ব্যবসা মানেই অগ্রগতি

Nov 25, 2010
বিশেষ একটা ব্রান্ডের সাবান মাখলে সারাদিন মনের আনন্দে থাকা যায় সেটা নিশ্চয়ই জানেন। কিংবা এক বোতল এনার্জি ড্রিংক খেলে নাচতে জানুন বা নাই জানুন, মনের আনন্দে নাচতে থাকবেন সেটাও জানেন। কিংবা বিশেষ সেন্ট গায়ে মাখলে রাস্তায় যত সুন্দরী মেয়ে আছে সবাই পড়িমড়ি করে আপনার দিকে ছুটে আসবে সেটাও জানেন।
আমি বিজ্ঞাপনের কথা বলছি। কিংবা বলতে পারেন ব্যবসার কথা, কিংবা ব্যবসায়ী কথা। তারা যা বলেন সদাসত্য বলেন। এমনকি দেশ কিভাবে চালাতে হবে সে বিষয়েও।
হরতাল দেশের অর্থনীতি ধ্বংশ করে, মানুষকে পংগু করে। কাজেই হরতাল করবেন না। প্রয়োজনে হরতালের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীরা মাঠে নামবে (অস্ত্র হাতে কিনা সেটা উহ্য)। মন্ত্রীও খুব উতসাহ পেয়েছেন সেকথা শুনে। ব্যবসায়ীরা যখন দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিচ্ছে তখন ....
ব্যবসায়ীরা সবই পারেন। দেশ কিভাবে চলবে পরামর্শ দিতে পারেন, দেশ চালাতে পারেন। আর নেতা আর ব্যবসায়ীর পার্থক্যই বা কোথায়। যিনি ব্যবসায়ী তিনিই যে নেতা। তিনিই মন্ত্রী। কাজেই তারা এমন কথা বলতেই পারেন। তবে একটা কাজ তারা পারেন না। গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীগুলির জন্য আইন করা হয়েছে বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ নদিতে ফেলার আগে শোধন করতে হবে। সেটা তারা মানাতে পারেন না। তাতে খরচ বাড়ে। পেটেভাতে কাজ করে যে শ্রমিক তার বেতন বাকী রাখা বন্ধ করতে পারেন না। তাতেও খরচ বাড়ে। প্রবাদ আছে কাক কাকের মাংশ খায় না। তারা ব্যবসায়ী হয়ে আরেক ব্যবসায়ীর ক্ষতি করবেন তাতো হয় না। তাদের কত প্রতিযোগিতা করে ব্যবসা করতে হয়। তাদের লাভের বিষয়টা তো দেখবেন। নইলে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক বেকার হবে যে। ক্রেতারা বেশি টাকা দিতে চায় না।
অবশ্য আমেরিকা ইউরোপের ক্রেতারা অন্য কথাই বলেন। তারা ইচ্ছে করলেই বেশি টাকা দিতে পারেন কিন্তু সেটা যাবে কোথায় ? যে টাকা শ্রমিকের খাবারের ব্যবস্থা হয় সেই টাকা বাকী থাকে কিন্তু মালিকের কোটি টাকার গাড়ি কেনা বন্ধ থাকে না যে!
দেশের কথা সবাইকে ভাবতে হয়। একেবারে গন্ডগ্রামের যে কৃষক সেও ভাবে। সংখ্যায় তারাই সবথেকে বেশি। নির্বাচনে তারা বিএনপিকে ভোট দেয়নি কারন তাদের রাষ্ট্রপরিচালনার দুর্গন্ধ। হরতালে দেশের ক্ষতি হয় সেকথাই বা বলছে কে ? আওয়ামী লীগের গা থেকে হরতালের দুর্গন্ধ কি বিদায় হয়েছে ? বিরোধী দলে থাকলেও হরতাল দেব না এমন কথা দিয়েও দিন-তারিখ ঘোষনা করা হয়েছিল সরকার পতনের। গিনেস বুকে হরতালের রেকর্ড যদি থেকেই থাকে সে তো তাদেরই। সরকারে যাওয়ার সাথেসাথে রঙ পাল্টালো কিভাবে ? আবার কি কথা দেবেন বিরোধী দলে থাকলেও ....
কথা হচ্ছিল ব্যবসায়ীদের নিয়ে। তারা দেশের জন্য সদা ভাবেন। কখন কে সরকার তাতে কি আসে যায়, হাত বাড়াতে হয় সরকারের দিকে। বিরোধী দলের কাছে হাত পেতে লাভ নেই।
মানুষ যখন ডুবতে থাকে তখন সামনে যা দেখে তাকেই আকড়ে ধরতে চায়। বিএনপিকে মানুষ সমর্থন করছে না কারন তারা খারাপ থেকে ভাল কি দেবেন সেটা পরিস্কার করেননি। যে কারনে খারাপ আরো খারাপ হচ্ছে। এখন ব্যবসায়ীরা যদি রাজনীতিতে অবদান রাখতে থাকে তাহলে সেটা খারাপ থেকে ভয়ংকর হবে, ইতিহাস সেটাই বলে।
ব্যবসা এবং দেশ চালনা দুটো পৃথক বিষয়। ব্যবসার উন্নতি লাভে, দেশের উন্নতি কল্যানে। আর ব্যবসায় কল্যান বিষয়টি অনুপস্থিত।

0 comments:

 

Browse