বাঘ বনাম বেড়াল

Jun 21, 2011
অনেকে বলেন বাংলার বাঘ সুন্দরবনেই ভাল মানায় এমনকি চিড়িয়াখানায়ও মানায় না কিন্তু তার সমস্যা কি সেটা কি ভেবে দেখেছেন অনেকেই বলছেন সুন্দরবন গাছশুন্য হচ্ছে ফলে একসময় বাঘশুন্য হবে এটাই তো স্বাভাবিক আর চিড়িয়াখানায যে দুচারখানা আছে তাদের খাবার যায় যারা চিড়িয়াখানা দেখাশোনা করেন তাদের পেটে ফলে তারাও কতদিন টিকবে বলা কঠিন এইবেলা বিকল্প ব্যবস্থা করে রাখাই ভাল
বিজ্ঞান এখনও এতটা অগ্রগতি লাভ করেনি যে ল্যাবরেটরীতে বাঘ তৈরী করবে আর করলেও সেটা থাকবে কোথায় সেটাও বড় প্রশ্ন সহজ সমাধান হতে পারে সমাজ
আবার তাতেও সমস্যা অনেক সত্যিকারের চারপাঅলা বাঘ যদি ফুটপাতে ঠেলাঠেলি করে চলতে শুরু করে তাহলে অবস্থাটা কি হবে ভেবে দেখেছেন কি?
কথা না বাড়িয়ে বাস্তমুখি সমাধানের কথাই ভাবুন আচরনে বাঘ, দর্শনে মানুষ বাংলার বাঘ তো এটাই আর সত্যিকারের বাঘ হিসেবে মর্যাদাও তো আছে কোটি টাকা জীপে চলাফেরা করবেন যানজটে কিছুটা সমস্যা হতে পারে, ফুটপাতে সমস্যা হবে না চেহারায় বাঘ হওয়া প্রয়োজন নেই, সত্যিকারের পরিচয়টা বাঘের আচরনে হুংকারে
সত্যি বলতে কি, এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে অনেক আগে একসময় নাকি হাতেগোনা কয়েকটা বাঘ ছিল অর্থমন্ত্রী বলেছেন বর্তমানে কোটিপতির সংখ্যা অনেক হাজার হাজার, হয়ত লাখ লাখ এত উন্নতি আগে কখনো হয়নি এরসাথে কি শায়েস্তা খার আমলের তুলনা চলে তখন মানুষ চলত পায়ে হেটে বড়জোর অন্যের কাধে চেপে এখন চলছে কোটি টাকার গাড়িতে শায়েস্তা খা নিজে বাস করত ওই লালবাগে একতলা ঘুমটো ঘরে এখন সাধারন মানুষও বাস করে আলিসান বাড়িতে, এসির নিচে ঘুমায় লোড সেডিংএ জেনারেটর চলে
বাঘের সবচেয়ে বড় পরিচয় তার কর্তৃত্ব তারদিকে কেউ চোখ তুলে তাকায় না তাকানো যায় না সেটাই তো করা হচ্ছে ওই যে শেয়ার বাজারে যে বাংলার বাঘ লক্ষকোটি টাকার মালিক হয়েছেন তাদের দিকে একবার তাকিয়ে দেখুন কারো সাধ্য আছে তাদের দিকে আঙুল তোলে এক ব্যাটাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল তদন্তের, সে আঙুল তুলেছিল ফলটা কি দেখেছেন সেই ব্যাটা এখন আসামী কোর্টে হাজিরা দিতে হয় বাঘ তার বাঘত্ব নিয়ে নিজের যায়গাতেই থেকে গেছে এমনকি ওই শেয়ারবাজারেই বাজার স্থিতিশীল করার দায়িত্ব নিয়েছেন
একজন বাঘ সংসদে হংকার দিয়ে বললেন, ওইসব আনু মুহম্মদ-কানু মুহম্মদ কে? তাকে তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটি করার অধিকার দিয়েছে কে? পারমিশন আছে ? দেশ চালাবে জনগনের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি।
আপনি নিতান্ত বাচাল হলে বলতে পারেন বাংলাদেশের আইনে একজন অশিক্ষিত ব্যক্তি অনায়াসে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হতে পারেন যদি গায়ে নৌকা, লাঙল বা ধানের শীষ মার্কা (বাঘের ছাল) থাকে। আর কেবলমাত্র আনু মুহাম্মদই নিজ যোগ্যতায় আনু মুহাম্মদ হতে পারেন। ওসব ফালতু কথা না বলাই ভাল।
একদল বাঘ হলে আরেকদলও বাঘ হতে চেষ্টা করবে এটাই স্বাভাবিক সরকারদলীয় বাঘ একা রাজত্ব করবে, সংবিধান পাল্টে ক্ষমতায় থাকার চীরস্থায়ী বন্দোবস্ত করবে সেটা তো হয় না তারাও নানাভাবে চেষ্টা করছেন বাঘত্ব পাবার শেয়ার বাজারে ৩৫ লক্ষ বিনিয়োগকারী তাদের সমর্থন দিতেই পারেন কাজেই তারাও বক্তব্য দিলেন, ক্ষমতায় গেলে ক্ষতিপুরন দেয়া হবে
কিভাবে, কার টাকায় কে জানে
কথাটা মন্দ না কিছুটা শান্তনা পাওয়া যায়। অন্তত মতিঝিলের রাজপথে লাফানো মানুষগুলো ভাল করেই জানে ওই লাফালাফিতে কারো কিছু যায় আসে না অর্থমন্ত্র বলেছেন ওসব কথা শুনে তিনি নিজের বাঘত্ব ত্যাগ করছেন না শেয়ার বাজারের বাঘ, বাংলাদেশে ব্যাংকের বাঘেদেরও একই কথা কিন্তু সমস্যা অন্যখানে
তারআগে একটা প্রশ্ন করে নেই কোনটা বেশি জরুরী অতীত, বর্তমান নাকি ভবিষ্যত
এই প্রশ্নে কোন জটিলতা নেই একেবারে সরল উত্তর। অতীতই সবকিছু জোট সরকার ক্ষমতায় থাকতে দুর্নীতি করেছে বিদ্যুতখাতে যে বাজেট ছিল তারচেয়েও বেশি। ওরা খারাপ মানুষ। খারাপ মানুষ ভাল কথা বলতেই পারে না আগে ওদের বিচার হতে হবে বর্তমান সরকার যখন অতীত হবে, ক্ষমতা যখন অন্যের হাতে যাবে তখন বর্তমানের দুর্নীতির বিচার করা যাবে এখন ফাকতালে যদি কিছু পাওয়া যায় সেটাই লাভ
আর ভবিষ্যত বলে কিছু নেই ওটা আল্লার হাতে
সমাজের বাঘ আসলে পরিবর্তনশীল যখন যারহাতে ক্ষমতা সে বাঘ এমনকি ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা থাকলেও বাঘ নইলে সেতো মেনিবিড়াল তার কথায় কান দেয় কে

0 comments:

 

Browse