গনতন্ত্রের যত নিয়ম

Oct 15, 2010
শিরোনাম দেখে কেউ যদি ভেবে থাকেন গনতন্ত্রের পাঠদান করা হচ্ছে তাহলে ভুল করছেন। গনকিন্ত্র কি, কতপ্রকার, কিভাবে পরিধান করতে সেটা আপনারা আমার থেকে অনেক ভাল বোঝেন। অন্তত জরুরী আইনের সময় সেটা ভালভাবেই প্রমানিত হয়েছে। সংবিধান কতদিনের জন জরুরী আইনের অনুমতি দেয় সেনিয়ে কথা উঠেছিল। চারিদিকে রব শোনা গেছে, সংবিধান মানুষের জন্য, মানুষ সংবিধানের জন্য হতে পারে না। কিসের সংবিধান,  পাল্টে ফেলুন। মানুষ রক্ষা করুন। তারা যতদিন খুশি ক্ষমতায় থাকুক। দেশে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করুন।
অবশ্য সেই গতিপথ পাল্টাতে খুব সময় লাগেনি। কদিনের মধ্যেই আবারো রব উঠেছিল, আমরা গনতান্ত্রিক সরকার চাই। ওসব মোটামাথা মিলিটারী দিয়ে দেশ চলে না। ওরা দেশকে পাকিস্তান বানিয়ে ফেলবে। গনতন্ত্র টেনে আনো, হেইয়ো-
সেই গনতন্ত্রের কথা বলছি।
লোকে বলে (কোন লোকে জিজ্ঞেস করবেন না। এটা কথার কথা), গনতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধরে রাখে কিছু প্রতিষ্ঠান। প্রথমত বিচার ব্যবস্থা। পাকিস্তানের পারভেজ মোশাররফ বিচারককে বরখাস্ত করে টের পেয়েছিলেন ওখানে হাত দিলে কি হয়। সবকিছু ছেড়েছুড়ে যেতে হল ওই কারনেই। ওরাই বলে দেয় আইনের বক্তব্য আসলে কি। অন্যদের সবাইকে সেটা মানতে হয়। এমনকি জনগনের ম্যান্ডেট পাওয়া সরকারকে, উর্দি পরা সামরিক সরকারকেও।
দ্বিতীয় বিষয়টি প্রশাসন। এটা চাকরী করেন রাষ্ট্রের। যদি জেলা প্রশাসক হন তাহলে তো কথাই নেই। রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে রাষ্ট্রের স্বার্থে জেলার প্রশাসন ঠিক রাখার জন্য।
আর কথা বাড়িয়ে কাজ নেই। এই প্রশাসন কি করিলে কি হয় আমরা ভালভাবেই দেখেছি। পাবনার প্রশাসন বলেছিল আমরা সরকারের কথায় চলি না। তারা যাকে বলি তাকেই চাকরী দিতে হবে এটা রাষ্ট্রের পরিপন্থী। চাকরী পেতে চাও, যোগ্যতার পরীক্ষা দাও।
ফল, সরকারের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় সারির নেতাকর্মীদের হামলা, ভাংচুর, পরীক্ষা বাতিল। এবং শেষফল, পুরো প্রশাসনের গনবদলী। গনতন্ত্রের সার্থক ব্যবহার এখানেই।
নাটোরের প্রশাসন এত বোকা না। অন্তত পাবনার গনতন্ত্র দেখে শিক্ষালাভ করেছে তো বটেই। জেনেছে ওই বাহিনীর বিপক্ষে গেলে কি হয়। অমুককে পিটিয়ে মারা হয়েছে তো হয়েছে কি! জনসংখ্যা কমেছে। আর জেল-হাজত ওসব তোল ছাত্রদল-যুবদল-জামায়াত-শিবির দিয়ে ভর্তি। আর যায়গা নেই। তার ওপর লীগ ঢোকালে ওখানেই মারামারি খুনোখুনি হবে। তারচেয়ে বরং পৃথক থাক। ওরাও দিনবদলের হাওয়া খাক, আমরা মনের সুখে চাকরী করি।
আর ওদের ধরে মামলা করলে, জেল-ফাসি দিলেই বা কি যায় আসে। ওইযে২০ জনকে ফাসির রায় দিয়েছিল, ওরা তো এখানেই ঘোরাফেরা করছে।
আইন বিষয় আরেকটু জটিল। জটিল না বলে ভীতিকর বলাই ভাল। কখন কার অবমাননা হয়ে যায় বলা তো যায় না। মানের রং কি সেটা আবার জানা নেই।
বরং পত্রিকায় যেটুকু ছাপা হয়েছে সেটুকুই দেখি। খালেদা জিয়াকে ক্যান্টমেন্টে দেড়শ কাঠার বেশি যায়গার (বাপরে!) সরকারী বাড়ি ছেড়ে দিতে হবে। এটা কোর্টের হুকুম।  
ওটা সরকারী যায়গা, মালিকানা মিলিটারীর। তিনি যদিও বাস করছেন ৩ যুগের বেশি সময় ধরে। ওটার দলিল পত্রও নাতি তার নামে। এরশাদ সাব যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন তখন তার নামে লিখে দেয়া হয়েছে।
কে ? স্বৈরাচার এরশাদ! জানেন না সে অবৈধ সরকার। কোর্ট রায় দিয়েছে। সে যাকিছু করেছে সব অবৈধ। তার সময়ে করা দলিল অবৈধ। তার সময়ে জন্ম নেয়া মানুষ অবৈধ ..
গনতন্ত্রের সত্যিকারের চেহারা আসলে এটাই।

0 comments:

 

Browse