থামাবে কে

Aug 11, 2011
এ্যনা বালথাজার আমেরিকান-ইহুদি তরুনী। তার শখ হল প্যালেষ্টাইনের মানুষ কিভাবে থাকেন নিজের চোখে দেখবেন। একদিকে আমেরিকান অন্যদিকে ইহুদি, তারপক্ষে কাজটা খুব কঠিন ছিল না। ৫ মাস কাটালেন প্যালেষ্টাইনে। ছবি উঠালেন। তারপর সেগুলি একসাথে করে নিজের অভিজ্ঞতা বর্ননা করে তৈরী করলেন ভিডিও ডকুমেন্টারী। নাম লাইফ ইন অকুপাইড প্যালেষ্টাইন।
তার ডকুমেন্টারীর বর্ননা দেয়া প্রয়োজন নেই। নিতান্ত দুএকটি বিষয় ছাড়া।
প্যালেস্টাইনের পুরো দেশ জুগে রোডব্লক বলে একটি বিষয় রয়েছে। আগেই বলে নেয়া ভাল প্যালেষ্টাইনে রাস্তা দুধরনের, একটি প্যালেষ্টাইনী অপরটি ইসরায়েলি। একটি প্যালেষ্টাইনীদের যাওয়ার জন্য অপরটি ইসরাইলিদের। রোডব্লকগুলি প্যালেষ্টাইনী পথের ওপর।
কোথাও ইট-সিমেন্টের কয়েকহাত উচু পিলার তৈরী করা, কোথাও ময়লার স্তুপ ফেলে তৈরী। এজন প্যালেষ্টাইনী গাড়ি নিয়ে রোডব্লক পর্যন্ত যেতে পারেন, ওপরে যাওয়ার উপায় নেই। কয়েকমাইল ঘুরে অপর পারে পৌছাতে পারেন, সেখান থেকে অন্য গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন। জিনিষপত্র নেয়ার সময় গাড়িবদল করতে হয়।
এগুলি তৈরীর কারন নিরাপত্তা। ছবি দেখিয়ে এ্যনার প্রশ্ন, এই ব্যবস্থা কিভাবে নিরাপত্তা দেয়।
এ্যনার একজন জার্মান সঙ্গি তার অভিজ্ঞতা থেকে একটি ফিচার লিখেছিলেন। সেটা ছাপা হয়েছে নিউজউইক নামের বিখ্যাত পত্রিকায়। একেবারে পত্রিকার মুল নামের ওপর শিরোনাম। একই পত্রিকার আমেরিকান ভার্শনে সেই লেখা নেই, বদলে অলিম্পিকের খবর।
এ্যনার প্রশ্ন, খোদ ইসরায়েলে দখলদারিত্ব নিয়ে লেখা হয়, আমেরিকায় সেটা নিষেধ কেন ? এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে কে ?
আপনি প্রশ্ন করতে পারেন এসব শুনে কি হবে ?
তাহলে পাল্টা প্রশ্ন করতে হয়, এ্যনা একাজ করেছে কেন ?
তার দেশ ইসরায়েলকে দৈনিক ১ কোটি ডলার করে দেয় এটাই কি কারন ? নাকি সেই টাকা ব্যয় করে ইসরায়েল এমন কাজ করছে যা মেনে নেয়া যায় না এটাই কারন ?
হয়ত দুটোই।
লন্ডন বিশ্বসেরা শহর। এর একটি বড় পরিচয় সেখানে সব ধর্মের, সব বর্ণের মানুষ বাস করে। কখনো গন্ডগোল হয়না এমন না, তাহলেও মাল্টিকালচার শব্দটি ব্যবহার করা হয় লন্ডনকে বুঝাতেই। বিশ্বসেরা পুলিশ সেখানে। গত কয়েকদিনে সেখানে যা ঘটেছে, এখনো ঘটছে তারসাথে তুলনা হতে পারে এশিয়া কিংবা আফ্রিকার দেশের। কিন্তু সেই তুলনাই কি গ্রহনযোগ্য ?
বৃটেনে একদিকে অর্ধেক মানুষ অনাহারে আরেকদিকে কিছু মানুষের খাবার অন্য দেশ থেকে আসে না। পুলিশের হাতে মানুষ মারা যাওয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পুলিশের প্রশংসা করেন না। বানিজ্যমন্ত্রী না খাওয়া মানুষকে আরো কম খেতে উপদেশ দেন না। ব্যবসায়ীরা বিষাক্ত খাবারের গায়ে খাটি শব্দ লেখার সুযোগ পায় না। সরকার ঘোষনা দিয়ে নিজের দলের লোককে চাকরী-টেন্ডার দিতে পারে না। এসব যেখানে ঘটে সেখানে মিছিল-প্রতিবাদ-হাতাহাতি কতটা অস্বাভাবিক।
নাকি কখনো কখনো মানুষ নামের এই প্রানী অদ্ভুত ধরনের অন্য প্রানীতে পরিনত হয়। কখনো সেই প্রানী পরের দেশের জন্য কষ্ট স্বিকার করে, কখনো নিজের দেশেই মানুষের ওপর হিংস্রভাবে হামলা করে। লন্ডনের ঘটনায় শুরুতে পুলিশের হাতে একজনের মৃত্যুর খবর ছিল। দ্রুতই সেটা পরিনত হয়েছে লুটপাটের ঘটনায়।
বিশ্বসেরা পুলিশ সেই ঘটনা থামাতে পারেনি। ঘুসখোর, সরকারের লাঠিয়াল পুলিশের দেশে যদি এমন ঘটনা ঘটে তাহলে সেটা সামাল দেবে কে ? কিংবা সেই পুলিশ যদি নিজেই লুটপাট শুরু করে তাহলে থামাবে কে ?

0 comments:

 

Browse