মান এবং হুস - Be a Man

Mar 13, 2010
মান এবং হুস, এই নিয়ে মানুষ বলে গেছেন রামকৃষ্ণ তার কথা অমৃতসমান কাজেই ধরে নিতেই হয় মানুষ পরিচিতিলাভের জন্য মান এবং হুস এই বিষয়দুটি থাকতে হয় বন্যপ্রানী সহজেই বন্যপ্রানী তরুলতা সহজেই তরুলতা মানুষ, প্রানপন চেষ্টায় মানুষ, একথাও তাই বলে প্রানপন চেষ্টা করে মানুষ হতে হয় নিজের মান রাখতে হয় হুসজ্ঞান ঠিক রাখতে হয়
 কিন্তু কথা হচ্ছে, শুধু কথায় কি চিড়ে ভেজে ? চিড়ে ভেজাতে প্রয়োজন হয় পানি আর সেটা পেতে মান এবং হুস কিছুটা হারাতেই হয় শুধু পানিতেই তো চলবে না, চিড়েটা আগে তার বিনিময়েও কিছু দেয়ার বিষয় থেকে যায় সকলের আগে যা দেয়া যায় তাহচ্ছে মান এবং হুস বিকোয় খুব সহজে যায়গামত বিকোতে পারলে চিড়ের অভাব হয় না
যেমন ধরুন, সরকারী প্লট বরাদ্দ সাংসদ হিসেবে আপনার সেটা প্রাপ্য আবার দেশের মান রক্ষার্থে কিছু নিয়মও উচ্চারন করতে হয় নিয়মে বলা হয়েছে প্লট তিনিই পাবেন যার নিজের এধরনের জমিজমা নেই দুদিক ঠিক রাখতে আপনাকে যা করতে হয় তা হচ্ছে হলফনামা দেয়ার সময় বলে দেয়া, আমার জমিজমা কিচ্ছু নেই ওই প্লটটুকু না পেলে ফুটপাতে থাকতে হবে আর সাংসদ হিসেবে সেটা করা যায় না অনেক দেশে প্রধানমন্ত্রী সাইকেলে চেপে বাহাদুরী দেখায়। ধুরো! ওই জাতির মানসন্মান বলে কিছু আছে নাকি ? যতসব জংলি। নেতা-মন্ত্রী ওসব করলে দেশের মান যায়, সমাজের মান যায় নেতা-মন্ত্রী-সাংসদের দায়িত্ব দেশের মান উচুতে তুলে ধরা
কাজেই দেশের স্বার্থে, সমাজের স্বার্থে মিথ্যে হলফনামাটুকু দিতে হয় পত্রিকায় যদি খবর যায় তাতে কিছুটা মানহানিও হয় সেই অর্থে কিছুটা মনুষ্যত্বহানিও হয় অন্তত ওই রামকৃষ্ণের কথা মানলে
কিন্তু খবরের কাগজে ওকথা থাকেই বা কদিন তাদের প্রতিদিন নতুন খবর ছাপতে হয় আগেরটা না ভুললে চলে না তাছাড়া এই মানহানি আবার অন্যভাবে পুশিয়ে নেয়া যায় অন্য সবকিছুর মত মান বিষয়টিও আপেক্ষিক একের তুলনায় বেশি কিংবা কম এক পদ্ধতি হচ্ছে বেশি মান সংগ্রহ করে অন্যের চেয়ে মানী হওয়া আরেক পদ্ধতি হচ্ছে আরেকজনের মান কমিয়ে তারচেয়ে বড় হওয়া আপনি লম্বায় আরেকজনের চেয়ে উচু হবে, অথবা আরেকজনের ঠ্যাং ভেঙে তাকে ছোট করে দেবেন একেবারে সহজ কার্যকর পদ্ধতি
কাজেই, অমুকে অতবড় চুরি করেছে, এইকথা বলে তাকে আপনার চেয়ে ছোট করে দিন জানেননা আগের সরকার কত দুর্নীতি করছে। প্রমান চান? ওইযে, রিমান্ডে গিয়া সব ফাস কইরা দিছে। ষড়যন্ত্রে কার কার নাম আছে সব কইছে। এইবার যাইবা কোনে!
প্রশ্ন করতে পারেন অন্যে চুরি করলে সেখানে নিজের চুরি ঢাকা পরে কিনা। কিংবা চুরি করে কেউ ছোট হয় নাকি বড় হয় অবস্থাদৃষ্টে বড় হওয়ার উদাহরনই বেশি চুরি করতে যোগ্যতা লাগে। যার যোগ্যতা যত বেশি সে তত বড় হয়।
আবার অন্যদিকও সামলাতে হয়। নীতিকথা বলে কথা চুরি করেছেন, করবেন, তাইবলে নীতিকথাও বলবেন না! পরকালে দোযখে যাবেন নাকি ?
কাজেই (নীতির বিচারে) কিছুটা মানহানি মেনে নেয়া যায়
সমস্যা হচ্ছে, এসব বড়বড় মানুষের কথা মন্ত্রী-সাংসদ-নেতা-আমলা এদের কথা আপনি ইচ্ছে করলেই ওদলে যোগ দিতে পারেন না দেশে হাজার হাজার মন্ত্রী-সাংসদ রাখার ব্যবস্থা নেই  কাজেই আপনাকে অন্য পথ খুজতে হয় কোন পথে মান বিক্রি করে কিছু কামানো যায়
এজন্য দুটি কাজ করুন নীতিকথা শিখুন অনবরত বলতে শুরু করুন চারিদিকে কার কি দোষ সেগুলি যতভাবে সম্ভব বলতে শুরু করুন বড় থেকে ক্রমাম্বয়ে ছোটর দিকে
উদাহরন, জানেন মন্ত্রীরা কত হাজার হাজার ট্যাকা দুনীতি করে পারলে সেইগুলান বন্ধ করেন তারপর ওইসব আমলা, সরকারী কর্মকর্তা, সচিব, তাগো সহকারী, সহকারীর সহকারী, তার পিওন ওগো দুর্নীতির খবর জানেন ? বড় বড় ব্যবসায়ীর দুর্নীতির খবর জানেন ? সিন্ডিকেট কইরা হাজার হাজার কোটি ট্যাকা কামাইতাছে সেই খবর রাখেন ? আমি কয়ট্যাকা চাইলে কন ঘুস! ব্যবসায়ী কয়ট্যাকা বেশি লাভ করলে কন বাটপারি! রিক্সাঅলা কয়ট্যাকা বেশি নিলে কন ঠকবাজি!
আমরা তাগো কাছে শিশু সববিচারেই শিশু শিশুরা যেমন বড়দের কাছে শেখে আমরাও তাগো কাছে শিক্ষা নেই আমার মান নাই-হুস নাই কওনের আগে যারা এইসব শিখাইছে তাগো কাছে যান
রামকৃষ্ণ এদ্দিন বেচে থাকলে তাকেও কথাটা অন্যভাবে বলতে হত। যাকে মানতে হয়, যার মানি বেশি সে-ই সত্যিকারের মানুষ।

0 comments:

 

Browse