মহাশয়, যা সহায় তাই সয়

Dec 3, 2010
শরীরের নাম নাকি মহাশয়, যা সহায় তাই সয় প্রবাদ সেটাই বলে গরম সহ্য করুন সয়ে যাবে, ঠান্ডা সহ্য করুন সয়ে যাবে আধুনিক কালেও এর ব্যতিক্রম হয়নি এককালে মানুষ তালপাতার পাখা ব্যবহার করেও সুখে দিন কাটাত, বলেছেন মন্ত্রী তাহলে আমরা পারব না কেন ?
বাংলাদেশে অনেক বিদেশী আনাগোনা করেন নানা কারনে তাদের প্রথম লক্ষ্য, খাবার পানি অনেকে বিদেশী বোতলের পানি ছাড়া খান না দেশের বোতলের পানিও না ওটা নাকি তাদের সহ্য হয়না কারন তো একটাই, ওই সয়ে নেয়া ধীর্ঘদিন থাকলে একসময় সেটাও সয়ে যাবে নিশ্চয়ই শুধু পানি কেন, ফরমালিন থেকে শুরু করে আর্সেনিক পর্যন্ত দেখছে না আমরা কেমন সয়ে গেছি
একসময় বিদ্যুত গেলে মানুষ ফোন করতে বিদ্যুত অফিসে, আমার বাড়িতে বিদ্যুত নেই কেন, ব্যবস্থা নিন তারাও সাথেসাথে লোক পাঠাত খবর নিতে আজকাল ওসব হয় না মানুষ জেনে গেছে বিদ্যুত যাওয়াটাই নিয়ম কখনো একঘন্টা, কখনো দুঘন্টা বরং একঘন্টা বিদ্যুত থাকলে ঘন্টা পেরনোর আগেই প্রস্তুতি নিতে পারেন আরেকবার যাওয়ার জন্য এটাও ওই সয়ে নেয়ার গুন
জিনিষের দাম বাড়তি, এটাও সয়ে নেবার বিষয় একদিনে যদি তেলের দাম ২০ টাকা বাড়ে তাহলে খারাপ লাগে বটে তারপর সেটা যখন স্থায়ী হয় তখন আর খারাপ লাগে না বানিজ্যমন্ত্রীর সাথে যতবার বৈঠক হয় ততবার যখন ১০-১৫ টাকা করে বাড়ে সেটাও মানিয়ে যায় বরং পত্রিকায় যদি বৈঠকের খবর পাওয়া যায় তাহলে আগাম প্রস্তুতি নেয়া যায়
রাস্তায় যানজট এটা তো স্বাভাবিক ঘটনা অফিসে যেতে দুঘন্টা আগে বেরবেন তারপরও একঘন্টা লেট আপনারও মানিয়ে গেছে অফিসেরও মানিয়ে গেছে আপত্তি করছেন কেন ?
ভাড়া নিয়েই বা এত ভাবছেন কেন ? আপনার বয়স বাড়ছে, দেশের অর্থনীতি বড় হচ্ছে, জিনিষপত্রের দাম বাড়ছে সবকিছুই যখন বাড়তি তখন ভাড়াটাই বা উল্টোদিকে যাবে কেন ? মেনে নিন, ওটাও বাড়তে থাকবে টাকা কোথা থেকে সেনিয়েই বা ভাবার কি আছে ? টাকাও বাড়তি গত দুবছরে নাকি সরকার আগের সব রেকর্ড ভঙ্গ করা সুদে ঋন নিয়েছে আগামী ৩ বছরে আরো নিতে যাচ্ছে সব মিলিয়ে লক্ষ কোটি টাকার মত সে টাকা তো দেশেই থাকবে তারমানে আপনার হাতে আসবে কোন সুত্রে সেটা খুজে বের করাটাই বিষয় এখনই জ্যাক লাগান
সয়ে নেয়াটাই আসলে কথা। শুধু শরীরেই না, সবখানেই। বর্তমানের সাথে মানিয়ে নিন আর ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিন। দেশ আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ধনী হতে যাচ্ছে। দেশের প্রধান আয় হবে আউটসোর্সিং। লক্ষ লক্ষ কোটি ডলার আসবে সেখান থেকে। কাজেই প্রস্তুতি নিন।
যদি প্রশ্ন করেন ইন্টারনেটের গতি কমে ১ কিলোবাইটের নিচে গেছে কেন, দিন পেরিয়ে সপ্তাহ, সপ্তাহ পেরিয়ে মাস তারপরও ওই সাবমেরিন কেবলে সমস্যা নামের ভুত কাধ থেকে নামছে না কেন, কিংবা যে আউটসোর্সিং এর কল্যানে দেশ পরিনত হবে বিদেশে, সেই ইন্টারনেটের ব্যান্ডউইদথ বিক্রি করা হচ্ছে কেন,,
ও আপনি তো দেখি সত্যিকারের বাঙালী। কথা বেশি। এত কথা বলেন কেন ? দেশ যেভাবে চলছে তারসাথে মানিয়ে নিন। দেখবেন একসময় ইন্টারনেট ছাড়াও চলবে। আগেকার দিনে তো মানুষ চলত এখন চলবে না কেন ?
সহ্য করতে না পারলে সমস্যা আপনার। কদিন সহ্য করেই দেখুন না। সেই মোল্লা নাসিরুদ্দিনের কথা মনে নেই!
নাসিরুদ্দিন হোজ্জা বাজার থেকে একটা গাধা কিনে আনলেন তারপর এক অদ্ভুত কাজ শুরু করলেন তাকে একদিন যা খাবার পরদিন দেন তারথেকে কম, তার পরদিন তার থেকেও কম একসময় বেচারা গাধাটা মরেই গেল পাড়াপ্রতিবেশিরা এসে হোজ্জাকে রীতিমত ধমকাতে শুরু করল, মুতি কেমন মানুষ হে খাবার না দিয়ে গাধাটাকে মেরে ফেললে
হোজ্জা বলল, খাবার কমানোর অর্ভেস করাচ্ছিলাম গাধাটা মরে গেল তাই নইলে দেখিয়ে দিতাম একেবারে না খেয়েও গাধা বেচে থাকতে পারে
গাধাটা পারেনি সে গাধা বলেই। আপনি সেটা করে দেখান।

0 comments:

 

Browse