কারো পৌস মাস

Aug 23, 2010
আগুন লাগলে সবার ক্ষতি এটা মনে করার কোন কারন নেই, কারো কারো লাভই হয়। সত্যি বলতে কি লাভ আর লোকসান আসলে সমান সমান। আপনি একটা জিনিষ বেচে ১০০ টাকা লাভ করলেন, তারমানে ক্রেতা ১০০ টাকা ঠকল। আর আপনি যখন ক্রেতা তখন ব্যাপারটি উল্টা। ব্যবসায়ীর লাভ, আপনার ক্ষতি। অন্যের ক্ষতি না করে নিজের লাভের উদাহরন অন্তত আমার জানা নেই।
কাজেই লাভ করতে হলে অন্যের ক্ষতি করতে হয়। এতে মন খারাপ করার কিছু নেই। আপনি দুমাইল যেতে ৩০০ টাকা ভাড়া দিচ্ছেন (প্রতি গজে কত হয় কেউ কি হিসেব করে বলবেন ?) এতে আপনার মনে হতে পারে আপনি ঠকছেন, কিন্তু একবার ভেবে দেখেছেন কি এতে কারো না কারো লাভ হচ্ছে। টাকাটা সরাসরি একজনের হাতে তো যাচ্ছেই। তারপর সেটা ভাগ হচ্ছে বহুভাগে। আর এরা সকলেই রাজনীতিপ্রিয়, দেশপ্রেমিক, স্বেচ্ছাসেবী। এদের হাতে না রাখলে সরকারে থাকা যায় না। সরকার এবং দেশ দুই রক্ষা করা তাদের অন্যতম প্রধান কাজ। কাজেই-
জানি আপনার উপদেশ দেয়ার বাতিক রয়েছে। বলবেন পরিবহনের ব্যবস্থা করা সরকারের দায়িত্ব। আরো বাড়িয়ে বলবেন গনপরিবহন। অমুক দেশ এই করেছে, তমুক দেশ এই করেছে। পাতাল রেল, উড়ুক্কু রেল এসব করা উচিত। ছোট গাড়ির বদলে বড় গাড়ি বেশি ব্যবহার করা উচিত। যেসব দেশে প্রত্যেকেরই গাড়ি আছে, ঢাকার চেয়ে বেশি মানুষ বাস করে সেখানেও এই সমস্যা নেই।
একটু থামুন তো। যারা দেশ চালান তাদের কি বলদ মনে করেন! আপনার বুদ্ধি শোনার জন্য তারা অপেক্ষা করে রয়েছে!
মোটেই না। তারা অনেক জ্ঞানী এবং বুদ্ধিমান। এবং দক্ষ। ক্ষমতার ভারসাম্য বিষয়টি আপনি বোঝেন না, তারা বোঝেন। রিক্সার কথা নাহয় বাদই দিলেন। এরা পরিবেশের ক্ষতি করে না, বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান হয়। এর ফিটনেসের বিষয়টিও নেই। রোড পারমিটের বিষয়ও নেই। অন্যদের রীতিমত ফিটনেসের টাকা দিতে হয়, রোড পারমিট নিতে হয়। আর ওই মিটার, ওটা থেকেই জানার কথা ভাড়া কত হবে।
কিন্তু বাঙালীর মেধা বলে কথা। মিটারের হিসেবে যাবেন ? চলেন। ৩০০ টাকার ভাড়া ৬০০ টাকা দিয়ে শখ মেটাতে হবে।
বড়বড় বাসের কথা বলছেন। এগুলো বাড়িয়ে কি হবে বলুন তো। বাঙালী তো অলস। শোয়ার সুযোগ পেলে বসতে পর্যন্ত চায় না। বাসের এখানে ওখানে ঝুলে একটু ব্যায়াম তো হচ্ছে। ব্যায়ামে স্বাস্থ্য ভাল থাকে। প্রতিদিন যে পরিমান ভেজাল খাচ্ছেন তাতে একমাত্র ব্যায়ামই পারে নিরোগ রাখতে। যদি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যেতে হয় তখনো ওই সরকারকেই গালাগালি করবেন। টিভিতে দেখিয়েছে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা নাকি রোগিকে ব্যাঙ কাটার মত কেটে প্রাকটিক্যাল ক্লাশ করেছে। এতে তারা দক্ষ সার্জন হতেই পারে, তাইবলে নিজেকে ব্যাঙ বানিয়ে নিশ্চয়ই দক্ষ ডাক্তার তৈরীর সুযোগ করে দিতে চান না।
আসলে মুল কথা ওটাই, একজনের ক্ষতি আরেকজনের লাভ। সুযোগ খুজুন আপনার লাভ কোথায়। সেটা দিয়ে পুষিয়ে নিন।
আলুর গুদামে আগুন লেগেছে এতে গোপাল ভাড়ের কোন আপত্তি নেই। একটু লবন যোগাড় করে দিব্বী পটেটো চিপ খাওয়া যায়। বরং আগবাড়িয়ে জিজ্ঞেস করা যায়, আবার কবে আগুন লাগবে ?
রোজার মাসের ব্যবসায়ী, গ্যাস ষ্টেশনে নিষেধাজ্ঞার সময় ড্রাইভার, তারা নিশ্চয়ই দাত খোচাতে খোচাতে প্রশ্ন করে, আবার কবে ???  

0 comments:

 

Browse