নাপিতকে ডাক্তারী শেখাবে কে Look Before You Leap

Mar 21, 2010
এক গ্রামে একজন নাপিত ডাক্তারদের জন্য ত্রাস হিসেবে দেখা দিয়েছিল সন্ত্রাসী কাজকর্ম দিয়ে না, বরং নিজের কৃতিত্ব দিয়ে ফোড়ার রোগি পেলে সে ঘ্যাস ঘ্যাস করে ক্ষুর চালাত আর ফি একেবারে নগন্য অন্তত ডাক্তারের ছুরি-কাচির সাথে তুলনা চলে না ফল যা হবার তাই হল লোকে লাইন দিল নাপিতের কাছে আর ডাক্তারদের ভাতে-পানিতে মরার দশা
একসময় সব ডাক্তাররা একত্রিত হল সমাধান খুজতে বর্ষীয়ান একজনের মাথা থেকে বুদ্ধি এল, দায়িত্ব আমি নিচ্ছি তোমরা ধৈর্য্য ধর
পরদিন তিনি দেখা করলেন নাপিতের সাথে ওহে নাপিত, তুমি তো বেশ ভাল ফোড়া কাট তোমাকে কিছু নিয়ম কানুন শিখিয়ে দেই আরো ভালভাবে কাজ করতে পারবে এই যে, এই হল ক্ষুর, আগে এটাকে পরিস্কার করতে হবে এতে অনেক রোগজীবানু থাকে কোনটা শরীরে ঢুকে গেলে সেই রোগ হবে একে বলে ষ্টেরিলাইজ করা তারপর যেখানে কাটবে সেই যায়গা ভালভাবে লক্ষ্য করবে আমি ছবি দিয়ে দেখাচ্ছি, এইযে এটার নাম ভেইন এর মধ্যে দিয়ে সারা শরীরের রক্ত হার্টে যায় এটা কাটলে রক্তপড়া বন্ধ হবে না রোগি মারা যাবে এটার নাম আর্টারী এটা দিয়ে রক্ত হার্ট থেকে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এটা কাটলেও রক্ত পড়া বন্ধ হবে না কোথায় ভেইন কোথায় আর্টারী এসব বাদ দিয়ে সাবধানে কাটবে
রীতিমত কদিন ট্রেনিং নিয়ে খুশীমনে নতুন রোগির ফোড়া কাটতে গেল নাপিত ক্ষুরটাকে গরম পানিতে ধুয়ে নিল স্যাভলন দিয়ে মুছে নিল তারপরও খুতখুতি যায়না, জীবানু কি থেকেই গেল!
এরপর কাটার পালা এইদিক দিয়ে গেছে ভেইন ওইপাশে ছোট আরেকটা তার কাছেই আর্টারী বাপরে, ওগুলো পাশ কাটিয়ে কাটব কিভাবে ?
নাপিতের হাত কাপতে শুরু করল একসময় ক্ষুর পড়ে গেল হাত থেকে
আসলে নাপিত যতক্ষন নাপিত ততক্ষন ডাক্তারী খুব সহজ অমুক যায়গায় সমস্যা, কেটে ফেলুন
এই নাপিতামি শুধু ফোড়া কাটার মধ্যে থাকলে এত আপত্তি ছিল না অন্তত ফোড়া না হওয়া পর্যন্ত তাকে ভয় পাবার কারন ছিল না নাপিত নিজেই যদি ফোড়া তৈরী করে তারপর নিজেই সমাধান দিতে ক্ষুর চালায় সমস্যা তখনই
ঢাকা শহরে বিলবোর্ড খুলে মাথায় পরে মানুষ মারা গেছে নিজেদের জীবন দিয়ে তারা জানিয়ে গেছেন শহর জুড়ে রাস্তার ধারে এসব বিলবোর্ডের ৯৯ ভাগই অবৈধ কাজেই লোক লাগাও, ওগুলো ভাঙ্গতে হবে আজ গুলশান, কাল শাহবাগ, পরশু মতিঝিল ততক্ষনে গুলশানের নতুন কাজের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে কিভাবে অবৈধ বিলবোর্ড লাগানো সম্ভব হল, কার বোর্ড লাগানো হল, কে লাগালো, কিভাবে শতশত কোটি টাকা হাতবদল হল এপ্রশ্ন করবেন না। মানী লোকের মান রেখে চলতে হয়।
আর ভাঙ্গার নির্দেশনা কে দিল তা নিয়েই বা মাথা ঘামাচ্ছে কে ? ক্ষমতা আমার হাতে, আমিই কাজী। ক্ষমতায় থেকে কিছুই করব না তাকি হয় ? এতটা নেমকহারাম নই। কাজেই, ভেঙ্গে দাও ঘুড়িয়ে দাও-
ভাঙ্গা হবে কার টাকায় ? সরকারের টাকার অভাব নেই। শুধু জমছে আর জমছে। আয় সন্তোষজনক, ব্যয় কমছে। খরচ করার যায়গা নেই। জমা টাকা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। বিনিয়োগের জন্যও কেউ টাকা নেয় না। সাংসদপিছু ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। তারা কিছুটা অর্থভার কমাবেন।
আর জনগন ? তারা ভারবাহি পশু। প্রতিনিয়ত ট্যাক্সের পরিমান বাড়িয়ে যাবেন। গ্যাস-বিদ্যুত-পানির জন্য টাকা বাড়াতে থাকবেন আর ক্রমেই সেগুলোর ব্যবহার কমাবেন। দিনে-রাতে অর্ধেক সময় গ্যাস-বিদ্যুত-পানিছাড়া থাকবেন। পরিবেশ বিপর্যয় থেকে বিশ্ব রক্ষা করবেন। বিশেষ বিশেষ দিবস পালন করবেন। এজন্যই তো স্বাধীনতা এনে দিয়েছি। স্বাধীনতা পালন করুন।

0 comments:

 

Browse