এভাবেই প্রতিষ্ঠালাভ করতে হয়

Sep 8, 2010
এর মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হল। কোন মন্ত্রী যখন একথা বলেন তাকে গুরুত্ব দেয়ার রেয়াজ উঠে গেছে বহুদিন হল। প্রচলিত কথা, কুকুর কাউকে কামড়ালে খবর হয় না, কেউ কুকুরকে কামড়ালে খবর হয়। বিষয়টা তেমনই। তারপরও,
হ্যা, সবকিছুর পরও কিছু ব্যতিক্রম থেকে যায়। দৃষ্টি দিতে হয়। এইকথাও গুরুত্ব পাওয়ার দাবী করে কারন, কথাটা বলা হয়েছে বিশেষ এক অনুষ্ঠানে। কোর্টের রায়ে মৃত্যুদন্ড পাওয়া ২০ জন আসামীকে রাষ্ট্রপতি মানবতার উদাহরন সৃষ্টি করে ক্ষমা করার পর তাদেরকে ফুলের মালা দিয়ে বরন করার অনুষ্ঠানে।
এভাবেই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা যায়। সরকারদলের লোককে কোর্ট মৃত্যুদন্ড দেবে এটা কি আইন হতে পারে! একজন-দুজন না একবারে ২০ জন। তাহলে সেখানে দলের কিছু থাকে ?
খুন করা হয়েছে কাকে সেটাও বিবেচনায় আনা হয়নি। সেতো ওই দুনীতিবাজ চারদলীয় জোট সরকারের এক মন্ত্রীর আত্বীয়। তাকে খুন করায় অপরাধ কোথায়। সেতো মংগলের কাজ। সওয়াবের কাজ।
ওসব রাজনীতির কথা বরং থাক। রাষ্ট্রপতি দয়া দেখিয়েছেন এটাই বড় কথা। দয়ার চেয়ে বড় কিছু নেই। ক্ষমার চেয়ে মহত গুন নেই। আশা করা যায় তিনি তার স্ত্রীর খুনিদেরও ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। দেশে যখন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েই গেছে।
আপনি তর্ক করতে চাইলে করতে পারেন। সরকার যদি চায় তাহলে রাষ্ট্রপতি আর কিইবা করতে পারেন। ক্ষমতা তো প্রধানমন্ত্রীর হাতে। আর তিনি শুধু প্রধানমন্ত্রীই নন, দলের প্রধানও বটে। দলের নেতা-কর্মীদের কথা তাকে ভাবতে হয়।
কিন্তু সেখানেও কিছু কথা থেকে যায়। ভারতে একজনকে খুনের দায়ে মৃত্যুদন্ড রায় দেয়ার পর সারা ভারতে, সারা বিশ্বে মানুষ প্রতিবাদ করেছিল। কাউকে মেরে ফেলা শাস্তি হতে পারে না। মানুষকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত মানুষ নিতে পারে না। কলকাতার নামিদামী কবি-সাহিত্যিক থেকে শুরু করে সবাই রাজপথে পর্যন্ত নেমেছিলেন। শেষ ভরসা ছিল রাষ্ট্রপতি। তিনি ইচ্ছে করলে নিজের গুনে সেটা পাল্টাতে পারেন। তাকে বাকিজীবন জেলে রাখতে হয় রাখুন অন্তত মেরে ফেলার হাত থেকে বাচান।
তাতে কাজ হয়নি। রাষ্ট্রপতি কালাম সাহেব সেদিকে ঘুরেও তাকাননি।
তারা নিশ্চয়ই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায় না।
কিন্তু, সেটা অন্য দেশের কথা। তাদের রাষ্ট্রপতি সরকারের কথায় চলে না। এদেশ আলাদা। তারপরও, রাষ্ট্রপতি একেবারে পুতুল, সরকারের কথার একটুকু নড়চড় করেন না একথাই বা বলা যায় কিভাবে। ওই চারদলীয় জোট সরকারের সময়ই তো রাষ্ট্রপতি তার পদ ছেড়ে দিয়েছিলেন। কি কারনে জানাননি যদিও কিন্তু গুজব ওটাই, দলের সাথে মতের মিল না হওয়া। তিনিও পদ না ছেড়ে অনায়াসে তরল পদার্থ হয়ে যেতে পারতেন। যে পাত্রে থাকবেন সেই পাত্রের আকার ধারন করবেন। অন্তত দেশের সবচেয়ে সন্মানিত পদ তো থেকে যেত।
সেটা হয়নি। কারন একটাই, তিনি দেশের স্বার্থ দেখেননি। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হোক সেটা চাননি। দেশের উন্নতি হোক সেটা চাননি।
আসলে দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানো প্রয়োজন। প্রয়োজনে চশমা পাল্টানো প্রয়োজন। নতুন আইন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কেটে মার্কেটে ঘুরেছেন কোথাও চাদাবাজি চোখে পড়েনি। আর চাদাবাজি কি!  চাদাবাহি বলবেন না। দেশে চাদাবাজি বলে কিছু নেই। ওরা টাকাপয়সা যা নেয় ওটা সার্ভিস চার্জ। নতুন আইন করা হয়েছে, আপনারা রশিদ বুঝে নিয়ে সেটা দেবেন। রশিদ ছাড়া দিয়ে প্রতারিত হবেন না।
কে খুন হল, কে নিরুদ্দেশ হল এসব কথা বলবেন। ওটাও আইনের আওতায়। র‌্যাবের প্রধান তো স্পষ্ট করেই বলেছেন, ক্রশফায়ারকে বিচারবহির্ভুত হত্যা বলা যায় না। দেশের প্রয়োজনেই এটা করা হয়। এটা আইনসিদ্ধ। আইনের শাসন এতেই প্রতিষ্ঠিত হয়।
আপনিও দিক্ষা নিন, এভাবেই প্রতিষ্ঠালাভ করতে হয়। দেশ-দল বাচাতে হয়। ধনী ব্যক্তি, ধনী দল। তবে না ধনী দেশ।

0 comments:

 

Browse