বণ্যপ্রাণী এবং

Sep 26, 2009

ঈশপের যুগে বণ্য প্রানী কথা বলতে পারত শেয়াল, সিংহ, কাক, কুমির সবাই নিজেদের মধ্যে যেমন কথা বলত তেমনি মানুষের সাথেও কথা বলত তারপর কোন এক সময় তারা কথা বলতে ভুলে গেল এখন কাক কা-কা ছাড়া কিছু বলে না, শেয়াল হুক্কা-হুয়া ছাড়া কিছু চেনে না ডারউইন এই বিবর্তনের ব্যাখ্যা করে যাননি তাদের ভাষা হারানো বাদ দিয়ে বানর কিভাবে লেজ হারিয়ে মানুষ হল সেটা বলেই দায়িত্ব শেষ করেছেন আর বর্তমানের মানুষ গবেষনার জন্য এত ফান্ড পেলেও এই বিষয়ে গবেষনা করতে আগ্রহ দেখায়নি ফল যা হবার তাই ভাষা কিভাবে একমাত্র মানুষের মধ্যে টিকে থাকল সেটা আর জানা হল না

গবেষনার ক্ষেত্র আরো বাড়ানো প্রয়োজন। যেমন মানুষ এবং অন্যান্য প্রানীর মধ্যে সত্যিকারের পার্থক্য কি ? কাকের কাকা আর শেয়ালের ক্যা-হুয়া মানুষের বোধগম্য না হলেও তারা নিজেরা বোঝে। কাজেই তাকে ভাষা বলে গন্য করা উচিত। এমনকি মাতৃভাষা বলেও স্বিকৃতি থাকা উচিত। সত্যিকারের পার্থক্য খোজ করতে হলে ভাষা বিনে অন্যদিকেই সন্ধান পাওয়া যাবে বলে আমার বিশ্বাস।

যেমন মানুষ ছাড়া অন্য কোন প্রানী চাকরী করে না, বেতন নেয় না, ঘুস দেয়া-নেয়া করে না। এগুলি মৌলিক পার্থক্য হিসেবে গন্য হতে পারে। এছাড়া মানুষ অন্য যে কাজগুলি করে সেগুলি অন্যেরাও করে। অনেক প্রানীর মধ্যে রাজা-রানী, সেনা-কর্মীর প্রচলন চালু রয়েছে। যাকে মানবীয় বলে প্রচার করা হয় তাকে একমাত্র মানুষের বলে দাবী করা অন্যায়। ডলফিনেরা নাকি সাঁতার শেখার স্কুলে ছোটদের সাঁতার শেখায়। কেউ আহত হলে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করে। কাক যন্ত্রপাতি তৈরী করে এটা শুধু ঈশপের গল্পেই নেই বর্তমানকালে বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে বের করেছেন। তার পাকিয়ে বড়সি বানিয়ে খাবার নাগালে আনতে পারে। কাজেই বুদ্ধি মানুষের একার এই দাবী করাও অন্যায়।

তবে একটা দাবী মানুষ করতেই পারে। মানুষ পোষাক পড়ে যা অন্যরা পড়ে না। হয়ত কোনকালে ঠান্ডা কিংবা গরম থেকে বাঁচার জন্য শুরু হয়েছিল। অন্য প্রানীদের লোম-পালক জাতিয় কিছু থাকলেও মানুষের ছিল না। এখন আর পোষাক এই প্রাকৃতিক বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। নির্দিষ্ট রঙের, নির্দিষ্ট ডিজাইনের, নির্দিষ্ট কাপড়ের, নির্দিষ্ট মাপের পোষাক পড়াটাই বিধি। যারা এসবের ধার ধারেন না তারাও পোষাক পড়েন। এখানেই রয়েছে মানুষের সত্যিকারের পরিচয়। লজ্জাবোধ। এই বোধের কারনে কেউ পোষাক ছাড়া ঘুরে বেড়ায় না, খারাপ কাজ করে না। পাছে লোকে কিছু বলে। আড়ালে আবডালে করলে ক্ষতি নেই, ধরা পড়লেই সমস্যা। চুরিবিদ্যা বড় বিদ্যা যদি না পড়ে ধরা। ছোটখাট চুরি, ফাকিবাজি, ঠকানোর কাজ সবাই কমবেশি করে। সত্যবাদী যুধিষ্ঠিরও মিথ্যে বলেছিল সামান্য লজ্জার আবরন রেখে। একটুখানি ঘুরিয়ে।

তবে কোন কারনে যদি লজ্জার আবরন সরে যায় তখন আর আড়াল প্রয়োজন হয় না। সবাই যখন জেনেই গেছে তখন আর লুকোনোর কি আছে। ঘুস-দুর্নীতি এগুলো নিয়ে আর মাথা ঘামানোর কি আছে। সবাই তো জানে। পারলে ঠেকাক।

লজ্জাবোধ! সেটা আবার কি ? কিসে লাভ কিসে ক্ষতি এটুকু বোধ থাকাই তখন যথেষ্ট।

বাকি থাকে ফ্যাসান। ক্রমশ যেভাবে ছোট হয়ে আসছে তাতে একসময় হয়ত সেকারনেও পোষকের প্রয়োজনীয়তা থাকবে না।

0 comments:

 

Browse