কোন নিয়মে চলে

Jul 8, 2010
কেউ যদি ধানমন্ডি এলাকায় ঠিকানা খুজতে যান তিনি একদিনেই বুঝে যান আসলে দেশ কোন নিয়মে চলে
ধরুন আপনি খোজ করছেন ১৪ নম্বর
বেশ রিক্সা উঠলেন একে-ওকে জিজ্ঞেস করে ঘন্টাদুয়েক ঘুরলেন আপনার রিক্সাভাড়া যখন পকেট ছাড়িয়ে গেছে তখন হাটা শুরু করলেন আরো কয়েকঘন্টা কাটিয়ে অবশেষে একসময় বুঝলেন
যা বুঝলেন তা হচ্ছে, একসময় ১৪ নান্বার বলে একটা সড়ক ছিল সেটার নাম্বার পাল্টে হয়ে গেছে ৭/এ বিষয়টা এখানেই শেষ না, আপনি যদি সাত মসজিদ রোডের এপারে দাড়ান তাহলে সেটা ৭/এ, রাস্তা পার হলেও সেই পুরনো নাম্বার ১৪ যেমন ১৫ কখনো ৮/এ হয়নি ৩২ কখনো ১১ হয়নি।
কাজেই যা ১৪ ছিল তার অর্ধেক ৭/এ কিংবা পুরনো ১৪, বাকি অর্ধেক এখনো পুরনো ১৪।
শেষ এখানেই না সত্যিকারের ১৪ যদি খুজতে চান তাহলে সেটা আরেক যায়গায় দুরত্ব লেক ঘুরে-টুরে মাইলদুয়েক তো বটেই তার আবার পুরনো নাম্বার আছে, ২৯ না কিযেন। আবার নতুন ১৪ আর পুরনো ১৪ এই দুইয়ের মাঝামাঝি রয়েছে আরেকজন, ১৪/এ কাজেই ১৪ বলতে আপনি কি বুঝিয়েছেন, যাকে বুঝিয়েছেন সে কি বুঝেছে সেটা সকলের আগে জানুন। এটাই প্রচলিত গোলকধাধা
অনেকে বলেন নতুন করে আরেকবার নাম্বারিং করলে কেমন হয় একেবারে নিখুতভাবে। একেবারে উন্নতদেশের মত। এমন নাম্বার হবে যেন যেকেউ চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারে কে কোথায় বাস করে। রি-রি নাম্বারিং যেভাবে করা হচ্ছে মোবাইল ফোনের রি-রি-রেজিষ্ট্রেশন
সেটা জানার সৌভাগ্য সব বাংলাদেশীরই হয়েছে। যারা কয়েকবছর ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন তাদের নতুনভাবে নাম-ধাম-পরিচয়পত্র দিয়ে নতুনভাবে ব্যবহারকারী হিসেবে নাম লেখাতে হবে। যারা ফুটপাত থেকে কিনেছেন তাদের অত মাথা না ঘামালেও চলবে। এটাই হল রি-রেজিষ্ট্রেশন।
ফল হল সেই ধানমন্ডির নতুন-পুরাতন নাম্বারের মত। প্রয়োজন দেখা দিল নতুন নাম্বারিং এর। কাজেই, আরেকবার রি-রি-রেজিষ্ট্রেশন। এবার আর কোন ছাড় নেই। বয়স ১৮ না হলে হাতে মোবাইল নেই, এনআইডি না থাকলে মোবাইল নেই (বয়স ১৮ না হয়েও কারো কারো এনআইডি থাকতে পারে তাহলে!)। অফলাইন-অনলাইন ভেরিফিকেশন। আপনি মোবাইল ফোন ব্যবহার করে দুর্নীতি করবেন, টেন্ডারবাজি করবেন, ঘুস নেবেন, ছিনতাই করবেন, বিদেশে টাকা পাচার করবেন এসব সহ্য করা হবে না। সব অপরাধের মুল ওই ওইখানেই। মোবাইল ফোন। একবার বন্ধ করি, তারপর দেখি অপরাধ কিভাবে হয়।
জানেন না ইউরোপ-আমেরিকা কি করছে। হলিউডি ছবিতে দেখা যায়। যে ফোন করছে সে কোথায় কোন মোড়ে দাড়িয়ে আছে, কোনদিকে যাচ্ছে সব কম্পিউটার স্ক্রিনে দেখা যায়। আমরাও দেখব। তারপর ক্যাক করে ধরে ফেলব।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন ওসব সন্ত্রস-তন্ত্রাস বন্ধ রাখার নির্দেশ তো দিয়েছেনই। তারপরও না শুনলে তিনি কি করবেন ? কিছু একটা করতে তো হবে। ডিজিটাল দেশে এবার ডিজিটাল পদ্ধতিতে সব সমস্যার সমাধান করা হবে।
আমার দুশ্চিন্তা আসলে অন্যখানে। সেই যে, খায়-দায় চান মিয়া, মোটা হয় গফুর। খবরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছাত্রলীগের সন্ত্রাস-হাঙ্গামা, জেলভর্তি জামাত-শিবির কর্মী। কে জানে, আপনারও সেটা হতে পারে সেকারনে আগেই জানিয়ে রাখি।
হয়ত অনেক কষ্ট করে টাকা জমিয়ে শখ পুরন করে ক্যামেরা-ভিডিও-ইন্টারনেট সহ একটা ফোন কিনলেন। কোনমতে এনআইডি-র ব্যবস্থা করে সেটা নিজের নামে রি-রি-রেজিষ্ট্রেশনও করলেন। তারপর পথে বের হতেই একজন গলায় একহাত লম্বা ছুরি ধরে সেটা নিয়ে গেল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেহেতু সেটা বন্ধ করছেন না।
পুলিশের কাছে নালিশ করার মত এত বোকা আপনি নন। কোনমতে বন্ধুদের কাছে হা-হুতাস করে মনের দুঃখ মনে রেখে বাড়ি ফিরলেন। তারপরই,
রাতের বেলা পুলিশ এসে আপনাকেই ক্যাক করে ধরে নিয়ে গেল। মোবাইল ফোনে চাদাবাড়ি করস। মলমবাজি করস। টেন্ডারবাজি করস। সন্ত্রাস করস। চল থানায়।
কোর্টে বিচারক মশায় বললেন, এতো হাতেনাতে প্রমান। তার মোবাইল ফোনে সব তথ্য পাওয়া গেছে। কল রেকর্ড, রেজিষ্ট্রেশন, ঠিকানা, ছবি, এনআইডি, কোন গড়মিল নেই। ফরেনসিক এভিডেন্স। কোন জাড়িজুড়ি নেই। চার দিনের রিমান্ড।
এর পরের বর্ননা খুব বেশি প্রয়োজন নেই। জরুরী আইনের সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নিজের নেতাদের উপদেশ দিয়েছিলেন, আপনাদের রিমান্ডে নিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হবে, ইলেকট্রিক শক দেয়া হবে। ওসব এড়িয়ে চলবেন। যা শুনতে চায় তাই বলে আসবেন। তার দলেন নেতা না হয়েও আপনি সেই উপদেশ মানতে পারেন। প্রশ্ন করার আগেই বলতে শুরু করবেন, হ, আমি ছিনতাই করি, চুরি করি, ডাকাতি করি, টেন্ডারবাজি করি, ৭১ সালে রাজাকার আছিলাম, ওইখানে অস্ত্র লুকাইয়া রাখছি। আর যাই করেন ইলেকট্রিক শক দিয়েন না।
ঘটনা ঘটার আগেই জেনে রাখুন দেশ কোন নিয়মে চলে।

0 comments:

 

Browse