পরিবর্তন Winds of change

Aug 17, 2009

পদার্থবিদ্যায় বলে, বল প্রয়োগে যদি বস্তুর সরন হয় তবে তাহাকে কাজ বলে অর্থাৎ শুধুমাত্র বল প্রয়োগ করাতে নয়, বস্তুকে সরানোতে কাজের পরিচয় আপনি সারাদিন দেয়াল ঠেলবেন, একচুলও নড়াতে পারবেন না আর বাহাদুরী করে বলবেন কত পরিশ্রমের কাজ করলেন সেপথ নিউটনরা বন্ধ করে গেছেন আপনি নিউটনকে ছাড়িয়ে নতুন তত্ত্ব তৈরী করলে অন্য কথা নয়ত তাদের নিয়ম মেনে নিতে হয় সবাই তাই করছে

তবে, ব্যতিক্রম বলে কথা আছে। সবাই সেটা পছন্দ করে। পত্রিকায় ছবি বেরিয়েছে কে নাকি উল্টোদিকে গাড়ি চালিয়ে বিখ্যাত হয়েছে। পথেঘাটে তাকালে হরহামেশাই চোখে পড়বে ব্যাতিক্রম। পোষাকে, চুলের ষ্টাইলে, হাটার ষ্টাইলে, আচরনে, কথাবার্তায় সবকিছুতেই। এটা প্রাথমিক ধাপ। সবাই চায় অন্যরা তার দিকে ফিরে ফিরে দেখুক। বলাবলি করুক অমুকে কি ষ্টাইলডাই না করছে। মাশাল্লা।

কেউ যদি তাকিয়েই না দেখল তাহলে এই সুন্দর দেহখানা, সুন্দর পোষাক, বাহারী অলংকার এসবের কোন অর্থ থাকে ? একজন বললেন যদি হাতে হাটা সম্ভব হত তাহলে দেখা যেত অনেকে সে চেষ্টায় বিখ্যাত হওয়ার পথে রওনা দিয়েছে। তাকে জানাতে হল ওকাজ আগেই একজন করে গেছেন। গিনেস বুকে ছবি সহ তারকথা ছাপা হয়েছে। আরেকজন বললেন অচিরেই নাকি দেখা যাবে এই ব্যতিক্রমের পথ ধরে তরুন-তরুনী জামাকাপড় ছাড়াই পথে হেটে বেড়াচ্ছে। কোন কোন কাজের জন্য ঘর প্রয়োজন হয় সেটাও মানছে না। তাকেও বলতে হল একাজও বহুদেশে হয়ে গেছে। ইংল্যান্ড জেতার পর নাকি কয়েকশ মানুষ আনন্দে জামাকাপড় খুলে মিছিল বের করেছিল লন্ডনের রাজপথে। এখানেও হতেই পারে। পরিবর্তনের ধারা সেদিকই নির্দেশ করে। আর এই পরিবর্তন নিউটনের সুত্রের বিরোধিতাও করে না। সমস্যা একটাই, একেবারে নতুন বলে স্বিকৃতি পাওয়া যাবে না। অমুককে অনুসরন করছে বলে কথা উঠবে।

একেবারে নতুন কিছু করার পথও রয়েছে।

বেশ কিছুদিন ধরে নতুন শব্দটা শোনা যাচ্ছে। গুনগত পরিবর্তন। সবাই এটা চান। শব্দটার আমদানী কোথা থেকে জানা নেই। মার্কসবাদীরা এধরনের একটা শব্দ ব্যবহার করেন, নিশ্চয়ই সেখান থেকে না। কারন তারা শ্পষ্ট করে বলে দিয়েছে গুনগত পরিবর্তন পরিমানগত পরিবর্তনের পরবর্তী ধাপ। এক ধাপ বাদ দিয়ে পরের ধাপে যাওয়া যায় না। তাদের বক্তব্য যদি শোনা যায় তাহলে সেটা হয়ত হবে এমন,

সরকারে গুনগত পরিবর্তন চান ? আগে পরিমানগত পরিবর্তনে নজর দিন। ৩০০ সাংসদের মধ্যে ভাল, যোগ্য কজন ? শতকরা দশ ? আগে সেটা বাড়ান। ১০ থেকে ২০, ২০ থেকে ৪০ এভাবে বাড়াতে থাকুন। যখন সংখ্যা অর্ধেকের ওপর যাবে জানবেন তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হল। একটা ধাপ এগিয়ে গেল। তখন গুনগত পরিবর্তন আশা করতে পারেন কারন তারা যা বলবেন অন্যরা সেটা শুনতে বাধ্য থাকবে। সে পথে না গিয়ে গুনগত পরিবর্তনের কথা বলবেন না।

তবে আশার কথা হচ্ছে, আজকাল মার্কসবাদী বলে কিছু নেই। মস্কোপন্থি, পিকিং পন্থি বলে কিছু নেই। সবাই জানে ওই দুদেশের অবস্থা। তারা আর কারো হাতে টাকা তুলে দেয় না।

কাজেই সেপথ ভুলে যান।

তারপরও গুনগত পরিবর্তন ঘটাতে হবে। সারা বিশ্বকে দেখানো হবে আমরা পরিবর্তন করতে পারি। একেবারে আমাদের নিজস্ব সুত্র মেনে। নতুন পথে।

0 comments:

 

Browse