ফর্মুলা আবিস্কার

May 8, 2011
ফর্মুলা আবিস্কার যে সহজ না সেটা ভালভাবেই বুঝেছিলেন শ্রীনিবাস রামানুজ মাথায় যত অংকই ঘোরাফেরা করুক, তিনি তো আর জানেন না কোনফাকে কে কোন ফর্মূলা আবিস্কার করে নিজের নামে রেজিষ্ট্রি করে রেখেছে তিনি মনের সুখে মনের মত ফর্মুলা আবিস্কার করতে থাকলেন তারপর দেখা গেল আগেই কেউ সেটা আবিস্কার করেছে বেচারা মনের দুঃখে আত্মহত্যার চেষ্টা পর্যন্ত করলেন
ফর্মুলা আবিস্কার বিষয়টা অনেকটাই গোলমেলে নিউটন মাধ্যাকর্ষনের ফর্মুলা আবিস্কার করলেন না কিরলে কি হত ? গাছতলায় বসলে আপেল মাথায় পড়ত না! অন্যদিকে উড়ে যেত ? যুগ যুগ ধরে এদেশের মানুষ এই ফর্মুলা জানে সেকারনেই ন্যাড়ামাথা নিয়ে কেউ বেলতলা যায় না
গ্যালিলিও আবিস্কার করলেন পৃথিবী ঘুরছে এখানে আবিস্কার করার কি আছে বাবা! পৃথিবী কি তুমি ঘুরিয়েছ ?
আর আর্কিমিডিসই বা কি করেছেন ? পানিতে নেমে দেখলেন কিছুটা পানি উপচে পড়ল। তাকেই আবিস্কার ধরে নিয়ে ন্যাংটা হয়ে পথে ছুটলেন। কে না জানে পানিভর্তি চৌবাচ্চায় নামলে পানি উপচে পড়বে। আর কারো বেলায় কি সেটা ঘটেনি ?
মানুষ আসলে অকারন বিষয় নিয়ে বেশি মাতামাতি করে। সত্যিকার আবিস্কার নিয়ে মাথা ঘামায় না। সত্যিকারের আবিস্কারের পেছনে থাকে জটিল ফর্মুলা। প্রয়োজন হয় অতি সুক্ষ মস্তিস্ক। সত্যিকারের ফর্মুলা যদি দেখতে হয় তাহলে দৃষ্টি পাল্টাতে হবে ওইসব গ্যালিলিও-নিউটন-আইনষ্টাইন এর ফর্মুলা এদের কাছে ধোপে টেকে না
ওই যে, মন্ত্রী মশায় বললেন বুড়িগঙ্গা নদীর সংস্কারে ৯৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে এটা হল সুত্র এর পেছনে রয়েছে সত্যিকারের ফর্মুলা ম্যাথমেটিক্যাল ডিডাকশন করে দেখতে পারেন আর যদি অংকে ভয় পান তাহলে সরলভাবে একটু শুনেন নিন;
নদীদুষনের প্রধান কারন কয়েকটি
.          কলকারখানাগুলির রাসায়নিক বর্জ্য নিঃসরন হিসাব করিয়া দেখা গিয়াছে তাহারা যদি এই পদ্ধতি অবলম্বন না করে তবে তাহাদের বিপুল পরিমান ক্ষতির সম্মুখিন হইতে হইবে উতপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাইবে, প্রতিযোগিতামুলক দামে কাজ পাওয়া যাইবে না, ফলস্বরুপ বিপুল পরিমান মানুষ বেকার হইবে তাহার তুলনায় ৯৯ কোটি টাকা সামান্য
.          সিটি কর্পোরেশনের আবর্জনা ফেলন বর্তমানে যায়গাজমির দাম এতই বৃদ্ধি পাইয়াছে যে আবর্জনা ফেলার মত যায়গা সংকুলানের উপায় নাই যায়গাজমি যা আছে সেগুলি আবাসন প্রকল্পে ব্যবহৃত হইবে এবং আবর্জনাগুলি নদীতে ফেলা হইবে এইরুপ সিদ্ধান্ত লওয়া হইয়াছে আবাসনও গার্মেন্টস এবং টিভিনাট্য শিল্পের মত একটি বিশাল শিল্পে পরিনত হইয়াছে। তাহাদের সুবিধা-অসুবিধার দিকে দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।
.          নদীদখল যাহারা জনগনের ভোটে নির্বাচিত এবং যাহারা নির্বাচনে সহায়তা করিয়াছেন তাহাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য কিছু যায়গাজমি প্রয়োজন অন্য যায়গা যেহেতু নাই সেহেতু তাহারা নদী, খাল ইত্যাদি খাস জমি ব্যবহারের সুযোগ পাইবেন সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে এই মালিকানা মালিকানা হস্তান্তরযোগ্য
কাজেই সমাধান যদি খুজতেই হয় তাহলে অন্য সমস্যা তৈরী না করেই সমাধান খোজা উচিত। অন্যদের কাজে বাধা সৃষ্টি করা অন্যায়। কলকারখানা দেশের ভবিষ্যত। ৩৫ লক্ষ শ্রমিক এই গার্মেন্টস শিল্পে নিয়োজিত। তাদেরকে বিষাক্ত রাসায়নিক নদীতে ফেলা যাবে না, জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এমন ক্ষতিকর কথা বলা যায় না। এতে গার্মেন্টস মালিকদের না বরং ওই ৩৫ লক্ষ শ্রমিকের পেটে লাথি মারা হয়। জনগনের সরকার কখনো এমন কাজ করতে পারে না। আবাসন শিল্পের ক্ষেত্রেও একই কথা। তারা যদি কিছু খাল ভরাট না করে তাহলে ঘরবাড়ি করবে কোথায়। শুণ্যে বাড়ি বানানোর প্রযুক্তি এখনও আবিস্কার হয়নি।
আবার লাভের অন্য দিকও আছে। ওই ৯৯ কোটি টাকা তো এদেশের দরীদ্র মানুষের হাতেই যাবে। যারা কাজ করবে, কাজ তদারকি করবে তারাও এই দেশের জনগন। তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করাও সরকারের দায়িত্ব।
সত্যিকারের ফর্মুলা এটাই ফর্মুলা আবিস্কারের কৃতিত্ব যদি দিতে হয় তাহলে ...

0 comments:

 

Browse