মদের টাকায় চিনি খান

Aug 25, 2010
এক লিটার তেলের দাম ছিল ১৩ টাকা, সে অনেক দিন আগের কথা। কাজেই শুরু করা যেতে পারে এমনভাবে, অনেক অনেক দিন আগের কথা, এই বলে।
চাকুরীজীবীদের অনেক সময়ই দোকানে কিছুএকটা খেয়ে দুপুরের খাবার পর্ব সারতে হত। ফাষ্ট ফুড মাত্র যাত্রা শুরু করেছে। সেখানেই এক সহকর্মীর কাছে শোনা, মিডল ইষ্ট থেকে তেল কিনে এনে রিফাইন করে তারপর দাম ১৩ টাকা, আর ১ লিটার দেশের পানি বোতলে ভরলে ১৮ টাকা। ব্যাপারটা কি বলুন তো!
এই ব্যাপারের উত্তর দেয়া আমার সাধ্যের বাইরে। বরং বর্তমানের দিকে একবার দৃষ্টি দিলে রহস্য আরো ঘনিভুত হওয়ার সম্ভাবনা।
এক কেজি চিনি তৈরীতে কারখানার খরচ ৮৬ টাকা। সরকারের বেধে দেয়া নিয়মে সেটা মিলগেটে বিক্রি করতে হয় ৪৩ টাকায়। প্রতি কেজিতে ৪৩ টাকা লোকসান। আর পৃথিবীর আরেক প্রান্ত ব্রাজিল থেকে যদি ইমপোর্ট করেন তাহলে কেনার দাম, আনার খরচ, নিজের লাভ সবহিসেব মেলানোর পরও দাম তারথেকে কম।
আসলে রহস্য রহস্যই। মানুষ রহস্য পছন্দ করে। সেকারনেই রহস্য গল্প, রহস্য সিনেমা এসবের কাটতি বেশি। তাহলে বাস্তবে রহস্য পছন্দ করবেন না কেন ? রীতিমত প্রাকটিক্যাল জোক।
তাহলে কথা হচ্ছে, চিনি কারখানাগুলো চালু রাখতে হবে। নইলে দেশের মান যায়, বহু মানুষ বেকার হয়। কাজেই শতশত কোটি টাকা ঢালতে হবে সেখানে। এই টাকার জোগান দেবেন আপনি।
সরকারের সামর্থ্য বলেও কথা আছে। কত আর দেয়া যায়। একদিকে দিলে আরেকদিকে টান পরে। কাজেই, সমাধান প্রয়োজন। আর সমাধান তো আছেই-
সব চিনি কোম্পানী লোকসান করলেও কেরু নামের কোম্পানী লাভ করছে। তারা স্পিরিট, এলকোহল আর ভিনিগার তৈরী করে ক্ষতি পুশিয়ে লাভের মুখ দেখছে। তাহলে সেপথে গেলে ক্ষতি কি ?
ভেজাল মদ খেয়ে যখন মানুষ জীবন দিচ্ছে তখন তাদের বাচানোও সরকারের দায়িত্ব। সরকার এভাবে অকারন জীবনহানি দেখতে পারে না। আবার মদ্যপানের সংখ্যাও নাকি উল্লেখযোগ্য পরিমানে বেড়েছে। মানুষের আর্থিক সামর্থ্য বেড়েছে, সংস্কৃতির উন্নতি হয়েছে, রুচির পরিবর্তন হয়েছে, সচেতনতা বেড়েছে। তাহলে চিনি কারখানাগুলোকে বাচাতে মদ কারখানা করতে সমস্যা কোথায়? অবস্থা ভাল দেখলে রপ্তানীও করা যাবে।
না, এমন একটা সুযোগ হাতছাড়া করা যায় না। এতে কারো কোনরকম আপত্তি চলতে পারে না। এটাই করা হবে। দেশের ক্ষতি, জনগনের ক্ষতি এসব বছরকে বছর চলতে পারে না। একবার পরিসংখ্যানটা দেখুন তো। চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের ৫১টি কারখানা বেসরকারি খাতে দেয়া হয়েছিল। তার ৪৩টি বন্ধ হয়ে গেছে। তাদের হাতে আছে আরো ১৫। সবগুলিতে বছর বছর টাকা ঢালতে হচ্ছে।
কাজেই করপোরেশনের চেয়ারম্যান সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দেশের স্বার্থে, চিনি কারখানাগুলোকে বাচানোর স্বার্থে আরো মদ তৈরীর কারখানা হবে।
আপনার আপত্তি থাকতে পারে না। যারা মদ খাবে তাদের টাকায় আপনি চিনি খাবেন।

0 comments:

 

Browse