সৎ-পাত্র

Aug 10, 2010
উনিশবার ম্যাট্রিকে ঘায়েল হয়ে থেমেছিল গঙ্গারাম
হাসছেন!
কারনটা কি বলুন তো সে উনিশবার ঘায়েল হয়েছে সেটাই কারন ? নাকি সে থেমেছে সেটা ?? নাকি যে শিক্ষা ব্যবস্থা তাকে উনিশবার ঘায়েল করতে পেরেছে সেটা ???
উনিশবার ম্যাট্রিকে ঘায়েল হওয়া মানে তার মাথায় কোন হলুদ পদার্থ নেই সেটা হাসির কারন হতেই পারে কারো মাথায় যদি জৈব সার থাকে তাকে নিয়ে হাসবেন না-তো কাকে নিয়ে হাসবেন ? আর সে যে থেমেছে সেটাও হাসির কারন হতেই পারে-
বিষয়টা একটু গোলমেলে হাসির কারন কি তার উপলব্ধি হওয়া ? তার পক্ষে এই পাহাড় ডিঙানো সম্ভব না এই উপলব্ধি তাহলে নিশ্চয়ই সেটা প্রশংসার হাসি
আর সেই যে কোন রাজার গল্প যেন পড়ানো হয়েছে বইতে, কতবার যুদ্ধে হেরে এক গুহায় শুয়ে শুয়ে দেখল কত কষ্টে একটা মাকড়সা ওপরে উঠছে দেখে আবারো নতুন উদ্দমে যুদ্ধ শুরু করল, জয়ী হল তাহলে গঙ্গারামের হাল ছেড়ে দেয়াকে বিদ্রুপ করতে হয় নিশ্চয়ই বিদ্রুপের হাসি তাহলে
আর শিক্ষা ব্যবস্থা, তারই বা কৃতিত্ব কম কিসে ? একজনকে গুনে গুনে উনিশবার ঘায়েল করেছে এমন কৃতিত্ব যার থাকে তার প্রশংসায় হাসতেই হয়
আসলে গঙ্গারাম বলে কথা তার একভাই পাগল, একভাই গোয়ার একজন যাত্রাদলে তবলা বাজিয়ে পাচটাকা পায় আরেকটি একেবারে তৈরী ছেলে নোট জাল করে জেলে গেছে নিশ্চয়ই জেল থেকে বেরনোর মত যথেষ্ট পরিমান তৈরী করতে পারেনি থানা-পুলিশ-উকিল-জজ, কম তো নয় গঙ্গারামের ভাই তো, এরবেশি আর কি হবে!
গঙ্গারামের কথাই বরং বলা যাক তার সমকক্ষ না হলেও ধারেকাছে পাওয়া যায় অনেককেই। এই যে ধরুন না অমুক-, নামটা বরং উহ্যই থাক-
বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা কাউকে উনিশবার ঘায়েল করতে পারে না, যদি অর্থসামর্থ্য থাকে। কাজেই সে ঘায়েল হল না। রীতিমত বাহাদুরী করার মত সার্টিফিকেটের মালিক হল। ঘাপলা শুরু হল তখনই।
সরকারী চাকরী পেতে নির্দিষ্ট পরিমান বয়স থাকতে হয়। সেটা যতদিন, ততদিন সে চেষ্টা চলল। উনিশবারের বেশি ছাড়িয়ে যখন বয়সের হিসেব পেরিয়ে গেল তখন থামতে হল। উপলব্ধি, নেতামন্ত্র আর টাকার জোর না থাকলে ওসব হয় না।
কাজেই এবার বেসরকারী চাকরী। সেখানেও একসময় উপলব্ধি হল, নিজেদের মামা-চাচা না থাকলে, চেনাজানা ছাড়া কেউ চাকরী দেয় না। খালি উলুক-ভুলুক দেখায়। হেন অভিজ্ঞতা, তেন কাজের নমুনা। বাড়াবাড়ির শেষ নেই। আরে বাবা, কাজ করতে দিয়ে তো দেখবি!
কাজেই ওসব বাদ। তারচেয়ে বরং বিদেশ যাওয়া ভাল। এদেশে মানুষ থাকে। এরপর সেই চেষ্টা চলল। এখানেও গোনাগুনতি নেই। টাকাপয়সা শেষ করে সেখানেও থামতে হল। বাপরে! শ্রমিক হিসেবে মালয়েশিয়া যাওয়া এত কঠিন!!
বরং ব্যবসা করা যাক। শেয়ার ব্যবসা। ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট। গোডাউনে ষ্টক করা। ফাষ্টফুডের দোকান। রেন্ট এ কার। সিডি-ডিভিডির দোকান। গার্মেন্টস ঝুট ব্যবসা। সংখ্যায় অগুনতি-
মাথার চুলে প্রতিসপ্তাহে কলম লাগানোর মত অবস্থায় গিয়ে সত্যিকারের বোধোদয় হল, আমাকে দিয়ে কিছু হবে না। বরং আমার যাকিছু অভিজ্ঞতা তা কাজে লাগিয়ে ছেলেকে দিয়ে শখ পুরন করতে হবে। ও হবে জগতখ্যাত। না হয়ে যায় না। যা ব্রেন। এখনই শিখেছে কিভাবে মিথ্যে সাজাতে হয়।
একসময় সেখানে ঘায়েল হতে হয়। সে বাবার অভিজ্ঞতা থেকে শেখে না বরং নিজেও বাবার মত অভিজ্ঞতা লাভ করতে চায়। শেষমেশ অবস্থা এমনই যে ঘায়েল হয়ে ভাবতে হয়, ছেলেকে দিয়ে হবে না, বরং নাতিকে দিয়ে যদি হয়।
সমস্যা হচ্ছে, সেখানে উনিশবার ঘায়েল হওয়ার সময় পাওয়া যায় না।  

0 comments:

 

Browse