করতে হবে – গড়তে হবে Question never asked

Sep 5, 2009

একথা শুনে আমরা সবাই অভ্যস্থ। যার বয়স যত বেশি তার অভিজ্ঞতাও তত বেশি। করতে হবে গড়তে হবে। সোনার বাংলা গড়তে হবে। সুখি সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে হবে। মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে হবে। দারিদ্র বিমোচন করতে হবে। উন্নয়ন করতে হবে। মৌলিক চাহিদা মেটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে।

নেতা বলেন আমরা শুনি। কখনো কখনো প্রতিধ্বনি করি, করতে হবে গড়তে হবে।

এই প্রতিধ্বনি করা লাভজনক। নেতার কাছাকাছি যাওয়া যায়। নেতাকে আস্বস্ত করা যায়। ফলস্বরুপ দক্ষিনা পাওয়া যায়। সেটাই পাওয়া। এজগতে পাওয়ার চেয়ে বড় কি আছে।

একসময় বামপন্থীরা বলতেন, এ সমাজ জীর্ন সমাজ, এ সমাজ ভাঙতে হবে। যারা সমবেত হতেন তারাও প্রতিধ্বনি করতেন, ভাঙতে হবে। হাত তুলে শুণ্যে ঘুসি মারতেন। নিশ্চয়ই সেই ঘুসি খেয়ে শুন্য থেকে কেউ নেমে এসে ভাঙার কাজ করে দেবে। তারা নিজেরা যখন ভাঙার জন্য হাত লাগাতেন না তখন সেটাই একমাত্র ভরসা।

তারপর ঘুসাঘুসি শেষ করে একসময় যারযার ঘরে ফিরতেন।

তাদের সেই ভরসায় চিড় ধরেছে। দেখা গেছে ওসব শুন্যে ঘুসাঘুসিতে কাজ হয়নি। এক নেতার বক্তৃতা নিজ কাণে শোনা, 'শিক্ষা বাচাও - জাতি বাচাও' একথা বলিলেই কি শিক্ষা বাচিবে ? একথা বলিলেই কি জাতি বাচিবে ?

তিনি নিশ্চয়ই এখন আর ওকথা বলেন না। বুঝেছেন তাতে লাভ নেই। বরং যারা অন্যপথে চলেছে, অন্যকথা বলেছে তারাই ভাল আছে। কাজেই তাদের পথ অনুসরন করাই ভাল। অমুকের গদিতে আগুন জ্বালো একসাথে একথা বলে যদি রাজপথে গাড়িতে আগুন দেয়া যায় তাতে ফল ফলে। একসময় সে বিদায় হয়। তখন সুযোগ বুঝে একটা অবস্থান বেছে নেয়া যায়।

কাজেই, জীর্ন সমাজ, ঘুনে ধরা সমাজ এসব কথায় কিছু নেই। যা আছে তা আছে। বরং কি করতে হবে, কি গড়তে হবে সেকথায় যাই।

ছোটবেলায় দেখা এক ব্যক্তি কথা মনে পড়ছে। তাকে দেখলেই ছোটরা দৌড়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করত, কোথায় যান ?

তার উত্তর, দেশ গড়তে।

কি দিয়ে ?

কাদা দিয়ে।

তখন সেই বয়সে তার বক্তব্য নিতান্ত রসিকতা বলেই মনে হত। কিংবা হয়ত আসলেই তাই। এর পেছনে তার কোন বিশেষ চিন্তা কাজ করেনি। তবে একটা কথা তা থেকে স্পষ্ট, কিছু গড়তে হলে উপকরন প্রয়োজন। কাদা হোক আর যাই হোক। কাজ করার আগেই কি কাজ সেটা নির্দিষ্ট করা প্রয়োজন। কিভাবে কতদিনে করা হবে সেটা জানা প্রয়োজন। তারপর কাজে হাত লাগানো প্রয়োজন।

যারা দেশ গড়ার মহান দায়িত্ব কাধে নিয়েছেন, তাদের কাছে আমার বক্তব্য তেমনই সরল। কর্ম ছাড়া কর্মফল পাওয়া যায় না। আপনার বলছেন করতে হবে, গড়তে হবে। সেকাজে আপনার ভুমিকা কি সেটা জানান। আমার ভুমিকা কি সেটা বলে দিন। কাদার মুর্তি গড়ার সময় যেমন উপকরন থেকে শুরু করে নকসা দিয়ে বলে দিতে হয় কোন সময়ে কোন কাজ কতটুকু করতে হবে, সেভাবেই নকসা করে দিন।

সেই নকসা অনুযায়ী আপনি আপনার দায়িত্ব পালন করে দেখান। আমার দায়িত্ব আমি অবশ্যই পালন করব।

0 comments:

 

Browse