বাকিটা আপনার হাতে

Apr 17, 2011
সংবিধিবদ্ধ শতর্কীকরন : ধুমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর আপনি ধুমপান করুন বা নাই করুন, সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে নিশ্চয়ই লেখা দেখেছেন ধুমপান করার সময় দি হাতে কাজ না থাকে তাহলে প্যাকেটটা হাতে ধরে তাকিয়ে থেকেছেন সেদিকেই আর ভাবতে চেষ্টা করেছেন, কথাটার আসলে মানে কি ?
কিংবা কখনো কখনো হয়ত আরো শক্তিশালী লেখাও দেখেছেন ধুমপান মৃত্যু ঘটায় তারমানে কি ? ধুমপান করলে একসময় মারা যাবেন, যদি বাচতে চান ধুমপান ত্যাগ করুন অধুমপায়ীর মৃত্যু নেই
সংবিধিবদ্ধ মানে হচ্ছে সংবিধানে লেখা আছে আপনি যখন সংবিধানের আরকিছু জানার সুযোগ পাচ্ছেনই না তখন অন্তত ধুমপানের পুরস্কার হিসেবে তার একটি বাক্য জেনে রাখুন ওই সিগারেটের প্যাকেট থেকে এরবেশি জানলে তো বিপদ নানারকম প্রশ্ন করতে শুরু করবেন সংবিধানে অমুক কথা লেখা আছে তাহলে ওটা হল কিভাবে ? এইসব সংবিধান আর ধর্মগ্রন্থ দুটো সমমানের বস্তু সন্মান করবেন, খুলে দেখবেন না ভেতলে দেখলেই বিপদ
সংবিধান বলে কিছু একটা থাকতে হয় বলেই আছে কোন কোন দেশ আবার ওটা ছাড়াই নাকি চলে কি অসভ্য দেশ রে বাবা রীদিমত সাংসদ আছে অথচ লেখা সংবিধান নেই রাজনীতি করে কি নিয়ে ?
ও, ভুল হয়ে গেছে সংবিধান না থাকতে পারে, আইন তো আছে ওটা নিয়েই দিব্বি সময় কাটানো যায় অমুক বিষয়ে আইন করতে হবে, তমুক আইন পাল্টাতে হবে, সমুক আইন সেকেলে বলে সমালোচনা করতে হবে আইন করা হবে, হচ্ছে বলে এক রাজনৈতিক জীবন অনায়াসে কাটানো যায় এমনকি পরবর্তী প্রজন্মকেও হাতেধরে শিখিয়ে দেয়া যায় আইন নিয়ে কথা বল, আইন তৈরী কর মানুষকে ব্যস্ত রাখ ওরা যেন আইনের বাইরে যেতে না পারে
যেমন ধরুন, মোবাইল ফোনে কখন কথা বলবেন সে নিয়েও আইন
বাপরে, এতদিন এটা চোখে পড়েনি কেন ? আরো আগেই তো হওয়া উচিত ছিল অন দেশতো আগেই শুরু করেছে আমেরিকার বহ যায়গায় নাকি গাড়ি চালানোর সময় ফোন ব্যবহার নিষেধ এসএমএস নিষেধ সরকারী অফিসে নাকি লেখা থাকে, কথা শুরুর আগে মোবাইলের কথা শেষ করুন
ওদের নিয়ম অবশ্য আলাদা মোবাইলের কথা শেষ করে আসুন অর্থ সরকারী বেতন নেয়া একজনের সাথে কথ বলবেন আর পকেটে ফোন বেজে উঠবে, তারসাথে জরুরী কথা বলতে শুরু করবেন, এটা চলবে না লেখা যত সাদাসিদেই হোক, এদিক ওদিক জলে জরিমানা গুনতে হয় সাধারন মানুষ হলে জরিমানা, নেতা হলে জরিমানার সাথে ফাউ হিসেবে নানারকম কৈফিয়ত নেতাগীরি চলে যেতে পারে
আমরা ওতদুর যাচ্ছি না শিক্ষা প্রতিস্ঠানে ক্লাশের মধ্যে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না একে বলে প্রজ্ঞাপন বিজ্ঞাপনের কাছাকাছি আরকি জানিয়ে দিলাম, যদি মনে চায় ...
আপনি প্রশ্ন করতে পারে, দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিস্ঠান হচ্ছে মোবাইল অপারেটর, দেশের ১ নম্বর ব্রান্ড ওটাই, দেশের সবচেয়ে বড় করদাতাও তারাই এদেশের মানুষ মোবাইলে কথা বলবে নাতো কি করবে ? একসময় টিএন্ডটি গলা টিপে রেখেছিল বলে কথা বলার সুযোগ পাইনি এখন প্রযুক্তির কল্যানে এটুকু পেয়েছি চাইলে সাথে করে টয়লেটে নিয়ে যাওয়া যায় আর এর ওপর খবরদারী করছেন! ওদের আয় কমে গেলে অবস্থা কি দাড়াবে ভেবেছেন ?
আপনি বুঝতে ভুল করেছেন টয়লেটে নিতে তো নিষেধ করা হয়নি বলা হয়েছে ক্লাশে ব্যবহার করা যাবে না শিক্ষক আর ছাত্র, ওদের জন্য আরকি আর, না মানলে কি করা হবে সেটাও তো বলা হয়নি ওইযে ট্রাফিক পুলিশ যখন সামনে জানজট রেখে মোবাইলে আলাপ করে তখন কি আমরা কিছু বলি ? দোকানদার যখন ক্রেতার দিকে পিঠ দিয়ে মোবাইলে আলাপ করে তখন কি কিছু বলি ? আর আপনি যখন একজনকে অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে মুল কথা শুরু করতে যাচ্ছেন ঠিক তখনই যখন তার ফোন বেজে ওঠে, ফোনে রসালাপ-গালাগালি যাই হোক শুরু করে, আপনাকে আবারো শুরু করতে হয় শুরু থেকে, তখনও তো কিছু বলিনি। হাজার টাকার পোষাকের মত মোবাইল ফোন হল আভিজাত্যের প্রতিক দামী একটা ফোন পকেটেই রেখে দেবেন, কাউকে দেখাবেন না, তাতো হয় না সেটা যতখুশি করবেন কিন্তু ক্লাশের মধ্যে.., লোকে নানাকথা বলে আজকাল মোবাইল ফোন তো মোবাইল ফোন নেই রীতিমত ভিডিও ক্যামেরা
তাই বলছিলাম আরকি আমরা নিষেধ করেছি বাকিটা আপনার হাতে ... 

0 comments:

 

Browse