যুক্তি বনাম প্রযুক্তি

Dec 30, 2010
যুক্তি অত্যন্ত ভাল জিনিষ। যুক্তিসংগত কাজ করবেন, যুক্তিসহ চিন্তা করবেন, যুক্তিসংগত কথা বলবেন, যুক্তিসংগত আচরন করবেন, যুক্তিসংগত চলবেন। একমাত্র প্রযুক্তি বাদ দিয়ে। অন্তত আপনি যদি প্রযুক্তির দেশে বাস করেন। যেমন তেমন প্রযুক্তি না, একেবারে ডিজিটাল প্রযুক্তি।
কথা না বড়িয়ে সরাসরি কাজের কথায় যাওয়া যাক। ডিজিটাল প্রযুক্তির মুল কথা হচ্ছে ডিজিটাল যোগাযোগ। কাজেই যুক্তিসংগতভাবে আপনাকে সেবিষয়ে পারদর্শী হওয়া প্রয়োজন এবং সেটা কাজে লাগানো প্রয়োজন। কিন্তু আগেই যেমন বলেছি, প্রযুক্তিকে যুক্তি দিয়ে বিচার করবেন না।
ধরুন ইন্টারনেট। সারা দেশে গ্রামে গঞ্জে ইন্টারনেট ছড়িয়ে দেয়া হবে। বিশেষজ্ঞ মহলের দাবী দেশের ৯৮ ভাগ এলাকা ইন্টারনেটের আওতায়। কথাটায় ভুল নেই অবশ্যই। যদি মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুযোগ থাকে তাহলে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগও অবশ্যই আছে। এখন প্রয়োজন শুধু কৃষকদের ইন্টারনেট ব্যবহারের পদ্ধতি শিখিয়ে দেয়া।
বকারামের পাঠক আর যাই হোন, অন্তত কৃষক নন। কৃষক বাদে অন্যদের অবস্থা একবার জেনে নেয়া যাক।
একসময় বলা হত (আমাদের বিশেষজ্ঞরা বলতেন) দেশ সাইবার হাইওয়েতে যুক্ত হলেই বিলিয়ন-বিলিয়ন ডলার আসতে শুরু করবে। ওই যে, ডাটা এন্ট্রি। ইন্টারনেটে কাজ করবেন আর হুড়হুড় করে ডলার আসতে শুরু করবে। একসময় সেটা হয়েছে। মানে, সেই সাবমেরিন কেবল সংযোগ দেয়া হয়েছে। দেখা গেল বিলিয়ন ডলার আসেনি।
নিশ্চয়ই অন্যভাবে সেটা হবে। আসলে দিন তো থেমে থাকে না। আজকাল দ্রুতই পরিবর্তন হয়। কাজেই আসলে ডাটা এন্ট্রি না, ওটা হবে মেডিক্যাল ট্রান্সক্রিপশন, না-না এটা হবে ওয়াপ কনভার্শন, আরে না-না, ওটা হবে কল সেন্টার। আরে ওসব তো সেকেলে হয়ে গেছে। অন্য দেশ ওসব দখল করে ফেলেছে। ওটা হবে আউটসোর্সিং। গার্মেন্টস শিল্পকেও ছাড়িয়ে যাবে এই শিল্প। মানুষ কিলবিল করে যেতে থাকবে সেখানে। দেখেননি, গার্টনারের আউটসোর্সিং তালিকায় বাংলাদেশ। সবাই বলছে বাংলাদেশ ধনী দেশ হয়ে যাচ্ছে।
মুল শক্তি হচ্ছে ওই ইন্টারনেট। ওরই ধাক্কায় দেশ ২২ নম্বর ধনী দেশ হয়ে যাবে। আজকাল আমরা ডায়াল-আপ ব্যবহার করি না, ব্যবহার করি ব্রডব্যান্ড। ব্রডব্যান্ড অর্থ কি ওসব কথা তুলবেন না। ব্রডব্যান্ড মানে ব্রডব্যান্ড। টেলিফোন লাইন প্রয়োজন হয় না।
তার ওপর ফোরজি চালু করা হয়েছে ভারতের আগে। কই ওরা পেরেছে ওয়াইম্যাক্স চালু করতে!
ওয়াইম্যাক্স ব্যবহার করবেন কিভাবে ?
মডেম-সহ একটা লাইন কিনবেন। একমাসের টাকা অগ্রিম। সংযোগ দেবেন। সাথেসাথে এঞ্জেলিনা জোলি ডাউনলোড হতে শুরু করবে। তারপর কদিন গেলে দেখবেন সে আসতে আসতে বুড়ি হতে শুরু করেছে। তারপর দেখলেন আদৌ কানেকশনই নেই।
কারন কি, কারন কি ?
ও, আপনি তো আনলিমিটেড কানেকশন নিয়েছেন। সেটাই কারন। একে বলে ফেয়ার ইউজ। আপনি যতখুশি ডাউনলোড করবেন সেটা তো ফেয়ার না। হে-হে-হে। টাকা ঢালেন, আরো পাবেন। দেখেন না হলিউডের মুভি রিলিজ হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যে বাজারে ডিভিডি পাওয়া যায়। ওরা তো পাচ্ছে। আপনি ওদের পথে যান।
কেন ভাই ? আনলিমিটিড কানেকশন বলে টাকা নিলেন, সেখানে আবার লিমিট কিসের ?
আনলিমিটেড বলেছি তো বলেছি, ফেয়ার ইউজও তো বলেছি। সেটা চোখে দেখেননি।
একে বলতে পারেন আইনি জোচ্চুরি। তারা যেহেতু আগেই বলেছে সেহেতু আইনের চোখে কোন অপরাধ নেই। আপনি কোন ব্যবস্থা নিতে পারেন না।
আইনি ব্যবস্থার কথা যখন উঠলই তখন আমরিকার উদাহরন একবার দেখে নিতে পারেন। এফসিসি নাকি সবাইকে বলে দেয়, ওয়েবসাইট থেকে সফটঅয়্যার ডাউনলোড করে নিন, ইন্টারনেটের স্পিড মাপুন, দেখুন তারা যা প্রচার করে তারসাথে পার্থক্য আছে কি-না। থাকলে সাথেসাথে আমাদের জানান। সাথেসাথে জোচ্চুরি মামলা।
আপনি এই তথ্য না জানতে পারেন, তারা জানে। কাজেই আগে থেকে সেপথ পরিস্কার। বিটিআরসি-তে অভিযোগ করবেন ? করুন গে। তারাও জানে। সবচেয়ে বেশি অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা করে টেলিটক। আর আমরা একা নাকি, সব কোম্পানীই ওই ফেয়ার ইউজের পথ বেছে নিয়েছে।
ভবিষ্যতে কি হবে জানতে চান ?
টেলিটক চীনের কোম্পানীর সাথে চুক্তি করেছে থ্রিজি চালু করার। অপেক্ষা করুন। কোন প্রযুক্তি বাদ থাকবে না।
আর যদি যুক্তি খুজতে চান, যুক্তি কথা বলতে যান, যারা ওয়াইম্যাক্সের লাইসেন্স হাতে রেখে আদৌ চালূ করতে পারেনি তারা থ্রিজি চালু করবে তার ভরসা কোথায় ? চালু করলে তারা কি সেবা দেবে ? বর্তমানেই যখন ..
এজন্য আগেভাগে ওই কথা বলা। প্রযুক্তিকে যুক্তি দিয়ে বিচার করবেন না।

শয়তানের ভাই

Dec 26, 2010
ঢাকা শহরের পুরনো বাসিন্দাদের হয়ত মনে থাকার কথা, প্রেস ক্লাবের মোড়ে আইল্যান্ডে বিশাল আকারে বাণী লেখা ছিল একসময়। অপচয়কারী শয়তানের ভাই। নিশ্চয়ই বক্তব্য ছিল আপনি যদি নিজেকে শয়তানের সহোদর বানাতে চান তবেই অপচয় করুন, নইলে মিতব্যায়ী হোন।
সে অনেক পুরনো কথা। দেশ বহুদুর এগিয়ে গেছে। শয়তানও নিশ্চয়ই পরিবর্তিত হয়েছে। হয়ত সে নিজেই এখন অপব্যয় ছেড়ে মিতব্যায়ী হয়েছে, আর সেটা পুরোটাই চাপিয়ে দিয়ে গেছে ঢাকাবাসীর ওপর। কিংবা দেশবাসির ওপর।
দুএকটা উদাহরন দিলেই বিষয়টা পরিস্কার হতে পারে। ধরুন ওই শিক্ষা ব্যবস্থার কথাই। শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। কাজেই মেরুদন্ড শক্ত করতে শিক্ষাকে যথেষ্ট পুষ্টি দেয়া প্রয়োজন। শিশুকে স্কুলে পাঠানোর আগেই কোচিং সেন্টারে পাঠিয়ে সেটা শুরু। তারপর বছরের পর বছর চলতে থাকে সেই পুষ্টিদান। বেশিরভাগ সময় মা, কখনো কখনো বাবাকেও অফিস-ব্যবসা ফেলে সন্তান নিয়ে হাজিরা দিতে হয় স্কুলে। বাড়ি থেকে বেরতে হবে দুঘন্টা আগে, আবার ছুটির দুঘন্টা আগে রওনা দিয়ে গেটে পৌছুতে হবে তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য। আপডাউন রিক্সা বা ট্যাক্সিভাড়া। অথবা নিজের গাড়ির তেল-গ্যাস-ড্রাইভার খরচ। কেউ কেউ স্কুলের পুরো সময়টাই স্কুলের সামনে ফুটপাতে বসে সময় কাটান। কোথাও কোথাও অবশ্য সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশলীর কল্যানে ফুটপাত ঘিরে ঘর বানিয়ে বসার যায়গা করে দেয়া হয়েছে। রীতিমত স্থায়ী, পাকা ঘর। নির্মাতার নাম জ্বলজ্বল করছে সেখানে।
কথা বাড়িয়ে কাজ নেই। কথা হচ্ছিল অপচয় নিয়ে। হিসেব করে সহজেই বের করে নিতে পারেন এখাতে কত পরিমান টাকা, কি পরিমান সময় এবং কতখানি শ্রমের অপচয় হচ্ছে। শতকোটি, সহস্রকোটি কিছুএকটা হবে নিশ্চয়ই।
তাই বলে নিজেকে শয়তানের ভাই ভাববেন না। সরকার এনিয়ে বিস্তর মাথা ঘামাচ্ছেন। স্কুলের বাসের চিন্তাভাবনা করছেন। একদিন সেটা হবেই হবে।
স্কুল পেরিয়ে, কলেজ পেরিয়ে পরের ধাপে যাওয়ার সাথেসাথে ধরনটাও পাল্টে যায়। শুরুটাই একবার দেখা যাক।
দেশে যত ধরনের যতগুলি শিক্ষার সুযোগ রয়েছে সব যায়গায় ভর্তির প্রস্তুতি নেবেন। সব ধরনের কোচিং সেন্টারে যাবেন। তারপর সব যায়গার ফরম কিনবেন, ভর্তি পরীক্ষা দেবেন। কোথায় সুযোগ পাবেন সেটা যখন জানা নেই তখন না করে করবেনই বা কি!
প্রশ্ন করতে পারেন একযুগ ধরে যে পড়াশোনা, এসএসসি-এইচএসসি নিয়ে এত তোড়জোর, সেটার ফল কি কাজে লাগে। সেটা দেখেই তো ভর্তি করা যায়। যে আগের দুই পরীক্ষায় ভাল করেছে তার অগ্রাধিকার, তারপর ক্রমাম্বয়ে ...
ওসব কথা বলবেন না। জানেন এটা কত টাকার বানিজ্য ? কোচিং সেন্টারগুলির টাকা কার কার পকেটে যায় ??
দেশের অর্থনীতির কথা তো ভাববেন। কত মানুষ করে খাচ্ছে এই পদ্ধতিতে সে খোজ রাখেন ? কিছু মানুষ টাকা খরচ করছে ঠিকই, কিন্তু যার সামর্থ্য আছে সেই তো খরচ করে। যাদের পকেটে যায় তারা রীতিমত মাথা ঘাটিয়ে, শ্রম দিয়ে, কষ্ট করে, নিয়মতান্ত্রিকভাবেই আয় করে।
আর যাই হোক একে অপচয় বলবেন না। ধর্মপ্রাণ এই দেশে শয়তানের ভাই বাস করতে পারে না।

এমন মজা হয় না

Dec 13, 2010
মজা কে না পছন্দ করে। মজার জন্যই জীবন। আর জীবন থাকলেই মজা। মজার খাবার, মজার কাজ, মজার কথা, মজার পোষাক। জীবনটাই মজা। ছোট হোক, বড় হোক, ধনী হোক গরীব হোক, ভেদাভেদ নেই। মজার নেশা মেতে ওঠাটাই কথা।
সমস্যা একটাই, মজার জিনিষ বেশিদিন টেকে না। ওই খাবারের কথাই ধরুন না কেন। কেএফসি গিয়ে কেনটাকির আলু খেলেন। দেখতে দেখতে শেষ হয়ে গেল। আরো মজা মানে আরো টাকা।
শাহরুখ খান এসে নিজে নেচে অন্যদের নাচিয়ে মজা করে, মজা করিয়ে চলে গেলেন। নিন্দুকেরা বলছে শতকোটি টাকার ব্যবসা করে গেলেন। তাতে কি ? মজাটা তো পাওয়া গেল। এরই মধ্যে লোকজন দোকানে গিয়ে খোজ করতে শুরু করেছে, শাহরুখ খানের অনুষ্ঠানের ভিডিও আছে ? দেন তো। একবার দেইখ্যা মজা শেষ হয় নাই।
একসময় একজন শিশুকে কাঠি লজেন্স ধরিয়ে দিলেই চলত। সেটা মুখে দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা চুষে যেত। সেটাও শেষ হত অবশ্যই, তবে ধীরগতিতে। আর খরচটাও কম। একসময় শুধু কাঠিটাই হাতে থাকত। আজকাল শিশুরা ওইসব কাঠিলজেন্স পেলে খুশি হয় না। কারো পছন্দ আইসক্রিম। সেটার মজাও বেশি, শেষও হয় খুব দ্রুত। কারো পছন্দ বোতলের ড্রিংক। কেউ কেউ আবার পরীক্ষা করে বলেছে ওতে নেশাদ্রব্য মেশানো থাকে। খেতে খেতে নেশায় পরিনত হয়, তারপর ওটা না খেলে চলে না। তা দ্রব্যের গুনেই হোক আর মজার নেশায়ই হোক, শিশু বায়না ধরলে আদায় করে তবেই ছাড়ে।
কিংবা বিশেষ দিবসের বিশেষ মজার কথাই বলুন না কেন। কোনদিন লাল-সবুজ পোষাক পরতে হয়, কোনদিন লাল-সাদা, কোনদিন শুধুই কালো, কোনদিন ঝলমলে হলুদ।
আর কথা বাড়িয়ে কাজ নেই। এতক্ষনে বোঝা হয়ে গেছে মজার পেতে টাকা প্রয়োজন হয়। লাল-সবুজ চুড়িই হোক আর মুখে লালসবুজ রং লাগানোই হোক, কোনটাই টাকা ছাড়া হয় না। কাঠি লজেন্স চুষতেও টাকা লাগে।আর যদি সেটা না থাকে তাহলে শুধু কাঠিই চুষতে হয়।
সমস্যা হচ্ছে, সেটা অনিরাপদ। চোষার জন্য কাঠি নিশ্চয়ই বিদেশ থেকে আমদানী করতে পারেন না (করলে কত ভাল ব্যবসাই না হত)। দেশের কাঠির আর নিশ্চয়তা কি। কি ভেজাল দেবে কে জানে ?
আরে ভাবছেন কেন ? সমস্যা তো হাতের নাগালে। একেবারে হাতে হাতে। বুড়ো আঙুলটা মুখে ঢুকান, আর চুষতে শুরু করুন। কোন খরচ নেই, শেষ হওয়ারও ভয় নেই। অন্তত বছর পাচেকের জন্য নিশ্চিত।
পাচ বছরের হিসেবটা আসলে গনতন্ত্রের হিসেব। দেশ যেহেতু গনতন্ত্রের  পথে চলছে সেহেতু আপনাকে গনতন্ত্র মেনেই চলতে হয়। পাচ বছরে একবার ভোট দেবেন। নেতাদের মুখে শুনবেন কাকে ভোট দিলে আপনার কি কি উপকার হবে। পাচ বছর নিশ্চিন্তে দিন কাটাবেন। তারপর চাকরী-বাকড়ি-টেন্ডার-ব্যবসা সবই যখন ওই নির্বাচন জেতা এবং নির্বাচন জেতানো নেতাদের দিকে যেতে শুরু করে তখন আপনার সম্পদ ওই বুড়ো আঙুলই। আবার নির্বাচন এলে দেখিয়ে দেব, একথা ভাবতে ভাবতে চুষতে থাকবেন।
এমন মজা কি অন্যকিছুতে পাওয়া যায় ?

চুরি বিদ্যা বড় বিদ্যা

Dec 5, 2010
বাংলাদেশের ভাবমুর্তি অত্যন্ত রঙিন। অন্তত বিদেশীদের কাছে তো বটেই। নানা রঙে উজ্জ্বল। রাজনীতি-অর্থনীতি-দুর্নীতি সবকিছু এতটাই উজ্জ্বল যে অন্যরা ধারেকাছে ঘেষতে পারে না। অবশ্য যুদ্ধআক্রান্ত দেশগুলিকে বাদ দিয়ে। তা সেগুলিকে আর দেশ বলেই বা লাভ কি ? ইরাক-আফগানিস্তানের সত্যিকারের মালিক কে জানার উপায় কি ? সিদ্ধান্ত যখন সেদেশের মানুষ নেয় না।
পরচর্চা করা প্রয়োজন নেই। বরং বাংলাদেশের বর্নিল দিকের কথাই বলা যাক।
ভাবমুর্তিতে অত্যন্ত রঙিন নতুন একটি পালক যোগ করলেন একজন। দারিদ্র দুর করার পথ আবিস্কার করে, সেপথে সারা জীবন কাটিয়ে শান্তির মানব হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করলেন। সারা বিশ্বের মানুষ ঝুকে পড়ল দারিদ্র দুরীকরনের এই পদ্ধতির দিকে। আর নিজের দেশে শতশত, হাজার হাজার প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠল দারীদ্র দুর করার মহান কাজে। এর পক্ষে-বিপক্ষে মত থাকবে এটা অস্বাভাবিক মনে করার কারন নেই। মানুষ ধর্মের পক্ষে-বিপক্ষেও কথা বলে।
সেকথা থাক। বরং ঘটনা কি দেখা যাক। হঠাত করেই একটা পুরনো খবর নতুনভাবে আবিভুত হল। নরওয়ের টিভিতে এইসব ঋনের কাযর্কারিতাকেই চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। আর সেটা করতে গিয়ে যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে বিপত্তি সেখানেই।
দারীদ্র দুরীকরনের পথপ্রদর্শক, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী গ্রামীন ব্যাংক নরওয়ে থেকে অর্থগ্রহন করেছিল দরীদ্রদের শতকরা ২ ভাগ সুদে ঋন দেবার শর্তে। সেই অর্থ থেকে বড় একটি পরিমান (তাদের হিসেবে ৭০০ কোটি টাকা) তাদেরই আরেকটি প্রতিস্ঠানে স্থানান্তর করা হয়েছে। আপত্তি সেখানেই।
নানা মুনির যেমন নানামত থাকে তেমনি এখানেই বহুমত রয়েছে। বরং তাদের নিজেদের ব্যাখ্যার দিকেই দৃষ্টি দেয়া যাক। অর্থ যদি না সরানো হত তাহলে তাদের বিপুল পরিমান কর দিতে হত। তাহলে দরীদ্রদের ২% সুদে ঋন দেয়া সম্ভব হত না। কাজেই দরীদ্রদের স্বার্থে কাজটি করতে হয়েছে। আর বিষয়টি বছর পনের আগের। তখন  যদি কথা না ওঠে তাহলে এখন উঠবে কেন ?
আর বিপক্ষমত যদি শোনেন, এক ফান্ডের টাকা আরেক নেয়া কতটা আইনসম্মত, কতটা নৈতিক। মুল কারন যখন ট্যাক্স ফাকি দেয়া। কিংবা যে ২% সুদে ঋন দেয়ার কথা বলা হয়েছে সেই ২% সুদে কে কখন ঋন পেয়েছে। শোনা যায় ঋনের সুদ সরকারী-বেসরকারী-বানিজ্যিক যত ধরনের ব্যাংক আছে তাদের সবার থেকে বেশি। আসলে সেই হার কত কেউ জানে না। হোয়াইটহাউজ-পেন্টাগন কবে কোন চিঠিতে কি লিখেছে সেখবরও সারা পৃথিবীর মানুষ জানার সুযোগ পায়, কিন্তু কয়েক দশক ধরে একটি প্রতিষ্ঠান ঋন দিচ্ছে, বহুকোটি মানুষ ঋন নিয়েছে, প্রতিনিয়ত নিচ্ছে, তারপরও সেই ঋনের হার কত জানা যায় না।  
থলের বেড়াল যদি বেড়য় তাহলে বিপত্তি ঘটার সম্ভাবনা থাকেই। আর হয়েছেও তাই। এখানেও নানা মুনীর নানা মত। নরওয়ের সরকার চক্রান্ত করে এটা করেছে থেকে শুরু করে টেলিনরের সাথে গ্রামীনের বিরোধ সব কারনই উঠে এসেছে। এবং আগামীতে যা আসতে বাকী আছে তা হচ্ছে সরকার এবং বিরোধী দলের মুখোমুখি অবস্থান। অন্তত লক্ষন বলে দিচ্ছে বিষয়টি সেদিকেই যাচ্ছে। দুপক্ষ থেকেই খোচা মেরে পরীক্ষা করা হচ্ছে কোনপথে অগ্রসর হওয়া যায়।
আমাদের সবই সয়ে গেছে। দরীদ্রদের সেবা করে ধনী হওয়া কোটিপতি আমরা দেখেছি, দেশ এবং জনগনের সেবা করে কোটিপতি হওয়া নেতাও দেখেছি, আবার কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়ে কোটিপতি হওয়া ব্যবসায়ী-শিল্পপতিও দেখেছি। যাদের সেবা করা হয় তারা ধনী হয়নি এটাই বিষয়। তাতেও আমাদের আপত্তি নেই।
কিন্তু ওই যে, ভাবমুর্তির গায়ে নতুন পালক লাগানো, সেটাতেই যা সামান্য আপত্তি। চুরিবিদ্যা বড় বিদ্যা যদি না পড় ধরা।
চুরি করবেন করুন, ধরা পরেন কেন ?

মহাশয়, যা সহায় তাই সয়

Dec 3, 2010
শরীরের নাম নাকি মহাশয়, যা সহায় তাই সয় প্রবাদ সেটাই বলে গরম সহ্য করুন সয়ে যাবে, ঠান্ডা সহ্য করুন সয়ে যাবে আধুনিক কালেও এর ব্যতিক্রম হয়নি এককালে মানুষ তালপাতার পাখা ব্যবহার করেও সুখে দিন কাটাত, বলেছেন মন্ত্রী তাহলে আমরা পারব না কেন ?
বাংলাদেশে অনেক বিদেশী আনাগোনা করেন নানা কারনে তাদের প্রথম লক্ষ্য, খাবার পানি অনেকে বিদেশী বোতলের পানি ছাড়া খান না দেশের বোতলের পানিও না ওটা নাকি তাদের সহ্য হয়না কারন তো একটাই, ওই সয়ে নেয়া ধীর্ঘদিন থাকলে একসময় সেটাও সয়ে যাবে নিশ্চয়ই শুধু পানি কেন, ফরমালিন থেকে শুরু করে আর্সেনিক পর্যন্ত দেখছে না আমরা কেমন সয়ে গেছি
একসময় বিদ্যুত গেলে মানুষ ফোন করতে বিদ্যুত অফিসে, আমার বাড়িতে বিদ্যুত নেই কেন, ব্যবস্থা নিন তারাও সাথেসাথে লোক পাঠাত খবর নিতে আজকাল ওসব হয় না মানুষ জেনে গেছে বিদ্যুত যাওয়াটাই নিয়ম কখনো একঘন্টা, কখনো দুঘন্টা বরং একঘন্টা বিদ্যুত থাকলে ঘন্টা পেরনোর আগেই প্রস্তুতি নিতে পারেন আরেকবার যাওয়ার জন্য এটাও ওই সয়ে নেয়ার গুন
জিনিষের দাম বাড়তি, এটাও সয়ে নেবার বিষয় একদিনে যদি তেলের দাম ২০ টাকা বাড়ে তাহলে খারাপ লাগে বটে তারপর সেটা যখন স্থায়ী হয় তখন আর খারাপ লাগে না বানিজ্যমন্ত্রীর সাথে যতবার বৈঠক হয় ততবার যখন ১০-১৫ টাকা করে বাড়ে সেটাও মানিয়ে যায় বরং পত্রিকায় যদি বৈঠকের খবর পাওয়া যায় তাহলে আগাম প্রস্তুতি নেয়া যায়
রাস্তায় যানজট এটা তো স্বাভাবিক ঘটনা অফিসে যেতে দুঘন্টা আগে বেরবেন তারপরও একঘন্টা লেট আপনারও মানিয়ে গেছে অফিসেরও মানিয়ে গেছে আপত্তি করছেন কেন ?
ভাড়া নিয়েই বা এত ভাবছেন কেন ? আপনার বয়স বাড়ছে, দেশের অর্থনীতি বড় হচ্ছে, জিনিষপত্রের দাম বাড়ছে সবকিছুই যখন বাড়তি তখন ভাড়াটাই বা উল্টোদিকে যাবে কেন ? মেনে নিন, ওটাও বাড়তে থাকবে টাকা কোথা থেকে সেনিয়েই বা ভাবার কি আছে ? টাকাও বাড়তি গত দুবছরে নাকি সরকার আগের সব রেকর্ড ভঙ্গ করা সুদে ঋন নিয়েছে আগামী ৩ বছরে আরো নিতে যাচ্ছে সব মিলিয়ে লক্ষ কোটি টাকার মত সে টাকা তো দেশেই থাকবে তারমানে আপনার হাতে আসবে কোন সুত্রে সেটা খুজে বের করাটাই বিষয় এখনই জ্যাক লাগান
সয়ে নেয়াটাই আসলে কথা। শুধু শরীরেই না, সবখানেই। বর্তমানের সাথে মানিয়ে নিন আর ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিন। দেশ আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ধনী হতে যাচ্ছে। দেশের প্রধান আয় হবে আউটসোর্সিং। লক্ষ লক্ষ কোটি ডলার আসবে সেখান থেকে। কাজেই প্রস্তুতি নিন।
যদি প্রশ্ন করেন ইন্টারনেটের গতি কমে ১ কিলোবাইটের নিচে গেছে কেন, দিন পেরিয়ে সপ্তাহ, সপ্তাহ পেরিয়ে মাস তারপরও ওই সাবমেরিন কেবলে সমস্যা নামের ভুত কাধ থেকে নামছে না কেন, কিংবা যে আউটসোর্সিং এর কল্যানে দেশ পরিনত হবে বিদেশে, সেই ইন্টারনেটের ব্যান্ডউইদথ বিক্রি করা হচ্ছে কেন,,
ও আপনি তো দেখি সত্যিকারের বাঙালী। কথা বেশি। এত কথা বলেন কেন ? দেশ যেভাবে চলছে তারসাথে মানিয়ে নিন। দেখবেন একসময় ইন্টারনেট ছাড়াও চলবে। আগেকার দিনে তো মানুষ চলত এখন চলবে না কেন ?
সহ্য করতে না পারলে সমস্যা আপনার। কদিন সহ্য করেই দেখুন না। সেই মোল্লা নাসিরুদ্দিনের কথা মনে নেই!
নাসিরুদ্দিন হোজ্জা বাজার থেকে একটা গাধা কিনে আনলেন তারপর এক অদ্ভুত কাজ শুরু করলেন তাকে একদিন যা খাবার পরদিন দেন তারথেকে কম, তার পরদিন তার থেকেও কম একসময় বেচারা গাধাটা মরেই গেল পাড়াপ্রতিবেশিরা এসে হোজ্জাকে রীতিমত ধমকাতে শুরু করল, মুতি কেমন মানুষ হে খাবার না দিয়ে গাধাটাকে মেরে ফেললে
হোজ্জা বলল, খাবার কমানোর অর্ভেস করাচ্ছিলাম গাধাটা মরে গেল তাই নইলে দেখিয়ে দিতাম একেবারে না খেয়েও গাধা বেচে থাকতে পারে
গাধাটা পারেনি সে গাধা বলেই। আপনি সেটা করে দেখান।

জট-মহাজটের গনতন্ত্র

Nov 30, 2010
আমরা গনতন্ত্র চাই গনতন্ত্র ছাড়া অন্য কিছুতে সন্তুষ্ট নই যেভাবেই হোক, যা করতে হয় হোক, গনতন্ত্র কায়েম করব
এটা নিত্যদিনের ঘোষনা রিক্সাচালক, শ্রমিক থেকে শুরু করে রাজনীতিবীদ হয়ে বিশেষজ্ঞ পর্যন্ত সবার মুখে এককথা জরুরী আইন ঘোষনা করেও বলা হয়েছিল একই কথা, আমরা গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতেই এসেছি গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে একদিনও অতিরিক্ত ক্ষমতায় থাকব না জোরে একটা হাততালি
গনতন্ত্র নিশ্চয়ই পশ্চিম থেকে আমদানী করা আরো নির্দিষ্ট করে বললে, যদি সেটা ডেমোক্রাটিকের বাংলা হয় তাহলে তো বটেই  প্রাচীন গ্রীসে নাকি এর উতপত্তি সেখানে ভোটের ব্যবস্থা ছিল ভোটে নির্বাচিত হত কে সরকারের প্রতিনিধি হবেন আর আধুনিক গনতন্ত্রের কথা বলেছিলেন ইতালীর কে একজন মেকিয়াভেলী না কি যেন নাম সেটাও পশ্চিম দিকেই আমরা সেতুলনায় পুবদিকে বাস করি, কাজেই তাদের গনতন্ত্র আর আমাদের গনতন্ত্রে ফারাক থাকতেই পারে
যেমন ধরুন ক্ষমতাশীন সরকার লীগের বক্তব্য অত্যন্ত স্পষ্ট বাংলাদেশে বিএনপির মত অগনতান্ত্রিক দল দরকার নেই আমরা একাই যথেষ্ট প্রয়োজনে সাথে যেসব আন্ডাবাচ্চা আছে তাদের বিরোধী দলের সিটে বসালেই হয়ে গেল আমেরিকাতেও কম্যুনিষ্ট পার্টি আছে
কাজেই বিএনপিকে বিদায় করতে হবে রাজনৈতিকভাবে না, দলীয়ভাবে, ব্যক্তিগতভাবে ক্যান্টমেন্টের বাড়িছাড়া করা হয়েছে, প্রয়োজনে গুলশানের বাড়িছাড়া করা হবে, ঘোষনা দিয়েছেন একজন মন্ত্রী খালেদা জিয়ার দুই সন্তানকে দেশছাড়া করা হয়েছে দুর্নীতির দায়ে
একটু থামুন তো দুর্নীতির দায়ে দেশছাড়া দুর্নীতির দায় নেই এমন একজন নেতার নাম করতে পারেন ! মাত্র একজন ? পারেন না ? তাহলে তাদের দেশছাড়া হতে হয়নি কেন ? একজনতো অনৈতিক কারনে সংসদের সদস্যপদ খোয়ানোর পরও মহানেতা হাজার হাজার মামলা উঠিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিতে পারেন নিজেরটা সহ
আসলে, আমরা গনতন্ত্র চাই সেকারনেই ওদের দেশ ছাড়তে হয়েছে গনতান্ত্রিক দেশে ওসব জঞ্জাল প্রয়োজন নেই ওদের হাতে দেশ নিরাপদ না চাকরী-বাকরি, টেন্ডার ওসব দেয়া হবে আওয়ামী লীগের ভেতর থেকে যদি পড়াশোনা করে, নিজেকে যোগ্য ভেবে চাকরী আশা করেন তাহলে আগেই জেনে রাখুন, লীগার হওয়া সবচেয়ে বড় যোগ্যতা  আগে সেপথ ধরুন হয় লীগ নয়ত দ্বিতীয়-তৃতীয় শ্রেনীর নাগরিক দয়া করে এদেশে থাকতে দিয়েছি এইই অনেক
হরতালের ক্ষতির ব্যাখ্যা দেয়ার মানুষের অভাব নেই জনগনের দুর্ভোগ, অর্থনীতি ধ্বংস, উতপাদনে বাধা সেইসাথে দাঙ্গা-হাঙ্গামা-মারপিট-ভাংচুর তো আছেই এসব কি চলতে দেয়া যায় গনতন্ত্রের দেশে কোনভাবেই না তারা যদি রাজনীতি করতেই চায় অন্যপথে করুক
সেই পথটা কি সেপ্রশ্ন করবেন না খোজার দায়িত্ব তাদের তাদের বিষয় নিয়ে আমি মাথা ঘামাব কেন ? আমার সময় কোথায় ? প্রধানমন্ত্রীর সাথে জাপান ভ্রমনটা হাতছাড়া হয়ে গেল এসব বলতে বলতে-
আসল কথা হচ্ছে, আগামী ৩ বছরের মধ্যে এদেশ থেকে অগনতান্ত্রিক বিএনপিকে বিদায় নিতে হবে তারপর দেখবেন কিভাবে দেশ গনতন্ত্রের পথে তরতর করে এগিয়ে যায় বাধা দেয়ার কেউ নেই
আর বিএনপির কথা যদি শুনতে পান, সবকিছু হারানোর পর একমাত্র রাজপথই খোলা আছে সব পদ্ধতি শেষ হয়ে একমাত্র হরতালই টিকে আছে সাধারন মানুষ (যদি থেকে থাকেন আসলে সবাই অসাধারন) একমাত্র এটাই বোঝে যদি বিরোধী দল টিকিয়ে রাখতে হয় তাহলে এটা চলতেই থাকবে
দেশ আজ জটে আক্রান্ত রাজপথ আক্রান্ত গাড়ি-রিক্সা আর মানুষের জটে রাজনীতি আক্রান্ত চারদলীয় জট আর মহাজটে যারা আওয়ামী-জাতিয়তাবাদী কোনটাই হতে পারেননি তারা মাঝখানে ফলভোগ তো করতেই হবে

ব্যবসা মানেই অগ্রগতি

Nov 25, 2010
বিশেষ একটা ব্রান্ডের সাবান মাখলে সারাদিন মনের আনন্দে থাকা যায় সেটা নিশ্চয়ই জানেন। কিংবা এক বোতল এনার্জি ড্রিংক খেলে নাচতে জানুন বা নাই জানুন, মনের আনন্দে নাচতে থাকবেন সেটাও জানেন। কিংবা বিশেষ সেন্ট গায়ে মাখলে রাস্তায় যত সুন্দরী মেয়ে আছে সবাই পড়িমড়ি করে আপনার দিকে ছুটে আসবে সেটাও জানেন।
আমি বিজ্ঞাপনের কথা বলছি। কিংবা বলতে পারেন ব্যবসার কথা, কিংবা ব্যবসায়ী কথা। তারা যা বলেন সদাসত্য বলেন। এমনকি দেশ কিভাবে চালাতে হবে সে বিষয়েও।
হরতাল দেশের অর্থনীতি ধ্বংশ করে, মানুষকে পংগু করে। কাজেই হরতাল করবেন না। প্রয়োজনে হরতালের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীরা মাঠে নামবে (অস্ত্র হাতে কিনা সেটা উহ্য)। মন্ত্রীও খুব উতসাহ পেয়েছেন সেকথা শুনে। ব্যবসায়ীরা যখন দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিচ্ছে তখন ....
ব্যবসায়ীরা সবই পারেন। দেশ কিভাবে চলবে পরামর্শ দিতে পারেন, দেশ চালাতে পারেন। আর নেতা আর ব্যবসায়ীর পার্থক্যই বা কোথায়। যিনি ব্যবসায়ী তিনিই যে নেতা। তিনিই মন্ত্রী। কাজেই তারা এমন কথা বলতেই পারেন। তবে একটা কাজ তারা পারেন না। গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীগুলির জন্য আইন করা হয়েছে বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ নদিতে ফেলার আগে শোধন করতে হবে। সেটা তারা মানাতে পারেন না। তাতে খরচ বাড়ে। পেটেভাতে কাজ করে যে শ্রমিক তার বেতন বাকী রাখা বন্ধ করতে পারেন না। তাতেও খরচ বাড়ে। প্রবাদ আছে কাক কাকের মাংশ খায় না। তারা ব্যবসায়ী হয়ে আরেক ব্যবসায়ীর ক্ষতি করবেন তাতো হয় না। তাদের কত প্রতিযোগিতা করে ব্যবসা করতে হয়। তাদের লাভের বিষয়টা তো দেখবেন। নইলে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক বেকার হবে যে। ক্রেতারা বেশি টাকা দিতে চায় না।
অবশ্য আমেরিকা ইউরোপের ক্রেতারা অন্য কথাই বলেন। তারা ইচ্ছে করলেই বেশি টাকা দিতে পারেন কিন্তু সেটা যাবে কোথায় ? যে টাকা শ্রমিকের খাবারের ব্যবস্থা হয় সেই টাকা বাকী থাকে কিন্তু মালিকের কোটি টাকার গাড়ি কেনা বন্ধ থাকে না যে!
দেশের কথা সবাইকে ভাবতে হয়। একেবারে গন্ডগ্রামের যে কৃষক সেও ভাবে। সংখ্যায় তারাই সবথেকে বেশি। নির্বাচনে তারা বিএনপিকে ভোট দেয়নি কারন তাদের রাষ্ট্রপরিচালনার দুর্গন্ধ। হরতালে দেশের ক্ষতি হয় সেকথাই বা বলছে কে ? আওয়ামী লীগের গা থেকে হরতালের দুর্গন্ধ কি বিদায় হয়েছে ? বিরোধী দলে থাকলেও হরতাল দেব না এমন কথা দিয়েও দিন-তারিখ ঘোষনা করা হয়েছিল সরকার পতনের। গিনেস বুকে হরতালের রেকর্ড যদি থেকেই থাকে সে তো তাদেরই। সরকারে যাওয়ার সাথেসাথে রঙ পাল্টালো কিভাবে ? আবার কি কথা দেবেন বিরোধী দলে থাকলেও ....
কথা হচ্ছিল ব্যবসায়ীদের নিয়ে। তারা দেশের জন্য সদা ভাবেন। কখন কে সরকার তাতে কি আসে যায়, হাত বাড়াতে হয় সরকারের দিকে। বিরোধী দলের কাছে হাত পেতে লাভ নেই।
মানুষ যখন ডুবতে থাকে তখন সামনে যা দেখে তাকেই আকড়ে ধরতে চায়। বিএনপিকে মানুষ সমর্থন করছে না কারন তারা খারাপ থেকে ভাল কি দেবেন সেটা পরিস্কার করেননি। যে কারনে খারাপ আরো খারাপ হচ্ছে। এখন ব্যবসায়ীরা যদি রাজনীতিতে অবদান রাখতে থাকে তাহলে সেটা খারাপ থেকে ভয়ংকর হবে, ইতিহাস সেটাই বলে।
ব্যবসা এবং দেশ চালনা দুটো পৃথক বিষয়। ব্যবসার উন্নতি লাভে, দেশের উন্নতি কল্যানে। আর ব্যবসায় কল্যান বিষয়টি অনুপস্থিত।

অবশেষে

Nov 14, 2010
অবশেষে বেগম খালেদা জিয়াকে ৬০০ কোটি টাকার সম্পদ ছেড়ে যেতে হল। কিংবা বলতে পারেন ৬০০ কোটি টাকার সম্পদের অবৈধ দখলমুক্ত করল সরকার। তিনি কখনোই স্বেচ্ছায় যেতেন না। এখন দাম ৬০০ কোটি টাকা, ভবিষ্যতে আরো বাড়বে। তখন বিক্রি করে বহু টাকার মালিক হবেন এই আশায় সেখানেই থেকে যেতেন। কাজেই, সরকার দেশের সম্পদ উদ্ধার করে একটি পবিত্র, মহান দায়িত্ব পালন করল।
মুল পথের আশেপাশে যেমন অসংখ্য অলিগলি থাকে আপনি চাইলে তেমনি অলিগলি দেখতে পারেন। মানে নানারকম যুক্তি আরকি। যেমন তিনি কোর্টের রায় মেনে স্বেচ্ছায় চলে গেছেন, তার সাড়ে তিন দশকের সংসারের সবকিছু ফেলে। তাকে ধন্যবাদ জানাতেই জানালা কেটে, দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকা হয়েছিল। কোর্টে যে আবেদন করেছেন, কোর্ট যে সময় নিয়েছে মাসের শেষ পর্যন্ত ওসব আসলে কিছু না। কোর্ট কি জানাবে সেটা আগেই জেনে খুশি হয়ে চলে গেছেন।
অন্যদিকেও দৃষ্টি দিতে পারেন। আকারে ইঙ্গিতে এরই মধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে কাজটি সরকার করেনি। করেছে সেনাবাহিনী। জনগনের সরকার এমন কাজ করতেই পারে না।
কিংবা যে কথাগুলি এতদিন ধরে প্রচার করা হয়েছে সেগুলি আবারও জাবর কাটতে পারেন। ক্যান্টমেন্টের মধ্যে বেসামরিক বসবাস নিষেধ (কোন আইনে কে জানে ? বনানী, মিরপুরসহ আশেপাশের অনেক এলাকা ক্যান্টমেন্টের নিজস্ব। ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের নিজস্ব আইনে নাকি বলা আছে কমপক্ষে ১০ হাজার বেসামরিক লোক থাকতে হবে ক্যান্টমেন্ট এলাকায়), কিংবা ক্যান্টনমেন্টে বসে রাজনীতি করা যায় না (বানিজ্যমন্ত্রী যেখানে বাস করেন তাকে ক্যান্টমেন্টে বাস করা বলা যায় না। তিনি বর্তমান মন্ত্রী) ইত্যাদি ইত্যাদি।
কথা যাই হোক না কেন, বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতির মুল যে কাজ সেই হরতাল ডাকা হয়েছে। ঈদের দুদিন আগে। যখন রমরমা ব্যবসা, মানুষের বাড়ি ফেরার মিছিল ঠিক সেই সময়ে। তাদের মানবিকতা বলে কিছু নেই। ৬০০ কোটি টাকার বাড়ি রক্ষার জন্য সারা দেশের মানুষকে জিম্মি করেছে। ৩৫ লক্ষ গার্মেন্টস কর্মী ভাইবোনসহ ২ কোটি দরীদ্র মানুষের ভাগ্য অনিশ্চিত করছে। ঈদের আগে ব্যাংক বন্ধ রেখে চামড়া শিল্প ধ্বংশ করছে। হরতাল অগনতান্ত্রিক সমাজের বৈশিষ্ট। একদিনে হরতালে ক্ষতির পরিমান ..
এসব তথ্য সকলেরই জানা। অতীতে শতশতবার শুনেছেন। গত সরকারের সময় তালিখ ঘোষনা করে দেয়া হয়েছিল, অমুক তারিখের মধ্যে সরকারের পতন ঘটানো হবে। আপনারা ততদিন পর্যন্ত হরতাল করুন।
তখন সবাই জেনেছেন হরতালের ব্যাখ্যা কি। নতুন করে আর বলার কি আছে। সরকার-বিরোধীদল-ব্যবসায়ী নেতা-বুদ্ধিজীবী সকলেই আরেকবার ঝালিয়ে নেবেন তাদের বক্তব্যগুলো। আরো ধারালো করবেন। বরং সাধারন মানুষের দিকটাই দেখা যাক (অবশ্য যদি সাধারন মানুষ বলে কিছু থাকে)।
অনেকের মতে এটা হরতালের প্রস্তুতি। ঈদের আগে হরতাল ডাকার কোন পরিকল্পনা ছিল না। ঈদের পর আন্দোলনের কথা বলা হয়েছিল। কেউ কেউ আগ বাড়িয়ে এটাও বলছেন সেজন্যই একে মোক্ষম সময় মনে করা হয়েছে। যাই হোক না কেন, হরতাল ডাকা হয়েছে। এটা প্রস্তুতি মুলক। এরপর বিরতি দিয়ে দিয়ে, তারপর বিরতিহীনভাবে ডাকা হবে।
আর হরতাল অর্থ দল আ লীগের মুখোমুখি অবস্থান। একপক্ষের চাদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলদারী, খুন সবকিছু করার অধিকার দেয়া হয়েছে এই সময়ে পথে নামবেন এই সর্তে। আরেকপক্ষ বছর চারেক ধরে সব হারিয়ে সেগুলি ফিরে পেতে মরিয়া। মাঝখানে জনগন। সরকারী চাকরী করলে অফিসে যাওয়া না যাওয়া আপনার ইচ্ছে, হরতালের দিন বাদ দিয়ে। চাকরী বাচাতে চাইলে আগের দিন অফিসে গিয়ে রাতে সেখানে ঘুমাবেন এবং পরদিন অফিস করবেন। বিটিভিতে দেখানো হবে অফিসের উপস্থিতি স্বাভাবিক।  সরকারী সাংসদের গার্মেন্টস হলে সেখানেও একই কথা। সেলাইকল চালানো দেখানো হবে বিটিভিতে। রাজপথে কিছু বাস চলবে যেখানে যাত্রীদের সবার কাছে পিস্তল। এই বাসগুলি কোথাও থামবে না। সারা শহর ঘুরে বেড়াবে। সেটাও দেখানো হবে বিটিভিতে। ফুটপাতের কোন ব্যবসায়ী অসন্তুষ্ট, কোন মিনিবাস চালক হরতালের শিকার, কোন রিক্সাচালক খেতে পাচ্ছে না সেই সাক্ষাতকারও দেখানো হবে (লক্ষ্য করলে মুখের কোনে হাসিটাও দেখে নিতে পারেন। হরতাল মানেই রিক্সাভাড়া দুই থেকে তিনগুন), কোন পথচারী কতঘন্টা ধরে কত মাইল হেটেছেন সে বর্ননাও শুনবেন।
আজকাল আবার বিটিভি একা নেই। প্রতিদ্বন্দি অনেক। চ্যানেলগুলিতে এসবের সাথে হরতালের পক্ষ-বিপক্ষের ছবি দেখবেন।  সেখানে দুপক্ষের উপস্থিতি সমান। কথায়, স্লোগানে, শক্তিতে। একেবারে রেসলিংএর উত্তেজনা। একেবারে টাটকা, সরাসরি সম্প্রচার।
যারা টিভিতে ঝিমধরা, বস্তাপচা নাটক দেখে দেখে বিরক্ত তারা অবশেষে উত্তেজনার খোরাক পেলেন। ধন্যবাদ জানাতেই পারেন দুপক্ষকে।
আর যদি নিতান্তই নিরামিশভোজি হন তাহলে জনগনের কথা ভেবে ইতিহাস থেকে উদাহরন দেখাতে পারেন বেগম খালেদা জিয়াকে। সম্রাট আকবর যখন ক্ষমতায় তখন খবর পাওয়া গেল ইংরেজরা এক কুকুরে গলায় কোরান শরীফ ঝুলিয়ে শহরে ঘুরিয়েছে। তিনি এতটাই ক্ষিপ্ত হলেন যে ঘোষনা দিলেন গাধার গলায় বাইবেল ঝুলিয়ে দেশ ঘোরাবেন।
তার মা (ইতিহাসে তার খুব পরিচিতি নেই) বললেন, ওরা অন্যায় করেছে।  সেই একই অন্যায় করে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা যায় না।
তিনি বাংলাদেশে ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘসময় দেশ চালিয়েছেন। সন্মান তার প্রাপ্য। যা করা হয়েছে তাতে অনেকেই দুঃখ পেয়েছেন। বিএনপি কিংবা তার শাসনামলের ভক্ত না হয়েও। 
তারপরও, অন্তত দেশ এবং জনগনের কথা ভেবে তিনি যেন এমন কিছু না করেন যেখানে প্রতিহিংসা প্রকাশ পায়।

ক্যালকুলাসে ক্যালকুলেশন

Nov 8, 2010
দেশে নাকি বেকারের সংখ্যা বেড়েছে আরো বাড়ছে অচিরেই ৬ কোটিতে দাড়াবে। শিক্ষিত বেকারের সংখ্যাবৃদ্ধির হার সবথেকে বেশি যারা এবিষয় নিয়ে কাজ করেন তারা সবাই বলছেন;
এই লোকগুলোর আসলে কোন কাজ নেই এটাওটা বলে নিজের পকেটে টাকা ঢুকানো ছাড়া এসব কথা বললে বিশেষজ্ঞ হওয়া যায় বাড়িগাড়ির মালিক হওয়া যায়। সবাই না বুঝে হাততালি দেয়, কেউ ব্যাখ্যা চায় না।
শিক্ষিত বেকার, কথাটার মানে কি ? যার সার্টিফিকেট আছে চাকরী নেই তাই তো !
চাকরীর কথা আসছে কেন ? প্রধানমন্ত্রী তো বলেই রেখেছেন চাকরী দেয়া হবে আওয়ামী লীগের ভেতর থেকে। শিক্ষিতদের সবাই কি আওয়ামী লীগ ?
প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন হয়ত প্রত্যেক পরিবার থেকে একজনকে চাকরী দেয়া হবে (নিশ্চিত করা কঠিন। উনি কি বলেছেন আর কি বলেননি সেটা প্রমান করা যায়না), কিন্তু কি চাকরী দেবেন সেকথা তো বলেননি। একটা সার্টিফিকেট হাতে ধরে ভেবেছেন ডিজিটাল বাংলাদেশে সফটঅয়্যার ডেভেলপার হবেন ? ঘরে বসে ইন্টারনেটে সহজে অর্থ উপার্জন করবেন ? কিংবা হবেন শিল্পী, সাহিত্যিক ?
এদেশে ওসব ঘাড়তেড়ামি চলবে না। এটা পরিশ্রমি মানুষের দেশ। রাজপথে রিকসা চালান। ফুটপাতে দোকান দিন। পরিশ্রম করুন। জমিতে চাষাবাদের কথা ভাববেন না আবার। জমির আসল মালিক বলে কোন কথা নেই। কখনো আপনার পুর্বপুরুষ হয়ত ছিল, সেটা অতীত। বর্তমান মালিক কখনো হাউজিং কোম্পানী, কখনো সরকারী দলের নেতা, কখনো সরকার নিজেই। ছাড়ার জন্য তৈরী থাকবেন। এই দুনিয়া মুসাফিরখানা। কদিন হেসেখেলে চলুন তারপর পাততাড়ি গুটাতে হবে।
নিজের বাড়ি নেই দেখে পত্রিকার বিজ্ঞাপন আর টিভির বিজ্ঞাপন দেখে ভাবছেন একটা ফ্লাট কিনেই ফেলব। বুকিং দিলেই পুরস্কার। মাসেমাসে টাকা দিলেই চলবে।
ওসব করতে কৃতিত্ব লাগে। আগে দুচারটা সরকারী টেন্ডার পান তারপর ওকথা ভাবুন।
নয়ত ভাবছেন এত হাজার হাজার বাড়ি যখন হচ্ছে তখন একসময় বাড়িভাড়া নিশ্চয়ই কমবে। বাড়িগুলো তো আর খালি থাকবে না। তখন মনের আনন্দে কম ভাড়ায় থাকা যাবে।
সে আশার গুড়ে বালি। বাংলাদেশে বছরে মানবসম্পদ জন্মে ৩১ লক্ষ। গড়ে চারজনের জন্য এক বাড়ি হিসেব করলেও বাড়ি প্রয়োজন হয় সাড়ে ৭ লাখের বেশি। বছরে ওই পরিমান বাড়ি তৈরী হয় না। চাহিদা আর সরবরাহে বিশাল ঘাটতি থেকে যায়। ঘাটতি থাকলেই ব্যবসায় লাভ। শোনেন নি বাংলাদেশে নির্মানশিল্প বিশাল শিল্প। বহুলক্ষ মানুষ জড়িত এই শিল্পে।
সোজা কথায় আসুন। নিজের বাড়ি অথবা পরের বাড়ি ভাড়া যাই নিতে চান না কেন, আগে যোগ্যতা প্রমান করুন। দেশকে কতটা ভালবাসেন তার প্রমান দেখান। মায়ের মত না বাবার মত সেটা পষ্ট করে বলুন।
আর যদি না পারেন তাহলে বস্তি কিংবা ফুটপাত। নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী। ওই ভদ্রলোকেরা ক্যালকুলাসে ক্যালকুলেশন করে বেকারত্ব বৃদ্ধির যে হিসেব দিয়েছেন এই দুযায়গায় বৃদ্ধির হার তারথেকে অনেক বেশি।

আশংকা করবেন না

Oct 29, 2010
দুনীতিতে বাংলাদেশ একধাপ এগিয়েছে না একধাপ পিছিয়েছে বিষয়টি আমার কাছে পরিস্কার না পরীক্ষার ফলে রোল যদি ১ হয় তাহলে আমরা বলি ফাষ্ট বয় এরচেয়ে ভাল কিছু হয় না কাজেই ১৩ থেকে ১২ হওয়া উন্নতি তো বটেই বরং আমরা আমেরিকা থেকে কিছুটা পিছিয়ে আছি এটাই আপত্তি তা তারা বিশ্বের সবথেকে ধনী দেশ, সবচেয়ে শক্তিশালি দেশ তাদের থেকে পিছিয়ে থাকা মেনে নিতে আপত্তি কোথায়
আমেরিকা থেকে পিছিয়ে থাকা বিষয়টি বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে আসলে আমেরিকার মুল ভুখন্ড সম্পর্কে বলা হচ্ছে না আমেরিকা মানে ইরাক-আফগানিস্তান বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তারা এই দুই দেশের দখল নিয়েছেন নিজেদের সমস্ত সামর্থ্য ব্যয় করছেন কাজেই তারা বাংলাদেশের মত দেশ থেকে এগিয়ে থাকবে এটাই স্বাভাবিক আর সোমালিয়ার কথা নাইবা হিসেবে আনলেন অন্তত ব্লাক হক ডাউন নামের হলিউডি ছবি যারা দেখেছেন তারা জানেন আমেরিকা কিভাবে জীবন বাচিয়ে পালিয়েছিল ওখান থেকে
কথা হচ্ছে, কথা তা না সরকার বলেন ওই টিআই এর রিপোর্টে কোন ভিত্তি নেই আর বিরোধীদলের বক্তব্য, ওরাই বলে দিচ্ছে সরকার কতটা দুর্নীতিবাজ দুর্নীতিকে প্রশাসনিক রুপ দিয়েছে ওইযে, সরকারী দলের লোককে চাকরী না দেয়ায় ডিসি-এসপি পর্যন্ত হটিয়ে দিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন চাকরী দেয়া হবে আওয়ামী লীগের মধ্যে থেকে, টেন্ডারবাজি সরকারের লোকের অধিকার টেন্ডারের জন্য কোন অভিজ্ঞতা-সার্টিফিকেট প্রয়োজন নেই দলের সার্টিফিকেটই যথেষ্ট আর টেন্ডার মানেই টাকা কাজ করতে হয় না, বিল জমা দিলেই চলে। বাজেটের সবচেয়ে বড় অংশ যে ওখানেই উন্নয়ন কর্মকান্ড
আসলে দুর্নীতি সব দেশেই থাকে সবচেয়ে ধনী দেশেও থাকে, সবচেয়ে গরীব দেশেও থাকে বরং দরীদ্র হলেই দুর্নীতি বাড়বে এমন কথা অন্তত পরিসংখ্যান বলে না প্রতিবেশি দেশগুলির মধ্যে ভুটানে দুর্নীতি সবচেয়ে কম, অথচ ওরাই নাকি সবচেয়ে গরীব না খেয়ে থাকলেও ধান্দাবাজি-বাটপারি করে না
কথাটা ঠিক তো বটেই যে খেতে পায় না সে পেট ভরে খেতে চায় তার চাহিদা এটুকুই যদি একবার খেতে পায় তাহলেই চাহিদা বাড়তে থাকে ডাল-আলু ভর্তায় চলবে না, ওইযে কেন্টাকি থেকে যে আলু আসে ওটা চাই দুহাজার টাকার মোবাইল ফোন কি ফোন হল! ওতে কি হাই রেজ্যুলুশন ভিডিও করা যায় ? ডাউনলোড করা যায় ??
কাজেই চাহিদা বাড়তেই থাকে রাবনের মত দশ মাথায় চারিদিকে চোখ রাখে, দুর্গার মত দশহাতে দশদিকে আয় খুজতে শুরু করে আর, সুযোগ তো রয়েছেই চারদলীয় জোট সরকারের সময় নানারকম পথ তৈরী হয়েছিল, মহাজোট সেই পথকে অলিতে-গলিতে পরিনত করেছে হাত বাড়ালেই টাকা টাকা মানেই ক্ষমতা অমুক মেয়েকে আমার পছন্দ, বাধা দেবে কে ? মেরে ফেলব না
কেউ কেউ বলেন স্বাধীনতা পরবর্তী পরিস্থিতি ফেরত আসছে তখন নাকি এটাই ঘটত যাকে পছন্দ তুলে নিয়ে গেলেই হল এভাবেই বিরত্বের পরিচয় অনেকেই বীর হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। কেউ আবার বলছেন দেবার আর বাকি কি ? চাকরী পাবার আশা গেছে, ব্যবসা গেছে, জমিজমা যাচ্ছে, জীবন যাচ্ছে। এরপর হয়ত বলতে হবে আমরা ক্ষমতাশীন দলের ক্রীতদাস। দয়া করে দেশে থাকতে দাও তাই থাকি। কাজকম্ম করতেও তো মানুষ লাগে। আমরা সেই ছাই ফেলতে ভাঙা কুলো। একসময় বিদেশীদের দাসত্ব করতে হয়েছে এখন নাহয় যারা স্বাধীনতা এনেছে তাদের দাসত্ব। পার্থক্য কোথায় ?
কেউ কেউ আশংকা করছেন ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হবে। বেশি বাড়াবাড়ি নাকি সৃষ্টিকর্তাও মেনে নেন না। কোন একভাবে একহাত দেখিয়ে দেন।
এই আশংকা সম্ভবত অমুলক পুরনো পথে ফেরা, সেটা হয়ত হবে না পাশে ভারত আছে না! তাদের প্রাক্তন সেনাপ্রধান বলেছেন একবার ঢাকার দিকে থেকে দৃষ্টি সরিয়ে ২১ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে দিল্লি আর সেভুল করবে না
এটাই ঠিক ভারতের জন্য ট্রানজিট ফি স্থগিত রাখা হয়েছে বাংলাদেশে সাংসদ ভারতে গিয়ে ত্রানসামগ্রী দিয়ে আসছেন দাদা পাশে থাকলে ভয় পাবার কিছু নেই
অমুলক আশংকা করবেন না

মচকাবেন, ভাঙবেন না

Oct 25, 2010
এটা অনেক পুরনো কথা কয়েক হাজার বছর আগে প্রাচীন ভারতের কথা এক বৃদ্ধ প্রশ্ন করলেন, শরীরে সবচেয়ে শক্ত কোন যায়গা তাকে বলা হল, দাত তিনি মুখ হা করে ভেতরে দেখিয়ে বললেন আমার সব দাত পড়ে গেছে কিন্তু জিহ্বা কিছুই হয়নি
দাত পড়ে যায় কারন দাত শক্ত ঝড়ে গাছ ভেঙে যায় কারন গাছ শক্ত লতা ঝড়ে ভাঙে না প্রয়োজনে মচকে যায় বেকে যায়, তেড়িয়ে যায় অনেকটাই সাপের মত যদি কোনভাবে সাপ হতে পারেন তাহলে আর ভাঙার ভয় নেই
সবাই সাপ হতে পারে না সাপ হয় না উদাহরন দেখিয়ে গেলেন শিক্ষক মিজানুর রহমান তার ছাত্রীকে উত্তক্ত করায় তিনি ঘুরে দাড়িয়ে প্রতিবাদ করলেন আর তার ওপর মোটর সাইকেল চাপিয়ে দেয়া হল তিনি ভেঙে পড়লেন
আপনি বলতেই পারেন সেই মোটরসাইকেল চালকের একজনকে তো গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিচার হবে দৃষ্টান্ত তৈরী করা হবে স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী সবসময়ই দৃষ্টান্ত তৈরী করেন এই নাটোরেই আরো দৃষ্টান্ত তৈরী হয়েছে একজন উপজেলা চেয়ারম্যানকে পিটিয়ে মারা হয়েছে প্রকাশ্যে টিভিতে দেখানো হয়েছে সেই দৃশ্য দুসপ্তাহের বেশি পেরিয়ে গেছে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও ফুটেজ দেখে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেছেন, যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বাধা তৈরী করছে তাদের নিয়ে ব্যস্ত নারায়নগঞ্জে যারা পৈত্রিক জমি রক্ষায় পথে নেমেছে, গুলিতে জীবন দিয়েছে তারাও আসলে কাজ করছে ওই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বাধা তৈরী করতে। সব ষড়যন্ত্র, সব চক্রান্ত। যারা স্বাধীনতা এনেছে কেউ তাদের ভাল দেখতে চায় না। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তো বলেই রেখেছেন নির্দেশ না মানলে তিনি কি করবেন!
দৃষ্টান্ত দেশে হয়, বিদেশে হয় বর্তমানে হচ্ছে, অতীতে হয়েছে একদিন একজন শিক্ষক খবর পেলেন এক ছাত্রীকে ধর্ষন করা হয়েছে তিনি এতটাই ক্ষিপ্ত হলেন যে নিজেই বিচার করবেন সিদ্ধান্ত নিলেন অপরাধীদের ধরে ফাসি দিয়ে পথের ধারে ঝুলিয়ে রাখলেন অনেকে এতে এতটাই খুশি হল যে দলে দলে যোগ দিল তারসাথে দেখতে দেখতে রাষ্ট্রক্ষমতা পর্যন্ত এসে গেল তার হাতে তিনি দেখিয়ে দিলেন সমাজে শৃংখলা আনা যায়, পপি চাষের মত লাভজনক ব্যবসাও পুরোপুরি বন্ধ করা যায়
নিশ্চয়ই বুঝেছেন সেই শিক্ষকের নাম মোল্লা ওমর সেই দেশের নাম আফগানিস্তান তার শিষ্যরা তালেব, বাংলা ভাষায় ছাত্র
তালেবান শুনলে গালাগালি করা অনেকেরই অভ্যেস আমেরিকা এটা শুনতে পছন্দ করে ওরা খারাপ বলেই তো ইচ্ছেমত বোমা ফেলা যায়। কিছু সাধারন মানুষ মারা যেতেই পারে। ভুল সবারই হয়। সব তদন্ত করে দেখা হয়। লাদেনপুত্র তাদের নানাকাজে ব্যবহার করেছে, তারা অনেক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে যা গনতন্ত্রের পরিপন্থি, বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার পরিপন্থি সেইসাথে এটাও ঠিক, সেই মোল্লা উদাহরন দেখিয়েছেন ইচ্ছে থাকলে সমাজে অপরাধ বন্ধ করা যায় খুব দ্রুতই করা যায়
গ্রীষ্মকালের ফতোয়া শীতকালে দেয়া যায় না এক যায়গার উদাহরন আরেক যায়গায় চলে না ইংরেজরা প্রায় দুশো বছর এদেশ শাসন করেছে এখনও আইন বলতে যা বুঝায় তা তাদের তৈরী তারা এদেশের মানুষকে বুঝতে চেষ্টা করেছে, বিশ্লেষন করেছে ফল প্রকাশ করে বলেছে বাঙালী একা ভিতু, দলে ভয়ংকর
বিষয়টা বোঝা কি খুব কষ্টকর ?
আমাদের বিশেষজ্ঞরা টিভিতে বক্তৃতা দিয়ে, সারা দেশ ঘুরে মানুষকে শপথ করিয়ে সবাইকে ভাল বানাবেন আর মিজানুর রহমানের মত কাউকে কথা বলতে হবে একাই জীবন দিতে হবে পাশে কেউ দাড়াবে না কারন অপরাধীরা দলে শক্ত তাদের একতার তুলনা হয় না রাজনৈতিক দলগুলো ওত পেতে থাকে তাদের দলে টানার জন্য। লগিবৈঠা এদের পক্ষেই। এদের বিপক্ষে কেউ লগি-বৈঠা হাতে পথে নামে না। নিজের পায়ে কুড়াল মেরে ক্ষতি ছাড়া লাভ নেই।
মানুষ অভিজ্ঞতা থেকেই শেখে। মিজানুর রহমানকে দেখে এটাই শিখতে পারেন, মচকাবেন, নুয়ে যাবেন। কখনো সোজা হয়ে দাড়াবেন না। তাতে জীবন যেতে পারে।

গনতন্ত্রের যত নিয়ম

Oct 15, 2010
শিরোনাম দেখে কেউ যদি ভেবে থাকেন গনতন্ত্রের পাঠদান করা হচ্ছে তাহলে ভুল করছেন। গনকিন্ত্র কি, কতপ্রকার, কিভাবে পরিধান করতে সেটা আপনারা আমার থেকে অনেক ভাল বোঝেন। অন্তত জরুরী আইনের সময় সেটা ভালভাবেই প্রমানিত হয়েছে। সংবিধান কতদিনের জন জরুরী আইনের অনুমতি দেয় সেনিয়ে কথা উঠেছিল। চারিদিকে রব শোনা গেছে, সংবিধান মানুষের জন্য, মানুষ সংবিধানের জন্য হতে পারে না। কিসের সংবিধান,  পাল্টে ফেলুন। মানুষ রক্ষা করুন। তারা যতদিন খুশি ক্ষমতায় থাকুক। দেশে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করুন।
অবশ্য সেই গতিপথ পাল্টাতে খুব সময় লাগেনি। কদিনের মধ্যেই আবারো রব উঠেছিল, আমরা গনতান্ত্রিক সরকার চাই। ওসব মোটামাথা মিলিটারী দিয়ে দেশ চলে না। ওরা দেশকে পাকিস্তান বানিয়ে ফেলবে। গনতন্ত্র টেনে আনো, হেইয়ো-
সেই গনতন্ত্রের কথা বলছি।
লোকে বলে (কোন লোকে জিজ্ঞেস করবেন না। এটা কথার কথা), গনতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধরে রাখে কিছু প্রতিষ্ঠান। প্রথমত বিচার ব্যবস্থা। পাকিস্তানের পারভেজ মোশাররফ বিচারককে বরখাস্ত করে টের পেয়েছিলেন ওখানে হাত দিলে কি হয়। সবকিছু ছেড়েছুড়ে যেতে হল ওই কারনেই। ওরাই বলে দেয় আইনের বক্তব্য আসলে কি। অন্যদের সবাইকে সেটা মানতে হয়। এমনকি জনগনের ম্যান্ডেট পাওয়া সরকারকে, উর্দি পরা সামরিক সরকারকেও।
দ্বিতীয় বিষয়টি প্রশাসন। এটা চাকরী করেন রাষ্ট্রের। যদি জেলা প্রশাসক হন তাহলে তো কথাই নেই। রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে রাষ্ট্রের স্বার্থে জেলার প্রশাসন ঠিক রাখার জন্য।
আর কথা বাড়িয়ে কাজ নেই। এই প্রশাসন কি করিলে কি হয় আমরা ভালভাবেই দেখেছি। পাবনার প্রশাসন বলেছিল আমরা সরকারের কথায় চলি না। তারা যাকে বলি তাকেই চাকরী দিতে হবে এটা রাষ্ট্রের পরিপন্থী। চাকরী পেতে চাও, যোগ্যতার পরীক্ষা দাও।
ফল, সরকারের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় সারির নেতাকর্মীদের হামলা, ভাংচুর, পরীক্ষা বাতিল। এবং শেষফল, পুরো প্রশাসনের গনবদলী। গনতন্ত্রের সার্থক ব্যবহার এখানেই।
নাটোরের প্রশাসন এত বোকা না। অন্তত পাবনার গনতন্ত্র দেখে শিক্ষালাভ করেছে তো বটেই। জেনেছে ওই বাহিনীর বিপক্ষে গেলে কি হয়। অমুককে পিটিয়ে মারা হয়েছে তো হয়েছে কি! জনসংখ্যা কমেছে। আর জেল-হাজত ওসব তোল ছাত্রদল-যুবদল-জামায়াত-শিবির দিয়ে ভর্তি। আর যায়গা নেই। তার ওপর লীগ ঢোকালে ওখানেই মারামারি খুনোখুনি হবে। তারচেয়ে বরং পৃথক থাক। ওরাও দিনবদলের হাওয়া খাক, আমরা মনের সুখে চাকরী করি।
আর ওদের ধরে মামলা করলে, জেল-ফাসি দিলেই বা কি যায় আসে। ওইযে২০ জনকে ফাসির রায় দিয়েছিল, ওরা তো এখানেই ঘোরাফেরা করছে।
আইন বিষয় আরেকটু জটিল। জটিল না বলে ভীতিকর বলাই ভাল। কখন কার অবমাননা হয়ে যায় বলা তো যায় না। মানের রং কি সেটা আবার জানা নেই।
বরং পত্রিকায় যেটুকু ছাপা হয়েছে সেটুকুই দেখি। খালেদা জিয়াকে ক্যান্টমেন্টে দেড়শ কাঠার বেশি যায়গার (বাপরে!) সরকারী বাড়ি ছেড়ে দিতে হবে। এটা কোর্টের হুকুম।  
ওটা সরকারী যায়গা, মালিকানা মিলিটারীর। তিনি যদিও বাস করছেন ৩ যুগের বেশি সময় ধরে। ওটার দলিল পত্রও নাতি তার নামে। এরশাদ সাব যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন তখন তার নামে লিখে দেয়া হয়েছে।
কে ? স্বৈরাচার এরশাদ! জানেন না সে অবৈধ সরকার। কোর্ট রায় দিয়েছে। সে যাকিছু করেছে সব অবৈধ। তার সময়ে করা দলিল অবৈধ। তার সময়ে জন্ম নেয়া মানুষ অবৈধ ..
গনতন্ত্রের সত্যিকারের চেহারা আসলে এটাই।

তালি একহাতেই বাজে

Sep 29, 2010
বকারামের বক্তব্যে অনেকেই নিশ্চয়ই বিরক্ত, অনেকে ক্ষুব্ধ। সত্যি বলতে কি, বকারামেরও বহুবার মনে হয়েছে অকারনে সময় নষ্ট করার প্রয়োজন কি। শ্রোত যেদিকে টেনে নিয়ে যায় সেদিকে যাওয়াই উত্তম। অন্যদিকে যাবার চেষ্টা করলেই শ্রম দিতে হয়। সফল হওয়ার নিশ্চয়তা নেই। তারপরও,
তারপরও কথা থেকে যায়। ডাষ্টবিনের পাশে অবস্থান করে ডাস্টবিনের গন্ধ ভুলে থাকা যায় না। তাকে সুগন্ধ মনে করে তৃপ্তিলাভ করা যায় না। পাশের বাড়িতে আগুল লাগলে একসময় তা নিজের বাড়িতে পৌছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন পাবনায় একহাতে তালি বাজেনি। জেলা প্রশাসক একপক্ষ, আরেকপক্ষে যুবলীগ-ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগ। জেলা প্রশাসক নিজের পছন্দমত লোক ঢুকাবেন সরকারী চাকরীতে আর অন্যরা চুপ করে বসে থাকবে হাত গুটিয়ে তাতো হয়না। সেজন্যই ওই তালির ব্যবস্থা। তারা শুরু করেছে, শেষ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। রাতারাতি জেলাপ্রশাসক, পুলিশ সুপার বদল। পাবনা থেকে মনপুরা। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার ব্যাখ্যা, এটা সংকেত। অন্যরা দেখে শিক্ষা নিন।
সেখানেই একটু গিট্টু লেগেছে। তালি একহাতে বাজা ভাল, না দুহাতে বাজা ভাল।
আমাদের সাংসদরা সংসদ অধিবেশনে খুব দক্ষতার সাথে তালির জন্য টেবিল ব্যবহার করেন। তখন একহাতই যথেষ্ট। বলতে কি, উপকারী। অন্যপক্ষ তাতে অংশ নেয় না। জেলা প্রশাসককে বদলী করা কিংবা দলের মধ্যে থেকে চাকরী দেয়া এগুলিও ওই একহাতে তালি বাজানোর মতই। অন্যহাত যদি তালি বাজাতে চায় তাহলেই বিপত্তি। প্রয়োজনে আরেকহাত অকেজো করে দেয়া হবে যদি তালির প্রতিযোগিতায় নামে।
এতেও কিছু যায় আসে না। তালি জিনিষটা খারাপ না। আমার শংকা আসলে অন্য যায়গায়। সেই পুরনো উদাহরন আবারো উল্লেখ করতে হচ্ছে, একসময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাসিম সাহেব পুলিশের পিটুনি খেয়ে হাসপাতালে। তারপর একসময়ের স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী বাবর সাহেব হাজতে-রিমান্ডে-জেলে।
যদি কোনভাবে দিনবদল হয়!
পুলিশের সাইকোলজী বোঝা খুব কঠিন। যখন যার তখন তার, এটা একটা দিক। আবার এটা করতে গিয়ে যা জমা হয় তা একই নিয়মে কাজে লাগে পরবর্তীকালে। তারা কাজ করেন সরাসরি জেলা প্রশাসক-পুলিশ সুপারের কথামত, কখনোই রাজনৈতিক নেতার কথামত না। এখন যারা একপক্ষে তারা যদি কোনভাবে অন্যপক্ষে যান তখন কি হবে ? যে পুলিশ সদস্য ছাত্রলীগের নেতার পিটুনি খেয়েছেন তিনি কি সেটা ভুলে গেছেন ? নাকি যাবেন ? নাকি অপেক্ষা করবেন বিপরীত হাওয়ার ?
আওয়ামী লীগের ভেতর থেকে চাকরী দেয়া হবে, একথারই বা অর্থ কি ? দেশের শতকরা কতজন আওয়ামী লীগের ? ভোটের সময়ও কোন হিসেবই ৪০ ভাগের বেশি হয়না। বাকি ৬০ ভাগ চাকরী ছাড়া, টেন্ডার ছাড়া চলতেই থাকবেন এটা কতটুকু বাস্তবসম্মত।
বিমানমন্ত্রীকে নিয়ে জোরালো খবর হয়েছে বেশ কিছুদিন। তার প্রতিদ্বন্দী বিশাল, শতকোটি-হাজার কোটি টাকার মামলা। তিনি নিজে আবার সরাসরি লীগের কেউ নন। তাকে হুমকি দেয়া হয়েছে মোবাইল ফোনে, এসএমএস পাঠানো হয়েছে। তার বড় বিপদ হবে, আগেই জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
ডিসি-এসপি-মন্ত্রী যখন হিমসিম খাচ্ছেন তখন সাধারন মানুষ তো পোকামাকড়।
শংকাও সেকারনেই।
সরকারের কাছে অনুরোধ, তালি একহাতে বাজানোর বিষয়টি চিরস্থায়ী করার ব্যবস্থা করুন। কোনভাবেই যেন দুহাত একসাথে না হয়। নইলে বাঘে-মহিষের লড়াইয়ে নলখাগড়ার প্রাণ যাবে অকারনেই।
 

Browse