যুক্তি-তক্কো-গপ্পো free the speech

Sep 9, 2009

সমরেশ মজুমদার তার গল্পে বাংলাদেশে ভারতীয় সন্ত্রাসীদের ঘাটির কথা উল্লেখ করেছেন সেই কারনে তাকে বাংলাদেশে ভিসা দেয়া হয়নি বলে দুঃখ করেছেন। দুঃখ পাবারই কথা। তিনি লিখলেন গল্প আর সরকার ধরে নিল তিনি সরকারের ভাবমুর্তি নষ্ট করছেন। সরকার এদেরকে প্রশ্রয় দিচ্ছে একথা প্রচার করছেন।

বিষয়টি কতটুকু অস্বাভাবিক এদেশে ? বিজেপি নেতা জিন্নাহর কথা লিখে দলের শত্রুতে পরিনত হলেন। এটেনবরো যখন গান্ধী ছবির জন্য পুরস্কার পেলেন তখন কথা উঠেছিল পাকিস্তানে। তিনি জিন্নাহকে ছোট করে দেখিয়েছেন। আবারো প্রশ্নটা করতে হচ্ছে। বিষয়টা কতটুকু অস্বাভাবিক এই উপমহাদেশে ?

এদেশ আমেরিকা না। এখানে কেউ এ্যাবসলিউট পাওয়ারের মত উপন্যাস লিখতে যাচ্ছে না। ক্লিন্ট ইষ্টউডের মত কেউ সেটা নিয়ে ছবি বানাতে যাচ্ছে না। জানে এইডসে নিশ্চিত মৃত্যু নাও হতে পারে, এর পরিনাম নিশ্চিত মৃত্যু। আমেরিকার সমালোচনায় সারা বিশ্ব (এই উপমহাদেশসহ) যত সোচ্চারই হোক, তাদের পক্ষে সম্ভব ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনা বুশ সরকার এবং সিআইএর সাজানো একথা টিভিতে প্রচার করা। যুক্তি-প্রমান দিয়ে দেখানো সেখানে আদৌ বিমান হামলা হয়নি, যা হামলা করেছে তা হচ্ছে মিসাইল। রাসায়নিক কারন দেখিয়ে বলা হচ্ছে, যে কারনে টুইন টাওয়ার ওভাবে ধ্বসে পরেছে তা সম্ভব কন্ট্রোলড এক্সপ্লোশনের ফলে। এমনকি এত হৈচৈ করে যে চন্দ্র অভিযানের কথা নতুনভাবে প্রচার করা হল তার বিপক্ষে যুক্তি দেখানো এখনও শেষ হয়নি। এর শ্যুটিং হয়েছে এরিয়া ফিফটি ওয়ানে, তথ্য গোপন করার জন্য কয়েকজন নভোচারীকে মেরে ফেলা হয়েছে, তাকে দুর্ঘটনা হিসেবে প্রচার করা হয়েছে এসব কথা তারা দর্শকদের দেখিয়েই চলেছে।

এর পরও তাদের বিরুদ্ধে দেশের, সরকারের, গোয়েন্দা বিভাগের কিংবা অন্য কারো মর্য্যাদাহানির অভিযোগ আনা হয়নি। তারা তাদের মত প্রকাশ করবেন, প্রয়োজনে সরকার তার যুক্তি দেখাবে, বিষয়টি সীমাবদ্ধ এর মধ্যেই। সাধারন মানুষ কোন যুক্তি গ্রহন করবে সেটা তাদের বিষয়। সাংবাদিকের কাজ সংবাদ পরিবেশন করা। বিশ্লেষকের কাজ বিশ্লেষন করা। সমালোচকের কাজ সমালোচনা করা।

এই উপমহাদেশে মানুষ এত বোকা না। তারা জানে কোন গাছে কোন ফল ধরে। যে দেবতা যে ফুলে তুষ্ট তারজন্য তো সেটাই। আগেই যখন উদাহরন দেখানো হয়েছে তখন নতুনভাবে সেকাজ না করেও বলা যায়, ফল কি ফলবে সেটা জেনেই ঠিক করা হয় কি লেখা হবে, কি লেখা হবে না। কি বলা যাবে, কি বলা যাবে না। বললে কি হবে, না বললে কি হবে।

একজন সাংবাদিক সেজন্যই তক্কে তক্কে থাকেন, অমুক কথা বললে সরকার ব্যাজার হবে, পিছনে পুলিশ লাগবে। তমুক কথা লিখলে নেতার মান যাবে, তার সাঙ্গপাঙ্গ ঠ্যাং ভেংঙে দেবে। সমুক কথা লিখলে কোম্পানীর বদনাম হবে, তারা বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেবে।

কি প্রয়োজন এত ঝামেলায়। তারচেয়ে যদি বলা যায়, স্যার অমুক খবরটা আমরা প্রচার করছি না। আপনার দিক আমরা দেখছি, আমার দিকটা দেখবেন।

কিংবা যদি বলা যায়, অমুক খবরটা রেডি। তাড়াতাড়ি কন্ট্যাক্ট করেন, নইলে দিমু ছাপায়া।

লাভ দুদিকেই।

ভুয়া পুলিশ, ভুয়া মিলিটারী হয়ত অনেক দেশে পাওয়া যাবে। ইউনিফর্ম থাকলে সুবিধে পাওয়া যায় কাজেই ভুয়া হতে ক্ষতি কি ?

ভুয়া সাংবাদিকের দেখা অন্য সমাজে পাওয়া সত্যিই কঠিন।

1 comments:

Aero River said...

হা! হা!
এরা যে কিভাবে চিন্তা করে?? আর তা না হলে কি রাজনীতি হয়? তাই না?

aR
Bangla Hacks

 

Browse