব্যাটারীচালিত দুষনমুক্ত অটোরিক্সার লাইসেন্স দেয়া হচ্ছে। এমন বিচিত্র ঘটনা কি আর কোথাও দেখা যাবে ?

সরকার দলীয় এমপির হঠা করে মনে হল তার এলাকায় যে খাল রয়েছে তার মালিক তিনিই সাথেসাথে সেখানে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়া হল, অমুকের ডিজিটাল মস খামার তার দলের সরকার যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়বেন পণ করেছেন, ডিজিটাল চিকিসা চালুর ঘোষনা দিয়েছেন তখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে মাছচাষ করে সহায়তা করা তার কর্তব্য সেখানে নিশ্চয়ই ডিজিটাল মাছ তৈরী করা হবে খবরের কাগজে আরো খবর বেরিয়েছে এখন আর তেল-গ্যাস নিয়ে ভাবতে হবে না কষ্ট করে ভাত রান্না করতে হবে না চাল পানিতে ভেজালেই ভাত পাওয়া যাবে আলু-বেগুন এসব রান্নার ডিজিটাল পদ্ধতিও অচিরেই হবে আশা করা যায় সাথে ডিজিটাল মাছ যদি থাকে মন্দ কি ?

এতদিন বলা হত ডিজিটাল দেশ গড়তে দ্রুতগতির ইন্টারনেট চালু করা প্রয়োজন অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে লাইসেন্স দেয়া হল, র‌্যালী করা হল, এখানে ওখানে নমুনা দেখানো হল যারা লাইসেন্স নিলেন তারাও ঘোষনা করলেন, আ-সি-তে-ছে মানুষ হা করে তাকিয়েছিল এই এলো, ওইতো দেখা যায়, পায়ের শব্দ শোনা যায় বলে এখন শোনা যাচ্ছে, সাবমেরিন কেবলের ব্যান্ডউইডথ যখন বাংলাদেশে কাজে লাগেই না তখন নেপাল-ভুটানে বিক্রি করে টাকা নেয়াই ভাল ভাল দাম পাওয়া যাবে ওরা যখন সাবমেরিনের কেবলের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে ইন্টারনেটে গতি পাচ্ছে না স্যাটেলাইট ভাড়ায় বহু টাকা খরচ হচ্ছে পরের কষ্ট দেখে কি চুপ করে থাকা যায় ? ওদের দিয়ে বরং টাকা নেয়া যাক টাকা বড় শক্তি টাকা থাকলে সব সমস্যার সমাধান করা যায়

আর সমস্যাই বা কোথায়! মানুষের ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গড়তে কেপসি-পিজা হাট প্রচার শুরু করেছে কাগজে রঙিন ছবি ছাপা হল এখন আর নাখেয়ে থাকা মানুষ দেখা যাবে না সবাই ভীড় করবে কেপসি পিজাহাটে দেশের অর্থনীতি তরতর করে বেড়ে চলেছে প্রবৃদ্ধির হার ইউরোপ-আমেরিকার চেয়ে অনেক অনেক বেশি বাংলাদেশের মাটিও নাকি কোনদেশ কিনতে চেয়েছে সেটাও খবরের কাগজে ছাপা হয়েছে রপ্তানির জন্য খুব ভাল এবং সহজ উপকরন কারখানা প্রয়োজন নেই, লোডসেডিং নিয়ে ভাবনা নেই শুধু কাটো আর পাঠাও আর টাকা গোনো দেশের অর্থনীতি বড় করো

দুই স্কুলের ফুটবল ম্যাচে রেফারী ছিলেন এক শিক্ষক হারা দলের মনে হল তিনি পক্ষপাতিত্ব করেছেন কাজেই দল ধরে তাকে পিটানো হল ঘটনার বর্ননা শুনে নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না তার সহকর্মী আরেক শিক্ষক অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিতে হল তাকে

সত্যিই কি বিচিত্র এখনও এমন মানুষ রয়েছেন যিনি অন্যের অপমানের কথা শুনে অসুস্থ হয়ে পড়েন!

আলেকডান্ডার সত্যিই বলেছিলেন বিচিত্র এই দেশ এদিক ওদিক সবদিকেই

ভবিষ্যত কোন পথে Making your future

Oct 14, 2009

শিব্রাম যথার্থই বলেছেন, মানুষকে দুটো জিনিষ কামাতে হয় দাড়ি এবং টাকা কোন কারনে যদি একটি কামানোর সুযোগ না থাকে তাহলে আরেকটিতে বেশি জোর দিতেই হয়

বিষয়টি খোলাসা করেই বলি ঢাকার সবচেয়ে নামকরা মেয়েদের স্কুলের প্রধানের দাড়ি কামানোর সুযোগ নেই টাকা কামানোর সুযোগ অফুরন্ত ভর্তির সময় কোটি টাকা কামানো যায় যারা তাদের মেয়েকে এই অতুলনীয় বিদ্যাপিঠে পাঠানোর সুযোগ চান তারা টাকা হাতে লাইনে দাড়ান সেটা নেয়া তার অধিকার তো বটেই কেউ যদি বাধার কারন হয়ে দাড়ায় তাহলে তাকে মারার জন্য খুনি ভাড়া করা যেতেই পারে তাতে আর কতই বা খরচ তারপরও কামানো কোটির নিচে নামে না

কামানোর উদাহরন কম নেই বসুন্ধরার মালিক বহু কামিয়েছেন আইনের চোখে তিনি পলাতক আসামী হয়েও সেনাপ্রধানের হাতে, ফুটবল ফেডারেশনের হাতে উপহার তুলে দিয়েছেন আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যগন তার খোজ পাননি বলে গ্রেফতার করতে পারেননি তার মামলা তুলে নেয়ার জন্য বড়বড় আমলারা রীতিমত দৌড়ঝাপ করছেন বলেই খবরের কাগজের খবর বসুন্ধরা সিটিতে আগুন লাগিয়ে কিছু উত্তেজনা তৈরী করলেও সেটা টেকেনি বেশিদিন। আইন এখনো পিছু ছাড়েনি তবে অভিজ্ঞতা বলে, শেষ পর্যন্ত আইনকে লেজ গুটাতে হবে তিনি বীরদর্পে দেশকে বসুন্ধরা বানাবেন।

কে কত কামালো তাতে আমার বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই ধরেই নিচ্ছি দাড়ি কামানো যেমন অধিকার টাকা কামানোও তেমনি বরং চিন্তার কারন অন্যখানে যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান টাকার জন্য মানুষ খুন করছেন তিনি নিশ্চয়ই একা কামাচ্ছেন না। এসব কাজ একা করা যায় না। সঙ্গিসাথী অনেকেই। সেই ব্যক্তিরা তাদের শিক্ষার্থীদের কি শেখাবেন!

দেশের সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সবচেয়ে ভাল ফল, ফল বের হওয়ার পর দল ধরে আঙুলে ভি চিহ্ন দেখানো মিছিল এসব তো একথাই বলে এরা আগামীতে দেশ চালাতে যাচ্ছে। সরকার-প্রশাসন থেকে শুরু করে শিক্ষাব্যবস্থা পর্যন্ত সবকিছুই এদের নিয়ন্ত্রনে যাবে। তারা কি করবে ?

আর যারা এদেশে থেকে শতকোটি, হাজার কোটি কামিয়েছেন তারা যখন টাকা নিয়ে সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করাতে নিয়ে যান তখনও প্রশ্ন জাগে, তাদের কামানো টাকা তারা কি করবেন। এদেশে সবচেয়ে দামী হোটেলে গেলে বড়জোর কয়েক হাজার খরচ হয়। এভাবে পুরোটা খরচ করার জন্য হাজার বছর বাচতে হয়। সেটা যখন সম্ভব না তখন সেগুলি এদের জন্যই রেখে যেতে হয়। তাদেরকেও কি শতকোটি-হাজারকোটি কামানোর পথ দেখানো প্রয়োজন। শুনেছি চোর তার সন্তানকে চুরিবিদ্যে শেখায় না। সেই নিয়ম কি বাতিল হয়ে গেছে ?

আর যারা এইসব মহান শিক্ষকের কাছে দীক্ষা নিচ্ছেন তারা কি হবেন ? নিজের অভিজ্ঞতা থেকে উল্লেখ করতে পারি, কলেজে একজন সহপাঠি একেবারে সরলভাবেই বলেছিল, আমার লেখাপড়া হবে না। আমার বাপ গম চুরির টাকায় পড়ায়।

তার পিতা সরকারের কাছে মেডেল পাওয়া বিখ্যাত ইউপি চেয়ারম্যান। সে তার কথা সত্যি প্রমান করতে সেই পথে রওনা দিয়েছে। এরাও কি তেমনি ?

চারিদিকে যখন পোষাকে-হাতে-নাকে-কানে লালসবুজের বাহার তখন প্রশ্নটা আগেই করে রাখা প্রয়োজন, ভবিষ্যত প্রজন্ম কি হতে যাচ্ছে ?

রহিমুদ্দির ভাইয়ের পো Because of me

Oct 10, 2009

চাচা এবং ভাতিজা বসে আলাপ করছে। ভাতিজা বলল, চাচা আইজ হাটে গেছিলাম।

চাচা বলল, যাবি না। বাড়ি বইসা থাকবি!

ভাতিজা বলল, একটা কুমড়া লইয়া গেছিলাম।

চাচা বলল, যাবি না। খালি হাতে যাবি ? এতবড় দামড়া পোলা।

ভাতিজা বলল, একজন আইসা কুমড়ার দাম জিজ্ঞাস করল।

চাচা বলল, করব না! এমনিই লইব ?

ভাতিজা বলল, আমি কইলাম ২০ টাকা।

চাচা বলল, কবি না! এমনি দিবি কুমড়াডা ?

ভাতিজা বলল, সে কইল ৫ টাকা।

চাচা বলল, কইব না! সে কি কুমড়ার দাম জানে না ?

ভাতিজা বলল, আমি কইলাম বাপের পুষ্যি কুমড়া খাইছ কোন দিন ?

চাচা বলল, ঠিক করছিস। অতবড় কুমড়াটা ব্যাটা ৫ টাকায় নিতে চায়।

ভাতিজা বলল, তহন একজন পুলিশ আইল।

চাচা বলল, আইব না। ভদ্রলোকের পোলারে তুই কস বাপের পুষ্যি কুমড়া খাইছ কোনদিন। দেখ না কি হয়।

ভাতিজা বলল, পুলিশ আইসা কুমড়ার দাম জিজ্ঞাস করল।

চাচা বলল, করব না! পুলিশ বইলা কি অমনেই নিব।

ভাতিজা বলল, আমি কইলাম ২০ টাকা।

চাচা বলল, ঠিক করসছ। পুলিশ দেইখা ডরাইবি না।

ভাতিজা বলল, পুলিশ কইল ৫ টাকা।

চাচা বলল, কইব না। পুলিশ বইলা কি দাম জানে না।

ভাতিজা বলল, আমি কইলাম বাপের পুষ্যি কুমড়া খাইছ কোন দিন।

চাচা বলল, সাবাস। পুলিশ দেইখা ডরাইবি না।

ভাতিজা বলল, তখন পুলিশ আমারে থানায় নিয়া গেল।

চাচা বলল, নিব না! তুই পুলিশরে কস বাপের পুষ্যি কুমড়া খাইছ কোন দিন।

ভাতিজা বলল, থানায় নেওয়ার পর বড় সাব আইল।

চাচা বলল, আইব না! দেখ না আরো কত কি হয়।

ভাতিজা বলল, বড় সাব আইসা আমারে ছাইড়া দিল।

চাচা বলল, দিব না! তুই যে রহিমুদ্দির ভাইয়ের পোলা।

পুনশ্চ : অনেক বছর আগে জসিমউদ্দীনের বাঙালির হাসির গল্পে পড়া। বর্ননায় তারতম্য ঘটতে পারে।

দুধের পুকুর হয় না Only you can save your skin

Oct 8, 2009

এক রাজার শখ হল তিনি দুধের পুকুর বানাবেন। বিশাল করে পুকুর কাটা হল। রাজ্য জুড়ে ঘোষনা দেয়া হয়, অমুক দিনে সবাই একহাড়ি দুধ এনে পুকুরে ঢালবে। বিশাল এক কীর্তি হবে সেটা। সকলের অংশগ্রহন প্রয়োজন।

রাজার আদেশ না মানলে চলে না। তবে গোপনে না মানলে রাজার কি করার আছে। একজন ঠিক করল সবাই যখন দুধ ঢালবেই সেখানে আমি নয় এক হাড়ি পানিই ঢাললাম। কে ধরবে ?

পরদিন দুধ ঢালা উসব শুরু হল। এবং, অনুষ্ঠান শেষে দেখা গেল সেটা পুরোপুরি পানির পুকুর।

এখানে রাজা দুধের পুকুর বানাতে যাননি তবুও গল্পটা বলতে হল।

পেয়াজের দাম এক সপ্তাহে কেজিপ্রতি বেড়েছে ১৪ টাকা। এর আগে বেড়েছিল চালের দাম, কোন ব্যাখ্যা ছাড়াই। তার আগে বেড়েছিল চিনির দাম। সরকার নিজেই ঘোষনা দিয়ে দাম বাড়িয়ে সেটা স্থায়ি করেছেন। তারও কোন ব্যাখ্যা নেই। আজ অমুক, কাল তমুক, পরশু সমুক, ধারাবাহিক পদ্ধতি চলছে ধারাবাহিক নাটকের মত। আর সবকিছুর পেছনে যারা দায়ী তাদের গালাগালিও চলছে। সিন্ডিকেট, সিন্ডিকেট আর সিন্ডিকেট। আজ একদল লাভ করে তো কাল আরেকদল। শতশত, হাজার হাজার পর্বের নাটক তৈরী করে যাচ্ছে তারা। আর টিভি দর্শকের মত দেখে চলেছে নাগরিক।

এই একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল পৃথিবীর আরেক প্রান্ত আর্জেন্টিনায়। তাদের পছন্দের খাবার টমেটোর দাম হঠা করে বেড়ে গেল। তবে তারা সিন্ডিকেট খোজার জন্য গোয়েন্দা লাগায়নি। সরকার-মন্ত্রী-পুলিশ-র‌্যাব-এফবিসিসিআই কারো কাছে ধর্না দেয়নি। তারা জানে যেখানে শতশত কোটি টাকার লাভের বিষয় জড়িত সেখানে কেউই হাত গুটিয়ে বসে থাকে না। লাভের অংশ সকলের ঘরেই যায়।

তাদের পদ্ধতি ছিল একেবারে সহজ। ঘোষনা দেয়া হল কেউ টমেটো কিনবে না। একেবারে হাতেনাতে ফল। টমেটো বিক্রেতারা সাথেসাথেই বুঝে গেল কি করতে হবে। কোনমতে বিক্রি করতে পারলে চালান রক্ষা পায়।

বাংলাদেশের মানুষ যদি একমাস পেয়াজ না কেনে তাহলে কি হতে পারে ? পেয়াজ না খেয়ে কেউ মারা গেছে, এমনকি অসুস্থ হয়েছে এমন উদাহরন অন্তত আমার কাছে নেই।

কথা হচ্ছে, দুধের পুকুর তৈরীর গল্প এদেশের। আর্জেন্টিনা কিংবা অন্য দেশের না। এদেশেই মানুষ আশা করে সরকার-মন্ত্রী-র‌্যাব-পুলিশ-ব্যবসায়ীরা পুকুরে দুধ ঢালবে আর তারা মনের সুখে সেই পুকুর ভোগ করবে। যা জানা নেই তা হচ্ছে দুধের কখনো পুকুর হয় না। যদি বানাতেই হয় তাহলে কাজটা নিজেকেই করতে হয়।

যদি মনে চায় As you like it

Oct 7, 2009

আমেরিকা একদিনে আমেরিকা হয়নি সেখানেও একসময় বহুবিবাহ বন্ধের জন্য আন্দোলন করতে হয়েছে তাদেরই একজন ছিলেন মার্ক টোয়েন একদিন একজন তারকাছে বহুবিবাহের বিরুদ্ধে যুক্তি কি শুনতে আগ্রহ প্রকাশ করল তিনি বললেন, কোন ব্যক্তির পক্ষে দুজনের কর্তৃত্ব মানা সম্ভব না

এক ব্যক্তি যদি একাধিক ব্যক্তিকে নিয়ন্ত্রন করেন সেটা বাস্তবসম্মত কিন্তু বিপত্তি তখনই যখন দুজন ব্যক্তি একজনকে নিয়ন্ত্রন করতে চায় প্রমান করতে চাইলে এক টিভির সামনে দুজনের হাতে দুই রিমোট দিয়ে বসিয়ে দিন আর যদি দুইয়ের অধিক হয় তাহলে তো কথাই নেই। নাটকটা সেখানেই শুরু হবে।

দেশ চালানো টিভি চালানোর চেয়ে কঠিন নিশ্চয়ই (নাকি সহজ ? আমি নিশ্চিত নই।)। বিষয় হচ্ছে, দেশের চালক একজন থাকাই ভাল। অন্তত বাস্তবসম্মত। যদি কোন কারনে চালক একাধিক হয় তবেই বিপদ। বোঝা যায় না কখন কার নির্দেশে কি ঘটছে। ঘটাচ্ছেন সবাই। একই সাথে। কিন্তু ঘটছে কোনটা সেটাই কথা। আদালত রায় দিচ্ছে, সরকার ঘোষনা দিচ্ছে, ব্যবসায়িরা ব্যবসা করছে আর জনগন জীবনযাপন করছে। সবই ঘটছে একসাথে।

বিষয়টি আরেকটু খোলাসা করা প্রয়োজন। আদালত বলেছে নদীর দখলদারিত্ব মুক্ত করতে হবে। তাদের দায়িত্ব সেটুকুই। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কঠোরভাবে সেটা করা হবে। শর্ত পুরন না করলে কোন বেসরকারী আবাসন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হবে না। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেছেন তারা অনেক শক্তিশালি, তাদের অনেক দাপট। পুলিশ এবং প্রশাসন এখানে ওখানে ভাঙচুর করে যায়গা খালি করেছে। দখলবাজরা পরদিনই আবার দখল নিয়েছে। আর আবাসনের দায়িত্ব যারা নিয়েছেন তারা এখন দেশে থেমে নেই, নিউইয়র্কেও মেলা করছেন। কেউই কাজে ফাকি দেননি। দায়িত্বে অবহেলা করেননি একজনও।

কিংবা অন্যদৃষ্টিতে দেখুন। পথ হবে পথিকের এই স্লোগান নিয়ে রাজপথ মুক্ত করা হবে, একেবারে স্পষ্ট ঘোষনা। দিন-তারিখের হিসেবে সেটা শুরু হয়ে গেছে (কারো চোখে পরেছে কিনা জানা নেই), ফুটপাত দখলকারিদের একজনও নড়েনি, তারা কর্মসংস্থানের অধিকার বজায় রেখেছে, আর পথিক পথ বের করে নিজের পথে চলেছেন। নিজের পথ খুজে নেয়ার দায়িত্ব তারই।

চাদাবাজি-টেন্ডারবাজি বন্ধ করার জন্য কঠোর বার্তা পৌছে দেয়া হয়েছে গ্রামে-গঞ্জে, যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতাদের কাছে। দলের পরিচয়ে গ্রেপ্তার এড়ানো যাবে না। যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

ঢাকার দীর্ঘদীনের বাসিন্দারা হয়ত একজন হকারকে দেখে থাকবেন। হাটতে হাটতে তিনি সরলভাবে হাক দেন, মনে চাইলে নেন, না চাইলে না নেন।

তিনি এর বাইরে আর কিছু বলেন না। যার মনে চায় সে কেনে। এমন সরল বক্তব্য হয় না। আদালত রায় দিয়েছে, সরকার ঘোষনা দিয়েছে, প্রশাসন কর্মসুচি ঘোষনা করেছে, পুলিশ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে।

আপনি বলতে পারেন আসলে চালক একাধিক সেকারনে এটা ঘটছে। অথবা এই হকারের উদাহরন যথার্থ মনে করতে পারেন।

আমার নির্দেশ আমি দিয়েছি। আপনার মনে চাইলে মানেন, না চাইলে না মানেন।

একদিনের চিড়িয়া

Oct 3, 2009

বাঘ-সিংহ-জিরাফ- চিতাবাঘ সব একেএকে বিদায় নিচ্ছে কবে শুনব সেখানে মডেল টাউন গড়ে উঠেছে আগেই অন্তত একবার ঘুরে আসা উচিত চিড়িয়াখানায় একবারও চিড়িয়াখানায় যাব না তাও কি হয়! একদিন মিনিবাসের চিড়িয়াখানা’ ‘চিড়িয়াখানাডাক শুনতে শুনতে তাতে উঠেই পরলামক্ষতি কি, খাঁচার মধ্যে ঢুকিয়ে তো দেবে নাসেখানে রাখলে খাওয়ানোর দায়িত্বও নিতে হবেআগের আপদরাই যখন মরছে তখন আর নতুন করে আপদের দায়িত্ব নেবে কে কাজেই ঘোড়ায় চড়িয়ে মর্দ হাটিয়া চলিল, আমিও মিনিবাসে চড়ে হাটিয়া চলিলাম এবং একসময় পৌছেও গেলাম

যেখানে নামলাম সে যায়গাটা দেখে চোখ জুড়িয়ে গেলচমকারএটা কি ঢাকা শহর! এমন যায়গা দেখতে আমি প্রতিদিন আসতে পারিচারিদিকে শুধু সবুজ আর সবুজশুধু গাছপালাশুনলাম পাশেরটির নাম বোটানিক্যাল গার্ডেনওখানে ঢুকতে পয়সা লাগে নাঢুকে ইচ্ছেমত ঘুরে বেড়ানো যায়, বসে থাকা যায়, হাওয়া খাওয়া যায়, এমনকি দুর থেকেই দুএকজনকে দেখলাম বসে থেকে একটা করে ঘাস তুলে মুখে দিচ্ছেসত্যিই চমকারচিড়িয়াখানা থেকে বের হয়েই ওখানে ঢুকতে হবে

ঢাকা চিড়িয়াখানা, মীরপুরএইই লেখা আছে এক যায়গায়বেশ কিছুটা উঁচুতেঅনেক দুর থেকে দেখা যায়সাদাটে পিলার দিয়ে যতটা সম্ভব উচু করা হয়েছেআমার মনে হল রঙটি বোধ হয় অন্যরকম হলে ভাল হতচারিদিকে সবুজের মধ্যে সাদা, কেমন যেন চোখে লাগেছবিতে অন্য দেশের চিড়িয়াখানা দেখেছিসেগুলি কেমন যেনচিড়িয়াখানা বলেই মনে হয়এটা মনে হচ্ছে সার্কাসতারাওতো বাঘ, হাতি নিয়ে এক যায়গায় আসন গাড়ে, নানারকম খেলা দেখায়এখানেও কি খেলা দেখা যাবে ?

চারিদিকে তাকালামবেশ কয়েকটি রিক্সা দাঁড়িয়েযার যেভাবে খুশীতবে বেশীরভাগই দাঁড়িয়ে থাকা মানুষছোট ছেলেমেয়ে খুব একটা দেখলাম না, বাদামবিক্রেতা এবং হাতপাতাগুলি ছাড়াহয়ত সবারই দেখা হয়ে গেছে, আমার মত যারা বয়স্ক, অথবা তরুনতরুনী তাদেরই হয়ত দেখা হয়ে ওঠেনিআর আছে ঢাকায় নবাগতরাতা পোষাক আষাক দেখেই তাদের চেনা যায়আমি ওদের দলে নইওদের গায়ে এখনো ঢাকার গন্ধ লাগেনিঢাকায় আসলে প্রথমেই ঢাকার গন্ধ মাখতে হয়একজন ভিক্ষুককেও রেগে আরেকজনকে বলতে শুনেছি, ‘কদিন হল এসেছিস? আমি দশ বছর ধরে ঢাকায় ভিক্ষে করি

একযায়গায় দেখলাম লম্বা লাইনবুঝলাম ভেতরে ঢুকতে হলে ওই লাইনে আগে দাঁড়াতে হবে, টিকিট কিনতে হবেদাঁড়ালাম এবং একসময় ছোট্ট কাগজের টিকিটও হাতে পেলামআশেপাশে বাদাম-লজেন্স-মোয়া বিক্রেতাদের দিকে ভ্রুক্ষেপও করলাম নাএকটি রোগা পটকা ছেলে যেন বলল ভেতরে যাওয়ার টিকিটএটা আবার কোন ধরনের আবদারভেতরে ঢুকে কাজ নেইবাইরেই থাকলোকজন কত দুরদুরান- থেকে এসেছে একটু বিনোদনের জন্য, সেখানে যেয়ে তাদের বিরক্ত করার দরকারটা কি ? বাইরেই ভাল আছিসঅন্তত আছিস তো এক যায়গায়আর পারিশ তো কোন ফুটোফাটা দিয়ে ঢুকে পর ভেতরে, আমাকে জ্বালাতন করিশ কেন বাবা

আমি ঢুকে পরলামএদিক ওদিক তাকিয়ে দেখি কয়েকটা পেয়ারা গাছসোজা এগিয়ে গেলামবেশ ভীড় দেখতে পাচ্ছি এক যায়গায়আমিও ভিড়ে মিশে গেলামমোটা মোটা লোহা দিয়ে ঘেরা যায়গাবেশ দুরে একটা বাঘ বসে রয়েছেহ্যাঁ, বাঘই তোবসে না, শুয়ে রয়েছেমনে হল ওঠার শক্তি নেইএভাবে শুয়ে থাকা বাঘ কেউ টাকা দিয়ে টিকিট করে দেখে? দুএকজন খোঁচাখুচি করে তাকে জাগানোর চেষ্টা করল, কাজ হল নাআশা নেই দেখে সময় নষ্ট না করে সামনে এগোলাম

দেখি আরেকটি খাঁচাসেখানেও বাঘএর অবস্থাও তথৈবচবোটকা গন্ধ ছড়াচ্ছেবাঁদিকে তাকিয়ে দেখি কয়েকটা হরিন হেঁটে বেড়াচ্ছেযাহোক, নড়াচড়া তো করছেকিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থেকে তাদেরই হাঁটাচলা দেখলাম

বাঁদরের খাঁচা কোথায় ? ওটাই তো আসল দেখার যায়গাআমাদের পুর্বপুরুষ কেমন ছিলেন না দেখলে, তাদেরকে একটু না খোঁচালে কেমন হয়আমাদের এত দুঃখকষ্টের জন্য তারাই দায়ীকে বলেছিল তাদেরকে লেজ খসিয়ে জামাকাপড় ধারন করতেগাছের ডালে থাকলে দিব্বি ফলমুল খেয়ে কাটানো যেত, আর বাঘ হরিন দেখার জন্য টাকা খরচ করে টিকিট কিনতে হত নাদিব্যি দেখা যেত, যখন তখন

কিন্তু বাঁনরের খাঁচা আমি খুঁজে পেলাম নাএকজনকে জিজ্ঞেস করায় এমনভাবে তাকালেন যেন আমি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজে কোথায় জিজ্ঞেস করছিকি আর করারাগ করে বেরিয়ে গেলেও যেতে পারি, কিন্তু টাকা খরচ করে ঢুকেছি, কিছুটা সময় না কাটালে টাকা উসুল হয় কিভাবেতখনই দেখলাম ভিড়, তারপর বানরের খাচা আমিও যোগ দিলাম ভিড়ে

সত্যিকারের ভিড়টা এখানেই যে যেভাবে পারে মুখ ভ্যাঙচাচ্ছে, অঙ্গভঙ্গি করছে একটা বাচ্চা বানর সেটা দেখার জন্য খাচা ধরে ঝুলে আছে পেছন থেকে সম্ভবত তার মা তাকে নামানোর চেষ্টা করছে কিন্তু কাজ হচ্ছে না আমি যেন শুনতে পেলাম তার বক্তব্য, মা দ্যাহ, দ্যাহ কেমুন চিড়িয়া আইছে

তাড়াতাড়ি সরে গেলাম সেখান থেকে এবারে যেদিকটায় ভীড় কম সেদিকে হাঁটতে শুরু করলামলেক না পুকুর কি বলব জানি না, তার ধার দিয়ে হেঁটে সবুজ ঘাঁসে ঢাকা একটা যায়গায় পৌছে গেলামবাহ্‌, বেশ যায়গাসামনের সব দৃশ্য দেখা যায়খাঁচার ভেতরের এবং বাইরের, সবইসেখানেই বসে পরলাম

আমার কপালে আসলে সুখ নেইএকটু পরই একজন যুবক এসে চটপটি খাওয়ার নিমন্ত্রন জানালঘাড় ঘুরিয়ে দেখলাম সেখানে রঙচঙে টিন দিয়ে বানানো একটি ঘরবুঝলাম তার মতলবচটপটি নামের বস্তুটি খেয়ে পকেটের টাকা তার পকেটে পাঠানো প্রয়োজনআমি হাসিমুখে জানালাম যে আমার ও বস্তু খাওয়ার কোন আগ্রহ নেইযুবকটি দেখলাম ভদ্রতার ধার ধারে নারাগতভাবে বলল, ‘তাইলে এইহানে বসছেন ক্যান ?’

আমি চারিদিকে একবার ভাল করে তাকিয়ে দেখলামএ যায়গাটির মালিকানা তাদের বলে মনে হল নাআর আমি তো ভেতরে ঢোকার জন্য রীতিমত টিকিট কেটেছি, কাজেই এখানে বসার অধিকার আমার আছেআলব আছেআমি তাকে সেটা বলার জন্য মুখ খুললামসাথে সাথেই থামতে হল আমাকেআরেকজন, আমার পাশেই বসেছিলেন, বললেন, ‘খান না, অসুবিধে কি? না খেলেও টাকা দিতে হবেওরা অনেক টাকা দিয়ে এ যায়গায় দোকান দিয়েছে

বুঝলাম তিনি ভুক্তভোগীতার পাশেই রয়েছে একটি ছোট প্লেটএখানে বসার মাশুল হিসেবে তাকেও গলাধরন করতে হয়েছে স্বে বস্তুতিনি নিষয়টি আরো স্পষ্ট করে দিলেন, ‌একজোড়া ছেলেমেয়ে তেহাড়ি খেয়ে আটশ টাকা বিল দিয়েছে

এরপর যা ঘটল তার বিররন দেয়া কষ্টকরতিনদিনের নাকি তিন সপ্তাহের, নাকি তিনমাসের পুরনো কিছু দ্রব্য এনে হাজির করা হল আমার সামনেএকবার ভাবলাম সামনের পানিতে সেগুলি ফেলে দেইআবার মনে হল এখানে অনেক বিরল প্রানী রয়েছেবহু টাকায় আমদানী করাকুমির, নাকি জলহস্তিজলহস্তি হলে তো সুদুর আফ্রিকা থেকে আনাএগুলি জাতিয় সম্পদআমার দোষে তাদের যদি ক্ষতি হয়, যদি অক্কা পায়, নিদেন পক্ষে ডায়রিয়া হয়আমি প্লেটটি সেখানেই রেখে দাম দিয়ে উঠে পরলাম এবং টিকিটের টাকা উসুল না করেই বাইরে এসে পরলামবোটানিক্যাল গার্ডেনের দিকে একবার তাকানোর ইচ্ছেও হল না

 

Browse