ঠ্যালা

Jun 14, 2009

সভ্যতার শুরু ঠ্যালা দিয়েই একেবারে আদিকাল থেকে চলছে ঠ্যালাঠেলি। পছন্দ করি না না করি ঠ্যালার মধ্যেই আমাদের বাস করতে হয় ঠ্যালায় গতি সঞ্চার হয়, ঠ্যালা বন্ধ করলে গতি কমতে শুরু করে করে কমতে কমতে একসময় থেমে যায় এর সবচেয়ে বড় উদাহরন ঠ্যালাগাড়ি ঠ্যালা দিন চলবে ঠ্যালা বন্ধ করুন থেমে যাবে যত ঠ্যালা তত গতি বিশুদ্ধ, পরিবেশদুষন মুক্ত বাহন ভার বেশি হলে একা না পারলে অন্যকে সাথে নিন তারপর একসাথে, মারো ঠ্যালা, হেইও-

ঠ্যালা যদি বেশি হয় তাহলে আবার সমস্যা তখন সেই ঠ্যালা সামলানো দায় ঠ্যালাগাড়ির ব্রেক থাকে না কাজেই এমন গতিতে ছুটতে থাকে যে পরিনামে ফল ভোগ করতে হয় সেই ফল যদি আম-কাঠাল-কলা-আনারস হত তাহলে আপত্তি ছিল না এটা কারো জন্য আম-কাঠাল, কারো জন্য বিষফল

আপনি ধরে নিলেন নির্বাচনের সময় এমন ঠ্যালা দেবেন যার ফলে পাচ বছর গতি থাকবে বাস্তবে সেটা হয় না। তখন ঠ্যালার এর ফল যখন দেখেন তখন হিসেব পারেন দুভাবে এক, আপনার ঠ্যালায় জোর এতটা নেই যা পাচ বছর গতি ধরে রাখতে পারে পাচদিন পরই সেটা গতি হারিয়ে ফেলে তারপর উৎরাই ছেড়ে চড়াইয়ের দিকে রওনা হয় আরেক সম্ভাবনা সেটা এতটাই গতিবেগ প্রাপ্ত হয় যে আপনার নাগাল ছাড়িয়ে যায় নির্ভর করে আপনার অবস্থান কোথায় তার ওপর আপনি যদি ধারে কাছে থাকতে পারেন, কোচড় কিংবা লেজ ধরে ঝুলে থাকায় দক্ষ হন তাহলে হাতছাড়া হবার ভয় কম, নয়ত নির্ঘাৎ অপেক্ষা করতে হবে পরবর্তী ঠ্যালার রাগ করে মনেমনে বলবেন, ঠ্যালাগাড়ির দৌড় কতদুর জানি আবার ঠ্যালা দেবার সময় আসুক তখন দেখিয়ে দেব একেবারে উল্টোদিকে ঠ্যালা দেব

তারপর দিলেন ঠ্যাল্টা উল্টোদিকে চলল উল্টোদিকের পালা উল্টোদিকের খেলাও বলতে পারেন একবার এদিক আরেকবার ওদিক। ঠ্যালা-পাল্টাঠ্যালার খেলা।

দুর্নীতির দায়ে জরুরী আইনে গ্রেপ্তার হবার পর নেতা হয়ত বললেন, এতে ভাল শিক্ষা হল এই শিক্ষার প্রয়োজন ছিল। নতুন ঠ্যালার চোটে সেই শিক্ষা বেশিদিন মনে রাখার সুযোগ ঘটল না সবাই যখন অন্যদিকে ঠ্যালা মেরে যখন আকাশে তুলে দেয় হয় তখন মনে হয় এইত ভালো আছি এই সুযোগ ছাড়ে কোন বোকা কিসের শিক্ষা। আমি যা শেখাই সেটাই শিখুন।

কিংবা নেতা হয়ত ঠ্যালা সামলাতে না পেরে তখনকারমত বললেন সংস্কার প্রয়োজন সংস্কারেই সবকিছু মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত সব যায়গায় সংস্কার করতে হবে আসুন দেখিয়ে দেই সংস্কার কত প্রকার ও কিকি। কিভাবে কখন কোথায় কি করিলে কি হইবে।

তারপর ঠ্যালা একটু কমতেই দেখলেন অন্যরূপ। সংস্কার! সেটা আবার কি জিনিষ দেখছেন না আমরা কত ব্যস্ত দেশরক্ষা আগে। আবার সময় হলে দেখা যাবে

আরেক ধরনের ঠ্যালাঠেলি সবসময়ই দেখতে হয়। অমুক সমস্যা সমাধানের জন্য তমুক কাজ করতে হবে। আমি বলে দিলাম আপনি ঠ্যালা দিয়ে দেখান। না পারলে ঠ্যালার জোর বাড়ান। না পারলে দোষ আপনার। সমাধান সামনেই তবু ধরতে পারেন না। পারেন কি আপনারা ?

ঠ্যালা খেতে খেতে জনগনের একসময় বোধোদয় হয় আর ঠ্যালা সহ্য করব না এবার আমরাই ঠ্যালা দেব আমাদের কথায় চলবে দেশ দেখিয়ে দেব ঠ্যালা কাকে বলে। আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশি তাকে দেব। কোন দুর্নীতিবাজ এবার ভোট পাবে না। নিজের চোখে দেখুন। . . .

ভ্যালারে ঠ্যালা বেচে থাকো চিরকাল

0 comments:

 

Browse