একেই বলে উন্নতি

May 19, 2010
ফুড ইনক, বর্তমান সময়ের সাড়া জাগানো ভিডিও ডকুমেন্টারী কে একজন বলল অস্কার পেয়েছে পেতেও পারে ওদের আবার অনেক ধরনের আজগুবি কাজ করার বাতিক আছে
সে যাকগে, কথা হচ্ছে পাইরেসির কল্যানে সেটা দেখার সুযোগ হয়েছে আমেরিকায় কিভাবে খাদ্য তৈরী হয় দেখানো হয়েছে মুরগীর খামারে আলো-বাতাস ঢোকে না জন্ম নেয়ার পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কখনো তারা আলোর মুখ দেখে না নানারকম পুষ্টিকর খাবার তাদের এত দ্রুত ফুলে-ফাপিয়ে তোলে যে নিজের পায়ে দাড়াতে পারে না যারা ম্যাকডোনাল্ড-বার্গার কিং এর এইসব খাবার খায় তারা জানেও না কি খাচ্ছে কোন খামারীর মুখ খোলা নিষেধ মুখ খুললে তারকাছে মুরগী কিনবে না ক্রেতা একমাত্র তারাই তাদের শর্ত মেনে খামার গড়ুন, তাদের লিষ্ট মিলিয়ে যন্ত্রপাতি কিনুন, তাদের কাছে বিক্রি করুন কোন সমস্যা নেই হাজার পঞ্চাশেক ডলার ব্যাংক ঋন মাথার ওপর, কিন্তু কোন সমস্যা নেই যে আয় হয় তাতে রাজার হালে থাকা যায় যদি তাদের কথামত চলেন
কথার অমান্য করলেই বিপদ আপনার খামার বন্ধ করতে হবে মাথার ওপর তখন সেই ঋনের বোঝা চেপে রয়েছে
কে একজন শিশু মারা গেছে এইসব খাবার খেয়ে ৫ বছর ধরে লেগে থেকে তার মা স্বীকৃতি আদায় করেছেন সেই শিশুর নামে একটা আইনও তৈরী হয়েছে খাদ্যের নিরাপত্তা বিষয়ে বাস্তবে সেটা কাজ করুন বা না করুন, আইন তৈরী না করে তিনি ছাড়েননি এইসব নানাবিধ বিষয় নিয়ে কথাবার্তা
আসলে এসব নিয়েও আমার মাথাব্যথা নেই আমেরিকার গরু তারা লেজের দিকে কাটুন নয় গলায় কাটুক তাতে কি যায় আসে ? তাদের দেশে ফাষ্ট ফুড হল সস্তা খাবার জাংক ফুড ঢাকা শহরে সেটা আভিজাত্যের প্রতিক যার সত্যিকারের সামর্থ্য আছে তারজন্যই কেফসি-পিজাহাট
আমার আগ্রহ একটি মাত্র কথায় বলা হল, সবকিছুই উন্নত হচ্ছে সুযোগ-সুবিধে বাড়ছে, তারসাথে পাল্লা দিয়ে জ্ঞান বাড়ছে, তারসাথে পাল্লা দিয়ে মানুষ সচেতন হচ্ছে, তারসাথে পাল্লা দিয়ে হাসপাতালে ভীড় বাড়ছে
আগ্রহ না দেখিয়ে উপায় কি ? অন্তত ঢাকা শহরের অভিজ্ঞা যার আছে
মানুষ ধনী হচ্ছে বিদেশী খাবার খাচ্ছে কোটি টাকা বাড়ি কিনছে কোটি টাকার গাড়ি চড়ছে তারপর সেই গাড়ি নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছে শতশত-হাজার হাজার হাসপাতাল-ক্লিনিক সবগুলোর সামনে শতশত থেমে থাকা গাড়ি একেই না বলে উন্নতি একসময় নাকি মানুষ হাসপাতাল কি জানত না, ডাক্তার কি জানত না আশেপাশে দশ-বিশ মাইলের মধ্যে ডাক্তার বলে কিছু ছিল না বড়জোর দুচারজন কবিরাজ পাওয়া যেত এই গাছ- ওই গাছ এক করে খেতে বলত বেশিরভাগ সময়ই বলত, এই নিয়মে খান, ওই নিয়মে কাজ করেন, সেই নিয়মে ঘুমান ওষুধ আবার কি জিনিষ রীতিমত অসভ্য সমাজ
তারাই নাকি অনায়াসে শতবছর বেচে থাকত
উন্নতি দেখেছি আমরা অনবরত দেখছি সারা বছর যা চান তাই পাবেন ঋতু বলে কিছু নেই ফল পচে না, মাছ পচে না, দুধ নষ্ট হয় না একেবারে উন্নত ব্যবস্থা বিদেশী যন্ত্রপাতি, বিদেশী ডাক্তার, বিদেশী ওষুধ দেশেই বিদেশী চিকিসা এই না হলে উন্নতি!
উন্নতির আরো দিক আছে পরীক্ষার ফল বেরলে আনন্দের মিছিল রেকর্ড সংখ্যক জিপিএ ফাইভ পেয়েছে (কি জিনিষ জানি না) রাত দুপুরে ছেলে-মেয়ের দল ধরে রাস্তায় নাচানাচি
আদ্যিকালের কিছু মুখ্য আবার এসব দেখে প্রশ্ন তোলে, এত যে প্রতিভা এরা সব যায় কোথায় ? উদ্ধাবনী থেকে শুরু করে সংস্কৃতি সবকিছুর গতি তো শুন্য ছেড়ে মাইনাসের দিকে পৃথিবীর মানুষ উদ্ভাবনী ক্ষমতার জন্য একজনকে মাত্র চেনে তিনি উদ্ভাবন করে দেখিয়েছেন যারা দরীদ্রেরও অধম তাদের নিয়েও ব্যবসা করা যায় এর বাইরে জ্ঞান বিজ্ঞান দুরের কথা, গানবাজনা-চলচ্চিত্র-নাটক-সাহিত্য-খেলাধুলা কোন বিষয়ে কারো কৃতিত্বের কথা দেশের বাইরে পৌছেনি
আসলে বিষয়টা ওই ডকুমেন্টারীর মতই স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা যত বাড়ছে হাসপাতালে ভীড় তত বাড়ছে

0 comments:

 

Browse