সীমা – Where is the limit

Sep 16, 2009

হ্যারি কালাহান ওরফে ডার্টি হ্যারির বক্তব্য, মানুষকে তার সীমাবদ্ধতা জানতে হয়। একেবারে সত্য কথা। একজন শিশু যদি মনে করে ছাদ থেকে লাফ দিলেই সে সুপারম্যানের মত উড়ে যাবে তাহলে তার পা ভাঙে। শোনা যায় মাইকেল জ্যাকসনের থ্রিলার নাচতে গিয়ে বহুজনের পা ভেঙেছে। পা ভাঙার পর বুঝেছে তারা মাইকেল না। তাদের সাধ্যের সীমাবদ্ধতা আছে যা মাইকেলের নেই (ছিল না)।

সীমাবদ্ধতা বুঝতে সময় লাগে। পা ভাঙার পর তারা বুঝেছে। একজন শিশুও বোঝে একসময়। তারপর আর সেপথে পা বাড়ায় না। তবে যদি পা ভাঙার মত বিষয় না থাকে তাহলে সময় প্রয়োজন হয় আরো বেশি। কখনো কখনো কোন কোন বিষয়ে কারো কারো আদৌ বোধোদয় হয় না।

চেনস আমারে। কল্লা কাইট্টা দিমু একেবারে কমন ডায়ালগ। যদিও তার জানার কথা কারো কল্লা কাটলে তার কল্লা দড়িতে ঝুলবে। সেখানেই একটা কিন্তু-

সব যায়গা হলিউড না। সব দেশ আমেরিকা না। অনেক যায়গায় অন্যের কল্লা যে কাটতে পারে তার কল্লা ধরা যায় না। কল্লার জোর থাকলে তবেই অন্যের কল্লায় হাত দেয়া যায়। যেমন ট্রাফিক পুলিশকে পকেটে রাখার ক্ষমতা থাকলে তবেই রাস্তায় গাড়ি রাখা যায়। প্রয়োজনে তাকে দিয়ে গাড়ি পাহারা দেয়ার কাজও করানো যায়। পুলিশ জানে প্রয়োজনে রিক্সাঅলাকে পেটাতে হবে, পথচারীকে এক্রোব্যাটিক পদ্ধতিতে চলতে হবে কিন্তু কোনভাবেই গাড়ির মালিককে চটানো যাবে না। তার বাপের দেয়া চাকরি। সরকারের দেয়া সবুজ রঙের গাড়ি হলে সুবিধে আরো বেশি। কোন কথাই বলতে হয় না। যদি গাড়ি না পাওয়া যায় তাহলে সাদা কাগজে লিখে সামনের কাচে লাগিয়ে রাখলেও একই কাজ দেয়।

কখনো কখনো সীমা একেও ছাড়িয়ে যায়। যেমন বিডিআর ডিজি সরকারী খরচে ঈদকার্ড ছাপিয়ে তাতে নিজের পরিচিতি লিখলেন, ডিজি - বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ। অর্থাৎ তিনি বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ নামক কোনকিছুর ডিজি। এর অস্তিত্ব কোথায় সেটা তিনি নিশ্চয়ই জানেন। আজ না হলেও আগামীকাল অন্যরাও জানবে। তিনি অগ্রিম কিভাবে জানলেন সেপ্রশ্ন করবেন না। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর কোন বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হারাম, জরুরী আইন সরকারের একজন উজির মনে করিয়ে দিয়ে গেছেন। কোন প্রশ্নই করবেন না। বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা যখন চলমান তখন বিবিসিতে একজন জানাল বিদ্রোহের কারন। যেপথে বিদ্রোহীরা পালাল সেই পথে পাওয়া গেল পড়ে থাকা টাকার বান্ডিল। তার পরিমান এতটাই যে তারা সাথে করে নিতে পারেনি। পথে ফেলতে ফেলতে গেছে। সেই টাকার উৎস কি সেপ্রশ্ন করা কেউ প্রয়োজন মনে করেনি। সেটা সীমা লঙ্ঘন। প্রশ্ন করার সময় জওয়ানরা আত্মহত্যা করতে শুরু করল, স্বাভাবিক কারনে মরতে শুরু করল, সেটা নিয়ে প্রশ্ন করাও সীমা লঙ্ঘন।

কাজেই,

সীমা বিষয়টি নির্ধারন করা অত্যন্ত জটিল কাজ। সীমা লঙ্ঘন শব্দটি ব্যবহারের আগে জানা প্রয়োজন এরসাথে জড়িত ব্যক্তি কে, বিষয়টি কি, কোন সময়, কি কারনে, কোন মনোভাব নিয়ে, কি উদ্দেশ্যে, কার কারনে, কোন যায়গায়, কার খরচে, কোন যোগ্যতায়, কার সমর্থনে, কার গোচরে, কার অগোচরে . . .

তবেই তা বলা সম্ভব সীমা লঙ্ঘন হল কি-না।

0 comments:

 

Browse