রাসেল রীতিমত একটা বই লিখে গেছেন, কিভাবে সুখ জয় করা যায়। যদিও তিনি নিজে সুখী ছিলেন কিংবা সেই নীতি মেনে সুখি হয়েছিলেন একথা ভুলেও কেউ বলে না। বরং বাস্তবতা বিপরীত কথাই বলে। তারপরও তিনি লিখেছেন। তার নীতি মেনে আপনি সুখি হতে পারেন। বুদ্ধিমানেরা একাজটিই করেন। সবসময় পরের উপকার করেন। নিজে রৌদ্রে দাড়িয়ে অন্যকে ছায়ার সন্ধান দেখান। নিজের পাতে খাবার না দিয়ে পাশের জনকে দিতে বলেন। এমনকি নিজে নির্বাচিত হলে ভোটারের কি উপকার হবে সেকথাও বলেন। তার নিজের কোন উপকার নেই তাতে। নিজের সর্বস্ব ত্যাগ করে তিনি আপনার জন্য করে যাবেন একথাই বলেন। এবং সেটাই করেন। আপনার উপকারের জন্যই একজন ব্যবসায়ী কেনা দামের চেয়ে কম দামে জিনিষ বিক্রি করেন। দুইশ টাকায় কেনা, আপনাকে দেড়শ টাকায় দিলাম, একথা শুনে আপনি খুশীমনে বাড়ি ফেরেন। যদিও আপনি জানেন তা কখনো হয় না তবুও এটা এক ধরনের সুখ বৈকি। আমার পঞ্চাশ টাকা লাভ মানে তার পঞ্চাশ টাকার ক্ষতি। সুখ না হয়ে যায় না। সুখ যখন চোখে দেখা যায় যায়না, রঙ আকার ওজন জানা যায়না তখন যাকে খুশি তাকেই সুখ মনে করতে পারেন। রাধার কাছে কালো রঙের গাছই কৃষ্ণ।
একাএকা সুখি হওয়া নাকি খুব সহজ। সুখি মনে করলেই সুখি। বাধা দেয়ার কেউ নেই। সমস্যা হয় যখন অন্যদের নিয়ে সুখি হতে চেষ্টা করেন। আপনি ভাবছেন এই সরু পথে যখন এতজন যাচ্ছে তখন একই গতিতে একই ছন্দে চললে সুখে হাটা যায়। এরই মধ্যে একজন মনে করল অন্যদের চেয়ে দ্রুত গেলে তার সুখ। তার সুখ অন্যদের ধাক্কা দিয়ে পথ বের করায়। কারো বা মনে হল ধীরেসুস্থে সুখে হাটি। না পারবেন তার পেছনে হাটতে না পারবেন পাশ কাটিয়ে যেতে। তার সুখ অন্যের গতি কমানোয়। নিজে সুখি হবেন না তাকে সুখি রাখবেন সেটা আপনার ব্যাপার। তবে কথা হচ্ছে মাইনাসে মাইনাসে প্লাশ হয় সবারই জানা। সুখ ব্যতিক্রম। অন্তত সুখের ক্ষেত্রে প্লাশে প্লাশে মাইনাস হয়।
অন্য অনেককিছুর সাধে সুখি করার দায়িত্বও পালন করেন সরকার এবং নেতারা। সমাজের যারা বড় তারাও পিছিয়ে থাকেন না। সুখের পথ প্রদর্শন করেন। যার পক্ষে যতটুকু সম্ভব সামর্থ্য অনুযায়ী অন্যকে সুখ দিতে চেষ্টা করেন। অন্তত পরামর্শ দেন। আপনারা দেশপ্রেমিক হন, দেশকে ভালবাসুন। বুকে-পিঠে দেশের চিহ্ন নিয়ে বেড়ান। অবাক বাংলাদেশ, বলেছিলেন সুকান্ত। আপনারা সবাইকে অবাক করে দিন। জামাকাপড়ে, কথায়, গানে, গল্পে, নাটকে, সিনেমায়, বক্তৃতায় দেশের কথা বলুন। বাঙালীকে দুটো শব্দ লিখতে বললে নাকি নিজের নাম এবং দেশের নাম লেখে। দেশপ্রেমেই সুখ।
সুখ আবার বহুমুখি। এর পাশাপাশি অন্য সুখের দিকেও লক্ষ্য রাখতে হয়। পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দিতে হয়। সবচেয়ে ভাল হয় যদি দেশের সম্পত্তি দিয়ে সেটা করা যায়। এটা কোন ব্যক্তির সম্পদ না কাজেই কোন ব্যক্তির আপত্তি থাকা উচিত না। থাকেও না। যদি কেউ মুখ খোলেই তাহলে মুখে কিছু গুজে দিন। ব্যস, মুখবন্ধ।
পুর্বাচলের যায়গা বরাদ্দে লটারী হবে জেনেই আপনি টাকা জমা দিয়েছিলেন। আপনার জন্য সুখের খবর, লটারী হবে না। দেরী না করে এখনই টাকা উঠানোর চেষ্টা করতে পারেন। এই টাকা অন্য যায়গায় খাটালে লাভ পেতেও পারেন। আর পরের উপকারে যদি সুখি হওয়ার অভ্যেস না থাকে তাহলে সেটা শুরু করুন। এই যায়গা পরের কাছে যাবে শুনে সুখি হোন।
0 comments:
Post a Comment