রাম! রক্ষা করো

Nov 16, 2009

বাংলাদেশ ভারত থেকে বিদ্যুত কিনতে যাচ্ছে। চুক্তি তৈরী, শুধু সই করার অপেক্ষা। কারন ?

নিজের চোখেই দেখতে পাচ্ছেন। বিদ্যুত একঘন্টা থাকে আরেকঘন্টা থাকে না। কলকারখানা অচল, জনজীবনে দুর্ভোগ। সরকার সব বিষয়ে সচেতন। জনগনের কষ্ট কোনমতেই হতে দেয়া হবে না। কাজেই জনগনের স্বার্থে, দেশের কল্যানে বিদ্যুত আমদানী করা হবে। এবং ভারত থেকেই।

শুধু আমদানীই না, রপ্তানীও করা হবে। যখন বাড়তি থাকে তখন। যেমন ধরুন শীতকালে এবং সকালে।

নভেম্বরের অর্ধেক পেরিয়ে গেলে তাকে শীতকালই বলা উচিত। আর সকাল প্রতিদিনই হয়। ঘুম ভেঙে যখন দেখা যায় কম্পিউটার চালু করার অবস্থা নেই তখন আরেকদফা শীতের ঘুম উপভোগ করা যায়।

তাহলে শীতের সকালে রপ্তানী হচ্ছে কিভাবে। যতদুর জানা যায় বাংলাদেশের শীতের সকাল ভারতেরও শীতের সকাল। তারাও শীতের সকালে ঘুমায় বৈকি! প্রাকৃতিক আধঘন্টার পার্থক্য ডিজিটালে এক ঘন্টা হয়েও আমাদের শীত তাদের গ্রীষ্ম হয়নি, কিংবা আমাদের সকাল তাদের দুপুর হয়নি। অবশ্য আরো ৫ ঘন্টা ঘড়ির কাটা ঘুরালে সেটা সম্ভব। কিন্তু সেকথা থাক-

অনেকদিন ধরেই মানুষ লোডসেডিং এর কথা ভুলে গিয়েছিল। দিনে একবার বিদ্যুত যাওয়াকে লোড সেডিং বলে না। তারপর হঠাৎ করে সেটা শুরু হল কেন। ভারতীয় কর্তারা দেশে আশার পর, দেশের কর্তা বিদেশে যাবার মুহুর্তে ? অন্যসময় গ্রীড বিপর্যয় জাতিয় কথাবার্তা শোনা যেত। খবরের কাগজেও তেমন কিছু চোখে পড়ছে না।

ও। সেজন্যই তো আমদানী। আমদানীর কথা আগে বলেছি কি-না ? জানেন না পশ্চিমের দেশগুলি কিভাবে একে অন্যের বিদ্যুত ব্যবহার করে ?

পশ্চিমের দেশগুলি যেভাবে বিদ্যুত ব্যবহার করে তারচেয়ে দক্ষিন এশিয়ার দেশগুলির বিদ্যুত বিতরন ব্যবস্থা উন্নত করা বেশি জরুরী। এখানে মানুষের প্রয়োজন অনেক বেশি। কিন্তু তিন দশকের সার্ক কি ফল এনেছে ? লোকে বলে দাদাগীরি সার্কের কোন সিদ্ধান্ত কাজে আসতে দেয়নি। আপনি ভারত থেকে আমদানী করবেন, উদারভাবে করুন। ভারতে রপ্তানী করবেন ? বর্ডারে নমুনা পরীক্ষার সার্টিফিকেট দেখিয়ে আনুন। নমুনা পরীক্ষা করবেন কোথায় ? সেটা ১০০ মাইল ভেতরে। সেখানে কিভাবে পৌছাবেন সে দায়িত্ব আপনার। আমরা মাশুল ধরছি না। তবে অন্যভাবে সেটা উসুল করব না সেটা ধরে নিচ্ছেন কেন ?

পশ্চিমের দেশের মত এই অঞ্চলে সমঝোতার ভিত্তিতে বিদ্যুত-পানি-বানিজ্য-শ্রমের আদানপ্রদান হওয়ার কোন বাধা ছিল না। আর ভারতের মত দেশ যে সরাসরি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছে, প্রায় ১ কোটি মানুষকে বিপদের সময় আশ্রয় দিয়েছে, অন্যদেশের মাটিতে এসে যে দেশের সেনারা জীবন দিয়েছে তারসাথে বন্ধুত্বের বিষয়টি প্রশ্নাতিত হওয়ার কথা ছিল। অথচ-

বাস্তবতা জানার জন্য ভারতীয় পত্র-পত্রিকা একনজর দেখাই যথেষ্ট। বাংলাদেশ মৌলবাদী রাষ্ট্র। এখানে সরকারীভাবে পাকিস্তানী এবং ভারতীয় সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয়া হয়, এদেশে হিন্দু ধর্মের মানুষ টিকতে পারে না। মুখ্যমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারেন এই অবস্থার পবির্তন করতে।

আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গার খবর কখনই শোনা যায়নি। দুর অতীতে না, বর্তমানেও না। আর ভুলে যাওয়া হয়ত ঠিক হবে না আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের বিশ্লেষন। বিশেষ করে বিবিসি যখন যথেষ্ট জনপ্রিয় দুপারেই। ইসরাইল-প্যালেষ্টাইন যুদ্ধে যতজন মারা গেছে তারচেয়ে কয়েকগুন বেশি মারা গেছে ভারতে দাঙ্গায়। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি অনাহারী মানুষ বাস করে ভারতে।

সে যাকগে। ভারত বিশ্ব নেতৃত্বে যাচ্ছে। বেঙ্গালুরু-চেন্নাই-মুম্বাই আন্তর্জাতিক শহর। সেখানে সব মানুষের জন্য বিমানে চলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আসাম-ত্রিপুরার মত যায়গা নিয়ে ভাবার কিছু নেই, বেঙ্গালুরু-চেন্নাই থাকলেই চলবে। কদিন পরই তারা আমেরিকাকে পেছনে ফেলবে। তাদের ছাড়া কি চলবে ?

রাম। রক্ষা করো।

0 comments:

 

Browse