কথার মজা

Apr 11, 2011
র‌্যাট নামে বিশেষ বাহিনী যখন তৈরী করা হয়েছিল তখন কেউ কেউ বলতে চেষ্টা করেছিন, র‌্যাটের জন্য ক্যাটের ব্যবস্থা রয়েছে তো! সৃষ্টিকর্তা যখন ইদুর তৈরীর সাথেসাথে বিড়ালও তৈরী করেছেন।
সেকথা বেশিদিন টেকেনি। র‌্যাটের নাম পাল্টে র‌্যাব বানানো হয়েছে। কিন্তু বিতর্ক থামেনি। ক্রশফায়ার নামের একটি বিশেষ ব্যবস্থা চালু হয়েছে তখন থেকে। বরাবরই একই ব্যাখ্যা। র‌্যাবের দিকে গুলি চালালে তারাও পাল্টা গুলি ছুড়েছে, সেটাই ওই ক্রশফায়ার। এই ব্যাখ্যা যখন চারিদিকে সমালোচনার মুখে পরল তখন একসময় সেটাও পাল্টানো হল। নাম হল এনকাউন্টার। মন্ত্রী একদিন বলেই দিলেন, আমরা এখন আর ক্রশফায়ার বলি না, এনকাউন্টার বলি। কাজেই ক্রশফায়ার বলে কিছু নেই।
ক্রশফায়ার বা এনকাউন্টার যাই হোক না কেন, এর সমালোচনা কখনো থামেনি। এর সৃষ্টি হয়েছিল চারদলীয় জোট সরকারের সময়। বিরোধীদল এতটাই সমালোচনা করেছিল যে তাদের প্রশ্ন করা হয়েছিল তারা ক্ষমতায় গেলে র‌্যাব বন্ধ করে দেবেন কি-না। তারা অবশ্যই বন্ধ করার কথা বলেননি।
তারপর সত্যিসত্যিই ক্ষমতা হাতবদল হয়েছে। র‌্যাবের প্রতিশব্দ হিসেবে ওই ক্রশফায়ার কিংবা এনকাউন্টার শব্দটি এখনও লেগে আছে। এখন সমালোচক বিরোধীদল। যারা এই র‌্যাব সৃষ্টি করেছিল।
আর শুধু বিরোধী দলই বা কেন ? ওই মানবাধিকার বলে যে শব্দ আছে, অনেকেই সেটা নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করেন তারাও বলেন। তাদের কথায় অবশ্য কান দেয়ার কিছু নেই। এরসাথে আবার সুর মিলিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারাও তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ....
ফলে বিতর্কটা জমেছে ভালই। বিরোধী দলের বক্তব্য, আমরা সবসময়ই বলে আসছি একথা। আর তাদের বিরোধীদের বক্তব্য, কোনমুখে ওকথা বল। তোমরাই তো র‌্যাব সৃষ্টি করেছে। তোমরাই তো শুরু করেছ ক্রশফায়ার।
এর ব্যাখ্যা অন্যভাবেও দিতে পারেন। র‌্যাব তৈরী আসলে বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র। যেমন বিদ্যুত সমস্যা, দ্রব্যমুল্য, গ্যাস-পানি-যানজট-শেয়ার কেলেংকারী এসবও তাদের ষড়যন্ত্র, তেমনি। আবার আরেকটু ঘুরিয়ে বলতে পারেন র‌্যাবের হাতে যত মানুষ মারা যায় তারচেয়েও বেশি মারা যায় পুলিশ হেফাজতে। তারা আবার ফুটপাতের ব্যবসায়দের কাছে চাদা নেয়, ছিনতাইকারীর কাছে টাকা নিয়ে ছিনতাইয়ের সুযোগ করে দেয়, তাদের টাকা না দিয়ে কেউ বৈধ-অবৈধ কোন ব্যবসাই করতে পারে না। এটা আসলে বৃটিশদের ষড়যন্ত্র। পুলিশ তো তারাই করে গেছে।
কথা বলতে আমরা অত্যন্ত পছন্দ করি। একজন যদি হ্যা বলে তবে আমাকে তো না বলতেই হয়। কথা না বললে লোকে জানবে কিভাবে আমি আছি কি নেই। লালন হিন্দু-মুসলমান ভাগাভাগির সমালোচনা করে গেছেন। বিএনপি-আওয়ামী লীগের ভাগাভাগি যে তারচেয়ে বড়। ধর্ম ছাড়া যায়, দলের বিপক্ষে কথা শুনে চুপ করে থাকা দায়।
কেউ হয়ত বলতে পারেন দেশে একপক্ষেরই সরকার থাকে। দেশে যদি আইনপরিপন্থি কিছু হয় সেটা সামলানোর দায়িত্ব সেই সরকারের, বিরোধীদলের না। সে কোন দলের তাতে কি যায় আসে। সমালোচনা থেকে শিক্ষা নিয়ে তবেই উন্নতি। কত বছর আগে বিরোধী দল ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় কি করেছিল সেকথার জের টেনে লাভ কি ?
আর র‌্যাব-পুলিশ শুধু ক্রশফায়ার নিয়েই ব্যস্ত থাকে না। বহু ভাল কাজ করে। সমাজে এখনো অপরাধ যতটা কম আছে সেটা তাদের কৃতিত্ব। একমাত্র সমস্যা ওই ক্রশফায়ার নামের বিষয়টি। আর মন্ত্রী-র‌্যাব প্রধান যখন একবার বলেন কশেফায়ার বলে কিছু নেই, আরেকবার বলেন ক্রশ বৈধ প্রক্রিয়া তখন তাদেরই বা দোষ কোথায়।
এ কথায় মজা কোথায়! মজা আছে এমন কথা বলতে হয়।

0 comments:

 

Browse