মনের মত পেশা

Sep 7, 2010
পেশা হওয়া চাই মনের মত তবে না কাজ করে আনন্দ সবসময় ফুর্তিমনে কাজ করবেন শেষ হলে মনে হবে, আহা কাজটা এত তাড়াতাড়ি শেষ হল আরেকটু বড় হলে কতই না ভাল হত মনমাতানো গল্পের মত অবসর সময়েও মনে হবে, আহা আরেকটু কাজ যদি থাকত-
না এটা আসলে পাগলামি অন্তত যাকে কাজ বলে সেটা নিয়ে কেউ এমন পাগল হয় না অকাজ-কুকাজ নিয়ে হলেও হতে পারে, কাজ নিয়ে কক্ষনো নয়
কথা হচ্ছিল পেশা নিয়ে একটা না একটা পেশা থাকতে হয় একসময় ধরেই নেয়া হত বড় পড়ালেখা করে বড় চাকরী করবে নাম হিসেব করে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ারও বলা হত আর ব্যবসা করে অর্ধশিক্ষিত নয় মুর্খ লোকজন টাকা থাকতে পারে, সন্মান নেই
ক্রমেই সেটা বদল হতে শুরু করল দেখা গেল সন্মানের চেয়ে টাকার কদর বেশি ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে চাকরী করার চেয়ে ব্যবসা করে লাভ বেশি
আরেকটি বিষয় যোগ হল এরসাথে মাঝেমাঝে ক্ষমতা যায় মিলিটারীর হাতে তখন তাদের আর রোখে কে আইন-আদালত-সংবিধান ওসব বাক্সে তোলা থাক সব চলবে লাঠি আর বন্দুকের খোচায় অমুকে চুল লম্বার রেখেছে, ধরে কেটে দাও পেটাও অমুকে বিচ্ছিরি পোষাক পড়েছে, আলকাতরা লাগাও লোকে খাড়া-বড়ি-থোড়, থোড়-বড়ি-খাড়া। নৌকা-ধানের শীষ-লাঠি। লাঠি-ধানের শীষ-নৌকা।
কাজেই পেশায় নতুন একটা অপশন যোগ হল কোনমতে বিএমএ-তে একবার ঢুকলেই হয় রাস্তার মোড়ে মোড়ে শুরু হল আইএসএসবি কোচিং অব মেজর, অব ক্যাপ্টেন।
আর কোচিং এর কথাই যখন উঠল তখন শিক্ষকরাও বাদ থাকবেন কেন ? অত বছরের অভিজ্ঞ শিক্ষক, বোর্ডের প্রশ্নপত্র প্রনেতা, নিজেই মডারেটর আপনারা লাইন দিন একসময় নোট বইতে নাম লেখা থাকত জনৈক অভিজ্ঞ শিক্ষক নোট বইয়ে নিজের নাম লেখাটা লজ্জার ব্যাপার এখন আর লজ্জাটজ্জার বিষয় নেই খামোখা রাখঢাক করে কি হবে সকলেই জানে শরীরের কোথায় কি আছে তাহলে আবার জামাকাপড় কেন
কাজেই, মেধা প্রয়োজন নেই, মুল বই প্রয়োজন নেই। অমুকের লেখা গাইডই যথেষ্ট
স্কুলের শিক্ষকরাও বা বাদ যাবেন কেন ? কষ্ট করে যায়গা ভাড়া নিয়ে কোচিং সেন্টার দিতে হবে কেন ? যায়গা তো স্কুলে আছেই ছাত্র-ছাত্রীও তো বাধা ক্লাশ শেষে আরেকবার ঢোকালেই হল কার কি বলার আছে ?
শুধু কিছু লোকজন সমস্যা তৈরীর জন্য তৈরী হয়েই থাকে একটু শান্তিমত দায়িত্বপালন করব সেটাও করতে দেবে না ওইযে টিভি চ্যানেল, ধারাবাহিকভাবে দেখাচ্ছে স্কুলে কোচিং ধুত্তোর, ওইসময় নাটক দেখালেই তো হয় বাবা
কিন্তু দেখানো যখন হয়েই গেছে তখন আর কি করা সরকার হিসেবে চুপ করে থাকা তো চলে না কথা না বললে বুদ্ধিজীবীর মান থাকে না জ্ঞান, সচেতনতা, দেশপ্রেম প্রকাশ পায় না।
কাজেই, হে জনগন, ওইসব কোচিং সেন্টার মেধার ক্ষতি করছে স্কুলে স্কুলে কোচিং নামে ব্যবসা করতে দেয়া হবে না
কোচিং বন্ধ করতে বলেন ?
সেটা কেমন কথা তাহলে লেখাপড়া হবে কোথায় ? পড়াশোনা শিখবে কোথায় ? ভর্তি হবে কিভাবে ? ওকথা বলিনি। আরে ওইসব এসএসসি, এইচএসসি ওসব তো চাকরী করতে কাজে লাগে ভর্তি হতে কি ওসব দেখলে চলে! ওজন্য কোচিং সেন্টার আর ভর্তি পরীক্ষা ভর্তি পরীক্ষাই আসল পরীক্ষা। সব কেরামতি তো ওখানেই হয়।
বলছিলাম পেশার কথা। পেশা পছন্দ না হলে ঝামেলা। কাজে মন বসে না। তারওপর পরের কথা শোনা। অমুক কাজ তমুক সময়ে করতে হবে, সমুক বিষয় জানতে হবে। কাজে এদিক ওদিক হলেই ঠ্যালা। এত হাঙ্গামার দরকার কি বাবা!
উল্লেখ করা কোন ব্যবসাই যদি না জোটে তাহলে শেয়ার ব্যবসা হতে পারে মনের মত ব্যবসা। টাকা জোগাড় কর, মতিঝিল যাও, শেয়ার কেন। কষ্ট করে মাথা ঘামাতে হবে না, শিখতে হবে না, শেখাতে হবে না। কিনবেন-বেচবেন আর লাভের টাকা গুনবেন। সেইসাথে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ করার বিষয় তো আছেই। একঢিলে বহুপক্ষী।
দেশে বেকারের সংখ্যা নাকি দেড় কোটির মত। কয়েক ডজন শেয়ার মার্কেট চালু করলেই সমাধান হয়ে যায়।
যারা দেশ চালায় কতদিনে যে তাদের হুস হবে!

0 comments:

 

Browse