পাগলে কিনা বলে

Jun 14, 2011
মনস্তত্ববিদ বলেন আসলে পাগল বলে কিছু নেই প্রত্যেক ব্যক্তির চিন্তার নির্দিষ্ট ধরন থাকে ধরন শব্দটা যদি বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে বাংলায় প্যাটার্ন বলতে পারেন সেই প্যাটার্নের সাথে মিল করে একজন অপরজনকে বিশ্লেষন করে যখনই গড়মিল দেখা যায় তখন তাকে পাগল সাব্যাস্ত করে
একজন শিশুকে সেই অর্থে অনায়াসে পাগল বলতে পারেন তাদের হিসেব বয়স্কদের হিসেবের সাথে মেলে না শিশু আর যাই ভাবুক কিভাবে অনেক টাকার মালিক হবে সেটা ভাবে না তাদের জগত আলাদা সবই পাওয়া যায়, সবই হওয়া যায় কিছু করতে হয় না একমাত্র পাগলই কিছু না করে সবকিছুর মালিক হতে আশা করে
শিশুদের সাথে কথা বলার সমস্যাও অনেক অন্তত যদি কথায় কথায় ধমক দেয়ার অভ্যেস না থাকে ধমকে তারা আর শিশু থাকে না, পাগলামি ছেড়ে বাস্তববাদি হয় একথা যদি মাথায় থাকে সেক্ষেত্রে অনেক সময়ই তাদের প্রশ্ন সামলানো কঠিন হয়ে দাড়ায় অনেকসময় রীতিমত নাজেহাল অবস্থায় ফেলে নিজের বুদ্ধি জাহির করতে চায়য়
যেমন ধরুন, মানুষ কোন শব্দ সবচেয়ে বেশি বলে ?
মানুষের কাছে নিজের নাম সবচেয়ে প্রিয় শব্দ একথা অনেকবার শুনেছি কিন্তু সেটা উত্তর হতে পারে না কেউ নিশ্চয়ই নিজের নাম উচ্চারন করে না সবসময় আমার বুদ্ধিতে বলে সম্পর্ক বিষয়ক শব্দ যা কমবেশি সকলেই কথার শুরুতে-মাঝে-শেষে ব্যবহার করে কিন্তু এর প্রশ্নের কারন নিশ্চয়ই সেটা না এখনও বুঝে ওঠেনি কাউকে ঘায়েল করার জন্য মোক্ষম শব্দ খুজতে হয়, সেগুলি অনবরত ব্যবহার করতে করতে ঠোটস্থ করতে হয় এর বক্তব্য নিশ্চয়ই আলাদা
তাকেই উল্টো প্রশ্ন করতে হয়, কোন শব্দ ?
হ্যালো
হ্যালো ?
হ্যা খবরে বলল ৮ কোটি মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে তারমানে সারাদিনে অনেকবার করে হ্যালো বলে
হ্যালোর বিকল্প শব্দ কেউ ব্যবহার করে কিনা অন্তত আমার জানা নেই জাপানীরা নাকি তাদের ভাষার অনুকরনে হ্যালো একবার না বলে দুবার হ্যালো-হ্যালো বলে বাংলায় কি এমন কিছু আছে ?
ততক্ষনে তার প্রশ্ন ঘুরে গেছে অন্যদিকে, আচ্ছা সিগারেট খাওয়া কি ভাল ?
এটা রীতিমত বিপদজনক প্রশ্ন নাজেহাল হওয়া থেকে রক্ষা পেতে তাকেই প্রশ্ন করতে হয়, জানা দরকার কেন ?
উত্তর, ভাল হলে আমিও খাব সবাই মিলে খাব
একথার উত্তর দেয়া যায় না আর দেয়ার প্রয়োজনও হল না কারন ততক্ষনে নতুন প্রশ্ন হাজির, পুলিশের পোষাকের দাম কত?
ততক্ষনে প্রশ্নের ধরন বোঝা হয়ে গেছে টিভিতে দেখাচ্ছে পোষাক পড়নে পুলিশ বিশাল লাঠি নিয়ে চারিদিক থেকে একজনকে পেটাচ্ছে পুলিশের পোষাক থাকলে ওভাবে পেটানোর স্বাধীনতা পাওয়া যায় শুধু পিটুনিই যথেষ্ট না, সাথেসাথে রাজপথ থেকে আদালতের রায়, কারাবাস অরপাধ, রাস্তায় জটলা পাকিয়ে বিঘ্ন সৃষ্টি করা, অস্ত্রহাতে পথে নেমে জনগনকে ভীতি প্রদর্শন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন সবকিছু আইনের আওতায় হচ্ছে আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কারো কিছু বলার অধিকার নেই বললে আদালত অবমাননা, সেজন্য কারাবাস আগে আইন জেনে আসুন তারপর কথা বলুন।
যদি শেয়ার বাজারের লক্ষকোটি টাকা বাটপারির প্রতিবাদ করি, গুমহত্যার প্রতিবাদ করি, ক্রশফায়ারের প্রতিবাদ করি, আকাশছোয়া মুল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ করি, ঘোষনা দিয়ে চাদাবাজি-টেন্ডারবাজি-দখলদারিত্বের প্রতিবাদ করি তাহলে শুনতে হয় বিএনপির দালাল আর যদি হরতালের প্রতিবাদ করি তাহলে মেনে নিতে হয় সরকার যা বলছেন সেটাই ঠিক শান্তি সৃঙ্খলার এত সুন্দর পরিবেশ আগে কখনো ছিল না, এত ভাল অর্থনৈতিক অবস্থা ইতিহাসে কখনো ছিল না, দেশের এত উন্নতি আগে কখনো হয়নি তারা আরো উতসাহে দেশের উন্নতি করতে পারেন বিরোধী দল বলে কিছু প্রয়োজন নেই প্রয়োজনে মহাজোটের সদস্যরাই বিরোধীদলের সিটে বসে মহাগনতন্ত্র রচনা করতে পারেন নির্বাচন কমিশন কয়েক বছর ধরে হম্বিতম্বি করেও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন দেয়ার ক্ষমতা রাখুক বা না রাখুক, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন ঠিকই জাতিয় নির্বাচন সুষ্ঠভাবে করবে করবেই
কথা বলে পাগল হওয়ার চেয়ে মুখ বন্ধ রাখাই ভাল। বিবিসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করল, যাদেরকে রাজপথের আদালত শাস্তি দিল তারা কি আপিল করার সুযোগ পাবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উত্তর না দিয়ে ফোনের লাইন কেটে দিলেন।

0 comments:

 

Browse