টেন্ডার

Apr 10, 2010
ইংরেজিতে টেন্ডার শব্দের অর্থ-, মোলায়েম জাতিয় কিছু একটা হবে। নিশ্চিত করতে পারছি না কারন ইংলিশে বরাবরই কাচা এবং দুর্মুল্যের বাজারে চাল না কিনে ডিকশনারী কেনার অর্থ হয়না। বাংলা টেন্ডার নিয়েই কথা বলি।
এটা হচ্ছে, নিয়ম মোতাবেক কাজ করার পদ্ধতি। বিশেষ করে সরকারী কাজের ক্ষেত্রে বাধ্যতামুলক (দুএকটা ব্যতিক্রম ঘটলেও ঘটে থাকতে পারে)। আর পদ্ধতিটি হচ্ছে;
একাধিক বহুল প্রচারিত সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন আকারে কাজ বা দ্রব্যের বিবরন প্রকাশ করে দরপত্র আহ্বান। যারা কাজ করতে বা জিনিষ কিনে দিতে আগ্রহী তারা নিজেদের যোগ্যতা প্রমান করে প্রতিযোগিতামুলক মুল্য জমা দেবেন। যিনি যোগ্যতার মাপকাঠি পুরন করেন এবং যাহার মুল্য কম তিনি কাজ পাইবেন।
মোটকথা এই হচ্ছে টেন্ডার পদ্ধতি। অভিজ্ঞতা এবং যোগ্যতার যতরকম কাগজপত্র আছে জমা দেবেন এবং সম্ভাব্য কম মুল্যে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেবেন।
মাঝের পর্যায় বাদ দিয়ে শেষ পর্যায়টি সংক্ষেপে উল্লেখ করি। কাজ অথবা সরবরাহকৃত দ্রব্য যাচাই করার পর বিল পরিশোধ করা হইবে।
এই নিয়মেই সবকিছু হচ্ছে। কিছু এদিক-ওদিক, সেতো সবখানেই হয়। গরমের দিন বলেই কি সবদিন সমান তাপমাত্রা থাকতে হবে ? কমা-বাড়া চলবে না ?
কাজেই কিছু এদিক ওদিক হয়। দক্ষতা-অভিজ্ঞতার বিচার যেহেতু করেন কমিটির সদস্যগন, কাজেই তাদের সন্তুষ্ট রাখলে কিছু পয়েন্ট বেশি হতেই পারে। সেই টেকনিক্যাল পয়েন্টের গুনে সবচেয়ে কমদামকে পাশ কাটানোও যায়।
আবার শর্তে আছে কমপক্ষে অতজনকে অংশগ্রহন করিতে হইবে। চারজন হলে একাই চারনামে কাগজ জমা দেয়া যায়। অন্য কারো দাম কমানোর সম্ভাবনা থাকলে তাকে দুরে রাখা যায়। একসময় এই পদ্ধতি ছিল ঘুষ দেয়া। আমি এত টাকা দিচ্ছি ভাই, তুমি সরে দাড়াও। তারপরের পদ্ধতি টেন্ডার কিনতে না দেয়া। তারপরের পদ্ধতি টেন্ডার জমা দিতে না দেয়া। পরিচিত একজনকে পিস্তলের মুখে আটকে রাখা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, সময় শেষ হওয়া পর্যন্ত।
তারপরও কিছু ফাকফোকর থেকেই যায়। কাজ হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। কাজেই, একেবারে কার্যকর পদ্ধতি,
কাজটা আমার। তুই কে-রে ব্যাটা!
সেই ব্যাটা যদি আবার নিজের দলের হয় তাহলেই মুসকিল। সেও সমানে সমানে ঘুরে দাড়ায়। তখন একটু-আধটু ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, একটু-আধটু মারামারি, দুএকটা খুন হতেই পারে। এসব সাধারন ঘটনা। অন্তত খুন পর্যায়ে না গেলে এনিয়ে মাথা ঘামানো কিছু নেই। সরকার উন্নয়ন করে টাকা খরচ করতে পারছে না। বাজেটে ছিল ৩০ হাজার কোটি, খরচ হয়না দেখে সেখান থেকে কমানো হয়েছে, তারপরও খবর হবে কিনা সন্দেহ। এটা হলে কি মান থাকে ?
কাজেই, টাকা খরচ কর। যারা ইলেকশনে জিতাইছে তাগো কাজ দাও। ওইসব অভিজ্ঞতা-টভিজ্ঞতা বাদ। দুই কোটি ট্যাকার কামে অভিজ্ঞতা লাগব না। জোট সরকারের আমলে কাম করেনাই বইলা কি মহাজোটের আমলে কাম করব না। ইলেকশনের আরো বহুত দেরী। অহন যা করার কইরা ফালাও। ইলেকশনের আগ দিয়া দলের ভাবমুর্তি নষ্ট করা চলব না। ওই মিয়ারা, কাম দেন। ট্যাকা খরচ করেন। বছরের মাত্র দুইমাস বাকি।
একসময় পুরনো পাগলদের দুচারজনের দেখা পাওয়া যেত। এখন টেন্ডার আর লীগ সমার্থক শব্দ। মাঠ ফাকা। গুতোগুতি হলে নিজেদের মধ্যেই হয়।
বাছারা, তোমরা যা করার কর, খুনাখুনির পর্যায়ে যাইও না। নিজের ভাইরে খুন কইর না। লোক কুকথা কয়। নৌকায় বইসা জোটের সদস্য কয় এইসবের দায় কান্ধে নিব না। এইদেশের পাবলিক বড় খারাপ রে ভাই। কখন কোন হুজুগে মাতে কে জানে।
ইংলিশে টেন্ডার বইলা একটা শব্দ আছে। তার মান রাখ। চুপেচাপে কাম কর-

0 comments:

 

Browse