মাথার ওপর জ্বলিছেন রবি

Sep 13, 2009

ম্যয় আজাদ হুঁ অমিতাভ বচ্চনের অত্যন্ত জনপ্রিয় রাজনৈতিক বক্তব্যের বলিউডি ছবি বক্তব্য, এক সাংবাদিক কলাম লিখে আজাদ নামে এক প্রতিবাদী নেতা সৃষ্টি করলেন তার জনপ্রিয়তা এতটাই প্রবল হয়ে উঠল, পাঠকেরা তাকে এমনভাবেই মেনে নিল যে তাকে সশরীরে উপস্থিত করার দাবী তুলল। সেই দাবী উপেক্ষা করা সম্ভব হল না জনগনের মধ্যে যে আশা তৈরী করা হয়েছে তা যেন ভেঙে না যায়, এই যুক্তিতে একজনকে আজাদের ট্রেণিং দেয়া হল তারপর একসময় উপস্থিত করা হল জনগনের সামনে

ছবিটি প্রতীকি এই উপমহাদেশের রাজতৈক পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে এতে ক্ষমতার লোভ এবং প্রতিবাদী নেতার কথা বলছি না বলছি জনগনের আশা আকাঙ্খার কথা তারা আশা করে একজন নেতা তাদের পথ দেখাবেন তিনি স্বর্গ থেকে নেমে আসবেন নাকি সমাজ থেকে বেড়ে উঠবেন তাতে কিছু যায় আসে না তার নিজেকেই তৈরী হয়ে আসতে হবে তারপর যদি জনগনের আস্থা অর্জন করতে পারেন তাহলে জনগন তার পেছনে দাড়াবে তার বেড়ে ওঠার কাজে সাহায্য করবে না পাশে দাড়াবে না যখন মনে হবে নেতা অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী তখন তার পেছনে দাড়াবে জনগন নেতার হুকুম শুনতেই আগ্রহি চোখ বন্ধ করে সিদ্ধান্ত মানতেই আগ্রহি নেতার ভুল হতে পারে না সে নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না নেতা এবং দেবতা একই বস্তু তাদের পুজা করতে হয় ভক্তি করতে হয়

তারা সামনে আসবেন। স্বপ্নের কথা শোনাবেন। স্বপ্নপুরনের কথা বলবেন। কোন কোন অর্বাচিন প্রশ্নও করে বসে, অতীত নেতারা যদি এতকিছু ম্বপ্ন দেখেই থাকেন তাহলে সেই স্বপ্ন দেখার জন্য ঘুমিয়েছেন কত সময়! ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখাই কি তাদের একমাত্র কাজ ছিল ? যেন পরবর্তিকালে যুগ যুগ ধরে তাদের উত্তরসুরীরা সেই স্বপ্নের গুনগান করে চলতে পারেন!

সে প্রশ্ন করা যাবে না কারন এটাই প্রচলিত রীতি। এটাই যোগ্য নেতৃত্ব। এটাই পদ্ধতি।

আর কেউ যদি দৈনন্দিন বিষয় নিয়ে কথা বলেন।

তিনি আবার নেতা কিসের ?

দেশের গ্যাস বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে এই নিয়ে হরতাল। কেন ? হরতালে দেশের কত ক্ষতি হয় তা-কি তারা জানেন ? সামনে ঈদ-পুজা। ব্যবসার এটাই তো সময়। এক সপ্তাহে এক কেজি চিনির দাম বেড়েছে ৩০ টাকা। এখন না বেচলে বেচব কখন ? এর মধ্যে এইসব ঝামেলা। আবার কয় রাস্তায় গাড়ি ভাংচুর করব না। হেঃ হেঃ হেঃ। হরতাল এতই সহজ!

হরতাল ডাকার আগে হিসেব শিখেন। জীবনটাই লাভ ক্ষতির। নিজের দুটাকা লাভ যদি না হয় তাহলে ওই হরতালে যায় কে ? তার ওপর বলছেন নিজের ক্ষতি করে হরতাল করতে। দুরো-

গ্যাস বিক্রি হলে আমার কি ? দেশের ক্ষতির কথা কন ? ক্ষতির হিসাব বোঝেন ? লাভের হিসাব বোঝেন ?

একটু শেখার চেষ্টা করেন, ভবিষ্যতে কামে লাগব। সমস্যা যত বাড়ব জিনিষের দাম তত বাড়ব। দাম যত বাড়ব লাভ তত বাড়ব। এই সহজ হিসাব বোঝেন না। আরো ভাইঙ্গা কই। ত্যালের দাম বাড়লে কি হয় জানেন ? উৎপাদন খরচ বাড়ে, পরিবহন খরচ বাড়ে, জিনিষের দাম বাড়ে, গাড়িভাড়া বাড়ে। কইতে পারেন রিক্সা ত্যালে চলে না, তারও ভাড়া বাড়ে। সকলেরই ইনকাম বাড়ে। সকলেরই লাভ। আর এমন সুযোগ যেখানে সেইখানে সবাইরে কন লাভ ছাইড়া লসের দিকে যাইতে।

আগে নেতা হন। কতটা জনদরদী সেইডা কামে দেহান। সামনে খাড়াইয়া কন কতজনরে চাকরী দিছেন, কতজনরে টেন্ডার পাইতে সাহায্য করছেন, কতজনরে জেল-ফাসি থিক্যা বাচাইছেন, কতজনের চাকরীর সুপারিশ করছেন, কতজনরে বড়লোক বানাইছেন, কতজনরে নিজের পায়ে দাড় করাইছেন, কতজনরে . . .

আমাগো মাথার ওপর নেতা আছে জানেন না!

0 comments:

 

Browse