একা এবং একসাথে Die together live alone

Aug 18, 2009

হলিউডের মারদাঙ্গা ছবিতে বিপদজনক ভুমিকায় নায়কের মুখে একটা কথা প্রায়ই শোনা যায়, লিভ টুগেদার, ডাই এলোন যদি বাচি সবাই বাচব, যদি মরতে হয় একা মরব অন্যদের বাচানোর জন্য যা করা সম্ভব করব নয়ত নিজের জীবন দিয়ে অন্যদের বাচাব।

সাধারনত এই সংলাপের পর নায়ক মারা যায় না, সবাই মিলেই বাচে বাংলাদেশেও বচনের অভাব নেই দশে মিলি করি কাজ-

কিন্তু কথার কতরকম অর্থই না হয় ধর্মে বলেছে তোমরা দ্রুত ইফতার কর কাজেই যতরকম খাবার পাওয়া যায় সব হাতের কাছে এনে রাখবেন যাকিছু কাজ সব বাদ দিয়ে সেগুলি সামনে নিয়ে বসবেন আর সময় হওয়ার সাথেসাথেই খাওয়া শুরু করবেন যতক্ষন পেট সায় দেয় এটাই তো ধর্মের কথা অন্য ব্যাখ্যা খুজে লাভ কি কে যেন বলেছে দ্রুত ইফতার কর কথার অর্থ তোমরা দ্রুত ইফতার শেষ করে নামাজ পড়তে যাও এই নামাজের সময় সবচেয়ে কম সুর্য ডোবা থেকে শুরু করে আকাশ থেকে লাল রং মুছে যাওয়ার আগ পর্যন্ত

ওসব বাজে ব্যাখ্যা আগেরটাতেই মজা কথার গড়মিল তো হচ্ছে না যা বলা হয়েছে অক্ষরে অক্ষরে পালন নামাজ পড়লাম না, রোজাও করলাম না, এখন ইফতার না করে বিধর্মী হব নাকি ?

বিষয়টা হচ্ছে একা না একসাথে। ইউরোপ আমেরিকায় অপরাধ কম নেই। অনেক ক্ষেত্রেই বেশি। তারাও দল ধরে গুন্ডামি করে, ডাকাতি করে। তবে দল ধরে দুনীতি করার নজির বোধহয় নেই। একাজটি করার সময় অন্যদের চোখের আড়ালেই করে। জানে ধরার পড়লে কি হবে। বরং অন্য কাইকে জানানো অর্থ ধরা পড়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলা। কোন কোন আহাম্মুক নাকি নিজের জীবনের চেয়ে আদর্শ বড় করে দেখে।

কাজেই, যা করার করতে হবে সকলের অগোচরে। অন্যদের না জানিয়ে। সকলের ওপর টেক্কা দিয়ে। বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের ঘটনা যখন ধরা পরে তখন দেখা যায় তার পিছনে কাজ করেছে একটাই মাথা। তখন সবাই উঠেপড়ে লাগে কিভাবে সেটা বন্ধ করা যায়। কারো যদি অন্যকে সন্দেহ হয় সে দুর্নীতি করেছে বা করতে পারে, কিংবা কাজে ফাকি দিচ্ছে, কিংবা যে পদ দখল করে রেখেছে সেই কাজে সে শতভাগ উপযোগি না তাহলে সে অন্যদের জানাতে পারে।

এই জানানোর মধ্যে ঝুকি আছে সেটা সকলেরই জানা। একজন অফিসার সরকারের কথামত দশ ট্রাক মামলা খালাস করে কারন তিনি সরকারের চাকর। সরকারের কথা না শুনলে বিপদ হয়। তখন এক সরকারের কথামত কাজ করেছেন এখন আরেক সরকারের কথামত কথা করছেন এমন কথা তুলবেন না। যদি তেমন পরিস্থিতি হয় তখন দেখা যাবে। সময়ের কথা অসময়ে ফাস করতে হয় না।

ইউরোপ আমেরিকার লোকজন কোন ঝুকিতে যেতে চায় না। কাজেই,

যদি কারো সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে তাহলে প্রথম কর্তব্য উপরের কাউকে জানানো।

যদি তাতে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে তাহলে নির্দিষ্ট একটা নাম্বারে ফোন করুন। এই ফোন নাম্বারের সাথে সেই ব্যক্তির বা অফিসের কোন সম্পর্ক নেই। সেখানেই জানান আপনার মনের দুঃখ।

যদি তাতেও আপত্তি থাকে তাহলে আরেক নাম্বারে ফোন করুন। সেখানে কেউ আপনার পরিচয় জিজ্ঞেস করবে না। কেউ জানতেও পাবে না কে জানিয়েছে। আপনার কথা যায়গামত পৌছুবে। যে সমস্যা তুলে ধরেছেন তার সমাধান হবে।

যারা সমাজ নিয়ে গবেষনা করেন তারা নাকি বলছেন কোন কোন দেশ যে দুনীতির তালিকায় একেবারে শেষে থাকে তার কারন এটাই। সুইডেনে নাকি দুশো বছর ধরে নিয়ম চালু রয়েছে যে কেউ গিয়ে প্রশ্ন করতে পারেন অমুক মন্ত্রী বছরে কত টাকা আয় করেছেন। সেটা জানা নাকি তার অধিকার।

বাপরে! এসব মানলে কি দেশ চলে। রাজনীতি করা যায়। নেতার বিরুদ্ধে মামলা মানে তো হয়রানীমুলক, উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা। ওসব দেখলে কি চলে নাকি ?

তারচেয়ে ভাল মিলেমিশে থাকা। উন্নয়ন খাতে বহু হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ আছে, টেন্ডার ভাগাভাগি করে সেগুলো বুঝে নিন। আমার ভাগটা যেন ঠিক থাকে। আপনার বিপদে আমি, আমার বিপদে আপনি।

বাচলে একা মরলে একসাথে।

0 comments:

 

Browse