রিমান্ডে বসবাস

Mar 31, 2010
তিনি পণ করেছিলেন যে করেই হোক ১০টায় দোকান খুলবেন পথে দুঘন্টা লাগলে দুঘন্টা আগে বেরবেন, তিনঘন্টা লাগলে তিন ঘন্টা আগে বেরবেন ব্যবসা দিয়ে আর দিন চলছে না সকালের আয়েসি ঘুম ছাড়তে হবে
তিনি দশটাতেই পৌছলেন এবাং দোকান খুললেন কিন্তু একেই বলে কপাল লোড সেডিং পাক্কা দুই ঘন্টা লোড সেডিং মানে তার দোকান খোলা আর না খোলা সমান বাড়ি থেকে খেয়ে বেড়িয়েছিলেন, ভাবলেন এই সুযোগে দুপুরের খাবারটা সেরে নেই সময় বাচবে
তারপর, দোকান যথারীতি শুরু হল ওই বারোটার সময় বারোটা থেকে দুটা এসময় আর কাষ্টমারই বা কজন ? তাদেরও আরাম আয়েস আছে দুটা বাজতে না বাজতেই আবার ফুরুত
আবার ব্যবসা শুরু হল চারটেয় আরো দুই ঘন্টা ভবঘুরে আর চোর ছাড়া এসময় কেউ দোকানে দোকানে ঘোরে না কি আর করা ওদের নিয়ে ব্যবসা
তারপর বাজল ছটা বাবার ফুরুত এবার ফিরবে আটটায় আর আটটা মানে দোকানপাট বন্ধ আটটায় দোকান বন্ধ করলে বিদ্যুত সাস্রয় হয় ভবিষ্যতের জন্য জমা হয়
দোকানদারী আসলে ওই দুয়ে দুয়ে চার ঘন্টাই
তিনি অবশ্য সরকারী চাকুরে হিসেবে সুখে আছেন কারেন্ট নাই তো হাওয়া খাই ফ্যানের হাওয়া নাই তো প্রকৃতির হাওয়া তো আছে অন্তত কষ্ট করে পরের কাজ করতে হচ্ছে না আর চাকরীও এমন না যে পানির দাবী নিয়ে, গ্যাসের দাবী নিয়ে, বিদ্যুতের দাবী নিয়ে মিছিল হাজির হবে সে তাদের চাকরী তারা সামলাক
বরং একটু সুবিধেই হয়েছে ছুটির সময় গিন্নি ফোন করেন, কখন আসছ ?
বাড়িতে কারেন্ট আছে ?
না
পানি আছে ?
না
তাহলে গিয়ে কি করব দুঘন্টা পর যাই
এই হিসেবও দুই ঘন্টার অতিরিক্ত দুঘন্টা মনের সুখে ঘুরে বেড়ানো
আর সারাদিন বিদ্যুত ছাড়াই যার চলে তিনি তার সারাদিনের পরিশ্রমের পর রাতে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে বললেন, আহ, এবার একটু ঘুম
এখানেও ফুরুত ফ্যান বন্ধ চৈত্রের গরমে গা ঘামতে লাগল এতদিন মনকে বুঝান যেত একঘন্টা কোনমতে কেটে যাবে দুঘন্টা অনেক লম্বা সময় এই নিয়মে দুঘন্টা কাটে না অস্থির হয়ে এদিক ওদিক করতে হয় কোন ফাকে যদি একটা হাওয়া মেলে
একসময় দুঘন্টাও পার হয় ফ্যান চলতে শুরু করে ততক্ষনে মাথায় যন্ত্রনা শুরু হয়েছে ফ্যানের বাতাসে জুড়িয়ে যেতে থাকে
কিন্তু সুখের সময় কাটে খুব দ্রুত কিছু বুঝে ওঠার আগেই আবার, আরো দুই ঘন্টা মাথার যন্ত্রনা তখনো পুরো যায়নি আবার দ্রুতবেগে বাড়তে শুরু করে
একসময় রাত যায়। মাথা ব্যথা যায় না। মাথার ওজন বেড়ে যায়। সেটা নিয়েই মাতালের মত ঢুলতে ঢুলতে, টলতে টলতে সারাদিন। সারারাত। সেই লোড সেডিং, সেই গরম, সেই মাথাব্যথা।
একটা পথই খোলা থাকে তখন, প্রানভরে গালাগালি না খেয়ে থাকতে পারি ছেড়া কাপড়ে চলতে পারি পেটালে সেটাও মুখবুজে সহ্য করতে পারি কিন্তু দুঘন্টা পর দুঘন্টা ঘুম ২৪ ঘন্টা যন্ত্রনা।
একমাত্র রিমান্ডের নির্যাতনের সাথেই তুলনা চলে।

আবাহনী-মোহামেডান With Us or Against Us

Mar 29, 2010
একটা সময় ছিল আবাহনীর সমালোচনা করলে ধরে নেয়া হত আপনি মোহামেডানের সমর্থক হয় এই পক্ষ নয় ওই পক্ষ, আরকিছু নেই তর্কাতর্কি, গালাগালি, হাতাহাতি, মারামারি এমনকি খুনোখুনি পর্যন্ত হয়েছে ভাগ্যিস এখন আবাহনী-মোহামেডানের বিষয় এড়ানো গেছে অকারন খুনোখুনি হয় না
মুল কথা আবাহনী-মোহামেডান নিয়ে না মৃতকে নিয়ে মাথা ঘামায় কে বিষয় হচ্ছে পক্ষ-বিপক্ষ এই পক্ষে নয় ওই পক্ষে বুশ বলেছেন আপনি হয় আমাদের পক্ষে নয়ত সন্ত্রাসী এখন আবাহনী-মোহামেডান না থালেও পক্ষ দুটিই নৌকা-ধানের শীষ
অকারনে ভুমিকাটা করে নিতে হল মুল কথাই যাই
সরকার ঘোষনা দিয়েছেন এখন থেকে লোড সেডিং এক ঘন্টার বদলে দুই ঘন্টা সাথেসাথে কার্য্যকর হয়ে গেছে (বাপরে অন্য সিদ্ধান্ত যদি এত তাড়াতাড়ি কার্য্যকর হত!) কারন উল্লেখ করা হয়েছে এক ঘন্টায় আইপিএস ঠিকমত চার্জ হয় না, এখন দুই ঘন্টা সময় পাবেন আপনি নিতান্তই বাচাল হলে বলতে পারেন এক ঘন্টার চার্জে এক ঘন্টা চলে না তাহলে দুই ঘন্টার চার্জে দুই ঘন্টা চলবে কিভাবে আর আইপিএস ব্যবহার করে কজন ? কি কাজে ? যে তেল দিতে জানে সেতো জেনারেটরের তেলও কিনতে জানে
আপনার কথায় আসলে কিছু যায় আসেনা আপনে কথা কওনের ক্যাডা ?
আরো ভয়ংকর খবরের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে রাত্রে ঢাকার বিদ্যুত নিয়ে সেচের জন্য দেয়া হবে
মানে কি ? রাত মানে কি সারারাত ? এখনই তো অর্ধেক রাত বন্ধ থাকে রাতদুপুরে কলকারখানা-দোকানপাট-রাস্তাঘাট সবই তো বন্ধ তারপরও শতভাগ সময় হিসেব করে লোড সেডিং বড়জোর চৈত্রমাসে ফ্যান চালু রাখতে হয় প্রকৃতির হাওয়া খাওয়ার উপায়ও নেই, চোরের ভয়ে জানালা বন্ধ রাখতে হয় এখন কি সেই ফ্যানটাও বন্ধ ? প্রাকৃতিক তালপাতা ভরসা ?
আরে বেক্কল আপনারে নিয়া মাথা ঘামাইতাছে কেডা ? দ্যাশ আগে, কৃষক আগে সরকার যাকিছু করে দ্যাশের জন্য করে দ্যাশের অর্থনীতি বইলা কথা জানেন ৩ বছর পর দ্যাশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ন হইব মন্ত্রী কইছে খবর রাখেন কিছু ?
এবার মোহামেডানের পক্ষের বিষয়টি তুলে ধরি মোহামেডান সমর্থক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একে বলেছিলেন বিপ্লব খাল কাটতে হবে পানি ধরে রাখতে হবে বিজ্ঞাপনের পোজ দেয়ার জন্যই হোক আর যে কারনেই হোক তার সেই ছবি এখনও দেখা যায় কৃষির জন্য পানি ধরে রাখা গুরুত্বপুর্ন এটা অন্তত বুঝানোর চেষ্টা করেছিলেন
কিন্তু তাতে কার কি ? আজকাল পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা অনেক ষ্টাইল করে বলেন, সারফেস ওয়াটার ওই পদ্ধতিতে কোনভাবে পানি জমিয়ে রেখে ব্যবহার করতে হবে ভুলেও খাল শব্দ ব্যবহার করেন না পাছে আবাহনীর বিরুদ্ধাচরন হয়ে যায় এমনকি ১০ বছর দেশ চালানো খাল+এদা নিজেও স্বামীর পথে যাননি ওনিয়ে একটা কথাও বলেননি কাজ তো দুরের কথা
কিন্তু পথ তো ওটাই ঢাকা থেকে বিদ্যুত নিয়ে সেচের জন্য দিয়ে সমাধান কোথায় আগেই ঘোষনা দেয়া হয়েছে কুষককে বিদ্যুত নিতে হলে নিজের টাকায় ট্রান্সফর্মার কিনতে হবে আর মাটির নিচে পানি আছেই বা কতটুকু ? কতদিন চলবে শোনা যাচ্ছে সেই পানির আর্সেনিক নাকি সেচের পানিতে উঠে এসেছে বাঙালী অবশ্য সহজে কাবু হয় না আর্সেনিকের মত সামান্য বিষয় নিয়ে মুল্যবান মস্তিস্ক ঘামায় না এসির বিজ্ঞাপনে আছে, মাথা ঘামানোর দিন শেষ বেচারা আর্সেনিককেই শরীরে দগদগে ঘা হয়ে দেখা দিতে হয় নিজের আগমন ঘোষনা করতে হয়।
দিন যাচ্ছে জনসংখ্যা বাড়ছে হুহু করে বন্যার পানির মত পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে আর্সেনিক উঠে আসছে চোখকান যতই বন্ধ করে রাখুন না কেন, এসব ঘটছে ঘটবে
খাল কাটলে তাতে কুমির আসার সম্ভাবনা নেই একমাত্র পানিই পাওয়ার কথা তারপরও যদি খাল শব্দটাতে আপত্তি থাকে তাহলে নাম পাল্টে ফেলুন মুজতবা আলী বলেছিলেন সুন্দর নামেই   যদি ডাকতে হয় তাহলে প্রাননাথ ডাকলে ক্ষতি কি সুন্দর একটা ডিজিটাল নাম দিয়ে ফেলুন আবাহনী-মোহামেডানের বিষয়টি এড়ানো যাবে
সেটাই স্থায়ী সমাধান

ঘোলাপানি (Puzzle)

Mar 28, 2010
ঘোলাপানি খুব ভাল জিনিষ অন্তত অনেকে যেভাবে পছন্দ করেন তাতে ভাল না বলে উপায় নেই এতে নাকি ভালভাবে মাছ ধরা যায় কারন নিশ্চয়ই একটাই, পানি ঘোলা হলে মাছেরা দেখতে পায় না তখন টপাটপ ধরে ফেল
ঘোলাপানির ব্যবহার আসলে অনেক যায়গায় দৃশ্যত পানি না থাকলেও, একেবারে স্বচ্ছ আবহাওয়ায় এমনকি দিনে দুপুরে, একেবারে প্রকাশ্য রাস্তায়
যেমন ধরুন ঢাকার রাজপথ তাকালেই দেখবেন রিক্সার বহর আকাশের তারা গোনা এরচেয়ে সহজ অন্তত মানুষ সব তারা গুনেছে কিন্তু ঢাকা শহরের রিক্সা গোনার সাধ্য সরকার কিংবা সিটি কর্পোরেশনের হয়নি যা বলা হয় অনুমান এই অনুমানের পার্থক্যও ৬ অংকের কোঠায়
যাহোক, লক্ষ লক্ষ এগুলি চালাচ্ছে সবচেয়ে শক্তিশালী মানুষ রীতিমত গাধার খাটুনি ধর্মে বলেছে তোমরা পরিশ্রম কর, সেই ধার্মিক পরিশ্রম ধর্মের প্রসংশা যেমন করতে হয় তেমনি তাদের পরিশ্রমের প্রসংশাও করতে হয় অন্তত নিজের গাটের টাকা যতক্ষন না যায় ততক্ষন
আর ফলাফল লাখ দশেক কি লাখ পনের মানুষের কর্মসংস্থান তাদের পরিবার এবং নির্ভরশীলদের সংখ্যা মিলিয়ে অর্ধকোটি পার আর প্রতিদিন এই দেড় কোটি মানুষের শহরের মানুষকে তারা পৌছে দিচ্ছে যার যেখানে প্রয়োজন
কথা একটুখানি এই কাজ আরো কম পরিশ্রমে, কম সময়ে, কম খরচে করা যায় অথা যে যাত্রী রিক্সায় চড়ে হাওয়া খেতে খেতে যাচ্ছেন তিনি আরো কম সময়ে, কম খরচে, আরামে গন্তব্যে যেতে পারেন যদি যান্ত্রীক পদ্ধতিতে করা হয় সারা বিশ্ব এই নিয়মেই চলে বিশ্বখ্যাত যানজটও তৈরী হয়না আরওপর এদেরকে অন্য কাজে লাগালে কি হত ?
তাজমহল তৈরী করেছিল ২০ হাজার মানুষ। বহু তাজমহল তৈরী হত।
তারপরও কেন হয়না!
ওই ঘোলাপানি এই ঘোলাপানিতে লাভ অনেকের সরকার কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের দায়মুক্ত এদের পরিশ্রমের কথা বলে অনেকেই ডলার-ইউরো হাতে পান আর সমিতিরও অভাব নেই এই লক্ষ লক্ষ রিক্সা প্রত্যেকেই একটুকরো টিন লাগিয়ে ঘুরছে মালিক সমিতি, শ্রমিক সমিতি, মালিক-শ্রমিক সমিতি, রিক্সাচোর প্রতিরোধ কমিটি, কর্মসংস্থান সমবায় সমিতি ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি মানে, পরোক্ষভাবেও বহু মানুষের কর্মসংস্থান চাকুরেদের চাকরীও হয় আরামের অফিসে যেতে যেতে ফিরতি রওনা দেবার সময় উপস্থিত ঘোলাপানির উপকারীতা এখানেই
যাতায়াত ছেড়ে আবাসের কথাই বলুন না কেন প্রধানমন্ত্রী কয়েকবারই বলেছেন ঢাকা শহরের চারিদিকে উপশহর গড়ে তোলা হবে শহরের কোনদিকে সেটা করার যায়গা আছে জানিনা যতদুর জানি হাজার হাজার স্যাটেলাইট-মডেল-আদর্শ ইত্যাদি সিটি-টাউন এসব তৈরী হয়েই গেছে তারপরও, প্রধামন্ত্রী বলে কথা যেটুকু বাকি আছে সেটুকুও নিশ্চয়ই হবে তখন সুযোগমত নিজের জন্য একটা-
সে গুড়ে বালি এখানেও ওই ঘোলাপানি সরকারী প্লট যায় মন্ত্রী-সাসংদ-নেতার নামে প্লট পেলে সেখানে বাড়ি করা ইহজন্মে সম্ভব না, স্বাভাবিক আয় দিয়ে আর হাউজিং কোম্পানী ঘরবাড়ি তৈরী করে ভরে ফেলবে এটা মনে করারও কারন নেই তারাও জানে সরবরাহ যত কম চাহিদা তত বেশি দাম ধরে রাখতে হলে ষ্টকে কিছু রাখতে হয় নইলে বাড়ির দাম কমে যায় ভাড়ার আয় কমে যায় সরকারের মন্ত্রনালয় থাকতে পারে, তারা মাসমাস বেতনভাতা নিতে পারে, কিন্তু কোন বাড়ির ভাড়া কত হবে, ইলেকট্রিক বিল-গ্যাসবিল-পানির বিল কত হবে সেটাও ঠিক করেন ওই বাড়িঅলাই পছন্দ না হলে পথ দেখেন
আবাস ছেড়ে খাদ্যে যাবেন ? সবাই জানে কি খাচ্ছে বিশেষজ্ঞরা রীতিমত হিসেব কশে বলেছেন অধিকাংশ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে যাচ্ছে কিডনী রোগের তো কথাই নেই দেশসেরা প্রতিষ্ঠানও জরিমানা দিচ্ছে ভেজাল খাবার বিক্রি করে ২৫ টাকার একটা আইসক্রিম থেকেও বেরয় পচা পানি
এই ঘোলাপানির উপকারিতাও কম না এনিয়ে অভিযান চলছে সেখানে কর্মসংস্থান জরিমানার টাকা সরকারের ঘরে যাচ্ছে এটা আয় আবার কেউ কেউ কোথায়, কোন কৃতিত্ব দেখিয়েছেন, কত বুদ্ধি খাটিয়েছেন, কতজনকে কত জরিমানা করেছেন সেকথা টিভিতে প্রচার করে রীতিমত বিশ্বখ্যাতি লাভ করছেন দেশের মুখ উজ্জ্বল হচ্ছে বৈকি দেশের প্রতিভা বলে কথা
ঘোলাপানিতে যারা বাস করে তাদের থাকতে থাকতে নিশ্চয়ই চোখ ঘোলা হয় না হলেই বা কি যায় আসে ? চোখ খোলার কষ্ট করে কে ??
বেশ তো চলে যাচ্ছে

সংখ্যাতত্ত্ব - The Number Theory

Mar 26, 2010
মানবসভ্যতায় গ্রীকদের অবদানের তুলনা নেই। যেমন ধরুন হাজার তিনেক বছর আগেই তারা বলে গেলেন সংখ্যাই সব। ইহজগতে-পরজগতে যাকিছু দেখা যায়, যাকিছু কল্পনা করা যায় সবই সংখ্যা।
উদাহরন-
যেমন ধরুন বাদ্যযন্ত্র। গিটার-সেতার কিবা ঢোল-বাশি কিংবা হারমোনিয়াম-পিয়ানো যাই বলুন না কেন, কাজ হয় ওই সংখ্যায়ই। গিটারের তার লম্বালম্বিভাবে টানা দেয়া। একহাতে তারটা চেপে ছোটবড় করবেন আরেকহাতে টান দেবেন। দৈর্ঘ্য যত কম শব্দ তত টনটনে, দৈর্ঘ্য যত বেশি শব্দ তত ভোতা। আর দৈর্ঘ্য মানেই সংখ্যা। ইঞ্চি-সেন্টিমিটার-গজ-ফুট যাই বলুন না কেন।
আজকাল অবশ্য বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ততটা পিছিয়ে নেই যে ওধরনের উদাহরন দিতে হবে। ডিজিটাল দেশে শব্দ সরাসরি দেখাই যায়। ঢেউয়ের মত। ইংরেজিতে বলে ওয়েভ লেন্থ।
লেন্থ দিয়ে মাপা যায় সবকিছুই। এমনকি সরাসরি চোখে দেখা যায় না এমন বিষয়ও। একটু ঘুরিয়ে বলতে পারেন চোখে দেখা যায়না বলেই চোখে দেখানোর ব্যবস্থা। যেমন ধরুন, গাড়ি।
একসময় ব্যক্তিগত গাড়িকে বলা হত প্রাইভেট কার। তাইবলে মিতসুবিসি কিংবা নিশান কিংবা হামারের গাড়িকে কি কার বলবেন ? আমেরিকানরা বলে ট্রাক। এদেশে কি ওই শব্দ মানায়। ট্রাক বললে লোকে বুঝবে মালপত্র নেয়ার জিনিস। সে বস্তু তো ছোটলোকের জিনিষ। ব্যবসায় কাজে লাগে। তাইবলে কি ওতে চড়ে ঘুরে বেড়ানো যায় ?
নিশ্চয়ই যায় না। কাজেই, বাড়ির সামনের গলি দুপাশ থেকে কমতে কমতে রিক্সার মাপে এসে থেমেছে। তারই মধ্যে নিজের ক্ষমতার দৈর্ঘের সাথে মানানসই একটা গাড়ি নিয়ে চলাফেরা করতে হয়। রাস্তা বন্ধ। পথচারি, রিক্সাযাত্রী সবাই তাকিয়ে দেখছে কীর্তিমানকে। নিশ্চয়ই বলছে, বাপরে! কত দামী গাড়ি! ক্ষমতা আছে।
কাজেই ক্ষমতা গাড়ির মাপের সমানুপাতিক। কিংবা গাড়ির মাপ ক্ষমতার সমানুপাতিক। একের বৃদ্ধির সাথে আরেকের বৃদ্ধি ঘটে সমান হারে। তারমানে এখানেও অংক।
আবার আরেক ধরনের অংকও প্রচলিত। যেমন আপনি বললেন ঘন্টায় ঘন্টায় লোড সেডিং। কিংবা দিনে ১০ বার লোড সেডিং। এতে সরকারের ভাবমুর্তি নষ্ট হয় বৈকি। সরকার এত সুকাজ করছে তারওপর আপনি প্রশংসা না করে সমালোচনা করছেন। আপনি কি জানেন এসব চারদলীয় জোট সরকারের দুর্নীতির ফল। তারা বিদ্যুত তৈরী করেনি, শুধু লুটপাট করেছে বলেই তো এই অবস্থা।
কাজেই, নতুন সমাধান, আজ থেকে লোডসেডিং দুঘন্টা করে। অংকের মাথা থাকলে একবার মিলিয়ে দেখুন লাভ কত।
দুঘন্টা লোড সেডিং দিলে দিনে বড়জোর ছবার লোডসেডিং হবে। আগের মত ১২ বার হচ্ছে না। লোড সেডিং এর সংখ্যা কমল কিনা ?
এক ঘন্টার বদলে এখন বিদ্যুত পাবেন দুই ঘন্টা (চেষ্টা করা হবে, বলেছেন কর্তা) এটা লাভ কিনা। আর কি বলতে পারবেন ঘন্টায় ঘন্টায় লোড সেডিং ?
কাজেই ওসব কথা ছাড়ুন। সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে। সেইকথা বলুন। রব তুলুন, জয় ডিজিটাল বাংলা।
আর যদি নিতান্তই দেশদ্রোহি হতে চান, রাজাকার কিংবা তাদের সমর্থক পরিচিতি চান, জঙ্গী- সন্ত্রাসী-পাকিস্তানের চর ইত্যাদি হতে চান তাহলে সাহস করে বলতে পারেন, ওই বিচারে আমার প্যাট চলতাছে না। ওইডা নিজেদের মইধ্যে রাখেন। আমার প্যাটে ভাতের ব্যবস্থা করেন।

যুদ্ধ শেষ হয়নি War For Peace

Mar 25, 2010
চেঙ্গিস খান যখন চীন জয় করেন তখন এত মানুষ মেরেছিলেন যে পিকিং শহরের পাশে নরকংকালের পাহাড় জমেছিল। এক বছর পর পর্যটকেরা যখন সেখানে যান তখনও রাস্তা ঢেকে ছিল মানুষের রক্তের আবরনে। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন বর্বরতার তুলনা নেই। আর আধুনিককালে হিটলার যা করেছিলেন তা ইতিহাসের কলংক। ১ কোটি ২০ লক্ষ ইহুদি মারতে হবে, একজনের জন্য একটা করে গুলি খরচ করলেও ১ কোটির বেশি গুলি খরচ করতে হয়। আর যে হারে মারতে হয় তাতে বহু বছর লেগে যাবে। এটা ছিল আইখম্যানের হিসাব। তিনি পদ্ধতি আবিস্কার করলেন দ্রুত মারার। গ্যাস চেম্বার। প্রতি ঘন্টায় ২৪ হাজার মারা যাবে এই পদ্ধতিতে। কাজ হবে দ্রুত, খরচ কম।
এই ঘটনাগুলি যখন ঘটে তখন একধরনের প্রস্তুতি ছিল। যাদের মারা হচ্ছে কিংবা হবে তারা জানত এমন কিছু ঘটতে যাচ্ছে। প্রবাদ আছে, বড় মাছ ছোট মাছকে খায় কারন এই না যে সে জানতে পায় না। সে জানে সেটা ঘটতে যাচ্ছে, তার কিছু করার নেই।
১৯৭১ সালের এই দিনে ঢাকায় যা ঘটেছে তার কোন প্রস্তুতি ছিল না। মানুষ জানত না ঘুমের মধ্যে গুলি খেতে হবে, ট্যাংক এসে গুড়িয়ে দিয়ে যাবে সবকিছু। বঙ্গবন্ধু আচ করেছিলেন। বারবার বলেছিলেন এমন কিছু ঘটতে যাচ্ছে। তিনি নিজে পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে দিয়েছিলেন দুরে। কিন্তু তিনি যখন ২৫ মার্চ পর্যন্ত বৈঠক করছেন ইয়াহিয়া-ভুট্টোর সাথে তখন কে জানত কখন তাদের জীবন দিতে হবে ?
মানবইতিহাসের এই কলংকজনক ঘটনাটি ঘটেছে। হঠা করেই বন্য পশুর মত ঘুমন্ত মানুষ হত্যা শুরু হয়েছে।
সংখ্যায় কত ?
তাতে কিছু যায় আসে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক থেকে শুরু করে ফুটপাতে ঘুমিয়ে থাকা শিশু কেউ রক্ষা পায়নি।
তারপর ৯ মাসের যুদ্ধ। কয়েক লক্ষ মানুষের জীবনদান। অবশেষে স্বাধীনতা। এবং সেই স্বাধীনতা উযাপন। এতবড় একটা উপলক্ষ পালন করবে না কেন মানুষ! লাল-সবুজ পোষাক, গালে জাতীয় পতাকার চিহ্ন, হাতে লাল-সবুজ চুড়ি এসব তো এজন্যই। কয়েক লক্ষ মানুষের জীবনের বিনিময়ে এটাই তো আমাদের অর্জন।
আজকের পত্রিকার প্রধান খবর, বিয়েতে রাজী না হওয়ায় বাড়িতে ঢুকে বাবা-মাকে গুলি করে মেরেছে এলাকার মাস্তান। দর্প করে বলে গেছে, তোর বাবা-মাকে মারলাম। এখন একা থাক।
এটাও এক ধরনের স্বাধীনতা। পত্রিকার প্রতিদিনের খবর অমুক যায়গা দখল, তমুক বিল দখল, সমুক নদী দখল। এগুলোও স্বাধীনতা। অন্তত কেউ যখন বাধা দিচ্ছে না, টু শব্দ করছে না তখন স্বাধীনতা ছাড়া আর কি বলা যায়।
দেশের ৫১ ভাগ মানুষ দারীদ্রসীমার নিচে বাস করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কুশিক্ষার সুযোগও জোটে না। সেখানো , ক্ষমতার দাপট, দখলদারী, খুনোখুনি। পথে বেরলে গুতাগুতি-ধাক্কাধাক্কি, দশ মিনিটের পথ পেরতে দুঘন্টা, অফিস পৌছতে পৌছতে বাড়ি রওনা দেবার সময় উপস্থিত। এরই মধ্যে স্বাধীনতা পালন।
জাতি নিশ্চয়ই স্বাধীনতা পেয়েছে। কিন্তু মুক্তির জন্য যুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধ। সেই মুক্তি পায়নি। ক্ষুধা থেকে, দারিদ্র থেকে, সন্ত্রাস থেকে, দখলদারীর হাত থেকে। বরং ক্রমেই বেড়ে চলেছে দখলদারীত্ব। ক্রমেই নির্লজ্জ হয়ে উঠেছে এইসব হামলাকারী। ২৫ মার্চ যারা হামলা শুরু করেছিল তাদের সাথে দুরত্ব এখন সামান্যই। ৭১ এর রাজাকারের মত তাদেরও দোসরের অভাব নেই। দলে দলে, ঝাকে ঝাকে বাড়ছে।
মুক্তি মেলেনি। মুক্তির জন্য যুদ্ধ শেষ হয়নি। কিংবা শুরুও হয়নি। কারন, অভাব মুক্তিযোদ্ধার। নেতৃত্বের।

খাম্বা বনাম খুটি All The Same

Mar 22, 2010
খাম্বা বাঙালী খুব ভালভাবেই চিনেছে চারদলীয় জোট সরকারের সময়। একেবারে আখাম্বা দেয়া হয়েছে জনগনকে। কে দিয়েছেন, কিভাবে দিয়েছেন সাথেসাথে খুবএকটা জানা যায়নি। কেন কে জানে ? যাদের জানানোর কথা তারাও হয়তো খাম্বার ভাগ পেয়েছেন। পরবর্তীতে জানা গেছে বিস্তারিত। কেন জানা হয়তি তার প্রসংগ উল্লেখপুর্বক ব্যাখ্যাসহ। যিনি খাম্বা দিয়েছেন তিনি প্রধানমন্ত্রীপুত্রের বন্ধু। কাজেই জাতিকে খাম্বা দিতেই পারেন। অন্তত প্রধানমন্ত্রীপুত্রের সমালোচনা করা যায়না।
তারপর নদীতে বহু পানি গড়িয়েছে। বহু মানে কতটা বলা কঠিন কারন আজকাল পানি বেশি গড়ায় না। শুধু বালুচর নদীর মাঝখানে। তারপরও, কিছু হলেও গড়িয়েছে। দিনবদলের ডাক শুনে চৈতন্য ফিরেছে বাঙালীর। আর দুর্নীতি নয়, আর অনিয়ম নয়। যারা খাটি দেশপ্রেমিক, যোগ্য তাদের ভোট দিয়ে ক্ষমতায় পাঠাব। দিন বদল করব।
দিন বদলানো। শুধু দিনই বা কেন, দিনরাত সবই বদলালো। যত দখলদারী আছে হাতবদল হল। প্রধানমন্ত্রী রীতিমত ঘোষনাই দিয়ে ফেললেন, দখলদারী মুক্ত করবে না ?
কাজেই তোমরা মুক্তভাবে দখলদারী মুক্ত কর। রাস্তাঘাট, খালবিল, নদীনালা-বনজঙ্গল, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় সব দখলদারীমুক্ত কর। বদলে ফেল, বদলে যাও। নামবদলের বহর এবং জিয়ার কবর নিয়ে টানাটানি দেখে একজন মন্তব্য করে বসল, বুজছি, ওইডারে বঙ্গবন্ধুর মাজার বানাইব।

এরই মধ্যে খবর শোনা গেল সরকার ৫১ হাজার খুটি কিনছে। চোখের চশমা ঠিক করে আরেকবার খবরের কাগজে চোখ বুলাল বাঙালী। দিনে ১২ ঘন্টা লোড সেডিং এরই মধ্যে ৫১ হাজার খুটি। ভারত থেকে বিদ্যুত কি এসেই গেল! নাকি দেশপ্রেমিক সরকার দেশেই বিদ্যুতকেন্দ্র বসালো। এজন্যই বোধহয় দাম বাড়ালো কদিন আগে। খুটিগুলো কোথায় বসাচ্ছে ? আমার এলাকায় পাবো তো ?
ধুর, ওসব কিছু না। খুটি কোথাও বসানো হচ্ছে না। ব্যাখ্যা দিলেন কর্মকর্তা, অনেকসময় দেখা যায় নতুন সংযোগ দেবার সময় খুটির অভাবে দেয়া যায় না, তাই অগ্রিম কিনে রাখা।
কতদিনে নতুন সংযোগ দেয়া শুরু হবে ?
কি যে কন না! একদিন না একদিন হইব। খুটি কি পচার জিনিষ যে পচব। অহন সস্তায় কিন্যা রাখলাম আরকি। একদিন ঠিকই কামে লাগব। ক্ষমতার একবছরের বেশি পার হইছে। বাঙালীর বিশ্বাস কি ? যদি সত্যিসত্যি ক্ষমতার হাতবদল তাইলে মুসকিল। সময় থাকতে নিজের খুটি ঠিক করি।
সাপ্লাই দিল কে ?
কে আবার! যার খুটির জোর আছে। এপ্রশ্ন আবার করতে হয়!

নাপিতকে ডাক্তারী শেখাবে কে Look Before You Leap

Mar 21, 2010
এক গ্রামে একজন নাপিত ডাক্তারদের জন্য ত্রাস হিসেবে দেখা দিয়েছিল সন্ত্রাসী কাজকর্ম দিয়ে না, বরং নিজের কৃতিত্ব দিয়ে ফোড়ার রোগি পেলে সে ঘ্যাস ঘ্যাস করে ক্ষুর চালাত আর ফি একেবারে নগন্য অন্তত ডাক্তারের ছুরি-কাচির সাথে তুলনা চলে না ফল যা হবার তাই হল লোকে লাইন দিল নাপিতের কাছে আর ডাক্তারদের ভাতে-পানিতে মরার দশা
একসময় সব ডাক্তাররা একত্রিত হল সমাধান খুজতে বর্ষীয়ান একজনের মাথা থেকে বুদ্ধি এল, দায়িত্ব আমি নিচ্ছি তোমরা ধৈর্য্য ধর
পরদিন তিনি দেখা করলেন নাপিতের সাথে ওহে নাপিত, তুমি তো বেশ ভাল ফোড়া কাট তোমাকে কিছু নিয়ম কানুন শিখিয়ে দেই আরো ভালভাবে কাজ করতে পারবে এই যে, এই হল ক্ষুর, আগে এটাকে পরিস্কার করতে হবে এতে অনেক রোগজীবানু থাকে কোনটা শরীরে ঢুকে গেলে সেই রোগ হবে একে বলে ষ্টেরিলাইজ করা তারপর যেখানে কাটবে সেই যায়গা ভালভাবে লক্ষ্য করবে আমি ছবি দিয়ে দেখাচ্ছি, এইযে এটার নাম ভেইন এর মধ্যে দিয়ে সারা শরীরের রক্ত হার্টে যায় এটা কাটলে রক্তপড়া বন্ধ হবে না রোগি মারা যাবে এটার নাম আর্টারী এটা দিয়ে রক্ত হার্ট থেকে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এটা কাটলেও রক্ত পড়া বন্ধ হবে না কোথায় ভেইন কোথায় আর্টারী এসব বাদ দিয়ে সাবধানে কাটবে
রীতিমত কদিন ট্রেনিং নিয়ে খুশীমনে নতুন রোগির ফোড়া কাটতে গেল নাপিত ক্ষুরটাকে গরম পানিতে ধুয়ে নিল স্যাভলন দিয়ে মুছে নিল তারপরও খুতখুতি যায়না, জীবানু কি থেকেই গেল!
এরপর কাটার পালা এইদিক দিয়ে গেছে ভেইন ওইপাশে ছোট আরেকটা তার কাছেই আর্টারী বাপরে, ওগুলো পাশ কাটিয়ে কাটব কিভাবে ?
নাপিতের হাত কাপতে শুরু করল একসময় ক্ষুর পড়ে গেল হাত থেকে
আসলে নাপিত যতক্ষন নাপিত ততক্ষন ডাক্তারী খুব সহজ অমুক যায়গায় সমস্যা, কেটে ফেলুন
এই নাপিতামি শুধু ফোড়া কাটার মধ্যে থাকলে এত আপত্তি ছিল না অন্তত ফোড়া না হওয়া পর্যন্ত তাকে ভয় পাবার কারন ছিল না নাপিত নিজেই যদি ফোড়া তৈরী করে তারপর নিজেই সমাধান দিতে ক্ষুর চালায় সমস্যা তখনই
ঢাকা শহরে বিলবোর্ড খুলে মাথায় পরে মানুষ মারা গেছে নিজেদের জীবন দিয়ে তারা জানিয়ে গেছেন শহর জুড়ে রাস্তার ধারে এসব বিলবোর্ডের ৯৯ ভাগই অবৈধ কাজেই লোক লাগাও, ওগুলো ভাঙ্গতে হবে আজ গুলশান, কাল শাহবাগ, পরশু মতিঝিল ততক্ষনে গুলশানের নতুন কাজের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে কিভাবে অবৈধ বিলবোর্ড লাগানো সম্ভব হল, কার বোর্ড লাগানো হল, কে লাগালো, কিভাবে শতশত কোটি টাকা হাতবদল হল এপ্রশ্ন করবেন না। মানী লোকের মান রেখে চলতে হয়।
আর ভাঙ্গার নির্দেশনা কে দিল তা নিয়েই বা মাথা ঘামাচ্ছে কে ? ক্ষমতা আমার হাতে, আমিই কাজী। ক্ষমতায় থেকে কিছুই করব না তাকি হয় ? এতটা নেমকহারাম নই। কাজেই, ভেঙ্গে দাও ঘুড়িয়ে দাও-
ভাঙ্গা হবে কার টাকায় ? সরকারের টাকার অভাব নেই। শুধু জমছে আর জমছে। আয় সন্তোষজনক, ব্যয় কমছে। খরচ করার যায়গা নেই। জমা টাকা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। বিনিয়োগের জন্যও কেউ টাকা নেয় না। সাংসদপিছু ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। তারা কিছুটা অর্থভার কমাবেন।
আর জনগন ? তারা ভারবাহি পশু। প্রতিনিয়ত ট্যাক্সের পরিমান বাড়িয়ে যাবেন। গ্যাস-বিদ্যুত-পানির জন্য টাকা বাড়াতে থাকবেন আর ক্রমেই সেগুলোর ব্যবহার কমাবেন। দিনে-রাতে অর্ধেক সময় গ্যাস-বিদ্যুত-পানিছাড়া থাকবেন। পরিবেশ বিপর্যয় থেকে বিশ্ব রক্ষা করবেন। বিশেষ বিশেষ দিবস পালন করবেন। এজন্যই তো স্বাধীনতা এনে দিয়েছি। স্বাধীনতা পালন করুন।

গা জ্বালা The Ugly Words

Mar 17, 2010
গায়ে জ্বালা অনেক কারনে হয়। আমি চৈত্রের দিনে বা রাতে লোড সেডিং-এর কথা বলছি না। সেটা গা সওয়া হয়ে গেছে। বলছি তাদের কথা যাদের দিনরাত এসিরুমে থাকার পরও গা-জ্বালা করে। রোগতত্ত্ব হিসেবে বলতে পারেন এটা রোগ। শারীরিক বা মানষিক যে কোনটাই হতে পারে। অতিমাত্রায় বার্গার-কাবাব খেলে তাদের নাকি শারীরিক গা-জ্বালা তৈরী হয়। আবার কেউ যদি অসন্মান করে, যদি গালাগালি করে তাহলে মানষিক গা-জ্বালা তৈরী হয়।
বকারামের পাঠকেরা এত বোকা নন যে একথা ব্যাখ্যা করে বুঝাতে হবে। সরাসরি সোজা কথাতেই যাই।
জিয়াউর রহমান স্বাধিনতার ঘোষক, বিএনপির এই কথায় আওয়ামী লীগের গা-জ্বালা। যদিও ইতিহাস বলে আমি মেজর জিয়া বলছি একথা দিয়ে শুরু করে তিনি স্বাধিনতার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছিলেন সবাইকে।
রেডিও-টিভি অথবা মাইকে এমনকি খালি গলায় যখন কেউ কিছু জানান দেয় তাকে ঘোষক বলে। জিয়া এই যুক্তিতে ঘোষক। একমাত্র মিথ্যাচারনই পারে এটা অস্বিকার করতে। বিএনপি জিয়াকে ঘোষক-ই বলে। তাকে আওয়ামী লীগের আদর্শিক নেতার বিকল্প হিসেবে দাড় করিয়েছে বলে কখনো শোনা যায়নি। অন্তত জাতির পিতা- এই শব্দ নিয়ে কখনও টানাটানি করেনি। সেটা একজনের জন্যই নির্দিষ্ট।
কিন্তু গা-জ্বালা যখন শুরু হয় তখন কান্ডজ্ঞান লোপ পায়। কোথায় কোন যুক্তি আছে টেনে বের করতে হয়। জিয়া যদি স্বাধীনতার ঘোষনাই দিয়ে থাকেন তাহলে স্বাধিনতা দিবস ২৭ মার্চ হল না কেন ? তিনি তো ঘোষনা দিয়েছিলেন ওদিনই। আসলে স্বাধিনতার ঘোষনা বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষনেই দেয়া হয়েছে। এবারের সংগ্রাম স্বাধিনতার সংগ্রাম, এরচেয়ে বড় ঘোষনা আর কি হতে পারে ?
তবে যুক্তি বলে কথা। এইসব যুক্তিবাদীদের কেউই একবারও বলেননি স্বাধিনতা দিবস আসলে ২৬ মার্চ না হয়ে ৭ মার্চ হওয়া উচিত। কারন ঘোষনাটা সেদিনই দেয়া হয়েছিল। অবশ্য সেটা ভবিষ্যত পরিকল্পনা হলে অন্য কথা।
পৃথিবীর কোন দেশে স্বাধিনতার ঘোষক নামে কেউ পরিচিতি পেয়েছেন কিনা জানিনা। কিছুদিন আগে পর্যন্ত জিয়া মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন একথাই লোকে জানত। জেড ফোর্সের প্রধান ছিলেন। (আজকাল শোনা যায় তিনি পাকিস্তানের চর ছিলেন। অনেকের কাছেই প্রমান আছে। তারা ৪০ বছর ধরে অতিযত্নে গোপনে সংরক্ষন করে রেখেছেন)। তিনি মুক্তিযুদ্ধে কি ভুমিকা রেখেছেন, রাষ্ট্রপতি হিসেবে কি ভুমিকা রেখেছেন, দেশের উন্নতির জন্য কি পরিকল্পনা করেছেন এসব ভুলে তিনি স্বাধিনতার ঘোষক এই একটিমাত্র বিষয়কে আকড়ে ধরতে আগ্রহী বিএনপি।
তাতে সমস্যা কোথায় ?
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফাদার অব নেশন বলে একটি শব্দ পরিচিত। জাতির জনক। যিনি জাতিকে নতুনভাবে উজ্জীবিত করেন তিনি এই সন্মান লাভ করেন। এজন্য যুদ্ধ করে স্বাধিনতা পেতে হবে এমন কথা নেই। আমাদের নিকটতম প্রতিবেশি দেশে গান্ধীকে এই মর্যাদা দেয়া হয় যদিও তিনি সবধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে ছিলেন। এমনকি স্বাধিনতার জন্য যুদ্ধেরও। কেউ আবার জাতির জনক হন সরাসরি যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে। শত্রুকে পরাজিত করে। জর্জ ওয়াশিংটন, মাও সে তুং কিংবা  ফিডেল ক্যাষ্ট্রো নিশ্চয়ই এই দলে। কেউ আবার যুদ্ধের পর দেশ গঠন করেও জাতির জনকের সন্মান পান। আমেরিকায় ওয়াশিংটনকে যতটা ভক্তি করা হয় জেফারসন-লিংকনকে তারথেকে বিন্দুমাত্র কম করা হয় না। মাও নিজে সবচেয়ে বেশি মানুষের ছন্নছাড়া এক দেশের অর্থনীতি ৫ বছরে দ্বিগুন করতে পেরেছিলেন। বলতে গেলে একেবারে খালি হাতে। যেখানে খরা-বন্যা-পঙ্গপাল ছিল নিত্যসঙ্গি।
বঙ্গবন্ধু জাতির জনক নিশ্চয়ই প্রথম কারনে। সেটা তার প্রাপ্য। এনিয়ে বিএনপি তো দুরের কথা সরাসরি স্বাধিনতার বিপক্ষে অবস্থান নেয়া জামায়াতের নেতারাও কিছু বলার সাহস পান না। এদেশের সব মানুষের কাছে বিষয়টি চিরসত্য। 
কিন্তু কথা একটাই, আমার নেতা স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েছেন। সেকারনেই দেশ স্বাধীন হয়েছে। নইলে কক্ষনো এদেশ স্বাধীন হত না। যে লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবন দিল, যারা সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করল তারা এই ঘোষনার কাছে তুচ্ছ। ঘোষনাই সব।
প্রশ্ন করতে পারেন জিয়া-মুজিব বিরোধ লাগল কেন ? জীবিত অবস্থায় তারা বিরোধে জড়িয়েছিলেন এমন খবর তো নেই। মৃত্যুর পর একে অন্যের বিরুদ্ধে লাগলেন কেন ? যেখানে তারা অবস্থান করছেন সেখানেও কি হাতাহাতি করছেন ? নাকি এটা একেবারে পার্থিব বিষয় ? এখানেই বা একের সাথে অন্যের তুলনার বিষয় সামনে এল কেন ??
এপ্রশ্নের উত্তরের জন্য জাতিকে অপেক্ষা করতে হবে বহুদিন। হয়ত কয়েক প্রজন্ম। যখন এই নেতাদের বর্তমান রাজনীতিতে ব্যবহার করা হবে না। তাদের নাম বিক্রি করে নিজের চামড়া বাচানো যাবে না। এরই মধ্যে তাদের নাম প্রয়োজনের চেয়ে বেশি বিক্রি হয়ে গেছে।
ইতিহাস কখনো বদলানো যায় না। সত্যিকারের ইতিহাস একসময় লেখা হবে। আপাতত একের কথায় অন্যের গা-জ্বালা এবং তার প্রতিক্রিয়া দেখা ছাড়া গতি নেই।

চলতি ধারাবিবরনী - Running Commentary

Mar 16, 2010
আস্তে আস্তে তিনি বোলিংএর শেষ প্রান্তে গিয়ে পৌছালেন, এইমাত্র ঘুরলেন, দৌড় শুরু করলেন, আম্পায়ারকে অতিক্রম করলেন, বল করলেন-
বুঝতেই পারছেন এটা ক্রিকেটের ধারাবিবরনী। যারা ক্রিকেট পছন্দ করেন তাদের খুবই প্রিয় চলতি ধারাবিবরনী। এই মুহুর্তে কি ঘটছে জানা যায়। এক মুহুর্ত অপেক্ষা নয়, ঘটনার সাথেসাথেই খবর। ক্রিকেট বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। বিশ্বের মাত্র কয়েকটা দেশ টেষ্ট খেলার যোগ্য। বাংলাদেশ তাদেরই একজন। কাজেই, চলতি ধারাবিবরনী শোনা এবং দেখার গৌরবও আমাদেরই, অন্যদের নেই। এমনকি আমেরিকা-রাশিয়া-চীন-জাপানেরও নেই। ওরা বড়জোর ৯০ মিনিটের ধারাবিবরনী শুনতে পায়, আমরা পাই পুরো ৫ দিন। গর্বটা কার!
শুধু খেলার ধারাবিবরনী বলে তো কথা না, আরো বহু কিছু আছে চলতি ধারাবিবরনীর। যেমন ধরুন জাতিয় সংসদ। কে কিভাবে মাতৃভাষা প্রয়োগ করলেন, কতজোরে টেবিল চাপড়ালেন, কার বংশ কতটা ধুয়ে দিলেন জানা যায় সরাসরিই। আগে যদি না চিনে থাকেন তাহলে সাথেসাথে চিনে নেয়া যায় কে দেশপ্রেমিক, কতটা দেশপ্রেমিক। কে কোন নেতার ভক্ত, কতটা ভক্ত। আমাদের নেতাগন কয়েক দশক আগে বিদায় নিতে পারেন, তাই বলে তাদের আমরা ভুলিনি। দমে দমে তাদের স্মরন করি। শুধুমাত্র কয়েকজন সংসদে বসে করলে তো হবে না, দেশের আপামর জনসাধারনের করা প্রয়োজন। তাদের দানেই তো এই দেশ। তারা ঘোষনা না দিলে কি কেউ যুদ্ধে যেত? জীবন দিত ??
মোটেই না। সেজন্যই এই চলতি বিবরনী।
এসব ধারাবিবরনীর কিছু সমস্যা থেকেই যায়। রেডিও মাঝেমাঝে শো শো করে ঝড় শোনায়, টিভি মাঝে মাঝে রাতের তারা দেখায়। এতে ধারাবিবরনীর ধারাবাহিকতা নষ্ট হয় বৈকি। ধারাবাহিক নাটকের একপর্ব মাঝখানে না দেখলে যেমন অবস্থা হয় তেমনি। নায়ক কিভাবে ভিলেনে পরিনত হল (অথবা বিপরীত) জানার সুযোগ হাতছাড়া হয়।
কাজেই, সবচেয়ে সুবিধেজনক এবং নিরাপদ ধারাবিবরনী হল পয়েন্ট টু পয়েন্ট ধারাবিবরনী। একের সাথে অন্যের।
আগে একটা উদাহরন দিয়ে নেই। এক ব্যক্তি সিডির দোকানে এসে জিজ্ঞেস করলেন, অমুক গান আছে ? চালান তো।
গান চালু হল। আর সেই ব্যক্তি পকেট থেকে মোবাইল ফোন বের করে কল করলেন। তারপর ফোনটা বাড়িয়ে ধরলে স্পিকারের সামনে। তারপরই ফোন কানের কাছে নিয়ে অপর পারের ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলেন, এই গান ?
আপনি নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন গানের ধারাবিবরনী প্রচার করা হল অপর প্রান্তে। মোক্ষম পদ্ধতি।
কাজেই, যদি সত্যিকারের ধারাবিবরনী দিতে হয় সেজন্য রেডিও-টিভির ওপর নির্ভর না করে মোবাইল ব্যবহার করুন।
যেমন, আপনি এখন কোথায় ?
এই যে আপনের বাড়ির কাছে। রাস্তার ওপার। ডানদিকে তাকাইলাম। একটা গাড়ি আইতাছে। রাস্তা পার হমু। হাত তুললাম কিন্তু ব্যাটায় থামল না। একটু হইলে পায়ের উপর দিয়া যাইত। দ্যাহেন তো ব্যাটারে কিছু করতে পারেন নাকি। মনেহয় দুইনম্বরি ড্রাইভার। ধুরছাই, সক্কলেই তো তাই। এইডা মনে হয় তিন নম্বর। গাড়ির নম্বরডা- আহহারে দ্যাখতে পারলাম না। রাস্তা ফাকা পাইছি, দৌড় দিতাছি। এই পাড়ে আইছি। এইযে এবার বামদিকে ঘুরলাম--

আদেশমাত্র মান্য করিতে বাধ্য থাকিবে Obey The Law

Mar 14, 2010
বৃটিশ মন্ত্রী ডেভিড ব্লাংকেটকে মন্ত্রীত্ব হারাতে হয়েছিল সুপারিশ করার অপরাধে। তিনি নাকি তার বান্ধবীকে কম খরচে সরকারী বাড়ি পাইয়ে দিতে নিজের পরিচিতি ব্যবহার করেছিলেন। কোন প্রমান অবশ্য হাজির করা হয়নি। আসলেই সেটা অভিযোগ নাকি সত্য সেটা জানা যায়নি। তাদের দেশে নিশ্চয়ই কেউ রাজনৈতিক হয়রানীমুলক অভিযোগ আনে না, কাজেই ধরে নেয়া যায় সত্য। কাজেই চাকরী নট।
বুশের প্রিয়ভাজন পল উলফোভিতজকেও বিশ্বব্যাংক প্রধানের পদ ছাড়তে হল ওই সুপারিশের কারনেই। তিনি নাকি নিজের পরিচিতি ব্যবহার করে বান্ধবীকে প্রাপ্যের চেয়ে বেশি বেতন দেয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। কাজেই চাকরী নট।
আসলে সুপারিশের বিষয়টি নগন্য। মুল বিষয় ওই - বান্ধবী। ধর্মপ্রান বাংলাদেশের নেতারা ওসব কুকাজ করেন না। তবে সুপারিশ করেন। ওই যে একজনের চাকরী গেল ব্যাংক থেকে। তিনিও জানেন কোন পথে যেতে হয়। প্রতিমন্ত্রী। তার ফোন গেল ব্যাংক প্রধানের কাছে,
হ্যালো, আমি মাহবুবুর রহমান। কি বলছেন ? চেনেন না ?? নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে চেনে না ! আমি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী। পানিসম্পদ রক্ষা করি, দেশের সম্পদ রক্ষা করি, চাকরী রক্ষা করি আর আমাকে চেনেন না। বাড়ি কোথায় ? এ্যা, ঘড়বাড়ি নেই ? বেয়াদ্দপ কোনহানকার। তোর এতবড় সাহস। তুই রাজাকার, আলবদর। গানম্যান পাঠালাম, দেখ আমি কে। এই, কে আছিস, ধরে আনতো-
সাথেসাথে সরকারী গাড়ি নিয়ে ছুটল সরকারী গানম্যান। সাথে মন্ত্রীর পিএস। নিতান্তই তার অফিসের লোকজনের কারনে বেধে আনা গেল না। এত লোকের সামনে-
না, প্রতিমন্ত্রী তাকে ধরে আনতে গানম্যান পাঠাননি। চায়ের দাওয়াত দিতে পাঠিয়েছেন। অন্তত সাংবাদিকগন এই উত্তরই পেলেন তারকাছে।
আপনারা সাক্ষী, ওই লোক দেশের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় তাও শেখেনি। আমার ফোন পেয়ে বলে চেনে না! অপেক্ষা করুন। কদিনেই জানবেন সে রাজাকার - সন্ত্রাসীদের অর্থজোগানদাতা  না-কি।
কাজেই, হে বঙ্গবাসি, যদি রাজাকার হতে না চান, যদি গানম্যানের কাছে চায়ের দাওয়াত পেতে না চান তবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির জন্য আচরন শিখুন। তাদের চিনে রাখুন। তাদের আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, পরিবার, ভাই-বেরাদর, সঙ্গিসাথীর নাম মুখস্ত করুন।
টাকার গায়ে লেখা থাকে, চাহিবামাত্র দিতে বাধ্য থাকিবে। এই লিষ্ট দেখে সকাল-বিকেল নিজেকে বলুন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা আদেশ করামাত্র মান্য করিতে বাধ্য থাকিবে।

মান এবং হুস - Be a Man

Mar 13, 2010
মান এবং হুস, এই নিয়ে মানুষ বলে গেছেন রামকৃষ্ণ তার কথা অমৃতসমান কাজেই ধরে নিতেই হয় মানুষ পরিচিতিলাভের জন্য মান এবং হুস এই বিষয়দুটি থাকতে হয় বন্যপ্রানী সহজেই বন্যপ্রানী তরুলতা সহজেই তরুলতা মানুষ, প্রানপন চেষ্টায় মানুষ, একথাও তাই বলে প্রানপন চেষ্টা করে মানুষ হতে হয় নিজের মান রাখতে হয় হুসজ্ঞান ঠিক রাখতে হয়
 কিন্তু কথা হচ্ছে, শুধু কথায় কি চিড়ে ভেজে ? চিড়ে ভেজাতে প্রয়োজন হয় পানি আর সেটা পেতে মান এবং হুস কিছুটা হারাতেই হয় শুধু পানিতেই তো চলবে না, চিড়েটা আগে তার বিনিময়েও কিছু দেয়ার বিষয় থেকে যায় সকলের আগে যা দেয়া যায় তাহচ্ছে মান এবং হুস বিকোয় খুব সহজে যায়গামত বিকোতে পারলে চিড়ের অভাব হয় না
যেমন ধরুন, সরকারী প্লট বরাদ্দ সাংসদ হিসেবে আপনার সেটা প্রাপ্য আবার দেশের মান রক্ষার্থে কিছু নিয়মও উচ্চারন করতে হয় নিয়মে বলা হয়েছে প্লট তিনিই পাবেন যার নিজের এধরনের জমিজমা নেই দুদিক ঠিক রাখতে আপনাকে যা করতে হয় তা হচ্ছে হলফনামা দেয়ার সময় বলে দেয়া, আমার জমিজমা কিচ্ছু নেই ওই প্লটটুকু না পেলে ফুটপাতে থাকতে হবে আর সাংসদ হিসেবে সেটা করা যায় না অনেক দেশে প্রধানমন্ত্রী সাইকেলে চেপে বাহাদুরী দেখায়। ধুরো! ওই জাতির মানসন্মান বলে কিছু আছে নাকি ? যতসব জংলি। নেতা-মন্ত্রী ওসব করলে দেশের মান যায়, সমাজের মান যায় নেতা-মন্ত্রী-সাংসদের দায়িত্ব দেশের মান উচুতে তুলে ধরা
কাজেই দেশের স্বার্থে, সমাজের স্বার্থে মিথ্যে হলফনামাটুকু দিতে হয় পত্রিকায় যদি খবর যায় তাতে কিছুটা মানহানিও হয় সেই অর্থে কিছুটা মনুষ্যত্বহানিও হয় অন্তত ওই রামকৃষ্ণের কথা মানলে
কিন্তু খবরের কাগজে ওকথা থাকেই বা কদিন তাদের প্রতিদিন নতুন খবর ছাপতে হয় আগেরটা না ভুললে চলে না তাছাড়া এই মানহানি আবার অন্যভাবে পুশিয়ে নেয়া যায় অন্য সবকিছুর মত মান বিষয়টিও আপেক্ষিক একের তুলনায় বেশি কিংবা কম এক পদ্ধতি হচ্ছে বেশি মান সংগ্রহ করে অন্যের চেয়ে মানী হওয়া আরেক পদ্ধতি হচ্ছে আরেকজনের মান কমিয়ে তারচেয়ে বড় হওয়া আপনি লম্বায় আরেকজনের চেয়ে উচু হবে, অথবা আরেকজনের ঠ্যাং ভেঙে তাকে ছোট করে দেবেন একেবারে সহজ কার্যকর পদ্ধতি
কাজেই, অমুকে অতবড় চুরি করেছে, এইকথা বলে তাকে আপনার চেয়ে ছোট করে দিন জানেননা আগের সরকার কত দুর্নীতি করছে। প্রমান চান? ওইযে, রিমান্ডে গিয়া সব ফাস কইরা দিছে। ষড়যন্ত্রে কার কার নাম আছে সব কইছে। এইবার যাইবা কোনে!
প্রশ্ন করতে পারেন অন্যে চুরি করলে সেখানে নিজের চুরি ঢাকা পরে কিনা। কিংবা চুরি করে কেউ ছোট হয় নাকি বড় হয় অবস্থাদৃষ্টে বড় হওয়ার উদাহরনই বেশি চুরি করতে যোগ্যতা লাগে। যার যোগ্যতা যত বেশি সে তত বড় হয়।
আবার অন্যদিকও সামলাতে হয়। নীতিকথা বলে কথা চুরি করেছেন, করবেন, তাইবলে নীতিকথাও বলবেন না! পরকালে দোযখে যাবেন নাকি ?
কাজেই (নীতির বিচারে) কিছুটা মানহানি মেনে নেয়া যায়
সমস্যা হচ্ছে, এসব বড়বড় মানুষের কথা মন্ত্রী-সাংসদ-নেতা-আমলা এদের কথা আপনি ইচ্ছে করলেই ওদলে যোগ দিতে পারেন না দেশে হাজার হাজার মন্ত্রী-সাংসদ রাখার ব্যবস্থা নেই  কাজেই আপনাকে অন্য পথ খুজতে হয় কোন পথে মান বিক্রি করে কিছু কামানো যায়
এজন্য দুটি কাজ করুন নীতিকথা শিখুন অনবরত বলতে শুরু করুন চারিদিকে কার কি দোষ সেগুলি যতভাবে সম্ভব বলতে শুরু করুন বড় থেকে ক্রমাম্বয়ে ছোটর দিকে
উদাহরন, জানেন মন্ত্রীরা কত হাজার হাজার ট্যাকা দুনীতি করে পারলে সেইগুলান বন্ধ করেন তারপর ওইসব আমলা, সরকারী কর্মকর্তা, সচিব, তাগো সহকারী, সহকারীর সহকারী, তার পিওন ওগো দুর্নীতির খবর জানেন ? বড় বড় ব্যবসায়ীর দুর্নীতির খবর জানেন ? সিন্ডিকেট কইরা হাজার হাজার কোটি ট্যাকা কামাইতাছে সেই খবর রাখেন ? আমি কয়ট্যাকা চাইলে কন ঘুস! ব্যবসায়ী কয়ট্যাকা বেশি লাভ করলে কন বাটপারি! রিক্সাঅলা কয়ট্যাকা বেশি নিলে কন ঠকবাজি!
আমরা তাগো কাছে শিশু সববিচারেই শিশু শিশুরা যেমন বড়দের কাছে শেখে আমরাও তাগো কাছে শিক্ষা নেই আমার মান নাই-হুস নাই কওনের আগে যারা এইসব শিখাইছে তাগো কাছে যান
রামকৃষ্ণ এদ্দিন বেচে থাকলে তাকেও কথাটা অন্যভাবে বলতে হত। যাকে মানতে হয়, যার মানি বেশি সে-ই সত্যিকারের মানুষ।
 

Browse