বিবর্তনে আবর্তন

Jul 6, 2010
সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গালাগালি করা হয়েছে কাকে, ডারউইন না মার্কস, সেবিষয়ে একমত হওয়া কঠিন হয়ত বৃটিশ ভদ্রলোকই এগিয়ে থাকবেন তিনি বলে বসলেন বিশ্ব এক সপ্তাহে তৈরী হয়নি প্রথম মানুষ হিসেবে এডাম-ইভ কিংবা আদম-হাওয়া তৈরী হয়নি কাজেই তার শত্রু বেশি হওয়াই স্বাভাবিক এমনকি এতদিন পরও সেই গালাগালি থামেনি
তবু রক্ষা গালিগালিকারকরা তার অরিজিন অব স্পেসিস নিয়েই ব্যস্ত থেকেছেন অনেকের মতে এরচেয়েও জোরালো বক্তব্য নিয়ে লেখা তার আরেক গ্রন্থ ডিসেন্ট অব ম্যান পড়ে দেখার সময় পাননি সেখানে তিনি নাকি ব্যাখ্যা করেছেন মানুষ কিভাবে মানুষ হল নিতান্ত নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি হলে অন্যভাবে বলতে পারেন মানুষ কিভাবে অমানুষ হল
এক কার্টুনিষ্ট এক ছবি একেছিলেন একদিকে আধুনিক মানুষ তাদের রয়েছে মিসাইল থেকে শুরু করে পারমানবিক অস্ত্রের পাহাড়, অন্যদিকে আদিম মানুষ হাতে লাঠি, পাশে পাথর অন্যদের দিকে হাত তুলে বলছে, দেখ ওরা বলে আমরা অসভ্য
যুগ যুগ ধরে আমরা সভ্য হয়েছি সভ্যতা নামের কিছু একটা হয়েছি তো বটেই বিশ্বকাপে ব্রাজিল হারল কেন, চল রাস্তায় কয়টা গাড়ি ভাঙি একে সভ্যতা না বলে উপায় কি
মানুষের মানুষ হওয়া নিয়ে প্রচলিত গল্পেরও অভাব নেই। এই গল্পটার কথাই ধরুন না কেন।
ভদ্রলোক গাড়ি থামালেন পেট্রোল পাম্পে। সাথেসাথে তিনজন এগিয়ে এসে সালাম দিল, কাজে হাত লাগাল। তিনি তেলের কথা বলে অফিসে ঢুকলেন। ফিরে এসে দেখলেন তার গাড়ি চকচক করছে। খুশি হয়ে তিনজনকে বখশিশ দিয়ে বিদায় নিলেন।
একটুপরই আবারও গাড়ি থামাতে হল আগের যায়গায়। আবারও সেই তিনজন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের কে কি করেছ ?
একে অন্যকে থামিয়ে তারা বলতে শুরু করল কে কাচ পরিস্কার করেছে, কে চাকায় পানি দিয়েছে কে পুরো গাড়ি চকচকে করেছে।
তিনি তাদের থামিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, গাড়িতে তেল ঢুকিয়েছে কে ?
তিনজন একে অন্যের দিকে তাকাতে থাকল।
এই গল্প বহু পুরনো কাজেই ধরে নেয়া যায় অন্যদেশ থেকে আমদানী করা। অন্তত একযুগ আগেও যখন এধরনের গাড়ির দৌরাত্ব ছিল না।
আমদানী হয়েছে নিশ্চয়ই পশ্চিমা দেশ থেকে। তারমানে এই ব্যবস্থা প্রচলিত পশ্চিমা দেশেও। তারমানে সারা বিশ্বে।
সেটাই তো স্বাভাবিক। সব যায়গাতেই তো মানুষ।
তাহলে বরং একেবারে দেশি গল্পটাই শুনুন।
ছেলে কিছুতেই ওষুধ খাবে না। মা কোনভাবে না পেরে অভিনব বুদ্ধি বের করলেন। এটা বৃথা যেতে পারে না। একটা রসগোল্লার মধ্যে ট্যাবলেট ঢুকিয়ে খেতে দিলেন। রসগোল্লার সাথেসাথে ট্যাবলেটটাও পেটে যাবে।
কিছুক্ষন পর জিজ্ঞেস করলেন, মিষ্টিটা খেয়েছ বাবা ?
ছেলে বলল, হ্যা-মা। বিচিটা ফেলে খেয়েছি।
সেই ডারউইনোর কথাতেই ফিরতে হচ্ছে। ভদ্রলোক অনেককিছুর ব্যাখ্যা করেছেন কিন্তু কখনো বলেননি মানুষের মধ্যে একটা সেন্সর কাজ করে। যা তাকে বলে দেয় কোনটা করতে হবে, কোনটা করা যাবে না। মানবকুলের জন্য একেবারে প্রজন্মগত সেই ফিল্টার ব্যবস্থা। বিবর্তনে যা পরিবর্তন হয় না।
আর গল্পের বক্তব্য যদি লক্ষ্য করেন তাহলে নিশ্চয়ই বুঝেছেন ফিল্টারে কি বাদ যায়।

0 comments:

 

Browse