গাইড

Oct 8, 2013


জিম্বাবুই যখন স্বাধীনতা লাভ করে তখন বিষয়টা আফ্রিকা মহাদেশে এতটা উতসাহ সৃষ্টি করেছিল যে চারিদিকের দেশগুলি ভাবতে শুরু করেছিল তাদের সামনে সুদিন আসছে। কিংবদন্তি গায়ক বব মার্লির ইউনাইট আফ্রিকা স্বপ্ন পুরন হতে যাচ্ছে। তিনি নিজে সেখানে গিয়ে উতসব পালণ করলেন। সারা বিশ্ব তাকিয়ে দেখল।
বব মার্লির এর পরের ইতিহাস খুব সংক্ষিপ্ত। আফ্রিকার সব দেশকে এক হতে বলে, আমেরিকায় থাকা আফ্রিকানদের নিজের দেশে ফিরতে বলে কি অপরাধ করেছিলেন নির্দিস্ট করে বলঅ কঠিন হলেও তার শত্রু  তৈরী হয়েছিল এটা নিশ্চিত। তার স্ত্রী এবং ম্যানেজার সহ তাকে মারার জন্য গুলি করা হয়। অলৌকিকভাবে তখনকার মত তিনজনই বেচে যান। তবে সেই ক্ষত থেকে কখনো সেরে ওঠেননি। একসময় সেটাই তার অকাল মৃত্যু ডেকে আনে।
জিম্বাবুয়ের ইতিহাস সেতুলনায় ভিন্ন। সেই রবার্ট মুগাবে এখনও ক্ষমতায়। সেখান থেকে নড়ার কোন লক্ষও নেই। এখনও ঘন্টার পর ঘন্টা জ্বালাময়ী বক্তৃতা দেন। বক্তব্যে শুরু বৃটিশদের গালাগালি দিয়ে, শেষ বৃটিশদের গালাগালি দিয়ে। যদি তিনি এক মুহুর্তের জন্যও ক্ষমতা থেকে সরে যান তাহলে আবার বৃটিশরা তার দেশ দখল করে নেবে।

সম্ভব - অসম্ভব

Aug 20, 2013


রোমান সম্রাটদের মধ্যে সবচেয়ে পরাক্রমশালী জুলিয়াস সিজারের মৃত্যু ঘটেছিল তার প্রিয়জনদের হাতে। তার নিজের সিনেট কক্ষে। এদের মধ্যে একজন ছিল তার সন্তানের মত। জুলিয়াস সিজার ছিলেন অন্যান্য সম্রাটদের থেকে ব্যতিক্রমী। তিনি জনগনের খবর রাখতেন, জনগন তাকে পছন্দ করত।
ঘটনাচক্রে তার উত্তরাধিকারী হলেন মার্ক এন্টনি। সবদিক থেকেই তিনি ছিলেন যোগ্য। দক্ষ রাজনীতিবিদ, তুখোড় বক্তা এবং যুদ্ধক্ষেত্রে বীর সেনাপতি।
তার কাল হল ক্লিওপেট্রা। তার মোহে এতটাই আচ্ছন্ন হলেন যে বালক অক্টেভিয়ানের সাথেও পেরে উঠলেন না। একসময় আশ্রয় নিলেন মিসরে। ধরেই নিলেন অক্টেভিয়ান সেখানে তাকে ধাওয়া করবে না। কিন্তু তিনি ভুল বুঝেছিলেন। একসময় খবর এল অক্টেভিয়ান সৈন্য সামন্ত নিয়ে নগরের প্রান্তে এসে উপস্থিত হয়েছেন।
মুহুর্তের জন্য তার চেতনা ফিলে এল। কোথায় তরবারি, কোথায় সৈন্য ...
চারিদিকে তাকিয়ে তার ভ্রম ভাঙ্গল। এখানে ওখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কিছু মাতাল আর ক্রিতদাস। এদরকেই তিনি সঙ্গি করেছেন। সৈন্যসামন্ত-তরবারি বলে কিছু নেই। এখন একটা পথ অক্টেভিয়ানের কাছে দয়া প্রার্থনা করা, আরেক পথ সন্মান নিয়ে নিজের জীবন দেয়া। তিনি জীবন দিয়েছিলেন।

হেগেল, নিউটন এবং নাটক

Jul 20, 2013


দার্শনিক হেগেল এর জনপ্রিয়তা এতটাই যে তাকে সাহিত্যিকের সাথে তুলনা করা যেতে পারে দার্শনিকরা সাধারনত সাধারন মানুষের প্রিয় হন না কিংবা আলোচনার বিষয় হন না তিনি হয়েছিলেন খুব সংক্ষেপে উল্লেখ করলে তার বক্তব্য ছিল একেবারে সাধারন, জগতের সমস্তকিছূ বিভিন্ন ধরনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ফল
আমাদের চারিদিকে যাকিছূ রয়েছে, যাকিছু ঘটছে সবকিছুই একের সাথে অন্যের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া একটি মতবাদের সাথে আরেকটি মতবাদের বিরোধ ঘটে, তাদের প্রতিক্রিয়ায় নতুন আরেকটি মতবাদ তৈরী হয় তারসাথে বিরোধ বাধে আরেক মতবাদের শেষমেষ যা দাড়ায় তা হচ্ছে ক্রমাগত পরিবর্তনশীল কিছু এর কোন স্থায়ী রূপ নেই
হেগেল বর্তমান বাংলাদেশ দেখলে হয়ত তার মতবাদের সত্যিকারের সার্থক চেহারা দেখতেন আজ এক জোট তৈরী হল তো আগামীকাল বিপক্ষে আরেকজোট আজ একজন এককথা বললেন, পরদিনই বিপরীত মতবাদ নিয়ে হাজির আরেকজন

ইধার উধার ফিকো

Jun 16, 2013


এক বুড়ি একপোয়া দুধ গরম করতে দিলেন হাড়িতে করে। কিছুক্ষন পরই সেটা ফুলে-ফেপে উঠল। বুড়ি একা মানুষ। হাড়ি ভর্তি দুধ সে কি করবে! একটা চামচ এসে ফেনাগুলি তুলে ছুড়ে ফেলতে শুরু করল, একপোয়া দুধ পাচ সের হো গিয়া। এতনা দুধ কৌন খায়েগা। ইধার উধার ফিকো।
ফল কি হতে পারে সহজেই অনুমেয়। কিছুক্ষন পর দেখা গেল হাড়ি খালি।
কেউ যখন হঠাত করে ধনী হন তিনি নাকি টাকা উড়াতে শুরু করেন। ভাবেন দুনিয়ার সমস্তকিছু কিনে ফেলতে পারেন। অর্ধলক্ষ টাকার মোবাইল সেট, কোটি টাকার ঘড়ি সবই হাতের নাগালে।
আর কেউ যদি ক্ষমতা হাতে পান তার তো কথাই নেই। অমুককে খুন করে ফেলতে পারেন, তমুককে জেলে পাঠাতে পারেন। তার সামনে দাড়িয়ে কথা বলে এতবড় সাহস!

বহুরঙা গনতন্ত্র

May 27, 2013


অনেকের মতে দক্ষিন আফ্রিকার বর্নবাদ মানব ইতিহাসের সবচেয়ে কলংকজনক অধ্যায়। একজন মানুষের গায়ের রঙের কারনে তাকে নির্যাতন করা, মেরে ফেলা ছিল অধিকার। নেলসন ম্যান্ডেলা তার প্রতিবাদ করেছিলেন। ৩ দশক কারাগারে কাটাটে হয়েছিল তাকে। এরপর যখন মুক্তি পেলেন, ক্ষমতার অধিকারী হলেন তখন খুবই সম্ভাবনা ছিল বিপরীত ব্যবস্থা নেয়ার। যারা এতদিন তার ওপর এবং স্বগোত্রিয়ের ওপর নির্যাতন করেছে তাদের অন্তত বিচারের সামনে দাড় করানোর।
তিনি শোনালেন অদ্ভুত কথা। তাদের বিচার করা প্রয়োজন নেই। নতুন দেশ হবে নানা রঙের। তাদের সবাইকে ক্ষমা করা হবে। একটাই শর্ত, অতীতের মত কাজ করা যাবে না।

ভাবমুর্তি

Apr 29, 2013


ভাবমুর্তি খুব দামী জিনিষ এতে কোন সন্দেহ নেই। এমনকি এর দাম যে কত সেটাও পরিমান করার উপায় নেই। ভাবমুর্তিকে যদি সন্মান হিসেব করা হয় তাহলে অনেকে সন্মানরক্ষায় জীবন হারাতে রাজি, মান হারাতে রাজি নন। উদাহরনের অভাব নেই।
আর যদি নিজের জীবন না হয়ে পরের জীবন হয় তাহলে কাজটি আরো সহজ। জীবন যেতেই পারে তাইবলে সন্মান হারাতে হবে কেন ? একদিন তো মরতে হবেই।
বাংলাদেশে তৈরী পোষাক শ্রমিকের জীবন দেয়া নতুন খবর না। প্রতিবছর কয়েকটা করে বড় ধরনের খবর শোনা যায়। কয়েকমাস আগে আগুনে পুড়ে মারা গেছেন শতাধিক। তদন্ত হয়েছে, দোষী সাব্যাস্ত করা হয়েছে মালিককে। তাকে গ্রেফতার করা হয়নি কেন জিজ্ঞেস করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উল্টো প্রশ্ন করেছেন, গ্রেফতার করলেই কি সমস্যার সমাধান হবে ?

বিশ্বাসঘাতক এবং দেশপ্রেমিক

Apr 21, 2013


লেখক হিসেবে টমাস পেইনকে চেনেন এমন মানুষের সংখ্যা নিশ্চয়ই খুব বেশি না। যদিও আজ থেকে দুশ বছর আগে তার লেখা বই লক্ষ কপি বিক্রি হয়েছে। তখনকার জনসংখ্যা, প্রকাশনা এবং অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করলে অনেকের মতে সেই রেকর্ড আজও অক্ষুন্ন। কোন একক ব্রিটিশ লেখক সারা বিশ্বে এতটা আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারেননি। এরপরও তার নাম অপরিচিত। কারন জনপ্রিয় হলেও তিনি ছিলেন বিশ্বাসঘাতক। ১৯৬৪ সালে যখন তার ব্রোঞ্জের মুর্তি তৈরী করে বসানোর উদ্দ্যোগ নেয়া হল তখন শহরের মেয়র বললেন অনুমতি দেয়া হবে তবে সেখানে লেখা থাকতে হবে তিনি বিশ্বাসঘাতক। কথার অন্যথা হয়নি। যায়গাটির বর্তমান পরিচয় কনভিক্টেড ট্রেটর এভিনিউ নামে।
একজন ব্যক্তি একইসাথে নন্দিত এবং নিন্দিত হলেন কিভাবে কৌতুহল থাকা স্বাভাবিক। ইংরেজ এই লেখক নিজের দেশে কোন কাজেই সুবিধে করতে পারেননি। কপর্দকশুন্য অবস্থায় আমেরিকা গেছেন। আমেরিকা তখন জর্জ ওয়াশিংটনের নেতুত্বে বৃটিশ উপনিবেশ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য যুদ্ধ করছে। সাম্রাজ্যবাদবিরোধী পেইন সরাসরি জর্জ ওয়াশিংটনের পক্ষ নিলেন। এটাই তার বিশ্বাসঘাতকতার শুরু।

সাদা এবং কালো

Apr 16, 2013


যখন টেলিভিশন প্রথম চালু হয় তখন সেখানে রং দেখা যেত না। এধরনের টিভির ব্যবহার এখনো আছে। প্রচলিত নাম সাদা-কালো টিভি। অনেক ফটোগ্রাফকেও বলা হয় সাদাকালো ছবি। কিন্তু বুদ্ধিমান ব্যক্তিমাত্রই জানেন সেখানে সাদা এবং কালো এই দুটি রং নেই। এই দুইয়ের মাঝখানে যে বহু রং আছে সেগুলি সাদাও না কালোও না। সেকারনে ইংরেজিতে বলা হয় গ্রেস্কেল। কোথাও হালকা ধুসর, কোথাও গাঢ়। সেগুলিই মুল সাদা-কালোকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।
আমরা সবকিছু সাদাকালোতেই দেখতে পছন্দ করি। হয় সাদা নয় কালো। হয় এই পক্ষে নয় ওই পক্ষে। মাঝামাঝি কিছু চাই না। সাদা এবং কালো ছাড়া অন্যকিছু থাকতে পারে না। আমি সাদা অন্যরা কালো।
সাদাকালোর উদাহরনের অভাব নেই। জর্জ ওয়াকার বুশ বলেছিলেন আপনি আমাদের পক্ষে নয়ত টেররিষ্ট। অন্যকিছু হতে পারেন না। বর্তমান বাংলাদেশে এর প্রকাশ আরো প্রকট হবে এটাই স্বাভাবিক। আপনি হয় দেশপ্রেমিক নয় মৌলবাদি। একইসাথে দুটি হতে পারেন না। এর মাঝামাঝি কিছু হতে পারেন না।

চার্লি চ্যাপলিন এবং বাংলাদেশ

Apr 11, 2013


চার্লি চ্যাপলিন একটি ছবি তৈরী করেছিলেন সোলজার-আর্মস (সোল্ডার-আর্মস) নামে  অভিনয় করেছেন একজন সৈনিকের চরিত্রে তিনজন শত্রসৈন্যকে আটক করে নিয়ে এলেন তাকে জিজ্ঞেস করা হল একা কিভাবে তিনজনকে আটক করলেন তার উত্তর, ওদেরতে ঘেরাও করে ফেললাম ...
তার একার পক্ষে তিনজনকে ঘেরাও করা সম্ভব গ্রেট ডিকটেটর বলতে তিনি শুধু হিটলারকে বোঝেননি, নিজেকেও বুঝিয়েছেন ইংল্যান্ডে তিনি ছিলেন সেরা কমেডিয়ান, আমেরিকায় এসে তাকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিলেন তিনি যেখানে যেতেন সেখানে ভিড় জমে যেত তার বেতন ছিল সপ্তাহে ১৩ হাজার ডলার একমাত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট তারচেয়ে বেশি বেতন পেতেন

হাত থাকতে মুখে কি

Mar 12, 2013


নজিরবিহীন ঘটনা সচরাচরন ঘটে না। যেমন ধরুন গতকালের ঘটনা। আশরাফুল প্রথমে ১৯০ রান করে রেকর্ড গড়লেন, এরপর মুশফিকুর সেই রেকর্ড ভেঙে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ২০০ রান করলেন, এরপর একই ইনিংসে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে নাসির শতরান করলেন। একেবারেই নজিরবিহীন ঘটনা। সন্ধের পরও যখন মানুষ হুমড়ি খেয়ে টিভির সামনে ভিড় করেছিল তখন অনেকে ভাবল হয়ত বাংলাদেশ শ্রীলংকাকে নজিরবিহীনভাবে হারিয়েই দিল।
কিন্তু না। দিনের খেলা অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। টিভিতে দেখানো হচ্ছে পুলিশের বিএনপি অফিসে অভিযানের লাইভ কাভারেজ। কয়েক ঘন্টা ধরে পুলিশি অভিযানের লাইভ কমেন্টারি নিশ্চয়ই নজিরবিহীন। মানুষ দেখল কিভাবে বিরোধীদলের অফিসের তালা ভেঙ্গে ঢুকতে হয়। পুলিশের বক্তব্যকেও নজিরবিহীন বলা যেত যদি না আগেই বেনজির কিংবা কোহিনুরের দৃষ্টান্ত না থাকত।

মস্তিস্ক কোথায়

Feb 26, 2013


ক্যারিবিয়ান জলদস্যু ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারোর বক্তব্য, মস্তিস্ক যখন ব্যবহার হচ্ছে না তখন ওটা না থাকলে ক্ষতি কি?
মস্তিস্ক ব্যবহার নিয়ে অনেক জটিল বিতর্ক হতে পারে। জটিলতা থেকে যতটা দুরে থাকা যায় তত ভাল। কে যেন বলেছিল বাঙালীর মস্তিস্ক সবচেয়ে টাটকা কারন ওটা কখনো ব্যবহার করা হয় না। ব্যবহার করবেন না-কি ব্যবহার না করে টাটকা রাখবেন সেটা আপনার বিষয়। কিংবা সংবাদমাধ্যমে যাদের সর্বক্ষন উপস্থিতি তাদের বিষয়। সমস্যা হচ্ছে তাদের কাজের কিছু উপসর্গ সকলের ওপর এসে হাজির হয়। সমস্যা তৈরী হয় তখনই।
গত কয়েকদিনে যে মানুষগুলো জীবন দিয়েছে তাদের হয়ত এভাবে মৃত্যু প্রয়োজন ছিল না। যে পক্ষ যত কথাই বলুন না কেন, নিহতদের বড় অংশ কোন পক্ষের না। অন্তত যেভাবে প্রচার করা হচ্ছে তেমন যুদ্ধাপরাধী কিংবা জামাতের কর্মী না এটা নিশ্চিত।
গনজাগরন এর ফল কি এখনো নিশ্চিত করা কঠিন। একবার বিজয় অর্জন হয়েছে উল্লেখ করে ঘরে ফেরার ঘোষনা দেয়া হয়েছে। শুরুতে একদাবী ছিল যুদ্ধাপরাধীর ফাসি, বর্তমানে একদাবী জামাত-শিবির এর রাজনীতি নিষিদ্ধ। সাথে তাদের পক্ষে যে সংবাদমাধ্যম কথা বলেছে সেগুলি বন্ধ করা, তাদের জেলে ঢোকানো।
গনজাগরনের অন্তত একটা সাফল্য দৃশ্যমান। জনগন দুভাগে ভাগ হয়েছে। একপক্ষের বক্তব্য ধর্মের ওপর যে আঘাত করা হয়েছে তার বিচার করতে হবে। আরো একবার মনে করিয়ে দেয়া যেতে পারে, এরা যুদ্ধাপরাধী বা জামাত-শিবির কর্মী বা সমর্থক না। অনেকে তাদের চরমভাবে ঘৃনা করেন।

যেদিকে পাল সেদিকে হাল

Feb 16, 2013

বাংলা ভাষায় প্রবাদ অনেক। ঝোপ বুঝে কোপ মারা থেকে শুরু করে ঝড় ফুরালে আম পড়ে না, সবগুলির অর্থ মোটামুটি একই। সুযোগ বুঝে সুবিধে আদায় করতে হয়। এত প্রবাদ দেখে মনে হতে পারে এর পেছনে বড় ধরনের কারন রয়েছে। যুগ যুগ ধরে মানুষ এতে অভ্যস্থ। সেটা হলে বিষয়টা অনেক ব্যপ্তিলাভ করে। জাতির বৈশিষ্ট নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
বরং বর্তমানের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন বিষয় শাহবাগের গনজাগরন নিয়ে থাকা যাক। বাংলাদেশে গনজাগরন নতুন বিষয় না। স্বৈরাচার বিদায় করাও ছিল গনজাগরন। যদিও সেই স্বৈরাচার এবং স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের বীর সেনানীরা এখন একই কাতারে। তারপরও সাধারন মানুষ গনতন্ত্রের মুক্তি দেখেছে। তা নিয়ে উচ্ছাস দেখিয়েছে।
বর্তমান গনজাগরনের মুল শ্লোগান যুদ্ধাপরাধীর ফাসি। এটা মৌলিক দাবী। কয়েকশ মানুষের মৃত্যুর জন্য সরাসরি দায়ী ব্যক্তির শাস্তি বাংলাদেশের আইনে মৃত্যুদন্ড। বাংলাদেশের মানুষের কাছে সবচেয়ে গৌরবের বিষয় যুদ্ধ করে জয় করা স্বাধীনতা। কাজেই লক্ষ মানুষ এককন্ঠ হয়েছে।
এরসাথেই শুরু হয়েছে পালে হাওয়া লাগার বিষয়টি।

প্রশ্ন আছে, উত্তর কোথায়

Feb 10, 2013

প্রশ্ন কি জিনিষ জানা যায় শিশুকে দেখলে। তাদের প্রশ্নের শেষ নেই। সরাসরি অভিজ্ঞতা দিয়ে একজনের উল্লেখ করা যেতে পারে, তার সাধারন প্রশ্ন, কেন ? তাকে যাই বলা হোক না কেন, তারকাছে একটাই প্রশ্ন, কেন ?
যদি জিজ্ঞেস করা হয়, কি কেন ? তারও উত্তর, কেন কেন ?
প্রশ্ন করা খুব সহজ। প্রশ্ন হচ্ছে সবাই ঠিকভাবে প্রশ্ন করে কি-না। কিংবা সঠিক প্রশ্ন করে কি-না।
এক সপ্তাহ ধরে শহরের ব্যস্ততম সড়ক শাহবাগ মোড় যান চলাচলের জন্য বন্ধ। যানজটের শহর ঢাকা শহরে এর প্রভাব কি হতে পারে সহজেই অনুমান করা যায়। নিউমার্কেট থেকে গাবতলী পর্যন্ত রাস্তায় গাড়ি চলে ইঞ্চি ইঞ্চি করে। প্রশ্ন হতেই পারে, কেন ?
স্বাভাবিক উত্তর, রাজাকারের ফাসি চাই। দেশকে কলংকমুক্ত করতে হবে।
কথাটা যুক্তিসংগত। কাদের মোল্লার মত রাজাকারের ফাসি হবে এটাই প্রত্যাসিত ছিল। রায় দেয়া হয়েছে বিভ্রান্তিকর। যাবজ্জিবন কারাদন্ড বলে কতদিন কারাগারে থাকতে হবে সেটা স্পষ্ট করা হয় না। এমনকি ১৫ বছর করে অন্য যে রায়গুলি দেয়া হয়েছে সেগুলিও যাবজ্জিবনের অন্তর্ভুক্ত। কয়েকবছর পর যদি কারাদন্ডের মেয়াদ শেষ হয় আইনত সেটা সম্ভব। এমনকি কোন দয়ালূ রাষ্ট্রপতি মহানুভবতা দেখিয়ে ক্ষমা করে দিলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।

অষ্টম সুর

Feb 4, 2013

গুপি গাইনকে ৩য় সুর এবং ৬ষ্ঠ সুরে চাপিয়ে গ্রাম থেকে বের করে দেয়া হয়েছিল। বর্তমানে এই দুই সুরের সমম্বয় বেড়েছে না কমেছে নিশ্চিত করে বলা কঠিন। গাধার অস্তিত্ব রয়েছে একমাত্র চিড়িয়াখানায়। সেখানেও খুব ভাল আছে মনে করার কারন নেই। প্রায়ই চিড়িয়াখানা বিষয়ে নানারকম খবর ছাপা হয়।
বরং সুর নিয়েই থাকা যাক। তাকে অন্তত টাকা খরচ করে খাওয়াতে হয় না। বর্তমানকালে তো বটেই। আগেকার দিনে গান শেখার জন্য সারেগামা করতে হত, এখন সেটো প্রয়োজন হয় না।
হিসেবে সুর ৭টি হওয়ার কথা। সা-রে-গা-মা-পা-ধা-নি। সমস্যা হচ্ছে এখানেই সুর থামে না। শেষে আরেকবার সা যোগ করা হয়। সেটা করার পর সপ্তসুর বিষয়টি থাকা উচিত না।
এই অষ্টম সুরের প্রয়োজন কি এনিয়ে কেউ গবেষনা করলেও করতে পারেন। সুরসাধকের গবেষনা একরকম আর বাংলাদেশের বাস্তবতা আরেকরকম। বাংলাদেশে মানুষ মুখ খুললেই সেখানে রাজনীতি এসে হাজির হয়। রাজনীতিতে অষ্টম সুরের ব্যবহার কি সেটা বরং আলোচনা করা যেতে পারে।
সুর একদিকে যাত্রা করে থেকে যায় না, একবার যায় আরেকবার ফিরে আসে। ফিরে আসার জন্য যে প্লাটফর্ম প্রয়োজন হয় সেটাই অস্টম সুর। একে বাংলায় পুনরাবৃত্তি বলতে পারেন (ভাষার মাস যখন চলছে)।
একটা উদাহরন দিয়েই দেখা যাক।

বাটপার সমিতি

Jan 14, 2013

ঢাকা সিটি করপোরেশন নাকি বহুদিন ধরে রিক্সার লাইসেন্স দেয় না। তাইবলে রাস্তায় নতুন রিক্সা নামার কমতি নেই। এগুলির লাইসেন্স কারা দিচ্ছেন জানতে চাইলে একবার রিক্সার পেছনে দৃষ্টি দিতে পারেন। সেখানে এক টুকরো টিন লাগানো দেখতে পাবেন। রিক্সাচালক সমিতি, রিক্সা মালিক সমিতি, চালক-মালিক ঐক্য সমিতি, রিক্সাচালক সমবায় সমিতি, রিক্সামালিক সমবায় সমিতি, রিক্সা চুরি প্রতিরোধ সমিতি ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি।
একবার পত্রিকায় খবর দেয়া হল বাংলাদেশে এনজিওর সংখ্যা নাকি দেড় লক্ষ। সমিতির সংখ্যা প্রকাশ করলে জানা যেত সেটা কত। অনুমান করা যায় এই সংখ্যা কোটির নিচে থামবে না।
কাজেই, দেশ সমিতি চালাচ্ছে একথা বললে বেশি বলা হয় না। যতই নেতা-মন্ত্রীর কথা বলুন না কেন, এদের ক্ষমতার কাছে তারা তুচ্ছ।
 

Browse