সংখ্যাতত্ত্ব - The Number Theory

Mar 26, 2010
মানবসভ্যতায় গ্রীকদের অবদানের তুলনা নেই। যেমন ধরুন হাজার তিনেক বছর আগেই তারা বলে গেলেন সংখ্যাই সব। ইহজগতে-পরজগতে যাকিছু দেখা যায়, যাকিছু কল্পনা করা যায় সবই সংখ্যা।
উদাহরন-
যেমন ধরুন বাদ্যযন্ত্র। গিটার-সেতার কিবা ঢোল-বাশি কিংবা হারমোনিয়াম-পিয়ানো যাই বলুন না কেন, কাজ হয় ওই সংখ্যায়ই। গিটারের তার লম্বালম্বিভাবে টানা দেয়া। একহাতে তারটা চেপে ছোটবড় করবেন আরেকহাতে টান দেবেন। দৈর্ঘ্য যত কম শব্দ তত টনটনে, দৈর্ঘ্য যত বেশি শব্দ তত ভোতা। আর দৈর্ঘ্য মানেই সংখ্যা। ইঞ্চি-সেন্টিমিটার-গজ-ফুট যাই বলুন না কেন।
আজকাল অবশ্য বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ততটা পিছিয়ে নেই যে ওধরনের উদাহরন দিতে হবে। ডিজিটাল দেশে শব্দ সরাসরি দেখাই যায়। ঢেউয়ের মত। ইংরেজিতে বলে ওয়েভ লেন্থ।
লেন্থ দিয়ে মাপা যায় সবকিছুই। এমনকি সরাসরি চোখে দেখা যায় না এমন বিষয়ও। একটু ঘুরিয়ে বলতে পারেন চোখে দেখা যায়না বলেই চোখে দেখানোর ব্যবস্থা। যেমন ধরুন, গাড়ি।
একসময় ব্যক্তিগত গাড়িকে বলা হত প্রাইভেট কার। তাইবলে মিতসুবিসি কিংবা নিশান কিংবা হামারের গাড়িকে কি কার বলবেন ? আমেরিকানরা বলে ট্রাক। এদেশে কি ওই শব্দ মানায়। ট্রাক বললে লোকে বুঝবে মালপত্র নেয়ার জিনিস। সে বস্তু তো ছোটলোকের জিনিষ। ব্যবসায় কাজে লাগে। তাইবলে কি ওতে চড়ে ঘুরে বেড়ানো যায় ?
নিশ্চয়ই যায় না। কাজেই, বাড়ির সামনের গলি দুপাশ থেকে কমতে কমতে রিক্সার মাপে এসে থেমেছে। তারই মধ্যে নিজের ক্ষমতার দৈর্ঘের সাথে মানানসই একটা গাড়ি নিয়ে চলাফেরা করতে হয়। রাস্তা বন্ধ। পথচারি, রিক্সাযাত্রী সবাই তাকিয়ে দেখছে কীর্তিমানকে। নিশ্চয়ই বলছে, বাপরে! কত দামী গাড়ি! ক্ষমতা আছে।
কাজেই ক্ষমতা গাড়ির মাপের সমানুপাতিক। কিংবা গাড়ির মাপ ক্ষমতার সমানুপাতিক। একের বৃদ্ধির সাথে আরেকের বৃদ্ধি ঘটে সমান হারে। তারমানে এখানেও অংক।
আবার আরেক ধরনের অংকও প্রচলিত। যেমন আপনি বললেন ঘন্টায় ঘন্টায় লোড সেডিং। কিংবা দিনে ১০ বার লোড সেডিং। এতে সরকারের ভাবমুর্তি নষ্ট হয় বৈকি। সরকার এত সুকাজ করছে তারওপর আপনি প্রশংসা না করে সমালোচনা করছেন। আপনি কি জানেন এসব চারদলীয় জোট সরকারের দুর্নীতির ফল। তারা বিদ্যুত তৈরী করেনি, শুধু লুটপাট করেছে বলেই তো এই অবস্থা।
কাজেই, নতুন সমাধান, আজ থেকে লোডসেডিং দুঘন্টা করে। অংকের মাথা থাকলে একবার মিলিয়ে দেখুন লাভ কত।
দুঘন্টা লোড সেডিং দিলে দিনে বড়জোর ছবার লোডসেডিং হবে। আগের মত ১২ বার হচ্ছে না। লোড সেডিং এর সংখ্যা কমল কিনা ?
এক ঘন্টার বদলে এখন বিদ্যুত পাবেন দুই ঘন্টা (চেষ্টা করা হবে, বলেছেন কর্তা) এটা লাভ কিনা। আর কি বলতে পারবেন ঘন্টায় ঘন্টায় লোড সেডিং ?
কাজেই ওসব কথা ছাড়ুন। সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে। সেইকথা বলুন। রব তুলুন, জয় ডিজিটাল বাংলা।
আর যদি নিতান্তই দেশদ্রোহি হতে চান, রাজাকার কিংবা তাদের সমর্থক পরিচিতি চান, জঙ্গী- সন্ত্রাসী-পাকিস্তানের চর ইত্যাদি হতে চান তাহলে সাহস করে বলতে পারেন, ওই বিচারে আমার প্যাট চলতাছে না। ওইডা নিজেদের মইধ্যে রাখেন। আমার প্যাটে ভাতের ব্যবস্থা করেন।

0 comments:

 

Browse