তালি একহাতেই বাজে

Sep 29, 2010
বকারামের বক্তব্যে অনেকেই নিশ্চয়ই বিরক্ত, অনেকে ক্ষুব্ধ। সত্যি বলতে কি, বকারামেরও বহুবার মনে হয়েছে অকারনে সময় নষ্ট করার প্রয়োজন কি। শ্রোত যেদিকে টেনে নিয়ে যায় সেদিকে যাওয়াই উত্তম। অন্যদিকে যাবার চেষ্টা করলেই শ্রম দিতে হয়। সফল হওয়ার নিশ্চয়তা নেই। তারপরও,
তারপরও কথা থেকে যায়। ডাষ্টবিনের পাশে অবস্থান করে ডাস্টবিনের গন্ধ ভুলে থাকা যায় না। তাকে সুগন্ধ মনে করে তৃপ্তিলাভ করা যায় না। পাশের বাড়িতে আগুল লাগলে একসময় তা নিজের বাড়িতে পৌছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন পাবনায় একহাতে তালি বাজেনি। জেলা প্রশাসক একপক্ষ, আরেকপক্ষে যুবলীগ-ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগ। জেলা প্রশাসক নিজের পছন্দমত লোক ঢুকাবেন সরকারী চাকরীতে আর অন্যরা চুপ করে বসে থাকবে হাত গুটিয়ে তাতো হয়না। সেজন্যই ওই তালির ব্যবস্থা। তারা শুরু করেছে, শেষ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। রাতারাতি জেলাপ্রশাসক, পুলিশ সুপার বদল। পাবনা থেকে মনপুরা। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার ব্যাখ্যা, এটা সংকেত। অন্যরা দেখে শিক্ষা নিন।
সেখানেই একটু গিট্টু লেগেছে। তালি একহাতে বাজা ভাল, না দুহাতে বাজা ভাল।
আমাদের সাংসদরা সংসদ অধিবেশনে খুব দক্ষতার সাথে তালির জন্য টেবিল ব্যবহার করেন। তখন একহাতই যথেষ্ট। বলতে কি, উপকারী। অন্যপক্ষ তাতে অংশ নেয় না। জেলা প্রশাসককে বদলী করা কিংবা দলের মধ্যে থেকে চাকরী দেয়া এগুলিও ওই একহাতে তালি বাজানোর মতই। অন্যহাত যদি তালি বাজাতে চায় তাহলেই বিপত্তি। প্রয়োজনে আরেকহাত অকেজো করে দেয়া হবে যদি তালির প্রতিযোগিতায় নামে।
এতেও কিছু যায় আসে না। তালি জিনিষটা খারাপ না। আমার শংকা আসলে অন্য যায়গায়। সেই পুরনো উদাহরন আবারো উল্লেখ করতে হচ্ছে, একসময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাসিম সাহেব পুলিশের পিটুনি খেয়ে হাসপাতালে। তারপর একসময়ের স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী বাবর সাহেব হাজতে-রিমান্ডে-জেলে।
যদি কোনভাবে দিনবদল হয়!
পুলিশের সাইকোলজী বোঝা খুব কঠিন। যখন যার তখন তার, এটা একটা দিক। আবার এটা করতে গিয়ে যা জমা হয় তা একই নিয়মে কাজে লাগে পরবর্তীকালে। তারা কাজ করেন সরাসরি জেলা প্রশাসক-পুলিশ সুপারের কথামত, কখনোই রাজনৈতিক নেতার কথামত না। এখন যারা একপক্ষে তারা যদি কোনভাবে অন্যপক্ষে যান তখন কি হবে ? যে পুলিশ সদস্য ছাত্রলীগের নেতার পিটুনি খেয়েছেন তিনি কি সেটা ভুলে গেছেন ? নাকি যাবেন ? নাকি অপেক্ষা করবেন বিপরীত হাওয়ার ?
আওয়ামী লীগের ভেতর থেকে চাকরী দেয়া হবে, একথারই বা অর্থ কি ? দেশের শতকরা কতজন আওয়ামী লীগের ? ভোটের সময়ও কোন হিসেবই ৪০ ভাগের বেশি হয়না। বাকি ৬০ ভাগ চাকরী ছাড়া, টেন্ডার ছাড়া চলতেই থাকবেন এটা কতটুকু বাস্তবসম্মত।
বিমানমন্ত্রীকে নিয়ে জোরালো খবর হয়েছে বেশ কিছুদিন। তার প্রতিদ্বন্দী বিশাল, শতকোটি-হাজার কোটি টাকার মামলা। তিনি নিজে আবার সরাসরি লীগের কেউ নন। তাকে হুমকি দেয়া হয়েছে মোবাইল ফোনে, এসএমএস পাঠানো হয়েছে। তার বড় বিপদ হবে, আগেই জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
ডিসি-এসপি-মন্ত্রী যখন হিমসিম খাচ্ছেন তখন সাধারন মানুষ তো পোকামাকড়।
শংকাও সেকারনেই।
সরকারের কাছে অনুরোধ, তালি একহাতে বাজানোর বিষয়টি চিরস্থায়ী করার ব্যবস্থা করুন। কোনভাবেই যেন দুহাত একসাথে না হয়। নইলে বাঘে-মহিষের লড়াইয়ে নলখাগড়ার প্রাণ যাবে অকারনেই।

সেরা তিন পেশা

Sep 26, 2010
সব মানুষের লক্ষ থাকে সেরার দিকে। একজন খেলোয়ার চান সেরা খেলোয়ার হবেন, একজন ব্যবসায়ী চান সেরা-সফল ব্যবসায়ী হবেন। কাজেই পেশা বেছে নেয়ার সময় সেরা পেশা বেছে নেবেন এটাই স্বাভাবিক। দেশ হিসেবে যারা সেরা (অনেকের আপত্তি থাকতে পারে। সব দেশই নিজের দেশকে সেরা মনে করে। কিন্তু বাস্তবতা এটাই, এখানেও বিচারের পদ্ধতি রয়েছে) তাদের বক্তব্য কি খোজ নেয়া যেতে পারে।
পশ্চিমা দেশে নাম উল্লেখ করে বলা হয় তিন পেশা, শিক্ষক, নার্স এবং পুলিশ। এরাই নাকি সবথেকে গুরুত্বপুর্ন। এদের দিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। এদের হাতেই নির্ভর করে সমাজ।
উল্লেখ করা যেতে পারে এখানে বলা হয়েছে নার্স, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার জাতিয় কিছু বলা হয়নি। শিক্ষক বলায় ধরে নেয়া যায় বুদ্ধিজীবী-নেতা শিক্ষকও বুঝানো হয়নি। এমনকি পুলিশ বলতেও যারা পথে দায়িত্ব পালন করে তাদেরই বুঝানো হয়েছে। এমন পুলিশ প্রধানের কথা বলা হয়নি যিনি সগর্বে বলতে পারেন অমুক সাংসদের গাড়িতে তার পিস্তল ব্যবহার করে খুন করা হতে পারে, তিনি নির্দোষ। তার বিরুদ্ধে কোন প্রমান নেই। তাকে হয়রানী করব কেন ?
একে যদি চোখ ধোয়া বলতে চান (এরথেকে ভাল বাংলা আমার জানা নেই) তাহলে বলতেও পারেন। সারা বিশ্ব জানে বুশ-ওবামা মুখে যত কথাই বলুন তারা আসলে চলেন ওই ম্যাকডোনাল্ডস-কোকাকোলা-মাইক্রোসফট-এপলের কথায়। তারা যা করতে বলেন সেটাই করেন। আর সামনে এসে সাফাই গান জনগনের সেবার। কারন ভোটার ওই জনগনই। সরকার চালানোর টাকা তারাই দেন। আমাদের জানা উদাহরন, সাংসদরা বলতে পারেন তারা সবচেয়ে দামী আনবেন ট্যাক্স দেবেন না, নিজেদের আয়ের আয়কর দেবেন না কারন তারা সাংসদ। তাদের নামে মামলা করতে হলে সরকারের অনুমতি নিতে হবে। আর অবাক হয়ে বলবেন, জনগন ট্যাক্স দেয় না কেন ? এদেশে কি মানুষ আয় করে না! সবাই শুধু ক্রেতা!! কোটি মানুষকে ট্যাক্সের জালে আটকানো হবে।
আগের কথায় ফেরা যাক। দেশ চালানোর জন্য প্রশাসন প্রয়োজন। সেজন্য প্রয়োজন প্রশাসক। প্রতি জেলায় রয়েছেন একজন করে। এমনকি অতিরিক্ত নামে অতিরিক্তও থাকেন। যদিও অতিরিক্ত প্রয়োজন কি আমার মাথায় ঢোকে না। যদি অতিরিক্তই মনে করে থাকেন তাহলে তাদের বেতন-ভাতা দিয়ে পুশছেন কেন ?
তা সেই জেলা প্রশাসকের আবার অন্য অনেকরকম ক্ষমতাও আছে। সেটা আসলে কি আমার জানা নেই। পত্রিকায় চাকরীর জন্য পরীক্ষার কথা উল্লেখ করা হয়েছে কাজেই ধরে নিচ্ছি কে চাকরী পাবেন সেটা নির্ধারন করা তাদের দায়িত্ব। এমন গুরুদায়িত্ব যার থাকে তাকে সাবধানী হতেই হয়। কোনমতে অযোগ্য লোক যেন সুযোগ না পায়। অন্তত যিনি চাকরী পাবেন তিনি কোন দলের সে খোজটা তো নেবেন! প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তো স্পষ্ট করেই বলেছেন, দলের প্রার্থী যদি সবচেয়ে খারাপও হয় তাহলেও দলের বাইরে কেউ যেন চাকরী না পায়।
পাবনার জেলা প্রশাসক সম্ভবত খবরের কাগজ পড়েন না। কথাটা তার দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে। সেকারনেই-
হ্যা, সেকারনেই প্রতিবাদ। ভাংচুর। পরীক্ষা বাতিল।
দেশে সেবকের অভাব নেই। দেশ প্রেমিকের অভাব নেই। তারা কখনোই অযোগ্য ব্যক্তিকে চাকরীতে যাওয়ার সুযোগ দেবেন না। বরং অযোগ্য জেলা প্রশাসককে চাকরী ছাড়তে হবে।  আপনারা সাংবাদিকদের সামনে এসে চোখের পানি ফেলবেন ফেলুন, আমরা দেখিয়ে দেব ক্ষমতা কার হাতে। দেখেছেন পুলিশ, র‌্যাব, কতরকম লীগ। আর নেতা-মন্ত্রী তো আছেনই। দলের বাইরে আছে কেউ ? দল যার দেশ তার, চাকরী তার। সব যায়গায় লিষ্ট পাঠানো হয়েছে। সেটা দেখে ঠিক করবেন কে চাকরী পাবে, কে পাবে না। পাবনার জেলা প্রশাসককে দেখেও শিক্ষা হয়নি ? আপনে কেডা ? প্রাণ গোপাল দত্ত! নিজের প্রাণ বাচান।
সত্যিকারের গুরুত্বপুর্ন পেশা আসলে ওই তিনটিই। পুলিশ, নার্স আর শিক্ষক। কনষ্টেবল থেকে পুলিশ প্রধান এভাবে বিচার করলেও খুব হেরফের হয় না। সেইসাথে নার্স থেকে ডাক্তার, শিক্ষক থেকে ভিসি। বাচাল বাঙালী হলে এরসাথে উকিল থেকে বিচারক একথাও যোগ করতে পারেন।
দেশ চালানোর জন্য এদের একই সুরে বাধতে হয়। বেসুরো কেউ ঢুকলে মজা থাকে না।
সংবাদমাধ্যমগুলো অকারন হাউ-কাউ করছে কেন ? এমন প্যাদানি দেব-

বহু নৌকায় বহু পা

Sep 20, 2010
দুই নৌকায় পা দেয়ার কথা আমরা সবসময়ই জানি। এতে নাকি নিজের ক্ষতি হয়। কোন নৌকাতেই যায়গা পাওয়া যায় না।
আসলে একেবারে বিভ্রান্তিকর কথা। সম্ভব হলে শুধু দুই নৌকা কেন, বহু নৌকায় বহু পা দেয়া নিরপদে থাকার লক্ষন। যদিও ভাল করেই জানি রাবনের ১০ মাথা কিংবা দুর্গার ১০ হাত উল্লেখ থাকলেও কারো দুইয়ের বেশি তিন পায়ের উল্লেখও নেই। তাহলেও ...
যাদের প্রয়োজন নেই তাদের কথাই আগে বলে শেষ করি। ধরুন সরকারী চাকুরীজীবী। তারা এক নৌকায় পা ঝুলিয়ে বসে অন্য নৌকার থেকে কিছু পেতে পারেন। কথায় বলে, সরকারী চাকরী এমন জিনিষ যা একবার হাতে পেলে কখনো হাতছাড়া হয়না। চুরি-ডাকাতি করলেও না। কাজেই অনায়াসে এক নৌকার বিষয়ে নিশ্চিন্তে থেকে আরেক নৌকার দিকে হাত বাড়াতে পারেন (কিংবা পা)।
অন্য অনেকের জন্যও এই উদাহরন প্রয়োগযোগ্য। যেমন ধরুন ডাক্তার। অনায়াসে প্রতিমাসের বেতন পকেটে পুরে রোগিকে পছন্দের ক্লিনিকে ট্রান্সফার করতে পারেন। কিংবা শিক্ষক। সেখানেই একই কথা খাটে।
কিন্তু এরা সংখ্যায় কজনইবা। এদের বাইরে মানুষের সংখ্যাই বেশি। তাদেরই প্রয়োজন বহু নৌকা। ধরে নিচ্ছি আপনিও এদেরই দলে।
ধরুন চাকরী খুজছেন। ডিজিটাল দেশে আপনি ডিজিটাল পথেই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন। কেউ বলল ডাটাবেজ শিখুন, ভাল চাকরী পাবেন। জানেন না, একসময় সব ডিজিটাল হবে। ডিজিটাল মানেই ডাটাবেজ। ক্যারিয়ারের জন্য এরচেয়ে ভাল কিছু হয় না।
কাজেই আপনি লেগে গেলেন। সেইসাথে খোজ করতেও শুরু করলেন কোন অফিসে ডাটাবেজ প্রোগ্রাম দরকার। তার টিকির দেখাও পেলেন না। এরই মধ্যে আরেকজন এসে জানিয়ে গেল, আরে এনিমেশন শেখেন। টিভিতে বিজ্ঞাপন দেখেন না! এক বিজ্ঞাপন তৈরী করলে কোটি টাকা। আপনি নয় দশ লাখে করবেন। তাতেও না পেলে পাচ লাখে, নয়ত এক লাখে। সেটাই বা কম কি ?
আপনি খোজ করে তাতেও যোগ দিলেন। একটা সম্ভাবনা বাড়ল। সেইসাথে কাজের খোজেও চোখ রাখলেন। কিন্তু হায়, এদিকেও নো ভ্যাকেন্সি। যারা যায়গা দখল করেছেন তারা একচুলও সরতে রাজী না। আপনে কেডা ? ভাগ বসাইতে আইছেন। আমাগো এনিমেশন দরকার হয় না। আকাশে তারকা-নক্ষত্র আছে আছে না! না চিনলে খররের কাগজ দেখেন। প্রতিদিন কয়েকজনের কইরা সাক্ষাতকার ছাপা হয়। কে কি খাইছে, কি স্বপ্ন দ্যাখছে, কার মন খারাপ। তানুষ তো তাগোই চায়..
আপনি খুববেশি মনখারাপ করার সময় ফেলেন না কারন ততক্ষনে আরেক নৌকার সন্ধান পেয়েছেন। অটোক্যাড। খবরের কাগজ, টেলিভিশন সব যায়গায় খালি বাড়ি আর হাউজিং আর এপার্টমেন্ট। হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ। ওরা তো অটোক্যাডেই কাজ করে। একবার শিখে নিন সাথেসাথে লুফে নেবে।
এভাবেই আপনি বিভিন্ন নৌকায় উঠতে থাকলেন। একে একে ভিডিও এডিটিং, গ্রাফিক ডিজাইন, মাল্টিমিডিয়া, ডিজে, আউটসোর্সিং, ওয়েব ডিজাইন ...
ডিজিটালে না গিয়ে যদি এনালগে যেতে চান তাহলেও একই কথা। সেখানেই বহু নদী, বহু নৌকা। উদাহরন প্রয়োজন নেই।
সব নৌকায় চড়তে শিখে আপনি এখন বহু নৌকার মাঝি। যখন যেদিকে প্রয়োজন তখন সেদিকে যাবার জন্যই রেডি। আপনি অমুক কাজ পারেন না একথা বলার মত কেউ নেই।
এজন্যই বলা, বহু নৌকায় বহু পা। অনেকগুলি পা তৈরী করুন যেন কোন নৌকা হাতছাড়া না হয়।
নৌকার দেখা যে কোথায়, কিভাবে পাবেন সেটা আমার জানা নেই।

আদালত প্রয়োজন নেই

Sep 18, 2010
দেশে নাকি বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ১১ লক্ষ। ১৫ কোটি মানুষের দেশে সংখ্যাটা সামান্যই। প্রতি মামলায় একজন বাদি একজন বিবাদী হিসেব করলে সরলভাবে হিসেব দাড়ায় এই ১১ লক্ষ মামলার সাথে ২২ লক্ষ মানুষ জড়িত। একেবারেই নগন্য সংখ্যা। প্রতি ৬৮ জনে একজন।
তারপরও, মামলা মানেই ঝামেলা। স্বাভাবিক জীবনযাপনের স্বার্থে, সুস্থ-স্বাভাবিক সমাজের স্বার্থে এসব জটিলতা দুর করা উচিত। মানুষ দেশের উন্নতি করবে, কাজে ব্যস্ত থাকবে এটাই গ্রহনযোগ্য। তাহলে এইসব মামলা ঝুলিয়ে রেখে লাভ কি ?
বর্তমান সময়ে অবশ্য আমরা বেশকিছু ভাল উদ্দ্যোগ দেখেছি। আদালত বছরের পর বছর মামলা ঝুলিয়ে রাখে, প্রতি হাজিরাতে তাদের পকেটে টাকা যায়। সময় এবং অর্থ দুইই সাশ্রয়ের দায়িত্ব নিয়ে অনেক হাজার মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। অত্যন্ত ভাল উদ্দ্যোগ। গামা খুনের মামলাও বড় আদালতে যাওয়ার কথা ছিল। রাষ্ট্রপতি সেই ঝামেলা থেকেও মুক্তি দিয়েছেন সরাসরি মহানুভবতা দেখিয়ে। খামোখা সময় নষ্ট করে লাভ কি!
কিন্তু, ডাক্তাররা বলেন প্রতিকারের থেকে প্রতিরোধ উত্তম। অর্থা আপনি রোগে আক্রান্ত হলেন, তারপর চিকিসা করালেন, এরথেকে অনেক ভাল যদি আগেভাগে রোগ না হওয়ার ব্যবস্থা নেন। এটাই বা করা হচ্ছে না কেন ?
আশার কথা, এদিকেও ভাল লক্ষন দেখা গেছে। পুলিশ প্রধান বলেছেন সাংসদের পিস্তল ব্যবহার করে, তার গাড়ির মধ্যে খুন হলেও তিনি নির্দোষ। তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। খামোখা আদালতের ঝামেলায় গিয়ে কাজ কি। রায় তো আমরাই দিয়ে দিচ্ছি। উনি এক্কেবারে নির্দোষ।
বেশিকিছু বলার নেই। দেশ উন্নতির পথে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। সবাই দেশের জন্য মাথা ঘামান, দেশের জন্য কাজ করুন। ওসব মামলা-টামলা নিয়ে অযথা সময় নষ্ট করবেন না। খুন-খারাপি যা হোক সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য সরকার আছে, সাথে পুলিশ থাকলেই যথেষ্ট। আদালত দরকার কি ?
আপনারা ওসব ঝামেলা ছেড়ে দেশের সুন্দর ভাবমুর্তি তুলে ধরুন। ওইতো, প্রধানমন্ত্রীর সাথে শতজন একাজেই গেছেন জাতিসংঘের সভায় যোগ দিতে। তিন খ্যাতিমান কবি আবার দেশের স্বার্থে খরচ বাচাতে বিজনেস ক্লাসের টিকিট ফেরত দিয়ে সাধারন যাত্রী হিসেবে গেছেন। দেশের স্বার্থে কয়েক লক্ষ টাকা বাচিয়েছেন। কি মহত্ব। বাহবা, বাহবা। জোরে একবার হাততালি দিন।
উদাহরন থেকে শিখুন কিভাবে, কোন পথে দেশের উন্নতি।
আদালত, জেল, হাজত, রিমান্ড এসব বাতিল করতে বলছেন!
তাতে বহু লোকের কর্মসংস্থানে সমস্যা দেখা দেবে। বেকারত্ব বাড়বে। সেটা কি হতে দেয়া যায়!
ওগুলো বিরোধীদলের জন্য বরাদ্দ থাক। ওরাও এদেশের মানুষ। ওদেরও কিছু পাওয়ার অধিকার তো আছে।

যার নয়নে যারে লাগে ভাল

Sep 17, 2010
এমন সুন্দর বাক্য খুব কমই হয়। যে যাকে পছন্দ করে, কিংবা যে যা পছন্দ করে। অন্যের চোখে সেটা কেমন হল তাতে কি যায় আসে ?
যেখানে এই বক্তব্য একেবারে সহজ সরল সেই উদাহরনই দেখুন না কেন। বিশ-পচিশ-ত্রিশ বছর কিংবা আরো বেশি সময় ধরে বাবা-মা সবধরনের বিপদ আগলে ছেলে কিংবা মেয়েকে বড় করলেন। তাদের সেই সম্পর্কের উদাহরন দিয়েছেন চসার। ঘুমের মধ্যেও হাত বাড়িয়ে দেখেন নেয় পাশে আছে কিনা। তারপর,
সেই নয়ন যখন নিজেই দেখতে শুরু করল তখন সম্পর্ক পাল্টে গেল। অমুক মেয়েকে কিংবা অমুক ছেলেকে পছন্দ। তারজন্য দুনিয়ার সবকিছু ত্যাগ করতে পারি। বাবা-মা-পরিবার-বন্ধু তো তুচ্ছ বিষয়। সেই গল্পের কথা মনে আছে কি ? প্রেমিকাকে খুশি করতে মায়ের মাথা কেটে আনল প্রেমিক। ঘরে ঢোকার মুহুর্তে দরজায় পা আটকে আছড়ে পরল। মা বলে উঠল, ব্যাথা পেয়েছ বাবা!
এসব গল্পই। খুনের ঘটনা এত সহজে ঘটে না। দুচারটা খুনের ঘটনা যদি ঘটেও থাকে তাহলে পুলিশ সাথেসাথে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়। সত্যিকারের খুনিকে খুজে বের করে আইনের হাতে তুলে দেয়। আইন কয়েকবছর ধরে নাকানিচুবানি খাইয়ে তাকে তার অপরাধের প্রায়শ্চিত্ব করায়, তারপর তুলে দেয় জেলকর্তৃপক্ষের হাতে। তারপর তারা ...
বরং ওসব খুনাখুনি বাদ দিয়ে অন্য বিষয় দেখা যাক। এমনকি ওসব প্রেম-ট্রেমও বাদ থাক। একেবারে কাজের কথা।
আপনার কোন কাজ পছন্দ ?
আমি পেশার কথা বলছি। নিশ্চয়ই এমন পেশা যেখানে বহু টাকা পাওয়া যায়। এত টাকা যা গুনে শেষ করা যায় না। বলে প্রকাশ করা যায় না। সেই টাকা হাতে পেলে ... ওইযে টিভিতে যে দেখা, কি যেন নাম, ওর মত পোষাক পরে, অমন একটা বাড়ি কিনে, ওমন একটা গাড়ি কিনে ...
আমি জানি প্রত্যেক বাঙালীরই কোটিপতি হওয়ার শখ আছে। কিভাবে জানি না, কোনভাবে যদি হয়েই যায়। লটারীর টিকিট কেনা হয়নি তাতে কি, যদি প্রথম পুরস্কারটা পেয়েই যাই।
আবারও কথা দিক পাল্টাচ্ছে। মুল কথায় ফিরি।
কোন কাজ পছন্দ ?
এর কোন ফর্মুলা নেই। ফুটপাতের ব্যবসায়ী কিংবা দোকানের কর্মচারী মনে করে একদিন যদি বড় দোকানের মালিক হই। এই ব্যাটা যে ব্যবসা করে তারচেয়ে ভাল ব্যবসা করব। সারা দুনিয়াকে দেখিয়ে দেব ব্যবসা কিভাবে করতে হয় ...
দারোয়ান ভাবে, যখন মালিক হব তখন দেখিয়ে দেব দারোয়ানের সাথে কি আচরন করতে হয়। একটু ধানাই পানাই করলে এমন মসলা দেব ... ব্যাটা মানুষকে মানুষ মনে করে না ...
ড্রাইভার মনে বলে, আগে গাড়ির মালিক হই। ড্রাইভাররে তো চেন না। রাস্তায় বসাইয়া নিজে এসির নিচে বইসা চাইনিজ খাও, কেফসি খাও। আমি খাই ডাষ্টবিনের হাওয়া ... সময় আসুক ..
আর যে কম্পিউটারে হাত দেয় সে অবশ্যই ভাবে, একবার শিখে নেই। তারপর কোথায় বিল গেটস আর কোথায় উইন্ডোজ। ওসব দরজা-জানালা কেন, একেবারে দেয়াল-ছাদ পর্যন্ত ধ্বসিয়ে দেব। কেউ একবার দেখিয়ে দিলেই শিখে ফেলতে পারি। সেজন্যই শত্রুতা করে শেখায় না। খালি ধানাই-পানাই করে।
আসলে ভাললাগার জন্য নয়নে দেখা একমাত্র বিষয় না। হয়ত মুখ্য বিষয়ও না। অন্তত কাজ করার বিষয় যেখানে থাকে।
বস যদি কাজ করতে না বলে বলত এই টাকা নিয়ে যাও, ইচ্ছেমত খাও, ঘুরে বেড়াও, ঘুমাও, প্রেম কর। টাকা দরকার হলে একটা এসএমএস করে দিও। তাহলে তাকে ভাল না বলে কি উপায় থাকত ? কত সন্মান করতাম তাকে।
আসলে কেউ ভাল থাকতে চায় না, ভাল থাকতে দেয় না।
ভালর মুল সুত্র সেখানেই। যেটা শুনতে ভাল লাগে সেটা যদি কেউ বলে, যেটা খেতে ভাল লাগে সেটা যদি কেউ খাওয়ায়, যে জিনিষ পছন্দ সেটা যদি কেউ দেয়।
যার নয়নে যারে লাগে ভাল, কথাটা প্রেমের ক্ষেত্রেই মানানসই। সেখানেও প্রতিযোগিতা ...

এভাবেই প্রতিষ্ঠালাভ করতে হয়

Sep 8, 2010
এর মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হল। কোন মন্ত্রী যখন একথা বলেন তাকে গুরুত্ব দেয়ার রেয়াজ উঠে গেছে বহুদিন হল। প্রচলিত কথা, কুকুর কাউকে কামড়ালে খবর হয় না, কেউ কুকুরকে কামড়ালে খবর হয়। বিষয়টা তেমনই। তারপরও,
হ্যা, সবকিছুর পরও কিছু ব্যতিক্রম থেকে যায়। দৃষ্টি দিতে হয়। এইকথাও গুরুত্ব পাওয়ার দাবী করে কারন, কথাটা বলা হয়েছে বিশেষ এক অনুষ্ঠানে। কোর্টের রায়ে মৃত্যুদন্ড পাওয়া ২০ জন আসামীকে রাষ্ট্রপতি মানবতার উদাহরন সৃষ্টি করে ক্ষমা করার পর তাদেরকে ফুলের মালা দিয়ে বরন করার অনুষ্ঠানে।
এভাবেই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা যায়। সরকারদলের লোককে কোর্ট মৃত্যুদন্ড দেবে এটা কি আইন হতে পারে! একজন-দুজন না একবারে ২০ জন। তাহলে সেখানে দলের কিছু থাকে ?
খুন করা হয়েছে কাকে সেটাও বিবেচনায় আনা হয়নি। সেতো ওই দুনীতিবাজ চারদলীয় জোট সরকারের এক মন্ত্রীর আত্বীয়। তাকে খুন করায় অপরাধ কোথায়। সেতো মংগলের কাজ। সওয়াবের কাজ।
ওসব রাজনীতির কথা বরং থাক। রাষ্ট্রপতি দয়া দেখিয়েছেন এটাই বড় কথা। দয়ার চেয়ে বড় কিছু নেই। ক্ষমার চেয়ে মহত গুন নেই। আশা করা যায় তিনি তার স্ত্রীর খুনিদেরও ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। দেশে যখন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েই গেছে।
আপনি তর্ক করতে চাইলে করতে পারেন। সরকার যদি চায় তাহলে রাষ্ট্রপতি আর কিইবা করতে পারেন। ক্ষমতা তো প্রধানমন্ত্রীর হাতে। আর তিনি শুধু প্রধানমন্ত্রীই নন, দলের প্রধানও বটে। দলের নেতা-কর্মীদের কথা তাকে ভাবতে হয়।
কিন্তু সেখানেও কিছু কথা থেকে যায়। ভারতে একজনকে খুনের দায়ে মৃত্যুদন্ড রায় দেয়ার পর সারা ভারতে, সারা বিশ্বে মানুষ প্রতিবাদ করেছিল। কাউকে মেরে ফেলা শাস্তি হতে পারে না। মানুষকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত মানুষ নিতে পারে না। কলকাতার নামিদামী কবি-সাহিত্যিক থেকে শুরু করে সবাই রাজপথে পর্যন্ত নেমেছিলেন। শেষ ভরসা ছিল রাষ্ট্রপতি। তিনি ইচ্ছে করলে নিজের গুনে সেটা পাল্টাতে পারেন। তাকে বাকিজীবন জেলে রাখতে হয় রাখুন অন্তত মেরে ফেলার হাত থেকে বাচান।
তাতে কাজ হয়নি। রাষ্ট্রপতি কালাম সাহেব সেদিকে ঘুরেও তাকাননি।
তারা নিশ্চয়ই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায় না।
কিন্তু, সেটা অন্য দেশের কথা। তাদের রাষ্ট্রপতি সরকারের কথায় চলে না। এদেশ আলাদা। তারপরও, রাষ্ট্রপতি একেবারে পুতুল, সরকারের কথার একটুকু নড়চড় করেন না একথাই বা বলা যায় কিভাবে। ওই চারদলীয় জোট সরকারের সময়ই তো রাষ্ট্রপতি তার পদ ছেড়ে দিয়েছিলেন। কি কারনে জানাননি যদিও কিন্তু গুজব ওটাই, দলের সাথে মতের মিল না হওয়া। তিনিও পদ না ছেড়ে অনায়াসে তরল পদার্থ হয়ে যেতে পারতেন। যে পাত্রে থাকবেন সেই পাত্রের আকার ধারন করবেন। অন্তত দেশের সবচেয়ে সন্মানিত পদ তো থেকে যেত।
সেটা হয়নি। কারন একটাই, তিনি দেশের স্বার্থ দেখেননি। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হোক সেটা চাননি। দেশের উন্নতি হোক সেটা চাননি।
আসলে দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানো প্রয়োজন। প্রয়োজনে চশমা পাল্টানো প্রয়োজন। নতুন আইন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কেটে মার্কেটে ঘুরেছেন কোথাও চাদাবাজি চোখে পড়েনি। আর চাদাবাজি কি!  চাদাবাহি বলবেন না। দেশে চাদাবাজি বলে কিছু নেই। ওরা টাকাপয়সা যা নেয় ওটা সার্ভিস চার্জ। নতুন আইন করা হয়েছে, আপনারা রশিদ বুঝে নিয়ে সেটা দেবেন। রশিদ ছাড়া দিয়ে প্রতারিত হবেন না।
কে খুন হল, কে নিরুদ্দেশ হল এসব কথা বলবেন। ওটাও আইনের আওতায়। র‌্যাবের প্রধান তো স্পষ্ট করেই বলেছেন, ক্রশফায়ারকে বিচারবহির্ভুত হত্যা বলা যায় না। দেশের প্রয়োজনেই এটা করা হয়। এটা আইনসিদ্ধ। আইনের শাসন এতেই প্রতিষ্ঠিত হয়।
আপনিও দিক্ষা নিন, এভাবেই প্রতিষ্ঠালাভ করতে হয়। দেশ-দল বাচাতে হয়। ধনী ব্যক্তি, ধনী দল। তবে না ধনী দেশ।

মনের মত পেশা

Sep 7, 2010
পেশা হওয়া চাই মনের মত তবে না কাজ করে আনন্দ সবসময় ফুর্তিমনে কাজ করবেন শেষ হলে মনে হবে, আহা কাজটা এত তাড়াতাড়ি শেষ হল আরেকটু বড় হলে কতই না ভাল হত মনমাতানো গল্পের মত অবসর সময়েও মনে হবে, আহা আরেকটু কাজ যদি থাকত-
না এটা আসলে পাগলামি অন্তত যাকে কাজ বলে সেটা নিয়ে কেউ এমন পাগল হয় না অকাজ-কুকাজ নিয়ে হলেও হতে পারে, কাজ নিয়ে কক্ষনো নয়
কথা হচ্ছিল পেশা নিয়ে একটা না একটা পেশা থাকতে হয় একসময় ধরেই নেয়া হত বড় পড়ালেখা করে বড় চাকরী করবে নাম হিসেব করে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ারও বলা হত আর ব্যবসা করে অর্ধশিক্ষিত নয় মুর্খ লোকজন টাকা থাকতে পারে, সন্মান নেই
ক্রমেই সেটা বদল হতে শুরু করল দেখা গেল সন্মানের চেয়ে টাকার কদর বেশি ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে চাকরী করার চেয়ে ব্যবসা করে লাভ বেশি
আরেকটি বিষয় যোগ হল এরসাথে মাঝেমাঝে ক্ষমতা যায় মিলিটারীর হাতে তখন তাদের আর রোখে কে আইন-আদালত-সংবিধান ওসব বাক্সে তোলা থাক সব চলবে লাঠি আর বন্দুকের খোচায় অমুকে চুল লম্বার রেখেছে, ধরে কেটে দাও পেটাও অমুকে বিচ্ছিরি পোষাক পড়েছে, আলকাতরা লাগাও লোকে খাড়া-বড়ি-থোড়, থোড়-বড়ি-খাড়া। নৌকা-ধানের শীষ-লাঠি। লাঠি-ধানের শীষ-নৌকা।
কাজেই পেশায় নতুন একটা অপশন যোগ হল কোনমতে বিএমএ-তে একবার ঢুকলেই হয় রাস্তার মোড়ে মোড়ে শুরু হল আইএসএসবি কোচিং অব মেজর, অব ক্যাপ্টেন।
আর কোচিং এর কথাই যখন উঠল তখন শিক্ষকরাও বাদ থাকবেন কেন ? অত বছরের অভিজ্ঞ শিক্ষক, বোর্ডের প্রশ্নপত্র প্রনেতা, নিজেই মডারেটর আপনারা লাইন দিন একসময় নোট বইতে নাম লেখা থাকত জনৈক অভিজ্ঞ শিক্ষক নোট বইয়ে নিজের নাম লেখাটা লজ্জার ব্যাপার এখন আর লজ্জাটজ্জার বিষয় নেই খামোখা রাখঢাক করে কি হবে সকলেই জানে শরীরের কোথায় কি আছে তাহলে আবার জামাকাপড় কেন
কাজেই, মেধা প্রয়োজন নেই, মুল বই প্রয়োজন নেই। অমুকের লেখা গাইডই যথেষ্ট
স্কুলের শিক্ষকরাও বা বাদ যাবেন কেন ? কষ্ট করে যায়গা ভাড়া নিয়ে কোচিং সেন্টার দিতে হবে কেন ? যায়গা তো স্কুলে আছেই ছাত্র-ছাত্রীও তো বাধা ক্লাশ শেষে আরেকবার ঢোকালেই হল কার কি বলার আছে ?
শুধু কিছু লোকজন সমস্যা তৈরীর জন্য তৈরী হয়েই থাকে একটু শান্তিমত দায়িত্বপালন করব সেটাও করতে দেবে না ওইযে টিভি চ্যানেল, ধারাবাহিকভাবে দেখাচ্ছে স্কুলে কোচিং ধুত্তোর, ওইসময় নাটক দেখালেই তো হয় বাবা
কিন্তু দেখানো যখন হয়েই গেছে তখন আর কি করা সরকার হিসেবে চুপ করে থাকা তো চলে না কথা না বললে বুদ্ধিজীবীর মান থাকে না জ্ঞান, সচেতনতা, দেশপ্রেম প্রকাশ পায় না।
কাজেই, হে জনগন, ওইসব কোচিং সেন্টার মেধার ক্ষতি করছে স্কুলে স্কুলে কোচিং নামে ব্যবসা করতে দেয়া হবে না
কোচিং বন্ধ করতে বলেন ?
সেটা কেমন কথা তাহলে লেখাপড়া হবে কোথায় ? পড়াশোনা শিখবে কোথায় ? ভর্তি হবে কিভাবে ? ওকথা বলিনি। আরে ওইসব এসএসসি, এইচএসসি ওসব তো চাকরী করতে কাজে লাগে ভর্তি হতে কি ওসব দেখলে চলে! ওজন্য কোচিং সেন্টার আর ভর্তি পরীক্ষা ভর্তি পরীক্ষাই আসল পরীক্ষা। সব কেরামতি তো ওখানেই হয়।
বলছিলাম পেশার কথা। পেশা পছন্দ না হলে ঝামেলা। কাজে মন বসে না। তারওপর পরের কথা শোনা। অমুক কাজ তমুক সময়ে করতে হবে, সমুক বিষয় জানতে হবে। কাজে এদিক ওদিক হলেই ঠ্যালা। এত হাঙ্গামার দরকার কি বাবা!
উল্লেখ করা কোন ব্যবসাই যদি না জোটে তাহলে শেয়ার ব্যবসা হতে পারে মনের মত ব্যবসা। টাকা জোগাড় কর, মতিঝিল যাও, শেয়ার কেন। কষ্ট করে মাথা ঘামাতে হবে না, শিখতে হবে না, শেখাতে হবে না। কিনবেন-বেচবেন আর লাভের টাকা গুনবেন। সেইসাথে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ করার বিষয় তো আছেই। একঢিলে বহুপক্ষী।
দেশে বেকারের সংখ্যা নাকি দেড় কোটির মত। কয়েক ডজন শেয়ার মার্কেট চালু করলেই সমাধান হয়ে যায়।
যারা দেশ চালায় কতদিনে যে তাদের হুস হবে!

১৫ কোটি চোরের দেশ

Sep 3, 2010
চোর শুনতে কারই বা ভাল লাগে বলুন। চুরি করে যে জীবিকা নির্বাহ করে, সোজা কথায় পেশাদার শিদেল চোর, তারও না। তারওপর যদি তার বউকে বলা হয় চোরের বউ, ছেলেকে বলা হয় চোরের ব্যাটা তাহলে খারাপ লাগে বৈকি।
কিন্তু উপায় কি। সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে, এটাই প্রবাদ। আপনি যদি চোরের পাশে থাকেন তাহলে চুরি না করেও আপনি চোর।
অন্তত একথা ঠিক, আপনি চোর না হলেও আপনার পাশেই চোর রয়েছে। একেবারে রাষ্ট্রিয়ভাবে সত্য। কাজেই আপনাকেও চোর সন্দেহ করা হবে, চোর বলা হবে এটাই তো ঠিক পদ্ধতি। আইনে নাকি বলে, অপরাধ প্রমান না হওয়া পর্যন্ত সকলেই নির্দোষ। সেকথা ভুলে যান। আপনি অপরাধী এটা ধরে নিয়ে শুরু করুন। আপনার দায়িত্ব নিজেকে নির্দোষ প্রমান করা। যদি চুরির কথা বলেন, আপনি অবশ্যই চোর। আপনি যে চোর নন সেটা প্রমান করুন।
ডিজিটাল বাংলাদেশে ইন্টারনেট কি জানে না এমন ব্যক্তি খুজে পাওয়া কঠিন। গ্রামের মানুষও জানে ইন্টারনেটে ভিডিও ডাউনলোড করা যায়। আর কিছু মানুষ এটাও জানে, এটা ব্যবহার করে টাকা উপার্জন করা যায়। কতভাবে করা যায় এ নিয়েও আলোচনার অন্ত নেই। ক্লিক করলেই মাসে হাজার হাজার ডলার এসে জমা হবে আপনার হাতে।
কিভাবে ?
সেখানেই একটু বড় কিন্তু। আপনি অনলাইনে টাকা পাবেন না, কারন আপনি চোর। সুযোগ পেলেই চুরি করবেন, দেশের টাকা চুরি করে বাইরে পাঠাবেন। সরকার কখনোই সে সুযোগ দিতে পারে না। সরকারের দায়িত্ব দেশকে চুরি-দুর্নীতিমুক্ত রাখা।
একেবারে টাটকা খবর, সফটঅয়্যার রপ্তানীর সুযোগ করে দিতে মহাসুযোগ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন আপনি আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডেই টাকা পাবেন। তবে, নিয়ম মেনে।
কে সফটঅয়্যার রপ্তানীর যোগ্য সেটা বাছাই করবে বেসিস। তাদের নির্বাচন হলে কিংবা বছরে একটা মেলা করলে তাদের নাম পত্রিকায় দেখা যায়। কাজেই নিশ্চয়ই জানেন বেসিস কি জিনিষ।
আপনাকে বেসিসের সদস্য হতে হবে। তারা আপনার যোগ্যতা যাচাই করবে। চারিত্রিক সনদ দেবে আপনি চোর নন। সেই সার্টিফিকেটের বলে আপনি ১ হাজার ডলার ব্যবহারযোগ্য ক্রেডিট কার্ড পাবেন ব্যাংক থেকে। এটুকু সাবধানতা না করলে আপনি যে চুরি করবেন। কারন চোরের দেশে আপনি জন্ম নিয়েছেন।
বেসিসের সদস্য হওয়ার নিশ্চয়ই নিয়মকানুনন আছে। অন্তত নামের সাথে সফটঅয়্যার শব্দটি যখন আছে তখন অন্তত সেধরনের কিছু থাকতে হবে অবশ্যই। (যদিও তাদের প্রায় সকলেই অন্য ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। অন্তত ভুল করেও সফটঅয়্যার ডেভেলপার একজনও নেই একথা নিশ্চিত করা যায়)। কাজেই তাদের সদস্য হতে হলে আপনাকে কাগজে-কলমে সফটঅয়্যার ব্যবসায়ী হতে হবে ধরে নিতে পারেন। পাইরেসিও নিশ্চয়ই সফটঅয়্যার শিল্প। অন্তত যেভাবে প্রসারলাভ করেছে, কোটি টাকার সিলভার ডিস্ক প্রজেক্ট বসানো হয়েছে, তাতে তৈরী পোষাক শিল্পের সাথে তুলনা করা যেতেই পারে।
কিন্তু, আপনার শখ হল লাখদুয়েক টাকার একটা ক্যামেরা কিনে ফটোগ্রাফার হবেন, সুন্দর সুন্দর ছবি উঠাবেন, সেগুলোকে আপলোড করবেন ইন্টারনেটে, তারপর কেউ কিনলে আপনি টাকা পাবেন। সেকথা ভুলে যান। আপনার সবচেয়ে বড় অপরাধ আপনি জন্ম নিয়েছেন চোরের দেশে, জন্মগতভাবেই চোর এবং এখনও নিদোর্ষ প্রমানিত হননি। অন্তত ফটোগ্রাফার, এই পরিচয়ে বেসিসের সদস্য হওয়া সুযোগ পাবেন না এটা শতভাগ নিশ্চিত।
কিংবা কোন কঠিন কাজে না গিয়ে নিতান্ত ডাটা এন্ট্রি নামের টাইপ করার কাজ করে দুচার ডলার আয় করতে চান। কিছু প্রতিষ্ঠান এধরনের কাজ নিয়ে বসে আছে আপনার জন্য। প্রয়োজন শুধু ইন্টারনেট আর কম্পিউটার।
বেশ, সেটা করুন। কেউ বাধা দিতে যাচ্ছে না। তবে অবৈধভাবে টাকা লেনদেন করবেন না। টাকা পাচার করবেন না। বেসিস আপনাকে সে সুযোগ দেবে না।
নিউইয়র্কে নাকি ট্যাক্সিভাড়া ক্রেডিট কার্ডে দেয়া বাধ্যতামুলক করায় আন্দোলন-ধর্মঘট করেছিল ট্যাক্সি ড্রাইভাররা। সেটা অন্য নিয়ম। ওরা নগদ টাকা হাতে পেলে চুরি করে। আর বাংলাদেশের মানুষ চুরি করে ক্রেডিট কার্ড হাতে পেলে।
একটা কথা তো ঠিক, বিশ্বের সব প্রধান শহরে যানজট রয়েছে। সেকারনে কোথাও স্কুল-কলেজ বন্ধ করা হয়নি। বাংলাদেশে হয়েছে। আপনি যদি ১৫ কোটি চোরের একজন হন তাহলে আপনার চুরি ঠেকাতে অনলাইনে লেনদেন বন্ধ করা হতেই পারে।
যদি টাকা পাচার করতেই চান তাহলে সরকার বদল হওয়ার পর খবরের কাগজ দেখুন, কে কতহাজার কোটি টাকা পাচার করেছে জেনে তারসাথে যোগাযোগ করুন। পদ্ধতি জেনে নিন।

বকিসনে আর খবরদার

Sep 1, 2010
দেশজুড়ে সবাই যখন উঠেপড়ে লেগেছে কি করলে দেশের ভাল হয়, সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যায় একথা বলতে সরকার শুধু একবার মন দিয়ে শুনলেই হয় একবার সত্যকথা জানলে সমাধান না হয়েই যায় না তখন মাথায় প্রশ্ন ঘোরে, সরকার কি আসলে জড় পদার্থ অথবা নির্বোধের নিবোর্ধ কিছুই জানে না একজন রিক্সাচালক পর্যন্ত জেনে গেছে সমাধান কোন পথে অথচ পড়িমড়ি করে যারা ক্ষমতায় গেছে, মরে-মেরে হলেও ক্ষমতায় থাকবে তারা বিষয়টি জানে না! রহস্য কি ?
এটা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিশ্বে একমাত্র ডিজিটাল দেশ সবকিছু হবে ইন্টারনেটে রোগির চিকিসা থেকে শুরু করে টেন্ডারবাজী পর্যন্ত আগামীতে খাওয়াদাওয়া পর্যন্ত অথচ ১০ বছর আগে যে থ্রিজি নেটওয়ার্ক চালু হয়েছে বিশ্বে, সেটা ছেড়ে তারা ফোরজি ব্যবহার শুরু করেছে সেই থ্রিজির লাইসেন্স দেব-দেব-দেব-দেব করেও দেয়া হচ্ছে না লাইসেন্স দিলেই সরকারের লাভ বসে থেকে ঘরে টাকা আসে তারপরও সেটা দেয়া হচ্ছে না রহস্যটা কি ?
জনগন মুখ খুললে মুখে একটাই কথা, নেতারা দুর্নীতিবাজের গোড়া ক্ষমতা হাতে পেলে তারা ধরাকে সরা জ্ঞান করে তাদের হাতেই দায়িত্ব জনগনকে আইন মানানোর অথচ নিজরা ইচ্ছে হলে পুলিশ পর্যন্ত পেটায় দেশের সম্পদ মানে তার সম্পদ এদের বিদেয় না করলে দেশের কোন ভবিষ্যত নেই আবার ভোট দেয়ার সময় তাদেরকেই খুজে বের করে ভোট দেয়া হচ্ছে, মাথায় তুলে সংসদে রেখে আসা হচ্ছে আঙুল নাড়লেই হাজার মানুষ ছুটে আসছে রহস্য কি ?
এসব জটিল রহস্যের কথা বরং থাক নহস্য সমাধানের দায়িত্ব গোয়েন্দা-পুলিশের তারা যখন নিজেরাই খেলোয়ার তখন দর্শকের দেখা ছাড়া আর কি করার থাকে বরং একেবারে নিত্যপ্রয়োজনীয় বিষয়, যা না দেখলে চলে না সেটাই দেখা যাক
রোজার মাসে সুর্য ওঠার আগ থেকে সুর্য ডোবা পর্যন্ত না খেয়ে রোজা রাখতে হয় বাংলাদেশের মানুষ রোজা রাখেন বৈকি সব হোটেল রেস্তোরা পর্দা দিয়ে ঢাকা, প্রকাশ্যে খাওয়া-দাওয়া তো দুরের কথা, ধুমপান করলেও বিপদ তেমন কারো চোখে পড়লে হাত-পা ভাঙতে পারে কথা হচ্ছে, এই যে বিপুল পরিমান মানুষ সারাদিন না খেয়ে থাকছে তাতে খাবার উদ্বৃত্ত হওয়ার কথা রোজা উপলক্ষে নাকি আমদানীও করা হয়েছে স্বাভাবিকের থেকে বেশি তাহলে উদ্বৃত্ত না হয়ে ঘটতি দেখা দিচ্ছে কেন ? খাবার জিনিষের দাম হুহু করে বাড়ছে কেন ?
দেশের শতকরা ৯০ জন মুসলমান সবসময়ই আমরা শুনতে পাই ইসলাম শান্তির ধর্ম, মানবতার ধর্ম এদেশের মানুষ অতিমাত্রায় ধর্মপরায়ন শুক্রবারে মসজিদে যায়গা পাওয়া যায়না আর রোজার মাসে তো কথাই নেই সংযমের মাস তাহলে পত্রিকার পাতায় এতসব অপরাধ করছে কে? চাদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মজুতদারী, চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই। রাস্তার মোড়ে, মার্কেটে মার্কেটে পুলিশ রাখতে হয়েছে কার জন্য নিজেকে নিজেই রক্ষা করুন, সাবধানে থাকুন, এধরনের প্রচারপত্র বিলি করছে কেন পুলিশ ?
এমন ধর্মপ্রাণ মানুষের দেশ বিশ্বে দুনীতিবাজ হিসেবে পরিচিতি পেল কেন ? ৯০ ভাগের বাইরে যে বাকি ১০ ভাগ তাদের কারনে ?
প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে না কেউ সবার এক কথা, মিথ্যে বাজে বকিসনে আর খবরদার
 

Browse