শততম : How to make a century

Sep 30, 2009

ঢাকায় যারা বাস করেন তারা হয়ত জানেন শতায়ুদের একটা সংগঠন আছে তাদের বয়স এখনও শততে পৌছেনি যদিও, তারা সেদিকে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তারা যেখানে জমায়েত হন তার নাম শতায়ু অঙ্গন কিভাবে শতবর্ষী হওয়া যায় তার উপায় বের করা হয় সেখানে তাদের দলে যোগ দেয়ার নিয়মকানুন আমার জানা নেই তবে দুচারজনকে দেখেছি যারা কদিন আগেও মুষ্ঠি আষ্ফালন করতেন এখন শরীরে সম্ভব না বলে কাজটি মুখে করেন শরীরে সম্ভব না, আর কখনো সে সুযোগ পাওয়া যাবে না, এটা বোঝার পরই উঠেপরে লেগেছেন সেটা ফিরে পেতে জীবনের তিনভাগ পার করে বুঝেছেন স্বাস্থ্যই সকল সুখের মুল এটারই চর্চা করা প্রয়োজন এই বয়সে জ্ঞানচর্চা, ধর্মচর্চা, বুদ্ধিচর্চার কোন অর্থ নেই শিব্রাম নাকি বয়স বাড়ার পর একদিন অন্যদের সামনেই পথে পড়ে গেলেন সাথেসাথে উঠে নিজের গা ঝেড়ে বললেন, ফিটনেস ঠিক আছে কি-না দেখলাম এদের কসরত সেকথাই মনে করিয়ে দেয় যেভাবেই হোক শততে পৌছুতে হবে

বলছিলাম শতপুর্তির কথা ক্রিকেটে শতরান করা একজন ব্যাটসম্যানের স্বপ্ন সারা জীবনে কে কতবার শতরান করেছে সেটাই তার যোগ্যতার পরিচয় এখানে সচীন তেন্ডুলকারের জুড়ি নেই একাই যতবার শতরান করেছেন বাংলাদেশের সব ব্যাটসম্যান মিলেও তারধারেকাছে নেই বোলারের ক্ষেত্রেও তাই শতবার ব্যাটসম্যানকে আউট করার কৃতিত্ব কম বোলারেরই হয় পৃথিবীর ইতিহাসে, ক্রিকেটের ইতিহাসে পাচশ ছাড়িয়েছে মাত্র তিনজন তাদের মধ্যে আবার মুত্তিয়া মুরলিধরনের জুড়ি নেই

আর ক্রিকেট ছেড়ে যদি ফুটবলের দিকে যাওয়া যায় তাহলে তো কথাই নেই একজন খেলোয়ার সারাজীবনেও দেশের জন্য শতগোল করার সুযোগ পান না তেমনি অন্য যায়গাতেও একজন বক্সার সারা জীবনে একশবার রিংএ নামার সুযোগ পান না একজন দৌড়বিদ একশবার দৌড়ানোর সুযোগ পান না যেদিকেই তাকান শতপুর্তি কঠিন বিষয়

সবচেয়ে সহজে শতপুর্তি করতে পারেন সম্ভবত লেখক প্রকাশক যদি মনে করেন অমুক লেখক বেষ্ট সেলার, পাঠক যদি শুনতে পান তমুক লেখক ভাল লেখেন তাহলে তাগাদা বাড়ে সাথেসাথে বাড়ে লেখার গতি গতির জোরে ছোটখাট খানাখন্দ-নালানর্দমা অনায়াসে পেরনো যায় ছোটখাট ভুলভালে কিছু যায় আসেনা

অনেকে বলেন লেখক নাকি ব্যাঙের ছাতার মত গজায় যারা ব্যাঙের ছাতা আবাদ করেন তারা জানেন শততম ব্যাঙের ছাতা তৈরী করতে কি পরিমান কষ্ট করতে হয় আর তার ফলই বা কি এক টুকরো ব্যাঙের ছাতা ফুটপাতে বসে ভেজে বেচলে দাম কমপক্ষে পনের টাকা (বড় দোকানে আরো বেশি) একশর দাম পনেরশ লেখালেখি সেতুলনায় অনেক সহজ যদি কম্পিউটার থাকে তাহলে তো কথাই নেই কাগজ-কলম পর্যন্ত কিনতে হয় না ফিল্মছাড়া ক্যামেরায় যেমন বিনেপয়সায় ছবি তোলা যায় তেমনি কম্পিউটারে বিনে পয়সায় লেখা যায়

যারা নিজের লেখা ছাপতে চান তারা খুব ভাল করেই জানেন পত্রিকাঅলা, প্রকাশক, ছাপাখানার লোকেদের ধানাই-পানাই আগে নিজের প্রচার নিজে করে বেষ্টসেলার হতে হয় তবে তারা ধর্না দেন তাদের কাছে তারআগে ধর্না দিতে দিতে জুতার তলি ক্ষয় ছাড়া অন্য লাভ হয় না

তবে সুখের কথা এটাই, কম্পিউটারে বিনে পয়সায় যেমন লেখা যায় তেমনি ইন্টারনেট থাকলে বিনে পয়সা প্রকাশ করাও যায় ইন্টারনেট বিনে পয়সায় পাওয়া যায় সেকথা বলিনি, বলেছি ছাপার কথা ছাপার জন্য কারো কাছে ধর্না দিতে হয়না, কেউ টাকাপয়সাও চায় না কাজেই মন চাইলে শতশত, হাজার হাজার লেখা লিখতে পারেন, ছাপতে পারেন

প্রমান বকারাম এটা বকারামের শততম লেখা

ডিজিটাল দেশ

Sep 29, 2009

মোপাসার সাহিত্যিক হওয়ার আগ্রহ দেখে একজন বিরক্ত হয়ে পরামর্শ দিয়েছিল এজন্য ডিকশনারি মুখস্ত করতে হবে তিনি তাই করেছিলেন

প্রসংগের অবতারনা করতে হল অপ্রাসংগিক কারনে ডিকশনারি মুখস্ত করে কেউ সাহিত্যিক হয় না, যার হওয়ার সেই হয় মোপাসা হয়েছিলেন কারন তিনি সাহিত্যিক হতে চেয়েছিলেন প্রয়োজনে ডিকশনারি মুখস্ত করে হলেও

নিশ্চয়ই বিরক্ত হয়ে ভাবছেন এ আর নতুন কি! যে চেষ্টা করে সেই হয় একবার না পারিলে দেখ শতবার স্কুলবইতে পড়িয়েছে কোন রাজা নাকি বারবার হেরেও মাকড়সার কীর্তি দেখে যুদ্ধ করতে আগ্রহি হয়েছিলেন শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ জিতেছিলেন কিন্তু ইতিহাসের শিক্ষা ইতিহাস থেকে কেউ শেখে না চেষ্টা করলে কেষ্ট মেলে একথা বলে কেউ কেষ্ট পাওয়ার চেষ্টা করে না শেখ সাদী ভাল ভাল খাবার নিজে না খেয়ে তার পোষাককে খাইয়েছিলেন, তাই বলে পোষাকের কদর কমে মানুষের কদর বাড়েনি বরং পোষাকের কদরই বেড়েছে সেকারনেই, বিরক্ত হলেও কিছু করার নেই ভাঙ্গা রেকর্ডই আবার বাজাতে হয় আর উদাহরনেরও শেষ নেই প্রতিদিন নতুন নতুন উদাহরন যোগ হচ্ছে

বর্তমানের টাটকা বিষয়, ডিজিটাল বাংলাদেশ শুরু হয়েছিল অনেক আগেই একেবারে দমকা হাওয়ার মত এসে কাপিয়ে দিয়েছিল দেশকে শতশত আইটি প্রতিষ্ঠান, হাজার হাজার সেমিনার, লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী, কোটি কোটি টাকা একেবারে জেরবার হওয়ার মত অবস্থা দেশে উচ্চগতির ইন্টারনেট নেই বলে কথা থাকলেই তার মধ্যে দিয়ে হুড়হুড় করে ডলার আসত

একসময় সাবমেরিন কেবল চালু হল ততদিনে বিশেষজ্ঞ, শির্ক্ষাথী সকলেই ঝিমিয়ে পড়েছে আইটি প্রতিষ্ঠানগুলি গুটিয়ে গেছে বিশেষজ্ঞরা বলার মত নতুন কিছু খুজছেন ডিজিটাল বাংলাদেশ তাদের জন্য একটা বড় সুযোগ বইকি এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভর্তি নেয়া হবে, ডিজিটাল চিকিসা দেয়া হবে, ডিজিটাল টেন্ডার ডাকা হবে উন্নয়নশীল দেশ মধ্য আয়ের দেশে পরিনত হবে

সেখানেই একটু কথা থেকে যায় সেটা হচ্ছে হবের উদাহরন পরিচিত একজনের কথাই বলি, বছর পনের আগে তার মুখে শুনেছিলাম প্রোগ্রামার হব সেটা ছিল প্রোগ্রামার হওয়ার যুগ তখন তার হাতে উইন্ডোজ আর্কিটেকচারের বই

পনের বছর পর তার মুখের কথা, প্রোগ্রামার হব বিষয় এখনও পাল্টেনি যা পাল্টেছে তা হল সময় পনের বছর পেরিয়ে গেছে

আইটি ঝড়ের সময় মানুষের বড় একটা অংশের আগ্রহ ছিল প্রোগ্রামিং-এর দিকেই সাথে এনিমেশন, গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন বাংলাদেশে ফটোশপ, ম্যাক্স, মায়া, অটোক্যাড আর ভিবি-ভিসির সিডি কত বিক্রি হয়েছে গবেষনা করে দেখা যেতে পারে মুল কোম্পানী যত বিক্রী করেছে তারথেকে খুব কম হবেনা বলেই আমার ধারনা ফলাফল আগের উদাহরনের মত আইটি ঝড়েই যদি এই অবস্থা হয় ডিজিটাল টর্নেডোতে (কিংবা ভুমিকম্পে) তা কোথায় গিয়ে ঠেকবে অনুমান করাই যায় সিডি বিক্রেতারা এখন কম্পিউটারে কপি করে কুল পান না, ডুপ্লিকেটর মেসিন ব্যবহার করতে হয়

মুল কথায় ফিরি পনের বছর ধরে প্রোগ্রামিং-এর চেষ্টা করে প্রোগ্রামার হওয়া যায় না একথা বিশ্বাস করতে রাজি নই মোটামুটি প্রোগ্রামার হওয়ার জন্য একটামাত্র বই মুখস্ত করাই যথেষ্ট আর একটা বই এক বছরে মুখস্ত করা যায় তা যত জটিলই হোক না কেন ডিকসনারী মুখস্ত করার চেয়ে ঢের সহজ

আর সংবাদমাধ্যম আলোকিত করা বিষেশজ্ঞদের কাছে একটা প্রশ্ন ইচ্ছাকৃতভাবে পাইরেসি চালু রেখে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, প্রোগ্রামার তৈরী, ডিজিটাল দেশ-, কোনো দেশের উদাহরন কি দেখাবেন ? নাকি নিজেরাই উদাহরন তৈরী করছেন ?

সুখ Conquest of happiness

Sep 28, 2009

রাসেল রীতিমত একটা বই লিখে গেছেন, কিভাবে সুখ জয় করা যায় যদিও তিনি নিজে সুখী ছিলেন কিংবা সেই নীতি মেনে সুখি হয়েছিলেন একথা ভুলেও কেউ বলে না বরং বাস্তবতা বিপরীত কথাই বলে তারপরও তিনি লিখেছেন তার নীতি মেনে আপনি সুখি হতে পারেন বুদ্ধিমানেরা একাজটিই করেন সবসময় পরের উপকার করেন নিজে রৌদ্রে দাড়িয়ে অন্যকে ছায়ার সন্ধান দেখান নিজের পাতে খাবার না দিয়ে পাশের জনকে দিতে বলেন এমনকি নিজে নির্বাচিত হলে ভোটারের কি উপকার হবে সেকথাও বলেন তার নিজের কোন উপকার নেই তাতে নিজের সর্বস্ব ত্যাগ করে তিনি আপনার জন্য করে যাবেন একথাই বলেন এবং সেটাই করেন আপনার উপকারের জন্যই একজন ব্যবসায়ী কেনা দামের চেয়ে কম দামে জিনিষ বিক্রি করেন দুইশ টাকায় কেনা, আপনাকে দেড়শ টাকায় দিলাম, একথা শুনে আপনি খুশীমনে বাড়ি ফেরেন। যদিও আপনি জানেন তা কখনো হয় না তবুও এটা এক ধরনের সুখ বৈকি। আমার পঞ্চাশ টাকা লাভ মানে তার পঞ্চাশ টাকার ক্ষতি। সুখ না হয়ে যায় না। সুখ যখন চোখে দেখা যায় যায়না, রঙ আকার ওজন জানা যায়না তখন যাকে খুশি তাকেই সুখ মনে করতে পারেন। রাধার কাছে কালো রঙের গাছই কৃষ্ণ।

একাএকা সুখি হওয়া নাকি খুব সহজ। সুখি মনে করলেই সুখি। বাধা দেয়ার কেউ নেই। সমস্যা হয় যখন অন্যদের নিয়ে সুখি হতে চেষ্টা করেন। আপনি ভাবছেন এই সরু পথে যখন এতজন যাচ্ছে তখন একই গতিতে একই ছন্দে চললে সুখে হাটা যায়। এরই মধ্যে একজন মনে করল অন্যদের চেয়ে দ্রুত গেলে তার সুখ। তার সুখ অন্যদের ধাক্কা দিয়ে পথ বের করায়। কারো বা মনে হল ধীরেসুস্থে সুখে হাটি। না পারবেন তার পেছনে হাটতে না পারবেন পাশ কাটিয়ে যেতে। তার সুখ অন্যের গতি কমানোয়। নিজে সুখি হবেন না তাকে সুখি রাখবেন সেটা আপনার ব্যাপার। তবে কথা হচ্ছে মাইনাসে মাইনাসে প্লাশ হয় সবারই জানা। সুখ ব্যতিক্রম। অন্তত সুখের ক্ষেত্রে প্লাশে প্লাশে মাইনাস হয়।

অন্য অনেককিছুর সাধে সুখি করার দায়িত্বও পালন করেন সরকার এবং নেতারা। সমাজের যারা বড় তারাও পিছিয়ে থাকেন না। সুখের পথ প্রদর্শন করেন। যার পক্ষে যতটুকু সম্ভব সামর্থ্য অনুযায়ী অন্যকে সুখ দিতে চেষ্টা করেন। অন্তত পরামর্শ দেন। আপনারা দেশপ্রেমিক হন, দেশকে ভালবাসুন। বুকে-পিঠে দেশের চিহ্ন নিয়ে বেড়ান। অবাক বাংলাদেশ, বলেছিলেন সুকান্ত। আপনারা সবাইকে অবাক করে দিন। জামাকাপড়ে, কথায়, গানে, গল্পে, নাটকে, সিনেমায়, বক্তৃতায় দেশের কথা বলুন। বাঙালীকে দুটো শব্দ লিখতে বললে নাকি নিজের নাম এবং দেশের নাম লেখে। দেশপ্রেমেই সুখ।

সুখ আবার বহুমুখি। এর পাশাপাশি অন্য সুখের দিকেও লক্ষ্য রাখতে হয়। পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দিতে হয়। সবচেয়ে ভাল হয় যদি দেশের সম্পত্তি দিয়ে সেটা করা যায়। এটা কোন ব্যক্তির সম্পদ না কাজেই কোন ব্যক্তির আপত্তি থাকা উচিত না। থাকেও না। যদি কেউ মুখ খোলেই তাহলে মুখে কিছু গুজে দিন। ব্যস, মুখবন্ধ।

পুর্বাচলের যায়গা বরাদ্দে লটারী হবে জেনেই আপনি টাকা জমা দিয়েছিলেন। আপনার জন্য সুখের খবর, লটারী হবে না। দেরী না করে এখনই টাকা উঠানোর চেষ্টা করতে পারেন। এই টাকা অন্য যায়গায় খাটালে লাভ পেতেও পারেন। আর পরের উপকারে যদি সুখি হওয়ার অভ্যেস না থাকে তাহলে সেটা শুরু করুন। এই যায়গা পরের কাছে যাবে শুনে সুখি হোন।

বণ্যপ্রাণী এবং

Sep 26, 2009

ঈশপের যুগে বণ্য প্রানী কথা বলতে পারত শেয়াল, সিংহ, কাক, কুমির সবাই নিজেদের মধ্যে যেমন কথা বলত তেমনি মানুষের সাথেও কথা বলত তারপর কোন এক সময় তারা কথা বলতে ভুলে গেল এখন কাক কা-কা ছাড়া কিছু বলে না, শেয়াল হুক্কা-হুয়া ছাড়া কিছু চেনে না ডারউইন এই বিবর্তনের ব্যাখ্যা করে যাননি তাদের ভাষা হারানো বাদ দিয়ে বানর কিভাবে লেজ হারিয়ে মানুষ হল সেটা বলেই দায়িত্ব শেষ করেছেন আর বর্তমানের মানুষ গবেষনার জন্য এত ফান্ড পেলেও এই বিষয়ে গবেষনা করতে আগ্রহ দেখায়নি ফল যা হবার তাই ভাষা কিভাবে একমাত্র মানুষের মধ্যে টিকে থাকল সেটা আর জানা হল না

গবেষনার ক্ষেত্র আরো বাড়ানো প্রয়োজন। যেমন মানুষ এবং অন্যান্য প্রানীর মধ্যে সত্যিকারের পার্থক্য কি ? কাকের কাকা আর শেয়ালের ক্যা-হুয়া মানুষের বোধগম্য না হলেও তারা নিজেরা বোঝে। কাজেই তাকে ভাষা বলে গন্য করা উচিত। এমনকি মাতৃভাষা বলেও স্বিকৃতি থাকা উচিত। সত্যিকারের পার্থক্য খোজ করতে হলে ভাষা বিনে অন্যদিকেই সন্ধান পাওয়া যাবে বলে আমার বিশ্বাস।

যেমন মানুষ ছাড়া অন্য কোন প্রানী চাকরী করে না, বেতন নেয় না, ঘুস দেয়া-নেয়া করে না। এগুলি মৌলিক পার্থক্য হিসেবে গন্য হতে পারে। এছাড়া মানুষ অন্য যে কাজগুলি করে সেগুলি অন্যেরাও করে। অনেক প্রানীর মধ্যে রাজা-রানী, সেনা-কর্মীর প্রচলন চালু রয়েছে। যাকে মানবীয় বলে প্রচার করা হয় তাকে একমাত্র মানুষের বলে দাবী করা অন্যায়। ডলফিনেরা নাকি সাঁতার শেখার স্কুলে ছোটদের সাঁতার শেখায়। কেউ আহত হলে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করে। কাক যন্ত্রপাতি তৈরী করে এটা শুধু ঈশপের গল্পেই নেই বর্তমানকালে বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে বের করেছেন। তার পাকিয়ে বড়সি বানিয়ে খাবার নাগালে আনতে পারে। কাজেই বুদ্ধি মানুষের একার এই দাবী করাও অন্যায়।

তবে একটা দাবী মানুষ করতেই পারে। মানুষ পোষাক পড়ে যা অন্যরা পড়ে না। হয়ত কোনকালে ঠান্ডা কিংবা গরম থেকে বাঁচার জন্য শুরু হয়েছিল। অন্য প্রানীদের লোম-পালক জাতিয় কিছু থাকলেও মানুষের ছিল না। এখন আর পোষাক এই প্রাকৃতিক বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। নির্দিষ্ট রঙের, নির্দিষ্ট ডিজাইনের, নির্দিষ্ট কাপড়ের, নির্দিষ্ট মাপের পোষাক পড়াটাই বিধি। যারা এসবের ধার ধারেন না তারাও পোষাক পড়েন। এখানেই রয়েছে মানুষের সত্যিকারের পরিচয়। লজ্জাবোধ। এই বোধের কারনে কেউ পোষাক ছাড়া ঘুরে বেড়ায় না, খারাপ কাজ করে না। পাছে লোকে কিছু বলে। আড়ালে আবডালে করলে ক্ষতি নেই, ধরা পড়লেই সমস্যা। চুরিবিদ্যা বড় বিদ্যা যদি না পড়ে ধরা। ছোটখাট চুরি, ফাকিবাজি, ঠকানোর কাজ সবাই কমবেশি করে। সত্যবাদী যুধিষ্ঠিরও মিথ্যে বলেছিল সামান্য লজ্জার আবরন রেখে। একটুখানি ঘুরিয়ে।

তবে কোন কারনে যদি লজ্জার আবরন সরে যায় তখন আর আড়াল প্রয়োজন হয় না। সবাই যখন জেনেই গেছে তখন আর লুকোনোর কি আছে। ঘুস-দুর্নীতি এগুলো নিয়ে আর মাথা ঘামানোর কি আছে। সবাই তো জানে। পারলে ঠেকাক।

লজ্জাবোধ! সেটা আবার কি ? কিসে লাভ কিসে ক্ষতি এটুকু বোধ থাকাই তখন যথেষ্ট।

বাকি থাকে ফ্যাসান। ক্রমশ যেভাবে ছোট হয়ে আসছে তাতে একসময় হয়ত সেকারনেও পোষকের প্রয়োজনীয়তা থাকবে না।

অভিজ্ঞতা এবং প্রয়োগ

Sep 25, 2009

সেকেন্ড-মিনিট-ঘন্টা-দিন-মাস-বছর, সবসময়ই আমরা অভিজ্ঞতা লাভ করি। সেগুলি জমা হয় মস্তিস্কের কোষে। তারপর সময়মত কাজে লাগাই। এই ডিজিটাল যুগে কম্পিউটারের এত বাহাদুরীর পরও আমরা বলি মানুষ কম্পিউটারের চেয়ে বুদ্ধিমান। কারন মানুষ অভিজ্ঞতা থেকে শেখে। একবার ভুল করলে আরেকবার সাবধান হয়। কম্পিউটার সেটা করে না। ভুল করলে ভুল করতেই থাকে যতক্ষন না কোন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মানুষ সেটা ঠিক করে দেয়। আর ঠিক করলে সেটাই করতে থাকে।

মিনিবাসে একবার যার পকেট মারা যায় সে পরেরবার পকেট চেপে ধরে রাখে। একবারে যদি না ও শেখে কয়েকবারে শেখে। ছিনতাইয়ের শিকার হলে সেপথ ছেড়ে অন্যপথে চলে। বাড়ি ফিরে যদি দেখে প্যান্ট মাপমত হয়নি পরেরবার দোকানেই প্যান্ট পড়ে দেখে নেয়। এগুলি অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সংশোধন হওয়ার উদাহরন। আর রোজগার করতে গিয়ে যখন দেখে স্কুলে-কলেজে ফাকি না দিয়ে পড়ালেখা করলে আয় আরো বেশি হত। তখন অতটা টাংকি না মেরে কিছুটা জমিয়ে রাখলে এখনও টাংকি মারার সুযোগ পাওয়া যেত এগুলি অশোধনযোগ্য অভিজ্ঞতা।

কিন্তু মানুষ মানুষই। খাবার না পেলে গরু বড়জোর কয়েক পা হেটে খাবার খোজে। তারপর এক যায়গায় চুপ করে বসে থাকে। মানুষ সেটা করে না। কোনএকভাবে খাবার ব্যবস্থা করে। কাজ করে হোক, চুরি করে হোক আর ভিক্ষে করেই হোক। অশোধনযোগ্য অভিজ্ঞতা থেকেও কিছু একটা পথ বের করতেই হয়।

পথটি হচ্ছে, আমি যা পারিনি তা আমার সন্তান পারবে। আমি অনেক ঠকেছি আমার সন্তান ঠকবে না। সে সবকিছু নিয়মমত করবে।

মানুষের অভিজ্ঞতার সবচেয়ে বড় ভুল সম্ভবত এটাই। পিতা অথবা মাতার মুখে একেবারে সাধারন বুলি, আমার ছেলের কত বুদ্ধি এই বয়সে কম্পিউটার টিপতে পারে। বড় হয়ে নিউটন-আইনষ্টাইন-বিল গেটস না হয়ে যায় না। আমি যে ভূল করেছি তা ও করতেই পারে না। আমি যে ভূল থেকে শিখেছি।

ভুলটা এখানেই। একবার নিজের অতীতের কথা স্মরন করুন। আপনার পিতা-মাতাও এই একই কথা বলেছেন, একই পথে চলেছেন। তিনিও অভিজ্ঞতা থেকেই শিখেছিলেন। আপনাকে তা থেকে শেখাতে চেয়েছিলেন। ফল এটাই, আপনার পিতৃদেব আপনার নাম করে গর্ব করতে পারেন না। কখনো কখনো রীতিমত লজ্জাবোধ করে। আর আপনি ধরেই নিয়েছেন আপনার সন্তান এমন কিছু করবে যার ফলে সবাই আঙুল তুলে বলবে, হবে না! আরে এটা যে অমুকের সন্তান! রহিমুদ্দির ভাইয়ের ব্যাটা।

জ্ঞানী লোকেরা বলে গেছেন অভিজ্ঞতা দুধরনের। প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ। প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার জন্য চোখ-কান খোলা রাখা এবং মস্তিস্ক ব্যবহার করাই যথেষ্ট। পরোক্ষ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানো সেতুলনায় অনেক জটিল। অনেক পরিশ্রমসাধ্য। নিউটন যে অভিজ্ঞতালাভ করেছিলেন তা তিনি লিখে গেছেন, ডারউইন তার অভিজ্ঞতা লিখে গেছেন। সেগুলি হজম করে তবে সেই অভিজ্ঞতার স্বাদ পাওয়া যায়। তাকে নিজের করে নেয়া যায়। শুধুমাত্র চোখকান ব্যবহার করেই এই অভিজ্ঞতা নিজের করা যায় না। প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাকে পরোক্ষ অভিজ্ঞতা হিসেবে প্রয়োগ করতে গেলে শুরু হয় বিপত্তি।

আপনার সন্তানকে সুসন্তান করতে চান এটাই স্বাভাবিক। নিজের জীবনের ভুলগুলিকে কি ভুল বলে স্বিকার করেছেন ? আপনার সন্তানকে কি বলেছেন আপনি বাবা-মাকে ফাকি দিয়ে, ক্লাশ ফাকি দিয়ে আড্ডা মেরেছেন। বই কেনার নাম করে টাকা নিয়ে সিগারেট খেয়েছেন। লাইব্রেরী যাওয়ার নাম করে সিনেমা হলে গেছেন। এগুলি না করলে আপনার অবস্থান আরো অনেক উচুতে থাকতে পারত।

বিষয়টি তার কাছে পরিস্কার করুন। এভাবেই আপনার অভিজ্ঞতা আপনার সন্তানের কাজে লাগানো সম্ভব।

কম্পিউটার এবং বাংলা বই

Sep 24, 2009

ছেলে কোন বিষয়ে ফেল করেছে শুনে বাবা ধমকে উঠলেন, ‌কানের কাছে সারাদিন ইংরেজি গান বাজাস আর ইংরেজিতে ফেল করিস!

অবাক হবার কিছু নেই ইংরেজি প্রীতি এবং ইংরেজি ভীতি দুটোই আমাদের সমান পরিচিত ইংরেজি শব্দ জানা থাকলে কেউ বাংলা বলেন না, আর পরীক্ষার সবচেয়ে বেশি ফেল ইংরেজিতে

কাজেই একজন কম্পিউটার শিক্ষার্থী যতই মেটাল-র‌্যাপ-হিপহপের ভক্ত হোক, প্রয়োজনে বাংলা বই খুজবে এটাই স্বাভাবিক আর সমস্যা সেখানেই

কম্পিউটারের বাংলা বইয়ের অভাব নেই শতশত কিভাবে চালু করবেন থেকে শুরু করে কিভাবে ডাউনলোড করবেন, কিভাবে গেম খেলবেন থেকে শুরু করে কিভাবে প্রোগ্রামিং শিখে বিলিওনিয়ার হবে কোন কিছুই বাদ নেই দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে এইসব বই দেশে লক্ষ লক্ষ কপি বিক্রি হচ্ছে কাজেই ধরে নেয়া যায় লক্ষ লক্ষ প্রোগ্রামারও তৈরী হচ্ছে এই প্রোগ্রামার তৈরীর দায়িত্ব শুধু লেখকই নেননি, সিডি নির্মাতাও নিয়েছেন

সিডি নির্মাতার বিষয়টি দুকথা শেষ করি ভিডিও দেখে এনিমেটর, ভিডিও এডিটর, প্রোগ্রামার হওয়া যায় না এর ওপর কথা বলার কোন সুযোগ নেই তারপরও এর প্রয়োজনিয়তা থেকে যায় এথেকে কোন প্রোগ্রাম বা কাজ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারনা পাওয়া যায় খুব সহজে, যদি সেটা নির্ভুল হয় যিনি প্রোগ্রামার হতে আগ্রহি নন তিনিও এই জ্ঞানটুকু লাভ করতে পারেন এর বাইরে প্রোগ্রামিং শেখানোর ক্ষমতা মাল্টিমিডিয়া-ভিডিওর নেই

বইয়ের বিষয়টি আলাদা প্রোগ্রামার বই ব্যবহার করেন রেফারেন্স হিসেবে কিংবা ডিকশনারীর মত যখন প্রয়োজন তখন দেখে নেন এটা পেশাদারী প্রোগ্রামারের কথা শেষ লক্ষ্য এটাই যদি এজন্য কেউ বই কিনতে চান তাহলে জানিয়ে রাখি, কোন বই কেনারই প্রয়োজন নেই কষ্ট করে প্রোগ্রামের হেল্প মেনুতে যান সেখানে টিউটোরিয়াল থেকে কমান্ড রেফারেন্স সবই দেয়া হয়েছে তারপরও যদি না কাজ না হয় ইন্টারনেটে সার্চ করুন বহু ব্যক্তি, বহু প্রতিষ্ঠান আপনাদের সাহায্য করার জন্য বসে রয়েছে এমনকি নির্দিষ্ট সমস্যায় পরে সেটা জানালে বহু মানুষ এগিয়ে এসে সাহায্য করতেও রাজি এটুকু ইংরেজি শিখতে যদি ভয় পান তাহলে দুরে থাকাই ভাল

যারা শিক্ষার্থী তারা আরেক ধরনের বই প্রয়োজন মনে করেন যা ধাপে ধাপে প্রোগ্রামিং শেখায় (অথবা এনিমেশন, অথবা ডিজাইন) এই বইয়ের বিকল্প নেই সাধারনত এই বইগুলি যারা লেখেন তারা নিজেরা শিক্ষক বহু বছর ধরে অন্যদের শিখিয়ে একদিকে যেমন সেই প্রোগ্রামের নাড়ি নক্ষত্র জানেন কেউ কেউ নিজেই সেই প্রোগ্রাম তৈরীর সাথে জড়িত প্রোগ্রামার অন্যদিকে শেখাকে শেখাতে শিক্ষার্থীর মনস্তত্ব বোঝার যোগ্যতাও লাভ করেছেন দুটি বিষয়কে একসাথে করে এমনভাবে বই লেখেন যা পড়ে শিক্ষার্থী নিজেই একা একা শিখে নিতে পারেন যদি এধরনের বই হাতের কাছে থাকে একবার খুলে লেখকের পরিচিতি দেখে নিন আমি ইংরেজি বইয়ের কথা বলছি

যদি হয় বাংলা বই-

কিছু বই দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছে বলে বাধ্য হয়ে বলতে হচ্ছে, একজন লেখক পঞ্চাশটি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে বই লেখার যোগ্য হলে তিনি নিজ মেধায় বিল গেটসকে ছাড়িয়ে যেতেন সেটা না হয়ে তাকে হয়েছে বই বিক্রেতা তার পরিচিতি তিনি কতগুলি বইয়ের লেখক সেটাই বইয়ের সংখ্যা যত বেশি তিনি তত বড় লেখক

লেখকদের লেখক হওয়ার পদ্ধতি বিভিন্ন রকম কেউ ইংরেজি থেকে বাংলায় তরজমা করতে পারেন সেটাই একমাত্র যোগ্যতা বিষয়টি যদি গল্পের বই হত তাহলে এতে কোন সমস্যা ছিল না কারিগরী বিষয় বলেই সমস্যা সেই বিষয়ে বিন্দুমাত্র জ্ঞান না থাকায় অনায়াসে ইট সিমেন্ট দিয়ে শততলা বিল্ডিং বানানোর কথা প্রচার করে যান টেরও পাননা বাংলা পদ্ধতিতে কি ভয়ংকর হাতুড়ে ডাক্তার তৈরী হচ্ছে

আরেক ধরনের লেখক বই লেখেন অভিজ্ঞতা থেকে দশ বছর, বিশ বছর কম্পিউটার নিয়ে কাজ করছি কাজেই আমি সবই জানি বই লিখতেই পারি তাদের সম্পর্কে বলতে হয়, পঞ্চাশ বছর গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা নিয়ে গাড়ি চালানো যায়, বিমানচালক হওয়া যায় না

শতশত বই লক্ষ লক্ষ কপি বিক্রি হওয়ার ফল কি সেটা দেখা যাচ্ছে সফটঅয়্যার রপ্তানী করে বিলিয়ন বিলিয়ন বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করব, অথচ গত দুদশকে কি কাজ করেছি তার কোন উদাহরন নেই সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠে যিনি পড়ান তিনি জানেন না বর্তমান প্রযুক্তি কি লক্ষ করেন না যে মেনফ্রেমের কথা তারা মাস জুড়ে পড়ান বর্তমানের মোবাইল ফোন দক্ষতায় তাকে ছাড়িয়ে যায় আভ্যন্তরীন প্রযুক্তিতে একের সাথে অন্যের তুলনা চলে না বিষয়টি মার্কোনির হাতে বর্তমানের একটা রেডিও তুলে দিয়ে বলার মত, এটা রেডিও, তুমি আবিস্কার করেছ দেখত ভেতরে কি আছে ?

আর বিলি------অন ডলারের আয়ের কথা যারা বলেন তারা একবারও একটা কাজের উদাহরন দেখিয়ে বলেন না অমুক কাজের করলে তমুক ডলার আয় হয় অমুক কাজ তমুকের মত কোম্পানীর কাছে পাওয়া যায় অমুক কাজের জন্য তমুক যোগ্যতা প্রয়োজন হয় অমুক কাজ তমুক পদ্ধতিতে করতে হয় এই যে উদাহরন, অমুকে এই যোগ্যতা নিয়ে অতদিনে অমুকভাবে এটা করেছে

তারা দার্শনিক মানুষ সংক্ষেপে বলেন আর যারা সেই কথা শুনে ঝাপিয়ে কাজে পড়েন তারা সামনে যা পান তাকেই পেয়েছি বলে ধরে ফেলেন তারপর একসময় বলতে শুরু করেন, এই দেশে থেকে কিছু হবে না এরচেয়ে অন্যদেশে রাস্তা পরিস্কার করা ভাল

এই সিদ্ধান্তে পৌছার আগে পর্যন্ত তাদের অবস্থা একটাই সারাদিন ইংরেজি গান শোনা আর ইংরেজিতে ফেল করা

চুরি বলবেন না

Sep 23, 2009

পুকুর চুরির গল্পটা নিশ্চয়ই জানেন আরেকবার মনে করিয়ে দেই;

সরকারী টাকায় পুকুর খনন করা হয়েছে সেটা সরজমিনে দেখতে গেলেন এক কর্মকর্তা যেখানে পুকুর থাকার কথা সেখানে রয়েছে মাঠ তিনি জিজ্ঞেস করলেন, পুকুর কোথায় ?

তাকে উত্তর দেয়া হল, স্যার এখানেই পুকুরটা কাটা হয়েছিল মনে হয় কেউ চুরি করে নিয়ে গেছে

ঢাকা শহরের ম্যাপে যেসব খাল, লেক বা ঝিল রয়েছে বাস্তবে তার ৪৩টির অস্তিত্ব নেই ৬ মাসের মধ্যে সেগুলি খুজে বের করার উদ্দ্যোগ নিয়েছে সরকার খবরের কাগজে প্রকাশ একসময় নিশ্চয়ই রিপোর্টে লেখা হবে, খালগুলি চুরি হয়ে গেছে আজকাল অবশ্য চুরি শব্দটা ব্যবহার করা হয় না ওটা খারাপ শব্দ দেশে কোন চোর নেই দখল হয়ে গেছে বলা যুক্তিসংগত যখন যার প্রভাব বেশি তখন সে দখল করে দলবদল হলে দখলদারিত্ব বদল হয় কখনও কখনও দখলদারিত্ব এতটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে দলবদলের প্রভাব পড়ে না প্রবাদ আছে, এক মা তার সন্তানকে বলছেন, ছোটবেলায় মারিনি মরবি বলে, এখন মারি না মারবি বলে এরা সেই সন্তান একসময় লালন পালন করতে হয় নিজের প্রয়োজনে তখন স্নেহের কারনে মারা যায় না তারপর যখন বেড়ে ওঠে তখন মারতে গেলে নিজের মার খাবার সম্ভাবনা থাকে

কাজেই, ওগুলো চুরি হয়নি দখল হয়েছে দখল এবং চুরি এককথা হতে পারে না যুক্তি শুনতে চান ?

এক জাহাজের কাপ্তানের কাজ করে যে ছেলে সে একদিন এসে তাকে বলল, স্যার একটা জিনিষ যদি কোথায় আছে আমি জানি তাহলে কি তাকে হারানো বলে ?

কাপ্তান বললেন, নিশ্চয়ই না

সে বলল, তাহলে স্যার আপনার প্রিয় প্লেটটা হারায়নি ওটা সমুদ্রের তলায় আছে

দখলের সুবিধে হচ্ছে সেটা চুরি করে অন্য কোথাও নিয়ে যায় না, সেখানেই থাকে আগের চেয়ে বেশি যত্ন নেয় ঘরবাড়ি কিংবা কারখানা বানায় তাতে বহু লোকের কর্মসংস্থান হয় বাসস্থান সমস্যার সমাধান হয় দেশের সৌন্দর্য বাড়ে কাজেই দখলদারিত্ব তেমন খারাপ কিছু না

মাঝেমাঝে খবরের কাগজঅলারা উটকো খবর ছাপে তা ওদের আর দোষ কি ? ওদের তো করে খেতে হবে সন্তান না কাদলে নাকি মা তারদিকে দৃষ্টি দেয় না ওরাও মাঝেমধ্যে একটু কান্নাকাটি করে মুখে খাবার তুলে দিলেই চুপ একটু দক্ষতা বাড়লে আর এই পদ্ধতি ব্যবহার করে না তখন নিজেই খাবার খুজে নিতে শেখে কখনও কখনও ধরাও পরে খবরের কাগজে দেখেন না, ভুয়া সাংবাদিক গ্রেফতার যার অধিকার নেই সেও ওকাজ করতে গেলে এসব বিপত্তি বাধে একজনকে গিয়ে বলে টাকা না দিলে অমুক খবরটা ছেপে দেব আরেকজনকে বলে টাকা দেন খবরটা ছেপে দেই জানেন আমার পত্রিকার যায়গার কত দাম এক ইঞ্চি দুহাজার

দুদিকেই লাভ ওদের কথায় কান দিতে নেই যারা বড় হয়েছে তাদের দিকে চেয়ে দেখুন কেমন সুন্দর গুছিয়ে নিয়েছে সবকিছু অনায়াসে বাড়ি-গাড়ির মালিক খবরের কাগজ কত কপি ছাপা হয়, কত কপি বিক্রি হয় এপ্রশ্ন করবেন না। এদেশে এন্ডু গিলিগান নেই যে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ফাস করার ঝুকি নেবে। চাকরী ছাড়বে তবু নিজের মত পাল্টাবে না। লাভের পথে হাটাই লাভজনক। বাশের চেয়ে কঞ্চি দড় বলে কথা। তাদের ঘাটাবে কে ?

মুল কথায় ফিরি খাল, লেক, ঝিল কিংবা নদী এগুলো কখনো চুরি হয় না হারায় না সুকুমার বলেছেন যেখানকার রাস্তা সেখানেই থাকে। হেটে-চলে বেড়ায় না। হাওয়া খেতে দার্জিলিঙ যায় না। যায়গাও তেমনি হাটাচলা করে না, কারো বাড়ির সিন্দুকে গিয়ে ঢোকে না। যেখানকার যায়গা সেখানেই থাকে। বড়জোর মালিকানা বদল হয় কখনো টাকা দিয়ে, কখনো ঘুষ দিয়ে, কখনো সরকারের সন্তুষ্টিতে, কখনো দাপট দেখিয়ে।

কাজেই যা চুরি না তাকে চুরি বলবেন না

হাসিই সেরা ওষুধ – Laughter is the best medicine

Sep 21, 2009

হাসিই সেরা ওষুধ, পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া এক পত্রিকার স্লোগান অন্যেরা কতটা বিশ্বাস করে জানিনা, তবে আমরা মানে বাংলাদেশের মানুষ খুব বিশ্বাস করি পথেঘাটে কিংবা আড্ডায় হয়ত প্রানখুলে হাসা মানুষ চোখে পড়বে না সেটা জাতি হিসেবে আমরা নিতান্ত সংযমি বলেই তবে আড়ালে আবডালে হাসতে খুবই পছন্দ করি জানিস অমুকে এই কাজ করেছে হে-হে-হে তমুকের বউ, হে-হে-হে

অমুকে-তমুকে-সমুকে কি করেছে তা নিয়ে হাসাতে আপত্তির কি থাকতে পারে সেই ব্যক্তি যদি অপরিচিত হয়, ভিনদেশের হয় তাতেই বা আপত্তি কি হাসিই যেখানে মুল কথা উদাহরনের তো অভাব নেই

ভিনদেশের উদাহরন বরং আগের দেখা যাক

উদাহরন এক এক আমেরিকান ডেল কোম্পানীতে ফোন করে বলল, আপনারা কম্পিউটারের সাথে কফির কাপ রাখার যে ট্রে দিয়েছিলেন সেটা ভেঙে গেছে ওটা ঠিক করতে হবে ডেলের কাষ্টমার সাপোর্ট অভিযোগ শুনে অবাক তারা কাপ রাখার ট্রে দিলেন কবে! ভদ্রলোক বুঝিয়ে বললেন, ওই যে, টিপ দিলে বের হয়ে আসে সেখানে কাপ রাখা যায়

একসময় ডেল বুঝল তিনি সিডি রমের ট্রে-র কথা বলছেন

উদাহরন দুই এটা ভেঙে বলার প্রয়োজন নেই কাবুলীর কাঠাল খাবার গল্প উদাহরন তিন, কাবুলীর ভোমরা খাওয়ার গল্প এটাও ভেঙে বলা প্রয়োজন নেই

গল্পে পেছনের সত্য যদি জানতে চান তাহলে আমার বক্তব্য, আমেরিকানরা যথেষ্ট পরিমানেই কম্পিউটার ব্যবহার করে তারা আমাদের মত শতশত, কিংবা হাজার হাজার সিডি-ডিভিডি ব্যবহারের সুযোগ পায় না সত্যি, তবুও বেশিই ব্যবহার করে তাদের কাছে গানের সিডি, সিনেমার ডিভিডি বিক্রি করেই কোম্পানীগুলি কোটি কোটি ডলার আয় করে কম্পিউটার, সিডি-রম এসব প্রযুক্তিও তাদেরই তৈরী আর আমার ধারনা যাদের কাবুলী বলা হয় তাদের দেশে কাঠাল পাওয়া যায় তারাও নিজের দেশে কাঠাল খায় কাঠালের আঠা দাড়িতে লাগতে পারে সেটাও তাদের জানা

তাদের দেশে জামগাছ, জাম এবং ভোমরা এগুলিও বিদ্যমান পাকা জাম মনে করে উড়ন্ত ভোমরা ধরে খাওয়ার কোন কারন নেই

যেমন কারন নেই শেরে বাংলার চল্লিশটা বড় বড় ফজলি আম খাওয়ার চল্লিশটা বড়বড় ফজলি আম ঝুড়িতে ভরে মাথায় তুলে দিলে তার ওজনে যে কোন সাধারন মানুষের অক্কা পাওয়ার কথা, তা তিনি বাংলার যতবড় শেরই হোন না কেন

তবু গল্প আমরা পছন্দ করি সকলেই জানি যে জানে তাকে আরেকবার জানাই আমাদের শিক্ষা বিভাগ আরো প্রচারের জন্য স্কুলের পাঠ্যবইতে ঢুকিয়েছে

গল্পগুলি আমরা পছন্দ করি কারন এতে হাসি আছে একেবারে সেরা ওষুধ প্রাণশক্তি এই শক্তির বলেই আমরা সেরা অন্যদের ছাড়িয়ে অনেক উচুতে কেউ যদি উচ্চতায় আমাদের ছাড়িয়েই যায় তাকে নামাতে তো করতে হবে পথ একটাই পা ভেঙে দেয়া নিদেন পক্ষে ল্যাঙ মারা বাস্তবে কাজটি করা কঠিন সেকারনে প্রয়োজন কল্পনায়, গল্পের একেবারে হাসির গল্পের আমাদের গল্পে আমরা দৈত্য, অন্যেরা বামন, নয়ত বোকার হদ্দ আমরা খাই চল্লিশটা ফজলি আম ওরা খায় ভোমরা

হাসিই সেরা ওষুধ কিনা!একেবারে বিনে পয়সার।

তাজ্জব - strange things happens

Sep 20, 2009

সারা পৃথিবীর মানুষ যাকে বলে চাইনিজ ফুড চিনের মানুষ নাকি তাকে চাইনিজ ফুড বলে না কি তাজ্জব কথা গেয়ো যোগি ভিখ পায় না মন্দার সময় সবাই বলাবলি করছিল ইউরোপে-আমেরিকায় ফাষ্টফুডের দোকানে ভিড় বেড়েছে খরচ বাচাতে নাকি কেফসি-ম্যাগডোনালসে খাচ্ছে সস্তায় অল্প খাবারে পেট ভর্তি লন্ডনে নাকি সবচেয়ে দামী খাবারের নাম বাংলা কারি হাজার হাজার বাঙালী খাবার হোটেল খুলে ব্যবসা করে দেদারসে কামাচ্ছে আর বাংলা কারির দেশে গাড়ি নিয়ে মানুষ লাইন দিচ্ছে কেফসি-পিজা হাটে সেখানে ঢুকতেও নাকি বিদেশি ষ্টাইলের সাজ পোষাক পড়ে যেতে হয় গাড়ি ছাড়া গেলে ইজ্জত থাকে না

তাজ্জব, তাজ্জব

মানুষ নাকি ট্যাক্স দেয় না যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে সেই সরকারই হা-হুতাস করে যে কয়েক কোটি মানুষ বেচে থাকে অন্যের ওপর ভর করে তারা তো দেয়ই না যাদের সামর্থ্য আছে তারাও দেয় না রাস্তায় যে কোটি টাকার গাড়ি নিয়ে বের হয় সেও নাকি ট্যাক্স দেয়ার মত আয়-রোজগার করে না আবার এরই মধ্যে ট্যাক্স থেকে আয় বেড়েছে প্রতি দশ বছরে তিন গুন তিরিশ বছরে নয় গুন কেউ কেউ নাকি হয়রানি থেকে বাচতে টাকা ধার করেও ট্যাক্স দেয়

তাজ্জব তাজ্জব

পুলিশ-সেনাবাহিনী ব্যবহার করে ট্রাফিক অবস্থার উন্নতি করা যায়নি প্রতিদিন খবরের কাগজে একটা রঙিন ছবির যায়গা দখল করে রেখেছে রাস্তার পাশে থেমে থাকা গাড়ির মিছিল রাস্তার মোড়ে মোড়ে সিকিউরিটি ক্যামেরা বসিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থার নজরদারী করা হবে

তাজ্জব, তাজ্জব

বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার অর্ধবর্ষ পার হয়ে গেছে তদন্তের জেরে ৩৯ জন মারা গেছে তদন্তকারীরা বলছেন এরসাথে বাইরের কোন যোগাযোগের প্রমান পাওয়া যায়নি প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলছেন গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থামেনি বিডিআরের মত ঘটনা আরো ঘটতে পারে সবাই সতর্ক থাকুন

তাজ্জব, তাজ্জব

দেশে নাকি গ্যাসের মজুদ পাচ বছরের। বিবিআনায় মজুদ বাড়ার তথ্য পাওয়ার পরও তা চলবে দুবছর। মন্ত্রী বলছেন পঞ্চাশ বছরের মজুদ রেখে তবেই গ্যাস বিক্রি করা হবে।

তাজ্জব, তাজ্জব।

খেতে না পেয়ে যার পেটে আলসার হয়েছে সে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টেলিমেডিসিন চিকিৎসা নেবে

তাজ্জব, তাজ্জব।

সারাবছর যে চুরি-বাটপাড়ি করে অতিষ্ঠ করে রাখল সে ঈদের সময় সামনে হাত পেতে বলে, বখশিশ।

তাজ্জব, তাজ্জব।

 

Browse