তালি একহাতেই বাজে

Sep 29, 2010
বকারামের বক্তব্যে অনেকেই নিশ্চয়ই বিরক্ত, অনেকে ক্ষুব্ধ। সত্যি বলতে কি, বকারামেরও বহুবার মনে হয়েছে অকারনে সময় নষ্ট করার প্রয়োজন কি। শ্রোত যেদিকে টেনে নিয়ে যায় সেদিকে যাওয়াই উত্তম। অন্যদিকে যাবার চেষ্টা করলেই শ্রম দিতে হয়। সফল হওয়ার নিশ্চয়তা নেই। তারপরও,
তারপরও কথা থেকে যায়। ডাষ্টবিনের পাশে অবস্থান করে ডাস্টবিনের গন্ধ ভুলে থাকা যায় না। তাকে সুগন্ধ মনে করে তৃপ্তিলাভ করা যায় না। পাশের বাড়িতে আগুল লাগলে একসময় তা নিজের বাড়িতে পৌছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন পাবনায় একহাতে তালি বাজেনি। জেলা প্রশাসক একপক্ষ, আরেকপক্ষে যুবলীগ-ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগ। জেলা প্রশাসক নিজের পছন্দমত লোক ঢুকাবেন সরকারী চাকরীতে আর অন্যরা চুপ করে বসে থাকবে হাত গুটিয়ে তাতো হয়না। সেজন্যই ওই তালির ব্যবস্থা। তারা শুরু করেছে, শেষ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। রাতারাতি জেলাপ্রশাসক, পুলিশ সুপার বদল। পাবনা থেকে মনপুরা। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার ব্যাখ্যা, এটা সংকেত। অন্যরা দেখে শিক্ষা নিন।
সেখানেই একটু গিট্টু লেগেছে। তালি একহাতে বাজা ভাল, না দুহাতে বাজা ভাল।
আমাদের সাংসদরা সংসদ অধিবেশনে খুব দক্ষতার সাথে তালির জন্য টেবিল ব্যবহার করেন। তখন একহাতই যথেষ্ট। বলতে কি, উপকারী। অন্যপক্ষ তাতে অংশ নেয় না। জেলা প্রশাসককে বদলী করা কিংবা দলের মধ্যে থেকে চাকরী দেয়া এগুলিও ওই একহাতে তালি বাজানোর মতই। অন্যহাত যদি তালি বাজাতে চায় তাহলেই বিপত্তি। প্রয়োজনে আরেকহাত অকেজো করে দেয়া হবে যদি তালির প্রতিযোগিতায় নামে।
এতেও কিছু যায় আসে না। তালি জিনিষটা খারাপ না। আমার শংকা আসলে অন্য যায়গায়। সেই পুরনো উদাহরন আবারো উল্লেখ করতে হচ্ছে, একসময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাসিম সাহেব পুলিশের পিটুনি খেয়ে হাসপাতালে। তারপর একসময়ের স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী বাবর সাহেব হাজতে-রিমান্ডে-জেলে।
যদি কোনভাবে দিনবদল হয়!
পুলিশের সাইকোলজী বোঝা খুব কঠিন। যখন যার তখন তার, এটা একটা দিক। আবার এটা করতে গিয়ে যা জমা হয় তা একই নিয়মে কাজে লাগে পরবর্তীকালে। তারা কাজ করেন সরাসরি জেলা প্রশাসক-পুলিশ সুপারের কথামত, কখনোই রাজনৈতিক নেতার কথামত না। এখন যারা একপক্ষে তারা যদি কোনভাবে অন্যপক্ষে যান তখন কি হবে ? যে পুলিশ সদস্য ছাত্রলীগের নেতার পিটুনি খেয়েছেন তিনি কি সেটা ভুলে গেছেন ? নাকি যাবেন ? নাকি অপেক্ষা করবেন বিপরীত হাওয়ার ?
আওয়ামী লীগের ভেতর থেকে চাকরী দেয়া হবে, একথারই বা অর্থ কি ? দেশের শতকরা কতজন আওয়ামী লীগের ? ভোটের সময়ও কোন হিসেবই ৪০ ভাগের বেশি হয়না। বাকি ৬০ ভাগ চাকরী ছাড়া, টেন্ডার ছাড়া চলতেই থাকবেন এটা কতটুকু বাস্তবসম্মত।
বিমানমন্ত্রীকে নিয়ে জোরালো খবর হয়েছে বেশ কিছুদিন। তার প্রতিদ্বন্দী বিশাল, শতকোটি-হাজার কোটি টাকার মামলা। তিনি নিজে আবার সরাসরি লীগের কেউ নন। তাকে হুমকি দেয়া হয়েছে মোবাইল ফোনে, এসএমএস পাঠানো হয়েছে। তার বড় বিপদ হবে, আগেই জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
ডিসি-এসপি-মন্ত্রী যখন হিমসিম খাচ্ছেন তখন সাধারন মানুষ তো পোকামাকড়।
শংকাও সেকারনেই।
সরকারের কাছে অনুরোধ, তালি একহাতে বাজানোর বিষয়টি চিরস্থায়ী করার ব্যবস্থা করুন। কোনভাবেই যেন দুহাত একসাথে না হয়। নইলে বাঘে-মহিষের লড়াইয়ে নলখাগড়ার প্রাণ যাবে অকারনেই।

0 comments:

 

Browse